আল-বায্যড়ার সুত্রে এই সনদে তা বিওয়ড়াযাত ৩করেছেন ৷ আমি বলি, এই হাদীসখানি গরীব ও
মুনকার পর্যায়ের অর্থাৎ এতে অগ্নহণযােগতে ৷ বিদ্যমান, আর এর রাবী ঘুজালিদ ইবন সাঈদের
গ্রহণযােগ্যতার ব্যাপারেও মুহদ্দিসগণের আপত্তি’ রয়েছে ৷ সঠিক বিষয় আল্লাহ্ই অধিক
জানেন ৷ তিরমিষী তার শামইিলে নবীজীর খিরাজ’ অধ্যায়ে আব্দ ইবন হ্না৷য়দ হাসান
সুত্রে বর্ণনা করেন যে,৩ তিনি বলেছেন, (একবার) জনৈকা বৃদ্ধা নবী করীম (না)-এর কাছে
এসে আরব করলেন, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ ! আমার জন্য প্রার্থনা করুন, আল্লাহ যেন আমাকে
জান্নাতে প্রবেশ করলে ৷ তখন নবীজী তাকে বললেন, হে অমুকের মা ! কোন বৃদ্ধাতো জান্নাতে
প্রবেশ করবে না ৷ একথা শুনে বৃদ্ধা র্কাদতে র্কীদতে ফিরে চললেন ৷ তখন নবীজী বললেন,
তোমরা ওকে জানিয়ে দাও যে, বৃদ্ধা অবস্থায় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না, (বরং পুর্ণ যুবতী ও
কুমারী হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে) কেননা স্বয়ং আল্লাহ্স্থ বলছেন “তাদেরকে আমি সৃষ্টি করেছি বিশেষ রুপে, তাদেরকে করেছি কুমারী’
(ওয়াকিআ : ৩৫-৩৬) ৷ অবশ্য এ সুত্রে হাদীসটি মুরসাল’ ৷ তিরমিষী আব্বাস ইবন মুহাম্মাদ
আবু হুরায়রা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি ব লেছেন,৩ তারা (সড়াহাবাগণ) বললেন, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্! আপনিও আমাদের সাথে ঠাট্টা কৌতুক করেন? তিনি বললেন, তবে (কৌতুকেও)
আমি সতৰুই বলে থাকি ৷ তিরমিষী তার জা মি গ্রন্থে এ সনদে সদাচার অধ্যায়ে হাদীসখানা
রিওয়ায়াত করে মন্তব্য করেছেন, এটা মুরসাল ও হাসান’ শ্রেণীভুক্ত ৷
নবীজীর ষুহ্দ ও পার্থিব ভোগ বিমুখতা
আল-কুরআনে আল্লাহ্ তাআলা বলেন :
তুমি ণ্৩ ৷মার চক্ষুদ্বয় কখনও প্রসারিত করে৷ না, তার প্রতি যা আমি তাদের বিভিন্ন
গ্রেণীকে পার্থিব জীবনের সৌন্দর্যস্বরুপ উপভােগের উপকরণরুপে দিয়েছি তা দ্বারা তাদেরকে
পরীক্ষা করার জন্য ৷ তোমার প্রতিপালক-প্রদত্ত জীবনােপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিকতর স্থায়ী ৷ (২০
তুমি নিজেকে ধৈর্যসহকারে রাখবে তাদেরই সংসর্গে, যারা সকাল ও সন্ধ্যায় আহ্বান করে
তাদের প্রতিপালককে, তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং তুমি পার্থিব জীবনের শোভা কামনা
করে তাদের থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নেবে না ৷ তুমি তার আনুগত্য করো না, যার চিত্তকে
আমি আমার স্মরণে অমনােযোগী করে দিয়েছি, যে তার খেয়ালখুশীর অনুসরণ করে ও যার
কার্যকলাপ সীমা অতিক্রম করে ৷ (১৮ কাহ্ফ : ২৮)
অতএব যে আমার স্মরণে বিমুখ তাকে উপেক্ষা করে চল, সে তাে কেবল পার্থিব জীবনই
কামনা করে ৷ (৫৩ নাজমং ২৯)
আমি তাে তোমাকে দিয়েছি সাত আয়াত যা পুন পুন আবৃত্ত হয় এবং দিয়েছি মহা
কুরআন ৷ আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে ভোগ-বিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি তার প্রতি তুমি
কখনও তোমার চক্ষুদ্বয় প্রসারিত করো না, তাদের জন্য তুমি ক্ষোভ করো না, তুমি মু’মিনদের
জন্য তোমার পক্ষপুট অবনমিত কর (১৫ হিজর : ৮৭-৮৮) আর এ প্রসঙ্গে বহুসংখ্যক আয়াত
বিদ্যমান ৷
হাদীসে ভােগবিমুখতা প্রসঙ্গ
আর এ প্রসঙ্গে অনেক হাদীসও রয়েছে ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান আবুল আব্বাস হায়ওয়া
ইবন শুরায়হ …… মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস সুত্রে বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ
ইবন আব্বাস (রা) বলেছেন, যে আল্লাহ তাআলা একদা হযরত জিবরাঈলের সাথে এক
ফেরেশতড়াকে তার নবীর কাছে পাঠালেন ৷ তখন সেই ফেরেশতা নবীজীকে বললেন, “আল্লাহ আপনাকে দুটি
বিষয়ের যে কোন একঢিকে বেছে নেয়ার ইখতিয়ার দিচ্ছেন, আপনি সাধারণ বান্দা ও নবী
হবেন, নাকি বাদশা ও নবী হবেন ৷ ” তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) জিবরাঈল আলাইহিস সালামের
দিকে এমনতাবে তাকালেন, যেন তিনি এ ব্যাপারে তার পরামর্শ জানতে চাচ্ছেন ৷ তখন
হযরত জিবরাঈল (আ) রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে বিনয়ীকে বেছে নেয়ার ইঙ্গিত করলেন ৷ তখন
তিনি বললেন, আমি বরং বান্দা-নবী হব ৷ তিনি (ইবন আব্বাস) বলেন, এই কথা বলার পর
থেকে আল্লাহর সাক্ষাৎ পাওয়া পর্যন্ত তিনি কােনদিন হেলান দিয়ে কোন খাবার খাননি ৷ বুখারী
তাঁর ‘আত তারীখে’ হাওয়াত ইবন শুরায়হ্ সুত্রে এবং নাসাঈ আমর ইবন উছমান সুত্রে
এভাবেই তা রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আর সহীহ্ বুখারীতে প্রায় এ জাতীয় শব্দেই মুল হাদীসখানা
বিদ্যমান রয়েছে ৷ আর ইমাম আহমাদ মুহাম্মাদ ইবন ফুযায়ল আবু যুর’আ সুত্রে (আমি বলি,
আমার জানা মতে, আবু হুরায়রার সুত্র ছাড়া অন্য কারো থেকে আমি তা জানি না) ৷ তিনি
বলেন, (একবার) জিবরাঈল রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে বসে আসমানের দিকে তাকালেন,
হঠাৎ এক ফেরেশতাকে অবতরণ করতে দেখা গেল ৷ তখন জিবরাঈল বললেন, সৃষ্টি হওয়ার
পর থেকে এই মুহুর্তের পুর্ব পর্যন্ত এই ফেরেশত৷ (কোথাও) অবতীর্ণ হননি ৷ অতঃপর তিনি
যখন অবতরণ করলেন তখন তিনি বললেন হে মুহাম্মদ ! আপনার রব আমাকে আপনার কাছে
পাঠিয়েছেন (আপনার মত গ্রহণ করার জন্য) যে, তিনি আপনাকে বাদশা-নবী করবেন, নাকি
বান্দা-নবী? আমি বলি, আমার কাছে রক্ষিত মুসনাদে আহমদের কপিতে আমি হাদীসখানি
এরুপ সংক্ষিপ্তভাবে পেয়েছি ৷ আর এক্ষেত্রে এটি আহমদের একক বর্ণনা ৷