হে আল্লাহ তার হাত দু খানাকেও ক্ষমা করে দিন ৷ অর্থাৎ হাতে যে ত্রুটি আছে৩ তা সাবিয়ে
দিন ৷ বিশ্লেষণ বিশেষজ্ঞ উলামায়ে কিরামের অভিমত যে,তু ফায়ল ইবন আমরের (রা ) সাথীর
ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দুআ আল্লাহ তাআলা নিশ্চয়ই কবুল করেছেন ৷
আ ’শা ইবন কায়সের ঘটনা
ইবন হিশাম বলেন, খাল্লাদ ইবন কুররা প্রমুখ বকর ইবন ওয়ইিলের উস্তাদগণের সুত্রে
হাদীছ বিশারদদের থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আশা ইবন কায়স (ইবন ছা’লাবাহ্ ইবন ইকাবাহ্
ইবন সা’ব ইবন আলী ইবন বকর ইবন ওয়াইল) ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশ্যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
সাথে সাক্ষাতের জন্যে যাত্রা করেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর প্রশংসায় তিনি নিম্নোক্ত
কবিতাটি আবৃত্তি করেন ঘ্র
চোখের পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে গত রাতে তুমি কি চোখ বন্ধ করতে পারােনিঃ আর তাই কি
রাত্রি যাপন করেছো সুস্থ অথচ নিদ্রাহীন ব্যক্তির ন্যায় ৷
এই নিদ্রাহীনতা তো নারীপ্রেমের কারণে নয়, বরং অনেক পুর্বেই তুমি মুহাদ্দাদ নামক
রমণীর কথা ভুলে গিয়েছো ৷
আমি বিশ্বাসঘাতক যুগকে দেখেছি যে, আমার দুহাত যখন কোন কিছু শুধরিয়ে দেয় ওই
যুগ তখ্যা পুনরায় সেটিতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং সেটিকে নষ্ট করে দেয় ৷
এই যুগের ঘুর্ণিপাকে আমি অনেক প্রোঢ় লোক, নওজেড়ায়ানকৃক এবং অনেক ধন-সম্পদ
হারিয়েছি ৷ হায় আল্লাহ্ ৷ এ যুগ কী ভাবে ওলট-পালট হয় ৷
আমি অবিরাম ধন-সম্পদ অর্জনে ব্যস্ত ছিলাম ৷ শৈশব, যৌবন এবং পৌঢ়তৃ সকল বয়সে
তাই করেছি ৷
এখন আমি আমার খাকী রঙের দ্রুতগামী অশ্ব ছুটিয়েছি নাজীর ও মারখাদ অঞ্চলের
মধ্যবর্তী দুরতৃ অতিক্রম করার লক্ষে ৷
হে লোক, যে আমাকে জিজ্ঞেস করছ আমার গম্ভব্য কোথায় ? তুমি শুনে নাও আমার অশ্ব
ইয়াছরির পৌছার জন্যে প্ৰতিজ্ঞাবদ্ধ ৷
এে
তুমি যদি তবু আমার ব্যাপারে প্রশ্ন কর , তবে এমন বহু প্রশ্নকর্তা আছে, যারা খুব ভালভাবে
জানে আশা কোথায় অধিষ্ঠিত
লক্ষ্যস্থলে দ্রুত পৌছড়ার জন্যে আমি আমার অশ্বের পেছনের পা দুটোকে উচু ভুমির দিকে
দ্রুত চালিয়েছি এবং সামনের পা দৃটোকে সে আলতেভােবে আমার প্ৰতি ঝুকিয়ে দিয়েছে ৷ আমি
তাকে অলসতা করার সুযোগ দিইনি ৷
মধ্যাহ্নে বেপরোয়া গতিতে সে যখন সেটিকে দৃপুরের প্রচণ্ড খর৩ ৷পে ছুটেছে, তখন
সেটিকে মনে হয়েছে যেন এক মস্তবড় অহংকারী অশ্ব ৷
আমি কসম করেছি যে, ক্লান্ত হয়ে পড়লেও এবং দীর্ঘ পথ অতিক্রমের কারণে তার পা
গুলো ক্ষত-বিক্ষত এবং রক্তাক্ত হয়ে গেলেও আমি তাকে বিশ্রাম করতে দেব না ৷ যতক্ষণ না
সে মুহাম্মাদ (না)-এর থেদমতে গিয়ে পৌছে ৷
হাশি ৷মের বংশধর (মুহাম্মাদ)-এর দরজা য় গিয়ে পৌছতে পারলে যে বিশ্রাম করতে পারবে
এবং তীর অফুরান অনুগ্রহ লাভে ধন্য হবে ৷
তিনি এমন একজন নবী যে, তোমরা যা দেখতে পাও না তিনি তা দেখতে পান ৷ আমার
জীবনের শপথ, তীর আলোচনা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এবং সব কিছুর উপর বিজয় মণ্ডিত
হয়েছে ৷
তিনি অনবরত দান সাদাকা করেন ৷ এমন নয় যে, একদিন দিলেন আরেক দিন বন্ধ
রাখলেন ৷ একদিনের দান-দক্ষিণা৩ার পরের দিনের দান-দক্ষিণার জন্যে বাধা হয়ে দাড়ায় না ৷
তোমার অদৃষ্টির কসম, তুমি কি মুহাম্মাদ (সা) এর উপদেশ শুননি ? তিনি তো আল্লাহ্র
নবী ৷ বন্তুত৩ তিনি উপদেশ দিয়েছেন এবং সা৩ তার সাক্ষ্য দিয়েছেন ৷
তুমি যদি তাকওয়া রুপ পাথেয় নিয়ে যেতে না পার এবং মৃতু ভ্যুর পর এমন লোকের সাথী
হতে না পার যে তাকওয়ার পাথেয় নিয়ে গিয়েছে, তবে তুমি নিশ্চয়ই ৷
তুমি লজ্জিত হবে এ জন্যে যে তুমি ওই পাথেয় সপ্রেহকারীর ন্যায় হতে পারলে না এবং
সে যে মহান নিআমতের অপেক্ষায় থাকবে তুমি তার অপেক্ষায় থাকতে পারবে না ৷
তুমি অবশাব্রই মৃ৩ ৩প্রাণী পরিহার করবে ৷ ওগুলোর নিকটেও যাবে না ৷ প্রাণী শিকারের জন্যে
লোহার তীর (জুয়ার উদ্দেশ্যে) ব্যবহার করবে না ৷
কখনো উপাস্য রুপে স্থাপিত প্রতিমার পুজা করো না এবং দেবদেবীর উপাসনা করো না ৷
বরং একমাত্র আল্লাহ্ তা অালার ইবাদত করবে ৷
(তামার জন্যে যার শ্লীলত ড়াহানি হারাম এমন প্রতিবেশিনীয় নিকটও ৫যও না ৷ সম্ভব হলে
বিধিসম্মত ভাবে বিয়ে কর নতুবা তার নিকট থেকে দুরে সরে থাক ৷
মোঃ ১াট্রুষ্ প্রুৰুঠুঘ্রটু৷ ৷ ব্লুহ্রটু৷ ৷ ৷১)
ঘনিষ্ঠ ও নিকটাত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক ছেদ করো না ৷ তাতে তোমার পরিণাম কল্যাণকর
হবে ৷ আর কারারুদ্ধ বন্দী লোকের সাথেও সম্পর্কচ্ছেদ করো না ৷
সকাল, সন্ধ্যায় তাসবীহ পাঠ করো শয়তানের প্রশংসা করো না ৷ একমাত্র আল্লাহ্
তা’আলার প্রশংসা করবে ৷
দীন-দুঃখী ও দুঃস্থ লোক দেখে কখনো ঠাট্রা-বিদ্র্যপ করো না ৷ ,ধন-সষ্পদ মানুষকে
চিরস্থায়ী ও চিরজীবী করে রাখবে তেমন ধারণা কখনো করো না ৷
ইবন হিশাম বলেন, মক্কা অথবা মক্কার নিকটবর্তী পৌছার পর কুরায়শের এক মৃশরিক
লোক তার সম্মুখে এসে দাড়ায় ৷ তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, তিনি জানান
যে ইসলাম গ্রহণের উদ্দেশো রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট তিনি যাবেন ৷ কুরায়শী লোকটি তাকে
বলে, হে আবু বাসীর! ওই মুহাম্মাদ তো ব্যভিচার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ৷ আশা বললেন,
আল্লাহ্র কসম আমার তো বাভিচারের আদৌ কোন প্রয়োজন নেই ৷ লোকটি তখন বলেৰু হে
আবু বাসীর৷ তিনি তো মদ্যপান নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ৷ আশা বললেন, আল্লাহর কসম, মদের
প্রতি তো আম৷ ৷র চরম দৃর্বলত৷ রয়েছে ৷ ঠিক আছে আ মিা৩ তাহলে এবারকার মত ফিরে যাব এবং
এই এক বছর তৃপ্তি সহকারে মদ পান করে নেব ৷৩ তারপর মুহাম্মাদ (সা ) এর নিকট ফিরে এসে
ইসলাম গ্রহণ করব ৷ এ য ত্রা৷ তিনি ফিরে যান ৷ ওই বছরেই তার মৃত্যু হয় ৷ পুনরায় রাসুলুল্লাহ্
(সা ) এর নিকট ফিরে আসার সুযােগ৩ তার হয়ে উঠেনি ৷
এ ঘটনা ইবন হিশাম এখানে উল্লেখ করেছেন ৷ এটি এখানে উল্লেখ করার মুহাম্মাদ ইবন
ইসহাক কর্তৃক ইবন হিশাম অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে ; তার একটি এই যে, মদপান হারাম
ঘোষণা করা হয়েছিল বনু নাযীর যুদ্ধের পর মদীনাতে ৷ এর বিস্তারিত বিবরণ পরে আসবে ৷
তাহলে স্পষ্ট বুঝা যায় যে ইসলাম গ্রহণের জন্যে করি আশার মঈ ৷ যাত্রা ৷অনুষ্ঠিত হয়েছিল
হিজরতের পর ৷ তার কবি৩ায়ও সে ইঙ্গিত পাওয়া যায় ৷ তিনি বলেছেন :
হে প্রশ্নকারী! আমার গন্তব্য কোথায় ? বন্তুত ইয়াছরিববাসীদের সাথে আমার সাক্ষ্যতের
প্রতিশ্রুতি রয়েছে ৷
সুতরাং ইবন হিশামের উচিত ছিল এ ঘটনাটি এখানে উল্লেখ না করে হিজরতের পরের
কোন এক অধ্যায়ে উল্লেখ করা ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
সুহায়লী বলেন, সম্ভবত এটি ইবন হিশাম এ্যাবং৩ তার অনুসরণকরািদের দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে ৷
কারণ এ ব্যাপারে সবাই একমত যে, মদ্যপান নিষিদ্ধ হওয়ার বিধান নাযিল হয়েছে উহুদ যুদ্ধের
পর মদীনায় ৷
কেউ কেউ বলেছেন যে ব্যক্তি পথিমধ্যে আশাকে বাধা দিয়েছিল এবং ঐ বাক্য লাপ
করেছিল, যে ছিল আবু জাহ্ল ইবন হিশাম ৷ উত ব৷ ইবন রাবীআর ঘরে বসে সে আশাকে
এসব কথা বলেছিল ৷
আবু উবায়দা উল্লেখ করেছেন যে, আমির ইবন তুফায়লই আশাকে ওই সব কথা
বলেছিলেন এবং তা বলেছিলেন যখন তিনি রাসৃলুল্লাহ্ (না)-এর সাক্ষাতের জন্যে মক্কায়
যাচ্ছিলেন ৷ আবুউবায়দা এও বলেছেন যে, “পরের বছর রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট এসে আমি
ইসলাম গ্রহণ করব” আশার এই বক্তব্য তাকে কুফরীর সীমানা থেকে বের করে ঈমানের
গণ্ডিভুক্ত করতে পারেনি ৷ অর্থাৎ এ বক্তব্য দ্বারা তিনি যে মুসলমান বলে গণ্য হবেন না এ
ব্যাপারে সকলে একমত ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
এরপর ইবন ইসহাক এখানে ইরাশী, এর ঘটনা উল্লেখ করেছেন ৷ ইরাশী থেকে আবু
জাহ্ল যে উট ক্রয় করেছিল, তার মুল্য বুঝে নেয়ার জন্যে ওই লোক কিভাবে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর নিকট এসেছিল এবং কিভাবে আল্লাহ্ তাআল৷ অনুেজাহ্লকে লাঞ্ছিত করেছিলেন যে,
শেষ পর্যন্ত বাসুলুল্লাহ্ (সা) এর ধমক খেয়ে সে উটের মুল্য পরিশোধ করেছিল, তা যে সবই তিনি
উল্লেখ করেছেন ৷ ইণ্ডোপুর্বে ওহী নাযিলের সুচনা এবং সে সময়ে মুসলমানদের প্ৰতি
মুশ ৷বিকদের জুলুম-অ৩ আচার অধ্যায়ে আমরা ইরাশীর ঘটনা উল্লেখ করেছি ৷
রাসুলুল্লাহ্ (না) এর সঙ্গে রুকানার কুন্তি এবং রাসুলুল্লাহ্
(না) এর আহ্বানে বৃক্ষের আগমন
ইবন ইসহাক বলেন, আবু ইসহাক ইবন ইয়ড়াসার বলেছেন, রুকানা ইবন আবৃদ ইয়াযীদ
ইবন হাশিম ইবন মুত্তালিব ইবন আবৃদ মানাফ ছিল কুরায়শ বংশের সেরা মল্লবীর ৷ এক দিন
এক পিরিসংকটে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে তার সাক্ষাত হয় ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না) তাকে বললেন,
হে রুকানা! তুমি কি আল্লাহ্কে ভয় করবে না আর আমি তোমাংক যে দিকে আহবান করছি
তাতে কি সাড়া দেবে না ? সে বলল, আমি যদি বিশ্বাস করতাম যে, আপনি যা বলছেন তা
সত্য , তাহলে আমি অবশ্যই আপনার অনুসরণ করতাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন তাকে বললেন,
আচ্ছা, বল দেখি, আমি যদি কুন্তিতে তোমাকে পরাজিত করতে পারি, তবে কি তুমি বিশ্বাস
করবে যে, আমার আনীত ধর্ম সত্য ? সে বলল, হীদ্ব, বিশ্বাস করব ৷ তিনি বললেন, তবে প্রস্তুত
হও ৷ এসো, কুস্তিতে আমি তোমাকে পরাস্ত করি! যে মতে কুন্তি শুরু হল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (মা)
তাকে মাটিতে ফেলে এমন জোরে চেপে ধরলেন যে, তার কিছুই করার শক্তি রইল না ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে ছেড়ে দিলেন ৷ সে বলল, পুনরায় শক্তিপরীক্ষা হোক ৷ পুনরায় কুন্তি শুরু
হল ৷ এবারও সে পরাস্ত হল ৷ সে বলল, হে মুহাম্মাদ ! আল্লাহ্র কসম, এটা তো পরম বিস্ময়ের
কথা যে, আপনি আমাকে পরাজিত করলেন ৷ রাসুলুল্লড়াহ্ (সা) বললেন, তুমি যদি আল্লাহ্কে ভয়
কর এবং আমার অনুসরণ কর, তবে আমি তোমাকে আরো অধিক বিস্ময়কর ঘটনা দেখাতে
পারি ৷ সে জিজ্ঞেস করল, সেটি কি ? তিনি বললেন, ওই যে, দুরে বুক্ষ দেখছ, আমি সেটিকে
ডাকলে সেটি আমার নিকট এসে পৌছবে ৷ রুকানা বলল, তবে সেটিকে ডাকুন ৷ তিনি
বৃক্ষটিকে ডাকলেন ৷ সেটি এগিয়ে এল এবং রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সম্মুখে দাড়িয়ে গেল ৷ এবার
তিনি সেটিকে নিজের জায়গায় ফিরে যেতে নির্দেশ দিলেন ৷ সেটি স্বন্থানে ফিরে গেল ৷
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রুকানা তার সম্প্রদায়ের নিকট গিয়ে বলল, হে বনু আবৃদ মানাফ !
তোমাদের এই লোককে নিয়ে তোমরা বিশ্ববাসীকে জাদু প্রতিযোগিতায় চ্যালেঞ্জ করতে পারে৷ ৷
আল্পাহ্র কসম, তার চাইতে বড় জাদুকর আমি কখনো দেখিনি ৷ সে যা দেখেছে এবং
রাসুলুল্লাহ্ (না) যা করেছেন তার সবই সে তাদেরকে জানাল ৷ ইবন ইসহাক এ ঘটনা
মুরসালভাবে এরুপই বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম আবু দাউদ ও তিরমিযী (র) আবুল হাসান আসকালানীর সনদে রুকানা সুত্রে বর্ণনা
করেন যে, রুকানা একদিন রাসুলুল্লাহ্ (না) এর সাথে কুন্তি লড়েছিল ৷ কুন্তি লড়াইয়ে রাসুলুল্লাহ্