৬৬ আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া
উছমান ইবন আফ্ফান : তিনি তীর শ্রী ও রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কন্যা হযরত রুকাইয়ার
বোপাক্রান্ত হওয়ার কারণে যুদ্ধে শরীক হতে পারেননি ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে গনীমতের
অংশ ও পুরস্কার প্রদান করেন ৷
সাঈদ ইবন যায়দ ইবন আসর ইবন নুফায়ল : যুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন সিরিয়ার ৷ সেখান
থেকে আসার পর তাকে গনীমতের অংশ ও পুরস্কার দেয়৷ হয় ৷
তালহ৷ ইবন উবায়দুল্লাহ্ : তিনিও যুদ্ধের সময় সিরিয়ায় ছিলেন ৷ ভীকেও গনীমতের ভাগ
ও পুরস্কার দেয়৷ হয় ৷
আবু যুবাবা বশলীর ইবন আবদুল মুনযির : রাওহা নামক ন্থাশ্চে পৌছার পর রাসুলুল্পাহ্
জানতে পারলেন যে, মক্কা থেকে সশস্ত্র বাহিনী যুদ্ধের উদ্দেশ্যে এদিকে রওনা হয়েছে ৷
তখন তিনি সেখান থেকে তালহাকে মদীনায় শাসনভার দিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেন ৷
রাসুলুল্লড়াহ্ (সা) তাকে গনীমতের অংশ দেন এবং যুদ্ধের পুরঙ্কারও দেন ৷
হারিছ ইবন হাতির ইবন উবায়দ ইবন উমাইয়৷ : ভীকেও রাসুলুল্লাহ্ (সা ) পথ থেকে
ফিরিয়ে দেন ৷ পরে তাকে গনীমতের অংশ ও পুরস্কার দেয়া হয় ৷
হারিছ ইবন সাম্মা : রাওহা নামক স্থানে পৌছলে তার পা ভেঙ্গে যায় ৷ ফলে তিনি সেখান
থেকে ফিরে আসেন ৷ র্তাকে গনীমতের ভাগ দেয়৷ হয় ৷ ওয়াকিদী বলেন, তাকে পুরস্কারও
দেয়৷ হয় ৷
খাওয়াত ইবন জুবায়র : তিনিও যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত ছিলেন না ৷ কিন্তু তাকে গনীমতের
অংশ ও পুরস্কার দেয়া হয় ৷
আবুসৃ সাবাহ্ ইবন ছাবিত : তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে যুদ্ধের জন্যে বের হন ৷ পথে
তীর পায়ের নলায় একটা পাথরের আঘাত লাগে ৷ তিনি সেখান থেকে ফিরে আসেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) ভীকে গনীমতের অংশ ও পুরস্কার দান করেন ৷
ওয়াকিদীর মতে সাআদ আবু মালিক ও এর মধ্যে একজন ৷ যুদ্ধে গমনের জন্যে তিনি প্রস্তুতি
নিয়েছিলেন ৷ কিন্তু হঠাৎ মারা যান ৷ কারও মতে তিনি রাওহড়ায় মারা যান ৷ র্তাকে গনীমতের
অংশ ও পুরস্কার দেয়৷ হয় ৷
বদর যুদ্ধে র্যারা শহীদ হয়েছিলেন
বদর যুদ্ধে মোট চৌদ্দ জন মুসলমান শহীদ হন ৷ তাদের মধ্যে মুহাজির ছিলেন ছয় জন :
উবায়দা ইবন হারিছ ইবন মুত্তালিব ৷ যুদ্ধে তার পা কাটা যায় ৷ এরপর সাফরা নামক স্থানে
পৌছে তিনি মারা যান ৷
উমায়র ইবন আবু ওয়াক্কাস যুহ্রী ৷ তিনি সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাসের ভাই ছিলেন ৷
আস ইবন সাঈদ তাকে হত্যা করে ৷ সে সময় তার বয়স হয়েছিল ষোল বছর ৷ কথিত
আছে, বয়স কম হওয়ার কারণে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে পথ থেকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ
দিয়েছিলেন ৷ এতে তিনি খুব কান্নাকাটি করেন ৷ ফলে রাসুলুল্লাহ্ ভীকে যুদ্ধে যাওয়ার
অনুমতি দেন ৷ যুদ্ধে তিনি শহীদ হন ৷
যুশ-শিমালায়ন ইবন আবদে আমর আল-খুযাঈ ৷ তিনি ছিলেন বনু যুহ্রা গোত্রের মিত্র ৷
সাফওয়ান ইবন বায়যা’ ৷
আকিল ইবন বুকায়র আল-লায়হী বনু আদীর মিত্র ৷
মিহ্জা ৷ হযরত উমর ইবন খাত্তাবের আযাদকৃত গোলাম ৷ বদর যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীতে
তিনিই সর্বপ্রথম শহীদ ৷
এ যুদ্ধে আনসারদের মধ্য হতে শহীদ হন আট জন :
৭ হারিছা ইবন সুরাকা ৷ হিব্বান ইবন আরফা ৷ শত্রুর নিক্ষিপ্ত তীর হারিছার গলদেশে লেগে
যায় এবং এতেই তিনি শহীদ হন ৷
৮ মুআওয়ায ইবন আফরা এবং তার ভাই —
৯ আওফ ইবনআফরা ৷
১ : ইয়াযীদ ইবন হারিছ ৷ র্তাকে ইবন ফুসৃহাম নামেও ডাকা হয় ৷
১ ১ উমায়র ইবন হুমাম ৷
১ ২ রাফি ইবন মুআল্লা ইবন লাওযান ৷
১৩ সাআদ ইবন খায়ছামা ৷
১৪ মুবাশৃশির ইবন আবদুল ঘুনযির (রা) ৷
পুৰেইি বলা হয়েছে যে, এ যুদ্ধে মুসলমানদের সাথে ছিল মাত্র সত্তবটি উট ৷ ইবন ইসহাক
বলেন, মুসলিম বাহিনীতে অশ্বারোহী যোদ্ধা ছিলেন মাত্র দুই জন ৷ একজন হলেন মিকদাদ ইবন
আসওয়াদ ৷ তীর ঘোড়ার নাম ছিল আয্জা, মতাম্ভার সাবহা ৷ দ্বিতীয়জন হলেন যুবায়র ইবন
আওঅড়াম ৷ তার ঘোড়ার নাম ছিল ইয়াসুব ৷ মুসলিম বাহিনীর পতাকা ছিল মুসআব ইবন
উমায়রের হাতে ৷ এ ছাড়া মুহাজির ও আনসারদের ভিন্ন ভিন্ন আরও দু’টি ঝাণ্ডা ছিল ৷
মুহাজিরদের ঝাণ্ডা বহনকারী ছিলেন আলী ইবন আবু তালিব (রা) আর আনসারদের ঝাণ্ডা
বহনকারী ছিলেন সাআদ ইবন উবাদা (রা) ৷ মুহাজিরদের মধ্যে প্রধান পরামর্শদাতা ছিলেন আবু
বকর সিদ্দীক (বা) আর আনসারদের মধ্যে পরামর্শ দানকারীদের মধ্যে প্রধান ছিলেন সাআদ
ইবন মুআয (রা) ৷
কুরায়শদের সৈন্য, নিহত, বন্দী সংখ্যা ও মুতিপণ
কুরায়শ বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা ছিল সংখ্যায় নয়শ’ পঞ্চাশ
জন ৷ উরওয়া ও কাতাদা সুনির্দিষ্টভাবে এই সংখ্যা উল্লেখ করেছেন ৷ অবশ্য ওয়াকিদী বলেছেন
যে, তাদের স০খ্যা ছিল নয়শ ত্রিশ জন ৷৩ তবে এরুপ সুনির্দিষ্ট স০ ×খ্যা নির্ধারণ ৷প্রমাণ সাপেক্ষ ৷
পুর্বে এক হাদীছের উদ্ধৃতি ৩দিয়ে বলা হয়েছে যে, কুরায়শদের স০ ×খ্যা ছিল এক হাযারের বেশী ৷
সম্ভবত সৈন্যদের সাথে আগত বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদেরকেও এই স০ ×খ্যার মধ্যে ধরা
হয়েছে ৷ সহীহ্ ৰুখারী গ্রন্থে হযরত বা বা ইবন আযিব (র ) থেকে বর্ণিত হাদীছ আগেই উল্লেখ
করা হয়েছে যে বদর যুদ্ধে কুরায়শদের সত্তর জন নিহত ও সত্তর জন বন্দী হয় ৷ এটাই
অধিকাৎশ ঐতিহাসিকের মত ৷ ক আর ইবন মালিক তার কাসীদায় বলেন : (কবিতা) এরপর
উট বাধার দুর্গন্ধময় স্থানে পড়ে থাকল তাদের সত্তর জন লোক যাদের মধ্যে উতবা ও
আসওয়ড়াদ রয়েছে ৷
ওয়াকিদী বলেন, এই স০ ×খ্যার উপর ঐতিহাসিকদের ঐকমত্য প্রতি ষ্ঠিত ৷কিন্তু ওয়াকিদীর
এই দা ৷বী বিতর্কাভীত নয় ৷ কেননা মুসা ইবন উক্বা ও উরওয়৷ এই স০ ×খ্যা স্বীকার করেন না ৷
তারা বলেছেন, ভিন্ন সংখ্যা ৷ এরা ৷উভয়েই ইতিহাসের ইমাম ৷ সুতরাং তাদের মতামত ব্যতীত
ঐকমত্যের দ বী সঠিক নয় ৷ যদিও সহীহ্ হাদীছের মুকাবিলড়ায় ঠাদের মতামত দুর্বল ৷ ইবন
ইসহাক ও অন্যরা বদর যুদ্ধে কুরায়শদের নিহত ও বন্দীদের নাম ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ
করেছেন ৷ হাফিয যিয়া’ তার আহকাম’ গ্রন্থে চমৎকারতাবে তাদের নাম লিপিবদ্ধ করেছেন ৷
বদর যুদ্ধের শুরুতেই বলা হয়েছে যে, কুরায়শদের মধ্যে সর্বপ্রথম নিহত হয় আসওয়াদ ইবন
আবদুল আসাদ মাখবুমী এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রথম পলায়ন করে খালিদ ইবন আলাম খুযাঈ বা
উকায়লী ৷ সে ছিল বনু মাখবুমের মিত্র ৷ কিন্তু পালায়ন করে তার লাভ হয়নি ৷ কেননা, অচিরেই
সে ধরা পড়ে ও বন্দী হয় ৷ সে তার কবিতায় বলেছেং :
(কবিতা) আমরা পশ্চাৎ দিকে যখন হয়ে রক্ত ঝরাইনি, বরৎ রক্ত ঝরেছে আমাদের দেহের
সম্মুখ দিক হতে ৷
কিন্তু তার এ দ৷ ৷বী মিথ্যা ৷ কুরায়শদের মধ্যে সর্বপ্রথম বন্দী হয় উকব৷ ইবন অড়াবী মুআয়ত
ও নযর ইবন হড়ারিছ ৷ এ দু জনকেই বন্দী অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সা) এর সম্মুখে হত্যা করা হয় ৷
তবে কাকে প্রথমে হত্যা করা হয়েছিল, সে বিষয়ে দু’ধরনের বক্তব্য আছে ৷ রাসুলুল্পাহ্ (সা)
কয়েকজন বন্দীকে বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে দেন ৷ র্তারা হচ্ছেন :
১ আবুল আস ইবন রবী উমাবী ৷
২ মুত্তা ৷লিব ইবন৷ হা ন৩ তার ইবন হড়ারিছ মাখয়ুমী ৷
৩ সায়ফী ইবন আবু রিফা আ ৷
৪ কবি আবুইবযা ৷
৫ ওয়াহব ইবন উমায়র উমায়র ইবন ওয়াহব আল-জুমাহী ৷
এ কয়জন ব্যতীত অবশিষ্ট সকল বন্দী থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছিল ৷ এমনকি
রাসুলুল্লাহ্র চাচা আব্বাসের নিকট থেকে সবচেয়ে বেশী মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছিল ৷ অন্য
কোন বন্দীর নিকট থেকে এঙ্গু তা অধিক মুক্তিপণ আদায় করা হয়নি ৷ এরুপ করা হয় যাতে
রাসুলুল্লাহ্র চাচা বলে নমনীয়তা অবলম্বন করা হয়েছে এরুপ সন্দেহের কোন অবকাশ না