Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » বি’র-ই-মউনার অভিযান

বি’র-ই-মউনার অভিযান

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • যখন তারা বলতে শুনল যে, “এই আমর” “এই আমর তখন শিশুরা দৌড়ে পি(য় রাসুলুল্লাহ

    (সা) (ক সংবাদ জানানো ৷ আমি সাথে করে নিয়ে এসেছি ওই (লা ব টিকে ৷ আমার বনুকের ছিলা
    দ্বারা মযবুত করে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি বেধে (রখেছিলাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) )-এর প্রতি তাকিয়ে দেখি যে

    তিনি হাসছেন ৷৩ তারপর তিনি আমার জন্যে দু আ করলেন৷ আমর( র(া) এর মদীনায় পৌছার

    তিনদিন পুর্বে সালামা ইবন আসলাম মদীনায় পৌছে গিয়েছিলেন ৷ বায়হাকী (র) এটি বর্ণনা
    করেছেন ৷

    ইতিপুর্বে বর্ণিত হয়েছে যে, আমর (রা) হযরত থুবায়ব (রা)–(ক গুলি কাষ্ঠ থেকে নামা(নার
    সাথে সাথে তার শরীর কিৎবা শরীরের (কান অংশ দেখতে পাননি ৷ সম্ভবতঃ যে স্থানেই তার
    পবিত্র (দহ পড়েছিল সেখানেই তার দাফন হয়ে গিয়েছিল ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷

    ইবন ইসহ ক এই অভিযানের কথা উল্লেখ না করলেও ইবন হিশাম এই অভিযানের কথা

    উল্লেখ করেছেন ৷ ওয়াকিদী যেমনটি বর্ণনা করেছেন, ইবন হিশ্াম ও (৩ তমনটি করেছেন ৷ তবে

    তার বর্ণনায় আছে (য়, এই অভিযানে আমর ইবন উমাইয়ার (রা) সাথী ছিলেন জাব্বার ইবন
    সাখর ৷ আাল্লাহ্ইভা ৩াল জানেন ৷ সকল প্রশংসা তারই জন্যে ৷

    বি র-ই-মাউনার অভিযান

    এ ঘটনাটি ঘটেছিল : র্থ হিজরীর সফর মাসে ৷ মাকহুল (র ) এ বিষয়ে একটি একক মন্তব্য
    করেছেন (য়, এ ঘটনাটি ঘটেছিল খন্দক যুদ্ধের পর ৷ বুখারী (র) বলেন, আবু মা’মার
    আনাস ইবন মানিক (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে রাসুলুল্লাহ্
    (সা) ৭০ জন সাহাবী সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণ করেছিলেন ৷ তারা কুর্বা বা কুরআন
    বিশেষজ্ঞ রুপে পরিচিত ছিলেন ৷ মাউনা কু(য়া নামে একটি কু(য়ার নিকট বনু সুলায়ম (পাত্রের
    বিল ও যাকওয়ান নামে দুই উপগােত্র তাদের উপর আক্রমণ করে ৷ সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহর
    কসম আমরা (তা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে আসিনি ৷ আমরা (বর হয়েছি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
    একটি বিশেষ কাজে ৷ কাফিরেরা ৩াদের কথায় কর্ণপাত করলো না ৷ তারা তাদেরকে হত্যা
    করলো ৷ এ প্রেক্ষিতে একমাস যাবত রাসুলুল্লাহ্ (সা) ফজরের নামায়ে কুনুত ৩-ই-নাযিলা পাঠ করে
    তাদের জন্যে বদ দু’আ করেন ৷ তখন (থকেই কুনুত পাঠের সুচনা হয় ৷ ইতিপুর্বে আমরা কুনুত
    পাঠ করতাম না ৷

    মুসলিম (র ) হাম্মাদ ইবন সালামা আনাস (রা) সুত্রে অনুরুপ বর্ণাা করেছেন ৷ এরপর বুখারী
    (বা) বলেছেন, আব্দুল আলা ইবন হাম্মাদ আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণনা করেন
    (য়, রিল, যাকওয়ান উসা ইয়া এবং বনু লিহ্য়ান (গাত্রের (লা(করা তাদের শত্রু পক্ষের বিরুদ্ধে
    রাসুলুল্লাহ (সা) এর সাহায্য প্রার্থনা করল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তাদের সাহায্যার্থে ৭০ জন সাহাবী
    প্রেরণ করেন ৷ আমরা তাদেরকে কিরআত বিশেষজ্ঞ বলে অভিহিত কর৩াণ্ম ৷ সহজ সরল এই
    সাহাবীগণ দিনভর কাঠ সংগ্রহ করতে ন জীবিকা অর্জনের জন্যে ৷ আর সারারাত নামায আদায়
    করতেন ৷ তারা বি র-ই-মাউনা নামক কু(য়ার নিকট পৌছার পর উল্লিখিত গোত্রের লোকেরা
    বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং এই সাহাবীদল(ক হত্যা করে ৷ এই দুঃসৎবাদ পৌছে রড়াসুলুল্লাহ্

    (না)-এর নিকট ৷ অপরাধী ও বিশ্বাসঘাতক আরব গোত্র রিল, যাকওয়ান, উসায়্যা ও বনু লিহ্য়ান
    গোত্রের জন্য বদ দৃআ করে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এক মাস ব্যাপী ফজবের নামায়ে কুনুত পাঠ করেন ৷
    আনাস (রা) বলেন, ওই সড়াহাবীদের উপলক্ষ করে কুরআনের আয়াত নাযিল হয়েছিল, আমরা তা
    পাঠ করতাম ৷ পরবর্তীওে ওই আরা৩গুলাে রহি৩ করে নেয়া হয়েছে ৷ ওই আয়াত এই-

    আমাদের সম্প্রদায়কে এই সংবাদ পৌছে দাও যে, আমরা আমাদ্যো প্রতিপালকের নিকট
    এসে গিয়েছি ৷ তিনি আমাদের প্ৰতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমাদেবকেও সভুষ্ট করেছেন ৷ )

    এরপর বুখারী (রা) বলেছেন, মুসা ইবন ইসমাঈল আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে
    বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার প্রেরিত ৭০ জনের মধ্যে উন্মু লুলায়মের ভাই হারামকে
    অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন ৷ তখনকার মুশরিকদের নেতা ছিল আমির ইবন তুফায়ল ৷ সে তার প্রস্তাবিত
    তিনটি বিষয়ের যে কোন একটি গ্রহণের জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (সা)শু কে বলেছিল ৷ সে বলেছিল , হে
    মুহাম্মাদ (সা) ! আপনি গ্রামাঞ্চলের নেতা থাকুন আর আমাকে শহর এলাকার নেতৃত্ব দিন ৷ অথবা
    আমাকে আপনার খলীফা নিযুক্ত করুন যে, আপনার মৃত্যুর পর আমি আপনার খলীফা হবো অথবা
    আমি পাতফান গোত্রের হাজার হাজার লোক নিয়ে আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবো ৷ তারপর
    “উম্মু ফুলান” নাস্বী এক মহিলার বাড়ীতে অবস্থানকালে সে পুেগ রোগে আক্রান্ত হয় ৷ তার ঘাড়ে
    বড় রকমের ফোড়া দেখা দেয় ৷ সে বলেছিল, অমুক লোকের বংশ ধরের জনৈক মহিলার ঘরে
    আমি রোগাক্রান্ত হলাম ৷ ঘাড়ে উটের কুজের মত ফোড়া দেখা দিল ৷ তোমরা তাড়াতাড়ি আমার
    ঘোড়া এনে হাযিব কর ৷ আমি তাতে চড়ে এখান থেকে সরে যাই ৷ ওই ঘোড়ার পিঠেই তার
    মৃত্যু হয় ৷

    আলোচ্য অভিযানে উম্মু সুলায়মেব ভাই হারাম, অন্য একজন খোড়া লোক এবং অমুক
    ৎশের একজন লোক মোট তিনজন অগ্রসর হলেন ৷ হারাম (বা) তার দুসাথীকে বললেন,
    আপনারা আমার কাছাকাছি থাকবেন ৷ আমি ওদের নিকট যাব ৷ ওরা যদি আমাকে নিরাপত্তা দেয়
    তবে আপনারা আরো নিকটে অগ্রসর হবেন ৷ পক্ষাম্ভরে যদি ওরা আমাকে খুন করে ফেলে তবে
    আপনারা নিজ দলের নিকট ফিরে আসবেন ৷

    হারাম (রা ) শত্রুপক্ষের নিকট গেলেন ৷ তিনি ওধের৫ক বললেন , ৫তামরা কি আমাকে
    নিরাপত্তা দেবে যাতে করে আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর বাণী তোমাদের নিকট পৌছাতে পারি ৷ তিনি
    এ বিষয়ে ওদের সাথে আলাপ করছিলেন ৷ ওরা জনৈক ব্যক্তিকে ইশারা করেছিল, যে পেছন দিক
    থেকে এসে হারাম (রা)-কে বশা দ্বারা আঘাত করে ৷ বশয়ি তার দেহ এফোড়-ওভ্রুফাড় হয়ে যায় ৷
    মৃত্যু নিশ্চিত জেনে তিনি বলে উঠলেন ও
    কাবার প্রতিপালকের কসম, আমি সফলকাম হয়েছি ৷ হারামের (রা) সাথী লোকটি এ
    অবস্থা প্রত্যক্ষ করে নিজ সঙ্গীদের নিকট ফিরে এলেন ৷ কিন্তু কাফিব দল এসে তাদের সকলকে
    হত্যা করল ৷ রক্ষা পেয়েছিলে শুধু খোড়া লোকটি ৷ তিনি একটি পাহাড়ের চুড়ায় উঠে আত্মগােপন

    করেছিলেন ৷ এ প্রেক্ষিওে আহ্লা ৷ হু তাআল৷ কুরআনের আয়াত নাযিল করেছিলেন ৷ পরে অবশ্য
    আয়াতগুলে৷ মানসুখ (রহিত ) হয়ে যায় ৷ আয়াতগুলাে এই

    আমরা আমাদের প্ৰতিপালকের সাথে সাক্ষাত করেছি ৷ তিনি আমাদের প্রতি সভুষ্ট হয়েছেন
    এবং৩ তিনি আমাদেরকে সন্তুষ্ট করেছেন ৷ এই প্রেক্ষিতে রাসুলুৰুৰুান্ ধ্ ণ্ডুছু (সা) বি ল, যাকওয়ান, বনু
    লিহয়ান ও উসাইয়৷ পােত্রসমুদুহর জন্যে বদ দুআ করেন ৩০ দিন যাতে ফজরের নামাদুয কুনুতে
    নাযিল৷ পাঠের মাধ্যমে ৷ ওর৷ আল্লাহ ও তার রাসুলের নাফরমানী করেছিল ৷

    বৃখারী (ব ) বলেন, হিববান আনন্দে ইবন মালিক (রা) বদুল্দুছন হার ম ইবন মিলহান
    যিনি হযরত আনাদুসর (রা ) মামা ৷ছিলেন ৷ শত্রুপদুক্ষর তীদুদ্বহুঅ ঘাদুত আহত হলেন ৷ বস্তুত
    বি র-ই মাউনার ঘটনায় যখন তিনি আহত হলেন তখন তিনি ক্ষত স্থান থেকে রক্ত নিয়ে মাথায় ও
    মুখে ছিটিয়ে উঠে বলেছিলেন কাবার মালিকের কসম , আমি সফলকাম হয়েছি ৷ ”

    বৃখারী (র) বলেন, উবায়দ ইবন ইসমাঈল হিশাম ইবন উরওয়৷ ৷থেদুক বর্ণনা করেন ৷
    তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে জানিয়েছেন যে, বি র ই-মাউনার ঘটনায় যখন সাহাবীগ ৷ণ
    ট্রুাহীদ হলেন এবং আমর ইবন উমা ইয়৷ দিমারী বন্দী হলেন তখন কাফির দুন৩ ৷ আমির ইবন
    তাফায়ল একজন নিহত ব্যক্তির দিকে ইঙ্গিত করে বদুলছিল এই লোকটি দুক ? উত্তরে আমর
    ইবন উমাইয়া বললেন, ইনি আমির ইবন ফুহায়র৷ ৷ আমর ইবন দুতাফায়ল বলল, এই লোক
    নিহত হওয়ার পর আমি দেখেছি যে, তাকে আকাশে তুলে নেওয়া হয়েছে ৷ এমনকি আমি যেন
    তাকে দেখতে পাচ্ছিলাম যে, সে আসমান ও যমিদুনর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করছে ৷ তারপর
    তাকে পুনরায় পৃথিবীতে রেখে দেওয়া হয়েছে ৷ এরপর তাদের মৃত্যুর সংবাদ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-দুক
    জানানো হল ৷ তিনি সাহাবীদের মধ্যে ওই সংবাদ ছড়িয়ে দিলেন ৷ তিনি বললেন, তোমাদের
    সাথিগণ বিপদের মুদুখামুখি হয়েছে ৷ তারা তাদের প্রতিপালকের নিকট এ বলে নিবেদন করেছিল
    যে, হে প্রভু ৷ আপনি আমাদের প্ৰতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমরা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছি এ
    শুভ সংবাদটি আমাদের সাথীদেরকে জানিয়ে দিন ৷ বস্তুত ওই শহীদদের অবস্থা আল্লাহ তাআলা
    জীবিত সাহাবীদেরকে জানিয়ে দিলেন ৷ ওই দিন আসম৷ ইবন সালত এর পুত্র উরওয়৷ শহীদ
    হয়েছিলেন ৷ তার নাম অনুসারে উরওয়৷ ৷(রা) কে ওই নামে ডাকা হয় ৷ সেদিন মুনযির ইবন
    আমর ও শহীদ হয়েছিলেন ৷ পরে তার নামে মুনষির (রা) এর নাম রাখ ৷হয় ৷ এই কমিটি সহীহ্
    বুখারীতে এরুপই উরওয়৷ ৷(বা) থেকে মুরসালরুদুপ বর্ণিত হয়েছে ৷

    বায়হার্কী হযরত অ ইশ্ ৷ ৷(র৷ ) সুত্রে এটি বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি হিজরদু৩ র হাদীছ
    বর্ণনা করেছেন এবং শেষ দিকে ততটুকু অতিরিক্ত সংযোজন করেছেন যা ইমাম বৃখারী এখানে
    উল্লেখ করেছেন ৷ আল্পাহুই ভাল জাদুনন ৷

    ওয়াকিদী (র) উরওয়৷ সুত্রে এটি বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি এই ঘটনা, আমির ইবন
    যুহায়র-এর শাহাদত বরণ এবং তাকে আকাশে উঠানো হয়েছিল বলে আমির ইবন তােফায়লের
    বক্তব্য উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি এও উল্লেখ করেছেন যে, যে ব্যক্তি আমির ইবন ফুহায়রাকে হত্যা

    করেছিল তার নাম জাব্বার ইবন সালমা কিলাবী , সে বলেছে যে, সে যখন তাকে বশা দ্বারা
    আঘাত করে তখন তিনি বলেছিলেন

    কাবা গৃহের মালিকের কলম, আমি সফলকাম হয়েছি ৷ তারপর জাব্বার জিজ্ঞেস করেছিল
    যে, “আমি সফলকাম হয়েছি” দ্বারা আমির ইবন ফুহায়রা কি বুঝাতে চেয়েছিলেন ? সড়াহাবীগণ
    বললেন, তিনি বুঝিয়েছেন যে, তিনি আল্লাহর পথে শহীদ হয়ে জতাংত লাভে ধন্য হয়েছেনঃ,
    জাব্বার বলল, হা , আপনি ঠিকই বলেছেন ৷ এই ঘটনার প্রেক্ষাপটেই পররত তে জাব্বা,র ইবন
    সুলমা ইসলামে দীক্ষিত হয় ৷

    মুসা ইবন উক্বা সংকলিত মাপাযী গ্রন্থে উরওয়া থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন
    আমির ইবন ফুহায়রার লাশ খুজে পাওয়া যায়নি ৷ সকলের ধারণা যে, ফেরেশতাগণ তার লাশ
    অম্ভর্হিত করে ফেলেন ৷ ইবন ইসহাকের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউনুস বলেছেন , রাসুলুল্লাহ্ (সা ) উহুদ
    যুদ্ধের পর শাওয়াল মাসের অবশিষ্ট দিনগুলাে , যিলকদ, যিলহাজ্জ এ বং, ঘৃহাররম মাস মদীনায়
    অবস্থান করেছিলেন ৷ এরপর উহুদ যুদ্ধের চার মাসের মাথায় সফর মাসে বির-ই-মাউনার
    অভিযানে সাহাবীদেরকে প্রেরণ করেন ৷ আবুইসহাক ইবন ইয়ড়াসার আমার নিকট বর্ণনা করেছেন,
    মুপীরা ইবন আবদুর রহমান এবং আবদুর রহমান ইবন আবু বকর প্রমুখ থেকে ৷ তারা বলেছেন
    যে, আবু বারা আমির ইবন মালিক মদীনায় রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর দরবারে উপস্থিত হয় ৷ রাসুলুল্লাহ্
    (না) তাকে ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানান ৷ সে ইসলাম গ্রহণও করেনি আবার সরাসরি
    প্রত্যাখ্যানও করেনি ৷ সে বলল, হে মুহাম্মাদ ! আপনি যদি আপনার সাহাবীদের একটি দল নজ্বদ
    অঞ্চলে প্রেরণ করতেন আর তারা ওদেরকে যদি আপনার প্রচারিত ধর্মের দাওয়াত ত তবে
    আমার আশা যে, ওরা ইসলাম কবুল করত ৷ আপনার ডাকে সাড়া দিত ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন,
    নজদের লোকেরা আমার সাহাবীদের উপর আক্রমণ করতে পারে বলে আমি আশংকা করছি ৷
    আবু বারা বলল, না-না আমি বরং আপনার সাহাবীদের নিরাপত্তা বিধান করব ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বনু
    সাঈদা গোত্রের মুনযির ইবন আমর সহ উচ্চ পর্যায়ের ৪০ জন সাহাবীর একটি দল প্রেরণ
    করলেন ৷ মুনযিরকে আল মুআন্নিক লি-য়ামুত বা মৃভ্যুকে আলিঙ্গনকারী বলা হতো ৷ ওই দলে
    আরো যারা ছিলেন তারা হলেন হারিছ ইবন সাম্মাহ বনু আদী গোত্রের, হারাম ইবন মিলহান-ইনি ,
    উরওয়া ইবন আসমা ইবন সালত সুলামী , নাফি ইবন বুদায়ল ইবন ওয়ারকা খুযাঈ এবং আবু
    বকর (রা)এর আযাদকৃত দাস আমির ইবন ফুহায়রা (বা) প্রমুখ ৷ তারা রওয়ানা করলেন ৷
    বির-ই-মাউনা নামক কুয়াের নিকট গিয়ে তারা যাত্রা বিরতি করলেন ৷ এ স্থানটি ছিল বনু আমির
    গোত্রের সমতল ভুমি এবং বনু সুলায়ম গোত্রের মরুভুমি এর মধ্যবর্তী এলাকা ৷ এ পর্যায়ে হারাম
    ইবন মিলহান বাহক মারফত রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর একটি চিঠি পাঠালেন সেখানকার কাফির নেতা
    আমির ইবন তােফায়লের নিকট ৷ পত্র বাহক তার নিকট গোছার সাথে সাথে সে তাকে হত্যা
    করে ৷ পত্রে কী লেখা ছিল তা সে তাকিয়েও দেখেনি ৷ তারপর সে বনু আমির গোত্রের
    লোকজনকে আহ্বান জানায় সাহাবী দলের উপর আক্রমণ করার জানা ৷ কিন্তু ওই গোত্রের
    লোকেরা তার আহ্বানে সাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানায় ৷ তারা বলেছিল, আবু বারা ওদেরকে
    নিরাপত্তা দানের যে অঙ্গীকার করেছেন আমরা তা লঙ্ঘন করতে পারব না ৷ এদের পক্ষ থেকে

    নিরাশ হয়ে আমির ইবন তোফায়ল বানু সুলায়ম গোত্রের উসাইয়া, রিল, যাকওয়ান ও কারাহ্ শাখা
    পােত্রসমুহের লোকদেরকে আক্রমণের জন্যে আহ্বান জানায় ৷ ওরা তার ডাকে সাড়া দেয় ৷ তারা
    নেমে এসে সাহাবীদেরকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে ৷ অগত্যা সাহারাগণ তরবারি ধারণ করেন
    এবং শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন ৷ যুদ্ধ করতে করতে বনু দীনার গোত্র কা’ব ইবন যায়দ
    ব্যতীত সকলেই শহীদ হয়ে যায় ৷ শত্রুর আঘাতে কা’ব ইবন যায়দ মৃত প্ৰ৩ায় হয়ে পড়েছিলেন ৷
    নিহতদের সারিতে তিনি জীবন্মুত অবস্থায় পড়ে রয়েছিলেন ৷ মৃত মনে করে ওরা তাকে ফেলে
    চলে যায় ৷ ফলে তিনি বেচে যান এবং খন্দক যুদ্ধে৩ তিনি শহীদ হন ৷ আমর ইবন উম ৷ইয়৷ দিমারী
    ও আমর ইবন আওফ গোত্রের জনৈক আনসারী ব্যক্তি সাহাৰীদলের পক্ষে অবস্থা পর্যরেক্ষণে
    ছিলেন ৷ সাহাবী দলের ভাগ্যে যা ঘটেছে তা তারা জানতেন না ৷ দুর থেকে হঠাৎ তারা দেখেন
    যে, সাহাবীদলের অবস্থান ক্ষেত্রের উপর পাখী উড়ছে ৷ তাতোরা ৷বললেন যে এই পা খীগুলোর
    নির্দিষ্ট একটা নিয়ম রয়েছে এবং নিশ্চয়ই ওখানে কিছু একটা ডা;টছে ৷ অবস্থা জানার জন্যে তারা
    দুজনে এগিয়ে এলেন ৷ তারা দেখতে পেলেন তাদের লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় নির্জীব পড়ে
    রয়েছেন ৷ আর আক্রমণকারী শত্রুপক্ষ তখনও দাড়িয়ে রয়েছে ৷ আমির ইবন উমাইয়ার উদ্দেশ্যে
    আনসারীটি বললেন, এখন কী করা যায় ? আমির বললেন, আমি মনে করি এখন রাসুলুল্লাহ্
    (না)-এর নিকট গিয়ে সকল সংবাদ তাকে জানানো-ই ভাল হবে ৷ আনসারী ব্যক্তি বললেন, যে
    স্থানে মুনযির ইবন আমর (রা) নিহত হয়েছেন সে স্থান থেকে সুস্থ দেহে জীবিত ফিরে যাওয়া
    এবং এই সব বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির মৃত্যুর সংবাদ বহন করা আমি ভাল মনে করি না ৷ একথা
    বলে তিনি শত্রুর বিরুদ্ধে আক্রমণে ঝাপিয়ে পড়েন এবং শহীদ হয়ে যান ৷ আমির ইবন উমাইয়া
    দিমারী শত্রুর হাতে বন্দী হন ৷ আমর ইবন উমাইয়৷ মুদার গোত্রের লোক ছিলেন বলে অবহিত
    হবার পর আমর ইবন তোফায়ল তার মাথার চুল কেটে তাকে মুক্ত করে দেয় ৷ কারণ, তার
    মায়ের মুদার গোত্রের একটি ক্রী৩ দাস মুক্ত করার মানত ছিল ৷ বস্তুত মুক্তি লাভের পর আমর
    ইবন উমা ইয়৷ মদীনা ৷র উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন ৷ কানাত অঞ্চলের মধ্যবর্তী কারকারায় এক ছায়াময়
    ন্থানে৩ তিনি বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ৷ এ পর্যায়ে বনু আমির গোত্রের দুজন লোকও ওই ছায়ায় বিশ্রাম
    নিতে আসে ৷ আমির গোত্রের এই দুজন লোক রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে চুক্তি বন্ধনে আবদ্ধ
    এবং নিরাপত্তা ৷প্রাপ্ত ছিল ৷ আমর ইবন উমা ইয়৷ (রা) তা জানতেন না ৷৩ তাদের উপস্থিতির সময়
    তিনি তাদের বংশ ও গোত্র পরিচয় জেনে নিয়েছিলেন ৷৩ তারা বলেছিলেন যে, তারা আমির
    গোত্রের লোক ৷ তিনি তাদেরকে সুযোগ দিলেন ৷৩ তারা ঘুমিয়ে পড়ল ৷ আমির গোত্রের লোকেরা
    সাহাবী দলের উপর যে যুলুম নিযতিন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তার প্রতিশোধ হিসেবে একই
    গোত্রের এই দুজন লোক হত্যা করে তিনি তার প্ৰতিশোধ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন ৷ ফলে ঘুমের
    মধ্যে তিনি ওই দু’ জনকে হত্যা করে ফেললেন ৷ আমর ইবন উমাইয়া রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট
    ফিরে এসে সকল সং বাদ তাকে জানান ৷ তিনি আমির গোত্রের দুজন লোককে হত্যা করেছেন
    তাও তিনি জানালেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “তুমি যে দুজন লোককে হত্যা করেছ আমার
    তো তাদের রক্তপণ পরিশোধ করতে হবে ৷ ” তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “এটি আবুব ৷রা
    এর কর্ম ৷ আমি আগে থেকেই শংকিত ছিলাম ৷ এই অভিযান প্রেরণে আমি আগ্রহী ছিলাম
    না ৷” রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর এই মন্তব্য আবুরারা-এর নিকট পৌছে যায় ৷ আমির ইবন তোফায়ল

    তার নিরাপত্তা চুক্তি নষ্ট করার এবং তারই নিরাপত্তার দায় গ্রহণের প্রেক্ষিতে সাহাবীগণ যে ,
    করুণ পরিণতির সম্মুখীন হন তার জন্যে আবুবারা মমাহত হন ৷ আমির ইবন তোফায়ল কর্তৃক
    আবু বারা-এর নিরাপত্তার দায় নষ্ট করার কথা উল্লেখ করে এবং এজন্যে আমিরের উপর
    প্ৰতিশো ধ নিতে আবু বাবার ছেলেদেরকে উৎসাহিত করে হযরত ৰুহাসসান ইবন ছাবিত তার
    কবিতায় বলেন :

    হে উম্মুল বানীন এর বংশধররা! তোমরা তো নজদ অধিবাসীদের ঘ৷ হৃ৷ শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিতৃ ৷
    তোমাদেরকে কি বিচলিত করেনি ৷

    তোমাদেরকে কি বিচলিত করেনি আবু বার৷ সম্পর্কে আমিরের ন্রুমন্যায় পদক্ষেপ ? তার
    নিরাপত্তার দায় নষ্ট করার জন্যে ৷ ভুল তো সজ্ঞানেকৃত কর্মের সমতুল্য হতে পারে না ৷

    হে পখিক! উদ্যমী রাবীআকে তুমি এ কথা জানিয়ে দাও যে, আমার পরে তুমি যুব সমাজের
    মাঝে কী অবদান রেখেছ

    তোমার পিতা তো যুদ্ধ পারদর্শী শীর্ষস্থানীয় যোদ্ধা আবু বারা ৷ আর তোমার মামা হচ্ছেন
    অভিজাত ব্যক্তিত্ব হাকায ইবন স৷ দ ৷

    ইবন হিশাম বলেন, উম্মুল বানীন হল আবু বাবা এর মা ৷ সে আমর ইবন আমির ইবন
    রাবীআ ইবন আমির ইবন সাসাআ এর কন্যা ৷ বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাবীআ ইবন আমির
    ইবন মালিক একদিন আমর ইবন তোফ৷ ৷য়লের উপর আক্রমণ চালায় ৷ এক আঘাতে তাকে খুন
    করতে গিয়ে ভুলবশত তিনি আঘাত করে বলেন তার উরুতে ৷ সে ঘোড়ার পিঠ থেকে মাটিতে
    পড়ে যায় ৷ সে বলে এটি নিশ্চয়ই আবুবারা-এর অপকর্ম ৷৩ তার পক্ষে কেউ এ কাজ করেছে ৷
    আমির আহত অবস্থায় এও বলছিল যে, আমি যদি মারা যাই তবে আমার রক্তপণ পারে আমার
    চাচা ৷ অন্য কেউ যেনত ৩াদাবী না করে ৷ আর আমি যদি এ যাত্রায় বেচে যাই তবে কী সিদ্ধান্ত
    দেবতা পরে ভেবে দেখব ৷

    মুসা ইবন উক্বা যুহরী সুত্রে মুহাম্মাদ ইবন ইসহাকের ন্যায় বর্ণনা করেছেন ৷ মুসা উল্লেখ
    করেছেন যে, ওই সাহাবীদলের দলপতি ছিলেন মুনযির ইবন আমর ৷ কেউ বলেছেন যে, দলপতি
    ছিলেন৷ মার ছাদ ৷ইবন অ বু মাবছ দ ৷

    ইবন ইসহাক উল্লেখ করেছেন যে, বির-ই-মাউনার ঘটনায় নিহত সাহাবীদের জন্যে শোক
    প্রকাশ করে হাস্সান ইবন ছাবিত কেদে কেদে নিম্নের কবিতা আবৃত্তি করেছেন ৷

    হে আমার চোখ! অশ্রু বিসর্জন করে শোক প্ৰকাশ কর বি র-ই-মাউনার ঘটনায় নিহত
    সাহাবীদের জন্যে ৷ অশ্রু ঝরাও প্রবল বেগে, একটুও কমতি করোনা ৷

    অশ্রু বিসর্জন দাও রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর প্রেরিত অশ্বারোহী বাক্ট্রলীর জন্যে যারা ভোরবেলায়

    শত্রুপক্ষের মুখোমুখি হয়েছিলেন ৷ আর তখনই তাদের জন্যে নিংারিত মৃত্যু তাদেরকে পেয়ে
    বসে ৷
    এমন এক সম্প্রদায়ের কারণে তাদের উপর মৃত্যু নেমে আ স যারাসম্পাদিত চুক্তিকে ওয়াদা
    তলের মাধ্যমে বিশ্বাস ঘা৩ কতায় পরিণত করেছে ৷

    আহ্ ৷ আমার দুঃখ হয়, যুনযিরের জন্যে ৷ তিনি দলের (নতৃতৃ গ্রহণ করেছিলেন এবং ভৈধর্যের
    সাথে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিলেন ৷

    আমার দুঃখ ওই দিন সকা ল যেলার ঘটনার জন্যে ৷ তিনি আ ক্রাম্ভ হয়েছিলেন ৷ তিনি সুদর্শন,
    শ্রদ্ধাভা জন এবং আমর (রা) এর অম্ভরঙ্গ ৷

    বনু নাযীরের যুদ্ধ
    এ প্ৰসংগে সুরা হাশর নাযিল হয় ৷

    সহীহ্ বুখারীতে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এই সুরাকে সুরা বনু নাযীর নামে
    আখ্যায়িত করতেন ৷ বুখারী (বা) যুহরী সুত্রে উরওয়া থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন যে ,
    বদর যুদ্ধের ছয় মাস পরে এবং উহুদ যুদ্ধের পুর্বে বনুনাযীর যুদ্ধ অনুষ্ঠিত ৩হয় ৷ ইবন আবু হাতিম
    তারাতাফসীর গ্রন্থে৩ার পিতা যুহরী থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ হাম্বল ইবন ইসহাক
    যুহরী থেকে অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে ৷ যুহরী বলেছেন যে, ২য় হিজরীর ১ ৭ই রমযান বদর যুদ্ধ
    সংঘটিত হয় ৷ তারপর বনুনাযীর যুদ্ধ ৷ তারপর তৃতীয় হিজরীর শাওয়াল মাসে উহুদ যুদ্ধ সংঘটিত
    হয় ৷ তারপর ৪র্থ হিজরীর শাওয়াল মাসে খন্দকের যুদ্ধ সংঘটিত হয় ৷ বায়হাকী (র) বলেন যে ,
    যুহরী বলতেন, বনুনাযীর যুদ্ধ সংঘটিত হয় উহুদ যুদ্ধের পুর্বে ৷ অপর একদল ঐতিহাসিক বলেন
    যে, বনু নাযীর যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয় উহু দ যুদ্ধের এবং বির-ই মাউনা অভিযানের পর ৷
    আমি বলি, ঐতিহাসিক ইবন ইসহাকতাই উল্লেখ করেছেন যে, বনু নাযীর যুদ্ধ সংঘটিত
    হয়েছে উহুদ যুদ্ধ ও ৰি র-ই-মাউনা অভিযানের পর ৷ করণ, বি র-ই মাউনার ঘটনা, সেখান
    থেকে আমর ইবন উমাইয়া দিমারীর পালিয়ে আসা, আমর গোত্রের দুজন লোককে হত্যা করা

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ বি’র-ই-মউনার অভিযান Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.