আর র্যারা বলেন যে, এই মসজিদ হল যে মসজিদ, যার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে তাক্ওয়ার
উপর ৷ তাদের মধ্যে আছে আবদুর রাযযাক উরওয়া ইবন যুবায়র থেকে যা বর্ণিত হয়েছে ৷
আলী ইবন আবু তালহা ইবন আব্বাস সুত্রে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷ এছাড়া শাবী, হাসান
বসরী, কাতাদা, সাঈদ ইবন জুবায়র, আতিয়া আল-আওফী এবং আবদুর রহমান ইবন যায়দ
ইবন আসলাম প্রমুখ সুত্রেও হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে ৷ নবী করীম (সা) পরবভীকািলে মসজিদটি
দেখতে পেতেন এবং সেখানে নামায আদায় করতেন এবং প্রত্যেক শনিবার সেখানে যেতেন ৷
কখনো পায়ে হেটে , আবার কখনো সওয়ার হয়ে ৷ হাদীছ শরীফে আছে :
“বইিবৃনর মসজিদে সালাত আদায় করা উমরার সমতুল্য ৷ হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত
হয়েছে :
জিবরাঈল (আ) মসজিদে কইবনর কিবলার দিক নির্ণয়ের জন্য নবী (না)-কে ইঙ্গিত
করেন ৷ আর এটা ছিল ইসলামের ইতিহাসে মদীনায় নির্মিত প্রথম মসজিদ ৷ বরং ইসলামী
মিল্লাতে সাধারণ মানুষের জন্য নির্মিত প্রথম মসজিদ ছিল এটি ৷ আবু বকর (রা ) তার বাড়ীর
দরজায় যে মসজিদ নির্মাণ করান, সেখানে তিনি ইবাদত করতেন এবং নামায আদায় করতেন,
তা ছিল একান্তই তার নিজের, তা সাধারণের জন্য ছিল না ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর আগমনের সুসংবাদ পর্যায়ে হযরত সালমান ফারসীর ইসলামগ্রহণ
সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ৷ তা এই যে, সালমান ফারসী যখন রাসুলের আগমন সম্পর্কে
শুনতে পেলেন মদীনায়, তখন তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর নিকট গমনকালে তার সঙ্গে কিছু
জিনিস হাতে নিয়ে যান এবং তা রাসুলের সম্মুখে রাখলেন ৷ আর রাসুলুল্লাহ্ (না) তখন কুবড়ায়
অবস্থান করছিলেন ৷ হযরত সালমান ফারসী এটা সাদাকা বললে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) হাত গুটিয়ে
নেন ৷ তিনি নিজে খেলেন না, কিন্তু তার নির্দেশে তার সাহাবীরা তা থেকে কিছু আহার
করলেন ৷ পুনরায় তিনি এলেন এবং তার সঙ্গে কিছু একটা জিনিস ছিল ৷ এবার তিনি বললেন,
এটা হাদিয়া ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তা থেকে কিছু আহার করলেন এবং সাহাবীগণকে নির্দেশ
দিলে তারাও তা থেকে আহার করলেন ৷ দীর্ঘ হাদীছটি ইতিপুর্বে উল্লিখিত হয়েছে ৷
আবদুল্লাহ ইবন সালাম (রা)-এর ইসলামগ্রহণ
ইমাম আহমদ (র) মুহাম্মদ ইবন জাফর সুত্রে আবদুল্লাহ্ ইবন সালাম থেকে বর্ণনা করেন :
রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় আগমন করলে লোকেরা দ্রুত তার দিকে ছুটে আসে ৷ যারা তার দিকে
ছুটে আসে, তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম ৷ আমি তার চেহারা দেখেই চিনতে পারি যে, এটা
কোন মিথ্যাবাদীর চেহারা নয় ৷ আমি সর্বপ্রথম তাকে যে কথাটি বলতে শুনি , তা এই :
“সালামের বিস্তার ঘটাও , লোকজনকে আখ্যায়িত কর, রাত্রিকালে নামায আদায় কর যখন
লোকেরা ঘৃমিয়ে থাকে, আর এর পরিণামে শাস্তিতে জান্নড়াতে প্রবেশ করবে ৷” তিরমিযী ও ইবন
মাজাহ্ আওফ আল-আরাবী সুত্রে যুরারা ইবন আবু আওফা থােক হাদীছঢি বর্ণনা করেন এবং
তিরমিযী হাদীছটিকে সহীহ্’ বলেন ৷ এ বর্ণনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে, তিনি নবী করীম
(না)-এর পাবিত্র মুখ থেকে তা শ্রবণ করেছেন এবং তিনি মদীনায় আগমন করে কুবায় বনু
আম্র ইবন আওফএর মহল্লায় অবস্থান করার প্রথম পর্যায়েইপু, যখন সেখানে উট বসান,
তখনই তাকে তা বলতে শুনেন এবং তাকে সরাসরি দেখেন আবদুল আযীয ইবন সুহায়ব সুত্রে
আনাস-এর বর্ণনায় ইতােপুর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কুবায় থেকে বনু নাজ্জারের মহল্লড়ায়
আগমন করে উট র্বাধার সময়ই আবদুল্লাহ ইবন সালাম রাসুলুল্লাহ (স ) এর সঙ্গে মিলিত হন ৷
সম্ভবত কুবায় যিনি নবী করীম (না)-কে সর্বপ্রথম দেখতে পান এবং বনু নাজ্জারের মহল্লায়
তার সঙ্গে মিলিত হন ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
বৃখারীর বর্ণনায় আবদুল আযীয (র ) আনাস (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন :
রাসুলুল্লাহ্ (সা) (মদীনায়) আগমন করলে আবদুল্লাহ ইবন সালাম উপস্থিত হয়ে বললেন-
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর রাসুল এবং সত্য নিয়ে আপনি আগমন করেছেন ৷
ইহ্রদীরা একথা ভাল করেই জানে যে, আমি তাদের নেতা এবং নেতার পুত্র এবং আমি তাদের
মধ্যে সবচেয়ে বড় জ্ঞানী ব্যক্তি এবং সবচেয়ে বড় জ্ঞানী ব্যক্তির সন্তান ৷ আমি ইসলাম গ্রহণ
করেছি একথা তারা জানার আগেই তাদেরকে ডেকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন ৷ কারণ,
তারা যদি জানতে পারে যে, আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি, তাহলে তারা আমার সম্পর্কে এমন সব
কথা বলবে, যা আমার মধ্যে নেই ৷ সুতরাং আল্লাহ্র নবী (সা ) তাদের নিকট বার্তাবাহক প্রেরণ
করেন ৷ তারা আসলে তিনি বললেন : “হে ইয়াহুদী সম্প্রদায়! (তোমাদের জন্য আফসােস,
তোমরা আল্লাহ্কে ভয় করা যে আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই, যে আল্লাহর শপথ, তোমরা
অবশ্যই (একথা) জান যে, আমি সত্য সতাই আল্লাহ্র নবী এবং (তোমরা একথাও জান যে,)
আমি তোমাদের নিকট সত্য নিয়ে আগমন করেছি ৷ সুতরাং তোমরা সকলে ইসলাম গ্রহণ কর ৷
তারা বললো : আমরা তো তা জানি না ৷ তারা নবী করীম (সা) সম্পর্কে একথা তিনবার বলে ৷
এরপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন : তোমাদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবন সালাম কে ? তিনি কেমন
লোক ? তারা বললো : তিনি তো আমাদের নেতা এবং নেতার পুত্র, তিনি আমাদৈর মধ্যে
সবচেয়ে বড় জ্ঞানী এবং সবচেয়ে বড় জ্ঞানীর পুত্র ৷ তিনি বললেন : আচ্ছা বল দেখি, তিনি যদি
ইসলাম গ্রহণ করেন ? (তবে কেমন হবে ?) ৷ তারা বললো : আল্লাহর পানাহ, তিনি মুসলমান
হতে পারেন না ৷ তিনি বললেন : হে ইবন সালাম ! বেরিয়ে এসো! তিনি বেরিয়ে এসে বললেন:
“হে ইয়ড়াহ্রদী সমাজ ! তোমরা আল্লাহকে ভয়কর, যিনি ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই ৷ তোমরা তো
নিশ্চিত জানাে যে, তিনি আল্লাহ্র রাসুল এবং তিনি সত্য নিয়ে আগমন করেছেন ৷” তখন তারা
বললো : তুমি মিথ্যা বলছো ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদেরকে বের করে দেন ৷ এ হল বুখারীর
ভাষ্য ৷ অন্য বর্ণনায় আছে : তিনি বেরিয়ে এসে সত্য সাক্ষ্য দান করলে তারা বলে : (এতো)
আমাদের মধ্যে দুষ্ট লোক এবং দুষ্ট লোকের সন্তান ৷ তারা তাকে পাল-মন্দ করে ৷ তিনি বললেন
৪ ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! এটাই তো আমি আশংকা করছিলাম ৷
বায়হাকী হাফিয আবু আবদুল্লাহ সুত্রে আনাস (বা) থেকে বর্ণনা করেন :
আবদুল্লাহ ইবন সালাম তার এক খামার থেকেই রাসুল (সা)এর আগমন সম্পর্কে শুনতে
পান ৷ তখন তিনি নবী করীম (না)-এর নিকট আগমন করে বলেন : আমি আপনাকে তিনটি
বিষয়ে প্রশ্ন করছি, কোন নবী ছাড়া কে এ কথাগুলো জানে না ৷ (প্রশ্নগুলো এই (১)
কিয়ামতের প্রথম লক্ষণগুলো কি ? ( ২)জান্নাতবাসীরা প্রথম কী খাদ্য খাবে ? (৩) শিশু কখনো
মায়ের অবয়বে আবার কখনো বাপের অবয়বে হয়, এর রহস্য কি ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন :
জিবরাঈল (আ) এইমাত্র আমাকে এসব বিষয়ে অবহিত করেছেন ৷ জিজ্ঞেস করলেন :
জিবরাঈল ? নবী করীম (সা) বললেন : ই৷ ৷ আবদুল্লাহ ইবন সালাম বললেন : ইনি তো
ফেরেশতাদের মধ্যে ইয়াহুদীদের দুশমন ৷ এরপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পন্ঠ করেন :
“যে ব্যক্তি জিবরীলের দুশমন এ জন্য যে, সে তোমার হৃদয়ে কুরআন পৌছিয়েছে আল্লাহর
নির্দোশ ৷” রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : কিয়ামতের প্রথম আলামত হবে একটা আগুন, যা দেখা
দেবে মানুষের উপর (অর্থাৎ মানুষের নিকট প্রকাশ পাবে) এবং লোকদেরকে চালিত করবে
প্রাচ্য থেকে প্রভীচ্যের দিকে ৷ আর জান্নড়াতীরা প্রথম যে খাদ্য আহার করবে তা হবে মাছের
কন্সিজা ৷ আর শিশু সন্তান, যখন পুরুষের বীর্য নারীর বীর্যের উপর প্রবল হয়, তখন শিশু হয়
পিতার অবয়বে, আর যখন নারীর বীর্য পুরুষের বীর্যের উপর প্রবল হয়, তখন সন্তান হয় মায়ের
আকৃতির ৷ তখন তিনি বললেন : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই এবং
আপনি আল্লাহর রাসুল ৷ ইয়া রাসুলাল্লাহ্! ইয়াহ্রদীরা হল বড়ই অপবাদপ্রবণ জাতি ৷
আপনি তাদেরকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পুর্বেই তারা যদি আমার ইসলামপ্রহণ
সম্পর্কে জানতে পারে , তবে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়াবে ৷ তখন ইয়াহ্রদীরা উপস্থিত হলো
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : তোমাদের মধ্যে আবদুল্লাহ কে ? (অর্থাৎ যে কেমন লোক ?) তারা
বললো : যে আমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি এবং উত্তম ব্যক্তির সন্তান ৷ আমাদের মধ্যে যে নেতা
এবং নেতার পুত্র ৷ তিনি বললেন : তোমরা কী বল ? সে যদি ইসলামপ্রহণ করে ? তারা বলে :
এ থেকে আল্লাহ তাকে রক্ষা করুন ৷ তখন আবদুল্লাহ বের হয়ে বললেন :
তারা বললো : যে আমাদের মধ্যে নি বৃষ্টে লোক এবং নিকৃষ্ট লোকের সন্তান-একথা বলে
তারা তার ত্রুটি বর্ণনা করে ৷ তখন তিনি বললেন : ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি তো এ আশংকাই
করছিলাম ৷ বুখারী আব্দ ইবন মুনীর সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন আবু বকর (রা) থেকে হড়াদীছটি বর্ণনা
করেন ৷ তিনি হামিদ ইবন উমর সুত্রে হুমায়দ থেকেও হড়াদীছটি বর্ণনা করেন ৷
মুহাম্মদ ইবন ইসহাক আবদুল্লাহ ইবন আবু বকর সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন সালামের
পরিবারের জনৈক ব্যক্তির বরাতে তার ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার কাহিনী বর্ণনা করেন :
আমি যখন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর আগমনের কথা শুনতে পেলাম এবং তার নাম, গুণাবলী ও
পরিচয় জানতে পারলাম এবং তার যমানায় আমরা যার অপেক্ষায় ছিলাম, তখন আমি কুবায়
বিষয়টি গোপন রেখে চুপচাপ ছিলাম ৷ শেষ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় আগমন করেন ৷
মদীনায় আগমন করে তিনি কুবায় বনু আমর ইবন আওবুফর মহল্পায় অবস্থান করেন ৷ জনৈক
ব্যক্তি এগিয়ে এসে তার আগমনবার্তা জানায় ৷ এ সময় আমি <;খজুর গাছের মাথায় কাজ
করছিলাম ৷ আর আমার ফুফু খালিদ৷ বিনত হারিছ নীচে বসা ছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ (না)-এর
আগমনের খবর শুনে আমি তাক্বীরধ্বনি দেই ৷ আমার তাক্বীবধ্বনি শ্রবণ করে আমার ফুফু
বললেন তুমি মুসা ইবন ইমরাবুনর আগমনের খবর শুনলে এর চাইতে জোরে তাকবীরধ্বনি
দিতে না ৷ তিনি বলেন, আমি তাকে বললড়াম, হে আমার ফুফু আল্লাহর কসম, তিনি মুসা ইবন
ইমরানের সমপর্যায়ের এবং তার দীন নিয়েই তিনি প্রেরিত হয়েছেন ৷ তিনি বলবুলন৪ হে
ভ্রাতৃম্পুত্র ! তিনি কি যে ব্যক্তি যার সম্পর্কে আমরা জানতাম যে, বি১য়ড়ামতের পুর্বে তার আগমন
ঘটবে ? আমি বললাম, ইব্র৷ ৷ তিনি বললেন, তবে তিনিই যে ব্যক্তি ৷ তিনি বলেন, আমি
রাসুলুল্লাহ্র নিকট গেলাম, ইসলামগ্রহণ করলাম, এরপর আমার পরিবারপরিজবুনর নিকট
ফিরে এসে তাদেরকে বললে তারাও ইসলামগ্রহণ করে ৷ আমি আমার ইসলাম গ্রহণ ইয়াহ্রদীবুদর
নিকট গোপন রাখি ৷ আমি বলি হে অ ৷ল্লাহ্র রাসুল ইয়াহ্রদীরা এক অপবাদপ্ৰবণ জা ৷তি ৷ আমি
পসন্দ করি যে, আপনি আমাকে কোন গৃবুহত তাদের থেকে লুকিয়ে রাখবেন ৷ এরপর আমার
সম্পবুর্ক তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, আমি কেমন ৷ আর এ কাজটা করবেন আমার ইসলাম গ্রহণ
সম্পর্কে তারা জানবার আগে ৷ তারা এটা জানতে পারলে আমার সম্পর্কে অপপ্রচার চালাবে আর
আমার দোষ ত্রুটি বর্ণনা করলে ৷ আগের মতে ৷ ঘটনা উল্লেখ করলেন ৷ তিনি বললেন, এরপর
আমার এবং আমার পরিব৷ র-পরিজনের ইসলাম গ্রহণের কথা প্রকাশ করলাম এবং ফুফু খালিদা
বিনত হারিছও ইসলাম গ্রহণ করলেন ৷
ইউনুস ইবন বুকায়র মুহাম্মদ ইবন ইসহাক সুত্রে সা ৷ফিয়্যা বিনত হুয়৷ ৷ই এর বরাতে ববুলন০ :
আমার পিতা এবং চাচার সন্তানদের মধ্যে বুকউ তাদের উভয়ের নিকট আমার চেয়ে বেশী প্রিয়
ছিল না ৷ তাদের সন্তানদের মধ্যে তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করলে তারা আমাকেই অগ্রাধিকার
দিতেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) কুবায় বনু আমর ইবন আওবুফর জনপদে আগমন করলে আমার
পিতা এব০ চাচা আবু ইয়াসির ইবন আখতার ভোরে তার কাছে গমন করতেন (এবং রাবুত
ফিরে আসতেন) ৷ আল্লাহর কসম, কেবল সুর্যাস্তকালেইত তারা ফিরে আসতে তন আমাদের নিকট ৷
তারা আমাদের নিকট ফিরে আসতেন বিষগ্ন মবুন, ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে, পড়ম্ভ অবস্থায় ধীরে ধীরে
পদ চারণ৷ করে সাধারণত আমি সাহায্য বদনে তাদের নিকট আগমন করলে আল্লাহর কসম,
তারা কারো দিকে তাকাতেন না ৷ তখন আমি আমার চাচা আবু ইয়াসিরকে বলতে শুনতাম,
তিনি আমার পিতাকে বলবুতন০ : ইনিই কি তিনি? তিনি বলবুতন, হীা, আল্লাহর কসম তিনি
বলবুতন০ তার গুণাবলী সম্পর্কে কি তুমি জান ? তিনি ববুলন ইব্রু৷ আল্লাহর কসম ৷ তিনি
বললেন, তাহলে তার ব্যাপারে তোমার মনের কী অবস্থা? তিনি বললেন : আল্লাহর শপথ
যতদিন আমি বেচে থাকর, তার প্রতি শত্রুতা করে যাবো ৷
মুসা ইবন উকবা যুহ্রী সুত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় আগমন করলে
আবু ইয়াসির ইবন আখতার তার নিকট গিয়ে তার কথা শুনেন এবং তার সঙ্গে কথা বলে নিজ
জাতির নিকট ফিরে এসে বলেন, হে আমার জাতির লোকেরা ! তোমরা আমার আনুগত্য কর,
কারণ, তোমরা যার অপেক্ষায় ছিলে, আল্লাহ তোমাদের নিকট তাকে প্রেরণ করেছেন ৷ তোমরা
৷ তার অনুসরণ করবে, বিরোধিতা করবে না ৷ তখন তার সহােদর হুয়াই ইবন আখতাৰ-যিনি
তখন ইয়াহদীদের সরদার বা নে৩ তা ,আর এরা উভয়েই ছিল বন ন ৷যীরের লোক রাসুলুল্লাহ্ (সা )
-এর কাছে গিয়ে বসল এবং তার কথা শুনলো, এরপর তার জাতির নিকট ফিরে এলে-আর
সে ছিল জাতির মধ্যে মান্যবর-সে বললো :
আমি এমন এক ব্যক্তির নিকট থেকে এসেছি আল্লাহর ক সম, আমি চিরকাল তার শত্রুই
থাকরাে ৷ (তার মুখে একথা ৷শ্যুন) তার ভাই আবু ইয়াসির বললাে৪ হে আমার সহােদর ভাই
এ ব্যাপারে আমার আনুগত্য কর আর পরে যা খুশী আমার অবধ্য৩ তা নাফরমানী করবে ৷ তবে
নিজেকে ধ্ব স করবে না ৷ সে বললো: না আল্লাহর কসম, আমি কখনো তোমার আনুগত্য
করবো না ৷ শয়তান তার উপর আধিপ৩ তা বিস্তার করে এবং তার জাতি তারই মতামতের
অনুসারী হয় ৷
আমি বলি, আবু ইয়াসিরের নাম হুয়াই ইবন আখ৩ যে১ তার কী শেষ পরিণতি হয়েছিল
আমার জ না সেই ৷ তবে স ফিয্যাব পিতা হুয়াই ইবন আখতার নবী করীম (না) এবং তার
সাহাবীগণের প্রতি শত্রু৩ ৷ ছিল মজ্জাগত ৷ এটাই ছিল তার অভ্যাস ৷ তার প্রতি ৩আল্লাহ্র লান
বর্ষি৩ হোক ৷ বনু কুরায়যার যুদ্ধের দিন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সম্মুখে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত
তার এ অভ্যাসের পরিবর্তন হয়নি ৷ বনু কুরায়যার যুদ্ধের আলোচনায় তার সম্পর্কে আলোচনা
করা হবে ইনশআল্লাহ্ ৷
অনুচ্ছেদ
প্রথম জুমুআব নামায
রাসুলুল্লাহ্ (সা) যে দিন তার উটনী কাসৃওয়ায় চড়ে কুবায় থেকে রওনা হলেন, সে দিনটি
ছিল জুমুআর দিন ৷ বনু সালিম ইবন আওফের গোত্রে পৌছতে ৩দুপুর গড়িয়ে যায় ৷ তাই
সেখানেই তিনি মুসলমানদেরকে নিয়ে জুমুআর নামায আদায় করেন ৷ আর এটা ছিল রানুওয়ানা
উপত্যকায় ৷ এটা ছিল মদীনায় মুসলমানদেরকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা )এর প্রথম জুমুআর নামায
অথবা এটি ছিল মুসলমানদের প্রথম জুমআর নামায ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ কারণ, মক্কায়
১ দুটি মুল কপিতে এমনই উল্লেখ আছে ৷ আর সীরাতে ইবন হিশাম গ্রন্থে উল্লেখ আছে যে, তারা ছিল
তিনজন (১) হয়াই ইবন আখতার (২) আবু ইয়াসির ইবন আখতার আর (৩) জুদী ইবন আখতার ৷