“রাসুলুল্লাহ (সা) উপত্যকায় (নালায়) নিম্নভাগে দ্রুতবেগে অতিক্রম করবেন (ঘুখারী-“ মুসলিম
রিওয়ায়াত কংরাক্রা) ৷ আর ইবন উমার (বা) হতে তিরমিঘীপ্রু (র); এর ংরিওয়ায়াত রয়েছে-
“আমি যদি দ্রুতবেগেচলি, তরেরাসুলুল্পাহ (না)-কে তােদ্রুত চলতে দেখেছি, “আর যদি হেটে
চলি, তবে রাসৃলুল্লাহী (সা)-কৈও হেটে চল্তেদেখেছি ৷ আর জাবির (রা) বলেছেন,“র্তীর
পদফ্রাং৷ যখন উপতকৌয় স্থির হয়ে বসৃতে লাগল তখন রমল করলেন, অৰ্শ্যেয যখন চড়তে
লাগলেন তখন স্বাভাৰিবভোবে ছুটিলেন (মুসলিম) ৷ এ ছাড়া আবু জাফর আলু বাকিয় (র) সুত্রে
জাবির (বা) হতে গৃহীত মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক (র)-এর হাদীস আমরা ইতোপুর্বেউল্লেখ করে
এসেছি ৷ (তাতে রয়েছে) যে, রাসুলুল্লাহ (সা) তার উট মসজিদের দয়জায় বসিয়ে দিলেন-
অখাৎ উট বসাবার পরে তাওয়ফে করেছিলেন ৷ তারপর সাফা অভিমুখে বের হওয়ার সময়
সওয়াবীতে আরোহণ করেছেনবলে উল্লিখিত হয় নি“
এ সব উদ্ধৃতির দাবী হল এই যে, রাসুল্ করীম (সা) সাফা মারওয়ায় পায়ে হেটে সাঈ
কঃরছিলেন, তবে মুসলিম (র) এর একটি হাদীসে এর ব্যাতিক্রম রয়োছ ৷ তিনি বলেন, আবৃদু
ইবন হুমায়দ (র)ঠুজাবির ইবন আবদুল্লাহ (বা) থেকে, তিনি বলেন, নবী করীম
(সা) তার বড়াহনে-একটি উট-চড়ে বায়তুল্লাহ ও সাফা-মারওয়া তাওয়াক করেছেন, যাতে
লোকেরা তাকে দেখতে পায় এবং তিনিও উচু হতে সবাইকে দেখতে পান এবং যাতে লোকেরা
তার কাছে মাসৃআলা জিজ্ঞেস করতে পারে ৷ কেননা, জনতা তাকে ঘিরে রেখেছিল ৷”এবং
নবী করীম (সা) ও তার সাহাবীগণও সাফা মারওয়ায় একটির অধিক সাঈ করেন নি ৷ ” ইমাম
মুসলিম এ হাদীস আবু বক্র ইবন আবু শায়বা (র)আলী ইবন খাশরাম (র) এবং মুহাম্মাদ
ইবন হাতিম (র)(সব সনদই ইবন জ্বরায়জ মারফত পুর্বোক্ত উর্ধতন সনদে) তবে এগুলির
ণ্কান কােনটিতে এৰখ্ সাফা-মারওয়ায় কথাটুকু নেই ৷ আবু দউিদ (র) রিওয়ায়াত করেছেন
আহ্মদ ইবন হাম্বাস (র)জাৰির ইবন আবদুল্লাহ (র) বলেন, “ নবী কবীম (সা) বিদায় হৰ্জ্জ্ব
তার ৰাহনে চড়ে বায়তুল্লাহ ও সাফা-মারওয়ায় তাওয়াফ করেছেন ৷” নাসাঈ (র) রিওয়ায়াত
করেছেন ফাল্লাস (র)এবং ইমরান ইবন য়াযীদ (র) (উভয় সুত্র ইবন জুরায়জ মারফত
পুবেক্তি সনদে-) , যেটি কথা, ইবন জুরায়জ (র)-এর হাদীসরুপে এটি সংরক্ষিত ও পরিশৃদ্ধ এবং
যেহেতু এটি সমন্বয় অতিশয় জটিল ৷ কেননা, জাবির (বা) প্রমুখ হতে বর্ণিত সমুদয় রিওয়ায়াত
নির্দেশ করে যে, সাফা মারওয়া প্রদক্ষিণকালে নবী করীম (সা) পদব্রজে চলেছিলেন ৷
এখন দৃভাবে এ ব্যতিক্রমী রিওয়ায়াতটির জবাব দেয়া যায় ৷ (এক) জাবির (বা) হতে
(তার অধস্তন রাবী) আবুয্ যুবায়র (র)-এর রিওয়ায়াতের এ অতিরিক্ত অংশ অর্থাৎ সাফা-
মারওয়ায় মাঝে’ উক্তিটি সাহাবী পরবর্তী কোন রড়াবী-র অসর্তকতা প্রসুত দুর্বলতাব্র ফসল
কিংবা তা’ অনুপ্রবিষ্ট হয়েছে ৷ আল্পাহ্ই সমাধিক অবগত ৷ (দুই) কিৎবা নবী করীম (সা) সাফা
মারওয়ায় তার কতক তাওয়াফ পায়ে হেটে আদায় করেছিলেন এবং অন্যান্য আনুষৎগিক
বিযয়াদিসহ তা অনেকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন ৷ পরে তার চারপাশে লোকের ভিড় বেড়ে যেতে
থাকংণ্৷ তিনি ৰাহনে আরোহণ করেন (যেমন একটু পরে উদ্ধৃত ইবন আব্বাস (রা)-এর
হাদীস নির্দেশ করছে) ৷ ইবন হড়াঘৃম (র) অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন যে, নবী করীম (সা)-
এর ৰায়তুল্লাহ প্রথম তাওয়াফ ছিল পায়ে হেটে, এবং আরোহী হয়ে তাওয়াফ করা সম্পর্কিত
রিওয়ড়ায়াত্গুলিয়ুক তিনি পরবর্তী তাওয়াফের ক্ষেত্রে প্রা£য়াগ করেছেন ৷ কিন্তু যেহেতু সাফা-
মারওয়াহ্ই৷ তিনি একবার মাত্র সাঈ করেছিলেন, তাই ইবন হাযম (র) দাবী করেছেন যে সাফা-
মারওয়ায় সাঈ কালে তিনি (সা) আগাংগাড়া আরোহী ছিলেন ৷ এবং এ দাবীর সাথে সমন্বয়
সাধনের জন্য জাবির (রা)প্রুএর হাদীসের উপত্যকায় তীর পদযুগল স্থির হতে লাগলে তিনি
রমল করলেন”-এর উক্তির ব্যা খ্যা দিয়েছেন এ ভাবে যে, আরোহী হওয়া অবস্থায়ও এ বিবরণ
প্রযোজ্য হতে পারে ৷ কেননা, তার বাহন উট নিম্নভুমিতে স্থির হলে উটের সাথে তীর গোটা
দেহ এবং সে সুত্রে তার পদযুগল স্থির হওয়া সাব্যস্ত হতে পারবে ৷ ইবন হাঘৃম আরো বলেছেন
যে, রমল করার ব্যাপারটিও অনুরুপ, অর্থাৎ আরোহীকে নিয়ে বাহনের দােলার তালে লো ৷
আমার মতে এ ব্যাখ্যা খুবই কষ্টকল্পিত ৷ আল্পাহই সমাধিক অবগত ৷
রমল প্ৰসংগে বিশদ আলোচনা
আবু দাউদ (র) বলেন, আবু সালড়ামা মুসা (র) আবুৎ তৃফায়ল (বা) হতে, তিনি বলেন,
আমি ইবন আব্বাস (রা)-কে বললাম, আপনার কওমের লোকেরা বলে থাকে যে, রাসুলুল্লাহ
(সা) বায়তৃল্লাহ তাওয়াফকালে রমল করেছেন এবং এটি তার সুন্নাতও ৷ তিনি বললেন, তীরা
সত্য ও মিথ্যা বলেছে ৷ আমি বললাম, “তারা সঠিক ও অধিক বলেছে আপনার এ কথার অর্থ
কি? তিনি বললেন, সঠিক বলেছে রাসুলুল্লাহ (সা) রমল করেছেন; আর অধিক বলেছে-
যেহেতু তা’ সুন্নত নয় ৷ (মুল ব্যাপার ছিল এই যে) হুদাইৰিয়ার সময় কুরায়শী (কাফির) রা
বলেছিল, মুহাম্মদ ও তার সাথীদের নাগাফ (নাকের কীটের) রোগে মরতে দাও ৷ ’ পরে যখন
এ মর্মে সন্ধি হল যে, পরবর্তী বছর মুসলমানগণ হজ্জ (উমরা) করতে আসবেন এবং তারা
মক্কায় তিন দিন অবস্থান করবেন এবং এ সন্ধিবলে রাসুলুল্লাহ (সা) আগমন করলেন ঘুশরিকরা
তখন কুআয়কিআন’ প্রান্তে অবস্থান করছিল ৷ রাসুলুল্পাহ (সা) তার সাথীদের বললেন, “বায়তৃল্লাহ-এ তিন চক্করে রমল কর; এটি সুন্নত নয়, লোকদের
রাসুলুল্পাহ (সা)-এর নিকট হতে হটিয়ে দেয়া হচ্ছিল না, আর তাদের সরিয়েও দেয়া হচ্ছিল
না, তাই তিনি একটি উটের উপরে চড়ে তাওয়াফ করলেন যাতে তারা তীর কথা শুনতে পায়
এবং তার অবস্থান প্রত্যক্ষ করতে পারে, আবার তাদের হাত তীকে নাপালে না পায় ৷ আবু
দাউদ (র) এ ভাবেই রিওয়ায়াত করেছেন ৷
মুসলিম (র) রিওয়ায়াত করেছেন আবু কামিল (র)ইবন আব্বাস (বা) হতে, এতে
বায়তুল্পাহ-এ তাওয়াফের আলোচনা পুবানুরুপ ৷ পরবর্তী অংশে রড়াবী বলেন, আমি ইবন আব্বাস
(রা)-কে বললাম, সাফা-মারওয়ায় আরোহী হয়ে তাওয়াফ করার বিষয় আমাকে অবহিত করুন,
তা কি সুন্নত ? আপনার কওমের ণ্লাকের৷ তো বলে থাকে যে, তা সুন্নত ৷ তিনি বললেন, তারা
সঠিক বলেছে, আবার অঠিকও বলেছে ৷ আমি বললাম, সঠিক বলেছে, আবার অঠিকও বলেছে’-
এর অর্থ কি? তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর চারপাশে অনেক লোকের সমাগম হয়ে গেল ৷
তারা বলতে লাগল এই যে মুহাম্মদ! এই যে মুহাম্মদ! এমনকি পর্দানশীন নারীকুলও ঘর ছেড়ে
বেরিয়ে পড়লেন ৷ আর রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার সামনে থেকে লোকদের হটিয়ে দিতেন না ৷ তইি,
১ এ্যাগ্ উট-ছাগলের নাকে এক প্রকার কীট বা কৃষি; নাকের শুকানো ময়লা ৷
তার কাছে সােরুক্য অধিক সমাগম হয়ে গেলে তিনি সওয়ারীতে আরোহণ করলেন ৷ ইবন
আব্বাস (বা) আরো বললেন, তবে পায়ে ইটি৷ ও সাঈ করা উত্তম ৷ এ হচ্ছে মুসলিম শরীফের
ভাষ্য এবং এর দাবী হল যে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যবর্তী কোন সময় তিনি সওয়ারীতে
আরোহণ করেছিলেন এবং এভাবে সব হাদীসের মাঝে সমন্বয় সাধিত হতে পারে ৷ আল্লাহই
সমাধিক অবগত ৷
তবে সহীহ মুসলিমের বিওয়ায়াত যাতে তিনি বলেছেন, মুহাম্মাদ ইবন রাফি (ব)
আবুৎ তুফায়ল (বা) হতে, তিনি বলেন, আমি ইবন আব্বাস (রা) কে বললাম, আমার যতদুর
মনে হয় রাসুলুল্লাহ (না)-কে (সাফা মারওয়ায়) আমি দেখেছি ৷ তিনি বললেন, তবে আমাকে
তীর বিবরণ দাও তো দেখি ! আমি বাংলার, তাকে আমি দেখেছি মারওয়া-র কাছে একটি
উটের পিঠে, তখন তার ওখানে লোকের তিড় হয়ে গিয়েছিল ৷ তখন ইবন আব্বাস (রা)
বললেন, (হী) ইনি-ই রাসুলুল্লাহ (না); তার নিকট হতে লোকদের হটে যেতে বাধ্য করা হত
না ৷ (মন্তব্য) এ বিওয়ায়াত একাকী মুসলিম (র)-এর এবং এতে সাফ৷ মারওয়ায় রাসুলুল্লাহ
(সা) এর আরোহী হয়ে সাঈ করার বিশেষ কোন প্রমাণ নেই ৷ কারণ, ঘটনাঢিকে বিদায় হজ্জ
বা অন্য উপলক্ষের সাথে বিশেষভাবে সম্পৃক্ত করা হয়নি ৷ আর বিদায় হজে হওয়ার কথা ধরে
নিলেও এরুপ সম্ভাবনা বিদ্যমান যে, নবী করীম (সা) তার সাঈ ও আনুষাঙ্গিক বিষয়াদি তথা
মারওয়ায় উপবেশন, সেখানে খুতব৷ প্রদান, মারা হাদী-র পশু নিয়ে আসে নি তাদের হজে
(এর ইহরাম আপাততঃ) ণ্ভ গ করে উমরায় পরিণত করার আদেশ দান এবং সেখানে মারা
হাদী আনয়নকারী নয় তাদের হালাল হয়ে যাওয়া যেভাবে জাবির (রা) এর হাদীসে বিবৃত
হয়েছে এ সব কিহ্ব পরে তার উটনী নিয়ে আসা হলে তিনি তাতে আরোহণ করলেন এবং
আবতাহ’ এ তার অবস্থান ক্ষেত্রের দিকে চলে গেলেন ৷ আলোচনা পরে আসছে ৷ এ সময়ই
আবুৎ তুকারল আনির ইবন ওয়াছিণা : আল বিকৰী (রা) তাকে দেবে থাকবেন ৷ এ আমির
(রা) শিশু সাহাৰীদের মধ্যে গণ্য হয়ে থাকেন ৷
গ্রস্থুকারের মন্তব্য : ইরাকী ফকীহ্দের একদল-যেমন আবু হানীফা (র) ও তীর সহচরবৃন্দ
এবং ছাওরী (র) এ অভিমত পোষণ করেছেন যে, কিরান হজ্জ আদায়কাবী দুটি তাওরাক এবং
দুটি সাঈ (অর্থাৎ হজ্জ ও উমরায় জন্য পৃথক পৃথক) পালন করবে ৷ এবং এ অভিমত আলী,
ইবন মাসউদ (রা) , মুজাহিদ ও শাবী (র) প্রমুখ হতে বর্ণিত হয়েছে ৷ র্তার৷ জাবির (না)-এর
দীর্ঘতম হাদীস দিয়েও প্রমাণ পেশ করতে পারেন ৷ সে হাদীসে সাফা-মারওয়ায় হেটে হেটে
সাঈ করার কথা আর এ হাদীসের ভাষ্য নবী করীম (না) ঐ দুই স্থানের মাঝে সওয়াবীতে
আরোহী হয়ে সাঈ করেছেন এ দৃই হাদীসের সমন্বিত ভাষ্য নির্দেশনা প্রতীয়মান করে যে,
তাওয়াক (ও সাঈ) দৃৰার করে হয়েছিল ৷ একবার হেটে হেটে এবং একবার সওয়ারীতে
আরোহী হয়ে ৷
অনুরুপ, সাঈদ ইবন মানসুর (র) হযরত আলী (রা)-র বরাতে বিওয়ায়াত করেছেন যে,
তিনি হজ্জ ও উমরায় ইহ্রাম করেছিলেন ৷ মক্কা শরীফে উপনীত হয়ে তিনি তার
উমরার জন্য বায়তুল্পাহ তাওয়াফ করলেন এবং সাফা মারওয়ায় সাঈ করলেন ৷ তারপর
পুনরায়ণ্-আরস্তু করে তার হজের জন্য বায়তুল্লাহ তাওরাফ ও সাফা-মাৰ্ওয়ায় সাঈ করলেন ৷