সালামা (রা) বলেন, তখন আমরা চিৎকার দিয়ে উঠলড়াম এবং মসজিদের লোকেরাও চিৎকার
দিয়ে উঠল ফলে গোটা মদীনা একটি মাত্র চিৎকার ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠল ৷ বিলাল (বা)
ফজরের আযান দিলেন ৷ আযানের মাঝে রাসুলুল্লাহ (সা)-এর কথা
ঢো) উল্লেখ করার সময় তিনি কেদে ফেললেন এবং সজােরে চিৎকার দিয়ে আমাদের দুঃখ
বেদনা আরো বাড়িয়ে দিলেন ৷ লোকেরা তার কবরের কাছে যাওয়ার জন্য য়থাসাধ্য চেষ্টা
করতে লাগলে দরযা বন্ধ করে দেয়া হল ৷ হায় সে দিনকার মহা ঘুসীবত ! এর পরবর্তী সময়
আমরা যে কোন বিপদের সম্মুখীন হলে আমরা নবী করীম (না)-কে হারানাের ব্যথ্যা স্মরণ
করে আমাদের যে মুসীবতের লঘুতর বিবেচনা করতাম ৷
ইমাম আহমদ (র) বলেন, মুহাম্মদ ইবন ইসহাক (র) আইশা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
রাসুলুল্লাহ (সা) সোমবারে ইনতিকাল করেন এবং বুধবারের পুর্ববর্তী রাতে র্তাকে দাফন করা
হয় ৷ একাধিক হাদীস সুত্রে এর অনুরুপ বিবরণ পুর্ববর্তী আলোচনায় উদ্ধৃত হয়েছে ৷ প্রাচীন
যুগের ও পরবর্তী যুগের মনীষীবর্গ বিশেষত সুলায়মান ইবন তুরখান আত্-তড়ায়মী, জাফর
ইবন মুহাম্মদ আসৃ-সাদিক, ইবন ইস্হাক, মুসা ইবন উক্বা প্রমুখ (র)-এর অনুকুলে তাদের
সুস্পষ্ঠ মত ব্যক্ত করেছেন ৷
তবে ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান (র) রিওয়ায়াত করেছেন আবদুল হামীদ (র) আল্-আওয়াঈ
(র) সুত্রে ৷ তিনি বলেন, সোমবার দুপুর হওয়ার আগে রাসুলুল্লাহ (সা) ইনতিকাল করেন এবং
মংণলবার সমাহিত হন ৷ ইমাম আহমদ (র) আবদুর রায্যাক (র) ইবন জুরায়জ (র) সুত্রে
অনুরুপ রিওয়ায়াত করেছেন ৷ তিনি বলেন, আমি তথ্য প্রাপ্ত হয়েছি যে, রাসুলুল্লাহ (সা)
সোমবার প্রথম প্রহরে ইনতিকাল করেন এবং পরের দিন প্রথম প্রহরে সমাহিত হন ৷ ইয়াকুব
(র) বলেছেন, সুফিয়ান (র) আবু জাফর (র) সুত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা)
সোমবারে ইনতিকাল করলেন ৷ পরে সে দিন ও সে রাত এবং মংগলবার দিনের শেষ ভাগ
পর্যন্ত সেভাবেই থাকলেন ৷ এটি একটি অখ্যাত অভিমত ৷ প্রসিদ্ধ অভিমত হল অনেক মনীষী
সুত্রে যা আমরা উদ্ধৃত করেছি নবী করীম (সা) সোমবারে ইনতিকাল করেন এবং বুধবারের
পুর্ববর্তী রাতে র্তাকে দাফন করা হয় ৷
অন্যান্য স্বল্প প্রসিদ্ধ ও বিরল অভিমতসমুহ : ইয়াকুব ইবন সুফিয়ড়ান (র) রিওয়ায়াত :
আবদুল হামীদ ইবন বাক্কার (র) মাক্হুল (র) সুত্রে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) জন্মগ্রহণ
করেন সোমবারে, তার কাছে ওহী পাঠানো হয় সোমবারে, তিনি হিজরত করেন সোমবারে
এবং ইনতিকালও করেন সোমবারে, সাড়ে বাষট্টি বছর বয়সে ৷ তিন দি ন য়াব৩ ওাধ্যে দাফন
করা হয়নি ৷ লোকজন দলে দলে তার কাছে প্রবেশ করে সালাত (জানায়া) আদায় করছিলেন ৷
তারা সারিবদ্ধও হচ্ছিলেন না এবং কেউ তাদের ইমামতিও করছিলেন না ৷ এ বর্ণনায় তিন
দিন দাফন না করা অবস্থায় রইলেন’ অংশটুকু অতিশয় বিরল ৷ যথার্থ তথ্যমতে তিনি সোমবার
দিনের অবগ্রিষ্টিড়াৎশসহ মংগলবড়ার পুর্ণ দিবস অবস্থিত থাকার পরে বুধবারের (পুর্ববর্তী) রাতে
সমাহিত হন ৷ পুর্ববর্তী বিবরণ দ্রষ্টব্য ৷ আল্লাহই সমধিক অবগত ৷
আর এর পাল্টা বিবরণ রয়েছে, সড়ায়ফ (র) হিশামের পিতা সুত্রের রিওয়ায়াতে ৷ তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) ইনতিকাল করলেন সোমবারে র্তাকে গোসল দেয়া হল সোমবারে এবং
দাফন করা হল মংগলবারের পুর্ববর্তী রাতে ৷ সায়ফ (র) বলেন, এক দু’বার ইয়াহ্য়া ইবন
সাঈদ (র)-ও এ পুর্ণ বিবরণটি আইশা (র) হতেও বর্ণনা করেছেন ৷ এ বর্ণনাও অতিশয় বিরল
প্রকৃতির ৷ ওয়াকিদী (র) বলেন, আবদুল্লাহ ইবন জাফর (র) জাবির ইবন আবদুল্লাহ (বা)
হতে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, নবী করীম (না)-এর কবরের উপরে উত্তমরুপে পানি ছিটিয়ে দেয়া
হয়েছিল ৷ পানি ছিটিয়ে দিয়েছিলেন বিলাল ইবন আবু রাবাহ (বা) একটি মশক দিয়ে ৷ তিনি
নবী করীম (সা) এর মাথার দিক হতে তার ডান পাশ দিয়ে শুরু করে তার পদযুগল পর্যন্ত
পৌছলেন ৷ তারপর পানি দেয়ালের দিকে ছুড়ে মারলেন; দেয়ালের দিক হতে ঘুরে আসতে
সমর্থ হলেন না ৷ সাঈদ ইবন মানসুর (র) বলেছেন, দারাওয়ারদী (র) উম্মু সালামা (রা) থেকে
বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) ইনতিকাল করলেন সােমবারে এবং সমাহিত
হলেন পরদিন মংগলবারে
ইবন খুযায়মা (র) বলেছেন, মুসলিম ইবন হড়াম্মাদ (র) ইবন আব্বাস (বা) সুত্রে বর্ণিত ৷
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) ইনতিকাল করেন সােমবারে এবং র্তাকে সমহিত করা হয়
মংগলবারে ৷ ওয়ড়াকিদী (র) বলেছেন, উবাই ইব ন আয়্যাশ ইবন সাহল ইবন সাঈদ (র) তার
পিতা থেকে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) ইনতিকড়াল করলেন সোমবারে রাবীউল আউয়ালের
বার তারিখের রাত অতিক্রান্ত হলে এবং সমাহিত হলেন মংগলবার দিনের বেলা ৷ আবদুল্লাহ
ইবন মুহাম্মদ ইবন আৰিদ্-দুনিয়া (র) বলেন, আবু মুহাম্মদ হাসান ইবন ইসমাঈল নহরভীয়ী
(র) আবদুল্লাহ ইবন আবু আওফা (রা) সুত্রে বলেন, রাসুলুল্লাহ (না)-এর ওফাত হল
সােমবারে এবং ৎগলবারেই তিনি সমাহিত হয়েছিলেন ৷ এবং অনুরুপ মত প্রকাশ করেছেন
সাঈদ ইবনৃল মুসায়ব্রড়াব, আবু সালামা ইবন আবদুর রহমান ও আবু জাফর আলু বাকির (র)
প্রমুখ ৷
নবী করীম (সা) এর রওযা পাভৈকর বিবরণ
বর্ণনা পরম্পরা সুত্রে সন্দেহাততী ৩াবে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী কবীম (সা) অ ইং ৷৷(রা) এর
জন্য বিশিষ্ট হুজরা য় সমাহিত হন ৷ অর্থাৎ মসজিদে নবাবীর পুর্ব প্ৰাম্ভস্থিত হলো র সম্মুখ ভাগের
পশ্চিম কো ড়াণে ৷ পরে এবইিড়া স্থানে সমাহিত হন আবু বকর (রা) এবংত ৷রও পরে উমর (রা) ৷ এ
প্ৰসংগে বুখারী (র) বলেছেন, মুহাম্মদ ইবন যুকাতিল (র) সুফিয়া ন আ ত্ তাম্মা র (র) থেকে
বর্ণিত ৷ তিনি (স্বীয় শাগিরদ) আবু বকর ইবন আয়্যাশ (র)-কে বিবরণ দিয়েছেন যে, তিনি নবী
করীম (না)-এর কবরটি উটের পিঠের আকৃতির দেখেছেন ৷ এ বর্ণনা একাকী বুখরীি (র)-এর ৷
আবু দাউদ (র) বলেছেন, আহমদ ইবন সালিহ (র) কাসিম (র) থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, আমি
আইশা (রা)-এর নিকটে গিয়ে র্তাকে বললাম ৷ আম্মাজান ! রাসুলুল্লাহ (সা) এবং তীর সঙ্গীদ্বয়ের
কবরওলি আমার জন্য একটু খুলে দিন না! তখন তিনি আমার সামনে তিনটি কবর উন্মুক্ত করলেন,
যেগুলি উচুও ছিল না এবং মাটির সাথে সম্পুর্ণ মিশেও ছিল না; যমীন ছিল লাল বর্ণের (এভাবে)
১ ৷ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস্যল্লাম
প ২ ৷ আবুবকর (রা) পু
৩ ৷ উমর (রা)
এ রিওয়ায়াত একাকী আবু দাউদ (র) বর্ণিত ৷ হাকিম ও বায়হাকী (র) হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন, ইবন আবু ফুদায়ক (র) সুত্রে কাসিম (র) থেকে ৷ তিনি বলেন, আমি প্রত্যক্ষ
করলাম, নবী করীম (সা) সর্বগ্রোবর্তী, আবু বকর (রা) এর মাথা নবী করীম (না)-এর র্কাধ
বরাবর এবং উমর (রা) এর মাথা নবী করীম (না)-এর পা বরাবর ৷ বায়হাকী (র) বলেছেন,
এ রিওয়ায়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, তাদের কবরগুলি সমতল ৷ কেননা, সমতল ক্ষেত্র
ব্যতীত কং কর স্থির থাকে না ৷
(মন্তব্য ৪) বায়হাকী (র)-এর এ বক্তব্য বিস্ময়কর ৷ কেননা, রিওয়ায়াতে কংকর-এর
উল্লেখ একেবারেই নেই ৷ আর তা থাকার কথা ধরে নিলেও এমন হতে পারে যে, কবর উটের
পিঠাকৃতির হবে এবং তার উপরে কাদামাটি ইত্যাদির সাহায্যে কং কর বসানো হয়ে থাকবে ৷
ওয়া ৷কিদী (র) তো দারাওয়ড়ারদী (র) সুত্রে (জা ফরের পিতা) মুহাম্মদ (র) থেকে রিওয়ায়াত
করেছেন ৷ তিনি বলেন, নবী করীম (সা) এর কবর সমতল বিশিষ্ট করা হয়েছে ৷
বুখারী (র) বলেছেন, ফারওয়ড়া ইবন আবুল মাগৃরা (র) উরওয়ড়া (র) এর পিতা১ (যুরায়র)
থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, খলীফা ওলীদ ইবন আবদুল মালিকের যুগে তাদের উপরে
১ সম্ভবত হিশামের পিতা হতে হবে ৷ ণ্ষ্অনুবাদক