থাকে ৷ অথচ যে আনসাররা তাকে বন্দী করেছিলেন, তারাই রাসুলুল্লাহকেত তার মুক্তিপণ না
নিয়ে ছেড়ে দেয়ার জন্যে অনুরোধ জানিয়েছিলেন ৷ কিন্তু রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেন, তার
ধার্যকৃত মুক্তিপণ হতে এক দিরহামও কম নিও না ৷ বদর যুদ্ধের বন্দীদের ঘুক্তিপণের পরিমাণ
সবার জন্যে এক রকম ছিল না, বরৎ৩ ব ম৷ ছিল ৷ সর্বনিম্ন পরিমাণ ছিল চারশ দিরহাম ৷
কারও থেকে নেয়া হয় চল্লিশ উকিয়া স্বর্ণ ৷ মুসা ইবন উকবা বলেন, আব্বাসের নিকট থেকে
যুক্তিপণ নেয়া হয় একশ’ উকিয়া স্বর্ণ ৷ কতিপয় বন্দী যুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হলে তাদেরকে
মুক্তিপণের পরিমাণ অনুযায়ী কাজে লাগান হয় ৷ এ সম্পর্কে ইমাম আহমদ (র) আলী ইবন
আসিম সুত্রে ইবন আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন যে, বদর যুদ্ধে আ ৷টককুত কিছু সংখ্যক বন্দীর
দেয়ার মত মুক্তিপণ ছিল না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)ত তাদেরকে ঘুক্তিপণের বিনিময়ে আনসার শিশুদের
লেখা ৷৷শিক্ষ ৷দেয়ার কাজে নিযুক্ত করেন ৷ তিনি বলেন, একদিন এক শিশু কাদতে র্কাদতে তার
মায়ের কাছে আসে ৷ যা তার র্কাদার কারণ জিজ্ঞেস করলে শিশুটি বলল, আমার শিক্ষক
আমাকে যেরেছে ৷ তখন মা বলল, যে দুরাচার বদরের খুনের প্রতিশোধ্ নিতে চাচ্ছে ৷ আর
কখনও তার কাছে শিখতে ৩যেও ন৷ ৷ এ হাদীছটি শুধু ইমাম আহমদ বর্ণনা করেছেন, তবে এটি
সুনানের শর্ত অনুযায়ী বর্ণিত ৷ পুর্বে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ৷
অনুচ্ছেদ
বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুসলমানদের মর্যাদা
সংক্রান্ত অধ্যায়ে ইমাম বুখারী বলেন ঘ্র আবদুল্লাহ্ ইবন মুহাম্মদ আনাস থেকে
বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, হারিছা ছিল একজন অল্প বয়সী যুবক ৷ বদর যুদ্ধে সে শহীদ হয়ে গেলে
তার মা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ৷ হারিছা আমার কত
আদরের সন্তান তা আপনি জা নেন ৷ সে যদি জান্নাতী হয় তা হলে আমি ধৈর্য ধারণ করবো এবং
এ জন্যে ছওয়ারের আশা পোষণ করবো ৷ আ র যদি ভিন্ন কিছু হয়, তবে আপনি তো দেখতেই
পাচ্ছেন, আমি কি করছি ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, থাম , পাগল হয়েছ নাকি ৷ জান্নাত কি মাত্র
একটি ? অনেক জান্নাত আছে ৷ সে তো জান্নাতুল ফিরদাউসে আছে ৷ এ হাদীছটি অন্য সুত্রে
ছড়াবিত, কাতাদ৷ ও আসাম থেকে বর্ণিত ৷ তাতে আছে “হারিছা ছিল যুদ্ধের ময়দানের
পর্য্যবক্ষণকরীি এবং “তোমার ছেলে জ ন্ন৷ ল ফিরদাউসের উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত আছে ৷
কথাটির মধ্যে বদরী সাহাবীদের মর্যাদার ব্যাপারে এক নিগৃঢ়৩ তত্ত্ব লুক্কায়িত আছে ৷ কেননা,
রিহাছা বণক্ষেত্রে বা যুদ্ধের সারিতে ছিলেন না ৷ বরং দুর থেকে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছিলেন ৷
তিনি হা ওয থেকে পানি পান করার সময় হঠাৎ এক তীর এসেত তার শরীরে বিদ্ধ হয় ৷ যুদ্ধের
সাথে এতটুকু সৎশ্রিষ্টতা ৷র জন্যে পুরস্কার স্বরুপ তাকে সেই ফিরদা উসে স্থান দেয়৷ হয়, যা সকল
জান্নাতের সেরা জান্নাত, সর্বোত্তম জান্নাত, যেখান থেকে নহর প্রবাহিত হয়ে চলে গিয়েছে
অন্যান্য জ ন্নাতে যে জান্নাত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার উম্মতকে বলেছেন, তোমরা যখন
আল্লাহ্র কাছে জান্নাতের প্রার্থনা কর, তখন জান্না ল ফিরদড়াউসের জন্যে প্রার্থনা করবে ৷
এমতাবস্থায় হারিছার মর্যাদা যদি এতো বড় হয়, তা হলে যারা তিনগুণ বেশী সৈন্য ও অস্তে
সজ্জিত শত্রুদের মুখোমুখি হয়ে লড়াই করেছিলেন, তাদের মর্যাদা যে কত উচু হতে পারে তা
সহজেই অনুমেয় ৷
এ ছাড়া ইমাম বৃখারী ও মুসলিম নিজ নিজ গ্রন্থে ইসহাক ইবন রাহ্ওয়ায়হ সুত্রে আলী
ইবন আবুতা তালিব (রা) বর্ণিত হাতির ইবন আবু বালতাআর ঘটনা উল্লেখ করেছেন ৷ হা৩ ৷তিব ৮ম
হিজরীতে মক্কা বিজয়ের বছর মক্কাবাসীদের নিকট এক গোপন চিঠি প্রেরণ করেছিলেন ৷
এতে হযরত উমর ক্রুদ্ধ হয়েত তাকে হত্যা করার জন্যে রাসুলুল্লাহ্র নিকট অনুমতি প্রার্থনা করেন
এবং বলেন, যে আল্লাহ, রাসুল ও ঘু মিনদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে ৷ তখন রাসুলুল্পাহ্
(সা) বলেছিলেন, সে তো বদর যুদ্ধে অং ষ্াকশগ্রহন্ কারী লোক ৷ তুমি কি জান ? আল্লাহ নিশ্চয়ই
বদরী সাহাবীদের প্রতি সদয় হয়ে বলে দিয়েছেন, তোমাদের যা ইচ্ছা কর, আমি তোমাদেরকে
ক্ষমা করে দিয়েছি ৷ ’ বুখারীর শব্দমালা হচ্ছে এরুপ সে কি বদরী সাহাবী নয় : আল্লাহ
নিশ্চয়ই বদরীদের প্রতি লক্ষ্য করেছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন, তোমরা তোমাদের যা ইচ্ছা
কর ৷ জান্নাত তোমাদের জন্যে অবধারিত ৎব৷ (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) আমি তোমাদেরকে ক্ষমা
করে দিয়েছি ৷ এ কথা শুনে উমরেব দু’ চোখ অশ্রু সজল হয়ে উঠল ৷ তিনি বললেন, আল্লাহ ও
তার রাসুলই সর্বাধিক জ্ঞাত ৩৷ ইমাম মুসলিম কুতায়বা সুত্রে জাবির থেকে বর্ণনা করেন যে
একদা হ দিব-এর এক গোলাম এসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট হাতিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ
করল এবং বলল, ইয়৷ রাসুলাল্পাহ্! হাতিব অবশ্যই জাহান্নামে যাবে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন,
তুমি মিথ্যা বলছো, সে জাহান্নামে যাবে না, কারণ সে বদর ও হুদায়বিয়ায় উপস্থিত ছিল ৷ ইমাম
আহমদ মুসলিমের শর্তে নিম্নোক্ত হাদীছটি উল্লেখ করেছেন : সুলায়মান ইবন দাউদের সুত্রে
জাবির থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা) বলেছেন : যে ব্যক্তি বদর কিৎবা
হুদায়বিয়ায় অংশগ্রহণ করেছে, সে কখনও জাহান্নামে প্রবেশ করবে না ৷ ইমাম আহমদ বলেন,
ইয়াযীদ আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত ৷ নবী করীম (সা) বলেন : আল্লাহ্ তাআল৷ বদরীদের
প্রতি সদয় দৃষ্টি রেখে ঘোষণা করেছেন :
“তোমরা যা ইচ্ছে কর, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিয়েছি ৷ এ হ দীছটি আবু দাউদও
তার কি৩ ৷বে ইয়াদীদ ইবন হারুন সুত্রে উল্লেখ করেছেন ৷ বায্যার ত ৷র মুসনাদ গ্রন্থে মুহাম্মদ
ইবন মারয়ুক সুত্রে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন৪ যারা
বদর যুদ্ধে অং শগ্রহণ করেছে আশা করি আল্লাহ্ চাহেন তো তারা কেউই দােযখে যাবে না ৷
হাদীছটি আবু হুরায়রা (বা) থেকে এই একটি সুত্রেই বর্ণিত হয়েছে ৷ লেখক বলেন, এ হাদীছটি
কেবল বায্যারই বর্ণনা করেছেন, অন্য কেউ বর্ণনা করেননি ৷ এবং এটা সহীহ্ হাদীছের শর্ত
অনুযায়ী বর্ণিত ৷ ইমাম বুখারী তার সহীহ্ গ্রন্থে বদর যুদ্ধে ফেরেশতাদের অংশগ্রহণ
অনুচ্ছেদে ইসহাক ইবন ইবরাহীমের সুত্রে মুআয ইবন রাফি আযরাকী থেকে বর্ণনা করেন
যে, তার পিতা রাফি একজন বদরী সাহাবী ৷ তিনি বলেন, একদা জিবরাঈল ফেরেশতা নবী
করীম (সা) এর নিকট এসে বললেন বদর যুদ্ধে অং শঃাহণকারীদেরকে আপনারা কিরুপ গণ্য
করেন স্পো তিনি বললেন, মুসলমানদের মধ্যেত তারা সর্বোত্তম শ্রেণী ৷ (রাবীর সন্দেহ) অথবা এরুপ
কোন বাক্য তিনি বললেন ৷ তখন জিবরাঈল বললেন, ফেরেশতাদের মধ্যে যারা বদর যুদ্ধে
এসেছিলেন, তাদের মর্যাদাও অনুরুপ ৷
অনুচ্ছেদ
মক্কা থেকে হযরত যয়নবের মদীনায় হিজরত
নবী দুহিতা যয়নব (রা) এর ব্যাপারে তার বন্দী স্বামী আবুল আস রাসুলুল্লাহ (সা) এর
নিকট যে ওয়াদ৷ করেছিলেন, সে অনুযায়ী বদর যুদ্ধের এক মাস পর যয়নব মক্কা থেকে
মদীনায় হিজরত করে আসেন ৷ এ প্রসংপে ইবন ইসহাক বলেন ং আবুল আস বন্দী দশা হতে
মুক্তি পাওয়ার পর মক্কায় প্রত ৷৷বর্তন করলে রাসুলুল্পাহ্ (সা) জনৈক আনসারীসহ যায়দ ইবন
হাবিছ কে মক্কায় পাঠিয়ে দেন ৷ তিনি তাদেরকে বলে দিলেন৪ তোমরা বাতনে ইয়াজিজ
নামক স্থানে গিয়ে অপেক্ষা করবে ৷ যয়নব যখন সেখানে এসে পৌছবে, তখন তোমরা তাকে
নিয়ে আমার কাছে চলে আসবে ৷ আদেশমত তারা বেরিয়ে পড়লেন ৷ এ ঘটনাটি ছিল বদর
যুদ্ধের এক মাস পরে বা তার কাছাকাছি সময়ে ৷ আবুল আস মক্কায় এসে যয়নবকে তার
পিতার কাছে চলে যেতে বললেন ৷ সুতরাং যয়নব যাওয়ার জন্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে লাগলেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : আবদুল্লাহ ইবন আবু বকর যয়নব বরাতে বর্ণনা করেছেন, যয়নব বলেন,
আমি মদীনায় চলে যাওয়ার জন্যে প্রস্তুতি তগ্রহণ করছিলাম ৷ এমন সময় উতবার কন্যা হিন্দ এসে
আমার সংগে সাক্ষাত করে বলল, হে মুহাম্মদ তনয়া শুনতে পেলাম, তুমি না ৷কি তে তামার পিতার
কাছে চলে যেতে চাচ্ছ ? আ ৷মি বললাম, এমন কো ন ইচ্ছে আমার সেই ৷ সে বলল, হে আমার
চাচড়াত বোন ৷ এমনটি করে৷ না ৷ আর যদি যেতেই চাও, তবে পথের খরচ এবংণ্ তোমার পিতার
কাছে পৌছতে প্রয়োজনীয় পাথেয় যা দরকড়ারত ৷আমার নিকট থেকে চেয়ে নিও ৷ অমি সব
দেব ৷ এ ব্যাপারে কোন লজ্জাবােধ করবে না ৷ পুরুষদের মাঝে যা চলছে তা যেন আমাদের
মহিলাদেরকে স্পর্শ না করে ৷ যয়নব বলেন, আল্লাহর কসম ৷ আমি জানি, যে যা বলছে তা সে
অবশ্যই করবে; কিন্তুত ৷সত্বেও আমি তার ব্যাপারে সতর্ক থাকলাম এব০ মদীনায় যাওয়ার
ইচ্ছার কথা তার নিকট অস্বীকার করলাম ৷ ইবন ইসহাক বলেন, মদীনায়৷ যাত্র ৷র জন্যে যয়নবের
প্রস্তুতি পর্ব সম্পন্ন হলেত তার স্বামীর ভাই কিনান৷ ইবন রবী’ একটি উট নিয়ে আসলো ৷ যয়নব
তাতে সওয়ার হলেন ৷ কিনান৷ ভীর-ধনুক সাথে নিয়ে দিনের বেলায় যয়নবকে সংগে করে
রওনা হলো ৷ কিনান৷ উটের রশি ধরে টেনে চলছিল আর যয়নব হাওদার মধ্যে অবস্থান
করছিলেন ৷ কুরায়শর৷ এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করল এবং তাকে ধরার জন্যে বেরিয়ে
পড়ল ৷ য়ু-তুয়৷ নামক স্থানে গিয়ে তারা তাকে ধরে ফেললো ৷ সর্বপ্রথম তার সামনে যেয়ে
র্দাড়ায় হাজ্জার ইবন আসওয়াদ ইবন মুত্তালিব ইবন আসাদ ইবন আবদুল উয্য৷ আল-ফিহ্রী ৷