ছেড়োছুড়ি হয়, কোন সংঘর্ষ হয়নি ৷ ওয়াকিদী বলেন, মুশরিকরা সংখ্যায় ছিল দু’শ’ জন এবং
তাদের নেতা ছিল আবু সুফিয়ান সাখৃর ইবন হারব ৷ আমাদের মতে এটাই বিশুদ্ধ কথা ৷ কেউ
কেউ বলেন যে, তাদের নেতা ছিল মুক্রিয ইবন হাফ্স ৷
অনুচ্ছেদ
সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাস (রা)-এর অভিযান
ওয়াকিদী বলেন : এ বছর অর্থাৎ হিজরী প্রথম সালে যিলকাদ মাসে রাসুল (সা) সাআদ
ইবন আবু ওয়াক্কাসকে খারার অভিমুখে প্রেরণ করেন ৷ এ দলের সাদা পতাকা বহন করেন
মিকদাদ ইবন আসওয়াদ (রা) ৷ আবু বকর ইবন ইসমাঈল তার পিতা সুত্রে আমির ইবন
সাআদেৱ বরাতে বলেন, ২০ বা ২১ জন মুজাহিদ নিয়ে আমি বের হই ৷ দিনের বেলা আমরা
লুকিয়ে থড়াকতড়াম এবং রাতের বেলা সফর করতাম ৷ পঞ্চম দিন ভোরে আমরা খারার’ পৌছি
এবং বাবার অতিক্রম না করার জন্য রাসুল (সা) আমাকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেছিলেন ৷ কুরায়শের
কাফেলা একদিন পুকেহ এ জায়গাটি অতিক্রম করে যায় ৷ বণিক দলে ছিল ৭০ জন লোক আর
সাআদেৱ সঙ্গে যীরা ছিলেন, র্তাদের সকলেই ছিলেন মুহাজির ৷ আবু জাফর ইবন জারীর (র)
বলেন, ইবন ইসহাকের মতে ওয়াকিদী বর্ণিত পুর্বোক্ত তিনটি অভিযানই সংঘটিত হয় তৃতীয়
হিজরীতে ৷ আমার মতে ইবন ইসহাকের এ উক্তিটি দ্ব্যর্থহীন নয়, চিন্তা-ভাবনাকারী ব্যক্তি এটা
অনুধাবন করতে পারবে ৷ প্রথম হিজরী সনের ঘটনাবলী প্রসঙ্গে কিতাবুল মাপাযীর শুরুতে এ
সম্পর্কে আমরা আলোচনা করবো ৷ এর পরই ইনশাআল্লাহ্ সে আলোচনা আসবে ৷ এটাও তার
লক্ষ্য হতে পারে যে, এসব অভিযান সংঘটিত হয়েছে প্রথম সনে ৷ সেখানে পৌছে এ বিষয়ে
আমরা আরো বিস্তারিত আলোচনা করবো ৷ আর ওয়াকিদীর নিকট অতিরিক্ত উত্তম তথ্য
রয়েছে ৷ আর সম্ভবত তার রয়েছে লিখিত ইতিহাস ৷ এবং তিনি ইতিহাস বিষয়ের অন্যতম মহান
ইমাম ৷ এমনিতে তত্ত্বগত ভাবে তিনি সত্যবাদী, তবে তার বর্ণনায় অতিকথন থাকে ৷
অড়াত-তড়াক্মীল ফী মারিফাতিছ ছিকাত ওয়ায-যুআফা ওয়াল মাজাহীল’ নামক গ্রন্থে তার
গ্রহণযোগ্যতা ও তার বিরুপ সমালোচনা সম্পর্কে সবিস্তারে আলোচনা করেছি ৷
অনুম্মেদ
এই মুবারক বছর অর্থাৎ হিজরী প্রথম সালে মারা জনআেহণ করেছেন, তাদের সর্ব প্রথমজন
হলেন আবদুল্লাহ ইবন যুবায়র ৷ তার আম্মা আসমা এবং খালা আইশার বরাতে বুখারী এ কথা
বর্ণনা করেছেন ৷ তীর মাতা আসমা (বা) এবং খালা উন্মুল মু’মিনীন আইশা (রা) এরা উভয়েই
হলেন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা)-এর কন্যা ৷ কেউ কেউ বলেন নুমান ইবন বাশীর তীর
(আবদুল্লাহ ইবন যুবায়র) ৬ মাস পুর্বে জন্মগ্রহণ করেন ৷ এ মত অনুযায়ী আবদুল্লাহ্ ইবন
যুবায়র হিজরতের পর মুহাজিরদের মধ্যে প্রথম নবজাত শিশু ৷ আবার কেউ কেউ বলেন, তারা
উভয়েই দ্বিতীয় হিজরী সনে জন্মগ্রহণ করেছেন ৷ প্রথমােক্ত মতই স্পষ্ট, যা আমরা ইতােপুর্বে
আলোচনা করেছি ৷ প্রশংসা আর ন্তুতি সবই আল্লাহ্র প্রাপ্য ৷ দ্বিতীয় হিজরী সনের ঘটনাবলী
বর্ণনার শেষে দ্বিতীয় উক্তি সম্পর্কে আমরা ইশারা করবো ইনশাআল্লাহ্ ৷
ইবন জারীর বলেন : কথিত আছে যে, মুখৃতার ইবন আবু উবায়দ এবং যিয়াদ ইবন
সুমাইয়া এরা দু’জনই হিজরী প্রথম সনে জন্মগ্রহণ করেছেন ৷ আল্লহ্ই ভাল জানেন ৷ হিজরী
প্রথম সনে সাহাবীদের মধ্যে যারা ইনতিকাল করেন, তাদের অন্যতম হলেন কুলছুম ইবন হিদ্ম
আল-আওসী রাসুল (না) করার অবস্থানকালে যার বাড়িতে ছিলেন ৷ তিনি যেখান থেকে বনু
নাজ্জার বসতািত গমন করেন, সে কথা পুর্বে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ এইে বছর এরপর মৃত্যুবরণ
করেন বনু নাজ্জারের নকীব আবু উমামা আসআদ ইবন যুরারা ৷ এ সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা)
মসজিদ (নববী) নির্মাণ করছিলেন, যেমনটি ইতোপুর্বে বলা হয়েছে ; আল্পাহ্ এদের দু’জনের
প্রতি সন্তুষ্ট হোন এবং এদেরকে সন্তুষ্ট রাখুন ৷
ইবন জারীর বলেন : এই একই বছর অর্থাৎ হিজরতের প্রথম বর্ষে আবু তাইফ এবং
ও য়ালীদ ইবন মুগীরা ও আস ইবন ওয়াইল সাহমী মক্কায় মারা যায় ৷
আমার মতে, এরা সকলেই মৃত্যুবরণ করেছে মৃশরিক অবস্থায়, এরা ঈমান আনেনি ৷
হিজরী দ্বিতীয় সনে যেসব ঘটনা ঘটেছে; তার আলোচনা
এ সময় অনেক গাযওয়া ও মারিয়া সংঘটিত হয় ৷ এ সাবর মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং
সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হল বদর যুদ্ধ, যা এ বছর রমড়াযান সালে সংঘটিত হয় ৷ আর এ যুদ্ধের
মাধ্যমে আল্লাহ্ সত্য-মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য সুচিত করেন ৷ পার্থক্য করেন হিদায়াত আর
গোমরাহীর মধ্যে ৷ আর এ হল মাগাযী আর মারিয়া সম্পর্কে আলোচনা করার সময় ৷ তাই
আল্লাহ্র নিকট সাহায্য ভিক্ষা করে আমরা বলছি ৷
কিতাবুল মাগাযী
ইমাম মুহাম্মদ ইবন ইসহাক তার সীরাত গ্রন্থে ইয়াহ্রদী ধর্মযাজক, ইসলাম এবং ইসলামের
অনুসারীদের প্ৰতি তাদের দৃশমনী তথা হিংসা-বিদ্বেষ এবং যাদের সম্পর্কে কুরআন মজীদের
আয়াত নাযিল হয়েছে, তাদের কথা আলোচনা করার পর বলেন : তাদের মধ্যে রয়েছে হুয়াই
ইবন আখতার এবং তার দুই ভাই আবু ইয়াসির ও জুদী, সাল্লাম ইবন মিশকাম, কিনানা ইবন
রাৰী ইবন আরিল হুকায়ক ৷ সাল্লাম ইবন আবুল হুকায়ক এই ছিল সেই কুখ্যাত আবু রাফি
হিজাযের বাসিন্দাদের সাথে যার বাণিজ্য ছিল খায়বর ভুমিতে সাহাবীরা এ ব্যক্তিকে হত্যা
করেন, যার আলোচনা পরে করা হবে ৷ রড়াবী ইবন রাবী ইবন আবুল হুকায়ক, আমর ইবন
জাহ্হড়াশ, কাআব ইবন আশরাফ যে ছিল বনু তাঈ গোত্রের বৃহত্তর বনু নাবহান গোষ্ঠীর
অন্যতম সর্দার এবং তার যা ছিল বনু নাযীর গোত্রের ৷ সাহাবীরা আবৃ রাফি হত্যার পুর্বে একে
হত্যা করেন, যে সম্পর্কে পরে আলোচনা আসছে ৷ আর হুলায়ফা আল-হাজ্জাজ ইবন আমর
এবং কারদাম ইবন কায়স ৷ এদের প্রতি আল্লাহর লা“নত-এরা সকলেই ছিল বনুনাযীর গোত্রের
লোক ৷ আর বনী ছালাবা ইবন ফাত্য়ুনের অন্তর্ভুক্ত ছিল আবদুল্লাহ্ ইবন সুরিয়৷ ৷ পরবর্তীকালে
হিজাযে তার চাইতে বড় তাওরাতের জ্ঞানী আর কেউ ছিল না ৷
আমি বলি, কথিত আছে যে, ইনি ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন ৷ আর ইবন সালুবা এবং
মুখায়রীক উহুদ যুদ্ধের দিন ইসলাম গ্রহণ করেন এ সম্পর্কে বর্ণনা আসছে ৷ ইনি ছিলেন তার
জাতির ধ্র্মযাজক ৷ আর বনু কায়নুকার মধ্যে যায়দ ইবন লিসীত, সাআদ ইবন হানীফ, মাহমুদ
ইবন শায়খান (মতাম্ভরে সুবহান) , উযায়য় ইবন আবু উযায়য, আবদুল্লাহ ইবন যাইফ, সুয়ায়দ
ইবন হারিছ, রিফাআ ইবন কায়স, ফিনহাস, আশৃয়া ও নুমান ইবন আযা বাহ্বী ইবন আমর ,
শাশৃ ইবন আদী, শাশ ইবন কায়স, যায়দ ইবন হারিছ, নুমান ইবন উমায়র (মতাম্ভরে আমর) ,
সিকীন ইবন আবী সিকীন, আদী ইবন যায়দ, নুমড়ান ইবন আবু আওফা আবু উনৃস , মড়াহ্মুদ
ইবন দিহ্য়া, মালিক ইবন লাইফ, কাআব ইবন রাশিদ, আযির ও রাফি“ ইবন আবু রাফি“ (দুই