Home » অন্যান্য » জিব্রাইল আঃ এর গল্প (২য় পর্ব) || ওমার সুলেইমান ●|●

জিব্রাইল আঃ এর গল্প (২য় পর্ব) || ওমার সুলেইমান ●|●

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • পরিশেষে, ইমরানের পরিবারের সাথে। কোন কোন সময় জিব্রিল (আঃ) কে নবীর সাথে উল্লেখ না করে নবীর পরিবারের সাথে উল্লেখ করা হয়। তো, আমরা মারিয়াম (আঃ) এর ঘটনা জানি। মারিয়াম (আঃ) মসজিদের বাইরে পূর্বে দিকের কোন এক স্থানে যেতেনمَكَانًا شَرْقِيًّا
    । তিনি মাসে একবার মসজিদের বাইরে পূর্ব দিকের কোন এক জায়গায় যেতেন। অনেক আলেমের মতে, সেটা ছিল সূর্যোদয় দেখার উদ্দেশ্যে। তিনি সেখানে গিয়ে সূর্যোদয় দেখতেন আর আল্লাহর জিকর করতেন। তিনি সেখানে মাটিতে দুটি লাঠি গেঁড়ে পর্দা টাঙিয়ে দিতেন, যেন এই খোলা জায়গায় মানুষ বুঝতে পারে এটা তাঁর বসার জায়গা। কেউ যেন এটার নিকটে না আসে। তিনি অল্প বয়স্ক মেয়ে ছিলেন, ১৪- ১৮ বছর বয়সের। মোটকথা তিনি একজন টিনেজার ছিলেন। আর তিনি একা আল্লাহর উপাসনা করছেন, আল্লাহকে একা একা স্মরণ করছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا আমরা তাঁর কাছে আমাদের রুহকে (জিবরাইল আঃ ) পাঠালাম। فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا জিব্রিল (আঃ) তাঁর নিকট একজন সুন্দর পুরুষের আকৃতিতে আবির্ভূত হলেন। জিব্রিল (আঃ) মুখ খুলে কিছু বলার আগেই মারিয়াম (আঃ) তাকে দেখে বললেন, أَعُوذُ بِالرَّحْمَٰنِ مِنكَ إِن كُنتَ تَقِيًّا ”আমি পরম করুণাময়ের কাছে তোমার থেকে আশ্রয় চাচ্ছি, যদি তোমার অন্তরে আল্লাহর কোন ভয় থেকে থাকে।”

    মানে – যদি তোমার নূন্যতম কোন শালীনতা থেকে থাকে ভাগ এখান থেকে। কোন কথা বলতে যেও না। মনে কর যে এটা কখনো ঘটে নি। যাও, আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। তাই প্রিয় বোনেরা, যদি কোন ভাই আপনার নিকট এগিয়ে আসে, তাদের সাথে এভাবে আচরণ করার চেষ্টা করে দেখুন(আরবিতে এই কথাটা বলেন)। দেখুন, কি ঘটে। যদি তিনি আরবি নাও বুঝেন তিনি ভাববেন, না এই আপুর থেকে দূরে থাকাই উত্তম। আমরা এই গল্পে যদি আবার ফেরত যাই, তাহলে দেখবো যে মারিয়াম (আঃ) জিবরাইল (আঃ) এর সাথে পরে কথা বলেছিলেন। কিন্তু কেন? কারণ মারিয়াম (আঃ)এর এভাবে কঠিন স্বরে কথা বলা দেখে জিবরাইল (আঃ) সাথে সাথে মনুষ্য আকৃতি থেকে ফেরেশতার আকৃতি ধারণ করেন। তিনি তাঁর মনুষ্য আকৃতি ত্যাগ করেন এবং ফেরেশতার আকৃতি ধারণ করেন। আর সেটা ৬০০ ডানার পূর্ণ আকৃতি ছিল না। ছোট-হালকা কণ্ঠসহ বা অন্য কোন রূপ যেটাই হউক সে আকৃতি ধারণ করে তিনি কথা চালিয়ে যান।

    আমি আল্লাহর একজন দূত। আপনার নিকট একজন পবিত্র সন্তানের সুসংবাদ নিয়ে এসেছি। আল্লাহ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবং كَذَٰلِكِ এটা ইতিমধ্যে করা হয়েছে । وَلِنَجْعَلَهُ آيَةً لِّلنَّاسِ وَرَحْمَةً مِّنَّا ‘’আমি তাকে মানুষের জন্যে একটি নিদর্শন ও আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ করতে চাই।’’ وَكَانَ أَمْرًا مَّقْضِيًّا আর এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। এখানে ‘কাদা’ মানে সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন। আর ‘কানা আমরান মাকদিইয়া’ মানে আপনি ইতিমধ্যে গর্ভবতী হয়ে গেছেন। فَحَمَلَتْهُ অতঃপর তিনি গর্ভে সন্তান ধারণ করলেন فَانتَبَذَتْ بِهِ مَكَانًا قَصِيًّا ঐ অবস্থায় এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেলেন। গর্ভকালীন পুরো সময়টা তিনি লুকিয়ে থাকলেন। আর যখন সন্তান জন্ম দানের সময় আসলো… মনে রাখবেন, তিনি ছিলেন একজন অনভিজ্ঞ তরুণী। তাঁর পাশে সাহায্য করার মতো কেউ ছিল না। তিনি পূর্বে কখনো সন্তান জন্ম দেন নি। প্রসব বেদনা তাঁকে এক খেজুর বৃক্ষ-মূলে আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। তিনি বললেনঃ হায়, আমি যদি কোনরূপে এর পূর্বে মরে যেতাম এবং মানুষের স্মৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে, যেতাম!

    যেহেতু মারিয়াম (আঃ) এর গর্ভ ধারণ বা সন্তান জন্ম দানের কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। আর গর্ভ ধারণ এবং সন্তান জন্ম দান একজন মেয়েকে প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি নিয়ে যায়। মহিলারা যারা শুনছেন তারা হয়তো ভাবছেন- হ্যাঁ, আমরা জানি। কিন্তু আমাদের পুরুষদের এ বিষয়ে কোন ধারনাই নেই। আমরা শুধু দেখতে পাই। যেহেতু গর্ভ ধারণ এবং সন্তান জন্ম দান একজন মেয়েকে প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি নিয়ে যায়, মারিয়াম (আঃ) মনে করছিলেন তিনি মারা যাচ্ছেন।

    আর ঠিক এমন সময়ে কে তাঁর সাথে কথা বলা শুরু করলো? فَنَادَاهَا مِن تَحْتِهَا أَلَّا تَحْزَنِي জিব্রিল (আঃ) তাঁকে বললেন, দুঃখ পাবেন না, – জিব্রিল (আঃ) এই সময়টাতে তাঁকে সান্ত্বনা দিতে লাগলেন। আপনি মনে করছেন যে মানুষ আপনাকে নিয়ে কুৎসা রটনা করবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো – একসময় মানব জাতির কাছে ওহী পাঠানো হবে আর তাতে উল্লেখ থাকবে যে, وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ مَرْيَمَ এ কিতাবে (উল্লেখিত) মারিয়ামের কাহিনী বর্ণনা করুন। আর দেখ قَدْ جَعَلَ رَبُّكِ تَحْتَكِ سَرِيًّا তোমার পালনকর্তা তোমার পায়ের তলায় একটি নহর জারি করেছেন। وَهُزِّي إِلَيْكِ بِجِذْعِ النَّخْلَةِ আর তুমি খেজুর গাছের কান্ড ধরে তোমার দিকে নাড়া দাও, تُسَاقِطْ عَلَيْكِ رُطَبًا جَنِيًّا তাহলে তা তোমার উপর তাজা-পাকা খেজুর ফেলবে’। فَكُلِي وَاشْرَبِي وَقَرِّي عَيْنًا ”অতঃপর তুমি খাও, পান কর এবং চোখ জুড়াও।” তোমার বাচ্চা তোমার চক্ষু শীতলকারী হওয়ার কথা। তোমার বাচ্চার দিকে তাকাও, কষ্টের দৃষ্টিতে নয়, বরং সুখের দৃষ্টিতে।

    অতঃপর দ্বিতীয় পরীক্ষা আসলো, যখন তোমার সম্প্রদায় তোমার সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে তখন তুমি নিজের সমর্থনে কোন কথা বলতে পারবে না। ইতিমধ্যে, মারিয়াম (আঃ) এর পূর্ণ বিশ্বাস তৈরি হয়ে গেল যে আল্লাহর সাহায্য তাঁর সাথে রয়েছে। তাই মারিয়াম (আঃ) যখন তাঁর সম্প্রদায়ের সম্মুখীন হলেন – তিনি জানতেন না যে আল্লাহ কিভাবে তাঁকে রক্ষা করবেন, তিনি জানতেন না আল্লাহ কি করতে যাচ্ছেন। কিন্তু যেহেতু তাঁকে সঠিক উপায়ে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে, আল্লাহর উপর তাঁর নির্ভরতা চূড়ান্ত রূপে আবির্ভূত হলো। তিনি ভাবলেন, কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।

    আর ঠিকই আল্লাহ সুবহা হানাহু ওয়া তায়ালা তাঁকে পুরস্কৃত করলেন। তাঁর সমর্থনে তাঁর নতুন জন্ম গ্রহণ করা সন্তান ঈসা (আঃ) কথা বললেন। এখানে জিবরাইল (আঃ) ঈসা (আঃ) এর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আল্লাহ সুব হা নাহু ওয়া তায়ালা বলেন, আমরা তাঁকে পবিত্র আত্মার (জিব্রিল আঃ) মাধ্যমে সাহায্য করেছি। এমনকি আল্লাহ এটাকে ঈসা আঃ এর প্রতি একটি অনুগ্রহ হিসেবেও উল্লেখ করেন। ”আমি তোমাকে পবিত্র আত্মার মাধ্যমে সাহায্য করেছি।” ঈসা আঃ কে জিবরাইল (আঃ) এর মাধ্যমে তাঁর সারা জীবন জুড়ে সাহায্য করা হয়। আর শুধু এটা নয়, বরং আলেমদের মতে, একমাত্র ফেরেশতা যিনি কোন নবীকে আকাশে নিয়ে যেতে পারেন তিনি হলেন জিব্রিল (আঃ) ।

    তো, যখন ঈসা (আঃ) কে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করা হয়, তখন তাঁকে জীবিত অবস্থায় আকাশে উঠিয়ে নেয়ার জন্য একজন ফেরেশতা পাঠানো হয়। আর ঈসা আ একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আকাশে অপবস্থান করবেন। কিয়ামতের পূর্বে আল্লাহর হকুমে তাঁকে আবার পৃথিবীতে পাঠানো হবে। আর সে ফেরেশতা ছিলেন জিব্রিল (আঃ)। আমি এর তাৎপর্য বোঝার চেষ্টা করছিলাম যে, কেন আল্লাহ এই কথাটি কেন সূরা মারিয়ামে বলেছেন, وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمْرِ رَبِّكَ ”(জিব্রাইল বললঃ) আমি আপনার পালনকর্তার আদেশ ব্যতীত অবতরণ করি না।” এই আয়াতটি আসলে কি সম্পর্কে? বেশ কিছু দিনের জন্য জিব্রিল আঃ দেখা না দিলে রাসূল (সঃ) মনে মনে দুঃখ পেতেন।

    আর তাই জিব্রিল আ রাসূল (সঃ) কে বললেন, দেখুন, আল্লাহর নির্দেশ পেলেই কেবল আমরা আপনার কাছে আসি। আমরা নিজেদের ইচ্ছামত আসতে পারি না, আমরা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আর এই কথাটি খুবই ব্যক্তিগত শোনায় যে, জিব্রিল (আঃ) বলছেন- وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلَّا بِأَمْرِ رَبِّكَ

    কেন সূরা মারিয়মে? ইসলামি পণ্ডিতদের মতে, এই সূরায় বর্ণিত প্রত্যেক নবীর ঘটনায় জিব্রিল আ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। চিন্তা করে দেখুন, জাকারিয়া, মারিয়াম থেকে ঈসা, ইব্রাহীম, মূসা, ইদ্রিস, ইসমাইল (আঃ) – ওনাদের সবার জীবনে জিবরাইল (আঃ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই এই সূরাতেই রাসূল সঃ কে বলা হয়েছে, দেখুন, আমরা শুধু আল্লাহর হুকুমেই অবতরণ করি, জ্ঞান নিয়ে। আর তখন জিব্রিল (আঃ) এর আগমনে আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ জিব্রাইল আঃ এর গল্প (২য় পর্ব) || ওমার সুলেইমান ●|● Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download