আবু হামযা, আপনি কী বলেন, কতজন সেই পেয়ালা থেকে সেদিন খেয়ে ছিলেন ? তখন তিনি
বললেন, আমার ধারণা, একাত্তর কিৎবা বাহাত্তর জন ৷ এ সুত্রে হাদীসখানি গরীব’ পর্যায়ের ৷
কেউই তা উল্লেখ করেননি ৷
এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (যা) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদীস
জাফর ইবন মুহাম্মদ আল ফারয়াবী, উছমান ইবন আবু শায়বা আবু হুরায়রা সুত্রে
বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, একবার রাসুলুল্লাহ্ (সা) বেরিয়ে এসে আমাকে বললেন,
সুফ্ফাবাসী তোমার সঙ্গীদের আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো ৷ তখন আমি তাদেরকে একজন
একজন করে জানিয়ে একত্র করলাম ৷ এরপর “আমরা আল্লাহ্র রাসুলের গৃহদ্বারে এসে ভিতরে
প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করলাম ৷ তখন তিনি আমাদেরকে অনুমতি প্রদান করলেন ৷ আবু
হুরায়রা (বা) বলেন, তখন আমাদের সামনে একটি থালা রাখা হল ৷ আমার ধারণা তাতে এক
মুদৃ পরিমাণ যব জ্জি ৷ আবু হুরায়রা (বা) বলেন, তখন আল্লাহর রাসুল তার উপর নিজের হাত
রাখলেন এবং বললেন, তোমরা আল্লাহ্র নামে খেতে থাকে৷ ৷ তিনি বলেন, তখন আমরা
আমাদের ই চ্ছামত তৃপ্তি ভরে খেয়ে আমাদের হাত গুটিয়ে নিলাম ৷ বরতনটি যখন রাখা হল
তখন নবী করীম (সা) বললেন, শপথ ঐ সত্তার, যার কুদরতি হাতে আমার প্রাণ ! মুহাম্মদ
পরিবারে এমন কোন খাবার নেই যা তোমাদের অগােচরে ৷ আবুহুরায়রাকে জিজ্ঞেস করা হল
আপনারা যখন খাওয়া শেষ করলেন, তখন কতটুকু পরিমাণ খাবার বাকি ছিল ? তিনি
বললেন, রাখার সময় যে পরিমাণ জ্জি, তবে তাতে কয়েকটি আঙ্গুলের চিহ্ন ছিল ৷ এই
ঘটনাটি সুফ্ফাবাসীর পুর্ববর্তী দৃধপান সংক্রান্ত যে ঘটনা নয়,যা আমরা ইতিপুর্বে উল্লেখ
করেছি ৷
এ প্রসঙ্গে আবু আয়ুক্তব থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদীস
জাফর আল ফারয়াবী, আবু সালামা ইয়াহ্ইয়া ইবন খালফ আবু আয়ুবে আনসারী
সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, একবার আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এবং আবু বকরের (রা)
জন্য তাদের দুজনের পরিমাণ খাবার প্রন্তুত করলাম ৷ তারপর তা নিয়ে তাদের দুজনের কাছে
আসলাম ৷ তখন আল্লাহ্র রাসুল আমাকে বললেন,যাও আনসারদের নেতৃস্থানীয় ত্রিশ জনকে
ডেকে নিয়ে এসো ৷ আবু আয়ুবে বলেন, তখন আমি বেশ বিব্রত বোধ করলাম ৷ কেননা, আমার
কাছে বাড়তি কোন খাবার জ্জি না ৷ তিনি বলেন, তাই আমি যেন গড়িমসি করছিলাম ৷ ফলে
তিনি আবার বললেন, যাও, আমার কাছে আনসারদের ত্রিশজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকে ডেকে
নিয়ে এসো! তখন আমি গিয়ে তাদেরকে ডেকে আনলাম ৷ তখন নবী করীম (সা) বললেন,
তোমরা খাবার গ্রহণ কর ৷ তখন তারা খেয়ে বের হয়ে আসলেন ৷ র্তারা সাক্ষ্য প্রদান করলেন
যে, তিনি আল্লাহর রাসুল ৷ চলে যাওয়ার পুর্বে তারা তার হাতে বায়আত হলেন ৷ এরপর তিনি
আমাকে বললেন, এবার যাও, নেতৃস্থানীয় আনসারদের ষাট জনকে ডেকে নিয়ে এসো ! আবু
আয়ুব্রব (বা) বলেন, আল্লাহ্র কসম, ষাট জনের ব্যাপারে আমি ত্রিশ জনের (ব্যাপারের চেয়ে)
অধিক বদান্য ৷ তিনি বলেন, তখন আমি তাদেরকে ডেকে আনলাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন,
তোমরা চার জানু হয়ে (আসন করে) বস, এরপর তারা খেলেন এবং বেরিয়ে আসলেন ৷
তারাও সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি আল্লাহর রাসুল এবং চলে যাওয়ার পুর্বে তারাও তার হাতে
বায়আত হলেন ৷ (আবু আয়ুদ্রব বলেন) এরপর তিনি বললেন, যাও, এবার গিয়ে আমার কাছে
নব্বইজন আনসারকে ডেকে নিয়ে এসো! আবু আয়ুবে বলেন, আর আমি অবশ্যই নব্বই ও
ষাটজনের ব্যাপারে ত্রিশজনের চাইতে অধিক বদান্য ৷ তিনি বলেন, তখন আমি তাদেরকে
ডেকে নিয়ে আসলাম এবং তারা খেয়ে বের হলেন ৷ তারপর তারা সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি
আল্লাহর রাসুল এবং বের হয়ে যাওয়ার পুর্বে তারাও তার হাতে বায়আত হলেন ৷ আবু আয়ুব
বলেন, এভাবে আমার (আনীত) ঐ সামান্য খাবার থেকে একশ আশিজন খেলেন, যাদের
সকলেই ছিলেন আনসার ৷ সনদ ও পাঠ বিবেচনায় হাদীসটি “অতি গরীব” (অগ্রহণযােপ্য) ৷
ইমাম বায়হাকী মুহাম্মদ ইবন আবু বকরের হাদীস সংগ্রহ থেকে তা রিওয়ায়াত করেছেন ৷
ফাতিমা (না)-এর গৃহে খাদ্যবৃদ্ধির তিন একটি ঘটনা
হাফিয আবু ইয়া’লা, সাহ্ল ইবনুল হানযালিয়া জাবির (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে
(একবার) রাসুলুল্লাহ্ (সা) কয়েক দিন অনাহারে কাটালেন, এমনকি অনাহারের কষ্ট সহ্য করা
তার জন্য কঠিন হয়ে র্দাড়াল ৷ তখন তিনি তার সহধর্মিনীগণের গৃহে গমন করলেন কিন্তু
তাদের কারো কাছেই কিছু পেলেন না ৷ অবশেষে কন্যা ফাতিমার (বা) কাছে এসে বললেন,
মা ৷ তোমার কাছে কি খাওয়ার কিছু আছে ? আমি বেশ ক্ষুধার্ত৷ জবাবে তিনি বললেন, জী না,
আব্বাজান! তেমন কিছুই নেই ৷ তারপর আল্লাহর রাসুল যখন তার কাছ থেকে বেরিয়ে
আসলেন তখন তার এক প্রতিবেশিনী দুটি রুটি এবং একটুকরা গোশত হাদিয়া পাঠালেন ৷
তখন তিনি তা নিয়ে তার একটি পাত্রে ঢেকে রেখে বললেন, আল্লাহর শপথ! এ খাবারের
ব্যাপারে অবশ্যই আমি নিজেদের উপর আল্লাহর রাসুলকে প্রাধান্য দেবাে ৷ উল্লেখ্য যে, সে সময়
তারা সকলেই খাদ্যাভাবে ছিলেন ৷ এরপর তিনি হাসান কিংবা হুসায়ন (রা)কে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর কাছে পাঠালেন ৷ তখন আল্লাহর রাসুল ফিরে আসলেন ৷ তাকে দেখে ফাতিমা (বা)
বললেন, আব্বাজান! আল্লাহ কিছু খাবার পাঠিয়েছেন, আমি তা আপনার জন্য তুলে রেখেছি ৷
প্ তিনি বললেন, যা আমার ! তুমি তা নিয়ে এসো ! তখন ফাতিমা (বা) পাত্রটির ঢাকনা সরিয়ে
দেখেন তা গোশত ও রুটিতে পরিপুর্ণ ৷ তিনি যখন সেদিকে তাকালেন, তখন আনন্দে তার মুখ
রা’ সরছিল না ৷ তিনি বুঝতে পারলেন যে, এটা আল্লাহ প্রদত্ত বরকত ৷ তইি তিনি আল্লাহর
প্রশংসা করলেন এবং তার নবীর উদ্দেশ্যে দরুদ পড়লেন ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা)-,এর সামনে
তা পেশ করলেন ৷ তিনি যখন তা দেখলেন তখন আল্লাহর প্রশংসা করে বললেন, মা, এ ধারার
তুমি কােথেকে পেলে ? তিনি বললেন, আব্বাজান, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে ৷ আর আল্লাহ
যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রিষিক দান করেন ৷ তখন আল্লাহর নবী আল্লাহর প্রশংসা করে বললেন,
সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি তোমাকে বনী ইসরাঈলের গ্রেষ্ঠানারীর সদৃশ করেছেন ৷ তিনিও
যখন আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন রিযিকপ্রাপ্ত হতেন, তারপর সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতেন তখন
বলতেন, তা’ আল্লাহর পক্ষ থেকে আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিসীম রিষিক দান করেন ৷
এরপর রাসুলুল্পাহ্ (সা) হযরত আলীকে ডেকে পাঠালেন এবং তিনি হযরত হাসান, হুসায়ন,
ফাতিমা আলী, নবী সহধর্মিগীগণের সকলে এবং তার;গৃহবাসী সকলেই তা খেয়ে তৃপ্ত হলেন ৷
ফাতিমা (রা) বলেন এরপরও পাত্রের খাবার যেমন ছিল তেমনই রয়ে গেল ৷ তখন তিনিতার