নাকচকরণের তুলনায় অপ্রাধিকারযােগ্য ৷ কেননা সাব্যস্তকারীর সাথে যে অতিরিক্ত অবগতি
রয়েছে, তা নাকচকারীর নিকট নেই ৷ একইভাবে অতিরিক্ত অবগতি সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে
অন্যদের সাব্যস্তকারী রিওয়ায়াতসমুহও নাকচকারী বর্ণনার মুকাবিলায় প্রাধান্য পাবে ৷ বিশেষত
ইবন উমর থেকে যে রিওয়ায়াতখানি বর্ণিত হয়েছে ৷ কেননা সম্ভবত তিনি এ বর্ণনা গ্রহণ
’ করেছেন, তার বোন উন্মুল মুমিনীন হযরত হাফসা (রা) থেকে ৷ আর তার অবগতি হযরত
আনাসের অবগতির চাইতে পুর্ণতর ৷ কেননা, কখনও কখনও তিনি নবী আলাইহিস সালামের
মাথা আচড়িয়ে উকুন বেছে দিয়েছেন ৷
, নবী (সা)-এর কাধ, বাহু, বগল, পা ও পায়ের নিনাংশের উজ্যি হাড়দ্বয়
ইতিপুর্বে শুবা সংগৃহীত হাদীস থেকে হযরত বারা ইবন আযিব থেকে ইমাম বুখারী ও
মুসলিম যে হাদীস বর্ণনা করেছেন তা বর্ণিত হয়েছে ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) মধ্যম
আকৃতির ছিলেন ৷ তার দৃকাধের মাঝে বেশ খানিকটা দুরতু ছিল ৷ আবুন নুমান হযরত
আনাস সুত্রে ইমাম বুখারী বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, নবী করীম (সা) অপেক্ষাকৃত বড় মাথা
ও পদদ্বয়ের অধিকারী ছিলেন ৷ আর তার হাতের তালুদ্বয় ছিল কোমল সুষম গঠনের ৷ একথা
একাধিক সুত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী করীম (সা) কোমল ও মাংসল হাতের তালু ও পদদ্বয়ের
অধিকারী ছিলেন ৷ অন্য রিওয়ায়াতে এসেছে, তিনি পুষ্ট তালু ও পদদ্বয়ের অধিকারী ছিলেন ৷
ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান সালিহ সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি (সালিহ) বলেন, আবু হুরায়রা
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর গঠন বর্ণনা দিয়ে বলতেন, তিনি ছিলেন পুষ্ট ও ভরটি বাহুদ্বয়ের অধিকারী
দৃই র্কাধের মধ্যবর্তী দুরতৃসম্পন্ন ৷ দুই চোখের পলকে পাপড়িপুর্ণ ৷ আর আলী (রা)-এর বরাতে
বর্ণিত নাফি ইবন জুবায়রের হাদীসে রয়েছে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সাটু ছিলেন কোমল ও
মাংসল হাতের তালু ও পায়ের অধিকারী-বিশাল অন্থিন্গ্নন্থিওয়ালা, তার বুক থেকে নাভি পর্যন্ত
প্রলন্বিত কেশ-ব্লেখা ছিল ৷ আর হাজ্জাজ জাবির ইবন সামুরা সুত্রে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পায়ের গোছাদ্বয় সরু ছিল ৷ সুরাকা ইবন মালিক জু’শুম বলেন,
আমি তীর পায়ের গোছাদ্বয়ের দিকে তাকালাম ৷ অন্য রিওয়ায়াতে আংছ-রেকাবিতে রাখা তার
পদদ্বয়ের দিকে, যেন তা শুভ্রতায় খেজুর বৃক্ষের তরুমজ্জা ৷ জাবির ইবন সামুরা থেকে বর্ণিত
হাদীস মুসলিমের রিওয়ায়াতে রয়েছে-তিনি ছিলেন ভরটি মুখমগুলের অধিকারী ৷ আর তিনি
এর ব্যাখ্যা করেছেন যে তার মুখমণ্ডল ছিল বেশ বড় এবং তার চক্ষুদ্বয় ছিল ডাগৱ ডাগৱ ৷
তিনি এর ব্যাখ্যা করেছেন, দীর্ঘ ডাগৱ চক্ষু এবং শীর্ণ গোড়ালির অধিকারী ৷ অর্থাৎ তার
গোড়ালী ছিল অমাংসল ৷ আর পুরুষের দেহগঠনে এটাই অধিক সামঞ্জস্যপুর্ণ ও সুন্দর ৷
হারিছ ইবন আবু উসামা আবদুল্লাহ্ ইবন বকরের সুত্রে আনাস (রা) থেকে বর্ণনা
করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর মদীনায় আগমনকালে উষ্মে সুলায়ম আমার হাত
ধরে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! এ আনাস ! লিখক বালক, সে আপনার থেদমত করবে ৷ তিনি
(আনাস) বলেন, এরপর আমি নয় বছর তার খিদমত করেছি, কিন্তু আমার কৃত কোন কাজ
সম্পর্কে তিনি একথা বলেননি, তুমি মন্দ করেছ; বা তুমি কি মন্দ করেছ ৷ আর আমি কখনও
তার হাতের চাইতে কোমল কোন রেশমী কাপড় ইত্যাদি স্পর্শ করিনি এবং রাসুলুল্পাহ্
(না)-এর দেহের সুঘ্রাণের চাইতে উত্তম কোন মিশক বা আম্বরের ঘ্রাণ গ্রহণ করিনি ৷ রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর দেহের সুঘ্রাণ এবং তার হাতের কােমলতার ব্যাপারে হযরত আনাস থেকে মুতামির
ইবন সুলায়মান ও আলী ইবন আসিম এভাবেই হাদীসখানি রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আর
হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত যুবায়দীর হাদীসে রয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্পুর্ণ পায়ের
তালু দিয়ে ভুমি মড়োতেন, তার পায়ের তলায় কোন ভুমি স্পর্শহীন অংশ ছিল না ৷ অবশ্য এর
বিপরীত বর্ণনাও রয়েছে যা অচিরেই আসছে ৷ ইয়াষীদ ইবন হারুন আবদৃল্লাহ্ ইবন ইয়াষীদ
মায়মুনা ইবন কারদাম সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে মক্কায়
দেখেছি ৷ তখন তিনি তার উটনীতে সওয়ার ছিলেন ৷ আর আমি আমার আব্বার সাথে ছিলাম ৷
আর রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হাতে লিপিকারের দোররার ন্যায় দােররা ছিল ৷ এ সময় আমার
পিতা তীর নিকটবর্তী হলেন এবং তার সামনে সামনে থাকতে লাগলেন, তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)
তাকে ঐ কাজে বহাল রাখলেন ৷ মায়মুনা বলেন, আর আমি (এ সময় দেখা) নবী (না)-এর
সমস্ত আঙ্গুলের তুলনায় তার ধ্ পায়ের দ্বিতীয় আঙ্গুলটির দৈর্যোর কথা আজও ভুলিনি ৷ ইয়াষীদ
ইবন হারুন সুত্রে ইমাম আহমদ সবিস্তারে হাদীসখানি বর্ণনা করেছেন ৷ আর ঐ সুত্রে আবু
দাউদ আত্শিকভাবে তা বর্ণনা করেছেন; তন্ধ্রপ ভিন্ন সুত্রে ইবন মাজাও অন্য হাদীসখানি
রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আল্লাহ্ই সম্যক অবগত ৷ বায়হাকী আলী ইবন আহমদ জাবির
ইবন সামুরা (রা) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পায়ের একটি আঙ্গুল অর্থাৎ
কনিষ্ঠাঙ্গুলিটি বেশ চোখে পড়ত ৷ এটা অবশ্য গরীব পর্যায়ের বর্ণনা ৷
তীর সুঠাম দেহাবয়ব ও সুবাস
সহীহ্ বুখারীতে হযরত আনাস থেকে বর্ণিত ৷ রাবীআর-হাদীস সংগ্রহে রয়েছে যে,
রাসুলুল্লাহ্ (মা) ছিলেন মধ্যম আকৃতির (অতি) লম্বাও না, বেটেও না ৷ হযরত বারা ইবন
আযিব এর বরাতে আবু ইসহাক বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সুন্দরতম মুখাবয়ব এবং সুঠামতম
দেহাবয়বের অধিকারী ছিলেন ৷ (অতি) লম্বাও না, আবার বেটেও না ৷ বুখারী ও মুসলিমও
হাদীসখানি রিওয়ায়াত করেছেন ৷ নড়াফি ইবন জুবায়র হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণনা করেন
যে , তিনি বলেছেন ষ্ক রাসুলুল্লাহ্ (সা অতি) লম্বাও ছিলেন না, বেটেও না, তার আগে বা পরে
তার মত আর কাউকেই আমি দেখিনি ৷ সাঈদ ইবন মনসুর হযরত আলী (রা) থেকে
বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) লম্বাও ছিলেন না, বেটেও না, তবে লম্বার
কাছাকাছি ছিলেন ৷ তার খান ছিল, মুক্তার ন্যায় ৷ এছাড়া সাঈদ রাওহ হযরত আলী থেকে
বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) অতি লম্বা ছিলেন না, তবে তিনি মধ্যম
আকৃতির চেয়ে একটু লম্বা ছিলেন, লোকদের সমাবেশে থাকলে তাদেরকে ছাপিয়ে থাকতেন,
তার মুখমণ্ডলের ঘাম ছিল মুক্তার ন্যায় ৷ যুবায়দী আবু হুরায়রা (রা ) থেকে বর্ণনা
করেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) মধ্যম আকৃতির ছিলেন, তবে কিছুটা লম্বাটে ৷ আর তিনি গোটা দেহে
সামনে তাকাতেন এবং গোটা দেহে পেছনের দিকে তাকাতেন ৷ ১ তার আগে ও পরে তার মত
কাউকে আমি দেখিনি ৷ বুখারী শরীফে আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, হাম্মাদ ইবন যায়দের বর্ণিত
হাদীস থেকে সাব্যস্ত হয়েছে, তিনি (আনাস) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হাতের তালুর
চাইতে কোমল কোন রেশমী কাপড় বা অন্য কোন কিছু কখনও স্পর্শ করিনি এবং তার দেহের
১ অর্থাৎ আড় চোখে তাকাতেন না ৷ জালালাবাদী (সম্পাদক)