ইয়৷ রাসুলাল্লাহ! ক্ষুধা ও অনাহাব্রে আমরা কাহিল হয়ে পড়েছি ৷ সুতরাং আপনি আমাদেরকে
বাহনের উট জবাই করে খাওয়ার অনুমতি দিন ৷ তখন তিনি তাদেরকে, ই৷ বলে অনুমতি
দিলেন ৷ উমর (রা) যখন তা অবহিত হলেন, তখন তিনি আল্লাহর রাসুলের কাছে এসে
বললেন, হে আল্লাহর নবী ! এ আপনি কী করেছেন ? ণ্লাকাদৰাক বাহন জবাইয়ের নির্দেশ
দিয়েছেন, তাহলে তারা আরোহণ করবে কিসে ? তখন নবী করীম(সা) বলেন, হে খাত্তারপুত্রা
তোমার অভিমত কী ? জবাবে তিনি বললেন, আমার মত হল, আপনি তাদেরকে তাদের
অবশিষ্ট পাথেয় নিয়ে আমার নিভ্রু র্দশ দেবেন ৷ তারপর সেগুলো একটি কাপড়ে একত্র করে
তাদের জন্য দু আ করবেন ৷ তখন তিনি তাদেরকে সেরুপ নির্দেশ দিলেন ৷ তারা তাদের
অবশিষ্ট পাখেয় একটি কাপড়ে একত্র করলেন এবং তিনি তাদের জন্য (বরকতের) দু আ
করলেন ৷ তারপর তিনি বললেন, তোমরা তোমাদের পাত্রসমুহ নিয়ে এসো ৷ তখন প্রত্যেকে
নিজ নিজ পাত্র পুর্ণ করে নিল ৷ তারপর তিনি রওয়ান৷ হওয়ার ঘোষণা দিলেন ৷ তারপর তারা
যখন সে স্থান অতিক্রম করলেন তখন বৃষ্টিসিক্ত হলেন ৷ ফলে তিনি বাহন থেকে অবতরণ
করলেন এবং তার সফরসঙ্গীগণও অবতরণ করলেন ৷ তার৷ সকলে আসমানী পানি পান
করলেন ৷
এ সময় তিন ব্যক্তির আগমন বটল ৷ তাদের দু জন আল্লাহর রাসুলের সাথে বসল আর
তভীয়জন উপেক্ষা করে চলে গেল ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আমি কি তােমাদেরকে
তিন ব্যক্তির অবস্থা অবহিত করব না ? একজন আল্লাহ থেকে লজ্জাবাে ধ করেছে তাই আল্লাহ্ও
তার থেকে লজ্জাবােধ করেছেন ৷ আর অন্য জন তওবা করে এগিয়ে এস্যেছ তাই আল্লাহ্ও
তার তওবা কবুল করেছেন ৷ তভীয়জন উপেক্ষা করেছে, তাই আল্লাহ্ও তাকে উপেক্ষা
করেছেন ৷ এরপর বায্যাৱ বলেন, আবু হানীস এই সনদে এই হাদীস ব্যতীত কোন হাদীস
ব্লিওয়ায়াত করেছেন বলে আমাদের জানা নেই ৷ অবশ্য, বায়হাকী হুসায়ন ইবন বুশরান
ইব্রাহীম ইবন আবদুর রহমান ইবন আবদুল্লাহ ইবন আবু রাবী’ আ সুত্রে হাদীসখানি রিওয়ায়াত
করেছেন যে, তিনি (রাবী আ) আবু হানীস আল গিফারী থেকে শুনেছেন ৷ তারপর তিনি তা
উল্লেখ করেহ্নে৷ ৷
এ ঘটনা প্ৰস্ত্ত্বঙ্গ হযরত উমর সুত্রে আরেকটি হাদীস
হাফিয আবু ইয়ালা, ইবন হিশাম অর্থাৎ মুহাম্মদ ইবন যায়দ উমর (রা) সুত্রে বর্ণনা
করেন যে, তিনি বলেছেন, একবার আমরা কোন এক যুদ্ধাভিযানে রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর সাথে
ছিলাম ৷ (শত্রুর কাছাকাছি পৌছার পর) আমরা তাকে রললাম, ই য়া রাসুলাল্লাহ্৷ শত্রু তাে
প্রায় পৌছে গেল অথচ তার৷ পানাহারে তৃপ্ত আর আমাদের লোকজন ক্ষুধার্ত ৷ তখন
আনসারগণ বললেন, আমরা কি আমাদের পানিবাহী উটগুলি জবা ই করে লোকদের খাওয়াতে
পারি না ? তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, যার কাছে বাড়তি খাবার আছে যে তা নিয়ে
আসুক ৷ তখন একেক জন মুদৃপরিমাণ, সা’ পরিমাণ এবং তার কমবেশি আনতে লাগল ৷
এভাবে গোটা ফৌজ থেকে বিশ সা’র অধিক পরিমাণ খাদ্য সংগৃহীত হল ৷ এরপর আল্লাহর
নবী তার পাশে বসে ররকতেবুদুআ করলেন এবং বললেন তোমরা এখান থেকে নিতে থাক,
তবে নিতে গিয়ে কেউ তাড়াহুড়া বা হৈ-হল্লা করবে না ৷ তখন একেকজন তার থলে ও বস্তায়
তা নিতে লাগল এবং তাদের অন্যান্য পাত্রেও নিল ৷ এমনকি কেউ কেউ তাদের আমার আস্তিন
বেধে তাও ভরে নিতে লাগল ৷ এভাবে তাদের নেয়া শেষ হল ৷ কিন্তু খাদ্য যে পরিমাণ ছিল
তাই রয়ে গেল ৷ তারপর নবী করীম রাসুলুল্লাহ্ (না) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ
ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আমি তার রাসুল, আর যে ব্যক্তিই একথা সত্য বলে বিশ্বাস
করে আসবে, ভাবেই আল্লাহ্ জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন ৷ আর আবু ইয়া’লাণ্ড
ইসহাক ইবন ইসমাঈল তালেকানী ইয়াযীদ ইবন আবু যিয়াদ সুত্রে হাদীসখানি
রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আর তার পুর্বের হাদীসটি তার যথার্থতার প্রমাণস্বরুপ এবং তা তার
পুর্বের হাদীসের মুতাবি ৷
সালামা ইবনুল আকওয়া সুত্রে এ প্রসঙ্গে আরেকটি হাদীস
হাফিয আবু ইয়া’লা, মুহাম্মদ ইবন বাশৃশার ইয়াস ইবন সালামার পিতা সুত্রে বর্ণনা
করেন যে, তিনি বলেছেন, খায়বার অভিযানে আমরা রাসুলুল্পাহ্ (সা)-এর সাথে ছিলাম ৷ এ
সময় তিনি একবার আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন আমাদের কাছে যে পাখেয় (অর্থাৎ খেজুর)
অবশিষ্ট রয়েছে তা একত্র করতে ৷ তখন একটি চামড়ার দস্তরখান বিছানাে হল এবং তার উপর
আমরা আমাদের পাথেয়গুলো ছড়িয়ে দিলাম ৷ রাবী বলেন, তখন আমি পায়ে ভর দিয়ে উচু
হয়ে তা দেখলাম এবং তাকে একটি বকরীর নাড়িভুড়ি পরিমাণ অনুমান করলাম ৷ অথচ
আমাদের সংখ্যা ছিল চৌদ্দশ’ ৷ রাবী বলেন, এরপর আমরা (সকলে) তা থেকে পেলাম ৷
তারপর আমি আবার উচু হয়ে তা দেখলাম ৷ এবারও আমার অনুমান হল, যে তা’ একটি
বকরীর নাড়িভৃড়ি পরিমাণ হবে ৷ এ সময় রাসুলুল্পাহ্ (না) বলেন, উযুর কোন পানি আছে কি ?
রাবী বলেন, তখন এক ব্যক্তি তার পাত্রে সামান্য পরিমাণ পানি নিয়ে আসল ৷ তিনি তা নিয়ে
একটি পেয়ালায় ঢাললেন ৷ রাবী বলেন, এরপর আমরা সকলে ইচ্ছামত পানি ঢেলে তা থেকে
উযু করলাম আর তখন আমাদের সংখ্যা ছিল চৌদ্দশ’ ৷ রাবী বলেন, তখন কিছুসংখ্যক পােক
এসে বলল, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! আর কি উযু (করার সুযোগ) নেই ৷ তখন তিনি বললেন, উবু পর্ব
শেষ ৷
আর মুসলিম, আহমদ ইবন ইউসুফ আসৃসুলামী ইয়াস ইবন সালামার পিতা সুত্রে
বর্ণনা করেন ৷ তাতে তিনি বলেন, তারপর আমরা (তা থেকে) পেটভরে পেলাম এবং আমাদের
থলেসমুহ ভরে নিলাম ৷ এছাড়া পরিখ৷ খনন প্রসঙ্গে আলোচনায় ন্ ইবন ইসহাক যা উল্লেখ
করেছেন ৷ তা ইতিপুর্বে আলোচিত হয়েছে সেখানে তিনি বলেন যে, আমাকে সাঈদ ইবন মীন৷
বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বর্ণনা করেন যে, বশীর ইবন সা’দের এক কন্যা অর্থাৎ নু’মান ইবন
বশীরের বোন বলেন, একবার আমার আষ্ম৷ উমরা বিনত রাওয়াহ ৷ আমাকে ডেকে এক ঝুড়ি
থেজ্জা আমার কাপড়ে দিয়ে বললেন; মা? এই নাও তোমার আবব্৷ ও মামাৱ খাবার পৌছে
দিয়ে এসো! বশীর তনয়া বলেন, তখন আমি তা’ নিয়ে অগ্রসর হলাম এবং আমার আব্বা ও
মামাকে খোজার পথে রাসুলুল্পাহ্ (সা)-কে অতিক্রম করলাম ৷ তখন তিনি আমাকে বললেন,
এদিকে এসো তো না ৷ তোমার কাছে এগুলো কী ? তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ ৷ এগুলো খেজুর, আমার আষ্ম৷ তা দিয়ে আমাকে আমার আব্বা বশীর ইবন সাদ
এবং মামা আবদৃল্লাহ্ ইবন রাওয়াহার কাছে পাঠিয়েহ্নো, তারা তা খারেন ৷ তখন তিনি
বললেন, তুমি তা এদিকে দাও ! তিনি বলেন, তখন আমি তা আল্লাহ্র রাসুলের হাতে ঢেলে
দিলাম কিত্ত্ব তাতে তার আজলা ভরল না ৷ এরপর তার নির্দেশে একটি কাপড় বিছানাে হল ৷