মাটিতে আঘাত করলেন ৷ তার ফলে যমযম কুপের সাথে সংযোগ সম্পন্ন একটি ঝর্ণার সৃষ্টি
হয় ৷ হযরত জিবরাঈল (আ) ও প্রিয়নবী (সা) দু’জনে ওই পানিতে উয়ু করেন ৷ তারপর
জিবরা ঈল (আ) চার সিজদায় দু’রাকআত নামায আদায় করেন ৷ তার নয়ন জুড়ালো ও হৃদয়
প্রশান্ত হলো ৷ এমতাবস্থায় রাসুলুল্পাহ্ (সা) আপন ঘরে ফিরে এলেন ৷ আল্লাহর নিকট থেকে
তাই এলো যা তিনি পসন্দ করতেন ৷ ঘরে ফিরে গিয়ে তিনি হযরত খাদীজার হাত ধরে তাকে
নিয়ে ওই ঝর্ণাধারার নিকট আসলেন ৷ তারপর জিবরাঈল (আ) যেমনটি উয়ু করেছিলেন
রাসুলুল্লাহ্ (সা)-ও তেমনটি উবু করলেন ৷ তারপর চার সিজদাসহ দু’রাকআত নামায আদায়
করলেন ৷ এরপর থেকে তারা দৃজনে গোপনে নিয়মিত নামায আদায় করতেন ৷
আমি বলি, হযরত জিবরাঈল (আ) এর এই নামায তার বায়তৃল্লাহ্ শরীফের সম্মুখে দৃ বার
আদায় করা নামায থেকে পৃথক একটি নামায ৷ বায়তৃল্লাহ্ শরীফের সম্মুখে দু বার আদায়কৃত
নামাষে তিনি পড়াচ ওয়াক্ত নামাষের প্রথম ও শেষ ওয়াক্ত সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছেন এবং ওই
শিক্ষামুলক নামায ছিল মিরাজ রাতে পড়াচ ওয়াক্ত নামায ফরয হওয়ার পরের ঘটনা ৷ এ
বিষয়ে আলোচনা পরবর্তীতে আসবে ইনশাআল্লাহ্ ৷
পবিস্দ
সর্বপ্রথম ঈমান আনয়নকায়ী সাহাৰায়ে কিরাম
ইবন ইসহাক বলেন, ওই ঘটনার একদিন পর হযরত আলী (বা) তাদের নিকট আসেন ৷
তখন রাসুলুল্লাহ্ ও হযরত খাদীজা নামায আদায় করছিলেন ৷ আলী (বা) বললেন : আপনারা এ
কী করছেন ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, এটি আল্লাহ্র দীন ৷ তার নিজের জন্য এ দীনকে তিনি
মনোনীত করেছেন এবং এ দীন সহকারে তিনি রাসুলগণকে প্রেরণ করেছেন ৷ আমি তখন
তোমাকে একক ও লা-শরীক আল্লাহর দিকে এবং তার ইবাদতের দিকে আহ্বান করছি ৷ আমি
তোমাকে আহ্বান জানাচ্ছি লাভ ও উঘৃযা প্রতিমা পরিত্যাগ করতে ৷ হযরত আলী (রা) বললেন,
এটি তো এমন একটি বিষয়, যা ইতোপুর্বে আমি কখনো শুনিনি ৷ আমার পিতা আবু তালিবের
সাথে আলোচনা না করে আমি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না ৷ পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে ঘোষিত
হওয়ার পুর্বে আবু তালিবের নিকট এ গোপনীয় বিষয়টি প্রকাশিত হোক রাসুলুল্লাহ্ (সা) তা
সমীচীন মনে করলেন না ৷ তাই হযরত আলী (রা) কে বললেন, হে আলী ৷ তুমি যদি এখনই
ইসলাম গ্রহণ না কর, তবে আপাতত বিষয়টি গোপন রাখ, কাউকে বলো না ৷ হযরত আলী
(বা) ওই রাত অপেক্ষা করলেন ৷
এরপর আল্লাহ্ তাআলা হযরত আলী (রা)-এর অতরে ইসলাম গ্রহণের আগ্রহ সৃষ্টি করে
দিলেন ৷ ভোর বেলা তিনি রড়াসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট গেলেন এবং বললেন, আপনি আমার
নিকট কি প্রস্তাব পেশ করেছিলেন ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, প্রস্তাবটি এই, তুমি সাক্ষ্য দিয়ে
যে, আল্লাহ ব্যতীত কে ন ইলাহ্ নেই, তিনি একক, তার কে ন শরীক নেই ৷ আর তুমি লাভ ও
উয্যা প্ৰতিমাকে পরিত্যাগ করবে এবং সকল প্রকার অ ৎশীবাদিতড়া থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবে ৷
হযরত আলী তা ইি করলেন এবং ইসলাম গ্রহণ করলেন ৷ তবে পিতা আবু তালিবের ভয়ে তিনি
বাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট যাতায়াত করতেন না ৷ তার ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি তখনকার মত
তিনি গোপন রাখলেন ৷ ইতোমধ্যে যায়দ ইবন হারিছ৷ ইসলাম গ্রহণ করলেন ৷ তারা এভাবে
প্রায় একমাস কাটালো ৷ মাঝে মাঝে হযরত আলী (বা) রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর নিকট আসতেন ৷
হযরত আলী (রা)-এর প্রতি আল্পাহ্ তাআলার অন্যতম অনুগ্রহ ছিল এই যে, ইসলাম গ্রহণের
পুর্বে তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর তত্ত্বাবধানে ছিলেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, ইবন আবী নাজীহ মুজাহিদ সুত্রে বলেছেন যে, হযরত আলী (র)এর
প্রতি আল্লাহ তাআলার অন্যতম অনুগ্রহ ছিল এই যে , একবার কুরায়শ সম্প্রদায় চরম দৃর্তিক্ষে
পতিত হয় ৷ হযরত আবু তালিবের পরিবারের লোকসংখ্যা ছিল অনেক ৷ তখনকার সময়ে
হাশিম গোত্রে অপেক্ষাকৃত ধনী লোক ছিলেন হযরত আব্বাস (বা) রাসুলুল্পাহ্ (সা) তার চাচা
আব্বাস (রা)-কে বললেন, চাচা ! আপনার ভাই আবু তালিবের পরিবারের লােকসংখ্যা তাে
অনেক ৷ মানুষ যে দৃর্ভিক্ষে পতিত হয়েছে তাও তো আপনি দেখতে পাচ্ছেন ৷ আপনি বরং তীর
নিকট যান এবং এমন ব্যবস্থা করুন যাতে পরিবারের ভরণ–পােষণ তার জন্য সহজ হয় ৷ এ
সুত্রে রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত আলী (রা)-কে তার নিকট নিয়ে আসেন এবং নিজের কাছেই
রেখে দেন ৷ হযরত আলী রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নবুওয়াত লাভ পর্যন্ত তার সাথেই থাকেন ৷
হযরত আলী (বা) তার অনুসরণ করেন, তার প্রতি ঈমান আনেন এবং তার বক্তব্যের সত্যতা
স্বীকার করে নেন ৷
ইউনুস ইবন বুকায়র আফীফ থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন যে , আমি ছিলাম একজন
ব্যবসায়ী ৷ একবার হজ্জ মওসুমে আমি মীনাতে উপস্থিত হই ৷ আবদুল মুত্তালিবের পুত্র আব্বাস
(রা)-ও একজন ব্যবসায়ী ছিলেন ৷ ক্রয়-বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে আমি তার নিকট উপস্থিত হই ৷
আমরা সেখানে থাকা অবস্থায় হঠাৎ দেখি একটি র্তাবু থেকে একজন লোক বের হল এবং
কাবামুখী হয়ে নামাষে দাড়িয়ে গেল ৷ তারপর একজন মহিলা এসে তার সাথে নড়ামাষে যোগ
দিল ৷ এরপর একজন বালকও তার সাথে নামাষে শরীক হল ৷ আমি বললাম, হে আব্বাস ৷ এটি
আবার কেমন ধর্ম ? এটি কোন প্রকারের ধর্ম তার কিছুই তো আমি বুঝতে পারছি না ৷ আব্বাস
(বা) বললেন, ইনি হচ্ছেন আবদুল্লাহ-এর পুত্র মুহাম্মাদ (সা) ৷ তার দাবী হচ্ছে আল্লাহ্ তাকে
রাসুল রুপে প্রেরণ করেছেন ৷ পারস্য ও রোমান সম্রাটের সকল ধন-সম্পদ তার হস্তগত হবে ৷
মহিলা টি তার শ্রী ৷ খুওয়ায়লিদের কন্যা খাদীজা (বা) ৷ সে ওর প্রতি ঈমান এসেছে ৷ বালকটি
হল তার চাচড়াত ভাই ৷ আবু৩ তালিবের পুত্র আলী (বা) ৷ সেও তার প্ৰতি ঈমান এন্যেছ ৷
বর্ণনাকা রী আফীফ (বা) পরে আক্ষেপ করে বলেছেন, হায় আমি যদি সেদিন ঈমান আনতাম,
তবে আমি পুরুষদের মধ্যে দ্বিতীয় ঈমান আনয়নকারী হতে প ৷রতাম ৷
ইব্রাহীম ইবন সাআদ মুহাম্মদ ইৰ্ন ইসহাক থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ ওই হাদীছের
ভাষ্য এরুপঃ হঠাৎ নিকটবর্তী একটি র্তাবু থেকে একজন লোক বের হল এবং আকাশের দিকে
তাকিয়ে দেখল ৷ যখন সে দেখল যে, সুর্য কিছুটা ঢলে পড়েছে, তখন সে নামাষে দাড়িয়ে গেল ৷
তারপর তার পেছনে হযরত খাদীজা (রা)-এর দীড়ানাের কথা এ হাদীছে উল্লিখিত হয়েছে ৷
ইবন জারীর বলেন, মুহাম্মাদ ইবন উবায়দ মুহারিৰী ইয়াহ্ইয়া ইবন আফীফ থেকে বর্ণনা
করেন যে, তিনি বলেছেন, জাহিলী যুগে আমি মক্কায় এসেছিলাম ৷ সেখানে আমি অবস্থান
করছিলাম আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিবের নিকট ৷ সুর্য যখন উদিত হল এবং আকাশের
অনেক উপরে উঠে গেল, তখন আমি কাবাপৃহের দিকে তাকিয়েছিলাম ৷ আমি দেখতে পেলাম ,
একটি যুবক সেখানে এসে আকাশের দিকে তাকাল ৷ তারপর কাবাগৃহের সম্মুখে এসে সেটিকে
সামনে রেখে র্দাড়িয়ে গেল ৷ অবিলম্বে সেখানে উপস্থিত হল একটি বালক এবং সে তার ডান
শ র্দাড়িয়ে গেল ৷ এরপর এল একজন মহিলা ৷ সে দীড়াল ওদের দু’জনের পেছনে ৷ প্রথম
যুবকটি রুকুতে গেল ৷ সাথে সাথে বালক ও মহিলাটি রুকুতে ৫গল ৷ যুবকটি রুকু থেকে মাথা
তুলল ৷ বালক এবং মইিলাটিও রুকু থেকে মাথা তুলল ৷ তার ৷বপর যুবক সিজদায় ৫পল ৷ ওরা
দু জনও সিজদায় গেল ৷ আমি বললাম, ৫হ আব্বাস এতে তা এক আশ্চর্যজনক ব্যাপার ৷ তিনি
বললেন আশ্চর্যজনকই ব৫ট ৷ আব্বাস বললেন, যুবকটির পরিচয় তুাম জান কি ? আমি বললাম,
না, জানি না৷ তিনি বললেন, যে হল আমার তা ৷তিজা মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন আবদুল
মুত্তালিব ৷ বালকটির পরিচয় তোমার জানা আছে কি ? আমি বললাম না, জান না৫নই ৷ তিদি
বললেন, যে হল আবু তালিবের পুত্র আলী (রা) ৷ ওদের পিছনে মহিলাটি ৫ক ৫চন কি ? আমি
বললাম, না, চিনি না ৷ তিনি বললেন, সে হল আমার তাতিজার শ্রী ৷ থুওয়ায়লিদের কন্যা
খাদীজা ৷(রা) ৷ ভাতিজা মুহাম্মদ (সা) আমাকে বলেছে, আপনার প্রতিপালক হলেন আকাশ ও
পৃথিবীর প্রতিপ লক ৷ তার কাজকর্ম এই যা এখন তুমি ৫দখেছ ৷ আল্লাহর কসম দুনিয়াতে ওই
দীনের অনুসা ৷রী ওই তিনজন ব্যতীত অন্য কেউ আছে বলে আমার জা ৷ন৷ ৫নই ৷
ইবন জারীর বলেন, মুহাম্মদ ইবন মুনকাদির রাবীআ ইবন আবী আবদুর রহমান, আবু
হাযিয ও কালবী বলেছেন যে, সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন হযরত আলী (বা) কালবী (রা)
বলেন, হযরত আলী নয় বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন ৷ ইবন ইসহাক বলেছেন, পুরুষদের
মধ্যে হযরত আলী (বা) প্রথম ঈমান আনয়ন করেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে নামায আদায়
করেন এবং তাকে সত্য বলে গ্রহণ করেন ৷ তখন তার বয়স ছিল দশ বছর ৷ ইসলামের পুর্বেও
তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর পরিবারভুক্ত ছিলেন ৷
ওয়াকিদীও হযরত আলী (রা) দশ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেছেন বলে উল্লেখ
করেছেন ৷
ওয়াকিদী বলেন, আমাদের ইমড়ামগণ এ বিষয়ে একমত যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নবুওয়াত
লাভের এক বছর পর হযরত আ ৷লী (রা) ইসলাম গ্রহণ করেছেন ৷
মুহাম্মদ ইবন কাআব বলেন, এই উম্ম৫৩ র মধ্যে সর্বপ্রথম ঈমান আনয়ন করেছেন খাদীজা
(বা) এবং পুরুষদের মধ্যে প্রথম ঈমান আনয়নক৷ রী দু’ জন হলেন হযরত আবু বকর (রা)ও
হযরত আলী (রা) ৷ হযরত আবু বকরের ঈমান আনয়নের পুর্বে হযরত আ ৷লী ঈমান আনয়ন
করেন ৷ পিতার ভয়ে হযরত আলী (রা)৩ তার ইসলাম গ্রহণের কথা গোপন ৫রখেছিলেন ৷
একদিন তার পিতার মুখোমুখি হলে তার পিতা ৷ব,লেন তুমি কি ইসলাম গ্রহণ করেছ ? তিনি
বললেন, হ্যা ৷ পিতা বললেন, তবে তোমার চাচাত ভাইকে সাহায্য সহযোগিতা করবে অবশ্য,
সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণের কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন হযরত আবু বকর (রা ) ৷
ইবন জারীর তার ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, শুব৷ ইবন আব্বাস (রা ) সুত্রে
বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন, সর্ব প্রথম নামায আদায় করেছেন আলী আবদুর হামীদ হযরত
জাবির থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) নবুওয়াত লাভ করেছেন সােমবারে
আর আলী (রা) নামায আদায় করেছেন মঙ্গলবারে ৷ আবু হামযড়া নামে জনৈক আনসারী বাড়ি
থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, আমি যায়দ ইবন আরকাম (রা)-কে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্পাহ্
(সা)-এর নিকট সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন আলী ইবন আবী তালিব (রা) ৷ বর্ণনাকায়ী
বলেন, এরপর এ বর্ণনাটি আমি নাখঈ এর নিকট পেশ করি ৷ তিনি এটি প্রত্যাখ্যান করেন এবং
বলেন যে, সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন আবু বকর (রা) ৷ উবায়দুল্লাহ্ ইবন মুসা
আব্বাদ ইবন আবদুল্লাহ্ থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন আমি আলী (রা)-কে বলতে
শুনেছি, আমি আল্লাহর বান্দা তার রাসুলের ভাই এবং আমিই সিদ্দীকে আকবর তথা প্রধান
সত্যায়নকারী ৷ আমার পরে কেউ এ উপাধি দাবী করলে সে হবে মিথ্যাবাদী ৷ অন্যদের নামায
আদায়ের সাত বছর পুর্ব থেকেই আমি নামায আদায় করে এসেছি ৷
ইবন মাজাহ্ (র) মুহাম্মদ ইবন ইসমাঈল উবড়ায়দৃল্লাহ্ ইবন মুসা ফাহমী সুত্রে এ
হাদীছ উদ্ধৃত করেছেন ৷ উৰায়দুল্লাহ্ ইবন মুসা মুলত শিয়া ৷ তবে তিনি বিশুদ্ধ হাদীছ
বর্ণনাকারীদের অন্তর্ভুক্ত ৷ তবে আবু হাতিম বলেছেন যে মুলত একজন কট্টর শিয়া ৷ আলী ইবন
মাদানী বলেন, যে প্রচুর অগ্রহণা:যাগ্য হাদীছ বর্ণনা করেছে ৷ মিনহাল ইবন আমর আন্থাভাজ্যা
বর্ণনাকারী ৷ তার শায় খ হলেন আব্বাদ ইবন আবদুল্লাহ আসাদী কুফী ৷ আব্বাদ সম্পর্কে আলী
ইবন মাদীনী বলেছেন যে, হাদীছ শাদ্রে তিনি দুর্বল লোক বলে গণ্য ৷ ইমাম বুখারী (র)
বলেছেন, এই রাবী সন্দেহমুক্ত নন ৷ ইবন হাইয়ান তাকে আস্থাভাজনদের অন্তর্ভুক্ত রেখেছেন ৷
মােদ্দাকথা উপরোক্ত হাদীছটি সর্বাবন্থায়ই অথহণযােগ্য ৷ হযরত আলী (বা) এমন কথা
বলেননি ৷ ণ্লাকজনের নামায পড়ার সাত বছর পুর্বে তিনি নামায আদায় করেছেন এটা কী করে
সম্ভব ? এমন কথা কল্পনাই করা যায় না ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ অন্যান্য আলিমগণ বলেন,
এই উম্মতের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (বা) ৷
বন্তুত এই সব বক্তব্যের সমন্বয়সুচক ব্যাখ্যা এই যে, মহিলাদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম
গ্রহণ করেন হযরত খাদীজা (রা) ৷ তিনি সকল মহিলা থেকে এ ব্যাপারে আঃবর্তী ৷ কারো কারো
মতে নারী-পুরুষ সবার চেয়ে আঃবর্তী ৷ ক্রীতদাসদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন
হযরত যায়দ ইবন হড়ারিছা (রা) ৷ বালকদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী হযরত আলী
ইবন আবী তালিব (রা) ৷ কারণ, তখন তিনি অপ্রপ্তেবয়স্ক ছিলেন ৷ স্বাধীন এবং প্রাপ্তবয়স্ক
লোকদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (বা) ৷ ইতোপুর্বে
যাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের তুলনায় হযরত আবু বকরের ইসলাম গ্রহণ অধিকতর
কল্যাণকর ও তাৎপর্যবহ ছিল ৷ কারণ, তিনি ছিলেন আরবের সম্মানিত নেতা, কুরড়ায়শ বংশের
সর্বওনে শ্রদ্ধেয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিতু ও সম্পদশালী লোক ৷ তিনি ছিলেন ইসলামের প্রতি
আহ্বানকারী, আল্লাহ্ ও তার রাসুলের আনুগত্যে ধনসম্পদ ব্যয় করে তিনি সকলের প্রিয় ও
ভালোবাসার পত্র হয়ে উঠেছিলেন ৷ এ বিষয়ে পরে আলোচনা আসবে ৷
ইউনুস ইবন ইসহাক থেকে বর্ণনা করেন যে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা) প্রিয়নবী
(সা) এর সাথে সাক্ষাত করে বলেছিলেন, আপনার সম্পর্কে কুরাশের লোকেরা যা বলছে তা কি
সত্য : তারা তো বলছে যে , আপনি আমাদের উপাস্যদেরকে বর্জন করছেন , আমাদের বুদ্ধিমান
নােকদেরকে মুর্থ ঠাওরাচ্ছেন এবং আমাদের পুর্বপুরুষদের কাফির সাব্যস্ত করছেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হীা, তাই ৷ আমি তো আল্লাহর রাসুল ও তার নবী ৷ তিনি আমাকে
প্রেরণ করেছেন তার দেয়৷ রিসালাত প্রচার করার জন্যে এবং তােমাদেরকে সত্য পথে আল্লাহর
দিকে ডাকার জন্যে ৷ আল্লাহর কসম, এটাই সতব্রপখ ৷ হে আবু বকর! আমি তোমাকে একক
লা-শরীক আল্লাহর দিকে আহ্বান জানাচ্ছি ৷ তুমি অন্য কারো ইবাদত করবে না ৷ র্তার
আনুগত্যের ব্যাপারে তোমার নিকট সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে কুরআন পাঠ করে গােনালেন ৷ হযরত আবু বকর (রা)
তাৎক্ষণিকভাবে তা গ্রহণ বা বর্জন কিছুই করলেন না ৷ এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং
মুর্তিপুজা ত্যাগ করলেন ৷ আল্লাহর শরীক তথাকথিত অংশীদারগুলেকে বর্জন করলেন এবং
ইসলামের সত্যতা স্বীকার করলেন ৷ ঈমানদার এবং সত্যায়নকারীরপে তিনি বাড়ী ফিরে
গেলেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন মুহাম্মদ ইবন আবদুর ররমান ইবন আবদুল্লাহ ইবন ২স ইন তামীমী
বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (যা) বলেছেন, আমি যাকেই ইসলামের দাওয়াত দিয়েছি সে-ই প্রথমে
দ্বিধাদ্বস্থে ভুগেছে, ইতন্তত করেছে এবং চিন্তা ভাবনা করেছে কিভু আবু বকর (বা) তার
ব্যতিক্রম ৷ আমরাত র্ণীর নিকট ইসলাম গ্রহণের প্রস্তাব দেয়ার পর তিনি কােনরুপ দ্বিধা করেননি
কোন প্রকারের ইতস্তত তারও প্রকাশ করেননি ৷ দেরীও করেননি ৷ ইবন ইসহাকের বর্ণনায়
উল্লিখিত তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সমর্থনও করেননি বর্জ্যও করেননি বক্তব্যের অর্থ এটিই ৷ কারণ,
ইবন ইসহাক ও অন্যরা উল্লেখ করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নবুওয়াত লাভের পুর্বেও
হযরত আবু বকর (রা) রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাহচর্যে থাকতেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
সত্যব দি ৷, বিশ্বস্ততা, সৎ স্বভ ৷ব ও মধুর চরিত্র সম্পর্কে তিনি সম্যক অবগত ছিলেন ৷ এসব
গুণাবলী তাকে সৃষ্টিজগতে র সাথে মিথ্যাচার থেকে বিরত রেখেছে, তাহলে৩ তিনি কেমন করে
আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যাচার করবেন ? এজন্যে “আল্লাহ্ তাকে রাসুলরুপে প্রেরণ করেছেন শুধু
এটুকু বক্তব্য শুনে তিনি তাকে সত্যবাদী বলে মেনে নিয়েছেন ৷ কোন প্রকারের বিলম্বও
দােদুল্যমানতা দেখাননি ৷
হযরত আবু বকর (রা) এর জীবনী বিষয়ক একটি পৃথক গ্রন্থে আমরা বীর ইসলাম গ্রহণের
পটভুমি ও বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করেছি ৷৩ তার মর্যাদা এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যাবলীও আমরা
সেখানে উল্লেখ করেছি ৷ এরপর আমরা হযরত উমর ফ রুক (রা)-এর জীবনী আলোচনা
করেছি ৷৩ র্তারা উভয়ে রাসুলুল্লাহ্ (না) থেকে যে সব হাদীছ বর্ণনা করেছেন, সেগুলো তথায়
সন্নিবেশিত করেছি ৷ হযরত আবু বকর (রা) থেকে যে সকল হাদীছ মন্তব্য ও ফা৩ ৷ওয়া বর্ণিত
হয়েছে, উক্ত গ্রন্থে সেগুলো আমরা এসেছি ৷ উক্ত গ্রন্থ৩ তিন খণ্ডে সমাপ্ত হয়েছে ৷ সকল প্রশংসা
আল্লাহর ৷
হযরত আবু বকর (রা) ও হযরত উমর (রা) এর মাঝে সৃষ্ট বিতর্ক বিষয়ক আবু দারদা
কর্তৃক বর্ণিত হাদীছে সহীহ্ বুখারীতে উদ্ধৃত হয়েছে যে, প্রসঙ্গক্রমে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বলেছিলেন :
আল্লাহ তাআলা আমাকে তোমাদের নিকট রাসুলরুপে প্রেরণ করেছেন ৷ কিন্তু তোমরা
আমাকে বলেছিলে আপনি মিথ্যাবাদী আর আবু বকর বলেছিলেন, তিনি স৩ ইি বলেছেন ৷ আবু
বকর (বা) নিজের জানমাল দিয়ে আমাকে সহযােগি৩ ৷ করেছেন ৷ এখন আমার সম্মানার্থে
তোমরা কি আমার এই সাথীকে একটু শান্তিতে থাকতে দিবে ? শেষ কথাটি তিনি দুবার
বলেছেন ৷ এরপর থেকে হযরত আবু বকর (বা) ক ৷রো পক্ষ :থকে ক্লেশদায়ক কোন আচরণের
সম্মুখীন হননি ৷ এটি৩ ৷ প্রায় সুস্পষ্ট দলীল যে, হযরত আবু বকর (রা) সর্বপ্রথম ইসলাম
গ্রহণকারী ব্যক্তি ৷ ইমাম তিরমিযী ও ইবন হিব্বান শু বা আবু সাঈদ থেকে বর্ণনা করেছেন
যে, প্রসঙ্গক্রমে আবু বকর (রা) বলেছিলেন, আমি কি ওই খিলাফতের অধিকতর যোগ্য নই ?
আমি কি সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ব্যক্তি নই ? আমি কি অমুক অমুক ভৈবশিক্টোব অধিকারী
নই ?
ইবন আসাকির হারিছ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি হযরত আলী (রা) কে
বলতে শুনেছি, পুরুষদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী হলেন হযরত আবু বকর (বা) আর
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে নামায আদায়কারী সর্বপ্রথম পুরুষ হলেন আলী ইবন আবু তালিব
(রা) ৷
শু’বা যায়দ ইবন আরকাম থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
সাথে প্রথম নামায আদায় করেছেন আবু বকর সিদ্দীক (রা) ৷ এ হাদীছ ইমাম আহমদ, তিরমিযী
ও নাসাঈ (র) প্রমুখ শু’ব৷ সুত্রে উল্লেখ করেছেন ৷ ইমাম তিরমিযী মন্তব্য করেছেন যে, এটি
হাসান ও সহীহ্ হাদীছ ৷
ইতোপুর্বে শু’বা যায়দ ইবন আরকাম সনদে ইবন জারীরের বর্ণনা উদ্ধৃত হয়েছে যে
যায়দ ইবন আরকাম (যা) বলেছেন, সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন আলী ইবন আবৃত ৩ালিব ৷
আমর ইবন মুবরা বলেন, এ বর্ণনা আমি ইবরাহীম নাখঈ-এর নিকট আলোচনা করেছিলাম ৷
তিনি এটি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন যে, সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন আবু বকর
সিদ্দীক (রা) ৷
ওয়াকিদী আপন সনদে আবু আরওয়৷ দাওসী এবং আবু মুসলিম ইবন আবদুর রহমানসহ
একদল পুর্ববর্তী বর্ণনাকারী থেকে বর্ণনা করেছেন যে , সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন হযরত
আবু বকর সিদ্দীক (রা) ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান বলেনহযরত ইবন আব্বাস (রা)-কে
জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, সর্বপ্রথম ঈমান আনয়ন করেছেন কে ? উত্তরে তিনি বলেন, আবু
বকর সিদ্দীক (রা) ৷ তুমি কি হাসসানের ওই বক্তব্য শুননি :
যদি কে ন আস্থাভাজন দীনী ভাইয়ের ব্যথা বেদনা ও দুঃখ-কষ্টের কথা উল্লেখ করতে চাও
তবে তোমার ভাই আবু বকর (রা) এর ভোগ্ করা দুঃখ বেদনার কথা উল্লেখ করো ৷ দীনেব
উন্নয়নে ও প্রসারে তিনি যে ত্যাগ ও কুরবানী করেছেন৩ তা উল্লেখ করো ৷
নবী করীম (সা) এর পর তিনিই জগতের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, বিশ্বস্ততম ও শ্রেষ্ঠ ন্যায়বিচারক ৷
তিনি যা সহ্য করেছেন তার রদৌলতে তিনি সর্বোত্তম ৷
নবী করীম (সা) এর অব্যবহিত পরেই তার স্থান তিনি দ্বিতীয় স্থান অধিকারী এবং তার
অবস্থান প্রশং সাযোগ্য ৷ মানুষের মধ্যে তিনিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি রাসুলাণকে সত্য বলে গ্রহণ
করেছেন ৷
ল্লাহ্র নির্দেশ মান্য করে এবং তার দীর্ঘদিনের সাথী মুহাম্মদ (সা ) এর পদাৎ ক অনুসরণ
করে তিনি প্রশংসনীয় জীবন যাপন করেছেন ৷ ওই পথ থেকে তিনি কখনো বিচ্যুত হননি ৷
আবু বকর ইবন আবী শায়বা আমির থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আামি হযরত
ইবন আব্বাস (রা) কে জিজ্ঞেস করেছি অথবা তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, সর্বপ্রথম
ইসলাম গ্রহণ করেছেন কে ৷ উত্তরে তিনি বলেছিলেন, তুমি কি হাসসানের বক্তব্য শুননি ৷ এ
বলে তিনি উপরোল্লিখিত কবিতাটি আবৃত্তি করলেন ৷ হায়ছাম ইবন আদী হযরত ইবন আব্বাস
(রা) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ আবুল কাসিম বাগভী বলেন, ইউসুফ ইবন মাজিশুন
বলেছেন, আমি আমাদের অনেক শায়খের সান্নিধ্য পেয়েছি ৷ তন্মধ্যে মুহাম্মদ ইবন মুনকাদির,
রাবীআ ইবন আবু আবদুর রহমান, সালিহ্ ইবন কায়সান এবং উছমান ইবন মুহাম্মদ প্রমুখ
রয়েছেন ৷ হযরত আবু বকর সিদ্দীক (বা) যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী, এ বিষয়ে তাদের
কেউই বিন্দমাত্র সন্দেহ পোষণ করতেন না ৷
অমি বলি যে, ইব্রাহীম নাখঈ মুহাম্মাদ ইবন কাআর, মুহাম্মদ ইবন সীরীন এবং সাআদ
ইবন ইবরাহীম প্রমুখ (র) অনুরুপ বলেছেন ৷ আহলুস সুন্নাহ জামাআতের অধিকাৎশের নিকট
মশহুর অভিমত এটিই ৷
সাআদ ইবন আবী ওয়াক্কাস এবং মুহাম্মদ ইবন হানফিয়্যাহ থেকে ইবন আসাকির বর্ণনা
করেছেন যে, র্তারা দু’জনে বলেন, হযরত আবু বকর সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী নন, বরং
তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলাম গ্রহণকারী ৷ সাআদ বলেন, হযরত আবু বকর (রা)-এর পুর্বে আরো
পাচজন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন ৷ সহীহ্ বুখারীতে হাম্মাম ইবন হারিছেব বর্ণিত হাদীছে আছে
যে, আমার ইবন ইয়াসির (না) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে দেখেছি
যে, তার সাথে রয়েছেন পাচজন ক্রীতদাস, দু’জন মহিলা এবং আবু বকর (রা) ৷
ইমাম আহমদ ও ইবন মাজাহ আসিম ইবন আবু নুজুদ সুত্রে যির থেকে ইবন মাসউদের
বরাতে হাদীছ বর্ণনা করেছেন যে প্রথম ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাতজন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা), আবু বকর (রা), আমার (বা) , তার মা সুমাইয়া (রা) , সুহায়ব (বা), বিলাল
(রা) ও মিকদাদ (রা) ৷ বস্তুত আপন চাচার তত্ত্বড়াবধানের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে আল্লাহ্
তাআলা নির্যাতন থেকে রক্ষা করেছেন ৷ আর আবু বকরকে রক্ষা করেছেন অন্যান্যদেরকে তার
গোত্রের মাধ্যমে অন্যান্যদেরকে মুশরিকগণ ধরে নিয়ে যায় এবং লোহার পোশাক পরিয়ে প্রখর
রৌদ্রের মধ্যে দগ্ধ করতে থাকে ৷ অবশেষে হযরত বিলাল ব্যতীত অন্যরা মুশরিকদের
ইচ্ছাদ্বুযায়ী১ বক্তব্য দিতে বাধ্য হন ৷ কিন্তু হযরত বিলাল (রা) আল্লাহর সভুষ্টি অর্জনের পথে
নিজের জীবনকে তুচ্ছ এবং নিজের সম্প্রদায়কে গুরুতুহীন জ্ঞান করেন ৷ ফলে, মুশরিকগণ তাকে
নিয়ে বালকদের হাতে তুলে দেয় ৷ তারা র্তাকে রশিতে বেধে নিয়ে অত্যাচার করতে করতে
মক্কার অলিতে-ণলিতে ঘুরতে থাকে ৷ তিনি তখনও বলছিলেন আহাদ’ আহাদ অল্লোহ্ -এক
আল্লাহ এক ৷ ছাওরী (র) থেকে মুরসালরুপে এ হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে ৷
ইবন জারীর (র) মুহাম্মদ ইবন সাআদ ইবন আবী ওযাককাস থেকে সুত্র ও বিষয়বস্তুর
দিক থেকে অগ্রহণযোগ্য একটি বর্ণনায় বলেছেন যে, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে
জিজ্ঞেস করেছিলাম, আবু বকর (বা) কি আপনাদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ? উত্তরে
তিনি বলেছিলেন না, তা নয় ৷ তার পুর্বে ৫০ জনের অধিক লোক ইসলাম গ্রহণ করেছিল ৷ তবে
তিনি আমাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলাম গ্রহণকারী ছিলেন ৷
ইবন জারীর বলেন, অন্য একদল আলিম বলেছেন যে, সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন
যায়দ ইবন হারিছা (রা) ৷ অন্যদিকে ইবন আবী যি’ব থেকে ওয়াকিদী বর্ণনা করেন, আমি
যুহরীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম মহিলাদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন কে ? তিনি
বললেন, খাদীজা (রা) ৷ আমি বললাম পুরুষদের মধ্যে কে ? তিনি বললেন, যায়দ ইবন হারিছা
(রা), অনুরুপভাবে উবওয়া সুলায়মান ইবন ইয়াসার এবং আরো অনেকে বলেছেন যে,
পুরুষদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন যায়দ ইবন হারিছা (রা) ৷
উপরোক্ত সবগুলো মন্তব্য ও অভিমতের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে ইমাম আবু হানীফা (র)
বলেছেন, স্বাধীন বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন হযরত আবু বকর
সিদ্দীক (বা) , মহিলাদের মধ্যে হযরত খাদীজা (রা) , ক্রীতদাসদের মধ্যে যায়দ ইবন হারিছা
(বা) এবং বালকদের মধ্যে হযরত আলী ইবন আবু তালিব (রা) ৷
মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন, আবু বকর (রা) এর ইসলাম গ্রহণ এবং তা প্রকাশ করার পর
তিনি লোকজনকে আল্লাহর পথে দাওয়াত তে শুরু করলেন ৷ নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনের
নিকট তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও মিশুকরুপে পরিচিত ছিলেন ৷ কুরায়শ বংশের তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ
কুলজী বিশারদ ছিলেন ৷ উক্ত বংশের কল্যাণ-অকল্যাণ সম্পর্কে তিনি ছিলেন সর্বাধিক অবগত ৷
ব্যবসায়ী, চরিত্রবান এবং সর্বজন পরিচিত ব্যক্তি হিসেবে তীর প্রসিদ্ধি ছিল ৷ তার জ্ঞান গরিমা
ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং সুন্দরতম সড়াহচর্য লাভের আশায় লোকজন র্তার নিকট উপস্থিত হত ৷
যারা তীর নিকট আসত , তাদের মধ্য থেকে যাদেরকে তিনি বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন মনে করতেন,
তাদেরকে তিনি ইসলামের দাওয়াত তেন ৷ মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন আমার জানা মতে
১ প্রাণরক্ষার জন্য এমনটি করা জাইয ৷ সম্পাদকদ্বয়
যুবায়র ইবন আওয়াম (রা) , উছমান ইবন আফ্ফান (রা) , তালহ৷ ইবন উবায়দুল্লাহ্ (বা) ,
সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাস ও আবদুর রহমান ইবন আওফ (রা) প্রমুখ তার হাতে ইসলাম
গ্রহণ করেন ৷ তারা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দরবারে হাযির হন ৷ সাথে ছিলেন হযরত আবু বকর
(বা) ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তাদের নিকট ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত পেশ করেন এবং তাদেরকে
কুরআন পাঠ করে শুনান এবং তাদেরকে জানিয়ে দেন যে, ইসলাম-ই সত্য ও সঠিক ধর্ম ৷ তখন
তারা ঈমান আনয়ন করেন ৷ ইসলাম গ্রহণে অগ্রবর্তী এই আটজন রাসুল (না) যে সত্য নবী
বলে মেনে নেন এবং আল্লাহ্ তা আলার পক্ষ থেকে তার নিকট যা এসেছে তার প্রতি ঈমান
আনয়ন করেন ৷
ওয়াকিদী৩ালহ৷ ইবন উবায়দিল্পাহ্ (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, একদিন আমি
বুসরার১ বাজারে উপস্থিত হই ৷ তখন একজন যাজককে তার উপাসনালয়ে দেখতে পাই ৷ তিনি
বলছিলেন, মওসুমী ব্যবসায়ীদেরকে জিজ্ঞেস করো তাদের মধ্যে হারম শরীফের অধিবাসী কেউ
আছে কিনা ? তালহ৷ (রা) বললেন, আমি বললাম ই৷ আমি আছি ৷ তিনি বললেন, আহমদ কি
ইং৩ ৷ মধ্যে আবির্ভুত ৩হয়েছেন ? আহমদ কে ? আমি জিজ্ঞেস করলাম-তিনি বললেন,
আবদুল্লাহ্র পুত্র এবং আবদুল মুত্তালিবের দৌহিত্র আহমদ এটিত ৷ ৩র আবিভারৈর মাস ৷ তিনি
সর্বশেষ নবী ৷৩ তার আবির্ভ৷ ৷বের স্থান হল মক্কার হারাম শরীফ ৷ তিনি হিজরত করে যাবেন
খেজুর বৃক্ষশোভিত পাথুরে এবং লবণাক্ত জমিতে ৷ অতএব আপনি সতর্ক থাকুন, তীর থেকে
কল্যাণ লাভে কেউ যেন আপনার চেয়ে অগ্রগামী না হয় ৷ বর্ণনাকারী তালহ৷ (রা) বলেন,
যাজকের কথা আমার মনে দাগ কাটে ৷ আমি দ্রুত ওখান থেকে বেরিয়ে পড়ি এবং মক্কা
উপস্থিত হই ৷
এখানে কোন নতুন ঘটনা ঘটেছে কিনা আমি জানতে চাই ৷ লোকজন বলল, ই৷ ঘটেছে
বৈকি ৷ আবদৃল্লাহ্র পুত্র আল-আমীন মুহাম্মদ নিজেকে নবী বলে দাবী করেছেন ৷ আবু বকর
ইবন আবু কুহাফ৷ তার অনুসরণ করেছেন ৷ আমি হযরত আবু বকরের (রা) নিকট গেলাম এবং
বললাম, আপনি ক্লি ওই লোকের অনুসরণ করেছেন ? তিনি বললেন, হী৷ করেছি ৷ তৃমিও তার
নিকট যাও এবং৩ ব অনুসরণ কর ৷ কারণ তিনি সত্যের প্রতি আহ্বান করছেন ৷ তালহ৷ (রা)
যাজকের বক্তব্য আবু বকরকে জানালেন হযরত আবু বকর (বা) হযরত ত লাহ৷ (রা)-কে নিয়ে
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট গিয়ে উপস্থিত হলেন ৷ তালহ৷ (রা) ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং
যাজকের বক্তব্য রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে জানালেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাতে খুশী হলেন ৷ আবু বকর
(রা) ও তালহ৷ (রা)-এর ইসলাম গ্রহণের পর নাওফিল ইবন খুওয়ায়লিদ ইবন আদবিয়্যা
তাদের দু’জনকে পাকড়াও করে ৷ সে কুরায়শের সিৎহ বলে পরিচিত ছিল ৷ একটি রশিতে সে
তাদের দু’জনকে বেধে ফেলে ৷ বনুতায়ম গোত্রের কেউই তাদেরকে রক্ষা করতে পারল না ৷ এ
জন্যে আবু বকর (বা) ও তালহ৷ (রা)-কে সাথীদ্বয় নামে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে ৷ রাসুলুল্লাহ্
(সা) এ বলে হে আল্লাহ! ইবন
আদৃবিয়্যা-এর অনিষ্ট থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন ৷ এটি বায়হাকীয় বর্ণনা ৷
১ এটা কিন্তু ইরাকের প্রসিদ্ধ বসর৷ নগরী নয় ৷ এটা সিরিয়ার একটি স্থান , যা পরবর্তীতে হুরবান বা হারান
নামে বিখ্যাত হয় ৷ সম্পাদকদ্বয়
হাফিয আবুল হাসান খায়ছামাহ আইশা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
একদা হযরত আবু বকর (বা) যাত্রা করলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথোসাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ৷
জাহিলী যুগেও৩ তারা দু’ জনে অম্ভরঙ্গ ছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে তার সাক্ষাত হল ৷
আবু বকর (রা) বললেন, হে আবুল কাসিম আপনার সম্প্রদায়ের আসরে তো আপনি অনুপ
থাকেন ৷ আর লোকজন সকলেই আপনার সমালোচনা করে এবং আপনাকে তাদের বাপ দাদার
ব্যাপারে অর্থাৎ তাদের ধর্মত্যাগের ব্যাপারে দোষারোপ করে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “আমি
আল্লাহর রাসুল ৷ আমি তোমাকে আল্লাহর দিকে আহ্বান জানাচ্ছি ৷ তার কথা শেষ হওয়ার পর
পরই আবু বকর (বা) ইসলাম গ্রহণ করলেন ৷৩ তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
চলে গেলেন ৷ হযরত আবু বকর (বা) ইসলাম গ্রহণের কার ৷বণে তিনি এত আনন্দিত হয়েছিলেন
যে, মক্কার উপত্যকার অধিবাসীদের মধ্যে কেউই তখন এত আনন্দিত ছিল না ৷ তারপর আবু
বকর (রা) চলে গেলেন এবং উছমান ইবন আফ্ফান,ত্ষ্ ন্তুালহ৷ ইবন উবায়দুল্লাহ্, যুবায়র ইবন
আওয়াম এবং সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাস-এর সাথে গিয়ে সাক্ষাত করলেন ৷ তারা সকলেই
ইসলাম গ্রহণ করলেন ৷ পরদিন তিনি উছমান ইবন মাযউন, আবু উবায়দা ইবন জাররাহ,
আবদুর রহমান ইবন আওফ, আবু স ৷লাম৷ ইবন আবদুল আসাদ এবং আরকাম ইবন আবুল
আরকাম প্রমুখের নিকট গেলেন ৷৩ তারা সবাই ইসলাম গ্রহণ করলেন ৷ আল্লাহ্ত তাদের প্ৰতি
সন্তুষ্ট হোন ৷
আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ বলেন, আবু মুহাম্মদ ইবন ইমরান হযরত আইশা (রা ) সুত্রে বর্ণনা
করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাহাবীগণ (বা) যখন একত্রিত হলেন, তখন তারা
ছিলেন ৩৮ জন ৷ হযরত আবু বকর (রা) প্রকাশ্যে বের হওয়ার জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (সা)ণ্এর
সাথে পীড়াপীড়ি শুরু করলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ বললেন, আবু বকর ! আমরা কিন্তু সংখ্যায় কম ৷ আবু
বকর (বা) প্রকাশ্যে বের হওয়ার জন্যে পীড়াপীড়ি করতেই লাগলেন ৷ অবশেষে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
প্রকাশ্যে বের হলেন ৷ অন্যান্য মুসলিমগণ মসজিদের বিভিন্ন স্থানে ছাড়িয়ে পড়ে ৷ প্রত্যেকে নিজ
নিজ গোত্রের মধ্যে অবস্থান নেয় ৷ হযরত আবু বকর (বা) জনসমক্ষে বক্তৃতা দিতে শুরু করেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) পাশে উপবিষ্ট ছিলেন ৷ বন্তুত হযরত আবু বকর (বা) প্রথম বক্তা, যিনি প্রকাশ্যে
লোকজনকে আল্লাহর প্রতি এবং তার রাসুলের প্রতি আহ্বান করলেন ৷ মুশরিকগণ
অবিলম্বে হযরত আবু বকরের উপর এবং মুসলমানদের উপর বাপিয়ে পড়ে ৷ মসজিদের
বিভিন্ন স্থানে থাকা মুসলমানদেরকে তা ৷রা ভীষণ প্রহার করে ৷ হযরত আবু বকর (রা) কে ত রা৷
পায়ের নীচে ফেলে পিষ্ট করে এবৎ৩ তাকে বেদম মারপিট করে ৷ পাপিষ্ঠ উ৩ বা ইবন রাবীআ
তার কাছে আসে এবং পুরনো ভারী দুটো জুতাে দিয়ে তাকে প্রহার করে, সেগুলো দিয়ে
তীর চোখে, মুখে আঘাত করে এবং তার পেটের উপর উঠে দাড়ায় ৷ তবে এমন প্রহার করা
হয় যে, তার নাক-মুখ চেনা যাচ্ছিল না ৷ সংবাদ পেয়ে বানু তায়মের লোকেরা দ্রুত সেখানে
হাযির হয় এবং মুশরিকদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে ৷ একটি কাপড়ে মুড়িয়ে
তারা তাকে তুলে নেয় এবৎ৩ ব বাড়ীতে নিয়ে পৌছায় ৷ তার মৃত্যু যে আসন্ন তাতে তাদের
কোন সন্দেহ ছিল না ৷
এরপর বনু তায়ম গোত্রের লোকজন মসজিদে ফিরে গিয়ে মুশরিকদেরকে শাসিয়ে দিয়ে
বলে, আবু বকর(রা) এর মৃত্যু হলে আমরা উ৩ বা ইবন রাবীআকে খুন করে তার
প্রতিশোধ (নব ৷ এবার তারা তার নিকট ফিরে আসে এবং আবু কুহাফ৷ ও বনু তায়মের
লোকেরা তাকে ডাকতে থাকে ৷ এক সময় তিনি তাদের ডাকে সাড়া দেন ৷ দিনের শেষ
ভাগে তিনি কথা বলতে শুরু করেন এবং সর্বপ্রথম যে কথাটি বললেন, তা হলো রাসুলুল্লা হ্ (সা)
কোথায় , তিনি কেমন আছেন ৷ এ কথা গােনে লোকজন তাকে ভহ্সনা করে এবং একা রেখে
চলে যায় ৷ তারা তার মা উম্মুল খায়রকে বলে যায়, “চেষ্টা করে দেখুন ওকে কিছু
খাওয়ানাে যায় কিনা ৷ তারা চলে যাওয়ার পর তিনি তাকে কিছু থােয় নেয়ার জন্য পীড়৷ পীড়ি
করছিলেন আর আবু বকর (বা) শুধু বলছিলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কেমন আছেন ? তার মা
বললেন, আল্লাহ্র কসম তোমার বন্ধু সম্পর্কে আমি কিছু জানি না ৷ তিনি বললেন, আপনি
খাত্তাবের কন্যা উম্মু জামীল এর নিকট যান এবং তার কাছ থেকে জেনে আসুন ৷ তিনি উম্মু
জামীলের নিকট গেলেন এবং বললেন, “আবুবকর তে তা মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ্ এর অবস্থা
সম্পর্কে জানতে চাচ্ছে ৷ উম্মু জামীল (রা) বললেন, আমি আবু বকরকেও চিনি না মুহাম্মদ ইবন
আবদুল্লাহ্কেও চিনি না ৷ আপনি যদি ভাল মনে করেন, তাহলে আমি আপনার সাথে আপনার
ছেলের নিকট যেতে পা ৷রি ৷ উন্মুল খায়র বললেন, তবে চল ৷ উম্মুল খায়রের সাথে উন্মু জামীল
(রা) এলেন ৷ তখন আবু বকর (রা) শয্যাশায়ী মুমুর্বু ৷ উম্মু জামীল (রা)৩ তার নিকটে এলেন
এবং এই করুণ অবস্থা দেখে চীৎক৷ ৷র করে বললেন হায় ৷ কা ৷ফির ও পা ৷পিষ্ঠের দল আপনার এ
দুরবস্থা করেছে ৷
আমি নিশ্চিত আশাবাদী যে, আপনার প্রতি জুলুমের প্রতিশোধ আল্লাহ তাআলা তাদের
থেকে নেবেন ৷ হযরত আবু বকর (বা) বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কেমন আছেন ? উম্মু জামীল
(রা) বললেন, পাশে তো আপনার মা রয়েছেন, তিনি আমাদের কথাবার্তা শুনছেন ৷ আবু বকর
(রা) বললেন, তার জন্যে কোন অসুবিধা হবে না ৷ উম্মু জামীল জানালেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সুস্থ
ও ভাল আছেন ৷ তিনি এখন কোথায় আছেন আবু বকর (রা ) জিজ্ঞেস করলেন ৷ উম্মু জামীল
(রা) জানালেন যে, তিনি এখন ইবনুল আরকাম (রা)-এর বাড়ীতে আছেন ৷ আবু বকর (রা)
বললেন, আল্লাহ্র কসম রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সাথে সাক্ষাত না করা পর্যন্ত আমি কোন খাদ্য
পানীয় মুখে তুলব না ৷ তারা দৃ’জনে তাকে অপেক্ষা করতে বললেন ৷
অবশেষে সন্ধ্যারেল৷ যখন পথচারীদের আনাগােনা কমে গেল, লোকজন নিজ নিজ গৃহে
চলে গেল, তখন তাদের দু’জনের পায়ে ভর করে তিনি যাত্রা করলেন এবং তারা তাকে
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট পৌছিয়ে দিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তার উপর ঝুকে পড়লেন এবং
তাকে চুম্বন করলেন ৷ অন্যান্য ঘুসলমানগণও তার প্রতি ঝুকে পড়লেন ৷ তার অবস্থা দেখে
রাসুলুল্লাহ্ (সা) অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়েন ৷ আবু বকর (রা) বললেন, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ (সা) ৷
পাপিষ্ঠ উতব৷ আমার মুখে যা আঘাত করেছে তা ব্যতীত অন্যত্র এখন আমার খুব একটা
ব্যথা বেদনা নেই ৷ এই যে আমার অ ৷ন্মাজা ন, তিনি তার সন্তানের প্রতি স্নেহশীল ৷ আপনি তো
ববকতময় সত্তা , তাকে আল্লাহর পথে আমার দাওয়াত দিন এবং আল্লাহ্র নিকট দু আ করুন
আপনার মাধ্যমে যেন আল্লাহ তাআল৷ তাকে ওা৷হান্নামের আগুন থেকে যুক্তি দেন ৷ রাসুলুল্লাহ্
(না) তার জন্যে আল্লাহর দরবারে দৃআ করলেন এবং তাকে আল্লাহর দিকে আহ্বান
জানালেন ৷ তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন ৷ তার৷ একমাস রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে ওই গৃহে
অবস্থান করলেন ৷ তখন তারা ছিলেন ৷ ৩৯ জন পুরুষ মুসলমান ৷ হযরত আবু বকর (রা)
যেদিন প্রহৃত হলেন, সেদিন হযরত হামযা ইবন আবদুল মুত্তালিব ইসলাম গ্রহণ করেন ৷
উমর ইবন খঃাত্তাব অথবা আবু জাহ্ল ইবন হিশাম এ দৃ’জনের একজন যেন ইসলাম গ্রহণ
করেন যে জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) দৃআ করেন ৷ ইসলাম গ্রহণ করলেন হযরত উমর (রা) ৷
রাসুলুলুাহ্ (সা) দৃআ করেছিলেন বুধবারে আর উমর (রা ) ইসলাম গ্রহণ করলেন
বৃহস্পতিবারে ৷৩ তার ইসলাম গ্রহণে রাসুলুল্লাহ্ (না) ও গৃহে অবস্থা ৷নকারী মুসলিমগণ সমুচ্চ স্বরে
তাকবীরধ্বনি উচ্চ রণ করেন ৷ মক্কার উচ্চভুমি পর্যন্ত ওই ধ্বনি শোনা গিয়েছিল ৷ ইতোমধ্যে
আবুল আরকাম বেরিয়ে আসে ৷ সে ছিল অন্ধ কাফির ৷ সে বলছিল্, “হে আল্লাহ, আমার পুত্র
আরকামকে ক্ষমা করুন ৷ সে তো ধর্মত্যাগী হয়েছে ৷ হযরত উমর (রা) দাড়িয়ে বললেন ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ (সা) ! আমরা আমাদের দীন ও ধর্মমতকে গোপন রাথব কেন ? অথচ আমরা সত্য
অনুসরণকারী ৷ আর ওরা ওদের দীন প্রকাশ করছে অথচ ত রা৷ বাতিলের অনুসরণক৷ ৷রী ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হে উমর (রা) আমরা তো সং খ্যায় কম ৷ আমরা কেমন বিপদের
সম্মুখীন হয়েছি তা (তা তুমি দেখতেই পাচ্ছ ! উমর (রা) বললেন, যে মহান প্রভু আপনাকে সত্য
সহকারে প্রেরণ করেছেন তার কসম করে বলছি, কুফরী অবস্থায় আমি যে সকল মজলিসে
বসেছিলাম এখন আমি ওই সকল মজলিসে গেয়ে ইসলামের কথা প্রচার করব ৷ তিনি ঘর থেকে
বের হলেন ৷ বায়তুল্লাহ্ শরীফ তাওয়াফ করলেন ৷ তারপর কুরায়শদের নিকট গেলেন ৷ তারা
তার অপেক্ষায় ছিল ৷ আবু জাহ্ল ইবন হিশাম বলল, অমুকে বলছে যে , তুমি নাকি পিতৃধর্য
ত্যাগ করেছ ৷ হযরত উমর (রা) বললেন :
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কো ৷ন মাবুদ নেই , তিনি একক তার কো ন শরীক নেই
এবং এও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর বান্দ৷ ও রাসুল ৷ তৎক্ষণাৎ যুশরিকরা তবে
উপর বাপিয়ে পড়ে ৷ পাল্টা তিনি বাপিয়ে পড়েন উ৩ যার উপর এবং তাকে ইার্টু দিয়ে চেপে
রেখে বেদম প্রহার করতে থাকেন ৷ তিনি তার দৃ চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিলেন ৷ উতবা চিৎকার
জুড়ে দেয় ৷ এ দৃশ্য দেখে অন্যরা ভয়ে দুরে সরে যায় ৷ উমর (রা) উঠে র্দাড়ালেন ৷
এরপর আক্রমণ করার জন্যে যে তা ৷র নিকটবর্তী হচ্ছিল, তাকেই তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিরোধ
করছিলেন ৷ অবশেষে সব ই ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যায় ৷ ইণ্ডে তাপুর্বে হযরত উমর (বা) যে সকল
মজলিসে উপস্থিত হতেন তার সবগুলোতেই তিনি গেলেন এবং তার ঈমান আনয়নের কথা
প্রকাশ করলেন ৷ তা পর সবার বিরুদ্ধে বিজয়ী হয়ে তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর নিকট উপস্থিত
হলেন ৷ তিনি বললেন, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! আমার পিতা-মাত৷ আপনার জন্যে কুরবান হোন !
আপনার কোন অসুবিধা নেই ৷ কুফরী অবস্থায় আমি যত মজলিসে যেতাম তার সব কাটিতে
গিয়ে আমি আমার ঈমান আনয়নের কথা নির্ভয়ে প্রকাশ করে এসেছি ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাথীদেরকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেন ৷৩ তার সম্মুখে ছিলেন হযরত
উমর (রা) ও হামযা ইবন আবদুল মুত্তালিব ৷ তিনি বায়তুল্লাহ্ শরীফের তাওয়াফ করলেন এবং
নিরাপদে যুহরের নামায আদায় করলেন ৷ এরপর তিনি আরকামের বাড়ীতে ফিরে এলেন ৷
হযরত উমর (রা) তখনো তার সাথে ছিলেন ৷ এরপর উমর (রা) একা ফিরে গেলেন এবং
বাসুলুল্লাহ্ (সা)-ও বাড়িতে চলে গেলেন ৷
বিশুদ্ধ অভিমত এই যে, মুসলমানদের অবিসিনিয়ায় হিজরতের পর হযরত উমর (রা)
ইসলাম গ্রহণ করেন এবং এটি নবুওয়াণ্ডে তর ৬ষ্ঠ বছরের ঘটনা৷ যথাস্থানে তার আলোচনা হবে ৷
আলাদাভাবে র্তাদের জীবনী সৎক্র ৷স্ত ভিন্ন গ্রন্থে হযরত আবু বকর ও উমর (রা)-এর ইসলাম
গ্রহণের বিস্তারিত বিবরণ ৷আমরা উল্লেখ করেছি ৷ সকল প্রশংসা আল্লাহর ৷
সহীহ্ মুসলিমে আবু উমামা হাদীছে আমর ইবন আবাস৷ সুলামী ;থকে বর্ণিত আছে ৷ তিনি
বলেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর নবুওয়াত লাভের প্রথম দিকে আমি একদা তার নিকট উপস্থিত
হই ৷ তখন তিনি অবন্থন করেছিলেন মক্কায় ৷ তিনি তখন নিাজকে গোপন রাখতে ন ৷ আমি
বললাম, আপনি কে ? তিনি বললেন, “আমি নবী ৷ আমি বললাম, কেমন নবী ? তিনি
বললেন, আল্লাহ্র রাসুল ৷ আমি বললাম, আল্লাহ কি আপনাকে প্রেরণ করেছেন ? তিনি
বললেন, হী৷ অবশ্যই ৷ আমি বললাম, তবে তিনি কী পয়গাম সহকারে পাঠিয়েছেন ? তিনি
বলেন, এ বাণী নিয়ে প্রেরণ করেছেন যে, তোমরা যেন একক আল্লাহর ইরাদত করবে
প্রতিমাগুলে৷ ভেঙ্গে ফেলবে এবং আত্মীয়ত৷ বন্ধন অটুট রাখবে ৷ তিনি বলেন, আমি বললাম , যে
পয়গাম দিয়ে আপনাকে প্রেরণ করা হয়েছে তা কতই না ৷উত্তম ৷ এ বিষয়ে আপনার অনুসরণ
করেছে কারা ? তিনি বললেন, একজন স্বাধীন লোক এবং একজন ক্রীত দাস ৷ অর্থাৎ আবু বকর
(রা) ও বিলাল (রা) ৷ আমর বললেন, এরপর আমি ইসলাম গ্রহণ করলাম এবং আমি হলাম
চতুর্থ ইসলাম গ্রহণক৷ ৷রী ৷ তখন আমি বললাম, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্৷ আমি কি আপনার সাথে থাকর
? তিনি বললেন, না তুমি বরং আপাতত : তোমার সম্প্রদায়ের নিকট চলে যাও ৷ যখন স০ বাদ
পারে যে, আমি প্রকাশ্যে যের হয়েছি, তখন তুমি আমার নিকট এসে আমার সাথে যোগ দিও ৷
উপরোক্ত হাদীছে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর উক্তি স্বাধীন ও অধীন শব্দ দু’টি জাতিজ্ঞাপক অর্থাৎ
স্বাধীন প্রকৃতির লোকজন এবং ক্রীত দাস প্রকৃতির লোকজন আমার অনুসরণ করেছে ৷ সেটির
ব্যাখ্যার শুধু আবু বকর (রা) ও বিলাল (রা) এর নাম উল্লেখ করা সঠিক কিনা তা ভোর দেখার
বিষয় বটে ৷ কারণ আমর ইবন আবাসার পুর্বে অনেকেই ইসলাম গ্রহণ ৷করেছিলেন ৷ যায়দ
ইবন হারিছ৷ ৷(রা) কিত্তু হযরত বিলালের পুর্বে ইসলাম গ্রহণ ৷করেছিলেন ৷৩ তাহলে আমর ইবন
আবাসা নিজেকে চতুর্থ ইসলাম গ্রহণকা ৷রী মনে করা ৷ট৷ ছিল তার অবগত ৷তি অনুসারে ৷ অর্থাৎ তিনি
মনে করেছিলেন যে, তিনি চতুর্থ ইসলাম গ্রহণকরী ৷ মুলত০ তখন মুসলমানগণ ৷নিজেদের
ইসলাম গ্রহণের কথা গোপন রাখতেন ৷ অনাত্মীয় এবং বেদুঈন (৩ তা দুরের কথা ঘনিষ্ট
আত্মীয়দেব নিকটও র্তার৷ তা প্রকাশ করতেন না ৷ সহীহ্ বুখারীতে ৩আবু উমামা সাঈদ ইবন
মুসায়ব্রাব (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি সাআদ ইবন আবু ওয়াককাস (রা)-কে
বলতে ওনেছি, যেদিন আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি, তখনো অন কেউ ইসলাম গ্রহণ করেননি ৷
সাতদিন পর্যন্ত আমিই ছিলাম তৃতীয় ইসলাম গ্রহণকারী ৷
বন্তুত আমি যেদিন ইসলাম গ্রহণ করি, সেদিন অন্য কেউ ইসলাম গ্রহণ করেনি, তার এই
বক্তব্য স্বাতাবিক কিভু এক বর্ণনায় আছে আমি যেদিন ইসলাম গ্রহণ করেছি, সেদিন ব্যতীত
অন্যদিনে কেউ ইসলাম গ্রহণ করেনি ৷৩ তার এই বক্তব্যটি স্পষ্ট নয় ৷ কারণ তাতে বোঝা যায়
তার পুর্বে কেউ ইসলাম গ্রহণ করেননি ৷ন্অথচ ইতোপুর্বে প্রমাণিত হয়েছে হযরত আবু
বকর সিদ্দীক (রা), আলী (রা) , খাদীজা (বা) ও যায়দ ইবন হারিছা (বা) তার পুর্বে ইসলাম
গ্রহণ করেছিলেন ৷
ইসলাম গ্রহণে৩ তাদের অ্যাগামি৩ সম্পর্কে উম্মন্ব তর ইজমা বা ঐকম৩ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে
বলে কেউ কেউ বর্ণনা করেছেন ৷ ইবন আহীর এরুপ বর্ণনাকারীদের অন্যতম ৷ ইমাম আবু
হানীফা (র) সুস্পষ্ট ভাবে বলেছেন যে, নিজ নিজ পর্যায়ের লোকদের মধ্যে উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গই
সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছেন ৷
উপরােল্লিখিত হাদীছে সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাস (বা) এর এ বক্তব্যও রয়েছে যে,
সাতদিন পর্যন্ত আমিই ছিলাম তভীয় ইসলাম গ্রহণকা ৷রী ৷ তার এ বক্তব্যও অস্পষ্ট ৷ তিনি তার
ব্যক্তিগত ধারণা অনুযায়ী এ বক্তব্য রেখেছেন এমনটি বলা ছাড়া আমি অন কোন ব্যাখ্যা খুজে
পাচ্ছি না ৷ আল্লা,ইে ভাল জানেন ৷
আবু দাউদ তায়ালিসী বলেন, হাম্মড়াদ ইবন সালামা আবদুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রা)
থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, একদিনের ঘটনা ৷ আমি তখন উঠতি বয়সের বালক ৷ আমি
মক্কায় উকবা ইবন আবু মুআয়তের বকরী চরাচ্ছিলাম ৷ হঠাৎ আমার নিকট এসে উপস্থিত হলেন
রাসুলুল্লাহ্ (না) ও হযরত আবু বকর (রা) ৷
তারা তখন মুশরিকদের হাত থেকে হিজরত করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন ৷ তারা বললেন, হে
বালক ৷ তোমার কাছে কি দুধ আছে, যা আমাদেরকে পান করাতে পার ৷ আমি বললাম, আমি
তো মালিকের পক্ষ থেকে এগুলোর আমানতদার ৷ আপনাদেরকে দুধ পান করানোর ইখতিয়ার
আমার সেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আচ্ছা তোমার নিকট কি এমন কোন মাদী বকরী আছে
যা এখনো প্রজননযােগ্য নয় ৷ আমি বললাম, ইভ্রা, আছে বটে ৷ এরুপ একটি মাদী বকরী আমি
তাদের নিকট নিয়ে আমি ৷
হযরত আবু বকর (বা) সেটির রশি ধরে রাখলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেটির স্তনে হাত রেখে
দুআ করলেন ৷ বকরীটির স্তন দুধে ভরে উঠল ৷ হযরত আবু বকর (বা) একটি গর্তাকৃতির
পাথর নিয়ে এলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেঢিতে দুধ দোহন করলেন ৷ তিনি নিজে এবং আবু বকর
(রা) দুজনেই দুধ পান করলেন ৷৩ তারপর আমাকে দুধপান করালেন ৷ এরপর স্তনের উদ্দেশে
বললেন, স কুচিত হয়ে যাও ৷ সেটি সংকুচিত ও ছোট হয়ে গেল ৷ পরে আমি রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর নিকট আমি এবং তাকে বলি যে, ওই পবিত্র বাণী অর্থাৎ কুরআন আমাকে শিখিয়ে
দিন ৷ তিনি বললেন, তুমি বরং শিক্ষা গ্রহণ সক্ষম বালক ৷ তার মুখ থেকে আমি ৭০টি সুরা
শিখেছিলাম ৷ ওই সুরাগুলো পাঠে কেউই আমার সমকক্ষ ছিল না ৷
ইমাম আহমদ (র) আফ্ফান সুত্রে হামাদ ইবন সালামা থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
হাসান ইবন আরাফা আবু নাজুদ সুত্রে এটি বর্ণনা করেছেন ৷ বায়হাকী বলেন, আবু আবদিল্লাহ্
আল ৷ফিয মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন উছমান থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
বলেন, খালিদ ইবন সাঈদ ইবন আস প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন ৷ তার
ভাইদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন ৷
তার ইসলাম গ্রহণের সুচনা এভাবে হয়েছিল যে, একরাতে তিনি স্বপ্নে দেখেন তিনি একটি
অগ্নিকুণ্ডের কিনারে দাড়িয়ে আছেন ৷ আগুনের বিন্তুতি এত অধিক ছিল যা একমাত্র আল্লাহ্ই
জানেন ৷ তিনি দেখেন যে, এক আগন্তক এসে তাকে আগুনের মধ্যে ফেলে দিতে উদ্যতা
অন্যদিকে রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তীর কােমর জা ৷পটে ধরে তাকে টেনে রাখছেন আগুনে পড়ে যেতে
দিচ্ছে না ৷৩ ভী৩ ত-সন্ত্রস্ত হয়ে তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনআল্লাহ্র কসম এটি
অবশ্য সত্য স্বপ্ন ৷ তারপর হযরত আবু বকর (রা)-এর সাথে তার সাক্ষাত হয় ৷ তিনি তার
স্বপ্নের কথা তাকে জানালেন ৷ তিনি বললেন, এতে তোমার কল্যাণ কামনা করা হয়েছে ৷ ইনি
আল্লাহর রাসুল ৷ তুমির্তার অনুসরণ কর ৷ অতি ৩সতৃরতু মি৩ ৷ তার অনুসরণ করবে এবং ইসলাম
গ্রহণ করবে আর ইসলাম তোমাকে আগুন থেকে রক্ষা করবে ৷ তোমার পি৩ ৷ বিক্ষ্ম আগুনে
প্রবিষ্ট হবেই ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সাথে সাক্ষাত করলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন
“আজয়াদ” নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন ৷ খা ৷লিদ বললেন হে আল্লাহ্ব রাসুল হে মুহাম্মদ
(সা) আপনি কিসের দিকে ডাকছেন ? তিনি বললেন আ ৷মি৫ তামাকে ডাকছি একক লা শরীক
আল্লাহর দিকে এবং একথার দিকে যে, মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল ৷ উপরন্তু একথার
প্রতি যে, তুমি যে পাথরের পুজা করছ, সে পাথর কিছুই শুনে না, লাভ-ক্ষতি করতে পারে না,
কিছু দেশে না এবং কে তার পুজা করল কে পুজা করল না তার কিছুই জানে না ৷ সেই
পাথরপুজা তোমাকে ত্যাগ করতে হবে ৷
খালিদ বললেন,
—:fl ৷মি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, অ ৷ল্লাহ্ ব্যতীত কো ন মাবুদ নেই ৷ আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,
আপনি আল্লাহ্র রাসুল ৷৩ তার ইসলাম গ্রহণে রাসুলুল্লাহ্ (সা) অত্যন্ত খুশী হলেন ৷ খালিদ চলে
গেলেন ৷ তার পিতা তার ইসলাম গ্রহণের সংবাদ জেনে তাকে খুজে আনতে লোক পাঠালাে ৷
তাকে ধরে নিয়ে আসা হলে সে তাকে মাটিতে ফেলে লাঠি দ্বারা পেটাতে থাকে ৷ এভাবে তার
মাথায় লাঠিভ ৷ন্সে এবং সে বলে, আল্লাহর কসম অ মি আর তােকে আহার্য দেব না ৷ খালিদ
বলেন, আপনি যদি আমার আহার্য বন্ধ করেন,৩ তবে আমার জীবন৷ যা পনের জন্য প্রয়োজন মতে
খাদ্যের ব্যবস্থা আল্লাহ্ তাআলাই করবেন ৷ অবশেষে তিনি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট চলে
গেলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে সাদরে গ্রহণ করলেন এবং তিনি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে
থাকতে লাগলেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর চাচা হযরত হামযা ইবন
আবদুল মুত্তালিবের ইসলাম গ্রহণ
ইউনুস ইবন বুকায়র বলেন, মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক বলেছেন যে একজন প্রচণ্ড স্মরণশক্তি
সম্পন্ন মুসলমান আমাকে বলেছে, সাফ৷ পাহাড়ের নিকট আবু জাহ্ল রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
মুখোমুখি হয় ৷ রাসুলুল্লাহ (না)-কে ভর্ধসনা করে তাকে পীড়৷ দেয় এবং তার দীনের বিরুদ্ধে
কটুক্তি করে ৷ উক্ত ঘটনা তার চাচা হামযা ইবন আবদুল মুত্তালিবের কর্ণগােচর করা হয় ৷
তক্ষুণি হামযা আবু জাহ্লের উদ্দেশ্যে বের হলেন ৷৩ তার নিকট গিয়ে তিনি তার ধনুক দিয়ে
আঘাত করে প্ৰহারে প্রহারে তাকে রক্তাক্ত করে দেন ৷ তখন কুরায়শ বংশের বনী মাখবুম
গোত্রের কতক লোক আবু জাহ্লের সাহায্যে হামযা এর বিরুদ্ধে রুখে র্দাড়ায় ৷ তারা বলে যে ,
আমরা তো দেখতে পাচ্ছি আপনি পিতৃধর্ম ত্যাগ করেছেন৷ হামযা (বা) বললেন , পিতৃধর্ম রর্জনে
আমাকে কে বাধা দিয়ে ? আমার ভাতিজার পক্ষ থেকে এমন কিছু নিদর্শন আমার নিকট স্পষ্ট
হয়ে গিয়েছে যার প্রেক্ষিতে আমি সাক্ষ্য দিতে পারি যে, নিশ্চয়ই সে আল্লাহর রাসুল এবং সে যা
বলে তা সত্য ৷ অতএব, আল্লাহর কসম আমি তার পথ ছাড়র না, তােদের সাধ্য থাকলে
আমাকে বাধা সে তো দেখি ৷
আবু জাহ্ল বলল, আবুআমারাকে ছেড়ে দাও, কারণ আল্লাহর কসম আমি তো তার
ভাতিজাকে বিশ্রী পালি দিয়েছি ৷ হযরত হামযা যখন ইসলাম গ্রহণ করলেন, তখন কুরায়শরা
বুঝতে পারলো যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তিনি আত্মরক্ষ৷ করার মত
সামর্থ অর্জন করেছেন ৷ ফলে ইতোপুর্বে তার সাথে তারা যে জুলুমনির্যাতনমুলক আচরণ করত
তা থেকে তারা এখন বিরত থাকল ৷ এ বিষয়ে হযরত হামযা (রা) একটি কবিতা পাঠ
করেছিলেন ৷ >
ইবন ইসহাক বলেন এরপর হযরত হামযা (বা) নিজের বাড়িতে ফিরে যান ৷ এবার তার
নিকট উপস্থিত হয় শ্ায়ত তান ৷ সে বলে, আপনি কুরায়শ বংশের স্ন্তুাম্ভ নেত তা ৷ আপনি কি ওই
ধর্মত্যাগীর দলে ভিড়লেন ? আর নিজের পিতৃপুরুষের ধর্মত্যাগ করলেন ? আপনি যা করলেন
তর চাইতেও মৃত্যু তো উত্তম ছিল ৷ হযরত হামযা মনে মনে বললেন, হে আল্লাহ আমি যা
করেছি তা যদি সঠিক ও সত্য হয়, তবে আমার অতরে তাকে দৃঢ় করে দিন ৷ অন্যথায়ত
থেকে বের হওয়ার উপায় করে দিন ৷
তিনি রাত কাটালেন ৷ কিন্ত সে রাতে শয়তান তার মনে এমন কুমন্ত্রণার জাল বিস্তার করল
যা অন্য কোন দিন করেনি ৷ ভোরে তিনি রাসুলুল্লাহ (না)-এর নিকট গিয়ে বললেন ভাতিজা !
আমি তো এমন বিষয়ে জড়িয়ে পড়েছি যা থেকে বের হওয়ার পথ আমার জানা নেই ৷ কোন
ব্যাপার সত্য, নাকি বিভ্রান্তি সে বিষয়ে নিশ্চিত না হয়েত তার উপর অবিচল থাকা আমার মত
ব্যক্তির জন্য কষ্টকর ৷ তুমি আমাকে কিছু বল ৷ তোমার বক্তব্য শুনতে আমি খুব আগ্রহী ৷
রাসুলুল্লাহ (না) তাকে উদ্দেশ্য করে ওয়ায-নসীহত করলেন ৷ তিনি তাকে পুরস্কারের সৃসংবাদ
এবং শান্তি সম্পর্কে সতর্ক করলেন ৷ তাতে আল্লাহ তাআলা হযরত হামযা (রা)-এর অম্ভরে
ঈমান দান করলেন ৷ তখন তিনি ঘোষণা দিলেন যে, আমি সুস্পষ্টতা বে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি
সত্য নবী ৷ সুতরাং হে ভাতিজা! তুমি তােমা র দীন প্রকাশ্যে প্রচার করে যাও ৷ আল্লাহর কসম
আমি আমার পুর্ব ধর্মমতে থেকে আসমানের নীচের সমগ্র দুনিয়া গেলেও তা আমার মনঃপুত
১ এখানে হযরত হামযা (রা) এর কবিতা উস্লেখ করা ৷হয়নি ৷ সুহায়লী তার রাওদৃল উনুক গ্রন্থে একটি কবিতা
উল্লেখ করেছে যার শুরু এই
নয় ৷ বরং এই দীন গ্রহণ করে আমি ধন্য ৷ এভাবে হযরত হড়ামযা (রা)-এর মাধ্যমে আল্লাহ
আআল৷ তার দীনকে শক্তিশালী করলেন ৷ বায়হাকী হাকীম ইউনুস ইবন বুকায়র সুত্রে
অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
হযরত আবু যর গিফারী (রা)-এর ইসলাম গ্রহণ
হাফিয বায়হাকী (র) বলেন, আবু আবদুল্লাহ আল হাফিয আবু যর (রা) থেকে বর্ণনা
করেন ৷ তিনি বলেছেন, আমার পুর্বে মাত্র তিনজন লোক ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন ৷ আমি
হলাম চতুর্থ মুসলমান ৷ আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দরবারে উপস্থিত হয়েছিলাম এবং বলেছিলাম
আসসালামু আলায়কা ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই
আর মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর রাসুল ৷ তখন আমি রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর মুখমগুলে তৃপ্তি ও
আনন্দের চিহ্ন দেখতে পাই ৷ এটি একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ৷
হযরত আবু যর (রা)-এর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা প্রসঙ্গে ইমাম বুখারী (র) বলেন, আমর
ইবন আব্বাস হযরত ইবন আব্বাস (রা)-এর বরাতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নবুওয়াতপ্রাপ্তির সংবাদ শুনে হযরত আবু যর (বা) তার ভাইকে বললেন,
তুমি ওই জনপদে যাও এবং যে ল্যেকটি নিজেকে নবী বলে দাবী করছে এবং তার নিকট
আকাশ থেকে সংবাদ আসে বলে প্রচার করছে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এসে আমাকে
জানাও ৷ তুমি তার বক্তব্য শুনে এসে আমাকে তা জানাবে ৷ তখন তার ভাই রওনা হলেন ৷ তিনি
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দরবারে উপস্থিত হলেন এবং তার বক্তব্য শুনন্সেন ৷ এরপর তিনি হযরত
আবু যর (রা)-এর নিকট ফিরে এসে বলেন যে, আমি তাকে দেখেছি ৷ তিনি সৎকর্মের আদেশ
দেন এবং এমন বাণী শুনান যা কবিতা নয় ৷ আবু যর (রা) বললেন, না, আমি যেমনটি
চেয়েছিলাম , তেমন সবম্ভাষজনকভাবে জানাতে পারলেন না ৷
এবার প্রয়োজনীয় পাথেয় সংগ্রহ করে এবং পানির মশক সাথে নিয়ে তিনি নিজেই রওনা
হয়ে পড়েন এবং মক্কায় গিয়ে উপস্থিত হন ৷ তিনি এসে মসজিদে প্রবেশ করেন এবং সেখানে
রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে খুজতে থাকেন ৷ তিনি তাকে চিনতেন না ৷ কাউকে জিজ্ঞেস করাও তিনি
সমীচীন মনে করলেন না ৷ এভাবে রাতের কিছু অংশ কেটে যাওয়ার পর তিনি শুয়ে পড়েন ৷
হযরত আলী (রা) তাকে দেখতে পান এবং তিনি যে একজন বহিরাপত মুসাফির তা বুঝতে
পারেন ৷ তইি তিনি তাকে সাথে নিয়ে গেলেন এবং আতিথ্য দান করলেন ৷ তাদের কেউই একে
অন্যকে কিছু জিজ্ঞেস করলেন না ৷ ভোরে আবু যর গিফারী (বা) তার মালপত্র এবং মশক নিয়ে
মসজিদে এলেন ৷ দিনভর সেখানে থাকলেন ৷ তখনও তিনি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নযরে
পড়েননি ৷ সন্ধ্যড়ায় তিনি তার প্রথম দিনের স্থলে ফিরে এলেন ৷ হযরত আলী (রা) তাকে
দেখলেন এবং বললেন, হায় ল্যেকটি বুঝি তার উদ্দিষ্টের সন্ধান পায়নি ৷ তিনি তাকে সেদিন
নিজের ঘরে নিয়ে গেলেন এবং রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা করে দিলেন ৷ তাদের কেউ কাউকে কিছুই
জিজ্ঞেস করলেন না ৷
তৃতীয় দিনেও আবু যর গিফারী (বা) মসজিদে এলেন এবং আলী (বা) আবারও তাকে তার
বাড়ি নিয়ে গেলেন ৷ এবার হযরত আলী (রা) তাকে বললেন, হে আপস্তুক ! আপনার আগমনের
উদ্দেশ্য আমাকে বলবেন কি ? আবু বর (বা) বললেন, আপনি যদি আমাকে কথা দেন যে,
আমাকে সঠিক সন্ধান দেবেন, তবে আমার উদ্দেশ্যের কথা আপনাকে বলব ৷ হযরত আলী (বা)
কথা দিলেন ৷ আবু বর (বা) তখন তার আগমনের উদ্দেশ্য তাকে খুলে বললেন ৷ হযরত আলী
(রা) বললেন, তিনি সতবােদী এবং তিনি আল্লাহর রাসুল ৷ আগামী সকালে আপনি আমার সাথে
যাবেন ৷ আপনার জন্যে ক্ষতির আশংকা রয়েছে এমন কোন পরিস্থিতি দেখলে আমি দাড়িয়ে
প্রস্রাবের ডান করবো আমি যদি স্বাভাবিক গতিতে চলতে থাকি, তবে আপনি আমার পেছনে
পেছনে যাবেন এবং আমি যেখানে প্রবেশ করি আপনি সেখানে প্রবেশ করবেন ৷
হযরত আলী (রা) রওনা হলেন ৷ আবু যরও তাকে অনুসরণ করলেন ৷ এভাবে হযরত
আলী (রা) রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর নিকট উপস্থিত হলেন ৷ সাথে হযরত আবু যর (রা)-ও উপস্থিত
হলেন ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর আলাপ-আলোচনা শুনলেন এবং তৎক্ষণাৎ ইসলাম গ্রহণ
করলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে বললেন, তুমি তোমার সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে যাও এবং
ওদেরকে এ বিষয়ে অবহিত করবে ৷ আমার পক্ষ থেকে অন্য নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তুমি
সেখানেই অবস্থান করবে ৷ হযরত আবু বর (বা) বললেন, যে মহান প্রভু আপনাকে সত্য
সহকারে প্রেরণ করেছে তার কসম, তাদের মধ্যে আমি চীৎকার করে করে এ দীনের দাওয়াত
দেবাে ৷ তিনি ওখান থেকে বের হলেন এবং মসজিদে গিয়ে উভৈচ্চ৪স্ববে ঘোষণা দিলেন, “আমি
সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর রাসুল ৷ এ বলে
তিনি সেখানে র্দাড়ালেন ৷ কাফিরগণ তাকে প্ৰহার করতে শুরু করলো ৷ তাদের প্রহারে তিনি
মাটিতে পড়ে যান ৷ হযরত আব্বাস (রা) সেখানে আসেন এবং তার উপর উপুড় হয়ে পড়েন ৷
তিনি বলেন, দৃর্তোগ তোমাদের জন্যে, তোমরা কি জান না যে, এ লোকঢি গিফার গোত্রের ?
তোমাদের তো ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্যে ওপথে সিরিয়ার যাতায়াত করতে হয় ৷ ওদের হাত
থেকে তিনি তাকে রক্ষা করলেন ৷ পরের দিনও হযরত আবু যর গিফারী অনুরুপ উট্চ্চ৪স্বরে
ঘোষণা দিলেন ৷ এবারও তারা তার উপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালানো ৷ হযরত আব্বাস (বা) এসে
তাকে রক্ষা করলেন ৷ এ হল সহীহ্ বুখারীর ভাষ্য ৷
সহীহ্ মুসলিম ও অন্যান্য গ্রন্থে তার ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি আরো বিস্তারিতভাবে উল্লেখ
করা হয়েছে ৷ ইমাম আহমদ হযরত আবু যর গিফারী (রা)-এর বয়াতে বলেন যে, তিনি
বলেছেন, আমি, আমার ভাই আনীস এবং আমার মাকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের সম্প্রদায় গিফার
গোত্র থেকে মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম ৷ গিফার গোত্রের লোকেরা যুদ্ধ নিষিদ্ধ মাসগুলােতেও
যুদ্ধ-বিগ্রহ বৈধ মনে করত ৷ আমরা আমাদের এক মামার বাড়ি গিয়ে উঠলাম ৷ তিনি অত্যন্ত
ধনাঢা ও সমাজ্যের গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন ৷ তিনি আমাদের আদর-অড়াপ্যায়ন করলেন ৷
আমাদের এ সম্মান দেখে তার সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাদের প্রতি ঈর্ষাম্বিত হয় ৷ মামাকে
আমাদের বিরুদ্ধে বৈরী করে তোলার জন্যে তারা তাকে বলে যে, আপনি ঘর থেকে বের
হওয়ার পর আনীসই তো ঘরের মালিক হয়ে বসে ৷ মামা ঘরে ফিরে আমাদেরকে তা
জানালেন ৷ আমি বললাম, এতদিন আমাদের প্রতি আপনি যে সহানুভুতি দেখিয়েছেন এখন তো
আপনি সেটি স্নান করে দিলেন ৷ এরপর তো আপনার এখানে থাকা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় ৷
তারপর আমরা আমাদের বাহনগুলো নিয়ে সেগুলোর উপর সামানপত্র চাপিয়ে মক্কায় চলে
আসি ৷ আমাদের মামা তখন কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে র্কাদতে লাপলেন ৷ এদিকে আমার ভাই
আনীস আমাদের উষ্টীগুলো এবং তার প্রতিপক্ষ এক লোকের অনুরুপ ৷উষ্টীপাল বন্ধক রেখে যে
এবং ওই মালিকের মধ্যে কে উত্তম সে বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করে ৷ উভয় পক্ষ একজন গণককে
সালিস ও ঘীমাৎসাকারী মেনে নেয় ৷ মীমাৎসাকারী সিদ্ধান্ত দেয় যে, আনীসই উত্তম ৷ অনম্ভর
যে আমাদের উষ্টীপা ৷ল এবং অপরপক্ষের বন্ধক রাখা অনুরুপ উন্থীপাল নিয়ে ফিরে আসে ৷
হে তা ৷তিজা! আমি কিভু রাসুলুল্লাহ (সা) এর সাথে সাক্ষড়া৩ র তিন বছর পুর্বেও নামায
পড়েছি ৷ আমি বললাম, কার উদ্দেশ্যে ওই নামায ছিল ? তিনি বললেন, আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে ৷
আমি বললাম, কোন দিকে মুখ করে নামায আদায় করেছেন ৷ তিনি বললেন , আল্লাহ আমাকে
যেদিকে ফিরিয়েছেন যেদিকে ৷ তিনি বলেন, আমি ইশার নামাযও আদায় করতাম ৷ শেষ রাতে
আমি নিজেকে কাপড়ের মত হালকা বলে অনুভব কর৩ ৷ম ৷ এভাবে সুয উদিত হত এবং দিনের
ন্ আলো ছড়িয়ে পড়ত ৷ তিনি বলেন, তখন আমার তা ৷ই আনীস বলে যে, মক্কায় আমার কিছু কাজ
আছে ৷ সুতরাং আমি ফিরে আসার পর আপনার সাথে সাক্ষাত হয়ে ৷ সে চলে গেল ৷ এরপর সে
আমার নিকট আসতে দেরী করে ৷ আমি বললাম, বিলন্বের কারণ কি ? সে বলল, সেখানে
জনৈক ব্যক্তির সাথে আমার সাক্ষাত হয় ৷ লোকটি দাবী করছে যে আল্লাহ্ তাকে আপনার
ধর্মমতের সপক্ষে রাসুলরুপে প্রেরণ করেছেন ৷ আমি বললাম, লোকজন তার সম্পর্কে কী বলে ?
সে বলল, তারা তাকে করি, জাদুকর ইত্যাদি অভিযোগে অভিযুক্ত করছে ৷ আমার তা ৷ই আনীস
একজন কবি ছিল ৷ সে বলল, আমি তো গণকদের কথাবার্তা ৷শুনেছি ৷ তিনি কিত্তু গণকদের মত
কথা বলেন না ৷ অভিজ্ঞ ও খ্যাতিমান কবিদের নিকট আমি তার নিকট শ্রুত বাণীর উল্লেখ
করেছি কিন্ত তা যে কবিতা এমন কথা কেউ বলেননি ৷ আল্লাহ্র কসম, তিনি কিত্তু নিশ্চয়ই
সত্যবাদী আর ওরা মিথ্যাবাদী ৷ আবু বর (বা) বললেন, তুমি কি এখানে আমার কাজগুলো
সামাল দিতে পারবে যাতে করে আমি ওখানে যাওয়ার সুযোগ পাই ? সে বলল, ইব্রা৷ পারব ৷
তবে মক্কাবাসীদের আক্রমণের ব্যাপারে আপনি সতর্ক থাকবেন ৷ কারণ, তারা মুহাম্মাদ (সা) কে
দােষারােপ করে এবং তার প্রতি নির্যাতন চালায় ৷
হযরত আবু যর (বা) বলেন, আমি রওনা হই এবং মক্কায় গিয়ে পৌছি ৷ সেখানকার
একজন দুর্বল মানুষ খুজে নিয়ে আমি তাকে বলি, যে ব্যক্তিকে ওরা ধর্ম৩ ৷৷গী বলছে যে
লোকটি কোথায় ? লোকটি আমার দিকে ইঙ্গিত করে ৷ আর অমনি কাফিরের দলও উপত্যকার
অধিবাসীরা ঢিল হাড় নিয়ে আমার উপর আক্রমণ শুরু করে ৷ আমি অচেতন হয়ে পড়ে থাকি ৷
অবশেষে আমাকে উঠিয়ে নেয়া হয় ৷ আমাকে যখন উঠিয়ে নেয়া হয়, তখন আমি যেন তীর
নিক্ষেপের রক্তিয লক্ষ্যবন্তু ৷ আমি যমযম কুপের নিকট আসি এবং ওই পানি পান করি ৷
রক্তগুলাে ধুয়ে পরিষ্কার করি ৷ এরপর আমি কাবাগৃহ এবং তার গিলাফের মধ্যখানে অবস্থান
করতে থাকি ৷৩ ভাতিজা ! আমি দীর্ঘ ৩০ দিন ৩০ রাত ওখানে অবস্থান করি ৷ যমযমের পানি
ছাড় ৷ অন্য কোন খাদ্য আমার ছিল না ৷ তাতেই আমি এত স্বাস্থ্যবান ও মোটা হয়ে পড়ি যে,
আমার পেটের চামড়ার ভীজ বিলুপ্ত হয়ে সব সমান হয়ে যায় ৷ ক্ষুধাজনিত কোন দুর্বলতা আমি
অনুভব করিনি ৷
এক পুর্ণিমা রাতের ঘটনা ৷ মক্কাবাসীর৷ সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ৷ শুধু দুজন মহিলা
বায়তুল্লাহ্শ ৷রীফের তাওয়াফ করছিল ৷৩ তারা আসাফ ও নায়েলা প্ৰতিমড়ার উপাসনা করছিল ৷
আমি বললাম, তোমরা আসাফ ও নায়েলা প্রতিমার একটিকে অন্যটির সাথে বিয়ে দিয়ে দাও ৷
আমার বক্তব্য তাদের মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করল না ৷ এরপর আমি বললাম , ওগুলোতো
কাঠের ন্যায় জড়পদার্থ আমি কিন্তু ওগুলাের প্ৰতি আগ্রহী নই ৷ এরপর তারা দু’জন এ থেদােক্তি
করতে করতে ফিরে যাচ্ছিল যে, এখানে যদি আমাদের কোন লোক থাকত , তবে মজা
দেখাতাম ৷ পথিমধ্যে রাসুলুল্লাহ্ (না) ও হযরত আবু বকর (বা) তাদের সম্মুখে পড়লো ৷ তারা
দু’জন পাহাড় থেকে নেমে আসছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন তোমাদের কী হয়েছে ? তারা
বলল, কাব৷ গৃহ ও তার গিলাফের মাঝে আমরা একজন ধর্মত্যাগী ব্যক্তিকে দেখে এসেছি ৷
তারা বললেন, যে তোমাদেরকে কী বলেছে ? তারা বলল, যে এমন কথা বলেছে, যা মুখে বলা
যায় না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না) ও হযরত আবু বকর (রা) এসে হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করলেন এবং
বাগৃহের তাওয়াফ করলেন ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) নামায আদায় করলেন ৷ এরপর আমি
তার নিকট এলাম ৷ সর্বপ্রথম আমি৩ ৷কে ইসলামী রীতিতে অভিব৷ ৷দন জা নাই ৷ তিনি বললেন
তোমার প্রতি শান্তি এবংঅ আল্লাহ্ব রহমত বর্ষিত হোক ৷ তুমি কে হে ? আমি বললাম আমি
গিফার গোত্রের লোক ৷ তিনি তার নিজের কপালে হাত ৩রাখলেন ৷ আমি মনে মনে বললাম ,
নিশ্চয়ই আমি গিফার গোত্রের লোক শুনে তিনি অসত্তুষ্ট হয়েছেন ৷ আমি ক্ষমা প্রার্থনার উদ্দেশ্যে
তার হাত ধরতে যাচ্ছিলাম ৷ তখন তার সাথী হযরত আবু বকর (বা ) আমাকে থ৷ মিয়ে দিলেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্পর্কে আমার চাইতে তিনিই অধিক জানতেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তুমি কবে থেকে এখানে আছ ? আমি বললাম, ত্রিশ দিন-রাত
অবধি ৷ তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, তোমাকে খাদ্যসামগ্রী সববারাহ করে কে ? আমি উত্তর
দিলাম, যমযমের পানি ব্যতীত অন্য কোন খাদ্য আমি খাইনি ৷ আমি এও বললাম যে, ওই পানি
পান করেই আমার পেটের চামড়ার র্ভাজ সমান হয়ে গিয়েছে আর আমি আমার মধ্যে
ক্ষুধাজনিত কো ন দুর্বল৩ ৷ অনুভব করি না ৷ তিনি বললেন, নিশ্চয়ই যমযম কুপ বরকতময় কুপ
এবং ওই পানি খাদ্যগুণ সম্পন্ন ৷ হযরত আবু বকর (বা) বললেন, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! আপনি
আমাকে অনুমতি দিন আমি আজ রাতে তার আহারের বাবন্থা করি ৷ তিনি: তাই করলেন ৷
এরপর তারা দু’জন যাত্রা করলেন ৷
আমিও তাদের সঙ্গে গেলাম ৷ হযরত আবু বকর (বা) একটি দরজা থুললেন এবং আমাদের
জন্যে তা ৷ইফের আঙ্গুর নিয়ে এলেন ৷ এ৩ দিন পর এই প্রথম আমি খাদ্য গ্রহণ করলাম ৷ এরপর
কয়েক দিন আমি সেখানে অবস্থান করি ৷ একদিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, একটি খেজুর বীথি
অঞ্চলের উদ্দেশ্যে আমি এ স্থান ত্যাগ করব ৷ আর সেটি সম্ভবত ইয়াছরিব অঞ্চল ৷ তুমি আমার
পক্ষ থেকে তোমার সম্প্রদায়ের লোকদের নিকট আমার দাওয়াত পৌছিয়ে দিতে পারবে ?
তাহলে তোমার মাধ্যমে আল্লাহ্ তাআলা তাদের কল্যাণ সাধন করবেন এবং এর বদৌলতে
আল্লাহ্ তাআল৷ তোমাকে সাওয়াব দান করবেন ৷
হযরত আবু বর (বা) বলেন, আমি তখন ওখান থেকে আমার ভাই আনীসের নিকট আসি ৷
সে আমাকে বলে, আপনি কী করে এলেন ? আমি উত্তর দিলাম যে, আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি
এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে সত্য বলে গ্রহণ করেছি ৷ তখন আনীস বললেন, আপনার ধর্মমতের
প্ৰতি আমার অসন্তুষ্টি নেই ৷ আমিও ইসলাম গ্রহণ করলাম এবং রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে সত্য বলে
মেনে নিলাম ৷ এবার আমরা উপস্থিত হলাম আমাদের মায়ের নিকট ৷ আমাদের মা বললেন,
তোমাদের ধর্মমতের প্রতি আমার কোন অসন্তুষ্টি নেই ৷ আমিও ইসলাম গ্রহণ করলাম এবং
রাসুলুল্পাহ্ (না)-কে সত্য বলে মেনে নিলাম ৷ সওয়ারীতে আরোহণ করে আমরা আমাদের
গিফার গোত্রে ফিরে আসি ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনা যাওয়ার পুর্বেইি তাদের কেউ কেউ ইসলাম গ্রহণ করে ৷ খিফাফ
ইবন ঈসাইন ইবন রখসত পিফারী তাদের ইমাম ছিলেন ৷ তখন তিনিই তাদের নেতা ছিলেন ৷
অন্যরা বলেছিল যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় আসার পর আমরা ইসলাম গ্রহণ করব ৷ রাসুলুল্লাহ্
(সা) যখন মদীনায় পদার্পণ করলেন, তখন তারা ইসলাম গ্রহণ করল ৷ তাদের সহযোগী গোত্র
আসলাম গোত্রের লোকেরাও রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট এল ৷ তশুরা বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ্া
গিফার গোত্র আমাদের ভ্রাতৃ গোত্র ৷ ওরা যে ভাবে ইসলাম গ্রহণ করেছে আমরাও সেভাবে
ইসলাম গ্রহণ করতে চাই ৷ তখন রাসুলুল্পাহ (সা) বললেন :
গিফার গোত্র আল্লাহ তাদের ক্ষমা করুন এবং আসলাম গোত্র আল্লাহ তাদেরকে নিরাপদ
রাখুন ৷ ইমাম মুসলিম (র) হুদবা ইবন খালিদ সুতি সুলায়মান ইবন মুপীরা থেকে অনুরুপ বর্ণনা
করেছেন ৷ হযরত আবুযর (রা)-এর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা অন্য বর্ণনায় ও এসেছি, তবে তাতে
আরও অতিরিক্ত তথ্য রয়েছে ৷ আল্লাহ্ই জানেন ৷ “রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নবুওয়াত লাভের
সুসংবাদ” অধ্যায়ে হযরত সালমান ফারসী (রা)-এর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা উল্লেখ করা
হয়েছে ৷
যেমাদ-এর ইসলাম গ্রহণ
ইমাম মুসলিম ও রায়হাকী (র) দাউদ ইবন আবী হিন্দ ইবন আব্বাস (বা) থেকে
বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি বলেছেন যে, এক সময় যেমাদ মক্কায় উপস্থিত হন ৷ তিনি ছিলেন আযাদ
শানুআ গোত্রের লোক ৷ তিনি জিনগ্রস্ত লোকদের ঝাড়কুক করতেন ৷ মক্কার কতক মুর্থ ব্যক্তিকে
তিনি বলতে শুনলেন যে, তারা বলছে, “মুহাম্মদ (সা) নিশ্চয়ই জিনগ্নস্ত লোক যেমাদ বললেন,
ওই ল্যেকটি কোথায় ? আল্লাহ্ তাআলা হয়ত আমার মাধ্যমে তাকে আরোপ্য করবেন ৷ তিনি
বলেন, একদিন আমি মুহাম্মদ (না)-এর সাথে সাক্ষাত করি এবং তাকে বলি যে, আমি তো
জিনগ্রস্তদেরকে ঝাড়কুক করে থাকি ৷ আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা করেন আমার হাতে সুস্থ করেন ৷
সুতরাং আপনিও আমার নিকট আসুন ৷ তখন মুহাম্মদ (সা) বললেন, সকল প্রশংসা আল্লাহর ৷
আমি তার প্রশংসা করছি এবং তার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি ৷ তিনি যাকে হিদায়াত দেন
অন্য কেউ তাকে গোমরাহ্ করতে পারে না ৷ আর আল্লাহ যাকে গোমরাহ্ করেন অন্য কেউ