অনুচ্ছেদ
মুহাজির এবং আনসারদের মধ্যে নবী (সা) এর ভ্রাতৃত্ব স্থাপন
আল্লাহ্ তাআলা বলেন :
(আর তাদের জন্যেও) মুহাজিরদের আগমনের পুর্বে যারা এ নগরীতে বসবাস করেছে এবং
ঈমান এসেছে এবং মুহাজিরদেরকে যা দেওয়া হয়েছে সে জন্যে তারা অন্তরে আকাম্ভক্ষা পোষণ
করে না আর তারা ওদেরকে নিজেদের উপর অগাধিকার দেয়—-’নিক্তেরা অভাবগ্রস্ত হলেও ৷
অন্তরের কার্পণ্য থেকে যাদেরকে মুক্ত রাখা হয়েছে, তারাই সফলকাম (৫৯ : ৯) ৷
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন :
৷ ব্লু
এবং যাদের সঙ্গে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছ, তোমরা তাদেরকে তাদের অংশ দান
করবে ৷ নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে দ্রষ্টা (৪ : ৩৩) ৷
ইমাম বুখারী (র) সাল্ৎ ইবন মুহাম্মদ সুত্রে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে,
(এবং প্রত্যেকের জন্য আমি মাওয়ালী করেছি) এ আয়াতে মাওয়ালী অর্থ
ওয়ারিছ বা উত্তরাধিকারী (এবং যাদের সঙ্গে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ
হয়েছ)-এ আয়াত প্রসঙ্গে তিনি বলেন : মুহাজিরপণ যখন মদীনায় আগমন করেন, তখন তারা
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছাড়াই আনসারদের ওয়ারিছ বলে গণ্য হতেন, নবী (না) তাদের মধ্যে যে
ভ্রাতৃতৃ বন্ধন স্থাপন করেছেন তার সুবাদে এ আয়াত নাযিল হলে
আনসারদেরকে উত্তরাধিকার দানের বিধান রর্হিত হয় ৷ তিনি বলেনঃ, পরে আয়াত নাযিল হয় :
এ আয়াতে তাদের অংশ বলে তাদেরকে
সাহায্য করা, রিফাদা অর্থাৎ আপ্যায়ন এবং কল্যাণ কামনা বুঝানো হয়েছে ৷ আর মীরাছেও
ওসীয়াতের বিধান রহিত হয়ে গেছে ৷ ইমাম আহমদ সুফিয়ান ও আসিম সুত্রে আনাস (বা)
থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (না) আমাদের গৃহে মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃতু স্থাপন করেন ৷
মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (না) তার মুহাজির এবং আনসার সাহাবীগণের
মধ্যে ভ্রাতৃতৃ বন্ধন স্থাপন করেন ৷ এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, রাসুলুল্লড়াহ্ (না) যা বলেননি,
এমন কথা তীর প্রতি আরোপ করা থেকে আল্লাহর পানাহ্ চাই ৷ আমরা জানতে পেয়েছি, তাতে
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন : আল্লাহর জন্য তোমরা দৃ’দু’ জন ভাই ভাই হয়ে যাও ৷ এরপর আলী
ইবন আবু তালিব (রা)-এর হাত ধরে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেন : এ হচ্ছে আমার ভাই ৷ অথচ
রাসুলুল্লাহ্ ছিলেন প্রেরিত রাসুলগণের সর্দার, ঘুত্তাকিগণের ইমাম এবং রাববুল আলামীনের
রাসুল ৷ তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়, যার কোন সমকক্ষ নেই ৷ রাসুল (সা) এবং আলী (রা) ইবন
আবু তালিব হয়ে গেলেন পরস্পরে ভাই ভাই ৷ হড়ামৃযা ইবন আবদুল মুত্তালিব ছিলেন অড়াসাদুল্লাহ্
ওয়া আসাদু রাসুলিহী তথা আল্লাহ ও র্তার রাসুলের সিংহ ৷ তিনি ছিলেন রাসুলের চাচা ৷ তিনি
এবং রাসুলের আযাদকৃত গোলাম যায়দ ইব হারিছা হলেন পরস্পর ভাই ভাই ৷ উহুদ যুদ্ধের দিন
তীর প্রতিই হযরত হড়ামৃযা ওসীয়াত করেন ৷ দু’ ডানা বিশিষ্ট জাফর ইবন আবু তালিব এবং
মুআয ইবন জাবাল হলেন পরস্পর ভাই ডাই ৷ ইবন হিশাম বলেন : তখন জাফর আবিসিনিয়ায়
অবস্থান করছিলেন ৷ ইবন ইসহাক বলেন :
এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ্ (সা) যে সব মুহাজির ও আনসার সাহাবীকে ভ্রাতৃতৃ বন্ধনে আবদ্ধ করে
দেন, র্তাদের নামের তালিকা নিম্নে দেয়া হলো :
মুহাজির আনসাব
হযরত আবু বকর (রা) হযরত খারিজা ইবন যায়দ (রা)
হযরত উমর (রা) হযরত ইতবান ইবন মালিক (রা)
হযরত আবু উবায়দা (রা) হযরত সাআদ ইবন মুআয (রা)
হযরত আবদুর রহমান ইবন আওফ হযরত সাআদ ইবন রাবী (রা)
হযরত যুবায়র ইবন আওয়াম (রা) হযরত সালামা ইবন সালামা ইবন ওকশ মতাম্ভরে
হযরত আবদৃল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রা)
হযরত উছমান ইব আফফান হযরত আওস ইবন ছাবিত ইবন মৃনযির নাজ্জারী (রা)
হযরত তালহা ইবন উবায়দুল্লাহ্ হযরত কাআব ইবন মালিক (বা)
হযরত সাঈদ ইবন যায়দ (রা) হযরত উবাই ইবন কাআব (রা)
হযরত মুসআব ইবন উমায়ব (বা) হযরত আবু অইিউব (রা)
হযরত আবু হুযায়ফা ইবন উতবা (রা) হযরত আব্বাদ ইবন বিশর (রা)
হযরত আমার (রা) হযরত হুযায়ফা ইবন ইয়ামান অড়াবাসী আবদুল
আশহড়ালের মিত্র, মতান্তরে ছাবিত ইবন কায়স ইবন
শাম্মড়াস
হযরত মুনযির ইবন আমর-মৃত্যুকে আলিঙ্গনকারী
হযরত আবু যর বরীর ইবন জ্বাদো (রা) উয়ায়স ইবন সাইদা
হাতির ইবন আবু বালতাআ
সুহাজির আনসার
আরো যীদেরকে তিনি ভ্রাতৃতৃ বন্ধনে আবদ্ধ
করেছিলেন, র্তারা হচ্ছেন :
তার আসল নাম ছিল
উয়ায়মির ইবন ছালাবা
হযরত বিলাল (রা) আবু রুয়ায়হা (বা)
(মতান্তরে উবায়দা ইবন হারিছ ইবন ঘুত্তালিব)
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার সাহাবীদের মধ্য থেকে যাদের মধ্যে ভ্রাতৃৎ বন্ধন স্থাপন করেন,
তাদের মধ্যে এ নামগুলো আমাদের নিকট উল্লেখ করা হয়েছে ৷
তিনি যা কিছু উল্লেখ করেছেন, তার কোন কোন বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে ৷ নবী
(সা) এবং আলী (রা)-এর ভ্রাতৃতৃ কোন কোন আলিম অস্বীকার করেন এবং তারা এর
বিশুদ্ধতাই স্বীকার করেন না ৷ এ ব্যাপারে তাদের যুক্তি এই যে, এই ভ্রাভৃত্বের বিধান এজন্য
দেয়া হয়েছে যাতে একজন দ্বারা আরেকজন আর্থিক সুবিধা লাভ করতে পারেন এবং একে
অন্যের মধ্যে হৃদ্যতাপুর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হতে পারে ৷ এ অর্থে তাদের কারো সঙ্গে নবী (না)-এর
ভ্রাতৃতু স্থাপন করার কোন অর্থই হয় না ৷ তেমনি এক মুহাজিরের সঙ্গে অপর মুহাজিরের ভ্রাতৃতৃ
স্থাপনেরও কোন অর্থ হয় না ৷ যেমন হামযা (রা) ও যায়দ ইবন হারিছার মধ্যে ভ্রাতৃত্বের কথা
তিনি উল্লেখ করেছেন ৷ তবে হীা, নবী (সা) হযরত আলী (রা)-এর আর্থিক প্রয়োজন অন্য
কারো উপর ন্যস্ত করেননি ৷ ইতোপুর্বে মুজাহিদ প্রমুখের উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
হযরত আলী (রা)-এর পিতা আবু তালিবের জীবদ্দশায় শৈশবকাল থেকেই নবী করীম (না)
হযরত আলী (রা)-এর ব্যয়ভার বহন করে আসছিলেন ৷ অনুরুপভাবে হযরত হামযা তার
আযাদকৃত গোলাম যায়দ ইবন হারিছার দেখাশোনা করতেন ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ এই
বিবেচনাতেই হয়তো তাদের মধ্যে ভ্রাতৃতু স্থাপন করে দেয়া হয়েছিল ৷
অনুরুপভাবে হযরত জাফর ও হযরত মুআয ইবন জাবাল-এর যে কথা তিনি উল্লেখ
করেছেন, তা-ও সন্দেহাতীত নয় ৷ ইবন হিশাম এদিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন : হযরত জাফর
ইবন আবু তালিব সপ্তম হিজরীর গোড়ার দিকে খায়বর বিজয়কালে হাবশা থেকে (মদীনায়)
আগমন করেন ৷ এ বিষয়ে পরে আলোচনা করা হবে ৷ সুতরাং নবী (না)-এর মদীনা আগমনের
শুরুতেই তীর এবং মুআয ইবন জানান-এর মধ্যে ভ্রাতৃতৃ স্থাপন করা কিরুপে হতে পারে ? তবে
হীড়া, একথা বলা যেতে পারে যে, নবী (সা) তাদের মধ্যে ভ্রাতৃতু স্থাপনের ব্যবস্থা তখনই
করেছিলেন, যখন জাফর (মদীনায়) আগমন করেন ৷ আবু উবায়দা এবং সাআদ ইবন
মুআয-এর মধ্যে ভ্রাতৃতৃ স্থাপনের যে কথা তিনি উল্লেখ করছেন, তা ইমাম আহমদের বর্ণনার
পরিপন্থী ৷ তিনি আবদুস সামাদ সুত্রে আনাস ইবন মালিক থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্
(সা) আবু উবায়দা ইবন জাররাহ এবং আবু তালহার মধ্যে ভ্রাতৃতু স্থাপন করেন ৷ অনুরুপভাবে
ইমাম মুসলিম এককভাবে হাজ্জাজ ইবন শাইর সুত্রে বর্ণনা করেছেন ৷ আবু উবায়দা এবং সাআদ
ইবন মুআয (রা)-এর মধ্যে ভ্রাতৃতৃ বিষয়ে ইবন ইসহাক যা কিছু উল্লেখ করেছেন, তা থেকে
এটাই ৰিশুদ্ধতর ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
নবী (সা) তার সাহাবীদের মধ্যে কিভাবে ভ্রাতৃতৃ স্থাপন করেন, যে বিষয়ে উল্লেখ করতে
গিয়ে ইমাম বুখারী আবদুর রহমান ইবন আওফ-এর উক্তি উদ্ধৃত করেন : আমরা মদীনায়
আগমন করলে নবী (সা) আমার এবং সাআদ ইবন রাবী-এর মধ্যে ভ্রাতৃতৃ স্থাপন করেন ৷ আর
আবু জুহায়ফা বলেন : নবী (সা) সালমান ফারসী এবং আবু দারদার মধ্যে ভ্রাতৃতৃ স্থাপন
করেন ৷ মুহাম্মদ ইবন ইউসুফ সুত্রে আনড়াস (বা) থেকে বর্ণনা করে তিনি বলেন : আবদুর
রহমান ইবন আওফ (মদীনায়) আগমন করলে নবী (সা) তার এবং সাআদ ইবন রাবী
আনসারীর মধ্যে ভ্রাতৃতৃ বন্ধন স্থাপন করেন ৷ তখন হযরত সাআদ তার সম্পদ এবং ত্রীদেরকে
সমভাবে বন্টন করে নেয়ার জন্য আবদুর রহমান ইবন আওফের নিকট প্রস্তাব পেশ করলে
আবদুর রহমান বলেন : আপনার সম্পদ ও পরিবারে আল্লাহ বরকত দান করুন, আপনি বরং
আমাকে বাজারের পথ দেখিয়ে দিন ৷ ফলে তিনি ঘি এবং পনিরের ব্যবসা দ্বারা কিছু লাভ
করেন ৷ কিছুদিন পর তার গায়ে হলুদের চিহ্ন দেখে নবী (সা) জিজ্ঞেস করেন, আবদুর রহমান,
এটা কি : তিনি বললেন : ইয়া রাসুলাল্লাহ্! এক আনসারী মহিলাকে আমি বিবাহ করেছি ৷ রাসুল
(সা) সিজ্ঞেস করলেন : কী পরিমাণ মহর দিয়ে তাকে বিবাহ করেছ ? তিনি বলেন, এক খেজুর
বীচির পরিমাণ স্বর্ণ ৷ নবী (সা) র্তাকে বললেন : একটি বকরী দ্বারা হলেও তুমি ওলীমার
আয়োজন করবে ৷ এই সুত্রে ইমাম বুখারী হাদীছটি এককভাবে বর্ণনা করেন ৷ ইমাম বুখারী
অন্যত্রও হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷ আর ইমাম মুসলিমও হুমায়দ সুত্রে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷
আর ইমাম আহমদ আফ্ফান সুত্রে আনাস (বা) থেকে বর্ণনা করেন : আবদুর রহমান ইবন
আওফ মদীনায় আগমন করলে নবী (সা) তার এবং সাআদ ইবন রাবী আনসারীর মধ্যে ভ্রাতৃতৃ
স্থাপন করেন ৷ তখন হযরত সাআদ (রা) হযরত আবদুর রহমান ইবন আওফকে বললেন, হে
ভ্রাতা আমি মদীনাবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ৷ আমার সম্পদ থেকে আপনি অর্ধেক
গ্রহণ করুন ৷ আমার দু’জন শ্রী রয়েছে, এদের মধ্যে যাকে আপনার পসন্দ হয়, আমি তাকে
তালাক দেবাে, আপনি তাকে শ্রী হিসাবে গ্রহণ করতে পারেন ৷ আবদুর রহমান (রা) বললেন :
আপনার পরিবার-পরিজন এবং সহড়ায়-সম্পদে আল্লাহ বরকত দান করুন, আপনারা বরং
আমাকে বাজারের পথ দেখিয়ে দিন ৷ লোকেরা তাকে বাজারের পথ দেখিয়ে দিলে তিনি বাজারে
গিয়ে ক্রয়-বিক্রয় করেন এবং লাভের অংশ থেকে কিছু ঘি ও পনির নিয়ে আসেন ৷ এরপর
আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি কিছুকাল অবস্থান করেন ৷ এরপর (একদিন) তিনি আগমন করেন, আর
তার শরীরে রয়েছে জাফরান বঙ্গের চিহ্ন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, এটা কি : তিনি বললেন :
ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ৷ আমি এক মহিলাকে বিবাহ করেছি ৷ রাসুল (সা) বললেন : তাকে কত মহরানা
দিয়েছ ? তিনি বললেন : এক খেজুর বীচি পরিমাণ স্বর্ণ ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন :
একটা বকরী দ্বারা হলেও ওলীমার আয়োজন কর ৷ আবদুর রহমান বলেন আমি নিজেকে
(এমন অবস্থায়) দেখতে পাই যে, আমি একটি পাথর হাতে নিলে তা-ও স্বর্ণ-রৌণ্যে পরিণত
হবে বলে আশা করি ৷ ইমাম বুখাবী আবদুর রহমান ইবন আওফ থেকে হাদীছটি মুআল্লাকরুপে
বর্ণনা করেছেন, যা গরীব পর্যায়ের ৷ কারণ, কেবল আনাস সুত্রেই হাদীছটি বর্ণিত ৷ এটাও সম্ভব
যে, তিনি হাদীছটি আবদুর রহমান ইবন আওফ থেকে শুনেছেন ৷
ইমাম আহমদ ইয়ড়াসীদ সুত্রে আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করে বলেন মুহাজিররা বললেন,
ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমরা যে সম্প্রদায়ের নিকট আগমন করেছি, তাদের মধ্যে স্বল্প সম্পদ নিয়ে
অধিক সহমর্মিতা জ্ঞাপন করতে এবং বেশী সম্পদ থেকে বেশী ব্যয় করতে (আনসারদের
চাইতে অধিকতর তৎপর অন্য কোন সম্প্রদায়কে) আমরা দেখিনি ৷ তারা তো আমাদেরকে
জীবিকা সম্পর্কে চিন্তামুক্ত করে দিয়েছে এবং উৎপাদনে আমাদেরকে অংশীদার করে নিয়েছে ৷
এমনকি শেষ পর্যন্ত আমাদের আশংকা আগে যে, তারা বুঝি সমস্ত ছওয়াবই নিয়ে যাবে ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, না, যতদিন তোমরা তাদের শুকরিয়া আদায় করবে এবং তাদের জন্য
আল্লাহর নিকট দুআ করতে থাকবে, ততদিন তা হবে না ৷ বৃখারী–মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী
হাদীছটি (মুহাদ্দিছদের পরিভাষায়) সৃলাসী হাদীছ ৷ সিহড়াহ্ সিত্তাহ্র সংকলকদের মধ্যে অন্য
কেউ এই সুত্রে হাদীছটি বর্ণনা করেননি ৷ বিশুদ্ধ হাদীছেব মধ্যে এটা অন্য রাবী থেকেও বর্ণিত
হয়েছে ৷ ইমাম বুখারী হাকাম ইবন নাফি সুত্রে আবু হুরায়রা (রা ) থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
বলেছেন, আনসাররা বললেন যে, (হে আল্লাহর রাসুল ৷) আমাদের এবং (ঘুহাজির) ভাইদের
মধ্যে খেজুর বাগান বণ্টন করে দিন ৷ রাসুল (সা) বললেন, না ৷ তখন আনসারগণ বললেন :
তবে তোমরা আমাদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ পরিশ্রম করবে আর আমরা তোমাদেরকে ফলনে
অংশীদার করে নেবাে? মুহাজিরগণ বললেন, ঠিক আছে, আমরা মেনে নিলাম ৷
ইমাম বুখারী এককভাবে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷ আবদুর রহমান ইবন যায়দ ইবন
আসলাম বলেন, আনসারগণকে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) লক্ষ্য করে বলেন : তোমাদের মুহাজির
ভাইয়েরা তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি রেখে তোমাদের কাছে এসেছে ৷ তখন আনসারগণ
বললেন : আমাদের সম্পদ আমাদের উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বণ্টন করে দিন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্
(সা) বললেন : এ ছাড়া অন্য কোন পথ নেই? আনসারগণ বললেন : ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! তা কী
হতে পারে : তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : তারা এমন এক সম্প্রদায়, যারা কায়িক শ্রম
করতে জানে না; তোমাদেরকে তাদের কাজ করে দিতে হবে এবং ফলন ভাগ করে শেষে ৷ র্তারা
বললেন, হ্যা, তাই হবে ৷ আনসারদের ফযীলত ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে যে সব হাদীছ বর্ণিত
হয়েছে : ৷ ’)
-এ আঘাতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে আমরা সেসব আলোচনা করেছি ৷
অনুচ্ছেদঃ আবু উমামা আসআদ ইবন যুরারার ইনতিকাল
আসআদ ইবন যুরারা ইবন আদাস ইবন উবায়দ ইবন ছালাবা ইবন গানাম ইবন মালিক
ইবন নাজ্জার আকাবাব বায়আতের রাত্রে বনু নাজ্জার কাওমের ১২ জন নকীবের অন্যতম ৷
আকাবাব তিনটি বায়আতেই তিনি উপস্থিত ছিলেন ৷ আকাবাব দ্বিতীয় বায়আতের রজনীতে এক
উক্তি মতে তিনিই সর্বপ্রথম রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর হাতে বায়আত করেন, আর তখন তিনি ছিলেন