“সকল মহিলার উপর আইশার গ্রেষ্ঠতৃ তেমন সকল খাদ্যের উপর ছারীদ খাদ্যের গ্রেষ্ঠতৃ
যেমন ৷” হাদীছের এই অংশটি শুবা আবু মুসা আশআরী (বা) সনদে সহীহ্ বুখারী এবং
সহীহ্ মুসলিমে উদ্ধৃত আছে ৷ আবু মুসা আশআরী (বা) বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন
“অনেক পুরুষ কামালিয়াত অর্জ্য৷ করেছে কিন্তু মহিলাদের মধ্যে কামালিয়াত লাভ করেছেন
মাত্র ফিরআওনের শ্রী আসিয়া, ইমরানের কন্যা মারয়াম ৷ আর সকল মহিলার উপর অইিশা
(রা)-এর গ্রেষ্ঠতৃ সকল খাদ্যের উপর ছারীদের শ্রেষ্ঠত্বের ন্যায় ৷ ছারীদ হল রুটি ও গোশতের
ৎমিশ্রণে তৈরী খাদ্য ৷ যেমন একজন কবি বলোছন০
“রুটির সাথে ব্যঞ্জনরুপে যখন গোশত মিশ্রিত করা হয় তখন এটি ছারীদ খাদ্যে পবিণত
হয় ৷ এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার বিশেষ ৷ ”
রাসুলুল্লাহ (না)-এর বাণী “আইশার শ্রেষ্ঠতৃ অন্য নারীদের উপর” এটি দ্বারা হয়ত
ব্যাপকতা বুঝানো হয়েছে ৷ তা হলে অর্থ হবে হাদীছে উল্লিখিত মহিলাগণ সকলে সমমর্যাদা
সম্পন্ন এবং তাদের একজনকে অন্যজনের উপর শ্রেষ্ঠতৃ দিতে গেলে অন্য দলীল-প্রমাণ
প্রয়োজন হবে ৷ আল্লাহ্ইভ ৷ল জানেন ৷
হযরত খাদীজা (না)-এর মৃত্যু-উত্তর রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বিবাহ
বিশুদ্ধ অভিমত এই যে, হযরত খাদীজা (রা)-এর পর রাসুলুল্লাহ (স৷ ) সর্বপ্রথম হযরত
আইশা (না)-কে বিবাহ করেন ৷ এ বিষয়ক আলোচনা শীঘ্রই আসছে ৷ ইমাম বুখারী (র)
“হযরত আইশা (রা)-এর বিবাহ” অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন যে যুআল্লা আইশা (র৷ )
থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সা) তাকে বলেছেন০ : স্বপে আমার নিকট( তামাকে দুইবার
দেখানো হয়েছে ৷ একবার আমাকে দেখানো হল যে, তুমি একটি রেশমী৷ চাদরে জড়ানাে ৷ কে
যেন আমাকে বলছেন, এই যে আপনার শ্রী, ঘোমট৷ তুলে তাকে দেখুন ৷ তখন আমি দেখলাম
যে , তুমি ৷ তখন আমি মনে মনে বললাম : “এটি যদি আল্লাহর ফায়সাল৷ হয়ে থাকে, তবে তা
আল্লাহ কার্যকরী করবেন ৷ ”
ইমাম বুখারী (র) “কুমারীর বিবাহ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন যে, ইবন আবু মুলায়কা
বলেছেন, হযরত ইবন আব্বাস (বা) হযরত আইশা (রা)-কে বলেছিলেন, বাসুলুল্লাহ্ (না) তো
আপনি ব্যতীত অন্য কোন কুমারী মেয়েকে বিবাহ করেননি ৷ ইসমাঈল ইবন আবদুল্লাহ
হযরত আইশা (রা) সুত্রে বলেছেন, তিনি বলেন, আমি বললাম , ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ !ৰু আপনি যদি
এমন কোন প্রান্তরে যান, যেখানে কতক গাছপালা রয়েছে যেগুলো থেকে ইতােপুর্বে কিছু
খাওয়া হয়েছে আর কতক আছে যেগুলো অক্ষত , যেগুলো থেকে ইভােপুর্বে খাওয়া হয়নি, তখন
আপনি কোন ঘাস-বৃক্ষে আপনার উট চরাবেন ? উত্তরে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, যে ঘাস-বৃক্ষ
থেকে ইতােপুর্বে খাওয়া হয়নি সেটিতে চরাব ৷ এ উক্তি দ্বারা হযরত আইশা (বা) বুঝাতে
চেয়েছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) র্তাকে ছাড়া অন্য কোন কুমারী শ্রী গ্রহণ করেননি ৷ ইমাম বুখারী
একাই এই হাদীছ উদ্ধৃত করেছেন ৷ তারপর ইমাম বুখারী (র) বলেছেন, উবায়দ ইবন
ইসমাঈল হয়বত৩ত্ত্ব আইশা (বা) সুত্রে বলেছেন, তিনি বলেন আমাকে রাসুলুল্পাহ্ (সা)
বলেছেন, “স্বপ্নে আমার নিকট তোমাকে দেখানো হয়েছে ৷ একজন ফেরেশত ৷ একটি রেশমী
চাদরে জড়িয়ে তোমাকে আমার নিকট এনে বলেছিলেন, এই যে আপনার ত্রী ৷ আমি তখন
তোমার মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে ফেলি এবং দেখতে পাই যে সে তুমি ৷ আমি বললাম, এটি
যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে ফায়সাল৷ হয়ে থাকে তবে তা আল্লাহ কার্যকর করবেনই ৷ এক
বর্ণনায় তিন৷ বা তে তাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে বলে উল্লিখিত হয়েছে ৷
ইমাম তিরমিযী উদ্ধৃত করেছেন যে জিবরাঈল (আ) হযরত আইশ ৷ (রা) এর ছবি একটি
সবুজ রেশমী কাপড়ে জড়িয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট উপস্থিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন
যে এই আপনার ত্রী দুনিয়াতে ও আখিরাতেও ৷
ইমাম বুখারী (র) “বয়স্কদের নিকট ছোটদেরকে বিয়ে দেয়া অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন,
আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ উরওয়৷ থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত আইশা (রা)-কে বিয়ে
করার জন্যে হযরত আবু বকর (রা) এর নিকট প্রন্তা ৷ব পাঠান ৷ আবু বকর (রা) বললেন, “আমি
তো আপনার ভাই ৷” বাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন আপনি তাে আল্লাহর দীন ও তার কিতাবেব
সুত্রে আমার তা ৷ই, আপনার কন্যা বিয়ে করা আমার জন্যে হালাল ৷ এই হাদীছটি সাধারণত
মুরসাল বলে মনে হয় ৷ কিভু ইমাম বুখারী ও অন্যান্য বিশ্নেষকদের নিকট এটি অবিচ্ছিন্ন সনদে
বর্ণিত ৷ কারণ, উরওয়৷ এটি বর্ণনা করেছেন আইশা (বা) থেকে ৷ এ হাদীছঢিও ইমাম বুখারী
(র) একক ভাবে উদ্ধৃত করেছেন ৷
ইউনুস ইবন বুকায়র হিশাম ইবন উরওয়৷ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি
বলেছেন হযরত খাদীজা (রা)-এর ইনতিকালের তিন বছর পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত আইশা
(রা)-কে বিবাহ করেন ৷ তখন হযরত আইশা (রা)-এর বয়স ছিল ছয় বছর ৷ তার নয় বছর
বয়সে তাদের বাসর হয় ৷ হযরত আইশা (রা)-এর বয়স যখন ১৮ বছর, তখন রাসুলুল্লাহ্
(সা)-এর ইনতিকাল হয় ৷ এটি একটি বিরল বর্ণনা ৷
ইমাম বুখারী (র) উবায়দ ইবন ইসমাঈল হিশাম ইবন উরওয়৷ সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে,
ার পিতা বলেছেন, বাসুলুল্লাহ্ (সা) এর হিজরতৈর তিন বছর পুর্বে হযরত খাদীজা ইনতিকাল
করেন ৷ এরপর তিনি দুই বছর বা তার কাছাকাছি সময় অপেক্ষা করেন ৷ তারপর আা৷ইশ্
(বা) যে বিবাহ করেন ৷ তখন হযরত আ ৷ইশা ৷৷(রা) এর বয়স ছয় বছর ৷ তার নয় বছর বয়সে
তাদের বাসর হয় ৷ বর্ণনাকারী উরওয়৷ (র) যা বললেন বাহ্য৩ তা মুরসাল হাদীছ বলে মনে
হলেও প্রকৃত পক্ষে এটি অবিচ্ছিন্ন সনদে বর্ণিত হাদীছ ৷ তিনি যে বলেছেন, “ছয় বছর বয়সে
হযরত আইশা (রা)-এর বিবাহ হয় এবং নয় বছর বয়সে বাসর হয়” এতে কারো কোন দ্বিমত
নেই ৷ সিহাহ্ ও অন্যান্য গ্রন্থসমুহে এ তথ্য বর্ণিত হয়েছে ৷ হযরত আইশা (রা) এর সাথে
রাসুলুল্লাহ (সা) এর বাসর হয়েছিল মদীনায় হিজরকৃ তর দ্বিতীয় বছরে ৷ কিন্তু হযরত খাদীজা
(রা) এর ইনতিকালের প্রায় তিন বছর পর আ ৷ইশা (রা)-কে বিবাহ করেছেন বলে যে তথ্য দেয়া
হয়েছে তা পর্যালোচনা সাপেক্ষ ৷ কারণ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান আলহাফিযম হযরত আইশা
(রা) থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেছেন, খাদীজা (রা)-এর মৃত্যুর পরে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর
হিজরতের পুর্বে তিনি আমাকে বিবাহ করেন তখন আমার বয়স ছয় কিৎব৷ সা ৷ত বছর ৷ আমরা
মদীনায় আসার পর একদিন কত ক মহিলা আমার নিকট উপস্থিত হয় ৷ আমি তখন একটি
বাগানের মধ্যে খেলা করছিলাম ৷ আমার চুলগুলো খোপা বাধার উপযুক্ত ছিল ৷ তারা আমাকে
সাজিয়ে-গুছিয়ে পরিপাঢি করে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট নিয়ে আসলেন ৷ তখন আমার বয়স
নয় বছর ৷ এই হাদীছে আইশা (রা) বলেছেন, “খাদীজা (রা)-এর মৃত্যুর সাথে সাথে ৷” তাতে
ধারণা করা যায় যে, খাদীজা (রা)-এর মৃত্যুর অল্প কিছুকালের মধ্যেই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল ৷
ণ্ হীা, তবে যদি এটা বলা যায় যে বর্ণনায় খাদীজার মৃত্যুর সাথে সাথে” শব্দের পুর্বে একটি
পরে” শব্দ বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, তখন অর্থ হবে হযরত খাদীজার ইনতিকালের পরবর্তীতে
তবে ইউনুস ইবন বুকায়র ও আবু উসাম৷ সুত্রে বর্ণিত হিা৷ম ইবন উরওয়ার বর্ণনার সাথে কোন
সংঘর্ষ হয় না ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
ইমাম বুখারী (র) বলেন, ফারওয়া ইবন আবুল মাপরা হযরত আইশা (রা ) সুত্রে বর্ণনা
করেন, তিনি বলেছেন রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে বিবাহ করেন যখন আমার বয়স ছয় বছর ৷
পরবর্তীতে আমরা মদীনায় আমি এবং বনু হারিছ ইবন খাযরাজ গোত্রের মধ্যে অবস্থান করতে
লাগলাম ৷ একদিন আমি জ্বরে আক্রান্ত হলাম ৷ আমার চুল এলোমেলো হয়ে গেল ৷ তখন আমার
বোপা বাধার মত চুল ছিল ৷ আমার মা উম্মু রুমান আমার নিকট আসলেন ৷ আমি তখন আমার
কতক বান্ধবীর সাথে একটি দোলনায় বসা ছিলাম ৷ যা আমাকে চীৎকার করে ভাকলেন ৷ তার
নিকট তিনি আমাকে নিয়ে কী করতে চ৩াচ্ছিলেন তা আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না ৷ তিনি
আমার হাত চেপে ধরে ঘরের দরজায় এসে থামলেন ৷ আমি ভড়কে গিয়েছিলাম ৷ এক সময়
আমার শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়ে এলো ৷ তিনি একটু পানি নিয়ে আমার মুখমণ্ডলে ও মাথা
মুছে দিলেন ৷৩ তারপর আমাকে ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে দিলেন ৷ ঘরের মধ্যে কয়েকজন আনসারী
মহিলা ছিলেন ৷ তারা বললেন, কল্যাণ হোক বরকত হোক এবং শুভ হোক ৷ যা আমাকে ওদের
হাতে তুলে দিলেন ৷৩ র্তার৷ আমাকে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিপাটি করে দিলেন ৷ দুপুরের পুর্বক্ষণে
রাসুলুল্লাহ (সা) ঘরে ঢুকলেন ৷ তার উপস্থিতিতে আমি ভড়কে গেলাম ৷ ওরা আমাকে তার
হাতে তুলে দিলেন ৷ তখন আমার বয়স নয় বছর ৷
ইমাম আহমদ (র) উম্মুল মু’মিনীন আ ৷-ইশা এর মসনদে উল্লেখ করেছেন যে মুহাম্মদ ইবন
বিশর বর্ণনা করেছেন মুহাম্মদ ইবন আমর আবু স ৷লাম৷ এবং ইয়াহ্ইয়া থেকে ৷৩ তারা দু জনেই
বলেছেন যে, হযরত খাদীজা (রা)-এর ইনতিকালের পর উছমান ইবন মাযউনের ত্রী খাওলা
বিনত হাকীম রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট উপস্থিত হন ৷ তিনি বলেন, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ (সা ) !
আপনি কি বিবাহ করবেন না ? র ৷সুলুল্লাহ (সা) বললেন কাকে বিবাহ করব ? খাওলা বললেন,
আপনি কুমা ৷রী চা ৷ইলে কুমারী পা ৷ত্রী পারেন আর পুর্ব-বিবাহিভ৷ চাইলে ত-৷ ই পাবেন৷ ৷রাসুলুল্লাহ্
(সা) জিজ্ঞেস করলেন, কুমারী পাত্রীটি কে ? খাওলা বললেন, জগতে আপনার সবচেয়ে প্রিয়
আবু বকর (রা)-এর কন্যা আইশা ৷ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, পুব-বিবাহিতা মহিলাঢি কে ?
খাওল৷ বললেন, তিনি হলেন যামআর কন্যা সাওদ৷ ৷ তিনি আপনার প্রতি ঈমান আনয়ন
করেছেন এবং আপনার অনুগত৷ ৷ রাসৃলুল্লাহ্ (সা) বললেন , তবে তুমি ওদের নিকট যাও এবং
আমার কথা তাদের নিকট আলোচনা কর ৷ খাওলা গেলেন আবু বকর (রা)-এর গৃহে ৷ তার
শ্ৰীকে বললেন, উম্মু রুমান! কী কল্যাণ ও বরকতই না আল্লাহ আপনাদের জন্যে মনঘুর
করেছেন ৷ উম্মু রুমান বললেন, কেন কী হয়েছে ? খাওলা বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (না) আইশাকে
বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে আমাকে আপনাদের নিকট পাঠিয়েছেন ৷ তিনি বললেন, আবু বকর (বা)
আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন !
আবু বকর (বা) ঘরে এলেন ৷ আমি বললাম, আবু বকর ! কী কল্যাণ ও বরকতই না আল্লাহ
আপনার জন্য মনবুর করেছেন ! আবু বকর (রা) বললেন, কেন কী হয়েছে ? খাওল৷ বললেন,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) আইশাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে আমাকে আপনাদের নিকট প ঠিয়েছেন ৷ আবু
বকর (রা) বললেন সে কিতাব জন্যে বৈধ হবে ? সে তো তার ভাতিজী৷ আমি রাসুলুল্লাহ্
(সা) এর নিকট ফিরে গিয়ে আবু বকর (বা) )-এর মন্তব্য তাকে জনালাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন তুমি আবার তার নিকট যাও এবং আমার এ বক্তব্য তার কাছে পৌছে দাও ৷ “আমি
আপনার তা ৷ই এবং আপনি আমার ভা ৷ই ইসলামের দৃষ্টিকোণ থকে আপনার মেয়ে বিয়ে করা
আমার জন্যে বৈধ ৷” খাওল৷ বলেন আমি আবু বকর (রা)-এর নিকট ফিরে গেলাম এবং
বাসুলুল্ল হ (না)-এর বক্তব্য তাকে জানা ৷লাম ৷ তিনি বললেন তুমি অপেক্ষা কর ৷ তিনি ঘর থেকে
বের হলেন ৷ উম্মু রুমান বললেন ঘু৩ তঈম ইবন আদী তো আইশার সাথে তার পুত্রের বিবাহের
প্রস্তাব দিয়েছিলেন ৷ আল্লাহর কলম , আবু বকর (বা ) তো একবার ওয়াদ৷ করলে তা কখৃনাে ভঙ্গ
করেন না ৷ আবু বকর (রা) গেলেন ষুতঈম ইবন আদীর নিকট ৷ সেখানে মুতঈমএর শ্রী উম্মুস
সাবী উপস্থিত ছিলেন ৷ উম্মুস সাবী বললেন, হে আবু কুহাফার পুত্র আমার ছেলে যদি আপনার
মেয়েকে বিয়ে করে তাহলে তো আপনি তাকে আমাদের ধর্ম থেকে ফিরিয়ে আপনার ধর্মে নিয়ে
যাবেন ত ই না ? ঘুতঈম ইবন আদীকে আবু বকর (বা) বললেন, তোমার বক্তব্য আর তোমার
ত্রীর বক্তব্য কি এক ? মুতঈম বলল সে তো তাই বলছে ৷
আবু বকর (বা) সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন ৷ মুতঈমকে ওয়াদা প্রদান বিষয়ে তার মনে
যে অস্বস্তি ছিল তা বিদুরিত হল ৷ ঘরে এসে তিনি খাওলাকে বললেন, তুমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে
নিয়ে এর ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে নিয়ে এলেন ৷ আবু বকর (রা) আইশা (রা)-কে তার
নিকট বিবাহ দিয়ে দিলেন ৷ তখন হযরত আইশা (রা)এর বয়স ছিল ছয় বছর ৷ এরপর খাওলা
গেলেন সাওদা বিনত যামআ-এর নিকট ৷ তাকে বললেন, কী কল্যাণ ও মঙ্গলই না আল্লাহ
আপনার জন্যে মনয়ুর করেছেন ৷ সাওদা বললেন, কেন কী হয়েছে ? খাওলা বললেন,
আপনাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন ৷
সাওদা বললেন আপনি আমার পিতার নিকট গিয়ে প্রস্তাবটি পেশ করুন ৷ আমার কাছে তো
প্রস্তাবটি ভালই মনে হয় ৷ তিনি খুব বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন ৷৩ তাই হাজ্জ যেতে পারেননি ৷ আমি
তার নিকট গিয়ে জাইিলী নিয়মে অভিবাদন জ নালাম ৷ তিনি বললেন কে ? আমি খাওলা বিনত
হাকীম খাওলা বললেন ৷ বকর বললেন, কী সংবাদ ? মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ আপনার কন্যা
সাওদাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দিয়ে আমাকে পাঠিয়েছেন, খাওলা উত্তর দিলেন ৷ বকর বললেন,
এ তো খুব ভাল ও মানানসই সম্বন্ধ ৷ তোমার বান্ধবী কী বলে ? খাওলা বললেন যে এটি ভাল
মনে করে ৷ বকর বললেন, ওকে আমার নিকট নিয়ে এসো ! সাওদা এলেন ৷ বকর বললেন, প্রিয়
কন্যা! এই যে খাওলা, সে বলছে যে, মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ তোমাকে বিবাহ করার প্রস্তাব
দিয়ে তাকে পাঠিয়েছেন ৷ এটি তো খুব ভাল ও মানানসই সম্বন্ধ, তুমি কি চাও যে, আমি
তোমাকে তার নিকট বিয়ে দিয়ে দিই ৷ সাওদা বললেন, হী৷ ৷ বকর বললেন খাওলা তুমি গিয়ে
মুহাম্মদকে নিয়ে এসো ! রাসুলুল্লাহ্ (সা) এলেন ৷ বকর তার কন্যা সাওদ্যাক রাসৃলুল্লাহ এর নিকট
বিয়ে দিলেন ৷ সাওদার ভাই আবৃদ ইবন যামআ হজ্জ থেকে ফিরে এসে এ সংবাদ শুনল এবং
ক্ষোভে-দুঃখে মাথায় ধুলি ছিটাতে লাগল ৷ পরবর্তীতে আবৃদ ইবন যামআ যখন ইসলাম গ্রহণ
করলেন, তখন বললেন, আমার জীবনের কসম রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাওদ্যাক বিয়ে করেছেন এ
সংবাদ শুনে যেদিন আমি আমার মাথায় ধুলাে ছিটিয়ে ছিলাম সেদিন আমি নিশ্চয়ই মুর্থ ছিলাম ৷
হযরত আইশা (বা) বলেন, পরে আমরা মদীনায় এসে সুনহ, নামক স্থানে বনু হারিছ ইবন
খাযরাজ গোত্রে অবস্থান করতে থাকি ৷ এক সময় রাসুলুল্লাহ্ (না) সেখানে হাযির হন ৷
আনসারী পুরুষ ও মহিলাপণ র্তার নিকট সমবেত হন ৷ আমার মা এলেন আমার নিকট ৷ আমি
তখন খেজুর বাগানে দু’ডালের মাঝে অবস্থান করছিলাম ৷ তিনি আমাকে ওখান থেকে নিয়ে
এলেন ৷ আমার চুল খোপা বাধা ছিল ৷ তিনি খোপা খুলে আচড়িয়ে দিলেন ৷ পানি দিয়ে আমার
মুখ মুছে দিলেন ৷ এরপর আমাকে টেনে এনে ঘরের দরজায় দীড় করালেন ৷ আমি ভয়
পাচ্ছিলাম ৷ এক সময় আমি কিছুটা শান্ত হলাম ৷ তারপর তিনি আমাকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ
করলেন ৷ আমাদের ঘরের মধ্যে দেখতে পেলাম রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে ৷ তিনি একটি চৌকিতে
বসে আছেন ৷ তীর নিকট আনসারী পুরুষ ও মহিলাপণ উপস্থিত ৷ আমার মা আমাকে একটি
কক্ষে বসালেন এবং বললেন ওরা তোমার পরিবার ৷ আল্পাহ্ তাদের মধ্যে তোমাকে এবং
তোমার মধ্যে র্তাদেরকে শান্তি ও কল্যাণ দান করুন ৷ এরপর নারী পুরুষ সবাই দ্রুত বেরিয়ে
গেলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না) আমাদের ঘরে আমাকে নিয়ে বাসর করলেন ৷ তখন উট-বকরী কিছুই
যবাহ্ করা হয়নি ৷ অবশেষে সাআদ ইবন উবাদাহ (বা) এক পামলা খাবার পাঠালেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন তার শ্ৰীগণের নিকট যেতেন, তখন সাআদ (বা) ওরকম খাবার
পাঠাতেন ৷ তখন আমার বয়স ছিল নয় বছর ৷ বাহ্যত মনে হবে যে, এই বর্ণনাটি মুরসাল কিন্তু
মুলত এটি অবিচ্ছিন্ন সনদের হড়াদীছ ৷ কারণ, বায়হাকী আহমদ ইবন আবদুল জাব্বার
হযরত আইশা (রা) সুত্রে হযরত খাদীজা (রা)-এর ইনভিকড়ালের পর খাওলা বিনৃত হাকীমের
আগমন ও হযরত রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর বিবাহের প্রস্তাব সংক্রান্ত হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷ এতে
প্রমাণিত হয় যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাওদা বিনৃত যামআকে বিবাহ করার পুর্বে আইশা (রা) কে
বিবাহ করেন ৷ তবে হযরত সাওদা (বা) এর সাথে বাসর করেন মক্কায় আর আইশা (রা)-এর
বাসর হয় পরে মদীনা শরীফে দ্বিতীয় হিজরীতে ৷
ইমাম আহমদ (র) বলেন আসওয়াদ হযরত আইশা (বা) সুত্রে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন,
সাওদা (বা) যখন বৃদ্ধা হয়ে পড়লেন, তখন তিনি তার পালার রড়াতটি আমাকে দান করে দেন ৷
ফলে রাসুলুল্লাহ্ (না) তবে শ্ৰীদেরকে রাত বণ্টনের ক্ষেত্রে আমাকে আমার রাত এবং সাওদার
১ মুল গ্রন্থে আবু বকর শব্দ থাকলেও সম্ভবত বকর শব্দটি মুদ্রণ প্রমাদ ৷ সম্পাদক পরিষদ-
(বা) রাত সঙ্গ দিতেন ৷ আইশা (বা) বলেন, আমাকে বিবাহ করার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা)
সর্বপ্রথম সাওদাকে (বা ) বিবাহ করেন ৷
ইমাম আহমদ (র) বলেন আবু নযর আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (বা) থেকে বর্ণিত
রাসুলুল্লাহ্ (স৷ ) র্তার সম্প্রদায়ের এক মহিলাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন ৷ তার নাম ছিল
সাওদা ৷ তিনি ছিলেন বহ সন্তানের জননী ৷ তার মৃত স্বামীর তরফে তার পাচ কিৎবা ছয়টি
সন্তান ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন আমাকে বিবাহ করতে সে: ণ্ৰুামার বাধা কোথায় ? তিনি
বললেন, হে আল্লাহর নবী ! আপনি আমার প্রিয়তম মানুষ না হওয়া বিষয়ক কোন বাধা নেই,
বরং আমি আপনাকে শ্রদ্ধাভয়ে দুরে রাখছি এজন্য যে, আমার ছোলমেয়েরা সকাল-সন্ধ্যা
আপনাকে জ্বালাতন করবে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, এছাড়া অন্য কোন বাধা নেই তো ?
সাওদা বললেন, না , আল্লাহর কসম, অন্য কোন বাধা নেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন, আল্লাহ
তোমাকে দয়া করুন ! সর্বোত্তম মহিলা হচ্ছে ওরা যারা ৷উটের পিঠে চড়ে ৷ কুরায়শের সতী
নারীগণ য বা শিশু সন্তানের প্রতি অধিক যত্ন শীল স্বামীর বন হ্ন ৷স্পাদের হিফাযতকারী ৷
আমি বলি, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পুর্বে সাওদার স্বামী ছিলেন সুহায়ল ইবন আমরের ভাই
সাকর৷ ন ইবন আমর ৷ তিনি ইসলাম গ্রহণকারী এবৎ আবিসিনিয়ায় হিজরতকারী ছিলেন ৷ যেমন
পুবেই বর্ণিত হয়েছে ৷ত তারপর তিনি মক্কায় ফিরে আসেন এবৎ মদীনায় হিজরতের পুর্বে তার
মৃত্যু হয় ৷ আল্লাহ তার প্রতি ৩প্রসন্ন হোন ৷
এ সকল বর্ণনা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, হযরত সাওদার পুর্বে হযরত আইশা (বা)-এর
বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৷ আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ ইব ন আকীল এমত পোষণ করেন ৷ যুহরী এ
মত পোষণ করেন বলে ইউনুস বর্ণনা করেছেন ৷ কিন্তু ইবন আবদুল বাবুর এ অভিমত গ্রহণ
করেছেন যে সাওদার (বা) বিবাহ হযরত আইশা (বা) এর বিবাহের পুর্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷
তিনি কা৩ ৷দ৷ ও আবু উবায়দ থেকে এ তথ্য উদ্ধৃত করেছেন ৷ যুহরীও এ মত গ্রহণ করেছেন
বলে আকীল বর্ণনা করেছেন ৷
আবু তালিবের মৃত্যুর পর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর কথা ইতোপুর্বে আলোচিত হয়েছে ৷ তিনি
রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর সাহায্যকারী ও রক্ষাকারী ছিলেন ৷ জন মাল দিয়ে এবং কথা ও কাজের
মাধ্যমে তিনি যথাসাধ্য রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে অনিষ্ট থেকে রক্ষা করতেন ৷ তিনি যখন মারা
পেলেন, তখন কুরায়শী গৌয়ারর৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর উপর জুলুম-নির্যা তলের দুঃসাহস দেখাল
এবৎ আবু তালিবের জীবদ্দশায় যা করার সাহস পেতে৷ না এখন তারা তা শুরু করল ৷ এ
প্রসৎগে বায়হাকী আবদুল্লাহ ইবন জাফর থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আবু
তালিবের ইনতিকালের পর কুরায়শের এক মুর্থ ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সামনে এসে তার
প্রতি ধুলি নিক্ষেপ করে ৷ ধুলি-ধুসরিত দেহে তিনি ঘরে ফিরে আসেন ৷ তার এক কন্যা তা দেখে
কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং কেদে কেদে ওই মাটি পরিষ্কার করেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) র্তাকে
সান্তুন৷ ৷দিয়ে বলছিলেন, স্নেহের কন্যা, কেদাে না, আল্লাহ্ই তে ৷মার পিতাকে রক্ষা করবেন ৷
তিনি এও বলছিলেন, আবৃ৩ তালিবের মৃঙু ভ্যুর পুর্বে আমি কষ্ট পাই এমন কোন কাজ কুরায়শ
করতে সাহস পেতো না ৷ এখন তারা তা শুরু করেছে ৷ যিয়াদ বুকাঈ মুহাম্মদ ইবন ইসহাক
থেকে উরওয়া সুত্রে মুরসাল রুপে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
বায়হাকী উরওয়া সুত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন, আবু তালিবের মৃত্যুর পুর্ব
পর্যন্ত তার ভয়ে কুরায়শরা ৬ ত ছিল ৷ হাকিম আইশা (বা) সুত্রে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
হাফিয আবুল ফারাজ ইবনুল জাওযী আপন সনদে ছা’লাবাহ ইবন সাঈর ও হাকীম ইবন হিযাম
থেকে বংনাি করেছেন, তারা বলেছেন আবু তালিব ও খাদীজা (বা) যখন ইনতিকাল করেন,
তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) একই সাথে এই দুইটি বিপদের সম্মুখীন হন ৷ তাদের উভয়ের মৃত্যুর
মধ্যে মাত্র পাচ দিনের ব্যবধান ছিল ৷ তখন তিনি অধিকাৎশ সময় ঘরেই থাকতেন ৷ বের হতেন
কম ৷ ইভোপুর্বে কুরায়শরা তার সাথে যে আচরণ করতে সাহস :পতাে না এখন তারা যে
আচরণ করতে লাগল ৷ এ সংবাদ আবু লাহাবের নিকট পৌছে ৷ সে বস্লুল্লাহ (সা ) এর নিকট
এসে বলে, হে মুহাম্মদ ৷ তুমি তোমার লক্ষে এগিয়ে যাও এবং আবু তালিবের জীবদ্দশায় তুমি যা
যা করতে এখনও তুমি তা করে যাও ৷ লড়াত দেবীর কসম, আমার মৃত্যু পর্যন্ত ক্ষতি সাধনের
উদ্দেশ্যে কেউ তোমার নিকট পৌছতে পারবে না ৷ ইবন পায়তালাহ্ ংহুন্ৰুমে এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্
(সা) কে পালি দিয়েছিল ৷ আবু লাহাব এগিয়ে গিয়ে তাকে শাস্তি দেয় ৷ ইবন পায়তালাহ্ তখন
চীৎকড়ার করে কুরায়শদেরকে ডেকে বলে, হে কুরায়শ সম্প্রদায় ! আবু উতবা অর্থাৎ আবু লাহাব
পিতৃধর্ম ত্যাগ করেছে, সে ধর্মান্তরিত হয়েছে ৷ কুরায়শরা তৃরিতগতিতে আবু লাহাবের বাড়িতে
উপস্থিত হয় ৷ সে বলে, আমি আমার পিতা আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করিনি ৷ তবে আমি
আমার ভাতিজাকে সকল অত্যাচার থেকে রক্ষা করব যাতে করে সে তার লক্ষে এগিয়ে যেতে
পারে ৷ তার বলল, তাহলে তো আপনি ভাল ও মহৎ কাজ করেছেন এবং আত্মীয়তার মর্যাদা
রক্ষা করেছেন ৷ ফলে রাসুলুল্লাহ্ (সা) কিছুদিন নিরাপদ রইলেন ৷ নিজের মত করে বিভিন্ন স্থানে
যাতায়াত করতে লাগলেন ৷ আবু লাহাবের ভয়ে কেউ তাকে কিছু বলতো না ৷ এভাবে চলছিল ৷
একদিন উকবা ইবন আবু মুআইত এবং আবু জাহ্ল আবু লাহাবের নিকট এসে উপস্থিত হল ৷
তারা বলল, আপনি আপনার ভাতিজাকে জিজ্ঞেস করুন, যে বলুক আপনার পিতার শেষ
ঠিকানা কোথায় ? আবু লাহাব বলল, হে মুহাম্মদ৷ আবদুল মুত্তালিবের শেষ ঠিকানা কোথায় ?
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তার ঠিকানা তার সম্প্রদায়ের সাথে ৷ আবু লাহাব ওদেরকে গিয়ে
বলল, আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি ৷ সে বলেছে যে , আমার পিতার শেষ ঠিকানা তার
সম্প্রদায়ের সাথে ৷ তারা দু’জনে বলল, সে তো বলে যে, আবদুল ঘুত্তালিবের শেষ ঠিকানা
জাহান্নামে ৷ এবার আবু লাহাব বলল হে ম্হাম্মদ৷ আবদুল মুত্তালিব কি জাহান্নামে যাবেন ?
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আবদুল মুত্তালিব যে ধর্মাবিশ্বাস নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ওই
ধর্মবিশ্বাস নিয়ে কারো মৃত্যু হলে সে তো জাহান্নামেই যাবে ৷ তখন অভিশও আবু লাহাব বলল,
আল্লাহর কসম, আমি চিরদিনের জন্যে তোমার শত্রু হয়ে থাকর ৷ কারণ , তুমি বিশ্বাস কর যে
আবদুল ঘুত্তালিব জাহান্নড়ামে যাবেন ৷ তখন থেকে আবু লাহাব ও সমগ্র কুরায়শ সম্প্রদায় বহুগুণ
কঠোর হয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর প্ৰতি শত্রুতায় লিপ্ত হয় ৷
ইবন ইসহাক বলেন, রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) বাড়ীতে অবস্থানকালে যারা তীর প্ৰতি জ্বলুম করত
তারা হল আবু লাহাব, হাকাম ইবন আবুল আস ইবন উমাইয়া, উকবা উবৃন আবু মৃআয়ত আদী
ইবন হানরা ইবনুল আসদ৷ হুযা ৷লী, এরা তার প্রতিবেশী ছিল ৷ হাকাম ইবন আবুল আস ব্যতীত
তাদের কেউই শেষ পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণ করেনি ৷ আমার নিকট বর্ণনা পৌছেছে যে, তাদের
কেউ কেউ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নামাযরত অবস্থায় বকরীর নাড়িভুড়ি তার প্রতি নিক্ষেপ করত ৷
কউ রান্নার সময় তার খাদ্যদ্রব্যের পাত্রে ময়লা আর্বজনা ঢেলে দিত ৷ শেষ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ্
(না) একটি পাথর সংগ্রহ করলেন ৷ সেটির আড়ালে থেকে তিনি নামায আদায় করতেন ৷ তারা
তার প্রতি কিছু নিক্ষেপ করলে সেটিকে লাঠির মাথায় ঝুলিয়ে তার দরজায় এসে র্দাড়াতেন এবং
বলতেনৃ হে বনু আবৃদ মানাফ ! প্রতিবেশীর প্রতি এ তোমাদের কেমন আচরণ ? তারপর তা
রাস্তায় ফেলে দিতেন ৷
আমি বলি ইণ্ডে তাপুর্বে যা আলোচিত হয়েছে বেশীর ভাগ দ্বার৷ প্রতীয়মান হয় যে তার
নামাযরত অবস্থায় তারা তার ঘাড়ের উপর উটের নাড়িভুড়ি (রথে দিত ৷ যেমন ইবন মাসউদ
(রা) বর্ণনা করেছেন ৷ তাতে আছে যে, ফাতিমা (বা) এগিয়ে এসে ওই নাড়িভুড়ি ফেলে
দিয়েছিলেন এবং ফাতিমা (রা) ওদেরকে গালমন্দ করেছিলেন ৷ রনুেলুল্লাহ্ (সা) ফিরে এসে
ওদের সাতজনের জন্যে বদ দৃ’অ৷ করেছিলেন ৷ ইতোপুর্বে তা আলোচিত হয়েছে ৷ অনুরুপ
আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আস বর্ণনা করেছেন সেই ঘটনা যে তারা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
গলায় ফাস লাগি গয়ে দিয়েছিল এবং তার গলা শক্তভাবে চেপে ধরেছিল ৷ তখন হযরত আবু বকর
(রা) তাদেরকে বাধা দিয়ে বলেছিলেন ৷ ওে ৷মর৷ কি এমন একজন লোককে খুন করবে যে বলে
আমার প্রতিপালক আল্লাহ একদিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) নামায আদায় করছিলেন ৷ এ সময়ে
অভিশপ্ত আবু জ হল তার ঘাড়ে পা চাপা দেয়ার ইচ্ছা করেছিল ৷ কিভু তার আর রাসুলুল্লাহ্
(সা) এর মাঝখানে তখন বাধা সৃষ্টি হয়েছিল ৷ এ জাতীয় দুঃখজনক ঘটনাগুলাে ঘটেছিল চাচা
আবু তা ৷লিবের ইনতিকালের পর ৷৩ তাই এগুলো এখানে উল্লেখ করা সমীচীন বটে ৷
দীনের দাওয়াত দেয়ার জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর তাইফ গমন
ইবন ইসহাক বলেন, আবু তালিবের ইনতিকালের পর কুরায়শর৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এব প্রতি
কঠিন অত্যাচার শুরু করে আবু তালিবের জীবদ্দশায় যা তারা করতে পারত না ৷ তখন
বাসুলুল্লাহ্ (সা) তাইফের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন ৷ তার আশা ছিল যে, তাইফের অধিবাসীরা
তাকে সাহায্য করবে এবং তার আপন সম্প্রদায়ের অত্যাচার থেকে তারা তাকে রক্ষা করবে ৷
তিনি এও আশা ৷করেছিলেন যে, তিনি তা ৷ল্লাহ্ব পক্ষ থেকে যা পেয়েছেন তারা তা গ্রহণ করবে ৷
তিনি একা ৷কী তাইফের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেন ৷ বর্ণনাকাবী ইয়াযীদ ইবন আবু যিয়াদ মুহাম্মদ
ইবন কা ৷আব কুরাযী থেকে বর্ণনা ৷করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তাইফে পৌছে ছাকীফ গোত্রের
কয়েক জন লোকের নিকট গেলেন ৷ তারা ছাকীফ গোত্রের নেতৃস্থানীয় ও সন্তুাম্ভ ব্যক্তি ছিল ৷
তারা ছিল তিন ভাই ৷ আবদাইয়ালীল, মাসউদ ও হাবীব ৷৩ তাদের পিতা হল আমব ইবন উমায়র
ইবন আওফ ইবন উকদা ইবন পায়র৷ ইবন আওফ ইবন ছাকীফ ৷ তাদের একজনের শ্রী ছিল
কুরায়শের বনু জুমাহ্ গোত্রের জনৈক মহিলা ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) তাদের নিকট বললেন ন্
তাদেরকে আল্লাহর পথে আমার আহ্বান জানালেন এবং নিজ সম্প্রদায়ে বিরোধী পক্ষদেব
মুকাবিলায় ইসলাম রক্ষায় তাকে সাহায্য করার আবেদন জানালেন ৷