ছবিটা চীনের হারবিন প্রভিন্সের একটা হাসপাতালের। এক ক্যান্সারের রোগী ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে এলো ডাক্তারের কাছে।
ডাক্তার! আপনি আমার জীবন বাঁচান। আমার প্রচুর টাকা, সব আপনার।
ডাক্তার বললেন, আমি কিছুই করতে পারবো না। আপনার ক্যান্সার এখন ফাইনাল স্টেজে চলে গেছে।
রাগে, হতাশায় ভদ্রলোক ব্যাগভর্তি টাকা ছুড়ে মারলেন। হাসপাতালের করিডোরজুড়ে সেই টাকা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেলো।
তিনি চিৎকার করতে লাগলেন, ‘এত টাকা কামাই করে কী লাভ হলো, কী লাভ হলো? টাকা আমার সাস্থ্য ফিরিয়ে দিতে পারে না, টাকা আমার সময় ফিরিয়ে দিতে পারে না, টাকা আমার জীবন ফিরিয়ে দিতে পারে না।’
ছবিটা ইন্টারনেটে পাওয়া। সেখানে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা হিসেবে বলা হয়েছে সময় এবং টাকা থাকতে নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হতে। ভালো শিক্ষা। কিন্তু এই ঘটনা থেকে এর চেয়েও বড় শিক্ষাটা হলো জীবনের সবচেয়ে বড় বাস্তবতার কথা ভুলে গিয়ে দুনিয়া কামাই করার অর্থহীন ফলাফল। লোকটি দুনিয়া কামাই করেছে এবং দিনশেষে মৃত্যুর কাছাকাছি এসে দেখতে পাচ্ছে এতদিন যা কামাই করেছে সেটা তার কোন কাজে আসছে না, সেগুলো তার জীবন বাঁচাতে পারছে না, সে মৃত্যুর পর নিয়ে যেতেও পারছে না। এটাই বাস্তবতা।
আমাদের জীবনের একটা উদ্দেশ্য আছে, একটা নির্দিষ্ট গন্তব্য আছে। আমাদের আকীদা হলো আমরা আল্লাহর কাছে ফেরত যাবো, আমাদের বিচার হবে, হয় জান্নাত না হয় জাহান্নামে আমাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা হবে।
সারাজীবন ধরে যে এক আল্লাহর গোলামী করে, আখিরাতের সঞ্চয় তৈরী করে, সে মহান রবের সাথে সাক্ষাতের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে। হযরত বিলালের (রাঃ) মৃত্যুশয্যায় উনার স্ত্রী বললেন, ‘আহা কী কষ্ট আপনার’। উত্তরে বিলাল বলেছিলেন, ‘কষ্ট আবার কিসের, বরং আজ তো আমার আনন্দ। কারণ একটু পরেই আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মিলিত হবো, আমি আমার সাথীদের সাথে মিলিত হবো।’
আর সারাজীবন ধরে আল্লাহর কথা ভুলে দুনিয়া কামাই করে যাওয়া মানুষগুলো মৃত্যুর কাছে এসে ভয়ে কাঁপতে থাকে। তার সব সঞ্চয় দুনিয়াতে, আখিরাতে কিছু নেই। অথচ এখন তাঁকে দুনিয়া ছাড়তে হচ্ছে আর আখিরাতেই যেতে হচ্ছে। তার কামাই করা দুনিয়া না তাঁকে দুনিয়াতে ধরে রাখতে পারছে, না সে সম্পদ নিয়ে সে আখিরাতে যেতে পারছে। কী নিদারুণ অপচয়, কী ভয়াবহ আফসোস।
আল্লাহ যেন আমাদেরকে এরকম হতভাগা হওয়া থেকে হেফাজত করেন।
(সংগ্রহ bujhtesina bishoyta এর ফেসবুক ওয়াল থেকে)