Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৬ » রাসূল (সা) এর দেহাবয়ব ও স্বভাব বর্ণনা বিষয়ক বিচ্ছিন্ন হাদীস

রাসূল (সা) এর দেহাবয়ব ও স্বভাব বর্ণনা বিষয়ক বিচ্ছিন্ন হাদীস

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • অধ্যায়
    রাসুল (সা)এর দেহাবয়ব ও স্বভাব বর্ণনা বিষয়ক বিচ্ছিন্ন হাদীস

    হযরত আলী ইবন আবু তালিবের বরাতে নাফি ইবন জুবায়রের রিওয়ায়াতে ইতিপুর্বে
    বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি আলী রা বলেন ং তার পুর্বে ও পরে তার মত কাউকে আমি
    দেখিনি ৷ আর ইয়া কুব ইবন সুফিয়ান আবদুল্লাহ ইবন মুসলিম ও সাঈদ ইবন মানসুর সুত্রে
    হযরত আলীর কোন এক পুত্র থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, হযরত আলী যখন
    রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর দেহাবয়ব বর্ণনা করতেন, তখন বলতেন : তিনি বেশি লম্বাও ছিলেন না,
    আবার খুব বৈটে সেটেও না ৷ তিনি ছিলেন মধ্যম আকৃতির লোক ৷ আর মাথার চুল অতি
    ফোকাড়ানােও ছিল না, আবার একেবারে সােজাও ছিল না, তা ছিল ঈষৎ ফোকড়ানাে ৷ তার
    দেহ মােটাসােটা ও মেদবহুল ছিল না এবং তার চেহারা একেবারে ভরাট গোলাকারও নয় ৷
    তবে তার মুখমণ্ডল গোলাকৃতির ছিল, তার গাত্রবর্ণ ছিল লালাভ ফর্সা, চক্ষুদ্বয় ছিল ডাপর কাল,
    চোখের পাতা পাপড়িপুর্ণ, তার অঙ্গ-প্রতাঙ্গ ও র্কাধের অস্থিসন্ধিসমুহ শক্ত ও মোটা, দেহ
    অতিরিক্ত পশমবডিতি, বুকে নিম্নমুখী পশমের রেখা, ভরটি ও কোমল হাত ও পায়ের তালুর
    অধিকারী ৷ ইাটার সময় পা তুলে দ্রুত হাটতেন যেন তিনি চালু ভুমিতে নামহ্নেষ্ক, যখন ঘুরে
    তাকাতেন গোটা দেহ ঘুরে তাকাতেন, তার উভয় স্কন্ধান্থির মাঝে নুবুওয়াতের মােহর চিহ্ন
    সর্বাধিক উদার হস্ত ও প্রশস্ত বক্ষ, সর্বাধিক সত্যভাষী ও শ্রেষ্ঠতম প্রতিশ্রুতি পুর্ণকারী,
    কোমলতম স্বভাবের অধিকারী, পারিবারিক জীবন যাপনে সেরা কর্তব্য পরায়ণ ৷ হঠাৎ কেউ
    তাকে দেখলে তীর প্রতি সমীহ সৃষ্টি হত, আর কেউ ঘনিষ্ঠভাবে তার সাথে পরিচিত হলে তার
    প্রতি ৩অনুরক্ত হতো ৷ তার দেহাবয়ব বর্ণনাকারী বলেন, তার আগে বা পরে তার তুলা কাউকে
    আমি দেখিনি ৷ ইমাম আবু উবায়দ বাসিম ইবন সাল্লাম এ এই হাদীসখানা
    বর্ণনা করেছেন ৷

    অতঃপর তিনি কিসাঈ, আসমায়ী ও আবু আমর থেকে তার দুর্বোধ্য ও জটিল শব্দগুলির

    অর্থ ও ব্যাখ্যা উল্লেখ করেছেন ৷ এ প্রসঙ্গে তার উল্লেখিত বিবরণের সারাংশ হল, স্পে;া৷ ৷ হল
    ভরাটদেহী ৷ অতি গোলাকৃতির মুখমণ্ডলের অধিকারী ৷ অর্থাৎ তিনি মেদবহুল

    অতিমােটা ছিলেন না, আবার কৃশকায় দুর্বলও ছিলেন না; বরং এ দুয়ের মধ্যবর্তী দেহাবয়বের
    অধিকারী ছিলেন ৷ তার মুখমণ্ডল একেবারে গোলাকৃতির ছিল না, বরং তা কিছুটা উপবৃত্তাকার
    ছিল, যা আরবদের কাছে এবং রুচিবানদের কাছে প্রিয়দর্শন ৷ তিনি ছিলেন লালাভ ফর্সা-দুধে
    আলতায় মেশানাে বর্ণের আর এটাই সুন্দর৩ ম গাত্রবর্ণ ৷ এ কারণেই তিনি অতি শুভ্র বর্ণ ছিলেন

    না হল ভোমর কাজল চক্ষুমণির অধিকারী , বিশাল বিশাল অস্থিপ্রান্ত
    বা জোড় ৷র অধিকারী ৷ যেমন হাটুদ্বয়, কনুইদ্বয় ও স্কন্ধদ্বয়,াএ ৷ হল কাধের সংযোগস্থল ও
    তার সংলগ্ন৷ শরীর আর অর্থাৎ ভারী ও মোটা হাতের তালুর অধিকারী আর

    হীটার ক্ষেত্রে অর্থ দ্রুতগতির ইাটড়া ৷ আর < ,
    পার্থক্য সম্বন্ধে ইতিপুর্বেই বর্ণিত হয়েছে লম্বা পাপড়ির অধিকারী ৷ এক হাদীসে
    এসেছে যে, তিনি অর্থাৎ মযবুত ও মোটাসােটা বাহুদ্বয়ের অধিকারী ছিলেন

    এ ব্যাপারে উম্মু মাবাদের হাদীসং মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত কালে নবী করীম (না)
    যখন হযরত আবু বকর, তার মাওলা আমির ইবন ফুহায়রা ও তাদের পথপ্রদর্শক আবদুল্লাহ্
    ইবন উরায়কিত আদ্দায়লীকে সাথে নিয়ে তার আতিথ্য গ্রহণ করেন, তখনকার ঘটনা
    হাদীসখানিতে আগাগােড়া বর্ণিত ৩হয়েছে ৷ এ সময় তারা উম্মু মা বাদকে জিজ্ঞেস করেন, তার
    কাছে কি কেনার মত কোন দুধ বা গোশত আছে? কিন্তু তারা তার কাছে কিছুই পেল না ৷ এ
    সময় মহিলাটি বললেন, যদি আমার কাছে কিছু থাকত তাহলে আমি আপনাদের আপ্যায়নে
    ত্রুটি করতাম না ৷ আর এ সময় তারা জরাগ্রস্থ ও দুর্তিক্ষপীড়িত ছিল ৷ তখন তিনি (নবী
    করীম) তার তাবুর এক প্রান্তে তাকিয়ে একটি বকরী দেখতে পেয়ে বললেন, হে উম্মু মাবাদ,
    এ বকরীটির কী হয়েছে১ ? তখন তিনি বললেন, অনাহার ক্লিষ্টতা জনিত দুর্বলতার জন্যে ওটি
    চারণ ক্ষেত্রে যেতে পারেনি ৷ তিনি বললেন, তুমি কি আমাকে তা দোহন করার অনুমতি দেবে?
    তখন মহিলাটি বললেন, যদি তার ওলানে দুধ থাকে তাহলে আপনি তা দোহন করুন ৷ তখন
    তিনি বকরীটিকে কাছে তাকিয়ে তার গায়ে হাত বুলালেন এবং আল্লাহর নাম নিলেন ৷ তারপর
    তিনি হাদীসখানি উল্লেখ করেছেন-

    যাতে রয়েছে যে, তিনি (নবী করীম) তা থেকে এত পরিমাণ দোহন করলেন, যা তাদের
    সকলের জন্যে যথেষ্ট হল ৷ তারপর পুনরায় তা দোহন করলেন এবং তার পাত্র পুর্ণ করে রেখে
    আসলেন ৷ অতঃপর যখন তার স্বামী গৃহে ফিরল তখন সে দুধ দেখে অবাক হল ৷ সে জিজ্ঞেস
    করল, হে মাবাদের মা, এ দুধ তুমি কোথায় পেলে ? বাড়িতে কোন দুধেল বকরী নেই ৷ আর
    ঘরের বকরীটি তে৷ বেরোয়ও নি৷ তখন মহিলাটি বললেন, আল্লাহ্র কসম, এক বরকতপুর্ণ
    ব্যক্তি আমাদের ঘর হয়ে গিয়েছেন, তার ঘটনা ছিল এমন এমন ৷ তখন স্বামী বলল, আমাকে
    তার দেহাবয়বের বিবরণ দাও ৷ আল্লাহ্র কসম৷ আমার মনে হয় ইনিই সেই কুরায়শী ব্যক্তি,
    যাকে কুরায়শরা খোজাখুজি করছে ৷ তখন মহিলাটি বলতে লাগলেন, উজ্জ্বল ফর্স৷ বর্ণ,
    সুঠামদেহী ও লাবণ্যময় চেহারার অধিকারী এক ব্যক্তিকে আমি দেখেছি, পেটের ভুড়ি কিৎবা
    ভগ্নস্বর তাকে খুতযুক্ত করেনি, সুদর্শন সুপুরুষ, ডাগর কাল চোখ, নিবিড় ঘন পাপড়ি, গলার
    স্বরে পৌরুষদীপ্ত ভারীতৃ, সুরমা মাখা কাল মণি চোখ, সংযুক্তপ্রায় সরু ও দীর্ঘকায় ভ্রাদ্বয়,
    দীর্ঘকায় গ্রীবাদেশ ও ঘন দাড়ি, এ হল তার বৈশিষ্ট্য ৷ তিনি যখন চুপ থাকেন তখন তার মাঝে
    তার গন্তীরতা বিরাজ করে, আর যখন কথা বলেন, তখন তার থেকে এক অপার্থির সৌন্দর্য
    ছড়িয়ে পড়ে ৷ মিষ্টভাষী ও স্পষ্টভাষী, অতি ৩অল্পবাক্ও নন, বাচালও নন ৷ তার কথামালা যেন
    একত্রে পাথা মালার মুক্ত৷ দানাসমুহ, যা একটি একটি করে টপৃ টপৃ করে পড়ছে ৷ দুর থেকে
    দেখা সবচে সুদর্শন ও পৌরুষদীপ্ত যে ব্যক্তি, আর নিকট থেকে দেখা সবচে মিষ্ট লাবণ্যময় ও
    সুন্দর ব্যক্তি ৷ মধ্যম গড়ানর অধিকারী ৷ অতি দীর্ঘতার কারণে তাকে চোখ উপরে তুলে দেখতে
    হয় না ৷ আর অতি খর্বত ৷র কারণে চোখ তাকে ভিড়ের মাঝে খুজতে গিয়ে হয়রান হয় না ৷
    তিনি যেন দুটি শাখার মাঝের শাখা, দেখতে তিনটির মাঝে সবচে সজীব সতেজ তরতাজা,
    ১ অর্থাৎ এত দুরবস্থাগ্রস্থ ও জীর্ণকায় কেন?-জালালাবাদী

    আকৃতি-অবয়বে সবচে সুগঠিত ৷ তার সাথীরা তাকে বিয়ে থাকেন, তিনি যখন কথা বলেন,
    তখন তারা মনোযোগ সহকারে তা শুনেন, আর তিনি কোন নির্দেশ দিলে তারা তা পালনে দ্রুত
    ছুটে যান ৷ বরেণ্য প্রিয়জন তার খিদমতে, তারা ধন্য ৷ কারো প্রতি মুখ গোমড়াকারী কিত্বা
    কাউকে নির্বোধ সাব্যস্তকারী নন ৷

    উঘু মা বাদের এই বিবরণ শুনে তার স্বামী বলে উঠল, আল্লাহর কসম, ইনিই ঐ ব্যক্তি,
    কুব্লায়শরা যাকে খুজে বেড়াচ্ছে ৷ যদি আমি তার সাক্ষাৎ পেতাম তাহলে তার সাহচর্যের
    আবেদন জানাতাম ৷ যদি আমি তার কোন পথ পাই তাহলে তা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা
    করব ৷ বর্ণনাকারী বলেন, এ সময় মক্কার আক্যাশ-বাতাসে অদৃশ্য এক আবৃত্তিকারের আবৃত্তি
    ণ্শান৷ গেল

    মানুষের প্রতিপালক আল্লাহ তার সর্বোত্তম বিনিময় প্রদান করুন এ দুই সাইঃক, যারা উম্মু
    মা বাদের তাবুতে অবতরণ করেছেন ৷

    তারা অবতরণ করেছেন পুণ্য নিয়ে এবং তা নিয়েই প্ৰস্থান করেছেন, আর মুহাস্মৃদের যে
    সাথী হয়েছে সে সফলকাম হয়েছে ৷

    হে কুসায় পরিবার! তার কারণে আল্লাহ যেন তোমাদের থেকে ণ্নতৃতু এবং ঐ সকল
    কর্মকীর্তি অপসারণ না করেন, যার বিনিময় দেয়৷ সম্ভব নয় ৷

    তোমাদের বোনকে তার মেষ ও তার পাত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমরা যেষকে
    জিজ্ঞেস কর, তাহলে সেও সাক্ষ্য দেবে ৷

    তিনি তাকে একটি গর্ভধারণে অক্ষম একটি ছাগী আনতে বললেন, এরপর তার ওলান

    ফেনিল দৃধে পুর্ণ হয়ে উঠল ৷
    তিনি তা তার কাছে এক দোহনকারীর বন্ধক’ রুপে রেখে , প্ৰতি প্রস্থান ও
    আগমনকালে তাকে দুধ দিতে থাকবে ৷

    হযরত হাসসান (রা) কর্তৃক রচিত এই কবিতাপঙ্তিসমুহের জওয়াবী কবিতা আমরা
    ইতিপুর্বে উল্লেখ করেছি, যা অনবদ্যতায় এর তুলা ৷ এখানে মুল লক্ষ্য হল (একথা বলা) যে,
    হাফিয বায়হাকী আল হাসান ইবন আস্ সাবুবাহ আবু মাবাদ আল খুযায়ী সুত্রে এই
    হাদীসখানা তার পুর্ণ পাঠসহু বিশদভাংব উল্লেখ করেহ্নেগ্, যেমনটি আমরা শব্দসহ পুর্বে উদ্ধৃত
    করেছি ৷ হাফিয ইয়৷ কুব ইবন সুফিয়ান ও আবু নু আয়ম তার দালইিলুনৃ নুবুওয়াত গ্রন্থে তা

    রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আব্দুল মালিকবলেন, আমার কাছে এ তথ্য পৌছেছে যে, পরবর্তীতে
    আবু মাবাদ ইসলাম গ্রহণ করেন এবং উম্মু-মাবাদ হিজরত করেন ও ইসলাম গ্রহণ করেন ৷
    তারপর হাফিয বায়হাকী এই হাদীস উল্লেখের পর তার দুর্বোধ্য শব্দসমুহের আলোচনা
    করেছেন“ ৷ পুর্বে পাপটীকায় আমবৃ৷ তা উল্লেখ করেছি ৷ এখানে আমরা তা থেকে কতিপয় সুক্ষ্ণ
    বিষয় উল্লেখ করছি ৷

    উষ্মে মা বাদের শব্দাবলীর ব্যাখ্যা

    উম্মু মা বাদের ৷৷ ,াঅর্থাৎ প্রক্ষুঢিত সৌন্দর্যাধিকারী, এশু ৷ গ্লুা ৷ অর্থাৎ
    উজ্জ্বল ও উদ্ভাসিত মুখমক্তা ওয়ালা ৷ আবু উবায়দ বলেন, তা হল পেটের বিশালতা ৷ আর
    অন্যরা বলেন, মাথার বিশালতা ৷ আর যারা রিওয়ায়াত করেছেন, আবু উবায়দ
    তাদের রিওয়ায়াত প্রত্যাখ্যান করেছেন, থেকে দৃর্বলতার অর্থে) ৷ গ্রন্থকার
    বলেন, এই অভ্রুর্থাং বায়হাকী হাদীস ব্যাখ্যা করেছেন ৷ বিৎ আবু উবায়দের কথাই বিশুদ্ধ ৷ আর
    যদি বলা হত, মাথার বিশালতা৩ তাহলে তো আরো শক্তিশালী হত ৷ কেননা, এরপর তার
    ধ্ একথাটিও রয়েছে এর অর্থ যে মাথার ক্ষুদ্রতা, এতে কারও
    দ্বিমত নেই ৷ এ অরুর্থাং উট পাখির ছানাকে তার মাথার ক্ষুদ্র কৃবিব কারণে ঞ বলা হয়ে
    থাকে ৷ বায়হাকী এটি বর্ণনা করেছেনরুপে অর্থাৎ দুর্বলতা অর্থে, তিনি তার
    ব্যাখ্যাও এরুপই করেছেন ৷ আর এ (কটি দেশের
    ক্ষীণতা ও শীর্ণতা) অর্থাৎ তিনি মধ্যম আকৃতির পুরুষ, অতি মোটাও নন অতি কৃশও নন ৷
    বায়হাকী বলেন, রিওয়ায়াতও রয়েছে, যার অর্থ পেটের বিশালতা এবং অর্থাৎ মাথার ছোট হওয়া ৷ আর ণ্গ্লু ৷ হল সুঠাম দেহী, তদ্র্যপ
    আর ৰু ,ছুা৷ ৷ অক্ষি ৫গালকের নিবিড় কৃষ্ণতা ৷ গ্রাঠু৷ ৷ হল চোখের পাপডিং দীর্ঘ হওয়া ৷ আর
    কুতায়বা তা বর্ণনা করেছেন তার পাপড়িতে বক্রত৷ রয়েছে ৷ আর এ
    ক্ষেত্রে বায়হাকী তার অনুসরণ করেছেন ৷ ইবন কুতায়বা বলেন, আমার জানা নেই এটা কী,
    কেননা, তার রিওয়ায়াতে ভুলের উদ্ভব হয়েছে, তইি তিনি তার ব্যাখ্যার দিশেহারা হয়েহ্নে৷ ৷
    আর সঠিক ব্যাখ্যা আমরা যা উল্লেখ করলাম, আর আল্পাহ্ই ভাল জানেন ৷
    এর মৈং হল স্বর ভারিক্কি হওয়া ৷ তীক্ষ্ণ কর্কশ স্বরের তুলনায় এ ধরনের স্বর
    শ্রুতিমধুর হয়ে থাকে ৷ আবু উবায়দ বলেন, পুা,, হরিণের বিশেষণরুপে ব্যবহৃত হয় ৷ তিনি
    বলেন, আর যারা বর্ণনা করেছেন তার স্বরো গ্রাষ্ ছিল তারা ভুল করেছেন, কেননা তা
    ঘোড়ার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, মানুষের জন্য নয় ৷ আমি বলি, বায়হাকী ঐ এর
    রিওয়ায়াতটিই উদ্ধৃত করেহ্নে৷ এবং বলেছেন ৷ রিওয়ায়াতেও রয়েছে ৷ তার সঠিক হল
    আবু উবায়দের বক্তব্য ৷ আর সঠিক বিষয় আল্লাহ্ই অধিক অবগত ৷ আর উম্মু মাবাদের এই
    কথা ; ৷ তা নবী (না)-এর দেহরুপ বর্ণনায় অভিনব, আর তা হল দুচােখের টানা দৃষ্টি পুর্ণ
    সাদা কাল (সাদা অংশ সাদা, কাল অংশ কাল) হওয়া, বা চােখকে সুন্দর করে, টেরাত্বের ন্যায়
    খুত সৃষ্টি করে না ৷ আর তার কথা চুা,হ্র৷ (সুরমা মাথা) এর সমর্থক (শাহিদ) বর্ণনা পুর্বে

    বি বৃত হয়েছে ৷ তার বর্ণিত ৰুট্রু৷ শব্দের ব্যাখ্যার আবু উবায়দ বলেন, ধনুকবীকা ভ্রদ্বয়ের

    অধিকারী ৷ আর ৰুড্রুট্রুর্দুর৷ হল ন্দুই চোখের মাঝামাঝি ভ্রৰুদ্বয়ের সংযুক্ত হওয়া ৷ বায়হাকী বলেন,
    নবী করীম (না)-এর গঠন বণ্নািয় এরুপ বিবরণ শুধু এই হাদীসেই পাওয়া যায় ৷ তীর গঠন
    বর্ণনায় প্রসিদ্ধ হল, তিনি ছিলেন প্রশস্ত ও দীর্ঘ ভ্রদ্বয়ের অধিকারী ৷ তার ঘাড়ে ৮ং ছিল , আবু
    উবায়দ বলেন এর অর্থ দীর্ঘতা ৷ অন্যরা বলেন, জ্যোতি বা আলোকময় ঔজ্জ্বল্য ৷ ন্ আমি বলি, এ
    দু’যের একত্র সম্মিলনও সম্ভব, বরং তাই অবধারিত ৷ আর তার একথা
    ,াউপ্রুর্দু৷ ৷ (নিচ্চুপ থাকলে তার মাঝে গান্তীর্য বিরাজ করে) অর্থাৎ নীরব ওনিশ্চুপ থাকাকালীন
    সময়ে তাকে দেখে ভীতি ও সমীহের উদ্রেক হত ৷ আর যখন তিনি সবাক্ হতেন, তখন তিনি
    শ্রোতাদের উপর প্রভাব বিস্তার করতেন, এবং তার মুখায়রে এক প্রকার দীপ্তি বিরাজ করত
    অর্থাৎ কথা বলার সময় ৷ অর্থাৎ বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জলভাষী পৃথক পৃথক করে
    ও স্পষ্ট করে কথা বলতে অতি স্বল্পবাক নন আবার বাচালও নন তার কথামালা যেন মুক্তার দানা ৷ অর্থাৎ সৌন্দর্য, বিশুদ্ধতা, প্রাঞ্জলতা,
    সুস্পষ্টত৷ ও বাক্ মিষ্টতায় ৷ ৷ গোৰুা
    অর্থাৎ দুর ও কাছ থেকে তিনি লাবণ্যময় চেহারার অধিকারী ৷ উম্মু মাবাদ আরো উল্লেখ
    করেছেন, তিনি (অতি) লম্বা নন, আবার বেটেও নন ৷ বরং তিনি এ দৃ’য়ের তুলনায় অনেক
    বেশি সুদর্শন ৷ আর তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তার সঙ্গীরা তাকে শ্রদ্ধা সম্মান করেন, তার
    সেবার তৎপর থাকেন এবং তার আনুগতে প্রতিযােগি৩ ড়ায় লিপ্ত হন ৷ আর তার কারণ হল

    তাদের কাছে তার মহিম৷ ও মাহাত্ম্য তাদের অন্ত্যর তার গ্রেষ্ঠতু ও মহানুভবতা এবং৩ তার প্রতি
    তাদের অনুরাগ ৷ আর এ কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তিনি গোমড়ামুখ ছিলেন না,
    অর্থাৎ কারো প্রতি মুখ গোমড়া করতেন না, আর কাউকে বোকা ঠাওরাতেন না; বরং তিনি
    ছিলেন উত্তম সহচর ও সহাবন্থানকারী, তার সঙ্গী তার কাছে সম্মানের পাত্র এবং প্রিয়ভাজন ৷

    এ ব্যাপারে হিন্দ ইবন আবু হালার হাদীস

    এই হিন্দ হলেন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পালিত সৎপুত্র ৷ তার মা হলেন হযরত খাদীজা
    বিনৃত থুওয়ায়লিদ ৷ আর পিতা আবু হলো, যেমনটি আমরা ইতিপুর্বে বর্ণনা করে এসেছি ৷
    হাফিয ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান ফাসাবী, সাঈদ হাসান ইবন আলী থেকে বর্ণনা করেন ৷
    তিনি বলেন, আমি আমার মামা হিন্দ ইবন আবু হালাকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দেহাবয়ব ও
    স্বভাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম আর তিনি এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছিলেন ৷ আর আমার বাসনা
    ছিল, তিনি তার গঠন ও প্রকৃতির এমন কোন বিষয় বর্ণনা করবেন, যা আমিনির্ভরতার সাথে
    অবলম্বন করতে পারব ৷

    তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ছিলেন মানী সম্মানী ব্যক্তি ৷ পুকাি৷ রাতে চাদের ন্যায় তার
    মুখমণ্ডল দীপ্তি ছড়াত ৷ মধ্যম আকৃতির চেয়ে খানিকটা লম্বা ছিলেন, আর আতকায় দীর্যের
    চেয়ে কিছুটা খাটো, বিশাল মাথা ও ঈষৎ কৌকড়ানাে চুলের অধিকারী ৷ চুলের গোছ ভাগ ভাগ
    হয়ে গেলে সিথি করে দিতেন, অন্যথায় নয় ৷ তার চুল তার কানের লতি অতিক্রম করত না,
    বাবৃরী চুলওয়ালা, উজ্জ্বল গাত্রবর্ণ, প্রশস্ত ললাট, দীর্ঘ সরু ও পুর্ণ আকৃতির অসংযুক্ত ভ্রার

    অধিকারী, যে দৃটির মাঝখানে একটি শির৷ ছিল, ক্রোধ যাকে স্ফীত করে তৃলতে৷ ৷ উন্নত
    নাসিকা, যা সর্বদা দ্যুতি ছড়াত, গভীর দৃষ্টিতে যে র্তাকে পর্যবেক্ষণ করেনি সে তার নড়াকের
    অগ্নভাগ উচু মনে করত ৷ ঘন দাড়ি ও ডাগর চোখের অধিকারী ৷ তার গণ্ডদ্বয় সমতল, প্রশস্ত
    মুখ, সুবিন্যস্ত র্দাতের সারি, বুকে নিম্নাপামী ও সরু পশমের রেখা, বর্ণ স্বচ্ছতায় তার গ্রীবা যেন
    কোন কোন লোহিতবরণ প্রতিমার বৌপ্যনির্মিত গ্রীবা ৷ সুচৌল দেহ কাঠামো, দৃঢ় গড়নের ভারী
    দেহ, সমান্তরাল পেট ও বুকের অধিকারী ৷ তীর বুক প্রশস্ত, দুই কাধের মাঝে বেশ দুরতৃ,
    মোটা মোটা অন্থিসন্ধি, সারা দেহ অতিরিক্ত লোমযুক্ত, বুকের মধ্যখান থােক নাভি পর্যন্ত
    রেখার ন্যায় প্রবহমান পশমধারা, স্তনদ্বয় ও পেট ণ্কর্শযুক্ত, দেহের অন্যত্র দুই বাহু, দুই র্কাধ ও
    বুকের উপরিভাগে স্বাভাবিক সোম ৷ দীর্ঘ কজি, প্রশস্ত তালু বিন্তুত পেশী, হাত ও পায়ের তালু
    কোমল ও ভরাট, হাত ও পায়ের আঙ্গুলসমুহ দীর্ঘ পায়ের তলাদ্বয় ভরাট ও শুন্যতাবিহীন, পদদ্বয়
    মসৃণ যা থেকে পানি পড়া মাত্র সরে যায় ৷ যখন তিনি কোন স্থান থেকে সরেন তখন পুর্ণ দেহে
    সরেন, দীর্ঘ পদক্ষের্পে গান্তীর্যের সাথে দ্রুত ইাটেন, যখন তিনি ইাটেন তখন মনে হয় যেন তিনি
    চালু ভুমি থেকে নামছেন, আর যখন তিনি ঘুরেত তাকান তখন গোটড়াদেহে ঘুরে তাকান, আনত
    দৃষ্টি, আসমড়ানের দিকে তার দৃষ্টির চেয়ে যমীনের দিকের দৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী ৷৩ তার অধিকাত্শ দৃষ্টিই
    মনযােগপুর্ণ, সাথীদের পেছনে পেছনে চলতেন, যার সাথেই সাক্ষাৎ হতো তাকেই তিনি সালাম
    দিতেন ৷

    এরপর আমি তাকে বললাম, আমাকে তার কথা বলার বিবরণ দিন ৷ তখন তিনি বললেন,
    রাসুলুল্লাহ্ (মা) ছিলেন, নিরৰিচ্ছিন্ন বিষগ্ন ও সদা চিন্তিত ৩৷ তার যেন কোন স্বস্তি ছিল না ৷
    প্রয়োজন ছাড়া কথা বলতেন না ৷ দীর্ঘক্ষণ নির্বাক থাকতেন, পুর্ণমুখ খুলে কথা শুরু করতেন
    এবং কথা শেষ করতেন ৷ তিনি সারগর্ভ কথা বলতেন, যা হতো স্পষ্ট ও প্রাঞ্জল, অস্ফীন বাহুল্য
    নয় আবার উদ্দেশ্য প্রকাশে অক্ষম অতি স্বল্পও নয় ৷ কোমল স্বভাব, কঠোর ও রুঢ় নন এবং
    আত্মমর্ষাদাহীন ছাড়াবলাও নন ৷ কারো দান বা অনুগ্রহ ক্ষুদ্র হলেও তাকে বিরাট বলে গণ্য
    করতেন, তার কোন কিছুর নিন্দা করতেন না, আবার তার অতিরিক্ত প্রশং সাও করতেন না ৷
    সত্য ও ন্যায়ের পরিপন্থী কিছু হলে তার ক্রোধের সামনে কোন কিছু টিকতে পারত না, যতক্ষণ

    না তার প্রতিবিধান করতে পারতেন ৷

    অন্য রিওয়ায়াতে আছে, দুনিয়া এবং দুনিয়ার কিছু তাকে রাগাষিত করতে পারত না ৷ যখন
    সত্যের মর্যাদা লগ্রিত হতো, তখন কেউ তাকে কিনতে পারত না এবং তার ক্রোধের সামনে
    কোন কিছু টিকত না, যতক্ষণ না তিনি তার প্রতিযিধান করতেন ৷ নিজের স্বার্থে কখনও ক্ষুদ্ধ
    হতেন না এবং প্ৰতিশোধও গ্রহণ করতেন না ৷ তিনি যখন ইঙ্গিত করতেন তখন পুর্ণত তালু দিয়ে
    ইঙ্গিত করতেন ৷ আর যখন আশ্চর্য হতেন তখন তা উল্টাতেন ৷ যখন আলোচনা করতেন তখন
    হাতের তালুদ্বয় একত্র করতেন, ডান হাতের তা ৷লু দ্বারা বাম হাতের বুড়াে আঙ্গুলের৩ ভিতর দিকে
    আঘাত করতেন ৷ তিনি যখন ক্ষুদ্ধ হতেন, উপেক্ষায় মুখ ফিরিয়ে নিতে ন ৷ প্রসন্ন হলে দৃষ্টি
    অবনত রাখতেন ৷ তার অধিকাত্শ হ সিই ছিল মৃদু হ সি, তিনি শিলা শুভ্র র্দাতে হাসতেন ৷

    হাসান বলেন, বেশ কিছুদিন আমি তা (এই বিবরণ) আমার অনুজ হুসায়ন ইবন আলী
    থেকে গোপন রাখলাম , তারপর তার কাছে তা বর্ণনা করলাম ৷ দেখলাম, যে আমার আগেই
    তা সংরক্ষণ করেছে এবং আমিতাকে যে বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম সেও তাকে সে

    বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল ৷ উপরত্তু সে তার ( ও আমার) পিতাকে তার আগমন নির্গমন,
    উঠা বসা ও অবয়ব-আকৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছে, কোন কিইে সে বাদ দেয়নি ৷ হাসান
    (রা) বলেন, আমার পিতাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর প্রবেশ’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম ৷ তখন
    তিনি বললেন, তার নিজের প্রবেশ ছিল সদা অনুমোদিত ৷ আর তিনি যখন বাড়িতে প্রবেশ
    করতেন তখন তার অভ্যন্তরীণ সময়কে তিন অংশে ভাগ করতেন, একাৎশ আল্লাহ্র
    ইরাদত-বন্দেগীর জন্য, আরেক অংশ ত্রী-পরিজনদের সাহচর্যেব জন্য আর একভাগ নিজের
    ব্যক্তিগত প্রয়োজনাদি পুরণ করার জন্য ৷ তারপর নিজের অংশটি (সাক্ষাৎপ্রার্থী) লোকদের
    মাঝে বন্টন করে দিতেন এবং সাধারণ ও বিশিষ্ট নির্বিশেষে সকলের মাঝে তা বিলিয়ে দিতেন,
    তাদের থেকে কোন অংশই সংরক্ষিত রাখতেন না ৷ উম্মতের জন্য নির্ধারিত অংশে তার নীতি
    ছিল, তার অনুমতি সাপেক্ষে গুণী ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া এবং দীনের ক্ষেত্রে তাদের অবদান
    অনুপাতে তাদের মাঝে তা’ বন্টন করা ৷ আর এদের মাঝে কারো একটি প্রয়োজন থাকত,
    কারো দু’টি প্রয়োজন থাকত, কারো বা ততোধিক প্রয়োজন, তিনি তাদের নিয়ে ব্যস্ত-মগ্ন
    হতেন এবং তাদেরকে তাদের প্রার্থিত বিষয়াদিতে তাদের ও উম্মতের কল্যাণকর ব্যবস্থা দান
    করতেন এবং তাদের করণীয় কি বলে দিতেন এবং সাথে সাথে এটাও বলতেন উপস্থিত ব্যক্তি
    অনুপস্থিত ব্যক্তিকে তা পৌছে দিক ৷ আর যে আমার কাছে তার প্রায়াজানর কথা পৌছাতে
    পারে না, তোমরা তার হয়ে আমার নিকট তার প্রয়োজনের কথা পৌছে দেবে ৷ কেননা, যে
    ব্যক্তি কোন ক্ষমতাবান (কর্তৃপক্ষকে) এমন ব্যক্তির প্রয়োজনের কথা পৌছে দেয়, যে নিজে তার
    কাছে তার প্রয়োজনের কথা পৌছাতে পাঢুর না, আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন তার পদদ্বয় স্থির,
    অবিচল রাখবেন ৷ তার কাছে তা (মানুষের প্রয়োজন) ব্যতীত অন্য কিছু আলোচিত হত না,
    কারো থেকে এছাড়া অন্য কিছু তিনি গ্রহণ (শ্রবণ) করতেন না ৷ লোকেরা তার সাথে দেখা
    করত সাক্ষাৎপ্রাহীব্ধিপে ৷ তবে কিছু না কিছুর স্বাদ আস্বাদন করেই তারা বিচ্ছিন্ন হত ৷ অন্য
    রিওয়ায়াতে শব্দের ঈষৎ পরিবতনিসহ প্রায় একই অর্থ্যবাধক বর্ণনা রায়ছে-সেখানে অতিরিক্ত
    রয়েছে তারা সেখান থেকে বের হত ফকীহ্রুপে অর্থাৎ দীনের ব্যুৎপত্তি নিয়ে ৷

    বর্ণনাকারী বলেন, আমি তাকে (আমার পিতাকে) তার বইির্গমন ও বহিৱাবস্থান সম্পর্কে
    জিজ্ঞেস করলাম যে, তাতে তিনি কিরুপ করতেন? তখন তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    তাদের কাজের বিষয় ব্যতীত তার রসনাকে সংরক্ষণ করতেন, তিনি তাদের সাথে অন্তরঙ্গ ও
    সৌহার্দপুর্ণ আচরণ করতেন এবং তাদেরকে বিরুপ-বিতৃষ্ণ করে দুরে সরিয়ে দিতেন না ৷
    প্রত্যেক ৫গাংত্রর সম্মানীকে উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করতেন এবং তাদেরকে তাদের নেতা
    মনোনীত করতেন ৷ লোকদেরকে (অন্যায়-অনাচার) হতে সতর্ক করতেন, নিজেও তাদের
    থেকে সতর্ক থাকতেন, তার তাদের কারো থেকে তার প্রসন্ন আচরণ ও নুবুওয়াতের মোহর
    বর্ণনান্তরে তার মহান নৈতিকতা গুঢিয়ে রাখতেন না১ ৷ তিনি তার সহচর ও সঙ্গীদের
    খোজ-খবর নিতেন, এবং লোকের অবস্থা সম্পর্কে (লাকদের কে জিজ্ঞেস করতেন ৷ সুন্দরকে
    সুন্দর বলতেন এবং তার পৃষ্ঠপোষকতা করতেন, আর কৃৎসিতকে কুৎসিত বলতেন এবং তাকে
    দুর্বল করতেন ৷ মধ্য পন্থা অবলম্বণকারী ভারসামাপুর্ণ বিশৃগ্রলামুক্ত ৷ লোকেরা যাতে উদাসীন
    এবং সত্য বিচ্যুত না হয়, সেজন্য তিনি সদা সচেতন থাকতেন ৷ সব রকমের অবস্থা ও
    ১ অর্থাৎ তার সতর্কতা , সহচর ও সাক্ষাৎ প্রার্থীদের সাথে সদাচরণের পরিপন্থী হত না ৷

    পরিস্থিতির জন্য তার কাছে ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি থাকত ৷ সত্য ও ন্যায়ের ক্ষেত্রে কোন অবহেলা বা
    শিথিলতা করতেন না ৷ তবে তার সীমারেখা অতিক্রমও করতেন না ৷ শেষ্ঠ ও উত্তম লোকেরইি

    তার সান্নিধ্যে (ঘনিষ্ঠ অবস্থানে) থাকত ৷ অন্যের হিতাকাল্পী ও কল্যাণ কামিতায় অতি
    ব্যপকত৷ সম্পন্নরাই তার কাছে সর্বোত্তম বিবেচিত হতে ন ৷ সহমর্মিতা ও সমবেদনায়
    সর্বোত্তমরাই তার কাছে ণ্শষ্ঠতম মর্যাদা লাভ করতেন ৷

    হুসায়ন (বা) বলেন, এরপর আমি তাকে রাসুলুল্পাহ্ (সা)-এর মজলিস সম্পর্কে জিজ্ঞেস
    করলাম যে, তা কেমন ছিল? তিনি তখন বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যিক্র ও আল্লাহর স্মরণ
    ব্যতীত উঠা-বসা করতেন না ৷ আর বসার জন্য কোন স্থান নির্ধারিত করতেন না এবং
    অন্যদেরকেও তা’ করা থেকে বারণ করতেন ৷ কোন মজ্বলিসে উপনীত হলে তিনি মজলিসের
    শেষ প্রাত্তেই উপবেশন করতেন এবং অন্যদের এরুপ করার নির্দেশ দিতেন ৷ তার মজলিসের
    সকলের প্রতি তিনি সমান মনোযোগ ও দৃষ্টি দিতেন ৷ তার মজলিসের কেউ এই ধারণা করত
    না যে, তার কাছে কেউ তার চাইতে অধিক মর্যাদার পাত্র ৷ কোন প্রয়োজনে কেউ তার সাথে
    বসলে বা দীড়ালে তিনি ঐ ব্যক্তির প্রস্থান পর্যন্ত ধৈর্যধারণ করতেন অর্থাৎ তাকে সঙ্গ দিতেন ৷
    কেউ কোন প্রয়োজনে আসলে তিনি তাকে তা দিয়েই বিদায় করতে ন, কিৎবা তাকে
    সান্তুনাদায়ক কোমল কথা বলতেন ৷ তার উদারতা ও চরিত্রের অমায়িকতা ছিল সর্বব্যাপী, তাই
    তিনি ছিলেন তাদের পিতৃতুল্য আর অধিকারের ক্ষেত্রে তারা সকলে তার কাছে ছিলেন সমান ৷
    তার মজলিস ছিল জ্ঞান-প্রজ্ঞা, লজ্জাশীলতা, ধৈর্য ও বিশ্বস্তার মজলিস, যেখানে গলার আওয়াজ
    উচু হত না, কারো অন্দর, অন্তঃপুরের দোষ চর্চা হত না এবং খুটিনাটি দোষ-ত্রুটির চর্চা হত
    না ৷ উপস্থিত সকলে ছিলেন সমস্তরের, তাকওয়া ও আল্লাহ্ ভীতির মানদণ্ডে তারা একে অন্যের
    চেয়ে শ্রেষ্ঠতৃ লাভ করতেন ৷ তারা সকলে বিনম্র, বিনয়াবনত , সেখানে“ তারা বড়কে সম্মান করেন
    ছেটিকে স্নেহ করেন, অভাবগ্রস্তকে অগ্ৰাধিকার প্রদান করেন এবং আগস্তুককে সমাদর করেন ৷
    হযরত হুসায়ন বলেন এরপর আমি তাকে (আমার পিতাকে) সহচরদের সাথে রাসুলুল্লাহ্
    (না)-এর আচরণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম ৷ তখন তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ছিলেন
    সদা-সহাস্যবদন, নম্র-কােমল স্বভাবের অধিকারী, রুঢ় ও কঠোর কর্কশ নন, চিৎকার বা হৈ চৈ
    কারী নন, অশ্লীলভাষীও নন, নিন্দুক সমালোচনাকারী কিৎবা তবলহাস্য পরিহাসকারীও নন ৷
    তিনি অপছন্দনীয় বিষয় এড়িয়ে যান এবং তার অনুগ্রহ প্রার্থীকে নিরাশ ও ব্যর্থ মনােরথ করেন
    না ৷ তিনটি বিষয় থেকে নিজেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন ৷ ১ ঝগড়া-কলহ ২ অতিকথন ৩
    অপ্রয়োজনীয় অর্থহীন (বিষয় ও বক্তব্য) ৷ আর লোকদেরকে তিনটি বিষয় থেকে তিনি
    অব্যাহতি দিয়েছিলেন, ১ কারো নিন্দা-সমালোচনা করতেন না ২ কাউকে লজ্জা দিতেন না
    ৩ কারো ছিদ্রাম্বেষণ করতেন না এবং শুধু এমন বিষয়ে কথা বলতেন, যেসব বিষয়ের
    ছাওয়াবের প্রতা৷শা করতেন ৷ আর তিনি যখন কথা বলতেন তখন তার মজলিসে উপবিষ্টরা
    এমন নিচুপ হয়ে মাথা ঝুকিয়ে বাখতেন, যেন তাদের মাথায় পাখি বসে আছে ৷ তিনি যখন
    থামতেন তখন তারা কথা বলতেন ৷ তার সামনে তারা বাদানুবাদ করতেন না ৷ তারা যাতে
    হাসতেন তিনিও তাতে হাসতেন এবং তারা যাতে বিস্মিত হতেন তিনিও তাতে বিস্মিত হতেন ৷
    নবাগত ও অপরিচিতের রুক্ষ কথাবার্তা ও প্রার্থনার অভদ্রতায় ধৈর্যধারণ করতে ন, এমনকি তার
    সঙ্গীগণ তাকে (ঐ নবাগত) কথার ধরন শিখিয়ে দিতেন ৷ আর তিনি বলতেন, তোমরা কোন
    যাঞাকারী ও অভাবগ্রস্তকে দেখলে তাকে কিছু দিয়ে সাহায্য করবে ৷ কোন উপকৃত ব্যক্তির পক্ষ
    থেকে ছাড়া কারো পক্ষ থেকে তিনি কোন প্রশংসান্তুতি গ্রহণ করতেন না ৷ তিনি কারো কথার

    মাঝে কথা বলতেন না, যতক্ষণ না সে তার কথা শেষ করে বা নিজে তা থেকে ক্ষান্ত হয়
    কিৎবা উঠে যায় ৷

    তিনি বললেন, এরপর আমি তাকে তার নীরবতা সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম যে, তা’ কেমন
    ছিল? জবাবে তিনি বললেন, তার নীরবতা বা নিচ্চুপতা ছিল চার কারণে ১ প্রজ্ঞা ও
    সহনশীলতা ২ সতর্কতা ৩ পরিমিতিবোধ : চিন্তা-ভাবনা ৷ আর তার পরিমিতিবােধ হতো
    লোকদের প্রতি সমান দৃষ্টি ও মনোযোগ প্রদানে ৷ আর চিন্তা ভাবনা ছিল (দুনিয়ার) অস্থায়িতু,
    (আখিরাতের) স্থায়ীত্বের ব্যাপারে ৷ আর আল্লাহ তাকে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা এক সাথে দান করে
    ছিলেন, তাই কোন কিছুই বা কোন পবিস্থিতিই তাকে ক্ষুদ্ধ ও অসহিষ্ণু করতে পারত না ৷
    আর চারটি বিষয়ে তাকে সতর্কতা দান করা হয়েছিলৰু ং ১ সর্বোত্তমকে গ্রহণ করা, ২ দুনিয়া
    ও আখিরাতে তার সহচরদের জন্য যা সঞ্চিত হয়েছে তাতে তাদের তত্ত্বাবধান ও দেখাশোনা
    করা ৷

    হাফিয আবু ঈসা তিরমিষী রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর শামায়েল অধ্যায়ে সুফিয়ান ইবন ওকী
    সুত্রে হযরত হাসান ইবন আলী (বা) থেকে এই হাদীসখানি সবিন্তারে বর্ণনা করেছেন ৷
    তিনি হাসান ইবন আলী (বা) বলেন, আমি আমার মামাকে জিজ্ঞেস করলাম এরপর
    তিনি তা উল্লেখ করেছেন আর তাতে তার ভইি হুসায়ন সুত্রে তার পিতা থেকে বর্ণিত, তার
    হাদীসখানি রয়েছে ৷ হাফিয আবু বক্র বায়হাকী আদ্-দালইিল’ গ্রন্থে আবু আবদুল্লাহ্ নিশাপুরী
    থেকে তা রিওয়ায়াত করেছেন ৷ ৩ হাসান বলেন, আমি আমার মামা হিন্দ ইবন আবু হালাক
    জিজ্ঞেস করলাম-এরপর তিনি সবিস্তারে তা উল্লেখ করলেন ৷ আমাদের শায়খ হাফিয আবুল
    হাজ্জাজ আলমিয্যী তার গ্রন্থ আল আতরাফে বিগত এই সনদ দুটি উল্লেখ করার পর
    বলেন, ইসমাঈল ইবন মুসলিম ইবন আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন, যে তিনি হিন্দ ইবন
    আবু হালাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আর তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর অবয়ব ও স্বভাব-চরিত্র
    বর্ণনায় পারদর্শী ছিলেন আমাদেরকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর অবয়ব ও স্বভাব বর্ণনা করুন-
    এরপর তিনি এ হাদীসের অংশবিশেষ উল্লেখ করেছেন ৷ এছাড়া হাফিয বায়হাকী সাবিহ ইবন
    আবদৃল্পাহ্র সুত্রে (যিনি দুর্বল রাবী) হযরত আয়েশ (বা) থেকে নবী করীম (না)-এর অবয়ব
    ও স্বভাবের বিবরণ সম্বলিত এক দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেছেন ৷ যা হিন্দ ইবন আবু হালার
    কাছাকাছি ৷ বায়হাকী তা আনুপুর্বক উল্লেখ করেছেন, আর তার মাঝে মাঝে দুর্বোধ্য শব্দসমুহের
    ব্যাথ্যাও করেছেন, ইতিপুর্বে আমরা যা উল্লেখ করেছি, এরপর আর তা উল্পেখের প্রয়োজন
    নেই ৷ আল্লাহ্ই অধিক জানেন ৷

    বুখারী আবু আসিম যাহ্হাক উক্বা ইবন হারিছ সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি
    বলেছেন, নবীজীর মৃত্যুর কয়েক দিন পর আবু বকর আসর নামায পড়লেন, এরপর তিনি
    আলীর (বা) সাথে হাটতে বের হলেন ৷ তখন হাসান ইবন আলী বালকদের সাথে থেলছিলেন,
    আবু বকর তাকে তার র্কাধে উঠিয়ে বলতে লাগলেন, আমার বাপজান ! এ নবীজীর সাথে
    সাদৃশ্য সম্পন্ন, আলীর সাথে নয় ৷ আর আলী তখন তাদের দু’জানর এ অবস্থা দেখে
    হাসছিলেন ৷ বুখারী আহমদ ইবন ইউনুস আবু জুহায়ফা সুত্রে বলেন যে, তিনি বলেছেন,
    আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে দেখেছি, হাসান ইবন আলী তার সাথে সাদৃশ্য সম্পন্ন ছিলেন ৷ আর
    বায়হাকী আবু আলী রওযবারী হযরত আলী সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছিলেন, বুক
    থেকে মাথা পর্যন্ত অংশে হাসান এবং এর নিম্নাৎশে হুসায়ন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে অধিক
    সাদৃশ্য সম্পন্ন ৷

    অধ্যায়
    তার পবিত্র স্বভাব-চরিত্রের বিবরণ

    পুর্বে আমরা তার বংশগত কুলীনতা, পবিত্রতা এবং জন্মের কথা উল্লেখ করেছি ৷ আর
    আল্লাহ তাআলা স্বয়ং বলেছেন৪ ৷ এ ৷ “আল্লাহ তার ’
    রিসালাণ্ডে র ভার কার উপর অর্পণ করবেন, তা তিনিই ভাল জানেন ( ৬ আন আম৪ ১২৪) ৷

    বুখারী কুতায়বা আবু হুরায়রা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে,৩ তিনি বলেছেন, রাসুলুল্পাহ্
    (সা ) ইরশাদ করেন :

    “মানবজাতির সর্বোত্তম কালে আমি প্রেরিত হয়েছি, একের পর এককাল অতিবাহিত
    হয়েছে পরিশেষে আমি যে কালে প্রেরিত হওয়ার সেকালে প্রেরিত হয়েছি” ৷

    মুসলিম শরীফে ওয়াছিলা ইবন আসকা থেকে বর্ণিত ৩,আছে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    ইরশাদ করেছেন :

    “আল্লাহ্ তাআলা ইসমাঈল (আ)-এর বংশধরদের মাঝে কুরায়শকে মনোনীত করেছেন,
    আর কুরায়শদের মধ্য থেক বনু হাশিমকে, আর বনু হাশিম থেকে আমাকে মনোনীত
    করেহ্নেম্ব” ৷

    আল্লাহ তড়াআলা বলেন :

    “নুন-শপথ কলমের এবং তারা বা লিপিবদ্ধ করে তার, ৫৩ ড়ামার প্রতিপালকের অনুগহে
    তুমি উম্মাদ নও ৷ তোমার জন্য অবশ্যই রয়েছে নিরবিচ্ছিন্ন পুরষ্কার ৷ আর তুমি অবশ্যই সুমহান
    চরিত্রে অধিষ্ঠিত” (৬৮ কালাম : ১৪ ) ৷
    আওফী ইবন আব্বাস (রা) থেকে উক্ত আঘাতের ব্যাখ্যার বলেন, অর্থাৎ তুমি এক মহান
    দীনের অনুসারী অর্থাৎ ইসলাম ৷ মুজাহিদ ইবন মালিক, সুদ্দী, যাহ্হাক এবং আবদুর রহমান
    ইবন যায়দ ইবন আসলামও এমনই বলেছেন ৷ আর আতিয়্যা বলেন, এর অর্থ হল, আপনি
    মহান শিষ্টাচার এর উপর প্রতিষ্ঠিত ৷ সহীহ্ মুসলিমে যুরারা ইবন আওফা সুত্রে হযরত
    কাতাদার হাদীস থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি বলেন, (একবার) আমি উম্মুল মুমিনীন

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ রাসূল (সা) এর দেহাবয়ব ও স্বভাব বর্ণনা বিষয়ক বিচ্ছিন্ন হাদীস Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.