জিন সৃষ্টি ও শয়তানের কাহিনী
অর্থাৎ মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন পােড়া মাটির মত শুকনো মাটি থেকে এবং জিনকে
সৃষ্টি করেছেন ধৌয়াবিহীন অগ্নিশিখা থেকে ৷ সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের
কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে ৷ (৫৫৪ ১ : ১৬)
অর্থাৎ আমি তাে মানুষ সৃষ্টি করেছি হীচে-ঢালা শুকনো ঠনঠনে মাটি থেকে এবং তার
পুর্বে সৃষ্টি করেছি জিন লু-হাওয়ার আগুন থেকে ৷ ( ১৫ : ২৬ ২ ৭ )
ইবন আব্বাস (রা) , ইক্রিমা, মুজাহিদ ও হাসান (র) প্রমুখ বলেন, এ ৷ এ£ ব্লু এ @ এন্
অর্থ এ্যা ৷ ব্রএাষ্ ;,ষ্ অর্থাৎ অগ্নিক্ষুলিঙ্গের শীর্ষ প্রান্ত থেকে ৷ অন্য এক র্বর্ণনড়ায় আছে
যে, এ অর্থাৎ তার নির্যাস ও সর্বোত্তম অং
থেকে ৷ আর একটু আগে আমরা যুহরী, উরওয়া ও আয়েশা (রা) সুত্রে উল্লেখ করে এসেছি
যে, আয়েশা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ফেরেশতাকুলকে নুর থেকে এবং জিন
জাতিকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে ৷ আর আদম (আ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে সে উপাদান
দ্বারা যার বিবরণ তােমাদেরকে দেয়া হয়েছে ৷ (মুসলিম)
বেশ কিছু তাফসীর বিশেষজ্ঞ বলেছেন যে, জিন জাতিকে আদম (আ)-এর পুর্কেহ সৃষ্টি
করা হয় ৷ তাদের পুর্বে পৃথিবীতে ছিল ও বিনদের (এরা জিনদেরই একটি সম্প্রদায় বিশেষ)
বসবাস ছিল ৷ আল্লাহ্ তাআলা জিনদেরকে তাদের উপর বিজয়ী করলে তারা তাদের কতককে
হত্যা করে এবং কতককে পৃথিবী থেকে নির্বাসন দেয় ৷ তারপর নিজেরাই সেখানে বসবাস
করতে শুরু করে ৷
সুদ্দী (র) তার তাফসীরে ইবন আব্বাস (রা) ও ইবন মাসউদ (রা) প্রমুখ সাহারা থেকে
বর্ণনা করেন যে, আল্পাহ্ তাআলা বা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন তা সৃষ্টি করা শেষ করে আরশে
সমাসীন হন ৷ তারপর ইবলীসকে দুনিয়ার ফেরেশতাদের প্রধান নিযুক্ত করেন ৷ ইবলীস
ফেরেশতাদেরই একটি গোত্র ত্রভুক্ত ছিল যাদেরকে জিন বলা হতো ৷ তাদেরকে জিন নামে এজন্য
অতি ত করা হতো, কারণ তারা হলো জান্নাবুতর রক্ষীবাহিনী ৷ ইবলীসও তার ফেরেশতাদের
সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের দাযিতু পালন করত ৷ এক পর্যায়ে তার মনে এভারের উদয় হয় যে,
ফেরেশতাদের উপর আমার শ্রেষ্ঠতৃ আছে বলেই তো আল্লাহ আমাকে এ ক্ষমতা দান করেছেন ৷
যাহ্হাক (র) ইবন আব্বাস (বা) থেকে বর্ণনা করেন যে, জিনরা যখন পৃথিবীতে বিপর্যয়
সৃষ্টি করে ও রক্তপাত করে তখন আল্লাহ্ তা জানা ইবলীসকে তাদের নিকট প্রেরণ করেন ৷ তার
সঙ্গে ছিল ফেরেশতাগণের একটি বাহিনী ৷ তারা কতককে হত্যা করে এবং কতককে পৃথিবী
থেকে তাড়িয়ে বিভিন্ন দ্বীপে নির্বাসন দেয় ৷
মুহাম্মদ ইবন ইসহাক (র) ইবন আব্বাস (বা) থেকে বর্ণনা করেন :য , পাপে লিপ্ত হওয়ার
পুর্বে ইবলীসের নাম ছিল আযাযীল ৷ সে ছিল পৃথিবীর বাসিন্দা ৷ অধ্যবসায় ও জ্ঞানের দিক
থেকে ফেরেশতাদের মধ্যে সেই ছিল সকলের সেরা ৷ সে যে সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল
তাদেরকে জিন বলা হয় ৷
ইবন আবু হাতিম (র) ইবন আব্বাস (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, ইবলীসের নাম ছিল
আযাযীল ৷ চার ডানাবিশিষ্ট ফোরশতাগণের মধ্যে যে ছিল সকলের সেরা ৷ হাজ্বজাজ ও ইবন
জুরায়েজের সুত্রে বর্ণিত আছে যে, ইবন আব্বাস (বা) বলেছেন, ইবলীস গোত্রের দিক থেকে
আর সব ফেরেশতার চেয়ে অধিক মর্যাদাসম্পন্ন ও সম্মানিত ছিল ৷ সে ছিল জান্নাতসমুহের
রক্ষণাবেক্ষণকাবী ৷৩ তার হাতে ছিল নিম্ন আসমান ও পৃথিবীর কর্তৃহ্ ৷
সালিহ (র) ইবন আব্বাস (যা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন : ইবলীস আকাশ ও
পৃথিবীর মধ্যবর্তী সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করত ৷ ইবন জারীর এ বর্ণনাটি উদ্ধৃত করেছেন ৷ কাতাদা
(র) সাঈদ ইবন মৃসায়্যাব (র) থেকে বর্ণনা করেন যে, ইবলীস নিম্ন আকাশের ফেরেশতাগণের
প্রধান ছিল ৷ হাসান বসরী (র) বলেন, ইবলীস এক পলকেব জন্যও ফেরেশত ৷র দলভুক্ত ছিল
না ৷ সে হলো আদি জিন, যেমন আদম হলেন আদি মানব ৷ শাহ্ব ইবন হাওশাব প্রমুখ বলেন,
ইবলীস ঐসব জিনের একজন ছিল, যাদেরকে ফেরেশতাগণ বিতাড়িত করে দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু
ইবলীসকে কয়েকজন ফেরেশতা বন্দী করে আকাশে নিয়ে যায় ৷ ইবন জারীর (র) এ কথাটি
বর্ণনা করেছেন ৷
তারা বলেন, তারপর যখন আল্লাহ তাআলা আদম (আ) কে সৃষ্টি করার সংকল্প করেন
যাতে পৃথিবীতে ৩তিনি এবং পরে তার বা শধরগণ বসবাস করতে পারে এবং তিনি মাটি দ্বারা
তার দেহাবয়ব তৈ রি করেন, তখন জিনদের প্রধান এবং৩ তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ইবাদ৩ কারী
আযাযীল বা ইবলীস৩ ৷র চারদিকে ঘুরতে শুরু করে ৷ যখন সে দেখতে পেল যে তাএকটি
শুন্য গর্ত, মুর্তি ৷ তখন সে তাচ করতে ৩পারল যে, এটি এমন একটি দেহাবয়ব যার আত্মসংয
থাকবে না ৷ তারপর সে বলল, যদি৫ তামার উপর আমাকে ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে অবশ্যই
আমি তোমাকে ধ্ব স করব আর যদি আমার উপর তোমাকে ক্ষমতা দেয়৷ হয়, তাহলে আমি
অবশ্যই তোমার অবাধ্যতা করব ৷ তারপর যখন আল্লাহ তা আল৷ আদমের মধ্যে তার রুহের
সঞ্চার করেন এবং তাকে সিজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে আদেশ দেন, তখন প্রবল
হিংসাবশে ইবলীস র্তাকে সিজদ৷ করা থেকে বিরত থাকে এবং বলে, আমি তার চাইতে উত্তম ৷
আমাকে তুমি আগুন থেকে সৃষ্টি করেছ ৷ আর তাকে সৃষ্টি করেছ কাদা মাটি থেকে ৷ এভাবে
ইবলীস আল্লাহ্ তা জানার আদেশ অমান্য করে এবং মহান পতিপালকের বিরুদ্ধে আপত্তি
তোলে ৷ সে ভুল যুক্তি প্রদর্শন করে তার প্রতিপালকের রহমত থেকে দুরে সরে যায় এবং
ইবাদত করে যে মর্যাদা লাভ করেছিল তা থেকে বিচ্যুৎ হয় ৷ উল্লেখ্য যে , ইবলীস
ফেরেশতাগণের মতই ছিল বটে ৷ তবে সে ফেরেশত৷ জাতিভৃক্ত ছিল না ৷ কারণ সে হলো
আগুনের সৃষ্টি আর ফেরেশতারা হলেন নুরের সৃষ্টি ৷ এভাবে তার সর্বাধিক প্রয়োজনের মুহুর্তে
তার প্রকৃতি তাকে প্রভাবিত করে এবং সে তার মুলের দিকে ফিরে যায় ৷
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন০ ং
অর্থাৎ তখন ফেরেশ৩ ৷গণ সকলেই একত্রে সিজদ৷ করল কিভু ইবলীস করল না ৷ সে
সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে ৩অম্বীকার করল ৷ ( ১ ৫ ৩০ )
আল্লাহ্ তা আলা আরো বলেন ,
অর্থাৎ এবং স্মরণ কর, আমি যখন ফেরেশতাদেরকে বলেছিলড়াম, আদমের প্রতি সিজদা
কর , তখন সকলেই সিজদ৷ করল ইবলীস ব্যতীত ৷ সে জিনদের একজন, সে তার প্ৰতিপালকের
আদেশ অমান্য করল ৷ তবে কি তোমরা আমার পরিবর্তে তাকে এবং তার বংশধরকে
অভিভাবকরুপে গ্রহণ করছ ? তারা তো তোমাদের শত্রু ৷ জালিমদের এ বিনিময় কত নিকৃষ্ট ৷
(১৮ : ৫০)
অবশেষে ইবলীসকে উর্ধ্বজগত থেকে নামিয়ে দেয়৷ হয় এবং সেখানে কোনরকম বাস
করতে পারে এতট্কু স্থানও তার জন্য হারাম করে দেয়৷ হয় ৷ অগতা৷ সে অপদন্থ লাঞ্ছিত
ধিকৃত ও বিতাড়িত অবস্থায় পৃথিবীতে নেমে আসে ৷ সঙ্গে সঙ্গে তাকে এবং তার অনুসারী জিন
ও মানুষের জন্য জ হান্নামের সতক বাণী জানিয়ে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু৷ তা সত্বেও সে সকল পথে
ও ঘীটিতে আদম-সম্ভানদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করে চেষ্টা চালায় ৷ যেমন
সে বলেছিল ং
এ
অর্থাৎ যে বলল, বলুন তাকে যে আপনি আমার উপর মর্যাদা দান করলেন কেন ?
কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দেন তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ব্যতীত তার
বংশধরকে কর্তৃত্মাধীন করে ফেলব ৷
আল্লাহ বললেন, যাও, তাদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করবে, জাহান্নড়ামই তোমাদের
সকলের শাস্তি — পুর্ণ শাস্তি ৷ তোমার আহ্বানে তাদের মধ্যে যাকে পার তুমি পদশ্বলিত কর,
তোমার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী দ্বারা তাদেরকে আক্রমণ কর এবং ধনে ও
সম্ভান-সন্তুতিতে শরীক হয়ে যাও এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দাও ৷ শয়তান তাদেরকে যে
প্রতিশ্রুতি দেয় তা ছলনা মাত্র ৷
আমার বান্দাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই ৷ কর্মবিধায়ক হিসেবে তোমার
প্রতিপালবইি যথেষ্ট ৷ (১ ৭ : ৬২-৬৫)
পরে আদম (আ)-এর সৃষ্টির আলোচনায় আমরা কাহিনীটি বিস্তারিতডাবে উল্লেখ করব ৷
সারকথা, জিন জাতিকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে ৷ তারা আদম সন্তানদের মত পানড়াহার
ও বংশ বিস্তার করে ৷ তাদের কতক ঈমানদার ও কতক কাফির ৷
যেমন আল্লাহ তাআলা তাদের সম্পর্কে সুরা আহ্কাফে বলেন ং
অর্থাৎ স্মরণ কর , আমি তোমার প্ৰতি আকৃষ্ট করেছিলাম একদল জিনকে, যারা কুরআন
পাঠ শুনছিল, যখন তারা তার নিকট উপস্থিত হলো তারা একে অপরকে বলতে লাগল, চুপ
করে শুন ! যখন কুরআন পাঠ সমাপ্ত হলো , তারা তাদের সম্প্রদায়ের নিকট সতর্ককারীরুপে ফিরে
গেল ৷
তারা বলেছিল, হে আমাদের সম্প্রদায় ৷ আমরা এমন এক কিতাবের পাঠ শুনে এসেছি যা
অবতীর্ণ হয়েছে মুসার পরে, যা তার পুর্ববর্তী কিতাবকে সমর্থন করে এবং সত্য ও সরল পথের
দিকে পরিচালিত করে ৷ ণ্হ আমাদের সম্প্রদায় আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর প্ৰতি সাড়া দাও
এবং তার প্ৰতি বিশ্বাস স্থাপন কর, আল্লাহ্ তোমাদের পাপ ক্ষমা করবেন এবং মর্মস্তুদ শাস্তি
থেকে তোমাদের রক্ষা করবেন ৷
কেউ যদি আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর প্রতি সাড়া না দেয় , তবে সে পৃথিবীতে আল্লাহর
অভিপ্রায় ব্যর্থ করতে পারবে না এবং আল্লাহ ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী থাকবে না ৷
তারাই সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছে ৷ (৪৬ : ২৯-৩ ২)
আল্লাহ্ তাঅ ৷লা বলেন০ ং
অর্থাৎ বল, আমার প্ৰতি ওহী প্রেরিত হয়েছে যে, জিনদের একটি দল মনােযো গ দিয়ে
শুনেছে এবং বলেছে, আমরা তো এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি যা সঠিক পথ-নির্দেশ করে,
ফলে আমরা তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি ৷ আমরা কখনো আমাদের প্রতিপালকের কোন শরিক
স্থির করব না ৷
এবং নিশ্চয় সমুচ্চ আমাদের প্ৰতিপালকের মর্যাদা; তিনি গ্রহণ করেননি কোন পত্নী অথবা
কোন সন্তান ৷ এবং যে আমাদের মধ্যকার নির্বোধ্রা আল্লাহর সম্বন্ধে অতি অবাস্তব উক্তি করত ,
অথচ আমরা মনে করতাম মানুষ এবং জিন আল্লাহ সম্বন্ধে কখনো মিথ্যা আরোপ করবে না ৷
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (১ম খণ্ড) ১৯-
আর যে কতিপয় মানুষ কতক জ্যিনর শরণ নিত, ফলে তা ৷রা জিনদের অহংকার বাড়িয়ে
দিত ৷ আর জিনরা বলেছিল, তােমা দের মত মানুষও মনে করে যে, মৃত্যুর পর আল্লাহ কাউকেও
পুনরুথিত করবেন না ৷
এবং আমরা চেয়েছিলাম আকাশের তথ্য সংগ্নহ করতে কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম কঠোর
প্রহরী ও উল্কাপিণ্ড দ্বারা আকাশ পরিপুর্ণ; আর পুর্বে আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাটিতে সংবাদ
শোনার জন্য বসতাম, কিন্তু এখন কেউ স বাদ শুনতে চাইলে সে তার উপর নিক্ষেপের জন্য
প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ডের সম্মুখীন হয় ৷
আমরা জানি না জগদ্বাসীর অমঙ্গলই অভিপ্রেত , না তাদের পালনকর্তা তাদের মঙ্গল সাধন
করার ইচ্ছা রাখেন ৷ এবং আমাদের কতক সৎকর্মপরায়ণ এবং কতক তার ব্যতিক্রম, আমরা
ছিলাম বিভিন্ন পথের অনুসারী; এখন আমরা বুঝেন্থি যে, আমরা পৃথিবীতে আল্লাহ্কে পরাভুত
করতে পারব না এবং পলায়ন করেও র্তাকে ব্যর্থ করতে পারব না ৷
আমরা যখন পথ নির্দেণক বাণী শুনলাম তখন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম ৷ যে ব্যক্তি
তার প্রতিপালকের প্ৰতি বিশ্বাস করে তার কোন ক্ষতি ও কোন অন্যায়ের আশংকা থাকবে না ৷
আমাদের কতক আত্মসমর্পণকারী, এবং কতক সীমালঙ্ঘনকারী ৷ যায়৷ আত্মসমর্পণ করে তারা
সুনিশ্চিতভাবে সত্য পথ বেছে লয় ৷ অপরপক্ষে সীমা হুঘনকারী তো জাহান্নামেরই ইন্ধন ৷
বা যদি সত্য পথে প্রতিষ্ঠিত থাকত তাদেরকে আমি প্রচুর রাবি বর্ষণের মাধ্যমে সমৃদ্ধ
করতাম, যা ৷দিয়ে আমি তাদেরকে পরীক্ষা কর৩াম ৷ যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের স্মরণ থেকে
বিমুখ হয়, তিনি তাকে দুঃসহ শাস্তিতে প্রবেশ করাবেন ৷ ( ৭২ ১ ১ ৭ )
সুরা আহকাফের শেষে আমরা এ সুরাটির তাফসীব এবং পুর্ণ কাহিনী উল্লেখ করেছি এবং
সেখানে এ সং ×ক্রাত্ত হাদীসসমুহও উল্লেখ করেছি ৷
এরা ছিল নাসীবীন এর জিনদের একটি দল ৷ কোন কোন বর্ণনা মতে ,তারা ছিল বুসরার
জিন ৷ রাসুলুল্লাহ (না) মক্কাভুমির বৎনে নাখলা য় তার সঙ্গীদের নিয়ে দাড়িয়ে নামায
পড়ছিলেন ৷ এ সময় তারা তার নিকট দিয়ে অতিক্রমকালে থেমে মনোযোগ সহকারে তার
কুরআন তিলাওয়াত শুনতে থাকে ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ (না) তাদের নিয়ে সারারাত ধরে বৈঠক
করেন ৷ এ সময় তা ৷রা রাসুলুল্লাহ (সা) কে তার আদেশ নিষেধ সং ×ক্রাম্ভ কিছু বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন
করে ৷ তারা তাকে খাদ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি তাদেরকে বললেনং : যেসব হাড়ের উপর
আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হবে সেগুলোকে তোমরা গোশতে পরিপুর্ণ পাবে ৷ আর গােবর মাত্রই
তোমাদের জীব-জানােয়ারের খাদ্য ৷ আর নবী করীম (সা) এ দুটো বস্তু দ্বারা ইসতিনজা করতে
নিষেধ করে বলেছেন : এ দৃটো বস্তু তোমাদের ভাইদের (জিনের) খাদ্য ৷ এবং রাস্তায় পেশার
করতে তিনি নিষেধ করেছেন ৷ কারণ, তা জিনদের আবাসস্থল ৷ রাসুলুল্লাহ (সা) তাদেরকে সুরা
আবরাহমান পাঠ করে শুনান ৷ যখনই তিনি ষ্র্দুশুর্বুপুণুব্লুম্ ” ’ র্বু৷ এব্ল (তবে তোমাদের
প্রতিপালকের কোন নিয়ামত তোমরা অস্বীকার করবো) এ আয়া তর্টি এেপঠি করতেন তারা
বলতেড়া, আমাদের প্রনিপালক ৷
তোমার কোন অবদানই আমরা অস্বীকার করি না ৷ প্রাণং র্বৃসা তো সব তােমারই প্রাপ্য ৷
পরবর্তীতে নবী করীম (সা) যখন সােকদেরকে এ সুরাটি পাঠ করে শুনান আর তারা নিশ্চুপ
বসে থাকে, তখন তিনি এ ব্যাপারে জিনদের প্রশংসা করে বললেন : উত্তরদানে তারা
তোমাদের চেয়ে উত্তম ছিল ৷ যতবারই আমি তাদের নিকট ৮,াহুশুর্বৃশু থ্রের্চু ;ৰু৷ এে
আয়াতটি পাঠ করেছি ৩তবারই তারা বলেছিল ;া৷গু ১<াণ্, এ১১৷ ৷ ;,ৰু ;ৰু ট্টা ১াএ
া১৷ ৷ হে আমাদের প্রপািলক৷ তোমার কে ন নিয়ামতই আমরা অস্বীকার করি না ৷ প্রশংসা
তো সব তােমারই প্রাপ্য ৷ ইমাম তিরমিযী (র) যুবায়র (রা) সুত্রে এবং ইবন জায়ীর (র) ও
বাযযার (র) ইবন উমর (রা) সুত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
মুমিন জিনদের ব্যাপারে এ মতভেদ আছে যে, তারা কি জান্নাতে প্রবেশ করবে, না কি
তাদের পুরস্কার শুধু এ ই হবে যে, তাদেরকে আগুন দ্বারা শাস্তি দেয়া হবে না ৷ তবে সঠিক কথা
হলো, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে ৷ কুরআনের বক্তব্যের ব্যাপ্তিই এর প্রমাণ ৷ তাছাড়া আল্লাহ্
তাআলা বলেন :
অর্থাৎ আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় পোষণ করে তার জন্য আছে
দুটো জান্নাত ৷ সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অম্বীকা ৷র করবে ৷
(৫৫ ও ৪৬)
এ আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা জান্নড়াতের কথা উল্লেখ করে জিনদের প্রতি তার অনুগ্নহের
কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ৷ কাংফৌ তারা জান্নাত না পাওয়ার হলে আল্লাহ্ তাআলা
তাদেরকে যেয়ামত দানের ওয়াদার কথা উল্লেখই করতেন না ৷ এ ব্যাপারে এ দলীলটিই যথেষ্ট ৷
ইমাম বুখরী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু সাঈদ খুদরী (বা) রাবী অড়াবদুল্লাহকে বলেন, আমি
তোমাকে দেখতে পাচ্ছি যে, তুমি ছাগল ও মুক্ত প্রাম্ভর পছন্দ কর ৷ অতএব, যখন তুমি তোমার
বকরীর পালে ও মাঠে-ময়দানে থাকবে, তখন উভৈচ্চ৪স্বরে আযান দেবে ৷ কারণ জিন, মানুষ ও
অন্য বস্তু যে-ই মুআষ্যিনের শব্দ শুনতে পায়, কিয়ামতের দিন সে-ই তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে ৷
আবু সাঈদ খুদরী (বা) বলেন, এ কথাটি আমি রাসুলুল্লাহ (সা) থেকে শুনেছি ৷ (বুখারী)
পক্ষান্তরে জিনদের মধ্যে যারা কাফিব , শয়তান এদেবই অন্তর্ভুক্ত ৷ আর তাদের প্রধান নেতা
হলো মানব জাতির আদি পিতা আদম (আ)-এর শত্রু ইবলীস ৷ আল্লাহ্ তাআলা তাকে এবং
তার বংশধরকে আদম (আ) ও তার বংশধরের উপর ক্ষমতা দান করেছেন এবং যারা তার প্রতি
ঈমান আনবে, তার রাসুলগণকে বিশ্বাস করবে ও তার শরীয়াতের অনুসরণ করবে; তিনি
তাদের হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন ৷ যেমন আল্পাহ্ তা আলা বলেন
অর্থাৎ আমার বন্দোদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই ৷ কর্মবিধায়ক হিসেবে তোমার
প্রতিপালকই যথেষ্ট ৷ (১ ৭ : ৬৫)
অন্য আয়াতে তিনি বলেনং :
অর্থাৎ তাদের সম্বন্ধে ইবলীস তার ধারণা সত্য প্রমাণ করল ৷ ফলে তাদের মধ্যে একটি
মু’মিন দল ব্যতীত সকলেই তার অনুসরণ করল; তাদের উপর শয়তানের কোন আধিপ৩ তা ছিল
না ৷ করা আখিরাতে বিশ্বাসী এবৎক করা তাতে সন্দিহান তা প্রকাশ করে দেয়াই ছিল তার
উদ্দেশ্য ৷ তামার প্রতিপালক সর্ববিষয়ের তত্ত্বাবধায়ক (৩৪০ : ২০ ২১
অন্যত্র আল্লাহ তা“আলা বলেনং :
অর্থাৎ হে বনী আদমা শয়তান যেন তােমাদেরকে কিছুওে ই প্রলুব্ধ না করে যেভাবে
তোমাদের পিতা-মাতাকে সে জান্নাত থেকে বহিকৃত করেছিল, তাদের লজ্জান্থান দেখাবার জন্য
ৰিবস্ত্র করেছিল ৷ সে নিজে এবং তার দলবল তােমাদেরকে এমনভাবে দেখে যে, তোমরা
তাদেরকে দেখতে পাও না, যারা ঈমান আসে না শয়৩ানকে আমি তাদের অভিভাবক করেছি ৷
মহান আল্লাহ আরো বলেন ং
অর্থাৎ স্মরণ কর, যখন তোমার প্রদিপ লক ফেরেশ৩ ৷দেরকে বললেন, আমি ছ চে ঢালা
শুকনো ঠনঠনে মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করছি ৷৩ তারপর যখন আমি তাকে সুঠাম করব এবং তার
মধ্যে আমার রুহ্ সঞ্চার করব তখন তোমরা তার প্ৰতি সিজদাবনত হয়ে৷ ৷
তখন ফেরেশতাগণ সকলেই সিজদা করল কিন্তু ইবলীস করল না, সে সিজদাকারীদের
অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকার করল ৷ আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস ৷ তোমার কি হলো যে, তুমি
সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলে না ৷
সে বলল, আপনি ছাচে-ঢালা শুকনো ঠনঠনে মাটি থেকে যে মানুষ সৃষ্টি করেছেন, আমি
তাকে সিজদা করবার নই ৷ তিনি বললেন, তবে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও ক বণ তুমি
বিতাড়িত এবং কর্মফল দিবস পর্যন্ত তোমার প্রতি রইল লা নত ৷
সে বলল, হে আমার প্রতিপালক৷ পুনরুথান দিবস পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দিন ৷ তিনি
বললেন, যাদেরকে অবকাশ দেওয়া হয়েছে তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হলে, অবধারিত সময়
উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত ৷
সে বলল, হে আমার প্রতিপালক ! আপনি যে আমাকে বিপথগামী করলেন তজ্জন্য আমি
পৃথিবীতে মানুষের নিকট পাপ কর্মকে শোভন করে তুলব এবং আমি তাদের সকলকেই
বিপথগামী করব, তবে তাদের মধ্যে তোমার নির্বাচিত বান্দাদেরকে নয় ৷
আল্লাহ বললেন, এটাই আমার নিকট পৌছানাের সরল পথ, বিভ্রান্তদের মধ্যে যারা তোমার
অনুসরণ করবে তারা ব্যতীত আমার বান্দাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা থাকবে না ৷ অবশ্যই
তোমার অনুসারীদের সকলেরই নির্ধারিত স্থান হবে জাহান্নাম; তার সাতটি দরজা আছে প্রতি
দরজার জন্য পৃথক পৃথক দল আছে ৷ (১৫ : ২৮-৪ : )
এ কাহিনী আল্লাহ্ তাআলা সুরা বাকারা, আরাফ, ইসরা, তা-হ৷ ও সাদ-এ উল্লেখ
করেছেন ৷ আমার তাফসীরের কিভাবে যথান্থানে সে সব বিষয়ে আমি আলোচনা করেছি ৷ সকল
প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য ৷ আর আদম (আ) এর কাহিনীতেও তা উপস্থাপন করব ,
ইনশাআল্লাহ ৷
মোটকথা, আল্লাহ্ তাআলা তার বান্দাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য ইবলীসকে কিয়ামত
দিবস পর্যন্ত অবকাশ প্রদান করেন ৷
যেমন আল্লাহ বলেনং :
অর্থাৎ তাদের উপর শয়তানের কোন আধিপত্য ছিল না ৷ কারা আখিরাতে বিশ্বাসী এবং
কারা তাতে সন্দিহান৩ ৷ ৷প্রকাশ করে দেওয়াই ছিল তার উদ্দেশ্য ৷ তোমার প্রতিপালক সর্ব
বিষয়ের তত্ত্বাবধায়ক ৷ (৩৪ং : ২১)
অন্যত্র তিনি বলেনঃ
অর্থাৎ যখন সব কিছুর মীমাংসা হয়ে যাবে তখন শয়তান বলবে, আল্লাহ তােমাদেরকে
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সত্য প্রতিশ্রুতি ৷ আমিও তােমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম , কিন্তু আমি
ভোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করিনি ৷ আমার তো তোমাদের উপর কোন আধিপত্য ছিল
না, আমি কেবল তােমাদেরকে আহ্বান করেছিলাম এবং তোমরা আমার আহ্বানে সাড়া
দিয়েছিলে ৷ সুতরাং তোমরা আমার প্রতি দোষারােপ করো না, তোমরা নিজেদের প্রতি
দােষারােপ কর ৷ আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্য করতে সক্ষম নই এবং তােমরাও আমার
উদ্ধারে সাহায্য করতে সক্ষম নও ৷ তোমরা যে পুর্বে আমাকে আল্লাহর শরীক করেছিলে তার
সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই ৷ জালিমদের জন্য তো মর্মন্তুদ শান্তি আছেই ৷ যারা ঈমান আসে
ও সৎকর্য করে তাদের দাখিল করা হবে জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত ৷ সেখানে তারা
স্থায়ী হয়ে তাদের প্ৰতিপালকের অনুমতিক্রমে ৷ সেখানে৩ তাদের অভিবাদন হবে সালাম ৷ ( ১ : :
২২ ২৩)
ফলকথা, কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী ইবলীস এখনো জীবিত এবং কিয়ামতের দিন পর্যন্ত
অবকাশপ্রাপ্ত ৷ তার প্রতি আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক ৷ সমুদ্র পৃষ্ঠে তার একটি সিং হাসন আছে
আর তাতে সমাসীন হয়ে যেত তার বাহিনী প্রেরণ করে, যারা মানুষের মাঝে অনিষ্ট করে এবং
বিপর্যয় বাধার ৷ তবে আল্লাহ তা জানা আগেই বলে রেখেছেন :
ড্রুদ্বু শয়তানের কৌশল অবশ্যই দুর্বল ৷ (৪ : ৭৬)
মহাপাপের আগে ইবলীসের নাম ছিল আযাযীল ৷ নাক্কাশ বলেন, তার উপনাম হলো আবু
কারদুস ৷ আর এ জন্যই নবী করীম (সা) যখন ইবন সায়ড়াদকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তুমি কি
দেখতে পাও ? সে বলেছিল, আমি পানির উপর একটি সিংহাসন দেখতে পাই ৷ তখন নবী
করীম (সা) তাকে বলেছিলেন, “তুই লাঞ্ছিত হ, তুই কিছুতেই তোর নির্ধারিত সীমা ডিংগাতে
পারবি না ৷ ’ মােটকথা, নবী করীম (না) এ কথা বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার
ভবিষ্যদ্বাণীসমুহের শক্তি হলো সেই শয়তানের প্রদত্ত ৷ যার সিংহাসন সমুদ্রের উপর বিছানাে
বলে সে দেশে থাকে ৷ আর এজন্যই নবী করীম (সা) বলেছিলেন, তুই লাঞ্ছিত হ ৷ কিছুতেই
তুই ভোর সীমা ডিত্পাতে পারবি না ৷ অর্থাৎ কোন রকমেই তুই ভোর হীন ও তুচ্ছ মর্যাদা
অতিক্রম করতে পারৰি৷ না
ইবলীসের সিৎহড়াসন সমুদ্রের উপর অবস্থিত হওয়ায় প্রমাণ হলো, ইমাম আহমদ (র)-এর
হাদীস ৷ তাতে জাবির ইবন আবদুল্লাহ বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ইবলীসের সিৎহাসন
হলো সমুদ্রের উপর ৷ প্রত্যহ সে তার বিভিন্ন বাহিনী প্রেরণ করে, যারা মানুষের মধ্যে হাঙ্গামা
সৃষ্টি করে থাকে ৷ মানুষের জন্য সেরা ফেতনা সৃষ্টি করে যে অনুচর , ইবলীসের নিকট মর্যাদার
সে সকলের চাইতে সেরা ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, জাবির ইবন আবদুল্লাহ (যা) বলেছেন, আমি
রাসুলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি, ইবলীসের সিংহাসন হলো সমুদ্রের উপর ৷ সে তার
বাহিনীসমুহ প্রেরণ করে, যারা জনসমাজে হাঙ্গামা সৃষ্টি করে বেড়ায় ৷ ফেৎনা সৃষ্টিতে যে তাদের
সেরা, তার কাছে সে-ই সকলের বড় ৷ এ সুত্রে ইমাম আহমদ (র) এককডাবে হড়াদীসটি বর্ণনা
করেছেন ৷
জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রা) সুত্রে ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সা) ইবন সায়াদকে জিজ্ঞেস করলেন, তৃমি কী দেখতে পাও ? সে বলল, আমি
পানির উপর কিৎবা (বলল) সমুদ্রের উপর একটি সিংহাসন দেখতে পাচ্ছি, যার আশেপাব্শ
আছে কয়েকটি সাপ ৷ রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, ওটাই ইবলীসের সিংহাসন ৷
ইমাম আহমদ (র) মুসনাদে আবু সাঈদ-এ বর্ণনা করেন যে, আবু সাঈদ (বা) বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সা) ইবন সায়াদকে বললেন, তুমি কী দেখতে পাচ্ছ ? ইবন সায়াদ বলল, আমি
সমুদ্রের উপর একটি সিংহাসন দেখতে পাচ্ছি, যার আশেপাঢো আছে সপ্রািজি ৷ একথা শুনে
রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন চ্ ও যথার্থ বলেছে ৷ ওটাই ইবলীসের সিংহাসন ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, জাবির (বা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
“শয়তান এ ব্যাপারে নিরাশ যে, সালাত আদায়কারীরা তার ইৰাদত করবে ৷ কিন্তু পরস্পরে
বিভেদ সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা তার অব্যাহত রয়েছে ৷
ইমাম মুসলিম (র) জাবির (বা ) সুত্রে বর্ণিত আমাশের হাদীস থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী
করীম (সা) বলেন : “শয়তান তার সিংহাসনকে পানির উপর স্থাপন করে ৷ তারপর জনসমাজে
তার বাহিনীসমুহ প্রেরণ করে ৷ তার দৃষ্টিতে ফেৎনা সৃষ্টি করার যে মত বড়, মর্যাদার সে তার
ড্ড বেশি নৈকটোর অধিকারী ৷ তাদের কেউ একজন আসে আর বলে যে, আমি অমুকের
পেছনে লেগেই থাকি ৷ অবশেষে তাকে এমন অবস্থায় রেখে এসেছি যে, যে এমন এমন জঘনা
কথা বলে বেড়াচ্ছে ৷ একথা শুনে ইবলীস বলে না, আল্লাহর শপথ ৷ তুমি কিছুই করনি ৷
আবার আরেকজন এসে বলে- আমি অমুক ও তার ব্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়েই তবে ছেড়েছি ৷
রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন, একথা শুনে শয়তান তাকে কাছে টেনে আনে আর বলে , ণ্ ৷ ণ্ণ্১
কত উত্তম কাজ্জী না তুমি করেছো! এক বর্ণনায় ণ্১এর নুনকে ফাতহা দ্বারা পড়া হয়েছে ৷
যার অর্থ ণ্ ৷ )দ্ অর্থাৎ তুমি মর্যাদা পাওয়ার উপযুক্ত
বটে ! আবার কাসরা দ্বারা পড়ার কথাও আছে ৷
আমাদের শায়খ আবুল হাজ্জাজ প্রথমটিকে সমর্থন করে তাকে প্রাধান্য দিয়েছেন ৷ আল্লাহই
সবজ্ঞ ৷
এ হাদীসটি আমরা আয়াতের ব্যাখ্যার
এসেছি ৷ আয়াত টির অর্থ হলো, শয়তানদের থেকে লব্ধ যাদু-মানুষ শয়ত তান হোক বা জিন
শয়তান-দুই পরম আপনজনের মাঝে বিচ্ছেদ সৃষ্টি হওয়া ই তার পরিণতি ৷ এজন্যইশ ৷য়তান
সে ব্যক্তির চেষ্টা-সাধনায় কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে থাকে, যার দ্বারা এ কাজ সাধিত হয় ৷
যেটিকথা, আল্লাহ যাকে নিন্দা করেছেন, ইবলীস করে তার প্রশংসা এবং যার প্রতি আল্লাহ হন
রুষ্ট, শয়তান হয় তার প্রতি ৩প্রসন্ন ৷৩ তার প্রতি ৩আল্লাহর লা নত
এদিকে আল্লাহ তা আলা বিভিন্ন প্রকার অনিষ্ট-সেগুলোর মাধামসমুহ এবং সেগুলোর
অশুভ পরিণাম থেকে রক্ষার উপায় হিসেবে ফ ৷লাক ও বলে দ টো সুরা নাযিল করেছেন ৷
বিশেষত সুরা নাম যার মর্ম হলো :
“বল, আমি শরণ নিচ্ছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধিপতির মানুষের ইলাহের
নিকট আত্মগােপনক৷ ৷রী কুমন্ত্রণাদা৩ তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা হৃদয় মানুষের অস্তরে, জিনের
মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে ৷ ( ১ ১ : : ১ ৬)
সহীহ্ বুখারী ও মুসলিমে আনাস (বা) সুত্রে এবং সহীহ্ বুখারীতে হুসায়ন কন্যা সাফিয়া
(র) সুত্রে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, শয়তান আদম সন্তানের শিরায় শিরায়
চলাচল করে থাকে ৷
হাকিম আবু ইয়ালা আল-মুসিলী বর্ণনা করেন যে, আনাস (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা)
বলেছেনং শয়তান আদম সন্তানের হৃৎপিণ্ডের উপর তার নাকের অগ্রডাগ স্থাপন করে আছে ৷
যদি আদম সন্তান আল্লাহকে স্মরণ করে তাহলে শয়তান পিছিয়ে যায় ৷ আর যদি সে আল্পাহকে
বিস্মৃত হয়, তাহলে শয়তান তার হৃদয়কে কজা করে নেয় ৷ এটাই হলো, প্লেঞ^ন্শ্এে ৷
এর্দুরু;^ ৷ বা আত্মগােপনক্যরীর কুমন্ত্রণা ৷ উল্লেখ্য, যেভাবে আল্লাহর (মৌখিক) যিকর অন্তর
থেকে শয়তানকে বিতাড়িত করে, ঠিক (সভা বে তা মানুষকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয় ৷
ভুলে যাওয়া ব্যক্তিকেও স্মরণ করিয়ে দেয় ৷ যেমন আল্লাহ তা জানা বলেনং :
যদি তুমি ভুলে যাও, তবে তোমার প্রতিপালককে স্মরণ করবে ৷ (১৮০ : ২৪ )
আবার মুসা (আ) এর সঙ্গী ৷তকে বলেছিলেন০
অর্থাৎ শয়ত ৷নই৩ তার কথা বলতে ৩আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিল ৷ (১৮০ ৬৩)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা
অর্থাৎ শয়তান তাকে তার প্রভুর নিকটত তার ৷বিষয় বলার কথা ভুলিয়ে দিল ( ১ ২ : ২ )
অর্থাৎ ইউসুফ (আ) যখন সাকীকে বলেছিলেন যে, তুমি তোমার মনিবের নিকট আমার
কথা বলবে, সে তার মনিব বাদশাহ্র নিকট তা বলতে ভুলে গিয়েছিল ৷ আর এ ভুলে যাওয়াটা
ছিল শয়ত তানের পক্ষ থেকে ৷ ফলে ইউসুফ (আ) কয়েক বছর কারাগারে অবরুদ্ধ থাকেন ৷ এ
জন্যই আল্লাহ তাআলা পরে বলেন : ব্লু০ ৷ ,ও০ ৷ ৷০ন্০ ০০ ৷হু£ ;;এ ৷ ()র্ল্ডঠু
অর্থাৎ দু’জন কারাবন্দীর মধ্যে যে মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পরে যার স্মরণ হলো যে
বলল, ৷ (ইউসৃফং ৪৫)
আবার কেউ কেউ দ্বুর্দুছুন্ ১;; এর অর্থ
করেছেন ৷ র্বুক্ট্র১;ন্ ’ ” অর্থাৎ ভুলে যাওয়ার পর ৷ আর এই যে আমরা বললাম, যে লোকটি
ভুলে গিয়েছিল; সে হলৌ সাকী; দু অন্মতেব মধ্যে এটাই সঠিক কথা ৷৷৩ তাফসীরে আমরা একে
সপ্ৰমাণ বনাি করেছি ৷ আ ৷ল্লাহই সর্বজ্ঞ ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আসিম (র) বলেন যে, আমি আবৃত তামীমা (র) কে
রাসুলুল্লাহ (সা) এর সওয়রীিতে তার পেছনে উপবেশনকারী এক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করতে
শুনেছি যে, একদিন নবী করীম (না)-কে নিয়ে তার পাধা হেড়াচট যায় ৷ তখন আমি বললড়াম,
শয়তান বদনজর করেছে ৷ আমার একথা শুনে নবী করীম (সা) বললেন : শয়তান বদনজর
করেছে, বলো না ৷ কেননা, যখন তুমি বলবে শয়তান বদনজর করেছে; তখন সে গর্বিত হয়ে
যাবে আর বলবে; আমার শক্তি দ্বারা আমি তাকে ধরাশড়ায়ী করেছি ৷ আর যখন তুমি বলবে,
বিসমিল্লাহ্’ তখন ছোট হতেহ তসে মাছির ন্যায় হয়ে যায় ৷ এ হাদীসটি কেবল ইমাম
আহমদই বর্ণনা করেছেন ৷ এর সনদ উত্তম ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবু ছরায়রা (বা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
তোমাদের কেউ মসজিদে এলে শয়তান মানুষকে এভাবে বশীভুত করে, যেভাবে কেউ তার
বড়াহনকে শান্ত করে একান্তে বসার ন্যায়, তারপর তাকে লাগাম পরিয়ে দেয় ৷
আবু ছরায়রা (রা) বলেন, লক্ষ্য করলে তোমরা তা দেখতে পাবে ৷ শয়তান যাকে
কােণঠাসা করে , দেখবে সে নত হয়ে কেবল আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকে ৷ আর যাকে লাগাম
পরায় সে মুখ খুলে হা করে বসে থাকে আল্লাহর যিক্র করে না ৷ ইমাম আহমদ (ব)
এককভাবে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবু ছরায়রা (বা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা ) বলেছেন :
“বদনজর যে হয়ে থাকে তা সত্য ৷ তাতে শয়তান ও বনী আদমের হিংসা বিদ্যমান থাকে ৷”
তার আরেক বর্ণনায় আছে যে, ইবন আব্বাস (রা) বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (না)-এর
নিকট এসে বলল : ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মনে এমন এমন কল্পনা জাগ্রত হয় যে, তা ব্যক্ত
করার চাইতে আকাশ থেকে পড়ে যাওয়াই আমার নিকট শ্রেয় মনে হয় ৷ শুনে নবী করীম (সা)
বললেন : “আল্লাহ আকবার ৷ সমস্ত প্রশংসা সে আল্লাহর যিনি শয়তানের চক্রান্তকে কুমন্ত্রণায়
পরিণত করে দিয়েছেন ৷”
ইমাম আবু দাউদ ও নাসাঈ (র) মানসুর-এর হাদীস থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
নাসঈ এবং আ’মাশ হযরত আবু বর (বা) সুত্রেও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুথাবী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু ছরায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা ) বলেছেন :
“শয়তান তোমাদের এক একজনের কাছে এসে বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছে, ওটা কে সৃষ্টি
করেছে ? শেষ পর্যন্ত বলে যে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে ? সুতরাং কেউ এ পরিস্থিতির
সম্মুখীন হলে যেন সে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করে এবং এখানেই ক্ষাম্ভ দেয় ৷ ইমাম মুসলিম
(র) লায়ছ, যুহরী ও হিশামের হাদীস থেকে, পরের দুজন উরওয়া থেকে হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন ৷
আল্লাহ তা জানা বলেন০ ং
অর্থাৎ যারা তাকওয়ার অধিকারী হয় তাদেরকে শয়তান যখন কুমন্ত্রণা দেয় তখন তারা
আত্মসচেতন হয় এবং তৎক্ষণাং তাদের চোখ খুলে যায় ৷ (৭ : ২০১)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন ং
অর্থাৎ বল, হে আমার প্ৰতিপালক ! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররােচনা
থেকে ৷ হে আমার প্রতিপালক আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার নিকট তাদের উপস্থিতি
থেকে ৷ (২৩ : ৯ ৭-৯৮)
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন :
অর্থাৎ যদি শয়তানের কুমস্ত্রণা তোমাকে প্ররােচিত করে তবে আল্লাহর শ্ারণ নেবে, তিনি
সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ (৭ : ২০০)
আরেক জায়গায় তিনি বলেনং :
অর্থাৎ- যখন তুমি কুরআন পাঠ করবে তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে তুমি আল্লাহর শরণ
নেবে ৷ যারা ঈমান আসে ও তাদের প্রতিপালকেরই উপর নির্ভর করে তাদের উপর তার
আধিপত্য নেই ৷ তার আধিপত্য তো কেবল তাদেরই উপর যাকে অভিভাবকরুপে গ্রহণ করে
এবং যারা আল্লাহর শরীক করে ৷ (১৬ ও ৯৮ ১০০)
ইমাম আহমদ (র) ও সুনান সংকলকগণ আবু সাঈদ (রা) সুত্রে বর্ণিত আবুল
মুতাওয়াক্কিল-এর হাদীস থেকে বর্ণনা করেন যে, আবু সাঈদ (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা)
বলতেন ;
অর্থাৎ আমি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিকট বিতাড়িত শয়তানের হামায, নাফাখও
নাফাছ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি ৷
জুবায়র ইবন মু৩ ত,ইম আবুল্লাহ ইবন মাসউদ (বা) এবং আবু উমামা বাহিনীর বর্ণনা
থেকেও এরুপ পাওয়া যায় ৷ আর হাদীসে এর এরুপ ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, ণ্ট্রু১ অর্থ হচ্ছে
শয়তান কর্তৃক শ্বাসরুদ্ধকরণ যা করে করা ণ্১ণ্; তার অহং যে আর ধ্ণ্ তার কাব্য ৷
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত আছে যে, আনাস (রা) বলেন : রাসুলুল্লাহ (না) যখন
শৌচাপারে প্রবেশ করতেন তখন তিনি বলতেন :
অর্থাৎ “আমি আল্লাহর নিকট ;-ষ্ ও ৬১ ; থেকে আশ্রয় চাই ৷ বহু সং খ্যক
আলিম বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা) পুরুষ শয়তান ও মহিলা শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা
করেছেন ৷ (অর্থাৎ তাদের মতে ; ণ্ অর্থ পুরুষ শয়তানের দল ও ;১ অর্থ মহিলা
শয়তানের দল) ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (বা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
কেউ পায়খানায় গেলে সে যেন আড়াল করে নেয় ৷ যদি সে মাটিকে ন্তুপীকৃত করা ব্যতীত অন্য
কিছু না পায় তবে যেন তা ই করে তা পেছনে রেখে বসে ৷ কারণ, শয়তান আদম সন্তানের
নিতম্ব নিয়ে খেলা করে ৷ যে ব্যক্তি এরুপ করে সে ভালো করবে আর একান্ত তা না পারলে
ক্ষতি নেই ৷ ইমাম আবু দাউদ ও ইবন মাজাহ্ ছাওর ইবন য়াষীদ-এর হাদীস থেকে এ হাদীছসট
বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, সুলায়মান ইবন সুরাদ বলেছেন, নবী করীম (সা) এর
দরবারে দু’জন লোক একে অপরকে পালাগাল করে ৷ আমরা তখন তার নিকট বসা ছিলাম ৷
দেখলাম, ওদের একজন তার সঙ্গীকে এমন রাগাষিত হয়ে গালাগাল করছে যে, তার চেহারা
লাল হয়ে গেছে ৷ তা দেখে নবী করীম (সা) বললেনং আমি অবশ্য এমন একটি কথা জানি,
যদি সে তা বলে তাহলে তার রাগ দুরীভুত হবে ৷ যদি সে বলে০ ং
আমি বিতাড়িত শয়৩ ৷ন থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই ৷ একথা শুনে উপস্থিত
লোকজন লােকটিকে বলল, তুমি কি শুনছ না নবী করীম (না) কি বলছেন ? উত্তরে সে বলল,
আমি পাগল নই ৷’ ইমাম মুসলিম, আবু দাউদ এবং নাসাঈও আমাশ থেকে বিভিন্ন সুত্রে
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, ইবন উমর (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
ণ্তামাদের কেউ যেন বাম হাতে পানাহার না করে ৷ কারণ শয়তান বাম হাতে পানাহার করে
থাকে ৷’ এ সনদে এটা ইমাম বুখারী ও মুসলিমের শর্তে উত্তীর্ণ ৷ আর সহীহ বুখারীতে এ
হাদীসটি অন্য সুত্রে বর্ণিত হয়েছে ৷
ইমাম আহমদ (ব) বর্ণনা করেন যে, আয়েশা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : যে
ব্যক্তি তার বাম হাতে আহার করে , তার সঙ্গে শয়তান আহার করে আর যে ব্যক্তি তার বাম
হাতে পান করে শয়তানও তার সঙ্গে পান করে ৷ ”
ইমাম আহমদ (ব) বর্ণনা করেন যে, আবু যিয়াদ তাহ্হান (ব) বলেন, আমি আবু হুরায়রা
(রা)-কে বলতে শুনেছি যে, নবী করীম (সা) এক ব্যক্তিকে দাড়িয়ে পান করতে দেখে তাকে
বললেন : বমি কর ৷ লোকটি বলল, কেন ? নবী করীম (না) বললেন, “তুমি কি এতে খুশী হবে
যে তোমার সঙ্গে বিড়াল পান করুক ? সে বলল, জী না ৷ তখন নবী করীম (সা) বললেন০ ং
কিন্তু তোমার সঙ্গে তো এমন এক প্রাণী পান করেছে, যে বিড়ালের চাইতে ও নিকৃষ্ট অর্থাৎ
শয়তা ন ৷ এ সুত্রে ইমাম আহমদ (ব) এককতা ৷বেই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
তিনি আবু হুরায়রা (বা) সুত্রে আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : যে ব্যক্তি দীড়িয়ে
পান করে, যদি সে জ ন৩ ৩তার পেটে কি আছে, তাহলে অবশ্যই সে ইচ্ছে করে বমি করত ৷’ এ
হাদীসটি ভিন্ন সুত্রেও বর্ণিত হয়েছে ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন, আবদুল্লাহ ইবন যুবায়র জাবির (রা)কে জিজ্ঞেস
করেছিলেন যে, আপনি কি নবী করীম (স৷ ) কে একথা বলতে শুনেছেন যে, মানুষ ঘরে
প্রবেশকালে এবং আহারেব সময় বিসমিল্লাহ বললে শয়তান তার সঙ্গীদেরকে বলে, এখানে
তোমাদের থাকাও নেই, খাবাবও নেই ৷ আর প্রবেশকালে বিসমিল্লাহ্ না বললে শয়তান বলে
তোমরা রাত যাপনের জায়গা পেয়ে গেছ এবং আহারেব সময় বিসমিল্লাহ্ না বললে শয়তান
বলে, তোমরা রাত যাপনের জায়গা এবং রাতের খাবার পেয়ে গেছ ? জবাবে জাবির (বা)
বললেন, হী৷ ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, ইবন উমর (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
সুর্যোদয়কালে যখন তার প্রাম্ভদেশ দেখা যায়, তখন পুরোপুরি তা উদিত না হওয়া পর্যন্ত
তোমরা সালাত স্থগিত রাখ এবং যখন সুর্য অস্ত যেতে ৩থাকে তা পুরোপুরি না ভুব৷ ৷পর্যন্ত সালাত
স্থগিত রাখ ৷ আর সুর্যের উদয় ও অস্তকে তোমরা নামায়ের সময় সাব্যস্ত করো না ৷ কারণ সুর্য
শয়তানের দু’ শিং ষ্ এর মধ্যববী স্থ নে উদিত হয়ে থাকে ৷ ইমাম মুসলিম এবং নানা ৷ঈও হ৷ ৷দীসটি
বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, ইবন উমর (রা) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (না)-কে
দেখেছি যে, তিনি পুর্বদিকে ইশারা করে বলেছিলেন : শুনে রেখ, ফেতন৷ এখানে, ফেতনা
এখানে, যেখান থেকে শয়তানের শিং আত্মপ্রকাশ করে থাকে ৷
আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্ শরীফে আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বৌদ্র ও
ছায়ার মাঝখানে বসতে নিষেধ করে বলেছেন; তা হলো শয়তা ৷নেব মজলিস ৷ হাদীস বিশারদগণ
এর কয়েকটি অর্থের উল্লেখ করেছেন ৷ তন্মধ্যে সর্বোত্তম হলো এই যে, যেহেতু অভিজ্ঞতার
দেখা গেছে যে, এরুপ স্থানে বসলে অঙ্গ সৌষ্ঠব নষ্ট হয়, তাইশ ৷৷য়ত ন তা পছন্দ করে ৷ কেননা,
তার নিজের অবয়বই কুৎসিত ৷ আর এটা সর্বজন বেদিত ৷
এজন্যই অ ৷ল্লাহ্ তা ৩া৷লা বলেছেনং :
অর্থাৎ-৩ ৷ তার (জা হান্নামের তলদেশ থেকে উদ্গত যাক্কুম বৃক্ষের) মােচ৷ যেন শয়তানের মাথা ৷ (৩ ৭ ৬৫)
সঠিক কথা হলো, আয়াতে শয়তান বলতে শয়তানই বুঝানো হয়েছে এক শ্রেণীর গাছ নয়
যেমন কোন কোন তাফসীরবিদের ধারণা ৷ আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ ৷ কেননা, স্বতঃস্ফুত্৩ভিাবেই মানুষের
মনে এ বদ্ধমুল ধারণা রয়েছে যে, শয়তান কদর্যতার এবং ফেরেশতাগণ সৌন্দর্যের আধার ৷
আর এজন্যই আল্লাহ্ তাআলা বলেন :৩ তার সােচা
যেন শয়তানের মাথা
পক্ষান্তরে ইউসুফ (আ)-এর রুপ দেখে মহিলাগণ বলেছিল০ : ,)
অর্থাৎ-অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য ! এতো মানুষ নয় এতো এক মহিমাম্বিত
ফেরেশৃতা ৷ (১২ : ৩১)
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, জাবির (রা) বলেন, নবী করীম (সা) বলেছেন : “রাত
যখন ছায়াপাত করে তখন তোমরা তোমাদের শিশু-কিশোরদেরকে ঘরে আটকে রাখবে ৷ কারণ
শয়তানগণ এ সময়ে ছড়িয়ে পড়ে ৷ তারপর রাতের কিছু সময় পার হয়ে গেলে তাদেরকে ছেড়ে
দেবে এবং দরজা বন্ধ করে আল্লাহর নাম নেবে ৷ বাতি নিভিয়ে দেবে ও আল্লাহর নাম উচ্চারণ
করবে, পানপাত্রের মুখ বেধে রাখবে ও আল্লাহর নাম উচ্চারণ করবে এবং বরতন ঢেকে রাখবে
ও আল্লাহর নাম উচ্চারণ করবে ৷ তার উপর কিছু একটা ফেলে রেখে হলেও তা করবে ৷ ”
ইমাম আহমদ (র) ইয়াহয়৷ ও ইবন জুরায়জের সুত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷ তার
বর্ণনায় আছে ঙা;০ ব্লু;ন্নু ন্ ;,াণ্০০৷ ৷ ;, !§ শয়তান বন্ধ জিনিস খুলতে পারে না ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, জাবির (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
“তোমরা তোমাদের দরজাগুলাে বন্ধ করে দাও, বরতনগুলাে ঢেকে রাখ , পানপাত্রগুলোর মুখ
বেধে রাখ এবং বাতিগুলাে নিভিয়ে দাও ৷ কারণ শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না, ঢাকনা
উন্মুক্ত করে না এবং বন্ধন খুলে না, আর ইদুর তো বসবাসকারীদেরসহ ঘরে আগুনই ধরিয়ে
দেয় ৷ ”
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, ইবন আব্বাস (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন :
আপন শ্ৰীগমনকালে৫ তামাদের কেউ যদি বলে০ ং
হে আল্লাহ আমাদেরকে তুমি শয়তান থেকে দুরে রাখ এবং আমাকে তুমি যা দান করেছ,
তা থেকে শয়তানকে দুরে রাখ ৷ তাহলে এ মিলনে তাদের কোন সন্তান জম্মালে শয়তান তার
ক্ষতি করতে পারে না এবং তার উপর তার আধিপ৩ তা বিস্তার করতে পারে না ৷
হাদীসটি ভিন্ন সুত্রে বর্ণিত হয়েছে ৷ আরেকটি রিওয়ায়তে ঈষৎ পরিবর্জাসহ উক্ত দৃআর
পুর্বে বিসমিল্লাহ শব্দটি অতিরিক্ত এসেছে ৷ ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা
(রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : তোমাদের কেউ ঘুমালে শয়তান তার মাথায়
পশ্চাৎভাগে তিনটি পিট দেয় ৷ প্রতিটি পিট দেওয়ার সময় সে বলে, দীর্ঘ রাত আছে তুমি ঘুমাও !
যদি সে জেগে ওঠার পর আল্লাহকে স্মরণ করে, তাহলে একটি পিট খুলে যায় ৷ তারপর যদি ওঘু
করে তাহলে আরেকটি পিট খুলে যায় ৷ তারপর যদি সে সালাত আদায় করে তাহলে সবক’টি
পিটই খুলে যায় ৷ ফলে সে প্ৰফুল্ল ও প্রশান্ত চিত্তে সকালে ওঠে ৷ অন্যথায় সে সকালে ওঠে
কলুষিত মন ও অলস দেহ নিয়ে ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
যখন তোমাদের কেউ ঘুম থেকে জেগে ওঠে এবং ওয়ু করতে যায় তখন সে যেন তিনবার পানি
নিয়ে নাক বোড়ে নেয় ৷ কেননা, শয়তান তার নাকের ছিদ্রে রাতযাপন করে থাকে ৷
ইমাম মুসলিম এবং ইমাম নাসাঈ ভিন্ন ভিন্ন সুত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ (রা) বলেন, বাসৃলুল্লাহ (না)-এর নিকট
আলোচনা হলো যে, এক ব্যক্তি সারারাত নিদ্র৷ যায় ৷ তারপর ভোর হলে জাগ্রত হয় ৷ শুনে
রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, লোকটির দৃ’কানে তো শয়তান পেশার করে দিয়েছে ৷
রাসুলুল্লাহ (সা) দু’ কানে বললেন, নাকি শুধু কানে বললেন এ ব্যাপারে ৰাবী সন্দেহ
প্রকাশ করেছেন ৷ ইমাম মুসলিম, ইমাম বুখঃারী, নাসাঈ এবং ইবন মাজাহ্ ভিন্ন সুত্রে হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়রা (বা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
“যখন নামাযের আমান দেওয়া হয়, তখন শয়তান বায়ু নিঃসরণ করতে করতে পিছু হটে যায় ৷
আমান শেষ হয়ে গেলে আবার এসে পড়ে ৷ তারপর ইকামতকালে শয়তান আবার হটে যায় ৷
ইকামত শেষ হয়ে গেলে আবার এসে সে মানুষ ও তার অম্ভরের মাঝে অবস্থান নেয় এবং
বলতে শুরু করে যে, তুমি এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর ৷ শেষ পর্যন্ত লােকটি তুলেই যায় যে,
সে নামায তিন রাকআত পড়ল, নাকি চার রাকআত ৷ তারপর তিন রাকআত পড়ল , নাকি চার
রাকআত পড়ল তা নির্ণয় করতে না পেরে দু’টি সিজদা সাহু করে নেয় ৷
ইমাম আহমদ (র) বংনাি করেছেন যে, আনাস (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
“তোমরা (নামাযের) সড়ারিগুলো ঘনভাবে সন্নিবিষ্ট করে নাও ৷ কারণ শয়তান ফাকে দাড়িয়ে
যায় ৷ ”
আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আনাস (বা) বলেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা) বলতেন $ তোমরা
সারিগুলাে ঘনভাবে সন্নিবিষ্ট করে নাও, এক সড়ারিকে আরেক সারির কাছাকাছি করে নাও এবং
র্কাধে র্কাধ মিলিয়ে নাও ৷ যে সত্তার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, তার শপথ ! নিঃসন্দেহে আমি দেখতে
পাচ্ছি যে, শয়তান সারির ফীকা জায়গায় ঢুকে পড়ে, যেন সে একটি পাখি ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু সাঈদ (বা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
“তোমাদের কারো সম্মুখ দিয়ে কোন কিছু অতিক্রম করলে, যেন সে তাকে বাধা দেয় ৷ যদি সে
অগ্রাহ্য করে তাহলে যেন আবারও বাধা দেয় ৷ এবারও যদি অগ্রাহ্য করে, তাহলে যেন সে তার
সঙ্গে লড়াই করে ৷ কারণ সে আস্ত শয়তান ৷” মুসলিম এবং আবু দাউদ (র)-ও ভিন্ন সুত্রে এ
হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
আহমদ (র) বর্ণনা কলেন যে, আবু উবায়দ (র) বলেন, আমি আত৷ ইবন য়াযীদ লায়হী
(র)-কে দেখলাম যে, তিনি দ ডিয়ে নামায পড়ছেন ৷ত তারপর আমি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম
করতে চাইলে তিনি আমাকে ফিরিয়ে দেন ৷ পরে তিনি বললেন, আবু সাঈদ থুদরী (বা) আমার
নিকট বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) একদিন ফজর নামায আদায় করছিলেন আর তিনি
আবু সাঈদ (রা)৩ তার পেছনে কিরাআত পড়ছিলেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ (সা) এর কিরাআত
পাঠে বিঘ্র ঘটে ৷ স ৷লাত শেষ করেত তিনি বললেন৪ যদি তামরা আমার ও ইবলীসের ব্যাপা ৷রটি
দেখতে ! হাত বাড়িয়ে আমি ওর গলাটিপে ধরেছিলাম ৷ এমনকি আমি আমার বৃদ্ধাঙ্গুলিও তার
পাশের অঙ্গুলির মাঝখানে ওর মুখের লালার শীতলতা অনুভব করি ৷ আমার ভাই সুলায়মানের
দুআ না থাকলে নিঃসন্দেহে ও মসজিদের কোন একটি খুটির সঙ্গে শৃৎখলাবদ্ধ হয়ে যেত আর
মদীনায় শিশুরা তাকে নিয়ে থেলতাে ৷ অতএব, তোমাদের মধ্যকার যার এ ক্ষমতা আছে যে,
সে তার ও কেবলার মধ্যকার অন্তরায় ঠেকাতে পারবে৩ তাহলে সে যেন তা অবশ্যই করে ৷
ইমাম আবু দাউদ হড়াদীসটির যার ক্ষমতা আছে অংশটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়র৷ (বা) বলেন, বাসুলুল্লাহ (সা) একদিন
কোন এক সালাত আদায় করে বললেন, “শয়তান এসে আমার সালাত নষ্ট করে দিতে
চেয়েছিল, কিন্তু আল্লাহ তাকে কাবু করার শক্তি আমাকে দান করেছেন ৷” ইমাম মুসলিম ও
নাসাঈ (র) হড়াদীসটি সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন ৷
ঐসুলায়মান (আ) সম্পর্কে আল্লাহ তা জানা সংবাদ প্রদান করেন যে, তিনি বলেছিলেন :
অর্থাৎ হে আমার প্রতিপালক আমাকে ক্ষমা কর এবং আমাকে দান কর এমন এক রাজ্য
যার অধিকারী আমি৷ ছাড়া আর কেউ যেন না হয়, তুমি তো পরম দা ৷ত৷ ৷ (৩৮৪ ৩৫)
এ আয়াতের ব্যাখ্যার ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরায়র৷ (বা) বলেন,
রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন৪ আমার সালাত ররবাদ করার জন্য গত রাতে দুষ্ট এক জিন আমার
উপর চড়াও হয় ৷ কিন্তু অ ৷ল্লাহ্ ত৷ আলা তাকে কাৰু করার শক্তি আমাকে দান করেন ৷ ফলে
আমার ইচ্ছে হলো,ত তাকে ধরে এনে মসজিদের একটি খুটির সঙ্গে বেধে রাখি আর ভোরে উঠে
তোমরা সকলেই তাকে দেখতে পাও ৷ কিন্তু পরক্ষণে আমার ভাই সুলায়মান (আ) এব
এ উক্তিটি মনে পড়ে যায় ৷ রাবী বলেন, ফলে
রাসুলুল্লাহ (সা) তাকে ব্যর্থ মনে ৷রথ করে ফিরিয়ে দে ন ৷
মুসলিম (র) আবুদ্দারদ৷ (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) একদিন সালাত
আদায়ে রত হন ৷ এমন সময় আমরা হঠাৎ শুনতে পেলাম যে, তিনি বলছেন : ৭! ৷ াপ্রু; ৷
এ১০০ (তোমার থেকে আমি আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই) ৷ তারপর তিনি বললেন ষ্া১গ্ ৷
এ ৷ রু০০পু ০ (তোমার প্রতি আল্লাহর লা নত হোক ) এ কথাটি তিনবার বলে তিনি তার হাত
প্রসারিত করলেন, যেন তিনি কিছু একটা ধরছেন ৷ তারপর সালাত শেষ হলে আমরা বললাম,
হে আল্লাহর রাসুল সালাতের মধ্যে আমরা আপনাকে এমন কিছু বলতে শুনলাম যা ইতিপুর্বে
আমরা আপনাকে বলতে শুনিনি! আবার আপনাকে দেখলাম যে, আপনি আপনার হাত প্রসারিত
করলেন! জবাবে তিনি বললেন : “আমার মুখে নিক্ষেপ করার জন্য আল্লাহর দুশমন ইবলীস
একটি অগ্নিপিণ্ড নিয়ে আসে ৷ তাই আমি তিনবার বললাম ৷ তারপর
বললাম, ৷ কিন্তু সে সরলাে না, তারপর আমি তাকে ধরতে
মনস্থ করি ৷ আল্লাহর শপথ! যদি আমাদের তাই সুলায়মানের দু তা৷ না থা৩ক ;তাহলে যে বন্দী
হয়ে যেত আর মদীনাবাসীদের শিশু সন্তানর৷ তাকে নিয়ে খেলা করত ৷
আল্লাহ তা আলা বলেনং :
ঝুপ্রু ,ষ্পু ৷
অর্থাৎ-পার্থিব জীবন যেন৫ তােমাদেরকে কিছুণ্ডে ই প্রভাবিত না করে এবং সেই প্রবঞ্চক
(অর্থাৎ শয়তান) যেন তােমাদেরকে কিছুতেই আল্লাহ্ সম্পর্কে প্রবঞ্চিত না করে ৷ (৩১ : ৩৩)
অন্যত্র আল্লাহ্ তাআলা বলেন০ :
অর্থাৎ-শয়তান তোমাদের দুশমন, সুতরাং তাকে তোমরা শত্রু হিসেত্তব গ্রহণ কর ৷ সে তো
তার দলবলকে কেবল এ জন্য আহ্বন্যে করে, যেন তারা জাহান্নামী হয় (৩৫ং ৬)
মাে ৷৷,টকথ চলা ফেরা, উঠা ৷-বসা ইত্যাদি অবস্থায় শয়তান মানুষের সর্বনাশ করার ব্যাপারে
তার চেষ্টা ও শক্তি প্ৰয়ােগে বিন্দুমাত্র ত্রুটি করে না ৷ যেমনং হাফিজ আবু বকর ইবন
আবুদ্দুনিয়া (র) মাসায়িদিশ শয়তান” (শয়তানের ফীদ) নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন ৷
গ্রন্থটি অত্যন্ত মুল্যবান ৷
আবু দাউদ শরীফে আছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা) তার দুআয় বলতেন :
মৃত্যুর সময় শয়তানের ছোবল থেকে আমি ৫৩ তামার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি
কোন কোন বর্ণনায় আছে যে, শয়তান বলেছিল :
অর্থাৎ-হৈ আমার প্রতিপালক! তোমার ইঘৃযত ও জালাল এর শপথ করেবলছি, তাদের
দেহে প্রাণ থাকা পর্যন্ত আমি তাদেরকে বিভ্রান্ত করতেই থাকর ৷ ’
আর আল্লাহ্ তাআলা এর জবাবে বলেছিলেন :
অর্থাৎ-আর আমি আমার ইয্যত ও জালাল-এর শপথ করে বলছি, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত
আমার নিকট ক্ষমা চাইতে থাকবে; আমি তাদেরকে ক্ষমা করতেই থাকর ৷ ’
আল্লাহ তা আলা বলেন
অর্থাৎ-শয়তান তােমাদেরকে দারিদ্রের ভয় দেখায় এবং কার্পণ্যের নির্দেশ দেয় ৷ আর
আল্লাহ্ তােমাদেবকে তার ক্ষমা এবং অনৃগ্রহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন ৷ আল্লাহ্ প্রাচুর্যময়,
সর্বজ্ঞ ৷ (২ : ২৬৮)
ঘোটকথা, আল্পাহ্ তাআলার প্রতিশ্রুতিই সঠিক ও সত্য ৷ আর শয়তানের প্রতিশ্রুতি মাত্রই
বাতিল ৷
তিরমিযী ও নাসাঈ এবং ইবন হিব্বান (র)৩ তার সহীহে আর ইবন আবু হাতিম (র) তার
তাফসীরে ইবন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনং আদম
সন্তানের সঙ্গে শয়তানের একটি ছোয়াচ আছে এবং ফেরেশতাদের একটি হেড়ায়াচ আছে ৷
শয়তানের ছোয়াচ হলো, মন্দের প্রতিশ্রুতি প্রদান এবং সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা আর
ফেরেশতাদের ছোয়াচ হলো, কল্যাণের প্রতিশ্রুতি প্রদান ও সতাকে সত্য বলে গ্রহণ করা ৷
সুতরাং কেউ এটি অনুভব করলে সে যেন বুঝে নেয় যে, তা আল্লাহ্রই পক্ষ থেকে ৷ ফলে যেন
সে আল্লাহ্র প্রশ না করে ৷ আর যে ব্যক্তি অপরটি অনুভব করবে, সে যেন শয়তান থেকে
আশ্রয় প্রার্থনা করে ৷ তারপর তিনি ৫! ৷ মোঃ ৷ ন্কুঝুশু : ৷৷ট্রুদ্বু৷ ৷ আয়াতটি পাঠ করেন ৷
সুরা বাকারার ফযীলতে আমরা উল্লেখ করেছি যে, শয়তান সে ঘর থেকে পালিয়ে যায় , যে
ঘরে সুরা বাকারা পাঠ করা হয় ৷ আবার আয়াতুল কুরসীর ফযীলতে উল্লেখ করেছি যে,
যে ব্যক্তি রাতে আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তোর হওয়া পর্যন্ত শয়তান তার কাছে
ঘেষতে পারে না ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবু হুরড়ায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
যে ব্যক্তি একশ বার — ১া
পাঠ করবে; তা তার জন্য দশটি গোলাম আযাদ করার তুল্য হবে, তার নামে একশ নেকী লেখা
হবে ও তার একশ গুনাহ মুছে ফেলা হবে এবং তা সে দিনের সন্ধ্য৷ পর্যন্ত তার জন্য শয়তান
থেকে নিরাপত্তাস্বরুপ হবে ৷ আর৩ ৷র চাইতে অধিক আমলকারী ব্যতীত অন্য কেউই তার
থেকে উত্তম আমলের অধিকারী বলে বিবেচিত হয়ে না ৷
ইমাম মুসলিম, তিরমিযী ও ইবন মাজাহ্ (র) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম তিরমিযী
(র) হাদীসটি হাসান সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন ৷
বুখারী (ব) বর্ণনা করেন যে, আবু হ্বায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ভুমিষ্ঠ
হওয়ার সময় প্রত্যেক বনী আদমের দু’পার্শে শয়তান তার আঙ্গুল দ্বারা ঘেড়াচা দেয় ৷ তবে
মারয়াম পুত্র ঈসা (আ) তার ব্যতিত্রুম ৷৩ তাকে শৌচা দিতে গিয়ে শয়তান তার দেহে জড়ানাে
আবরণে ঘেড়াচা দিয়ে আসে ৷
ইমাম বুখারী (ব) বর্ণনা করেছেন যে, আবুহরায়রা (রা) বলেন, রড়াসুলুল্লাহ্ (না) বলেছেন :
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (১ম খণ্ড)শো
অর্থাৎ “হাই তোলা হয় শয়তানের পক্ষ থেকে ৷ অতএব, তোমাদের কারো হাই আসলে,
সে যেন যথাসম্ভব তা বোধ করে ৷ কারণ (হাই আসার সময়) তোমাদের কেউ হা’ বললে
শয়তান হেসে দেয় ৷
আহমদ, আবু দাউদ এবং তিরমিযীণ্(র) ও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম নাসাঈ
(র) হাদীসটি সহীহ বলে রায় দিয়েছেন ৷ এ হাদীসের অন্য পাঠে আছে
অর্থাৎ তোমাদের কারো হাই আসলে সে যেন যথাসম্ভব তা দমন করে ৷ কারণ (হাই
তোলার সময়) শয়তান ভিতরে ঢুকে পড়ে ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবুহুরায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন :
৮১ ৷ ;, ৷
অর্থাৎ-আল্লাহ তাআলা হাচি পছন্দ করেন আর হাই ভোলা ঘৃণা করেন অথবা (রাবী
বলেন, অপছন্দ করেন) (হাই তোলার সময়) তোমাদের কেউ হা-হ৷ বললে শয়তান একেবারে
তার গেট থেকে হাসতে থাকে ৷ ইমাম তিরমিযী ও নাসাঈ (র) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আয়েশা (রা) বলেছেন, আমি নবী করীম (সা)-কে
মানুষের সালাতের মধ্যে এদিক-ওদিক দৃষ্টিপাত করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি ৷ উত্তরে তিনি
বললেন
অর্থাৎ “এ হলো, ছিনতাই যা তোমাদের কারো সালাত থেকে শয়তান ছিনিয়ে নিয়ে
যায় ”
ইমাম আবু দাউদ ও নাসাঈ (র) ভিন্ন সুত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুখারী (র) বর্ণনা করেন যে, আবুকাতাদা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন :
অর্থাৎ সুস্বপ্ন হয় আল্লাহ্র পক্ষ থেকে ৷ আর অলীক স্বপ্ন হয় শয়তানের পক্ষ থেকে ৷
অতএব, তোমাদের কেউ ভয়ংকর কোন দুঃস্বপ্ন দেখলে, সে যেন তার বাম দিকে থুথু ফেলে
এবং তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে ৷ এতে যে তার অনিষ্টের হাত থেকে
রক্ষা পাবে ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবুহুরায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ
অর্থাৎ তোমাদের কেউ কিছুতেই যেন তার কোন ভাইয়ের প্রতি অস্ত্র দ্বারা ইশারা না
করে ৷ কারণ কি জানি, হয়ত শয়তান তার হাতে এসে ভর করবে যার ফলে সে জাহান্নামের
কুণ্ডে গিয়ে নিক্ষিপ্ত হবে ৷ ইমাম বুখারী ও মুসলিম (র) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
আল্লাহ্ তাআলা বলেনং
অর্থাৎ আমি নিকটবর্তী আকাশ কে সুশোভিত করেছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং তাদেরকে
করেছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং৩ তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলস্ত অগ্নির
শাস্তি ৷ (৬৭৪ ৫)
অন্য আয়াতে তিনি বলেন ং
অর্থাৎ আমি নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্ররাজির সুষমা দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং রক্ষা
করেছি প্রাত্যক বিদ্রোহী শয়তান থেকে ৷ ফলে তারা উর্ধজগতের কিছু শুনতে পায় না এবং
তাদের প্রতি নিক্ষিপ্ত হয় সকল দিক থেকে বিতাড়নের জন্য এবং তাদের জন্য আছে অবিরাম
শাস্তি৩ ৷ তবে কেউ হঠাৎ কিছু শুনে ফেললে উল্কা শিশু তার পিছু ধাওয়ড়া করে ৷ (৩৭৪ ৬ ১০)
অন্যত্র মহান আল্লাহ্ বলেন :
’
অর্থাৎ আকাশে আমি গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করেছি এবং দর্শকের জন্য তাকে সুশোভিত
করেছি; এবং প্রত্যেক অভিশপ্ত শয়তান থেকে আমি তাকে রক্ষা করে থাকি; আর কেউ চুরি
করে সংবাদ শুনতে চাইলে তার পিছু ধাওয়ড়া করে প্রদীপ্ত শিখা ৷ (১৫ : ১৬ ১৮)
আরেক জায়গায় আল্লাহ্ তাআলা বলেন০ ং
অর্থাৎ শয়তানরা তা সহ অবতীর্ণ হয়নি ৷ তারা এ কাজের যোগ্য নয় এবং তারা এর
সামর্থ্যও রাখে না ৷ তাদেরকে তো শ্রবণের সুযোগ থেকে দুরে রাখা হয়েছে ৷ (২৬ ৪, : ১ ২)
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা জিন জাতি সম্পর্কে সংবাদ দিতে গিয়ে বলেন :
অর্থাৎ এবং আমরা চেয়েছিলাম আকাশের তথ্য সং গ্রহ করতে কিন্তু আমরা দেখতে
পেলাম কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিণ্ডে আক৷ শ পরিপুর্ণ; আর পুর্বে আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘীটিতে
সৎ ৷দ শোনার জন্য বসতাম ৷ কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে তার উপর নিক্ষেপের
জন্য প্রস্তুত জ্বলম্ভ উল্কাপিণ্ডেব সম্মুখীন হয় ৷ (৭২ চ ৮-৯)
ইমাম বুখারী (র) বচ্নাি করেন যে, আয়েশা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন :
অর্থাৎ ফেরেশতাগণ যেঘমালায় বসে পৃথিবীতে যা ঘটবে সে সব বিষয় নিয়ে
আলাপ-আলোচনা করে থাকেন ৷ শয়তানরা তার শব্দ বিশেষ শুনে এসে জোড়াতিষীর কানে ঢেলে
দেয়, যেমন বোতলে কোন কিছু ঢালা হয়ে থাকে ৷ পরে তারা তার সাথে আরো একশ কথা
জুড়ে দেয় ৷
ইমাম বৃথারী (র) ইবলীস পরিচিতি অধ্যায়ে লায়ছ (ব) থেকে মুআল্লক সুত্রেও হাদীসটি
বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুথারী ও মুসলিম (র) বর্ণনা করেন যে, আয়েশা (যা) বলেছেন : কিছু লোক
রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এব নিকট £জ্যাতিষীদেব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন : স্পো,১া
৮;: ৷ ১ ন্৷ ওরা কিছু নয়’ ৷ তারা বললেন; হে আল্পাহ্র রাসুল ৷ তারা তো কখনো কখনো
কোন কিছু সম্পর্কে আমাদেরকে এমন কথা বলে থাকে, যা সঠিক প্রমাণিত হয়ে যায় ৷ উত্তরে
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন :
অর্থাৎ ঐ স৩ কথাটি জিনদের কেউ ছে৷ মেরে এনে মুরগীর কড় কড় শব্দের ন্যায় শব্দ
করে তার সাঙ্গাতের কানে দিয়ে দেয় ৷ পরে তার সাথে তারা শত মিথ্যা কথা জুড়ে দেয় ৷ এ
পাঠটি হচ্ছে ইমাম বুখারী (ব)-এব ৷
বুখারী (র) বংনাি করেন যে ,আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বলেছেন : আল্লাহ্
তাআল৷ উর্ধজগভে কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিলে আনুগত্য প্রকাশের উদ্দেন্থশ্য ফেরেশতাগণ
তাদের ডানা ঝাপটাতে শুরু করেন, যেন৩ তা মসৃণ পাথরের উপর জিঞ্জিরের ঝনঝনানি তারপর
তারা শান্ত ও নির্ভয় হলে তা ৷রা বলাবলি করেন যে, তোমাদের প্রতিপালক কি বললেন? উত্তরে
তারা বলেন, তিনি যা বললেন, তা নির্ঘাত স৩ তা ৷ তিনি তো মহীয়ান গরীয়ান ৷ এ সুযোগে চুরি
করে শ্রবণকারী তা শুনে ফেলে ৷ চুরি করে শ্রবণকারী দল এবারে একজন আরেকজনের উপর
অবস্থান করে ৷ সৃফয়ান তার হাতটি একদিকে সরিয়ে নিয়ে আঙ্গুলগুলাের মাঝে ফীক করে তার
বিবরণ ৷দেন ৷ (তারপর বলেন) তারপর একজন কোন কথা শুনে নিয়ে তা তার নিচের জনের
কাছে পৌছিয়ে দেয় ৷ সে আবার তার নিচের জনের কাছে পৌছিয়ে দেয় ৷ এভাবে কথাটি
জাদুকর কিৎবা জ্যেড়াতিষীর মুখে পৌছানাে হয় ৷ তবে অনেক সময় তা পৌছানোর আগেই
উল্কাপিণ্ডের কবলে পড়ে যায় আবার অনেক সময় উল্কাপিণ্ড ধরে ফেলার আগে ভাগেই৩ ড়া
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌছে দেয় ৷ সে তখন তার সঙ্গে শত মিথ্যা জুড়ে দেয় ৷ তারপর রলাবলি
হয় যে, অমুক দিন কি যে আমাদেরকে এমন এমন রলেনিঃ ফলে আকাশ থেকে দ্রুত কথাটির
ভিত্তিতে তাকে সত্যবাদী বলে মেনে নেওয়া হয় ৷ ’ ইমাম মুসলিম (র)-ও অনুরুপ একটি হাদীস
বর্ণনা করেছেন ৷
আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
অর্থাৎ যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহ্র স্মরণে বিমুখ হয় আমি তার জন্য নিয়োজিত করি এক
শয়তান, তারপর সে হয় তার সহচর ৷ শয়তড়ানরাই মানুষকে সৎপথ, থেকে বিরত রাখে অথচ
মানুষ মনে করে তারা সৎপথে পরিচালিত হচ্ছে ৷ অবশেষে যখন সে আমার নিকট উপ
হবে, তখন সে শয়তড়ানকে বলবে, হায়! আমার ও তোমার মধ্যে যদি পুর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধান
থাকত ৷ কত নিকৃষ্ট সহচর সে! (৪৩ : ৩৬-৩৮)
অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা বলেন :
অর্থাৎ আমি তাদের জন্য নির্ধারণ ৷করে দিয়েছিলাম সহচর, যারা তাদের সম্মুখে ও
পশ্চাতে যা আছে তা তাদের দৃষ্টিতে শোভনন্করে দেখিয়েছিল ৷ (৪ ১ং ২৫)
অন্যত্র মহান আল্লাহ্ তাআলা বলেন :
অর্থাৎ তার সহচর শয়তান বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক আমি তাকে অবাধ্য হতে
প্ররোচিত করিনি ৷ বন্তুত সে নিজেই ছিল ঘোর বিভ্রান্ত ৷
আল্লাহ বলবেন, আমার সামনে বাক-বিতণ্ডা করো না, তোমাদের-কে আমি (তা পুর্বেই
সতর্ক করে দিয়েছিলাম ৷ আমার কথার রদবদল হয় না এবং আমি আমার বন্দোদের প্রতি কোন
অবিচার করি না ৷ (৫০ : ২৭-২৯)
অন্যত্র মহান আল্লন্হ্ বলেনঃ
অর্থাৎ এরুপ মানব ও জিনের মধ্যে শয়তানদেরকে আমি প্রতেদ্রক নবীর শত্রু করেছি;
প্রতারণড়ার উদ্দেশ্যে তাদের একে অন্যকে চমকপ্রদ বাক্য দ্বারা প্ররােচিত করে, যদি তোমার
প্রতিপালক ইচ্ছা করতেন; তবে তারা তা করাতা না ৷ সুতরাং তুমি তাদেরকে ও তাদের মিথ্যা
রচনাকে বর্জন কর ৷
এবং তারা এ উদ্দেশ্য প্ররোঢিত করে যে, যারা পরকালে বিশ্বাস করে না তাদের মন যেন
তার প্রতি অনুরাপী হয় এবং তাতে যেন তারা পরিভুষ্ট হয় আর যে অপকর্ম করে তারা যেন তাই
করতে থাকে ৷ (৬ : ১ ১২ ১ ১৩)
ইবন মাসউদ (রা) থেকে ইমাম আহমদ ও মুসলিম (র) কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদীস আমরা
ফেরেশতা পরিচিতি অধ্যায়ে উল্লেখ করে এসেছি ৷ তাতে আছে যে, রাসুলুল্পাহ্ (সা) বলেছেন :
অর্থাৎ “ কেউ বাদ নেই, তোমাদের প্রতেকের জিন সহচর ও ফেরেশতা সহচরকে তার
দায়িত্বে রাখা হয়েছে ৷ ”
এ কথা শুনে সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, এবং আপনারও ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ? তিনি বললেন
৪ আমারও কিত্তু আল্লাহ্ তাআলা আমাকে তার উপর সাহায্য করেছেন ৷ ফলে সে আমাকে
মঙ্গল ছাড়া অন্য কিছুর আদেশ করে না ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, ইবন আব্বাস (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন :
অর্থাৎ তোমাদের কেউ এমন নেই, যার উপর তার শয়তান সহচরকে নিয়োজিত করে
রাখা হয়নি ৷
একথা শুনে সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, আর আপনিও ইয়া রাসুলাল্লাহ্? রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন, “হী৷ , তবে আল্লাহ আমাকে তার উপর সাহায্য করেছেন, ফলে সে আমার অনুগত হয়ে
গেছে ৷ ইমাম আহমদ (র) একাই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং এ বিওয়ায়েতটি সহীহ
বুখারীর শর্তে উত্তীর্ণ ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্
(সা) এক রাতে তার নিকট থেকে বের হয়ে যান ৷ তিনি বলেন, তার এভাবে চলে যাওয়ার
আমি মন৪ক্ষগ্ন হই ৷ আয়েশা (রা) বলেন, কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে তিনি আমার অবস্থা ৷দেখে
বললেন৪ কী ব্যাপার, আয়েশা! তুমি মন৪ক্ষগ্ন হয়েছ? আয়েশা (বা) বলেন, জবাবে আমি
বললাম, আমার মত মানুষ আপনার মত লোকের উপর মন ৪ক্ষুগ্ন হবে না ণ্৩ তা কী ? এ কথা শুনে
বাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন৪ কি ব্যাপার, তোমার শয়তা৫নটা তামাকে পেয়ে বলেছে না কি?
আয়েশা (রা) বলেন, আমি বললাম, আমার সঙ্গে শয়তান আছে নাকি হে আল্লাহর রাসুল তিনি
বললেনং : হ্যা ৷ আমি বললাম , সব মানুষের সঙ্গেই আছে৪৩ তিনি বললেন, হী৷ ৷ আমি বললাম ,
আপনার সঙ্গেও আছে কি হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বললেন : হীা’ আছে বটে কিন্তু আল্লাহ
তার উপর আমাকে সাহায্য করেছেন ৷ ফলে সে অনুগত হয়ে গিয়েছে ৷ ’ অনুরুপ ইমাম মুসলিম
(র)ও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম আহমদ (র) বর্ণনা করেন যে, আবুহুরায়রা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :
অর্থাৎ মু মিন তার শয়তানের মাথার সম্মুখ ভাগের কেশ গুচ্ছ ধরে তাকে পরাভুত করে
থাকে, যেমনটি তোমাদের কেউ সফরে৩ তার অবাধ্য উটকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ৷
ইবলীস সম্পর্কে সংবাদ দিতে গিয়ে অ ৷ল্লাহ্ তা জানা বলেন :
অর্থাৎ যে বলল, তুমি আমাকে শাস্তিদান করলে, এ জন্য আমিও তোমার সরল পথে
মানুষের জন্য নিশ্চয় ওৎ পেতে থাকব০ ং তারপর আমি তাদের নিকট আসবই তাদের
সম্মুখ, পশ্চাৎ, দক্ষিণ ও নাম দিক থেকে এবং তুমি তাদের অধিকাৎশকে কৃতজ্ঞ প বে না ৷
(৭৪ ১৬ ১৭)
ইমাম আহমদ (ব ) বর্ণনা করেন যে, সুবরা ইবন অ ৷বু ফ৷ ৷কিহ্ (রা) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ
(সা) কে বলতে শুনেছি যে, শয়তান আদম সন্তানের জন্য বিভিন্ন পথে ওৎ পেতে বসে আছে ৷
ইসলামের পথে বসে থেকে সে বলে, তুমি কি ৫৩ তামার ও তোমার পিতৃ পুরুষের ধর্ম ত্যাগ করে
ইসলাম গ্রহণ করেছ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেন৪ কিন্তু আদম সন্তান তাকে অগ্রাহ্য করে ইসলাম
গ্রহণ করে ৷ তারপর সে হিজরতের পথে বসে থেকে বলে, তুমি কি আপন মাটি ও আকাশ
(মাতৃভুমি)৩ ত্যাগ করে হিজরত কবছ৪ ঘুহাজির তো দুরত্ব অতিক্রমে ঘোড়ার ন্যায় ৷ কিন্তু সে
তাকে অগ্রাহ্য করে হিজরত করে ৷ তারপর শ ৷য়তান জিহাদের পথে বসে যায় জিহাদ হলো
জান ও লাল উৎসর্গ করা তারপর বলল, তুমি লড়াই করে নিহত হবে আর তোমার শ্রী অন্য
স্বামী গ্রহণ করবে ও তােমার ধন-সম্পদ ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে যাবো রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন,
এবারও সে তাকে উপেক্ষা করে ও জিহাদ করে ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন : আদমের
সন্তানদের যে কেউ তা করবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহর যিষ্মায় থাকবে ৷ সে
শহীদ হয়ে গেলে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহর যিম্মায় থাকবে ৷ সে ডুবে গেলে তাকে
জান্নাতে প্রবেশ করানো আল্লাহ্র যিম্মায় থাকবে এবং তার সওয়ারী তাকে ফেলে দিয়ে মেরে
ফেললেও তাকে জান্নড়াতে প্রবেশ করানো আল্লাহ্র যিষ্মায় থাকবে ৷
ইমাম আহমদ (র) আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) সুত্রে বলেন যে , রাসুলুল্লাহ্ (সা ) প্রতিদিন
সকাল-বিকাল এ দৃআগুলো পাঠ করতেন-কখনো ছাড়তেন না :
অর্থাৎ “হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট দুনিয়া ও আখিরাতে নিরাময়তা প্রার্থনা করছি ৷
হে আল্লাহ্! আমি তোমার নিকট ক্ষমা এবং আমার দীন দুনিয়া, পরিবার পবিজন ও
ধন-সষ্পদ্দের নিরাপত্তা প্রার্থনা করছি ৷ হে আল্লাহ্! তুমি আমার যে সব বিষয় গোপন রাখ, যা
প্রকাশ পেলে আমার লজ্জা পেতে হবে আর আমার ভীতিকর বিষয়সমুহকে তুমি নিরাপদ করে
দাও ৷ হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে অগ্র-পশ্চাৎ, আমার ডড়ান-বাম ও আমার উপর থেকে হেফাজত
কর ৷ আর তোমার মর্যাদার উসিলার আমার নিচের থেকে আমাকে ধ্বংস করার ব্যাপারে আমি
তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি ৷
ওকী (র) বলেন, নিচের থেকে ধ্বংস করা মানে ধসিয়ে দেয়া ৷ ইমাম আবু দাউদ, নাসাঈ,
ইবন মজােহ্, ইবন হিব্বান ও হাকিম (র) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷ হাকিম (র ) একে সহীহ্
সনদের হাদীস বলে আখ্যায়িত করেছেন ৷
আদম (আ) এর সৃষ্টি
আল্লাহ তা আলা বলেন :
অর্থাৎ স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদের বললেন, আমি পৃথিবীতে
প্রতিনিধি সৃষ্টি করছি ৷ তারা বলল, আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে অশান্তি
ঘটাবে ও রক্তপাত করবে ? আমরাই তো আপনার সপ্রশংস ন্তুতি ও পবিত্রতা ঘোষণা করি ৷ তিনি
বললেন, আমি যা আমি তোমরা জান না ৷
এবং তিনি আদমকে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিলেন তারপর সে সমুদয় ফেরেশতার সম্মুখে
প্রকাশ করলেন এবং বললেন তোমরা আমাকে এ সবের নাম বলে দাও, যদি তোমরা স৩ বােদী
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (১ম খণ্ড) ২২-