তখন তুমি এমন উটের পৃষ্ঠে আরোহণ করেছিলে, যার পা ছিল দীর্ঘকায়, ভাল বংশজাত,
দ্রুতগামী ও প্রশস্ত পিঠ বিশিষ্ট
সম্প্রদায়ের লোকজন তোমার পিছনেই ছিল, কিন্তু বেচে থাকার আশায় তুমি যুদ্ধ ত্যাগ
করে চলে আসলে ! অথচ ঐ সময়টি পলায়নের সময় ছিল না ৷
হায় ! তুমি তোমার সহোদরের দিকেও ফিরে তাকলে না ৷ যখন সে বর্শার আঘাতে মাটিতে
পড়ে মরে যাচ্ছিল এবং তার সঙ্গের আসবাবপত্র সব থােয়া যাচ্ছিল ৷
আল্লাহ (মালিক) তার (আবু জাহলের) ব্যাপারে দ্রুত ফায়সালা দিলেন ও তার দলবলকে
লাঞ্চুনাকর কলং ক দিয়ে ও জঘন্য শাস্তি দিয়ে ধ্বং স করে দিলেন ৷
তিনি আরও বলেন :
অর্থ৪ বদর যুদ্ধের প্রাত ংকালে কুরায়শরা নির্বিচারে কঠিন ভাবে বন্দীতৃ ও হত্যাকাণ্ডের
শিকা ড়ার হয় ৷
আবুলং ওয়ালীদের নেতৃত্বে পরিচালিত সে দিনের লড়াইয়ে যুদ্ধের সাহায্যকারী লোকজনের
মধ্যে বাদ নুবাদের সময় আমরা প্রন্তুত হলাম ৷ যেদিন রাবীআর দুই পুত্র বিপুল অস্ত্র সাজে
সজ্জিত হয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসলেন, সে দিন আমরা তাদেরকে হত্যা করলাম ৷
আর যখন বনু নাজ্জার সিংহের ন্যায় গত্তনি করে যুদ্ধক্ষেত্রে বাড়াপিয়ে পড়ল, তখন হাকীম
সেখান থেকে পালিয়ে গেল ৷
সে দিন গোটা ফিহ্র গোত্র পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালিয়ে যায় ৷ আর হুয়ায়রিছ তাে দুর থেকে
তাদেরকে ত্যাগ করে চলে যায়
তোমরা অপমান ও হত্যার সম্মুখীন হয়েছিলে যা তোমাদের কণ্ঠশিরার মধ্যে প্রবেশ
করেছিল ৷
বাহিনীর সমস্ত লোকই দৌড়ে পালিয়ে গেল এবং পুর্ব পুরুষদের মান-সম্মানের দিকে কেউ
ফিরেও তাকলে না ৷
হিন্দ বিনত উছাছার কবিতা
হিন্দ বিনত উছাছা ইবন আব্বাদ ইবন মুত্তালিব উবায়দা ইবন হারিছ ইবন মুত্তালিবের
মৃত্যুতে নিম্নোক্ত শোকগাথা রচনা করেন :
অর্থ : সাফ্রা নামক স্থানটি নিজের মধ্যে সমবেত করেছে সম্মান, নেতৃত্ব, স্বভাবগত
সহনশীল এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন গুণ গরিমার লোকদেরকে ৷
সেই সাফরা এলাকার একজন হচ্ছেন উবায়দা, তুমি তার জন্যে র্কাদো যিনি ছিলেন
যেহমান মুসাফিরের জন্যে নিবেদিত এবং বিপদকালে দুঃস্থ বিধবারা তার কাছে আসতাে ৷ তিনি
ছিলেন অসহড়ায়দের জন্যে বৃক্ষ স্বরুপ ৷
তুমি র্কার্দো সে সব লোকের উদ্দেশ্যে যারা প্রতেব্রক শীতের মওসুমে দুর্ভিক্ষের কারণে
দিগন্তরেখা লাল হয়ে যাওয়ার সময় তার নিকট আসতাে ৷
আর তুমি ইয়াডীমদের স্মরণে র্কাদো যারা ঝঞাবায়ু প্রবাহিত হলে তার কাছে এসে
আশ্রয় নিত ৷ আরও র্কড়াদো ডেগের নীচে আগুন জ্বালানাের জন্যে, যা দীর্ঘ দিন যাবত টগবগ
করে ফুটতেড়া ৷
এরপর যদি কখনও আগুনের তেজ কমে যেত, তখন তিনি মোটা মোটা কাঠ দিয়ে সে
আগুন আবার প্ৰজ্বলিত করে দিতেন ৷
এই ব্যবস্থা তিনি করতেন রাত্রিকালে আগমনকারী পথিক কিৎবা আপ্যায়নের প্ৰত্যাশী
লোকদের জন্যে এবং সেসব পথহারা পথিকদের জন্যে যারা কুকুরের আওয়াজ শুনে সেদিকে
অগ্রসর হয়ে তার কাছে উপস্থিত হত ৷
আতিকার কবিতা
উমাবী তার মাপাযী গ্রন্থে সাঈদ ইবন কুতৃন থেকে বর্ণনা করেন : আতিকা বিনত আবদুল
ঘুত্তালিব পুর্বে এক স্বপ্ন দেখেছিলেন ৷ বদর যুদ্ধের পর স্বপ্নের সাথে মিলে যাওয়ায় নিম্নোক্ত
কবিতা আবৃত্তি করেন :
অর্থ : আমার স্বপ্ন কি বাস্তবে পরিণত হয়নি এবং তার ব্যাখ্যা কি তোমাদের সামনে
আসেনি ? যখন সম্প্রদায়ের একদল লোক পলায়ন করল ৷
যে ব্যক্তি স্বচক্ষে দেখেছে যে, ধারাল তরবারি কী ভাবে সঞ্চালিত হয়েছে, তখন তােমাংদর
কাছে আমার যে স্বপ্ন বিশ্বাসযেগ্যে হয়েছে ৷
আমি তোমাদের নিকট সত্য কথা বলেছিলড়াম, মিথ্যা কথা বলি নাই ৷ বন্তুত আমাকে
মিথ্যাবাদী ঠাওরিয়েছে সে, যে নিজে,মিথুক্লক ৷
হাকীম তাে এমনিতে পালায়নি বরং মৃত্যুর ভয়ে সে পালিয়েছে ৷ অবশ্য পালিয়ে যাওয়ার
সকল পথই তার রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷
সে দিন তোমাদের মাথার উপরে ছিল ভারতীয় তরবারি এবং বাহরায়নের খৎ গোত্রে
নির্মিত বর্শা যা দেখতে চকমকে ও প্রতিপক্ষের উপর বিজয় নিশ্চিত করে ৷
সে তরবারির ধারাল অংশটি উজ্জ্বলতায় এমন ঝলমল করে যে, যদি কোন গর্জনকান্নী
সিংহরুপ বীরের হাতে পড়ে, তবে তা অগ্লিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় মনে হয় ৷