Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ১ » ফিরআউন ও তার বাহিনী ধ্বংসের বিবরণ

ফিরআউন ও তার বাহিনী ধ্বংসের বিবরণ

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • ফিরআউন ও তার বাহিনী ধ্বংসের বিবরণ

    বাদশাহ ফিরআউনের আনুগত স্বীকার এবং আল্লাহর নবী ও তার রাসুল মুসা ইবনে
    ইমরান (আ) এর বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়ে মিসরের কিবভীদের যখন তাদের কুফরী,
    অবাধ্যত৷ ও সত্য বিমুখতায় অবস্থান দীর্ঘায়িত হতে লাগল; আল্লাহ তাআলা তখন মিসরবাসীর
    নিকট বিস্ময়কর ও সুস্পষ্ট প্রমাণাদি পেশ করেন এবং তাদেরকে এমন সব অলৌকিক ঘটনা
    দেখান যাতে চোখ ঝলসে যায় এবং মানুষ হতবিহ্বল হয়ে পড়ে ৷ এতদসত্বেও তাদের কিছু
    সংখ্যক ব্যতীত কেউ বিশ্বাস স্থাপন করেনি; অন্যায় থেকে প্রত্যাবর্তন করেনি;
    জোর-জুলুম-অভ্যাচার থেকে বিরত থাকেনি এবং কেউ কেউ বলেন তাদের মধ্যে মাত্র তিন
    ব্যক্তি ঈমান এসেছিলেন ৷ একজন হচ্ছেন ফিরআউনের শ্রী, কিতাবীরা তার সম্বন্ধে মোটেও
    অব তনয় ৷ দ্বিভীয়জন হচ্ছেন ফিরআউনের সম্প্রদায়ের মুমিন ব্যক্তিটি যার নসীহত প্রদান,
    পরামর্শ দান ও তাদের বিরুদ্ধে দলীলাদি পেশ করার বিষয়টি ইতিপুর্বেই সবিস্তারে বর্ণনা করা
    হয়েছে ৷ তৃভীয়জন হচ্ছেন উপদেশ প্রদানকারী ব্যক্তিটি যিনি শহরের দুর প্রান্ত থেকে ছুটে এসে
    মুসা (আ)-কে তার বিরুদ্ধে সাজানো ষড়যন্ত্র সম্বন্ধে অবহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন, হে
    মুসা (আ) ফিরআউনের পারিষদরর্গ আপনাকে হত্যা করার জন্য সলাপরামর্শ করছে ৷ সুতরাং
    আপনি বের হয়ে পড়েন ৷ আমি আপনার একজন মঙ্গলকামী বৈ নই ৷ এটি আবদুল্লাহ ইবন
    আব্বাস (রা)-এর অভিমত ৷ যা ইবন আবু হাতিম (র)ও বর্ণনা করেছেন ৷ আবদুল্লাহ ইবন
    আব্বাস (রা)-এর অভিমত হল, এরা তিনজন হচ্ছেন জাদুকরদের অতিরিক্ত ৷ কেননা
    জাদৃকরগণও কিবভীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন ৷

    আবার কেউ কেউ বলেন, ফিরআউনের সম্প্রদায় কিবভীদের মধ্য হতে একটি দল ঈমান
    এনেছিল ৷ জাদুকরদের সকলে এবং বনী ইসরাঈলদের সকল গোত্রই ঈমান এনেছিল ৷ কুরআন
    মজীদে নিম্নোক্ত আয়াতে এর ইঙ্গিত পাওয়া যায় :

    অর্থাৎ “ফিরআউন ও তার পারিষদবর্গ নির্যাতন করবে এ আশৎকায় তার সম্প্রদায়ের
    একদল ব্যতীত আর কেউই তার প্রতি ঈমান আনেনি ৷ যমীনে তে তা ফিরআউন পরাক্রমশালী
    ছিল এবং সে অবশ্যই সীমা ৷লৎঘনক৷ ৷রীদের অন্তর্ভুক্ত ৷’ (সুরা ইউনুসং ৮৩)

    আয়াতাৎশ সর্বনামটিতে ফিরআউনকেই নির্দেশ করা হয়েছে ৷ কেননা,
    বাক্যের পুর্বাপর দৃষ্টেত তা স্পষ্ট বোঝা যায় ৷ আবার কেউ কেউ নিকটতম শব্দ মুসা (আ) এর

    প্রতি নির্দেশ করে বলে বলেছেন ৷ তবে প্রথম অভিমতটিই বেশি স্পষ্ট ৷ তাফসীরে এ সম্পর্কে
    বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ৷ আর তারা ঈমান এনেছিল গোপনে ৷ কেননা, তারা
    ফিরআউন ও তার প্রতিপত্তি এবং তার সম্প্রদায়ের অত্যাচার, অবিচার ও নিষ্ঠুরতাকে ভয়
    করত ৷ তারা আরো ভয় করত যে, যদি ফিরআউনের লোকেরা তাদের ঈমানের কথা জানতে
    পারে তাহলে তারা তাদেরকে ধর্মচ্যুত করে ফেলবে ৷ ফিরআউনের ঘটনা আল্লাহ বর্ণনা
    করেছেন আর আল্লাহর সাক্ষ্যই যথেষ্ট ৷ আল্লাহ তাআলা বলেন :

    অর্থাৎ “নিশ্চয়ই দেখে তো ফিরআউন পরাক্রমশালী ছিল ৷ সে ছিল স্বৈরাচারী , হঠকারী ও
    অন্যায়তাবে দান্ধিক ৷ ” আবার সে তার প্রতিটি কাজে, আচরণে ও ব্যবহারে ছিল
    সীমালংঘনকারী ৷ রন্তুত সে ছিল এমন একটি মারাত্মক জীবাণু যার ধ্বংস ছিল অত্যাসন্ন; যে
    এমন একটি নিকৃষ্ট ফল যার কাটার সময় ছিল অত্যাসন্ন, এমন অভিশপ্ত অগ্নিশিখা যার নির্বাপন
    ছিল সৃনিশ্চিত ৷
    তখন মুসা (আ) তার সম্প্রদায়কে বললেন :

    ৫হ আমার সম্প্রদায় ! যদি তোমরা আল্লাহতে ঈমান এনে থাক ,’ যদি তোমরা
    আত্মসমর্পণকারী হও তবে তোমরা তারই উপর নির্ভর কর ৷ তারপর তারা বলল, আমরা
    আল্লাহর উপর নির্ভর করলাম ৷ হে আমাদের প্ৰতিপালক৷ আমাদেরকে জালিম সম্প্রদায়ের
    উৎপীড়নের পাত্র করো না এবংঅড়ামাদেরকে তোমার অনুগ্রহে কাফির সম্প্রদায় হতে রক্ষা কর ৷ ’
    (সুরা ইউনুস : ৮৪ ৮৬)

    অর্থাৎ মুসা (আ) তার সম্প্রদায়কে আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা, আল্লাহ তাআলার কাছে
    সাহায্য প্রার্থনা এবং আল্লাহ তাআলড়ার নিকট আশ্রয় গ্রহণ করার জন্যে হুকুম দিলেন ৷ তারা তা
    মান্য করলেন ৷ তইি আল্লাহ তাআলাও তাদেরকে তাদের বিপদাপদ থেকে উদ্ধার করলেন ৷

    আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন :

    অর্থাৎ-“আমি মুসা (আ) ও তার ভাইয়ের নিকট প্রত্যাদেশ করলাম, মিসরে তোমাদের
    সম্প্রদায়ের জন্য গৃহ স্থাপন কর, তোমাদের গৃহগুলােকে ইবাদত গৃহ কর, সালাত কায়েম কর
    এবং মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও ৷ ” (সুরা ইউনুস : ৮ ৭)

    অন্য কথায় আল্লাহ তাআলা মুসা (আ) ও তার ভ্রাতা হারুন (আ) কে ওহী মারফত নির্দেশ
    দিলেন যেন তারা তাদের সম্প্রদায়ের জন্যে কিবতীদের থেকে আলাদা ধরনের গৃহ নির্মাণ করেন

    যাতে তারা নির্দেশ পাওয়া মাত্রইভ্রমণের জন্যে তৈরি হতে পারে এবং একে অন্যের ঘর সহজে
    চিনতে পারে ও প্রয়োজনে বের হয়ে পড়ার জন্যে সংবাদ দিতে পারে ৷

    আয়াতে উল্লেখিত আয়াতাংশ শ্রদ্বৰুধু;প্রু প্রু ৷স্পে ৷ § এর অর্থ হচ্ছে, তােমাদের
    গৃহগুলােকে ইবাদত গৃহ কর ৷’ কেউ কেউ বলেন, এটার অর্থ হচ্ছে গৃহগুলােতে বেশি বেশি
    সালাত আদায় করবে ৷ ’ মুজাহিদ (র), আবুমালিক (র), ইব্রাহীম আন-নাখয়ী (র), আর রাবী
    (র), যাহযাক (র), যায়িদ ইবন অড়াসলাম (র), তার পুত্র আবদুর রহমান (র) ও অন্যান্য
    তাফসীরকার এ অভিমত পোষণ করেন ৷ এ অভিমত অনুযায়ী আয়াতাৎশের অর্থ হবে ;; তারা
    যেসব অসুবিধা, ক্লেশ, কষ্ট ও সংকীংতািয় ভুগছে তা থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্যে অধিক হারে
    সালাত আদায় করে আল্লাহ তাআলার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা ৷

    যেমন আল্লাহ তাআলা অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন হ্র

    অর্থাৎ “ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা কর ৷ (সুরা বাকারা : ৪৫)

    হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, রাসুল (না) যখন কোন কঠিন বিষয়ের সম্মুখীন হতেন, তখন তিনি
    সালাত আদায় করতেন ৷

    আবার কেউ কেউ বলেন, এটার অর্থ হচ্ছে ফিরআউন ও তার সম্প্রদায়ের অত্যাচারের
    ভয়ে মসজিদ বা মজলিসে প্রকাশ্য ইরাতদ কষ্টসাধ্য হওয়ায় গৃহের নির্দিষ্ট স্থানে তাদেরকে
    সালাত আদায়ের অনুমতি দেয়া হয়েছিল ৷ প্রথম অর্থটি অধিক গ্রহণযোগ্য ৷ তবে দ্বিতীয়
    অর্থটিও অগ্নহণযােগ্য নয় ৷ আল্পাহই অধিক জ্ঞাত ৷

    সাঈদ ইবন জুবাইর (র) আয়াতাংশ র্বা’ এর তাফসীর প্রসঙ্গে
    বলেন, এটার অর্থ হচ্ছে, তোমরা তোমাদের বড়াড়িগুলােকে মুখোমুখি করে তৈরি কর ৷ ’

    আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন :

    অর্থাৎ মুসা বলল, হে আমাদের প্ৰতিপালক৷ তুমি ফিরআউন ও তার পারিষদবর্পকে
    পার্থিব জীবনে শোভা ও সম্পদ দান করেছ যা দিয়ে হে আমাদের প্রতিপালক ! তারা মানুষকে
    তোমার পথ থেকে ভ্রষ্ট করে ৷ হে আমাদের প্রতিপালক ! তাদের সম্পদ বিনষ্ট কর, তাদের হৃদয়
    কঠিন করে দাও ৷ তারা তো মর্মভুদ শাস্তি প্রত্যক্ষ না করা পর্যন্ত ঈমান আনবে না ৷ তিনি প্ৰতি
    উত্তরে বললেন, তোমাদের দুজনের প্রার্থনা গৃহীত হল ৷ সুতরাং তোমরা দৃঢ় থাক এবং তোমরা

    কখনও অজ্ঞদের পথ অনুসরণ করবে না ৷ (সুরা ইউনুস দ্ভ ৮৮-৮৯)

    উপরোক্ত আয়াতে একটি বিরাট অতিশাপের কথা ব্যক্ত করা হয়েছে ৷ আল্লাহ তড়াআলার
    শত্রু ফিরআউনের বিপক্ষে মুসা (আ) আল্লাহ তড়াআলার আমার-গযব অবতীর্ণ হবার জন্যে
    বদদুআ করলেন ৷ কেননা, সে সত্যের অনুসরণ ও আল্লাহ তাআলার সহজ সরল পথ থেকে
    বিমুখ ও বিচ্যুত ছিল ৷ আল্লাহ তাআলা প্রদত্ত সৎ, সহজ-সরল পথের বিরোধিতা করত,
    অসত্যকে আকডে ধরেছিল, ইশ্রিয়গ্রাহ্য প্রমাণ এবং যুক্তিগ্রড়াহ্য দলীলাদি দ্বারা সুপ্রমাণিত
    বাস্তবতাকে সে অস্বীকার, অগ্রাহ্য ও উপেক্ষা করত ৷ মুসা (আ) আরব করলেন, হে আমাদের
    প্ৰতিপালক ! তুমি ফিরআউন, তার সম্প্রদায় কিবতী ও তার অনুসারী এবং তার ধর্মকর্মের
    অনুগড়ামীদেরকে পার্থিব জীবনে শোভা ও সম্পদ প্রদান করেছ, তারা পার্থিব সম্পদকে অধিক
    গুরুৎ দিয়ে থাকে এবং তারা অজ্ঞ তাই তাদের এসব সম্পদ, শোভা যথা দামী দামী
    কাপড়-চােপড়, আরামপ্রদ সুন্দর সুন্দর যানবাহন, সুউচ্চ প্রাসাদ ও প্রশস্ত ঘরবাড়ি,
    দেশী-বিদেশী সুপ্রসিদ্ধ খাবার-দাবার , শোভাময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জনপ্রিয় রাজত্ব, প্রতিপত্তি ও
    পার্থিব হীকডাক ইত্যাদি থাকাকে বিরাট কিছু মনে করে ৷

    আয়াতে উল্লিখিত ও আয়াতাৎণের অর্থ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ
    ইবন আব্বাস (রা) ও মুজাহিদ (র) বলেন, আয়াতাংশে উল্লেখিত ণ্,৬৷ এর অর্থ ধ্বংস করে
    দাও ৷ প্

    আবুল আলীয়া (র), আর রাবী ইবন আনাস (র) ও যাহ্হাক (র) বলেন,এটার অর্থ
    হচ্ছে-এগুলােকে, এদের আকৃতি যেভাবে রয়েছে ঠিক সেভাবে নকশা খচিত পাথরে পরিণত
    করে দাও ৷ ’

    কাতাদা (র) বলেন, এটার অর্থ সম্পর্কে আমাদের কাছে যে বর্ণনা পৌছেছে তা
    হচ্ছে-তাদের ক্ষেত-খামার সব কিছুই পাথরে পরিণত হয়ে গিয়েছিল ৷ ’ মুহাম্মদ ইবন কাব
    (র) বলেন, এটার অর্থ হচ্ছে তাদের চিনি জাতীয় দ্ৰব্যাদি পাথরে পরিণত হয়ে গিয়েছিল ৷ তিনি
    আরো বলেন, এটার অর্থ এও হতে পারে যে, তাদের সমুদয় সম্পদ পাথরে পরিণত হয়ে
    গিয়েছিল ৷ ’ এ সম্পর্কে উমর ইবন আবদুল আযীয (র)-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তখন তিনি তার
    একটি দাসকে বললেন, আমার কাছে একটি থলে নিয়ে এস ৷ নির্দেশানুযায়ী সে একটি থলে
    নিয়ে আসলে দেখা গেল থলের মধ্যকার ছোলা ও ডিমগুলাে পাথরে পরিণত হয়ে রয়েছে ৷
    রর্ণনড়াটি ইবন আবুহড়াতিম (র)-এর ৷

    তাফসীর প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) বলেন, এটার অর্থ হচ্ছে, তাদের অন্তরে মােহর
    করে দাও ৷ আল্লাহ তড়াআলার প্রেরিত ধর্ম ও নিদর্শনাদিকে ফিরআউন ও তার সম্প্রদায় কতুকি
    অমান্য করার দরুন মুসা (আ) তাদের প্রতি আল্লাহ, তার নীল ও তার নিদর্শনাদির পক্ষে ক্রুন্ব
    হয়ে যখন বদদুআ করলেন, অমনি আল্লাহ তাআলা তা কবুল করেন এবং আবার-দো
    অবতীর্ণ করেন ৷

    যেমন-নুহ (আ)-এর বদদুআ তার সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আল্লাহ তাঅল্যে fl!
    করেছিলেন ৷ যখন তিনি বলেছিলেন : ন্ন্

    “হে আমার প্রতিপালক ! পৃথিবীতে কাফিরদের মধ্য হতে কোন গৃহবাসীকৈ অব্যাহতি দিও
    না ৷ তুমি তাদেরকে অব্যাহতি দিলে তারা তোমার বান্দাদেরকে বিভ্রান্ত করবে এবং জন্ম দিতে
    থাকবে কেবল দৃকৃতকারী ও কাফির ৷

    যখন মুসা (আ) ফিরআউন ও তার সম্প্রদায়ের প্রতি অভিশাপ দিয়েছিলেন, তার ভাই হারুন
    (আ) তার দু আর সমর্থনে আমীন’ বলেছিলেন এবং হারুন (আ) ও দু আ করেছেন বলে গণ্য
    করা হয়েছিল, তাই আল্লাহ তা আলা ইরশাদ করেন ং

    অর্থাৎ-“তোমাদের দুজনের দু আ কবুল হল ৷ সুতরাং তোমরা দৃঢ় থাক এবং তোমরা কখনও
    অজ্ঞদের পথ অনুসরণ করবে না ৷ ” (সুরা ইউনুস : ৮৯)

    তাফসীরকা ৷রগণ এবং আহলি কিতাবের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বনী ইসরাঈল তাদের ঈদের
    উৎসব পালনের উদ্দেশ্যে শহরের বাইরে যাবার জন্যে ফিরআউনের নিবল্ট অনুমতি প্রার্থনা
    করলে ফিরআউন অনিচ্ছা সত্বেও তাদেরকে অনুমতি প্রদান করল ৷ তারা বের হবার জন্যে
    প্রস্তুতি নিতে লাগল এবং পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেল ৷ প্রকৃত তপক্ষে এটা ছিল ফিরআউন ও তার
    সম্প্রদায়ের সাথে বনী ইসরাঈলের একটি চালাকি মাত্র, যাতে তারা ফিরআউন ও তার
    সম্প্রদায়ের অত্যাচার-অবিচার থেকে মুক্তি পেতে পারে ৷

    কিবাভীরা আরো উল্লেখ করেছে যে, আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাঈলকে কিবতীদের থেকে
    স্বর্ণালং ৷র কর্জ নেয়ার জন্যে হুকুম দিয়েছিলেন; তাই তারা কিবতীদের থেকে বহু অলৎকারপত্র
    কর্জ নিয়েছিল এবং রাতের অন্ধকারে তারা বের হয়ে পড়ল ও বিরামহীনভাবে অতি দ্রুত পথ
    অতিক্রম করতে লাগল — যাতে তারা অনতিবিলন্বে সিরিয়ার অঞ্চলে পৌছতে পারে ৷ ফিরআউন
    যখন তাদের মিসর ত্যাগের কথা জানতে পারল, সে তখন তাদের প্রতি ৩ক্রুদ্ধ হল এবং তাদের
    বিরুদ্ধে তার রাগ চরম আকার ধারণ করল ৷ সে৩ তার সেনাবাহিনীকে প্ররােচিত করল এবং বনী
    ইসরাঈলকে পাকড়াও করার ও তাদের সমুলে ধ্বংস করার জন্যে তাদের সমবেত করল ৷

    আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেনং :

    আমি মুসা (আ) এর প্রতি ওহী অবতীর্ণ করেছিলাম এই মর্মেং আমার বান্দাদেরকে নিয়ে
    রাতের বেলা বের হয়ে পড়; তোমাদের তো পশ্চাদ্ধাবন করা হবে ৷ তারপর ফিরআউন শহরে
    শহরে লোক সগ্রেহকারী পাঠাল এই বলে যে, এরা তো ক্ষুদ্র একটি দল; ওরা তাে আমাদের
    ক্রোধ উদ্রেক করেছে এবং আমরা তো সকলেই সদা সতর্ক ৷ পরিণামে আমি ফিরআউন
    গােষ্ঠীকে বহিকৃত করলাম ওদের উদ্যানরাজি ও প্রস্রবণ থেকে এবং ধনভাণ্ডার ও সুরম্য
    সৌধমালা থেকে ৷ এরুপই ঘটেছিল এবং বনী ইসরাঈলকে এসবের অধিকারী করেছিলাম ৷ ওরা
    সুর্যোদয়কালে তাদের পশ্চাতে এসে পড়ল ৷ অতঃপর যখন দৃদল পরস্পরকে দেখল, তখন
    মুসার সঙ্গীরা বলল, আমরা তো ধরা পড়ে পেলাম ৷ মুসা বলল, কখনই নয় আমার সঙ্গে
    আছেন আমার প্রতিপালক; সতু র তিনি আমাকে পথ-নির্দেশ করবেন ৷ তারপর মুসার প্রতি ওহী
    করলাম, তোমার লাঠি৷ দ্ব ৷রা সমুদ্রে আঘাত কর, ফলে এটা বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক ভাগ বিশাল
    পর্বতের মত হয়ে গেল ৷ আমি সেখানে উপনীত করলাম অপর দলটিকে এবং আমি উদ্ধার
    করলাম মুসা ও তার সঙ্গী সকলকে ৷ তৎপর নিমজ্জিত করলাম অপর দলটিকে ৷ এতে অবশ্যই
    নিদর্শন রয়েছে কিভু তাদের অধিকাৎশই মুমিন নয় ৷ তোমার প্রতিপালক তিনি তো
    পরাক্রমশালী; পরম দয়ালু ৷ (সুরা শুআরা : ৫২-৮০) ৷

    তাফসীরকারপণ বলেন, ফিরআউন যখন বনী ইসরাঈলকে পিছু যাওয়ার জন্যে সৈন্যসামন্ত
    নিয়ে বের হল তখন তার সাথে ছিল একটি বিরাট সৈন্যদল ৷ এ সৈন্যদলের ব্যবহৃত ঘোড়ার
    মধ্যে ছিল একলাখ উন্নতমানের কালো ঘোড়া এবং সৈন্য সংখ্যা ছিল সােল লাখের উঃর্ধ্ব ৷
    প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলাই সম্যক জ্ঞাত ৷

    কেউ কেউ বলেন, শিশুদের সংখ্যা বাদ দিয়ে বনী ইসরাঈলের মধ্যেই ছিল প্রায় ছয় লাখ
    যোদ্ধা ৷ মুসা (আ)-এর সাথে বনী ইসরাঈলের মিসর ত্যাগ ও তাদের আদি পিতা ইয়াকুব (আ)
    বা ইসরাঈলের সাথে মিসর প্রবেশের মধ্যে ছিল ঢাকা ছাব্বিশ সৌর বছরের ব্যবধান ৷

    মােদ্দা কথা, ফিরআউন সৈন্যসামন্ত নিয়ে বনী ইসরাঈলকে ধরার জন্যে অগ্রসর হল এবং
    সুর্যোদয়ের সময়ে তারা পরস্পরের দেখা পেল ৷ তখন সামনাসামনি যুদ্ধ ছাড়া গতাত্তর ছিল না ৷
    এ সময়ই মুসা (আ)-এর অনুসারিপণ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বলতে লাগল, আমরা তাহলে ধরা পড়ে
    গেলাম ৷ তাদের ভীত হবার কারণ হল, তাদের সম্মুখে ছিল উত্তাল সাগর ৷ সাগরে বাপিয়ে
    পড়া ছাড়া তাদের আর কোন পথ বা গতি ছিল না ৷ আর সাগর পাড়ি দেয়ার শক্তিও ছিল না ৷
    তাদের বাম পাশে ও ডান পাশে ছিল সুউচ্চ খাড়া পাহাড় ৷ ফিরআউন তাদেরকে একেবারে
    আটকে ফেলেছিল ৷ মুসা (আ)-এর অনুসারীরা ফিরআউনকে তার দলবল ও বিশাল সৈন্যসামন্ত
    সহকারে অবলোকন করছিল ৷ তারা ফিরআউনের ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়ছিল ৷ কেননা, তারা
    ফিরআউনের রাজ্যে ফিরআউন কর্তৃক লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছিল ৷ সুতরাং তারা আল্লাহর
    নবী মুসা (আ)-এর কাছে তাদের অবস্থা সম্পর্কে অনুযােগ করল ৷

    তখন আল্লাহর নবী মুসা (আ) তাদেরকে অভয় দিয়ে বললেন ও -কখনও না; নিশ্চয়ই আমার সাথে আমার প্রতিপালক রয়েছেন, তিনি

    আমাকে পরিত্রাণের সঠিক পথ-নির্দোণ করবেন ৷’ মুসা (আ) তার অনুসারীদের পশ্চাৎভাগে
    ছিলেন ৷ তিনি অগ্রসর হয়ে সকলের সম্মুখে গেলেন এবং সাগরের দিকে তাকালেন ৷ সাগরে
    তখন উত্তাল তরঙ্গ ছিল ৷ তখন তিনি বলছিলেন : আমাকে এখানেই আসার জন্য নির্দেশ দেয়া
    হয়েছে ৷ তার সাথে ছিলেন তার ভাই হারুন (আ) এবং ইউশা ইবন নুন যিনি বনী ইসরাঈলের
    বিশিষ্ট নেতা, আলিম ও আবিদ ৷ মুসা (আ) ও হারুন (আ) এর পরে আল্লাহ তা আলা তার
    কাছে ওহী প্রেরণ করেন ও তাকে নবুওত দান করেন ৷ পরবর্তীতে তার সম্বন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা
    আসবে ৷ মুসা (আ) ও তার দলবলের সাথে ফিরআউন সম্প্রদায়ের মু মিন বান্দা ৷টিও ছিলেন ৷
    তারা থমকে দাড়িয়েছিলেন আর গো টা বনী ইসরাঈল গোত্র তাদের ঘিরে দাড়িয়েছিল ৷ কথিত
    আছে, ফিরআউন সম্প্রদায়ের মুমিন বান্দাটি ঘোড়া নিয়ে কয়েকবার সাগরে ঝাপ দেবার চেষ্টা
    করেন কিন্তু তার পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠল না ৷ তাই তিনি মুসা (আ)-কে জিজ্ঞেস করেন, হে
    আল্লাহর নবী (আ) আমাদেরকে কি এখানেই আসার নির্দেশ দেয়৷ হয়েছে? মুসা (আ)
    বললেন, হ্যা ৷ যখন ব্যাপারটি তুঙ্গে উঠল, অবস্থা সঙ্গীন হয়ে দাড়াল, ব্যাপারটি ভয়াবহ
    আকার ধারণ করল; ফিরআউন ও তার গোষ্ঠী সশস্ত্র সৈন্য সড়ামস্ত নিয়ে ক্রোধভরে অতি
    সন্নিকটে এসে পৌছাল; অবস্থা বেগতিক হয়ে র্দাড়াল; চক্ষু স্থির হয়ে গেল এবং প্রাণ ওষ্ঠাগত
    হয়ে উঠল, তখন ধৈর্যশীল মহান শক্তিমান, আরশের মহান অধিপতি, প্রতিপালক আল্লাহ
    তা জানা মুসা কালিমুল্লাহ (আ) এর কাছে ওহী প্রেরণ করলেনচ্ ৷ অর্থাৎ নিজ লাঠি দ্বারা সাগরে আঘাত কর ৷ যখন তিনি লাগবে আঘাত করলেন, কর্থিত
    আছে তিনি সাগরকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, আল্লাহর হুকুমে বিভক্ত হয়ে যাও ৷’ যেমন আল্লাহ

    তা আল৷ ইরশাদ করেন০

    অর্থাৎ-আমি মুসার প্রতি ওহী করলাম, আপন লাঠি দ্বারা সমুদ্রে আঘাত কর, ফলে তা
    বিভক্তহয়ে প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতের মত হয়ে গেল ৷ (সুরা শুঅড়ারা : ৬৩)

    কথিত আছে, সমুদ্বটি বারটি খণ্ডে বা রাস্তায় বিভক্ত হয়েছিল ৷ প্রতিটি গোত্রের জন্যে একটি
    করে রাস্তা হয়ে গেল, যাতে তারা নিজ নিজ নির্ধারিত রাস্তায় সহজে পথ চলতে পারে ৷ এ
    রান্তাগুলোর মধ্যে জানালা ছিল বলে কেউ কেউ মত প্রকাশ করেন, যাতে তারা একদল
    অন্যদলকে অনায়াসে রাস্তা চলার সময় দেখতে পড়ায় ৷ কিন্তু এই অভিমতটি শুদ্ধ নয় ৷ কেননা,
    পানি যেহেতু স্বচ্ছ পদার্থ তাই তার পিছনে আলো থাকলে দৃষ্টি বাধাপ্রাপ্ত হয় না ৷ সুতরাং
    একদল অন্যদলকে দেখার জন্যে জানালা থাকার প্রয়োজন হয় না ৷ যেই সত্তা কোন বস্তুকে সৃষ্টি
    করতে ;,£ হয়ে যাও বললে সাথে সাথে তা হয়ে যায়, সেই সত্তার মহান কুদরতের কারণেই
    সমুদ্রের পানি ছিল পর্বতের মত দণ্ডায়মান ৷ অতঃপর আল্লাহ তাআলা সমুদ্রে বিশেষ ধরনের
    বায়ু প্রেরণ করেন যার ধাক্কায় পানি সরে রাস্তাগুলে৷ শুকিয়ে যায়, যাতে ঘোড়া ও অন্যান্য প্রাণীর
    থুর না আটকিয়ে যায় ৷ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :

    অর্থাৎ“আমি অবশ্যই মুসা (আ) এর প্রতি প্র৩ ৷৷দেশ করেছিলাম এ মর্মে, আমার
    বান্দা দেরকে নিয়ে রাতের বেলা বেরিয়ে পড় এবং তাদের জন্যে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে এক শুকনো
    পথ নির্মাণ কর ৷ পশ্চাৎ হতে এসে তোমাকে ধরে ফেলা হবে এরুপ আশংকা করো না এবং
    ভয়ও করো না ৷ অতঃপর ফিরআউন তার সৈন্য-সামন্তসহ তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল, তারপর
    সমুদ্র তাদেরকে সম্পুর্ণরুপে নিমজ্জিত করল আর ফিরআউন তার সম্প্রদায়কে পথভ্রষ্ট করেছিল
    এবং সৎপথ দেখায়নি ৷ (সুরা তা-হ৷ : ৭ ৭ ৭৯) ৷
    বন্তুত পরম পরাক্রমশালী সৃষ্টিকর্তা প্ৰতিপালকের আদেশে যখন সমুদ্রের অবস্থা এরুপ
    ং দাড়াল বনী ইসরাঈলকে নিয়ে সমুদ্র পার হবার জন্যে মুসা (আ) ৫-ক নির্দেশ দেয়া হল তখন
    তারা সকলে আ ৷নন্দচিত্তে অতি দ্রুত সমুদ্রে অবতরণ করেন ৷৩ তারা অবশ্য দৃষ্টি নিক্ষেপকারীদের
    দৃষ্টি ঝলসিয়ে দেয় ও তাদের অবাক করে দেয় ৷ আর এরুপ দৃশ্য মুমিনদের অম্ভরসমুহকে
    সঠিক পথের সন্ধান দেয় ৷ যখন তারা এরুপে সমুদ্র পার হবার জন্যে সমুদ্রে অবতরণ করেন,
    নির্বিঘ্নে র্তারা সমুদ্র পার হলেন এবং তাদের শেষ সদস্যও সমুদ্র পার হলেন ৷ আর যখন তারা
    সমুদ্র পার হলেন, ঠিক তখনই ফিরআউনের সৈন্য-সামস্তের প্রথমাংশ ও অ্যাগামীদল সমুদ্রের
    কিনারায় পৌছাল ৷ তখন মুসা (আ) ইচ্ছে করেছিলেন যে, পুনরায় সমুদ্রে লাঠি দিয়ে আঘাত
    করবেন যাতে সমুদ্রের অবস্থা পুর্ববৎ হয়ে যায় এবং ফিরআউনের দল তাদেরকে ধরতে না পারে
    ও তাদের পৌছার কো ন বাহনই না থাকে ৷ কিন্তু আল্লাহ তাআলা সমুদ্রকে এ অবস্থায় ছেড়ে
    দিতে মুসা (আ) কে নির্দেশ দিলেন ৷ যেমন আল্লাহ্৩ তা জানা ইরশাদ করেন :

    অর্থাৎ তাদের পুর্বে আমি তো ফিরআউন সম্প্রদায়কে পরীক্ষা করেছিলাম এবং তাদের
    নিকটও এসেছিল এক সম্মানিত রাসুল ৷ সে বলল, আল্লাহর বান্দাদেরকে আমার নিকট প্রতদ্রর্পণ
    কর ৷ আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসুল এবং তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য প্রকাশ
    করো না ৷ আমি তোমাদের নিকট উপস্থিত করছি স্পষ্ট প্রমাণ ৷ তোমরা যাতে আমাকে
    প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতে না পার, সে জন্য আমি আমার প্রতিপালক ও তোমাদের প্রতিপালকের
    শরণ নিচ্ছি ৷ যদি তোমরা আমার কথায় বিশ্বাস স্থাপন না কর, তবে তোমরা আমার নিকট
    থেকে দুরে থাক ৷

    তারপর মুসা তার প্রতিপালকের নিকট নিবেদন করল, এরা তো এক অপরাধী সম্প্রদায় ৷ ’
    আমি বলেছিলাম, ভুমি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাতের বেলা বের হয়ে পড়; তোমাদের
    পশ্চাদ্ধাবন করা হবে ৷ সমুদ্রকে স্থির থাকতে দাও, ওরা এমন এক বাহিনী যা নিমজ্জিত হবে ৷
    ওরা পশ্চাতে রেখে গিয়েছিল কত উদ্যান ও প্ৰস্রবণ, কত শস্যক্ষেত্র ও সুরম্য প্রাসাদ, কত
    বিলাস-উপকরণ, ওতে তারা আনন্দ পেভাে ৷ এরুপই ঘটেছিল এবং আমি এ সমুদয়ের
    উত্তরাধিকারী করেছিলাম ভিন্ন সম্প্রদড়ায়কে ৷ আকাশ এবং পৃথিবী কেউই ওদের জন্যে অশ্রুপাত
    করেনি এবং ওদেরকে অবকাশও দেয়া হয়নি ৷ আমি তো উদ্ধার করেছিলাম বনী ইসরাঈলকে
    লাঞ্চুনাদায়ক শাস্তি হতে ফিরআউনের; সে তো ছিল পরাক্রান্ত সীমালংঘনকারীদের অন্তর্ভুক্ত ৷
    আমি জেনে-শুনেই ওদেরকে বিশ্বে শ্রেষ্ঠতু দিয়েছিলাম এবং ওদেরকে দিয়েছিলাম
    নিদর্শনাবলী-যাতে ছিল সুস্পষ্ট পরীক্ষা ৷ (সুরা দৃথান : ১ ৭-৩৩)

    আয়াতাত্শ এর অর্থ হচ্ছে সমুদ্রকে তার অবস্থায় স্থির থাকতে
    দাও, তার ব্যতয়ে ঘটড়ায়াে না ৷ এ মতটি আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (বা) , মুজাহিদ (র) , ইকরিমা
    (র) , রাবী (ব) , যাহ্হাক (র) , কাতাদা (র) , কাব আল-আহবার (রা) , সেমাক ইবন হারব (র)
    এবং আবদুর রহমান ইবন যায়দ ইবন আসলাম (র) প্রমুখের ৷

    সমুদ্রের সেই স্থিতারস্থায়ই ফিরআউন সমুদ্রের তীরে পৌছলো, সবকিছু (দখল এবং সমুদ্রের
    আশ্চর্যজনক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করল ৷ আর পুরোপুরি বুঝতে পারল যেমন পুর্বেও বুঝত যে,
    এটা মহাসম্মানিত আরশের মহান মালিক প্রতিপালকেরই কুদরতের লীলাখেলা ৷ সে থমকে
    দীড়াল, সম্মুখে অগ্রসর হলো না এবং বনী ইসরাঈল ও মুসা (আ) কে পিছু ধাওয়া করার জন্যে
    মনে মনে অনুতপ্ত হল, তবে এ অবস্থায় অনুতাপ যে তার কোন উপকারে আসবে না, যে তা
    ভাল করে বুঝতে পারল ৷ তা সত্বেও সে তার সেনাবাহিনীর নিকট তার অটুট মনােবলের কথা
    ও আক্রমণাত্মক ভাব প্রকাশ করল ৷ যে সম্প্রদায়কে সে হতবুদ্ধি করে দিয়েছিল, ফলে তারা তার
    আনুগত্য স্বীকার করেছিল, বাবা তাকে বাতিলের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা সত্বেও তার অনুসরণ
    করেছিল নিজ কুফরীতে লিপ্ত ফাসিক ও ফাজির নাফসের প্ররােচনায় তাদেরকে উদ্দেশ করে সে
    বলল, তোমরা একটু লক্ষ্য করে দেখ, সমুদ্র আমার জন্যে সরে গিয়ে কিরুপে পথ করে
    দিয়েছে-যাতে আমি আমার ঐসব পলাতক দাসদেরকে ধরতে পারি-যারা আমার আনুগত্য
    স্বীকার না করে আমার রাজতৃ থেকে বের হয়ে যাবার চেষ্টা করছে ৷ মুখে এরুপ উচ্চবাচ্য
    করলেও অম্ভার সে দ্বন্থের মধ্যে ছিল যে , সে কি তাদের পিছু ধাওয়া করবে, নাকি আত্মরক্ষার্থে

    পিছু হটে যাবে? হয়ে! তার হটে যাবার কোন উপায় ছিল না, সে এক কদম সামনে অগ্রসর
    হলে কয়েক কদম পিছু হটবার চেষ্টা করছিল ৷

    তাফসীরকারগণ উল্লেখ করেন, এরুপ অবস্থায় জিবরাঈল (আ) একটি আকর্ষণীয় ঘোটকীর
    উপর সওয়ার হয়ে আত্মপ্রকাশ করলেন এবং ফিরআউন যে ঘোড়ার উপর সওয়ার ছিল তার
    সম্মুখ দিয়ে সমুদ্রের দিকে ঘোটকীটি অগ্রসর হল ৷ তার ঘোড়াঢি ঘোটকীর প্রতি আকৃষ্ট হল এবং
    ঘোড়াঢি ঘোটকীর পিছু পিছু ছুটতে লাগল ৷ জিবরাঈল (আ) দ্রুত তার সামনে গেলেন এবং
    সমুদ্রে ঝাপ দিলেন ৷ ঘোড়া ও মাদী ঘোড়াঢি ছুটতে লাগল ৷ ঘোড়াঢি সামনের দিকে দ্রুত
    অগ্রসর হতে লাগল ৷ ঘোড়ার উপর ফিরআউনের আর নিয়ন্ত্রণ রইল না ৷ ফিরআউন তার
    তাল-মন্দ কিছুই চিন্তা করতে সক্ষম ছিল না ৷ সেনাবাহিনী যখন ফিরআউনকে দ্রুত সামনের
    দিকে অগ্রসর হতে দেখল, তারাও অতি দ্রুত তার পিছনে সমুদ্রে ঝাপ দিল ৷ যখন তারা
    সকলেই পরিপুংতািবে সমুদ্রে ঢুকে গেল এবং সেনাবাহিনীর প্রথম ভাগ সমুদ্র থেকে বের হবার
    উপক্রম হল আল্লাহ তাআলা মুসা (আ)-কে আদেশ করলেন; তিনি যেন তার লাঠি দিয়ে
    পুনরায় সমুদ্রে আঘাত করেন ৷ তিনি সুমদ্রে আঘাত করলেন ৷ তখন সমুদ্র পুর্বের আকার ধারণ
    করে ফিরআউন ও তার সেনাবাহিনীর মাথার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলো ৷ ফলে তাদের কেউই
    আর রক্ষা গেল না, সকলেই ডুবে মরল ৷ আল্পাহ্ তাআলা বলেন :

    অর্থাৎ এবং আমি উদ্ধার করলাম মুসা ও তার সঙ্গী সকলকে ৷ তারপর নিমজ্জিত করলাম
    অপর দলটিকে ৷ এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে কিন্তু তাদের অধিকাৎশই মু’মিন নয় ৷ তোমার
    প্রতিপালক তিনি তাে পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু ৷ (সুরা শুআরা : ৬৫৬৮ )

    অর্থাৎ তিনি তার পছন্দনীয় মুমিন বড়ান্দাদের উদ্ধারের ব্যাপারে পরাক্রমশালী ৷ তাই তাদের
    একজনও ডুবে মার৷ যাননি ৷ পক্ষান্তরে তার দৃশমনদেরকে ডুবিয়ে মারার ব্যাপারেও তিনি
    পরাক্রমশালী ৷ তাই তাদের কেউই রক্ষা পায়নি ৷ এতে রয়েছে আল্লাহ তাআলার অসীম
    কুদরতের একটি মহা নিদর্শন ও প্রকৃষ্ট প্রমাণ ৷ আবার অন্যদিকে রাসুল (না) যে মহান শরীয়ত
    ও সরল-সঠিক তরীকড়া নিয়ে আবির্ভুত হয়েছেন, তার সভ্যতার জ্বলম্ভ প্রমাণও বটে ৷

    এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন ;;

    অর্থাৎ-আমি বনী ইসরাঈলকে সমুদ্র পার করলাম; এবং ফিরআউন ও তার সৈন্যবাহি নী
    ঔদ্ধতাসহকারে সীমালংঘন করেত তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল ৷ পরিশেষে যখন সে নিমজ্জমান হল
    তখন বলল, অমি বিশ্বাস করলাম বনী ইসরাঈল যাতে বিশ্বাস করে ৷ নিশ্চয়ই তিনি ব্যতীত অন্য
    কোন ইলাহ নেই এবং আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত ৷ এখন ! ইতিপুর্বে তো তুমি অমান্য
    করেছ এবং তুমি অশান্তি সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে ৷ আজ আমি তোমার দেহটি রক্ষা করব
    যাতে তুমি ওে ৷মার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক ৷ অবশ্যই মানুষের মধ্যে অনেকে
    আমার নিদর্শন সম্বন্ধে গাফিল ৷ (সুরা ইউনুসং ; ৯০-৯২)

    অন্য কথায়, অত্র আয়াতে আল্লাহ্ তাআল৷ কিবতী কাফিরদের প্রধান ফিরআউনের ডুবে
    মরার বিবরণ দেন ৷ উত্তাল তরঙ্গ যখন তাকে একবার উপরের দিকে উঠাচ্ছিল এবং অন্যবার
    নিচের দিকে নামাচ্ছিল এবং ফিরআউন ও তার সেনাবাহিনী কিরুপ মহাসংক কট ও দুর্ভেদ্য
    মুসীবতে পতিত হয়েছিল তা বনী ইসরা ঈলরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে প্ৰ৩ তাক্ষ করছিল যা তাদের চোখ
    জুড়াচ্ছিল ও হৃদয়ের জ্বালা প্রশমিত করছিল ৷ ফিরাউন যখন নিজের ধ্বংস প্রত্যক্ষ করল; যে
    কোণঠাসা হয়ে পড়ল এবং তার মৃত্যুযস্ত্রণ৷ শুরু হয়ে গেল তখন সে বিনম্র হল; তওবা করল
    এবং এমন সময় ঈমান আনয়ন করল, যখন তার ঈমান কারো উপকারে আসে না ৷

    যেমন আল্লাহ্ তাআ ৷লা ইরশাদ করেন :

    অর্থাৎ-যাদের বিরুদ্ধে তোমার প্রতিপালকের বাক্য সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে তারা ঈমান
    আনবে না যদি তাদের নিকট প্রত্যেকটি নিদশ্নি আসে যতক্ষণ না তারা মর্মন্তুদ শাস্তি প্রত্যক্ষ
    করবে ৷ (সুরা ইউনুস : ৯৬-৯ ৭)
    আল্লাহ্ তাআলা এ প্রসঙ্গে আরো ইরশাদ করেছেন :

    অর্থাৎ-তারপর তারা যখন আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল তখন বলল, আমরা এক আল্পাহ্তে

    ঈমান আনলাম এবং আমরা তার সাথে যাদেরকে শরীক করতাম তাদেরকে প্রত্যাখ্যান

    করলাম ৷ ওরা যখন আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল, তখন ওদের ঈমান ওদের কোন উপকারে

    আসল না ৷ আল্লাহ্র এই বিধান পুর্ব থেকেই তার বান্দাদের মধ্যে চলে আসছে এবং এ ক্ষেত্রে
    কাফিররা ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৷ (সুরা মুমিন : ৮৪ ৮৫)

    অনুরুপ মুসা (আ) ফিরাউন ও তার গোষ্ঠীর ব্যাপারে বদ দুআ করেছিলেন, যাতে আল্লাহ্
    তাআলা তাদের সম্পদ ধ্বংস করে দেন এবং তাদের অম্ভরে আল্লাহ্ তাআলা মােহর মেরে

    দেন, যাতে তারা মর্মত্তুদ শান্তি প্রত্যক্ষ করার পুর্বে ঈমান না আনতে পারে ৷ অর্থাৎ তখন তাদের
    ঈমান তাদের কোন কাজে আসবে না আর এটা হবে তাদের জন্যে আক্ষেপের কারণ ৷ মুসা
    (আ) ও হারুন (আ) যখন এরুপ বদ দুঅ৷ করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ

    করলেনং : — তােমাদের দুজনের দুআ কবুল হল ৷’ এ প্রসঙ্গে নিম্নে বর্ণিত হাদীসটি
    প্রগিধানযোগ্য ৷ ইমাম আহমদ (র) আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
    বলেন, রাসুলুল্পাহ (সা) ইরশাদ করেছেন ফিরআউনের উক্তিং

    “আমি বিশ্বাস করলাম বনী ইসরা ঈল যাতে বিশ্বাস করে, নিশ্চয়ই তিনি ব্যতীত অন্য কোন
    ইলাহ নেই ৷ ” (সুরা ইউনুস : ৯০)

    এ প্রসঙ্গে জিবরাঈল আমাকে বললেন, (হে রাসুল!) ঐ সময়ের অবস্থা যদি আপনি
    দেখতেন! সমুদ্রের তলদেশ থেকে কাদা নিয়ে তার মুখে পুরে দিলাম, পাছে সে আল্লাহ
    তা জানার রহমত না পেয়ে যায় ৷ এই আয়াতে র ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইমাম তিরমিযী (র) ইবন
    জারীর (র) ও ইবন আবুহাতিম (র) প্রমুখ এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷ তিরমিযী (র) হাদীসটি
    হাসান পর্যায়ের বলে মত প্রকাশ করেছেন ৷ আবু দাউদ তাবলিসী (র)ও অনুরুপ হাদীস বর্ণনা
    করেছেন ৷ ইবন আবুহাতিম (র) ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷

    আল্লাহ্ তাআলা যখন ফিরআউনকে ডুবিয়ে দিলেন, তখন সে তার আঙ্গুল দ্বারা ইশারা
    করল এবং উট্চ্চক্কস্বরে বলল :

    এ্যা
    রাসুল (সা) বলেন, জিবরাঈল (আ) তখন আশঙ্কা করছিলেন যে, আল্লাহ্ তাআলার

    রহমত আল্লাহ তাআলার গযবের উপর প্রাধান্য না পেয়ে যায় ৷ তিনি তখন তার পাখা দ্বারা
    কাল মাটি তুলে ফিরআ উনের মুখে ছুড়ে মারল যাতে করে তার মুখ ঢাকা পড়ে যায় ৷

    ইবন জারীর (র) অন্য এক সুত্রে আবু হুরায়র৷ (রা) থেকে এ মর্মের হাদীস বর্ণনা
    করেছেন ৷ ইব্রাহীম তায়মী (র), কাতাদা (র), মাইমুন ইবন মিহরান (র) প্রমুখ হাদীসটি
    মুরসালরুপে বর্ণনা করেছেন ৷

    কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে, জিবরাঈল (আ) বলেছেন, আমি ফিরআউনের মত অন্য
    কাউকে এত বেশি ঘৃণা করি নাই যখন সে বলেছিল প্লে;ৰুন্ ন্কুপুর্চু ঠো অর্থাৎ আমিই
    তোমাদের শ্রেষ্ঠতম প্রতিপালক ৷ ’

    আয়াতা শে উল্লেখিত প্রশ্নটি

    অস্বীকৃতি বোঝাবার জন্যে ব্যবহৃত হয়েছে ৷ আর আল্লাহ তা জানা যে তার ঈমান কবুল
    করেননি এটি তারই সুস্পষ্ট প্রমাণ ৷ কেননা, আল্লাহ্ তাআলা জানতেন যে, যদি তাকে পুনরায়

    দুনিয়ায় ফেরত পাঠানো হত তাহলে সে পুনরায় পুর্বের ন্যায় আচরণ করত ৷ যেমন আল্লাহ
    তাআলা অন্যান্য কাফিরের সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন যে, যখন তারা জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করবে
    তখন বলে উঠবেং :

    “তুমি যদি দেখতে পেতে যখন তাদেরকে আগুনের পার্থেড়া দা ড় করানো হবে এবং তারা
    বলবে, হায় ! যদি আমাদের প্রত্যাবর্তন ঘটত তবে আমরা আমাদের প্রতিপালকের নিদর্শনকে
    অস্বীকার করতাম না এবং আমরা মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হতাম ৷” (সুরা আন্অড়াম : ২৭)

    জবাবে আল্লাহ তাআলা বলবেন০ ং

    “না, পুর্বে তারা যা গোপন করত তা এখন তাদের নিকট প্রকাশ পেয়েছে এবং তারা
    প্রত্যাবর্তিত হলেও যা করতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল পুনরায় তারা তাই করত এবং
    নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী ৷” (সুরা আনৃআম : ২৮)

    আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রা) প্রমুখ মুফাসৃসির বর্ণনা করেছেন যে, বনী ইসরাঈলের কেউ
    কেউ ফিরআউনের মৃত্যুর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেছিল এবং তারা বলেছিল, ফিরআউন
    কখনও মরবে না; এ জন্য আল্লাহ্ তাআলা সমুদ্রকে নির্দেশ দেন, যাতে ফিরআউনকে কোন
    একটি উচু জায়গায় নিক্ষেপ করে ৷ কেউ কেউ বলেন, এর অর্থ পানির উপরে ৷ আবার কেউ
    কেউ বলেন, মাটির একটি ঢিৰির উপরে ৷ তার পায়ে ছিল তার বর্ম যা ছিল সুপরিচিত যাতে
    ফিরআউনের লাশ বলে বনী ইসরাঈল সহজে শনাক্ত করতে পারে, আল্লাহ্ তাআলার
    কুদরতের পরিচয় পেতে পারে ৷

    এজন্যই আল্লাহ বলেন

    অর্থাৎ-আজ আমি তোমার দেহটা রক্ষা করব যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্যে
    নিদর্শন হয়ে থাক ৷’ তোমার পরিচিত বর্মসহ তোমাকে রক্ষা করব যাতে তুমি বনী ইসরাঈলের
    কাছে শক্তিমান আল্লাহ্ তাআলার কুদরতের একটি নিদর্শন হয়ে থাক ৷ ’ এ জন্যই কেউ কেউ
    আয়াতাৎশটিকে নিম্নরুপ পাঠ করেছেন অর্থাৎ-যড়াতে তুমি
    তোমার সৃষ্টিকর্তার একটি নিদর্শন হয়ে থাক ৷ আয়াতা শের অর্থ নিম্নরুপও হতে পারে ৷
    তােমাকে রক্ষা করেছি তোমার বর্মসহ যাতে তোমার বর্ম তোমার পরবর্তী বনী ইসরাঈলের
    জন্যে তোমাকে চেনার ব্যাপারে এবং তোমার ধ্বংসের ব্যাপারে একটি প্রতীক হিসেবে গণ্য
    হয় ৷ ’ কোন অর্থটি সঠিক, আল্লাহ্ই অধিক জ্ঞাত ৷ ফিরআউন ও তার সৈনাবাহিনী আশুরার দিন ৎস হয়েছিল ৷

    আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (১য খমোঃ

    ইমাম বৃখারী (র) তার কিতাব সহীহ বুখারী শরীফে আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা ) সুত্রে
    একটি হাদীস বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন, রাসুলুল্পাহ (সা) মদীনা শরীফ আগমন করলে
    দেখলেন ইহুদীরা আশুরার দিন সিয়াম পালন করে থাকে ৷ (কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে) তারা
    বলল, এটা এমন একটি দিন যেদিনে ফিরআউনের বিরুদ্ধে মুসা (আ)এৱ বিজয় সুচিত
    হয়েছিল ৷

    রাসুলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন : — ৷
    ৷অর্থাৎ মুসা (আ) সস্খার্ক বনী ইসরাঈল থেকে তোমরা (ঘৃসলমানরা) বেশি হকদার ৷
    কাজেই ণ্তামরা ঐ দিন সিয়াম পালন কর ৷ বুখারী ও মুসলিম শরীফ ব্যতীত অন্যান্য হাদীস
    গ্রন্থেও এ মর্মের হাদীসটি পাওয়া যায় ৷

    ফিরআউনের ধ্বংস্যেত্তর যুগে রনী ইসরাঈলের অবস্থা

    আল্লাহ তা জানার বাণী

    সুতরাং আমি তাদেরকে শান্তি দিয়েছি এবং তাদেরকে অতল সমুদ্রে নিমজ্জিত করেছি ৷
    কারণ তারা আমার নিদনিকে অস্বীকার করত এবং এ সম্বন্ধে তারা ছিল গাফিল ৷ যে
    সম্প্রদায়কে দুর্বল গণ্য করা হত তাদেরকে আমি আমার কল্যাণপ্রাপ্ত রাজ্যের পুর্ব ও পশ্চিমের
    অধিকারী করি; এবং বনী ইসরাঈল সম্বন্ধে তোমার প্রতিপালকের শুভবাণী সত্যে পরিণত হল ৷
    যেহেতু তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল, আর ফিরআউন ও তার সম্প্রদায়ের শিল্প এবং যে সব প্রাসাদ
    তারা নির্মাণ করেছিল তা ধ্বংস করেছি ৷ আর আমি বনী ইসরাঈলকে সমুদ্র পড়ার করিয়ে দেই;
    তারপর তারা প্ৰতিমাপুজায় রত এক সম্প্রদায়ের নিকট উপস্থিত হয় ৷ তারা বলল, হে মুসা !
    তাদের দেবতার মত আমাদের জন্যও একটি দেবতা গড়ে দাও; যে বলল, তোমরা তো এক
    মুর্থ সম্প্রদায় ৷ এসব লোক যাতে লিপ্ত রয়েছে তা তো বিধ্বস্ত হবে এবং তারা বা করছে তাও
    অমুলক ৷ সে আবারো বলল, আল্পাহ্ ব্যতীত তোমাদের জন্য আমি কি অন্য ইলাহ্ খুজব অথচ
    তিনি তােমাদেরকে বিশ্বজগতের উপর শ্রেষ্ঠতু দিয়েছেন? স্মরণ কর, আমি তােমাদেরকে
    ফিরআউনের অনুসারীদের হাত হতে উদ্ধার করেছি, যারা তােমাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দিত ৷

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ ফিরআউন ও তার বাহিনী ধ্বংসের বিবরণ Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.