এরপর তিনি ওয়ালীদ ইবন মুসলিম আলা ইবন যুবায়র কিলাবী সনদে বর্ণনা
করেছেন যে তার পিতা যুবায়র কিলাবী বলেছেন আমি রোমকদের উপর পারসিকদের বিজয়
এবং পারসিকদের উপর রোমকদের বিজয় দুটে ই দেখেছি ৷ এরপর রোমক এবং পারসিক ৩ভয়
জাতির উপর মুসলমানদের বিজয় দেখিছি ৷ মুসলমানদের সিরিয়া এবং ইরাক জয়ও আমি
দেখেছি ৷ মাত্র পনের বছরের মধ্যে এসব ঘটনা সংঘটিত হয় ৷
মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর রাত্রিভ্রমণ
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর মি’রাজ ও ভৈনশ ভ্রমণের হাদীছগুলাে ঐতিহাসিক ইবন আসাকির তার
গ্রন্থে “নবুওয়াতপ্রাপ্তির প্রথম দিকের ঘটনাবলী” অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন ৷ তবে ইবন ইসহাক
ওইগুলো উল্লেখ করেছেন নবুওয়াত লাভের ১০ বছর পরের ঘটনাবলীব সাথে ৷ বায়হাকী (ব)
মুসা ইবন উকব৷ সুত্রে যুহরী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর রাত্রিকালীন বিশেষ
ভ্রমণের ঘটনা ঘটেছে তার মদীনায় হিজরতের এক বছর পুর্বে ; তিনি বলেছেন যে, ইবন
লাহ্ইয়াহ্ আ বু আসওয়াদ সুত্রে উরওয়া থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ হার্কীম ইসমাঈল
সুদ্দী (র) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর হিজরতের ১৬ মাস পুর্বে মি’রাজের
রাত্রিতে বায়তুল মুক ৷দ্দাসে তার উপর পাচ ওয়াক্ত নামায ফরয করা হয় ৷ সুতরাং সুদ্দীর বর্ণনা
অনুসারে মি রাজের ঘটনা ঘটে যুল-কা ৷দ৷ মাসে আর যুহরী ও উরওয়া (র)-এর বর্ণনানুসারে
ওই ঘটনা ঘটে রবিউল আউয়াল মাসে ৷ আবু বকর ইবন আবু শায়বা জাবির ও ইবন
আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন, তারা দুজনে বলেছেন যে, হাতীর বছরে রবিউল আউয়াল
মাসের ১২ তারিখ সোমবার রাসুলুল্লাহ্ (সা) জন্মগ্রহণ করেন ৷ পরবর্তীতে একই তারিখে তিনি
নবুওয়াত প্রাপ্ত হন ৷ ওই তারিখে তার মি রাজ স০ ঘটিত হয় ৷ ওই তারিখে হিজরত করেন এবং
ওই তারিখেই তিনি ইনতিকা ৷ল করেন ৷ অবশ্য, এই বর্ণনার সনদে বিচ্ছিন্নতা আছে ৷
হাফিয আবদুল গনী ইবন সারুর মুকাদ্দিসী তার সীরাত গ্রন্থে এ তারিথটিই গ্রহণ করেছেন ৷
অবশ্য,৩ তিনি অন্য একটি হাদীছও উল্লেখ করেছেন, সেটির সনদ বিশুদ্ধ নয় ৷ ওই হাদীছটি
আমরা রজব মাসের ফযীলত প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছি ৷ সেটি এই যে, মিরাজের ঘটনা ঘটেছিল
রজব মাসের ২৭ তারিখের রাতে ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
কেউ কেউ মনে করেন যে, রজব মাসের প্রথম জুমুআর রাতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত
রাতে) মিরাজ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৷ এই রাতকে “লায়লাতুর রাপাইব” বলা হয় ৷ ওই রাতে
বিশেষ নামায আদায়ের রেওয়াজের উদ্ভব হয়েছে ৷ বস্তুত এর কোন গ্রহণযোগ্য দলীল নেই ৷
আল্লাহ্ইভ ৷ল জানেন ৷ এ প্রসৎগে কেউ কেউ এই কবিতা পা ৷ঠ করেন :
অর্থাৎ জুমুআর রাত সে তো মর্যাদাময় রাত ৷ রজব মাসের প্রথম জুমুআর রাতে নবী করীম
(না)-এর মিরাজ অনুষ্ঠিত হয় ৷ ’
এই কবিতায় দুর্বলতা আছে ৷ যারা জুষুআর রাতে মিরাজ সংঘটিত হওয়ার অভিমত
পোষণ করেন তাদের বক্তব্যের সমর্থনে আমরা এই কবিতা উল্লেখ করলাম ৷
আল্লাহ তাআলার বাণী
পবিত্র মহিমময় তিনি যিনি তার বান্দ৷ কে রজনীযােগে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মাসজিদৃল হারাম
থেকে মাসজিদুল আকসায় বা ব পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময় তাকে আমার নিদর্শন
দেখাবড়ার জন্যে ৷ তিনি সর্বগ্রো৩ তা সর্বদ্রষ্টা (১৭ : ১) ৷ এ আয়াত প্রসংপে আমরা এ সম্পর্কিত
প্রায় সকল হাদীছ উল্লেখ করেছি ৷ সুতারাং সেখান থেকে সুদৃঢ় সনদ বিশিষ্ট হাদীছগুলে৷ এব০এ
বিষয়ক আলোচনা আমরা এখানে উল্লেখ করব ৷ ত-৷ ই যথেষ্ট হ্য:ব ৷ ইবন ইসহাকের বক্তব্যের
সার কথাগুলােও আমরা উল্লেখ করব ৷ কারণ ইদ্ব তাপুর্বে উল্লিখিত অধ্যায়গুলাে উল্লেখ করার
পর তিনি বলেছেন তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে রাত্রিকালীন ভ্রমণ করানো হল মাসজিদুল
হারাম থেকে মড়াসজিদুল আকসা পর্যন্ত ৷ মাসজিদুল আকসা হল ইলিয়৷ এলাকার বায়তুল
মুকাদ্দাসে ৷ ইতোমধ্যে মক্কার কুরায়শ ও অন্যান্য গোত্রের মধ্যে ইসলাম প্রচারিত হয়েছে ৷ ইবন
ইসহাক আরো বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর রাত্রিকালীন বিশেষ ভ্রমণ তথা মিরাজ সম্পর্কে
র্যাদের হাদীছ আমার নিকট পৌছেছে তারা হলেন ইবন মাসউদ (রা) , আবু সাঈদ (বা) , আইশা
(রা) , মুআবিয়া (রা) , উম্মে হানী (রা) বিন;ত আবু তালিব, হাসান ইবন আবু হাসান (রা) , ইবন
শিহাব যুহরী (র) , এবং কাতাদ৷ (র) প্রমুখ বিশেষজ্ঞগণ ৷ তারা সকলে কিন্তু ঘটনার সকল দিক
বর্ণনা করেননি ৷ বরং এক একজন এক এক অংশ বর্ণনা করেছেন ৷ মুলত রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
মিরাজের ঘটনায় আমার নিকট যে সকল তথ্য পৌছেছে, সেগুলোর মধ্যে ঈমানী পরীক্ষা
রয়েছে ৷ এটি মুলত মহান আল্লাহর অপরিসীম কুদরত ও শক্তির বহিঃপ্রকাশ ৷ জ্ঞানী লোকদের
জন্যে এর মধ্যে বহু শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে ৷ এর মধ্যে রয়েছে হিদায়াত, রহমত এবং
ঈমানদারদের জন্যে দৃঢ়তার উপাদান ৷ এটি নিশ্চয় আল্লাহ তাআলার সুমহান কর্ম ৷ রাসুলুল্লাহ
(না)-কে যা দেখানোর ইচ্ছা ছিল তা দেখানোর জন্যে মহান আল্লাহ তাকে যেভাবে চেয়েছেন
যেরুপে চেয়েছেন, সেরুপে ভ্রমণ করিয়েছেন ৷ ফলে তিনি মহান আল্লাহর অনন্য কুদরত ও
শক্তির নিদর্শন প্রত্যক্ষ করলেন ৷ যে কুদরত ও শক্তি দ্বারা আল্লাহ যখন যা চান, তখন তা
করতে পারেন ৷
আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) বলেন রা ৷সুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট বুরাক উপস্থিত করা হল ৷
এটি সেই বাহন, পুর্ববর্তী নবীগণ৷ বা ব উপর সওয়ার হরু৩ তন ৷ সেটি তার কদম রাখে তার দৃষ্টির
প্রান্ত সীমার ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেটিতে সওয়৷ র হলেন ৷ তাকে নিয়ে সাথী জিবরা ঈল (আ) যাত্রা
করলেন ৷ আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী নিদর্শনগুলাে তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে দেখাচ্ছিলেন ৷
তারা বায়তৃল মুকাদ্দাস গিয়ে পৌছলেন ৷ সেখানে হযরত ইবরাহীম (আ), মুসা (আ) ও ঈসা
(আ) সহ অনেক নবী-রাসুলের সাথে সাক্ষাত হয় ৷ তার অভ্যর্থনার জন্যে তারা সেখানে
সমবেত হয়েছিলেন ৷ তিনি তাদেরকে নিয়ে নামায আদায় করেন ৷ এরপর তার সম্মুখে৩ তিনটি
পাত্র উপস্থিত করা হয় ৷ একটিতে ৩,দুধ একটিতে মদ এবং একটিতে ছিল পানি ৷ তিনি দুধের
পাত্র থেকে পান করলেন ৷ এরপর জিবৃরাঈল (আ) রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে বললেন, “আপনি নিজে
হিদায়াতপ্রাপ্ত হলেন আপনার উম্মত তকেও হিদায়া ৷তপ্রাপ্ত করলেন ৷”
হাসান বসরী (র) সুত্রে মুরস ল রুপে ইবন ইসহাক বলেন, জিবরাঈল (আ) রাসুলুল্লাহ্
(না)-কে ঘুম থেকে তুললেন ৷ এরপর তাকে নিয়ে মাসজিদুল হারামের দরজায় এলেন ৷ তাকে
বুরাকের পিঠে আরোহণ করালেন ৷ এটি গাধ৷ ও খচ্চরের মাঝামাঝি আকারের একটি সাদা
রঙের সওয়ারী ৷ সেটির দু’ উরুতে দুটো ডানা ছিল ৷ ডানা দুটো দ্বারা সে পা দুটো ঢেকে
রেত্তুখছিল ৷ সে কদম রাখছিল তার দৃষ্টির শে ৷ষসীমায় ৷ রাসুলুল্লাহ্ ( সা) ৷ বলেন, এরপর জিবরাঈল
(আ) আম কে বুরাকের পিঠে তুললেন ৷ তারপর আমাকে নিয়ে৷ যা এ৷ করলেন ৷ আমরা যাচ্ছিলাম
এক সাথে ৷ একে অন্য থেকে অদৃশ্য হইনি ৷
আমি বলি ইবন ইসহাকের উল্লিখিত কাত ৷দ৷ (র) এর হাদীছে এরুপ রয়েছে যে,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন বুরাকের পিঠে উঠার ইচ্ছা করলেন, তখন সে দাপাদ৷ পি করে তাকে পিঠে
নিতে অসম্মতি উত্থাপন করছিল ৷ তখন তার কেশরে হাত রেখে জবরাঈল (আ) বললেন, হে
বুরাক! তুমি যা করছো তার জন্যে কি তোমার লজ্জা হয় না ? আল্লাহর কলম, মুহাম্মদ (সা) এর
পুর্বে এমন কোন বান্দা তোমার পিঠে চড়েননি যিনি আল্লাহর নিকট তার চাইতে অধিক
সম্মানিত৷ একথা শুনে বুরাকটি লজ্জিত হলো ৷ তার দেহ থেকে মান বের হতে শুরু করে ৷ সে
শান্ত হয় ৷ র ৷সুলুল্লাহ্ (সা) তার পিঠে আরোহণ করলেন ৷ হাসান বসরী (র)ত তার বর্ণনায় উল্লেখ
করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) য ৷ত্র৷ শুরু করলেন ৷ তার সাথে রইলেন হযরত তজিবরাঈল (আ)া
তারা বায়তুল ঘুকাদ্দাসে গিয়ে পৌছলেন ৷ সেখানে হযরত ইব্রাহীম (আ) মুসা (আ), ও ঈসা
(আ)-সহ অনেক নবী-রাসুলের সাথে তাদের সাক্ষাত হয় ৷ রাসুলুল্পাহ্ (সা) ইমাম হয়ে
তাদেরকে নিয়ে নামায আদায় করলেন ৷ এরপর ইবন ইসহাক রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নদের
পরিবর্তে দুধের পাত্র গ্রহণ করার ঘটনা এবং তাকে উদ্দেশ করে জিবরা ঈল (আ) এর “আপনি
হিদায়াতপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং উম্মত কেও হিদায়াতপ্রাপ্ত করেছেন আর আপনাদের জন্যে মদ
হারাম করা হয়েছে” মন্তব্য করার কথা উল্লেখ করেছেন ৷
বর্ণনাক৷ রী বলেন এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) মক্কায় ফিরে এলেন এবং সকাল বেল৷ কুরায়শী
লোকদেরকে এ ঘটনা বলতে শুরু করলেন ৷ কথিত আছে যে, অধিকাৎশ লোক তার বক্তব্য
প্রত্যাখ্যান করলো এবং একদল লোক ইসলাম গ্রহণের পর মুরতাদ ও ধর্যত্যাপী হয়ে যায় ৷
হযরত আবু বকর (বা) তা শোনা মাত্র সত্য বলে মেনে নেন ৷ তিনি বলেন, আমি তো
সকাল-সন্ধ্য৷ তার আসমানী সৎবাদগুলো বিশ্বাস করি ৷ তাহলে তার বায়তুল মুকাদ্দাস যাওয়ার
সৎবাদ বিশ্বাস না করার কী আছে ? বর্ণিত আছে যে , হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা) বায়তুল
মৃকাদ্দাসের অবস্থা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট জানতে চেয়েছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
তাকে বায়তুল মুকাদ্দাসের অবস্থা জানান ৷ সেদিন থেকে আবু বকর (রা) সিদ্দীক তথা সত্যপ্রাণ
উপাধিতে ভুষিত হন ৷ হাসান (র) বলেন এ প্ৰসং গে আল্লাহ তা জানা না ৷যিল করলেন :
আমি যে দৃশ্য আপনাকে দেখিয়েছি তা কেবল মানুষের পরীক্ষার জন্যে (১ ৭০ ৬০) ৷
ইবন ইসহাক উম্মে হানী সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে , রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে রাতে ভ্রমণ করানো
হয়েছে আমার ঘর থেকে ৷ সে রাতে ইশার নামায আদায়ের পর তিনি আমার ঘরে ঘুমিয়ে
ছিলেন ৷ ফজরের একটু পুর্বে তিনি আমাদেরকে ঘুম থেকে জাপালেন ৷ আমরা যখন ভোর বেলা
তার সাথে ফজরের নামায আদায় করলাম, তখন তিনি বললেন, হে উম্মে হা ৷!নী গতরাতে এই
ভুমিতে আমি তোমাদের সাথে ইশার নামায আদায় করেছি ৷৩ তারপর আমি বায়তুল মুকাদ্দাস
যাই এবং সেখানে নামায আদায় করি ৷ এখন আবার তোমাদের সাথে ফজরের নামায আদায়
করলাম তাতে৷ দেখলেই ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখান থেকে বের হতে যাচ্ছিলেন ৷ আমি
তার চাদরের প্রান্ত ধরে বললাম, হে আল্লাহর নবী ! একথা আপনি কারো নিকট বলবে না ৷
বললে তারা আপনাকে মিথ্যাবাদী ঠাওরাবে এবং আপনাকে কষ্ট্র দেবে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন, আল্লাহর কলম, আমি তা অবশ্যই বলব ৷ তিনি তা বললেন ৷ এরপর ঠিকা লোকজন
তার কথা প্রত্যাখ্যান করে তাকে মিথ্যাবাদী ঠাওরালো ৷ ঘটনার প্রমাণ স্বরুপ তিনি বললেন,
আমি অমুক স্থানে অমুক গোত্রের কাফেলাকে অতিক্রম করেছি ৷ আমার সওয়ারীর চলার শব্দে
ওরা ৷ভীত-সস্ত্রস্ত হয়ে উঠেছিল ৷ ফলে তাদের একটি উট কাফেল৷ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল ৷
পলায়নকৃত উটের অবস্থান আমি তাদেরকে জ নিয়ে দিই ৷ আমি তখন সিরিয়ার দিকে
যাচ্ছিলাম ৷ বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে আমি মক্কা অভিমুখে যাত্রা করি ৷ সাহ্নান নামক স্থানে এসে
আমি অমুক গোত্রের কাফেলার সাক্ষাত পাই ৷ তারা সকলে তখন র্চিদ্রা ৷মগ্ন ৷ তাদের একটি পাত্রে
পানি ছিল ৷ কিছু একটা দিয়ে তারা সেটি ঢেকে রেখেছিল ৷ ওই ঢাকন৷ উঠিয়ে আমি ওখান
থেকে পানি পান করি ৷ এরপর যেমনটি ছিল তেমনটি ঢেকে রাখি ৷ এর প্রমাণ হল ওদের
ক্াফেলা এখন তা ৷নঈম পাহাড়ের উচুন্থান থেকে “বায়দা নামক স্থানে অবতরণ করছে ৷ তাদের
উট পালের সম্মুখে রয়েছে একটি খ৷ ৷কি রং য়ের উট ৷৩ তার মধ্যে দুটো চিহ্ন আছে ৷ একটি কাল
অপরটি সাদা ক ৷লো মিশ্রিত ৷ লোকজন তখন দ্রুত ছড়া ৷নিয়া অর্থাৎ তানঈম পাহাড়ের চ্ড় ৷র ৷দিকে
ছুটল ৷ কিন্তু রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর বর্ণিত সম্মুখস্থু উটটি ত ৷র৷ দেখতে গেল না ৷ তবে কাফেলার
লোকজনকে ওদের পানি বাক্স ও উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল ৷ ওরা ৷উত্তরে ঠিক তাই বলেছে
যেমনটি রাসুলুল্লাহ্ (সা) ইং৩ তাপুর্বে বলেছিলেন ৷
ইউনুস ইবন বুকায়র আসবাত সুত্রে ইসমাঈল সুদ্দী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ওই কাফেলা
ফিরে আসার পুর্ব মুহুর্তে সুর্য প্রায় অস্তমিত হচ্ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) আল্লাহর নিকট দুআ
করলেন ৷ আল্লাহ তাআলা সুর্যকে স্থির রেখে দিলেন ৷ ইত্যবসরে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বর্ণনা
মুতাবিক ওই কাফেলড়াটি এসে পড়লো ৷ এরপর সুর্য অস্তমিত হল ৷ বন্তুত সেদিন রাসুলুল্লাহ্
(সা)-এর জন্যে এবং অন্য একদিন নবী ইউশা ইবন নুন-এর জন্যে সুর্য স্থির থেকেছিল ৷ এ
ছাড়া কারো জন্যে সুর্য কোন দিন স্থির থাকেনি ৷ এটি বায়হাকীর বর্ণনা ৷
ইবন ইসহাক বলেন, যারবিশ্বস্ততা সম্পর্কে আমি সন্দেহ করি না এমন এক লোক আমার
নিকট বর্ণনা করেছেন আবু সাঈদ (বা) থেকে ৷ তিনি বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে
বলতে শুনেছি, বায়তুল মুকাদ্দাস কেদ্রিক কাজকর্মগুলে৷ আমি যখন শেষ করলাম, তখন আমার
নিকট উর্ধ্বারোহণের বাহন নিয়ে আসা হল ৷ ওই রকম সুন্দর ও মনােরম কিছু আমি ইতোপুর্বে
কখনো দেখিনি ৷ তোমাদের পুণ্যবান মুমুর্মু ব্যক্তির চোখ এটি দেখেই স্থির হয় ৷ আমার সাথী
জিবরাঈল আমাকে সেটির উপর আরোহণ করান ৷ সেটি আমাকে নিয়ে আকাশের একটি
দরজার নিকট পৌছে ৷ ওই দরজার নাম “বা ৷-বুল হাফা যাহ্” অর্থ ৎ প্রহরীদের দরজা ৷ সেখানে
নেতৃস্থানীয় একজন ফেরেশত৷ অবস্থান করছিলেন ৷৩ তার নাম ইসমাঈল ৷ তার অধীনে রয়েছেন
বার হাজার ফেরেশত৷ ৷ বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন এই হাদীছ বংনাি করতেন
তখন তিনি তােমার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র
তিনিই জা নেন আয়াত পাঠ করতেন ৷
এরপর ইবন ইসহাক ঐ দীর্ঘ হাদীছটির অবশিষ্ট অংশ উল্লেখ করেছেন ৷ সনদ ও বর্ণনাসহ
পুর্ণ হাদীছ আমি তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করেছি এবং হাদীছটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি ৷ কারণ, সেটি এক ব্যক্তির বর্ণনা ভিত্তিক হাদীছ এবং সেটির সনদে দুর্বলত৷ রয়েছে ৷
অনুরুপভাবে আমরা উম্মে হানীর বর্ণনা সম্পর্কেও আলোচনা করেছি ৷ কারণ, সহীহ্ বুখারী ও
সহীহ্ মুসলিমে শুরায়ক ইবন আবু নামর সুত্রে হযরত আনাস (বা) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে,
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নৈশ ভ্রমণ শুরু হয়েছিল মাসজিদুল হারামের হাতীমের নিকট থেকে ৷ ওই
হাদীছের সনদও গরীব’ পর্যায়ের ৷ তাফসীর গ্রন্থে আমি সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি ৷ একটি
হল ওই বর্ণনায় রয়েছে যে, এ ঘটনা ঘটেছে ওহীর সুচনা হওয়ার পুর্বে ৷ এ বক্তব্যের উত্তর
অবশ্য এই যে, তাদের প্রথমবারের আগমন হয়েছিল রাসুলুল্লা হ্ (সা) এর প্রতি ওহী নাযিলের
পুর্বে ৷ ওই রাতে অন্য কিছু ঘটেনি ৷ এরপর অন্য রাতেত ৷র নিকট ফেরেশতাগণ আসেন ৷ এই
রাত সম্পর্কে তিনি বলেননি যে, এটি ওহী নাযিলের পুর্বের ঘটনা ৷ বরং এ যাত্রার ফেরেশতাগণ
এসেছিলেন ওহীর সুচনার পর ৷ হয়ত অল্প কিছুদিন পর ৷ যেমনটি কেউ কেউ বলেন, অথবা
প্রায় দশ বছর পর যেমনটি অন্যরা মনে করেন ৷ এটিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য ৷ ওই দিনে
ভ্রমণের পুর্বে তা যে বক্ষ বিদ৷ ৷রণের ঘটনাত ৷র জীবনের দ্বিতীয় অথবা তভীয় বা ব ঘটেছিল ৷ তা
এজন্যে করা হয় যে,৩ তিনি মহান আল্লাহ্র দরবারে উপস্থিত হবেন ৷ এরপর তার মর্যাদা ও
সম্মানের প্রেক্ষিতে তিনি বুরাকে আরোহণ করেন ৷ বায়তৃল মুকাদ্দাসে এসে বুরাকটি বাধ্লেন
সেই খুটিওে ,যে খুটিতে নবীগণ (আ) তাদের বাহন র্বাধতেন ৷ তারপর বায়তৃল মুকাদ্দাসে
প্রবেশ করে কেবলামুখী হয়েত তাহিয়্যাতৃল মসজিদ নামায আদায় করলেন ৷ বর্ণনা কারী হুযায়ফা
(বা) রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বায়তৃল মুক ৷দ্দাসে প্রবেশ, বাহন বাধা এবং সেখানে নামায আদায়ের
ঘটনা ঘটেনি বলে মত প্রকাশ করেছেন ৷ তার অভিমত গ্রহণযোগ্য নয় ৷ কারণ, ইতিবাচক
বর্ণনা নেতিবাচক বর্ণনার উপর প্রাধান্য পায় ৷ অন্যান্য নবীদের (আ) সাথে তার একত্রিত হওয়া
এবং তাদেরকে নিয়ে তার নামায আদায় করা সম্পর্কেও মতভেদ রয়েছে ৷ কেউ বলেছেন,
তাদের সমবেত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে আকাশে আরোহণের পুর্বে যেমনটি পুর্বের বর্ণনা থেকে
প্রতীয়মান হয় ৷ আবার কেউ বলেছেন, তা হয়েছে আকাশে আরোহণের পর যেমনটি কোন
কোন বর্ণনায় এসেছে ৷ দ্বিতীয়টিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য হতে পারে ৷ উভয় প্রকারের বর্ণনাই
আমরা উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ্ ৷ কেউ কেউ বলেছেন, নবীদের নিয়ে তার নামায আদায়ের
ঘটনা ঘটেছে আকাশে ৷ অনুরুপভাবে দুধ, মদ ও পানির পাত্রের মধ্য থেকে তার দুধের পাত্র
বাছাই করার ঘটনাও কি বায়তুল ঘুকাদ্দাসে ঘটেছে, না আকাশে ঘটেছে সে বিষয়েও ভিন্ন ভিন্ন
মত রয়েছে ৷
মােদ্দাকথা, বায়তুল মুকাদ্দাসের কাজকর্ম শেষ করার পর তার জন্যে উর্ধ্বারোহণের বাহন
প্রস্তুত করা হয় ৷ এটি ছিল একটি সিড়ি বিশেষ ৷ সেটিতে চড়ে তিনি আকাশে উঠলেন ৷ এ
সময়ে তিনি বুরাকে আরোহণ করেননি ৷ অবশ্য কেউ কেউ মনে করেন যে, এ সময়ে তিনি
বুরাকে আরোহণ করেছিলেন ৷ বুরাকটি বরং তখন বায়তুল মুকাদ্দাসের দরজায় বীধা ছিল ভ্রমণ
শেষে মক্কায় ফিরে আসার জন্যে ৷ মি’রাজে রাসুলুল্পাহ্ (না) এক আকাশ ছেড়ে অপর আকাশ
এরপর পরবর্তী আকাশ অতিক্রম করে পর্যায়ক্রমে সপ্তম আকাশ অতিক্রম করলেন ৷ প্রতেক
আকাশে সেখানকার নেতৃস্থানীয় ও বড় বড় ফোরশতাপণ এবং নবী-রাসুলগণ তার সাথে
সাক্ষাত করেন এবং তাকে অভিনন্দন জানান ৷ যে সকল নবীরাসুলের সাথে তীর সাক্ষাত
ঘটেছিল ৷ তিনি তাদের নামও উল্লেখ করেছেন ৷ যেমন প্রথম আকাশে হযরত আদম (আ),
দ্বিতীয় আকাশে ইয়াহ্য়া ও ঈসা (আ) ,১ চতুর্থ আকাশে ইদরীস (আ) এবং ষষ্ঠ আকাশে মুসা
(আ)-এর সাথে তার সাক্ষাত হয়েছে বলে বিশুদ্ধ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত ৷ আরো বর্ণিত আছে যে,
সপ্তম আকাশে সাক্ষাত হয়েছে ইব্রাহীম (আ)-এর সাথে ৷ তিনি সেখানে বায়তুল মামুরের
সাথে হেলান দিয়ে বসে ছিলেন ৷ বায়তুল মড়ামুরে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা প্রবেশ
করেন ৷ র্তারা সেখানে নামায আদায় ও তাওয়াফ ইত্যাদি ইবাদত করে থাকেন ৷ এরপর বেরিয়ে
যান ৷ কিয়ড়ামত পর্যন্ত ওই ফেরেশতাপণ দ্বিতীয়বার বায়তুল মামৃরে আসবেন না ৷ এরপর তিনি
নবীদের অবস্থান-স্থল অতিক্রম করেন ৷ তিনি এমন এক সমতল স্থানে গিয়ে পৌছেন, যেখান
থেকে কলমের লেখন-শব্দ শুনতে পা চ্ছিলেন ৷ এক পর্যায়ে তার নিকট সিদরাতুল মুনৃতাহা
(সীমান্তের কুলবৃক্ষ) উপস্থিত করা হয় ৷ সেটির পাতাগুলো হাতির কানের মত এবং ফলগুলো
হিজর অঞ্চলের কলসীর মত ৷ তখন একাধিক উজ্জ্বল রংয়ের বিশেষ বন্তুসমুহ ওই কুল বৃক্ষকে
আচ্ছাদিত করে ফেলে ৷ বৃক্ষে ছড়ানাে পক্ষীকুলের ন্যায় ফেরেশতাগণ ওই বৃক্ষে আরোহণ
করে ৷ স্বর্ণের পতঙ্গণ্ডালা বৃক্ষটিতে উড়াউড়ি করতে থাকে ৷ আল্লাহ তাআলার ৫জ্যাতিতে ওই
বৃক্ষ আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে ৷ প্রিয়নবী (না) তখন হযরত জিবরাঈল (আ)-ণ্ক তার নিজস্ব
অবয়বে দেখতে পান ৷ তীর ছয়শ’ পাখা ৷ এক পাখা থেকে অপর পাখার দুরতু যমীন থেকে
আসমড়ানের দুরত্বের সমান ৷ এ প্ৰসংঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন :
নিশ্চয়ই তিনি তাকে আরেক বার দেখেছিলেন সিদরাতুল মুনতড়াহার নিকট ৷ যার নিকট
অবস্থিত বাসােদ্যান ৷ তার দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি দৃষ্টি লক্ষ্যচ্যুতও হয়নি (৫৩ : ৫) ৷ অর্থাৎ তার দৃষ্টি
লক্ষ্যন্থলে সীমাবদ্ধ ছিল ৷ ডানেও যায়নি, বামেও যায়নি কিৎবা উপরেও উঠেনি ৷ এটি হল
১ মুল কিভাবে ৩য় ও ৫ম আকাশের উল্লেখ নেই ৷ সীরাত-ই ইবন হিশামে আছে যে, তিনি ৩য় আকাশে
ইউনুস (আ) ও ৫ম আকাশে হারুন (আ) কে দেখেছেন ৷
পরিপুর্ণ ন্থিরতা ও প্রশংসনীয় শিষ্টাচার ৷ এটি হল দ্বিতীয়বার দেখা ৷ আল্লাহ তাআলা হযরত
জিবরাঈল (আ)-কে যে আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন, যে আকৃতিতে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এবার সহ
তাকে দুবার দেখলেন ৷ ইবন মাসউদ (রা) আবু হুরায়র৷ (রা) , আবু যার ও আইশা (রা) এরুপ
বর্ণনা করেছেন ৷ উপরোক্ত আঘাতের পুর্ব আয়াতসমুহ এই :
তাকে শিক্ষা দান করে শক্তিশালী প্রজ্ঞাসম্পন্ন সত্তা ৷ সে নিজ আকৃতিতে স্থির হয়েছিল ৷
তখন সে উর্ধ্বদিগন্তে ৷ এরপর সে তার নিকটবর্তী হল ৷ অতি নিকটবর্তী ৷ ফলে তাদের মধ্যে
দৃ’ ধনুকের ব্যবধান রইল ৷ অথবা তারও কম ৷ তখন আল্লাহ তা আল৷ তার বান্দার প্ৰতি যা ওহী
করার তা ওহী করলেন (৫৩৪ ৫) ৷ এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল আবতাহ অঞ্চলে ৷ হযরত
জিবরাঈল (আ)৩ তার সুবিশা ল আকৃতি নিয়ে ভুমি থেকে আকাশ পযন্ত পরিব্যাপ্ত হয়ে রাসুলুল্লাহ
(না)-এর নিকটবর্তী হলেন ৷ উভয়ের মাঝে ম ত্র দু’ ধনুকের ব্যবধান রইল কিত্বা তারও কম ৷
এটিই বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা ৷ প্রবীণ ও উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন সাহাবায়ে কিরাম(রা)এর বক্তব্য থেকে
তা-ই প্রতীয়মান হয় ৷
এ প্রস০ গে হযরত আনাস (রা) থেকে গুরায়ক (র) বর্ণনা করেছেন যে, খােদ আল্লাহ
তা অ ৷ল৷ র ৷সুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকটবর্তী হলেন এব০ উভয়ের মাঝে দুই ধনুক কিং বা তারও কম
ব্যবধান রইল ৷ এ ব্যাখ্যা মুলত ৩বর্ণনাকা বীর নিজস্ব উপলব্ধিও হতে পারে ৷ বর্ণনাকারী এটিকে
হাদীছের মধ্যে শ ৷মিল করে দিয়েছেন ৷ আল্লাহ্ইভ ৷ল জানেন ৷ এটি যদি মুলত ৩হাদীছের অংশ
হয়েই থাকে , তাহলে এটি আলোচ্য আঘাতের ব্যাখ্যা নয় বরং অন্য কোন প্রসংগজনিত বক্তব্য ৷
আল্পাহ্ই ভাল জানেন ৷
ওই রাতে মহান আল্লাহ তার বান্দা মুহাম্মাদ (সা) তার উমতের উপর দিনে-রাতে ৫০
ওয়াক্ত নামায ফরয করে দিয়েছিলেন ৷ এরপর প্রিয়নবী (সা) মহান আল্লাহ এবং মুসা
(আ)-এব নিকট একাধিকবার যাতায়াত করেন ৷ শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তাআলা ৫০ ওয়াক্ত
থেকে তা ৫ ওয়াক্তে নামিয়ে আনেন এবং আল্লাহ্ তাআলা বলেন, এই ৫ ওয়াক্ত মুলত ৫০
ওয়াক্ত ৷ একে দশ অনুপাতে ৷ এই সুত্রে ওই রাতে রাসুলুল্লাহ্ (সা) মহান আল্লাহর সাথে
কথোপকথনের সুযোগ লাভ করেন ৷ হাদীছ বিশারদগণ এ বিষয়ে প্রায় সকলে একমত ৷ তবে
তিনি মহান আল্লাহ্কে দেখতে পেয়েছেন কিনা সে বিষয়ে ইমামগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে ৷
একদল বলেছেন, তিনি অন্তর্চক্ষু দিয়ে মহান আল্লাহ্কে দু’বার দেখেছেন ৷ হযরত ইবন আব্বাস
(না) ও তার অনুসারী একদল লোক একথা বলেছেন ৷ অন্য একি বর্ণনায় এসেছে যে, হযরত
ইবন আব্বাস (বা) ও অন্যান্যরা শর্তহীন দেখার কথা উল্লেখ করেছেন ৷ সেটিও তিনি অতর্চক্ষু
দ্বারা দেখেছেন বলে ধরে নিতে হবে ৷ শর্তহীন দীদারের কথা হারা বলেছেন, তাদের মধ্যে আবু
হুরায়র৷ (বা) ও ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল (র) অন্যতম ৷ কেউ কেউ স্পষ্টভাবে এবং জোর
দিয়ে বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আল্লাহ তাআলাকে প্রত্যক্ষভাবে স্বচক্ষে দেখেছেন ৷ ইবন
জারীর এ অভিমত গ্রহণ করেছেন এবং পরবর্তী যুগের একদল উলামায়ে কিরাম তাকে অনুসরণ
করেছেন ৷ স্বচক্ষে দেখেছেন বলে যারা মত প্রকাশ করেছেন তাদের অন্যতম হলেন শায়খ
আবুল হাসান আশআরী ৷ সুহালী তাই বর্ণনা করেছেন ৷ শায়খ আবু যাকারিয়া নবভীও এমত
গ্রহণ করেছেন বলে তার ফ ৷তাওয়া গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে ৷
একদল বিশ্নেষক বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কর্তৃক আল্লাহর দীদার লাভ সম্পর্কিত কোন
ঘটনা-ই ঘটেনি ৷ সহীহ্ মুসলিমে উল্লিখিত হযরত আবু যর (রা)–এর বর্ণিত একটি হাদীছের
সুত্র ধরে তারা এ কথা বলেন ৷ হযরত আবু বর (বা) বলেন, আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্পাহ!
আপনি কি আপনার প্রতিপালককে দেখেছেন ? উত্তরে রাসুলুল্পাহ্ (সা) বললেন, :,:; ;;’;
০ ৷ ৷ বরং নুরই আমি প্র৩ ত্যক্ষ করেছি ৷ অপর বর্ণনায় আছে, তি ৷ন বলেছেন ৷ ধো ৷
আমি নুর দেখেছি ৷ এ প্রেক্ষিতে তারা বলেন যে, ধ্বংসশীল চক্ষুদ্বারা চিরন্তন সত্তাকে দেখার
ঘটনা ঘটেনি ৷ কোন কোন আসমানী কি৩ ৷বে বর্ণিত আছে যে আল্লাহ্ তা জানা হযরত মুসা
(আ)-কে বলেছিলেন, হে মুসা! কোন ভুচীবিত মানুষ আমাকে দেখলে তার নিশ্চিত মৃত্যু হবে
এবং কোন শুষ্ক বন্তু আমাকে দেখলে ভেঙ্গে চুর্ণ-বিচুর্ণ হয়ে যাবে ৷ অবশ্য এ বিষয়ে পুর্ববর্তী ও
পরবর্তী উলামায়ে কিরামের মধ্যকার মতভেদ সর্বজন বিদিত ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) বায়তৃল মুকাদ্দাসে নেমে এলেন ৷ বাহ্যিকভাবে মনে হয় যে, মহান
আল্লাহর সান্নিধ্য থেকে ফিরোসার সময় অন্যান্য নবীগণও তার সম্মানড়ার্থে তার সাথে পৃথিবীতে
অবতরণ করেন ৷ সম্মানিত প্রতিনিধিগণের আগমনের ক্ষেত্রে যা ঘটে থাকে ৷ আগন্তুকের
আগমনের পুর্বে তার৷ কারো নিকট সমবেত হন না ৷ এজন্যেই উভ্রুর্ধ্ব আরোহণের সময় যখনই
যে নবীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করেছেন, যে নবীর পরিচয় জানিয়ে এবং সে নবীকে সালামের
আহ্বান জানিয়ে হযরত জিবরাঈল (আ) রাসুলুল্লাহ্ (সা)-ণ্ক বলেছেন, ইনি অমুক, তাকে
সালাম দিন ৷ বন্তুত উর্ধ্বারোহণের পুর্বে যদি সবাই বাযতৃল মুকাদ্দাসে সমবেত হতেন, তাহলে
পুনরায় পরিচয় করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন হতো না ৷ এর পক্ষে একটি দলীল এই যে, রাসুলুল্লাহ্
(সা) বলেছেন, ংণ্ট্রুপ্,:র্দুর্দুণ্৷ হুপ্রুা;এ ৷ ;£এা’ এে যখন নামাযের সময় হলো, তখন আমি
তাদের ইমামতি করলাম ৷ ওই ওয়ার্কত নিশ্চয়ই ফজরের নামায়ের ওয়াক্ত ৷ আল্লাহর নির্দেশে
জিবরাঈল (আ) এর ইঙ্গিতে তিনি তাদের ইমড়ামতি করলেন ৷ এ ঘটনা থেকে জানা যায় যে,
কোন স্থানে অধিকতর মর্যাদাবান ইমাম উপস্থিত থাকলে সেখানে বাড়ীর মালিক নয় বরং উক্ত
ইমাম-ই ইমামতি করবেন ৷ কারণ, বাযতৃল মুকাদ্দাস অন্যান্য নবীদের মহল্লা ও বাসস্থান হওয়া
সত্বেও রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখানে ইমড়ামতি করেছেন ৷
এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখান থেকে বের হয়ে বুরাঃক আরোহণ করলেন এবং মক্কায় ফিরে
এলেন ৷ তখন তিনি ছিলেন পরিপুর্ণ শান্ত সমাহিত ৷ ওই রাতে তিনি এমন সব ঘটনা ও নিদর্শন
দেখেছেন অন্য কোন লোক তার কিছুটা দেখলেও হতবিহ্বল ও অজ্ঞান হয়ে যেত ৷ কিন্তু
রাসুলুল্লাহ (মা) ছিলেন পরিপুর্ণভাবে স্থির ও শান্ত ৷ তবে তিনি আশংকা করছিলেন যে, এ
সংবাদ প্ৰকাশ্ ৷ করলে ত ৷র সম্প্রদায়ের লোকজন তাকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করতে পারে ৷ তাই
তিনি প্রথমে নম্র ও হাল্কা ভাবে তাদেরকে ওই রাতে তার বাযতৃল মুকাদ্দাসে যাওয়ার ঘটনা
জানালেন ৷ আবু জাহ্ল (তার প্রতি আল্লাহর লানত) দেখল যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সুস্থির ও
শাম্ভভারে মাসজিদুল হারামে বসে আছেন ৷ সে বলল, নতুন কোন সংবাদ আছে কি ? রাসুলুল্পাহ্
(সা) বললেন, হীা আছে ৷ সে বলল, কী সংবাদ ? তিনি বললেন, এ রাতে আমাকে বায়তুল
মুকাদ্দাসে ভ্রমণ করানো হয়েছে ৷ আশ্চর্যাম্বিত হয়ে সে বলল, বায়তুল মুকাদ্দাসে তিনি বললেন,
হীা, তাই ৷ সে বলল, আচ্ছা আমি যদি তোমার সম্প্রদায়ের রুলাকদেরকে ডেকে আলি এজন্যে
যে, তুমি আমাকে যা জানিয়েছ তা ৷দেরকেও তুমিতা জনা৷রে তা’ হলে তুমি কি ওদেরকেও তা
জানারে ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আলবৎ জানার ৰু আবু জাহ্লের ইচ্ছা ছিল সে
কুরায়শদেরকে একত্রিত করবে যাতে তারা রাসুলুল্লাহ (সা) )এর মুখ থেকে এ অভিনব ও
অকল্পনীয় কথা শুনতে পায় ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর উদ্দেশ্য ছিল ষ্দেরকে একত্রিত করা যাতে
তিনি এ ঘটনা তাদেরকে জানাতে পারেন এবং তার বার্তা তাদের নিকট পৌছ৷ ৷তে পারেন ৷ আবু
জাহ্ল সবাইকে ডেকে বলল, হে কুরায়শ সম্প্রদায়! কালবিভ্রুব্ম্ব না করে সবাই এখানে সমবেত
হও ! নিজ নিজ আসর থেকে উঠে এসে সকলে সেখানে এসে হাযির হল ৷ আবু জাহ্ল বলল,
তুমি এইমাত্র আমাকে যা জানালে তা এবার তোমার সম্প্রদায়ের লোকজনকে জানাও ৷ ওই
রাতে তিনি যা দেখেছেন এবং বায়তৃল মুকাদ্দাস উপস্থিত হয়েছেন, সেখানে নামায আদায়
করেছেন এসকল ঘটনা তিনি তাদেরকে জানালেন ৷ এ ঘটনা ৷অসম্ভব ও অবিশ্বাস্য ঘোষণা দিয়ে
তাদের কেউ হা তালি দিয়ে আবার কেউ বা শিস্ দিয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করলো ৷
মুহ্রর্তের মধ্যে এ সংবাদটি সমগ্র মক্কায় ছড়িয়ে পড়লো ৷ লোকজন এসে হযরত আবু বকর
(রা)-এর নিকট উপস্থিত হয় এবং বলে যে, মুহাম্মাদ (সা) তো এরুপ এরুপ কথাবার্তা বলছেন ৷
আবু বকর (বা) বললেন, তোমরা কি তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছ ? তারা বলল, তা তাে
বটেই, আল্লাহর কসম , তিনি যে এমন এমন কথা বলছেন ৷ হযরত আবু বকর (বা) বললেন,
তিনি যদি তা ৷বলে থাকেন তবে তিনি অবশ্যই সত্য বলেছেন ৷ আবু বকর (বা) রাসুলুল্লাহ
(সা) এর নিকট হ যিব হলেন ৷ কুরায়শী ঘুশরিকগণ তার পাশে ছিল ৷ তিনি এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ্
(সা) এর নিকট জানতে চাইলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) পুরো ঘটনা তাকে অবহিত করলেন ৷ আবু
বকর (বা ) বায়তৃল মুকাদ্দাসের বর্ণনা শুনতে চাইলেন ৷৩ তা এজন্যে যে, মুশরিকগণ যেন ওই
বর্ণনা শুনতে পায় এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর বক্তব্যের সত্যতা উপলব্ধি করতে পারে ৷ অবশ্য
বিশুদ্ধ রিওয়ড়ায়াতে আছে যে, বায়তু ল মুকাদ্দাসের বিবরণ জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিল
যুশরিকরা ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেন, এরপর আমি তাদেরকে বায়তৃল মুকাদ্দাসের বর্ণনা শুনাতে
লাগলাম ৷ কতক বিষয়ে আমার অস্পষ্টত৷ থাকায় আল্লাহ তাআলা আমার সম্মুখ থেকে বায়তৃল
মুকাদ্দাস পর্যন্ত সকল অম্ভরায় সরিয়ে দিলেন ৷ ফলে আমার মনে হচ্ছিল যে, বায়তৃল মুকাদ্দাস
এখন আকীলের ঘরের পাশে৷ তা দেখে দেখে আমিও ৷ ৷র বিবরণ দিচ্ছিলাম ৷ হযরত আবু বকর
(বা) বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বায়তু ল মুকড়াদ্দাসের যে বর্ণনা দিলেন তাতে৷ তিনি ঠিকই
বলেছেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) ওদের ব্যবসায়ী কাফেলার পাশ দিয়ে গিয়েছেন এবং ওদের পাত্র থেকে
পানি পান করেছেন বলে যে ঘটনা আমরা পুর্বে উল্লেখ করেছি ইবন ইসহাক তা উল্লেখ
করেছেন ৷ এভাবে আল্লাহ তাআল৷ ওদের নিকট দলীল-প্রমাণ সুদৃঢ় করলেন এবং বিষয়টি
তাদের নিকট স্পষ্ট হয়ে পড়ল ৷ ফলে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের প্রেক্ষিতে যারা ঈমান
আনয়নকা , তারা ঈমান আনয়ন করল আর প্রত্যাখ্যানকারীরা দলীল-প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হওয়া
সত্বেও কুফরী করল ৷ এ প্রসংগে আল্লাহ তাআলা বলেন :
আমি যে দৃশ্য আপনাকে দেখিয়েছি তা এবং কুরআনে উল্লিখিত অভিশপ্ত বৃক্ষটিও কেবল
মানুষের পরীক্ষার জন্যে ৷ অর্থাৎ যাচাই করা ও পরখ করে নেয়ার জন্যে ৷
হযরত ইব ন আব্বাস (বা) বলেন, মি’রাজের রাতে রাসুলুল্লাহ্ (না) যা দেখেছেন, তা তার
চোখের দেখা ও প্রত্যক্ষ দর্শন ছিল ৷ প্রাচীন ও আধুনিক সকল উলড়ামাষ্কে: কিরাম এ বিষয়ে
একমত যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মিরাজ অনুষ্ঠিত হয়েছিল তার দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে ৷ অর্থাৎ
সশরীরে সজ্ঞানে তিনি গমন করেছেন ৷ মিরাজের রাতে তার বাহনে আরোহণ এবং উর্ধ্বজগতে
গমন ইত্যাদি কর্মকাণ্ড তা ই প্রমাণ করে ৷ এ জন্যে মহান আল্লাহ বলেন ষ্ক
“পবিত্র ও মহিমময় তিনি যিনি তার বান্দাকে রজনীযোপে গমন করিয়েছিলেন মাসজিদুল
হারাম থেকে মাসজিদুল আকসায় ৷ যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময় তাকে আমার
নিদর্শন দেখানোর জন্যে ৷ তিনিই সর্বশ্রেতো, সর্বদ্ৰষ্টা (১ ৭ : ১) ৷
কোন অসাধারণ ও গুরুত্বপুর্ণ নিদর্শন বর্ণনার সময় তাসবীহ বা আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা
করা হয় ৷ তাতে বুঝা যায় যে, মিরাজ সংঘটিত হয়েছিল সশরীরে ৷ তা ছাড়া দেহ ও রুহ-এর
সমন্বিত অবস্থার ক্ষেত্রেই কেবল আবৃদ বা বান্দা শব্দ প্রযোজ্য ৷ উপরত্তু ওই মিরাজ যদি নিদ্রিত
অবস্থায় হয়ে থাকত, তবে কাফিরগণ তখনই তা অস্বীকার করত না এবং সেটিকে অসম্ভবও
মনে করত না ৷ কারণ নিদ্রার মধ্যে এরুপ কিছু দেখা কোন আশ্চর্যের বিষয় নয় ৷ এরপর
প্রমাণিত হয় যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সজাগ অবস্থায় সশরীরে মিরাজে গিয়েছেন বলে তাদেরকে
জানিয়েছিলেন, নিদ্রার মধ্যে নয় ৷ বর্ণনাকারী শুরায়ক সুত্রে হযরত আনাস (রা)-এর বর্ণিত
হাদীছে,আছে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন :
তারপর আমি সজাগ হলাম এবং দেখলাম আমি কাবার হাভীমে অবস্থান করছি বন্তুত এটি
বর্ণনাকারী শুরায়কের ভুল বর্ণনাগুলাের অন্তর্ভুক্ত ৷ অথবা এটা বলা হবে যে, এক অবস্থা থেকে
অন্য অবস্থায় রুপান্তরকে তিনি “সজাগ হওয়া বলেছেন ৷ হযরত আইশা (না)-এর বর্ণিত
হাদীছে এরুপ মর্ম ধরে নেয়া হয়েছে ৷ হযরত আইশা (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাইফে
গেলেন ৷ তাইফের লোকেরা তাকে প্রত্যাখ্যান করল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আমি চরম
দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে ফিরে আসলাম ৷ তারপর আমি সজাগ হলাম ৷ কারণ আল-ছাঅড়ালিব নামক
স্থানে এসে ৷ আবু উস)য়দ এর হাদীছে আছে যে তিনি তার পুত্রকে র)সুলুল্লাহ (সা) এর নিকট
নিয়ে এসেছিলেন তার মুখে প্রথম খাবার দেয়ার জন্যে ৷ তিনি তীর পুত্রকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
কোলে রাথলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) লোকজনেব সাথে অ)লাপচাবি৩ তার মপ্ন ছিলেন ) ইতোমধ্যে
আবু উস)য়দ তার পুত্রকে সেখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন ) এবার রাসুলুল্লাহ্ (সা) সজ)গ
হলেন ) কিন্ত শিশুঢিকে দেখতে পেলেন ন) ) জিজ্ঞাসাব)দে লোকজন বলল যে, শিশুটির পিতা
তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন ৷ তখন তিনি ওই শিশৃটির নাম রাখলেন মৃনযির ৷ বন্তুত উপরোক্ত
হাদীছসমুহে শুর)য়কের ভুল বলার চাইতে সজ)গ হওয়া ফিরে পাওয়া ও সচকিত
হওয়া” নেয়)ই উত্তম ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন )
ইবন ইসহ)ক হযরত আইশা (র) ) বলতেন যে,
)ট্রু
রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর দেহ দুনিয়া থেকে স্থান) )ন্তরিত হয়নি বরৎন্স অ )ল্লাহ্ ত)আ )ল) রুহা )নীভাবে
অর্থাৎ তার রুহকে রাত্রি ভ্রমণে নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ ইবন ইসহ ক আরে) বলেন যে, ইয়) )কুব ইবন
উত্তর) আমাকে জানিয়েছেন যে, র)সুলুল্লাহ্ (সা)-এর মি রাজ সম্পর্কে মুআবিয়া (রা)-কে
জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন যে, সেটি ছিল আল্লাহ্র পক্ষ থেকে সত্য স্বপ্ন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, তাদের দু’জনের কথাও অগ্রাহ্য করার মত নয় ৷ কারণ হাসান (র)
বল্যেছন :
আয়াতটি মিরাজ সম্পর্কে নাযিল হয়েছিল এবং যেমনটি ইব্রাহীম (আ) বলেছিলেন
হে প্রিয় পুত্র! আমি তে) স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে যব)হ্ করছি (৩৭ : ১০২) ৷
হাদীছে আছে যে, র)সুলুল্ল)হ্ (সা) বলেছেন :
“আমার চোখ নিদামগ্ন হয় কিন্ত অন্তর থাকে সজ)প” ৷
ইবন ইসহা ক বলেন, মুলত কী ঘটেছিল ত) অ)ল্লাহ্ ত)আলা-ই-ভাল জানেন ৷ বন্তুত তার
মি’ রাজ সং ঘটিত হয়েছে এবং আল্লাহর যে সকল কুদরত তার দেখার ত) তিনি দেখেছেন )
সেটি ঘুমের মধ্যে হোক আর সজাগ অবন্থ)য়ই হোক তার সবই সত্যও যথার্থ
আমি বলি, ইবন ইসহাক এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য কর) থেকে বিরত থেকেছেন ৷ তিনি বরং
উ৬য়ট ই সম্ভব বলে মনে করেন ৷ তবে আমি বলি যে, মি রাজ সংঘ ত হয়েছিল সজাগ
অবস্থায় তাতে কোন সন্দেহ-সংশয় ন্নেই ৷ এ সম্পর্কিত দলীলাদি পুর্বেটি আলোচিত হয়েছে )
“রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর দেহ স্থানান্তরিত হয়নি এবৎ৩ তার রাত্রি ভ্রমণ রুহানী ভাবে হয়েছে হযরত
আইশা (না)-এর এই মন্তব্যও এটা প্রমাণ করে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর মি’রাজ হয়েছিল
নিদ্রিত অবস্থায়াপ্নযোগে, যেমনটি ইবন ইসহাক মনে করেছেন ৷ বরং রুহানী ভাবে মিরাজ
ৎঘটিত হলেও নিশ্চিত ভাবে রাসুলুল্লাহ্ (না) তখন সজাগ ছিলেন নিদ্রিত নয় ৷ তিনি বুরাকে
আরোহণ করেছেন ৷ বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়েছেন, আকাশে আরোহণ করেছেন এব০ যা
দেখেছেন তা’ সজাগভাবে দেখেছেন,াপ্নে নয় ৷ হযরত আ ৷ইশা (না) ও তার মতের সমর্থকগণ
সম্ভবত এটিই বুঝিয়েছেন ৷ ইবন ইসহা ৷ক যে নিদ্রিত অবস্থায় বুঝেছেন তা ৷ তাদের উদ্দিষ্ট নয় ৷
আল্লাহ্ই ভাল জনেন ৷
জ্ঞাতব্য : মিরাজ পমনের পুর্বে রাসুলুল্লাহ্ (সা) হয়তে৷াবু৷ শ্বদখেছিলেন তা আমরা
আীকার করি না ৷ কারণ, তিনি যে সবাপ্ন দেখতেন তা পরে ভোরের আলোর মত বাস্তব
রুপে দেখা যেতে৷ ৷ ইতোপুর্বে ওহী না ৷যিলের সুচনা বিষয়ক হাদীছে আলোচিত হয়েছে যে ওহী
সম্পর্কে যে ঘটনা ঘটেছে তা ঘট৷ ৷র পুর্বে৩ তিনি তাপ্নে দেখেছিলেন ৷ এাপ্ন ছিল৩ার পরবর্তী
কর্মের ভিত্তি, ভুমিকা, পুর্ব৷ ভাল ও প্রস্তুতিারুপ ৷
উলামায়ে কিরাম এ বিষয়ে মত দ্বৈধত৷ প্রকাশ করেছেন যে, বয়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত রাত্রি
ভ্রমণ এবং মিরাজ বা উর্ধ্বগমন দুটো একই রাতে ঘটেছে, নাকি দুটো ঘটনা ভিন্ন ভিন্ন দু’রাতে
ঘটেছে ?
তাদের একদল বলেন যে, বায়তুল ঘুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণ হয়েছিল সজাগ অবস্থায় আর
মি রাজ বা উর্ধ্বগমন হয়েছিলাপ্নে ৷ মুহাল্লাব ইবন আবু সাফরা তার রচিত সহীহ্ বুখারীর
ভাষ্যগ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, একদল বিশ্নেষক বলেছেন ইসর৷ বা বা ৷ত্রিভ্রমণ সংঘটিত হয়েছিল
দু’বার একবার নিদ্রিত অবস্থায় রুহানীভাবে আর একবার সশরীরে সজাগ অবস্থায় ৷
হাফিয আবুল কাসিম সুহায়লী তার শায়খ আবু বকর ইবনুল আরাবী আল-ফকীহ্ থেকে
অনুরুপ অভিমত বর্ণনা করেছেন ৷ সুহায়লী বলেন, এই মন্তব্যের মাধ্যমে এ বিষয়ে বর্ণিত সকল
প্রকারের হাদীছের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা যায় ৷ কারণ শুরায়ক সুত্রে হযরত আনাস (রা)
থেকে বর্ণিত আছে যে, “এটি হল তেমন যে, তার অন্তকরণ সজাগ থাকে, চক্ষুদ্বয় ঘুমায় কিন্ত
অ অন্তর ঘুমায় না ৷” রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মন্তব্য তারপর আমি সজাগ হলাম এবং নিজেকে
কা বাঘরের হাভীম অ০ শ ৷দেখতে পেলাম” সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি৷ দ্বার বাব্যাপা ৷রটিাপ্নযোগে
ঘটেছিল তা বুঝা যায় ৷ অন্যান্য হাদীছ৷ দ্বারা বুঝা যায় যে, তিনি তখন সজা ৷প ছিলেন ৷ কেউ
কেউ একথা দাবী করেন যে, রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর সজাগ অবস্থায় একাধিকবার ইসর৷ বা
রাত্রিভ্রমণ অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ এমনকি কারো কারো মন্তব্য এমন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) চার বার
মি বাজে গিয়েছেন ৷ মদীনায় আসার পরও তার মি রাজ সংঘটিত হয়েছে ৷ এ সকল হাদীছের
মধ্যে সমন্বয় সাধন হিসেবে শায়খ শিহাবুদ্দীন আবু শাম৷ (র) বলেছেন যে, মিরাজ সর্বমোট
তিনবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ৷ একবার বুরাকযােগে মক্কা থেকে বায়তুল মৃকাদ্দাস পর্যন্ত ৷ একবার
বুরাকযােগে মক্কা থেকে সরাসরি উর্ধ্বাকাশ পর্যন্ত, যা হুযায়ফা (রা)-এর হাদীস থেকে প্রতীয়মান
হয় ৷ আর একবার মক্কা থেকে বায়তুল মুক ৷দ্দাস হয়ে উর্ধ্বাকাশ পর্যন্ত ৷ এ প্রেক্ষিতে আমরা বলি
যে, হাদীছে বর্ণিত শব্দের বিভিন্ন৩ ৷র প্রেক্ষিতে যদি এ মন্তব্য করা হয়, তবে দেখা যাবে যে,
হাদীছে বর্ণিত প্রকৃত অবস্থা তিনের অধিক ৷ এ ব্যাপারে যারা পরিপৃর্ণতাবে অবগত হতে চান,
তারা যেন আমার তাফসীর গ্নন্থেস্
আয়াতের ব্যাখ্যা দেখে নেন ৷ পক্ষাম্ভরে কোন বর্ণনায় বায়তুল ঘুকাদ্দাস গমনের উল্লেখ কোন
বর্ণনায় আকাশে আরোহণের উল্লেখের প্রেক্ষিতে যদি এই প্রকারভেদ করা হয়, তবে কোন স্পষ্ট
প্রমাণ ব্যতিরেকে এমন প্রকারভেদ মেনে নেয়ার বাধ্যবাধকত৷ ৷নই ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
আশ্চর্য ব্যাপার এই যে ইমাম বুখারী (র) প্রিয়নবী (সা) এর ইসরা বা বাত্রিভ্রমণের ঘটনা
উল্লেখ করেছেন আবু৩ তালিবের মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করার পর ৷ এব্যাপারে তিনি ইবন
ইসহাকের অনুসরণ করেছেন যে, ইবন ইসহাক মি রাজের ঘটনা উল্লেখ করেছেন রাসুলুল্লাহ্
(সা) এর মকী জীবনের শেষ দিকের কর্মকাণ্ডের মধ্যে ৷ কিন্ত এ ঘটনাকে আবু৩ তালিবের
ইনতিকালের পরে উল্লেখ করে তিনি ইবন ইসহাকের বিপরীত কাজ করেছেন ৷ কারং ইবন
ইসহাক আবু তালিবের ইনতিকালের ঘটনা উল্লেখ করেছেন মিরাজের ঘটনা উল্লেখ করার পর ৷
মুলতঃ মকী ঘটেছিল তা’ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
মােদ্দাকথা, ইমাম বুখা ৷রী (র) ইসরা (রাত্রিভ্রমণ) ও মিরাজ (উর্ধ্বাবােহণ ) এ দৃয়ের মাঝে
পার্থক্য করেছেন এবং পৃথক অধ্যায়ে তা বিন্যস্ত করেছেন ৷ এ সুত্রে৩ তিনি বলেছেন “ইসরা
বিষয়ক হাদীছ এবংঅ অ ৷ল্লাহ্ তা’ আলার বাণীং
সম্পর্কিত, অধ্যায়
ইয়াহয়া ইবন বুকায়য় জাবির ইবন আবদুল্লহ্ থেকে বর্ণিত ৷ তিনি শুনেছেন যে,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন :
কুরায়শের লোকেরা যখন আমাকে মিথ্যাবাদী ঠাওরিয়েছিল, তখন আমি কা বাগৃহের হাতীম
অংশ ছিলাম ৷ আল্লাহ্ত তা আলা আমার নিকট বায়তুল মুকাদ্দাসকে দৃশ্যমান করে দিলেন ৷
ফলে সেটি দেখে দেখে সেটির নিদর্শনসমুহ্ সম্পর্কে আমি তাদেরকে অবহিত করতে লাগলাম ৷
ইমাম মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ (র) যুহরীর মাধ্যমে আবু সালাম৷ সুত্রে হযরত জাবির (রা)
থেকে এ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷ তদুপরি ইমাম মুসলিম, নাসাঈ ও তিরমিযী (র) আবু
হুরায়র৷ (রা) সুত্রে নবী করীম (সা) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
এরপর ইমাম বুখারী (র) মিরাজাের হাদীছ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন যে, হুদবা
মালিক ইবন সা সাআ থেকে বর্ণিত রাত্রিভ্রমণের রাতটি সম্পর্কে বাসুলুল্লাহ্ (সা ) তাদের নিকট
বর্ণনা করেছেন যে, আমি কাবাগৃহের হাতীম অংশে শায়িত ছিলাম ৷ কখনো কখনো তিনি
হাতীম শব্দের পরিবর্তে হিজ্বর শব্দ ব্যবহার করেছেন ৷ হঠাৎ এক আপন্তুক আমার নিকট এসে
উপস্থিত হন এবং এখান থেকে ওখান পর্যন্ত চিরে ফেলেন ৷ বর্ণনাকারী বলেন, আমার পাশে
জারুদ নামের এক ব্যক্তি ছিলেন ৷ আমি তীকে বললাম, “এখান থেকে ওখান পর্যন্ত” দ্বারা কী
বুঝানো হয়েছে ? উত্তরে তিনি বললেন, এর দ্বারা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কণ্ঠনালীর গোড়া থেকে
নাভি পর্যন্ত অংশ বুঝানো হয়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বর্ণনা এই : এরপর তিনি আমার
হৃৎপিণ্ড বের করে আনেন ৷ তিনি আমার নিকট একটি ঈমানভর্তি স্বর্ণপাত্র নিয়ে আসেন এবং তা
দ্বারা আমার হৃৎপিণ্ড ধুয়ে দেন ৷ তারপর তা যথাস্থানে রেখে দেন এবং আমার দেহ পুর্বের ন্যায়
করে দেন ৷ এবার আমার নিকট একটি বাহন উপস্থিত করা হয় ৷ সেটি ছিল আকারে খচ্চরের
চেয়ে ছোট এবং গাধার চেয়ে বড় ৷ সেটির রং ছিল সাদা ৷ বণ্টাকারী জারুদ বললেন, হে আবু
হামযা সেটি কি বুরাক ? আনাস (রা) বললেন, ইা, সেটি বুরাক ৷ সেটি তার পা রাখে দৃষ্টির
শেষ সীমার ৷ আমি সেটিতে আরোহণ করি ৷ হযরত জিবরাঈল (আ) আমাকে নিয়ে চললেন ৷
প্রথম আকাশে পৌছে তিনি দরজা খুলতে বললেন ৷ প্রশ্ন করা হল, আপনি কে ? “আমি
জিবরাঈল” তিনি উত্তর দিলেন ৷ পুনঃ প্রশ্ন করা হল, আপনার সাথে কে আছেন ? উত্তরে
বললেন, সাথে আছেন মুহাম্মদ (সা) ৷ বলা হল, তাকে নিয়ে আসার জন্যে কি পাঠানো হয়েছিল?
জিবরাঈল (আ) বললেন : হ্যা, তাই ৷ বলা হল, তবে র্তাকে সাদর অভিনন্দন, কতই না উত্তম
আগত্তুক তিনি !” এরপর দরজা খুলে দেয়া হল ৷ উপরে উঠে দেখতে পাই সেখানে হযরত আদম
(আ) রয়েছেন ৷ জিবরাঈল (আ) বললেন, ইনি আপনার পিতা আদম, র্তাকে সালাম দিন ৷ আমি
সালাম দিলাম ৷ তিনি সালামের উত্তর দিলেন, এবং বললেন “সুস্বাগতম সুসন্তানের প্রতি,
সৎকর্মশীল নবীর প্রতি ৷”
এবার জিবরাঈল (আ) আমাকে নিয়ে দ্বিতীয় আকাংশ আসলেন ৷ তিনি দরজা খুলতে
বললেন ৷ বলা হল, আপনি কে ? তিনি বললেন, আমি জিবরাঈল (আ) ৷ বলা হল, “আপনার
সাথে কে? তিনি বলেন, সাথে আছেন মুহাম্মদ (সা) ৷ বলা হল, তাকে নিয়ে আমার জন্যে কি
পাঠানো হয়েছিল ? তিনি বললেন, হীা, তাই ৷ বলা হল, “তবে তাকে সুস্বাপতম, কত উত্তম
আপত্তুক তিনি ৷ এরপর দরজা খুলে দেয়া হল ৷ উপরে উঠে আমি দেখতে পেলাম হযরত ঈসা
(আ) ও ইয়াহ্ইয়া (আ)-কে ৷ র্তারা দু’জনে খালাত ভাই ৷ জিবরাঈল (আ) বললেন, ইনি
ইয়াহ্ইয়া এবং উনি হচ্ছেন ঈসা (আ), আপনি ওদেরকে সালাম দিন ৷ আমি সালাম দিলাম ৷
র্তারা সালামের উত্তর দিলেন ৷ তারা বললেন, সুস্বাগতম সৎকর্মশীল ভাইকে ৷ সুস্বাগতম
সৎকর্মশীল নবীকে ! এবার জিবরাঈল (আ) আমাকে নিয়ে তৃতীয় আকাশ পর্যন্ত উঠলেন ৷ তিনি
দরজা খুলতে বললেন, বলা হল আপনি কে ? “আমি জিবরাঈল , তিনি উত্তর দিলেন ৷ বলা হল,
আপনার সাথে কে ? তিনি বললেন, সাথে আছেন মুহাম্মদ (সা) ৷ বলা হল কি নিয়ে আমার
জন্যে সংবাদ পাঠানো হয়েছিল ? জিবরাঈল (আ) বললেন, “হীড়া, তাই ৷ বলা হল, সুস্বাগতম
তাকে ৷ কত উত্তম আগভুক তিনি ৷ “এরপর দরজা খোলা হল ৷ উপরে উঠে আমি দেখতে
পেলাম হযরত ইউসুফ (আ) কে ৷ জিবরাঈল (আ) বললেন, ইনি ইউসুফ (আ), তাকে সালাম
দিন ৷ আমি তাকে সালাম দিলাম ৷ তিনি সালামের উত্তর দিলেন এবং বললেন, “সুাপতম
সৎকর্মশীল ভাই ও সৎকর্মশীল নবীকে ৷” এবার জিবৃরাঈল (আ) আমাকে নিয়ে উঠলেন : র্থ
আকাশে ৷ তিনি দরজা খুলতে বললেন ৷ বলা হল, আপনি কে ? তিনি বললেন আমি
জিবৃরাঈল ৷ বলা হল, আপনার সাথে কে ? তিনি বললেন, “আমার সাথে মুহাম্মদ (সা)
রয়েছেন ৷ বলা হল, তাকে নিয়ে আসার জন্যে কি পাঠানো হয়েছিল ? জিবরাঈল (আ)
বললেন,” হী) তাই বটে ৷” বলা হল, সুাগতম র্তাকে ৷ কত উত্তম আগত্তুকই না তিনি ৷ উপরে
উঠে আমি দেখতে পেলাম হযরত ইদরীস (আ)-কে ৷ জিবরাঈল (আ) বললেন, “ইনি হলেন
ইদরীস (আ), র্তাকে সালাম দিন ! আমি সালাম দিলাম ৷ তিনি সালামের উত্তর দিলেন এবং
বললেন, সুাগতম সৎকর্মশীল ভাইকে এবং সৎকর্মশীল নবীকে ৷” এবার জিবরাঈল (আ)
আমাকে নিয়ে ৫ম আকাশের দ্বারপ্রাস্তে আরোহণ করলেন ৷ তিনি দরজা খুলতে বললেন ৷ বলা
হল, আপনি কে ? তিনি বললেন, “আমি জিবরাঈল ৷ বলা হল , আপনার সঙ্গে কে ? তিনি
বললেন, আমার সঙ্গে রয়েছেন মুহাম্মদ (সা) ৷ বলা হল , তাকে নিয়ে আমার জন্যে কি পাঠানো
হয়েছিল ? তিনি বললেন, হা) , তাই বটে ৷ বলা হল, সুাগতম র্তাকে কতই না উত্তম আগন্তুক
তিনি! উপরে উঠে দেখলাম সেখানে হারুন (আ) রয়েছেন ৷ জিবরাঈল (আ) বললেন, ইনি
হারুন১ (আ), তাকে সালাম দিন ৷ আমি সালাম দিলাম ৷ তিনি সালামের উত্তর দিলেন ৷ তারপর
বললেন, সুাগতম সৎকর্মশীল ভাই ও সৎকর্মশীল নবীকে ৷ এবার জিবরাঈল (আ) আমাকে
নিয়ে ৬ষ্ঠ আকাশ পর্যন্ত উঠে এলেন ৷ তিনি দরজা খুলতে বললেন ৷ বলা হল আপনি কে ? তিনি
বললেন, আমি জিবরাঈল ৷ বলা হল, আপনার সঙ্গে কে ? বললেন, সাথে হযরত মুহাম্মদ (সা) ৷
বলা হল, তাকে নিয়ে আমার জন্যে কি পাঠানো হয়েছিল ? তিনি বললেন, হা) তাই বটে ৷ বলা
হল, সুাপতম র্তাকে কতইনা উত্তম আগভুক তিনি ! উপরে উঠে দেখলাম সেখানে হযরত মুসা
(আ) রয়েছেন ৷ জিবরাঈল (আ) বললেন, ইনি মুসা (আ), র্তাকে সালাম দিন ৷ আমি তাকে
সালাম দিলাম ৷ তিনি সালামের উত্তর দিলেন এবং বললেন, সুাগতম সৎকর্মশীল ভাইকে এবং
সৎকর্মশীল নবীকে ৷ আমি যখন র্তাকে অতিক্রম করলাম , তখন তিনি কেদে ফেললেন ৷ র্তাকে
জিজ্ঞেস করা হল, কাদছেন কেন ? তিনি বললেন র্কাদছি এ জন্যে যে, এইাল্প বয়সী নবী,
আমার পরে তিনি প্রেরিত হয়েছেন ৷ অথচ আমার উম্মতেব চাইতে তার উম্মত অধিক সংখ্যায়
জান্নাতে যাবে ৷
এবার জিবরাঈল (আ) আমাকে নিয়ে ৭ম আকাশ পর্যন্ত এলেন ৷ তিনি দরযা খুলতে
বললেন ৷ বলা হল, আপনি কে ? তিনি বললেন, আমি জিবরাঈল ৷ বলা হল, আপনার সঙ্গে
কে ? তিনি বললেন, আমার সঙ্গে আছেন মুহাম্মদ (সা) ৷ বলা হল, র্তাকে নিয়ে আসার জন্যে কী
পাঠানো হয়েছিল ? তিনি বললেন, হীা, তাই বটে ৷ বলা হল, সুাগতম তাকে, কত উত্তম
আগত্তুকই না তিনি ৷ উপরে উঠে দেখি সেখানে হযরত ইবরড়াহীম (আ) ৷ জিবরাঈল (আ)
বললেন, ইনি আপনার পুর্বপুরুষ ইব্রাহীম (আ), র্তাকে সালাম দিন! আমি তাকে সালাম
১ মুল আরবী পাঠে ৫ম আকাশে হযরত হারুন (আ )-এর উল্লেখ বাদ পড়েছে ৷ সম্ভবত এটি মুদ্রণ প্রমাদ ৷
সম্পাদকদ্বয়
দিলাম ৷ তিনি সালামের উত্তর দিলেন ৷ তারপর বললেন, সুস্বাগতম সৎকর্মশীল সন্তান ও
সৎকর্মশীল নবীকে ৷ এবার আমাকে উঠানাে হল সিদরাতুল মুনতাহা তথা সীমান্তের কুল বৃক্ষের
নিকট ৷ সেখানে ৪টি নদী ৷ দুটো বাহিরে দুটো ভেতরে ৷ আমি বললাম , জিবরাঈল ৷ এ গুলো
কী ? তিনি বললেন, ভেতরের দুটো নদী রেহেশতের মধ্যে প্রবহমড়ান আর বাইরের দুটো হল
নীল নদী ও ফোরাত নদী ৷ এবার আমাকে নেয়া হল বায়তুল মামুরে ৷ প্রতিদিন ৭০ হাজার
ফেরেশত৷ তার মধ্যে প্রবেশ করেন ৷ এরপর আমার নিকট হাযিয় করা হল একপাত্র মদ,
একপাত্র দুধ ও একপাত্র মধু ৷ আমি দুধের পাত্রটি বেছে নিলাম ৷ জিবরাঈল (আ) বললেন, এটি
ফিতরাত ও সঠিক প্রকৃতির প্রতীক, যা আপনার মধ্যে এবং আপনার উম্মতের মধ্যে রয়েছে ৷
এরপর আল্লাহ তাআলা আমার উপর প্ৰত্যহ ৫০ ওয়াক্ত নামায ফরয করলেন ৷ আমি ফিরে
আসছিলাম ৷ আসার পথে দেখ্যা হয় হযরত মুসা (আ)-এর সাথে ৷ তিনি বললেন আপনাকে কী
নির্দেশ দেয়া হয়েছে ? আমি বললাম, প্রত্যহ ৫০ ওয়াক্ত নামায আদায়ের নির্দেশ দেয়া
হয়েছে ৷ তিনি বললেন, আপনার উম্মত তো প্রতিদিন ৫০ ওয়াক্ত নামায আদায় করতে পারবে
না ৷ আল্লাহর কলম, আপনার পুর্বে মানুষ সম্পর্কে আমি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং
বনী ইসরাঈলের লোকদের সাথে আমি সরাসরি যেলামেশা করেছি ৷ আপনি বরং আপনার
প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান এবং আপনার উস্মতের জন্যে আরো সহজ বিধানের প্রার্থনা
জানান ৷ আমি প্রতিপালকের নিকট ফিরে গেলাম ৷ তিনি দশ ওয়াক্ত কমিয়ে দিলেন ৷ আমি
ফিরে এলাম হযরত মুসা (আ) এর নিকট ৷ তিনি আমাকে পুর্বের ন্যায় পরার্মশ দিলেন ৷ আমি
পুনরায় গেলাম প্রতিপালকে র নিকট ৷ এবার তিনি আরো ১০ ওয়াক্ত কমিয়ে দিলেন ৷ আমি
ফিরে এলাম হযরত মুসা (আ)-এর নিকট ৷ তিনি পুর্বের ন্যায় বললেন ৷ আমি ফিরে গেলাম
প্রতিপালকের নিকট ৷ এবার তিনি আরো ১০ ওয়াক্ত কমিয়ে দিলেন ৷ আমি পুনরায় ফিরে
এলাম মুসা (আ) এর নিকট ৷ তিনি পুর্বের ন্যায় বললেন ৷ আমি পুনরায় গেলাম প্রতিপালকের
নিকট ৷ এবার আমাকে নির্দেশ দেয়া হল প্রতিদিন ১০ ওয়াক্ত নামায আদায় করার জন্যে ৷
আমি ফিরে এলাম মুসা (আ)-এর নিকট ৷ তিনি পুর্বের ন্যায় বললেন ৷ আমি আবার ফিরে
গেলাম প্রতিপালকের নিকট ৷ এবার আমাকে নির্দেশ দেয়া হল প্রতিদিন পাচ ওয়াক্ত নামায
আদায় করার জন্যে ৷ আমি ফিরে এলাম মুসা (আ)-এর নিকট ৷ তিনি বললেন, কী আদেশ
দেয়া হয়েছে ? আমি বললাম, আমাকে প্রতিদিন পাচ ওয়াক্ত নামায আদায়ের নির্দেশ দেয়া
হয়েছে ৷ মুসা (আ) বললেন, আপনার উম্মত দৈনিক পাচ ওয়াক্ত নামায আদায় করতে সক্ষম
হবে না ৷ আপনার পুর্বে আমি মানুষ সম্পর্কে প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং বনী ইসরাঈলের
লোকদের সাথে আমি সরাসরি য়েলামেশা করেছি ৷ সুতরাং আপনি আপনার প্রতিপালকের
নিকট ফিরে যান এবং আপানার উম্মতের জন্যে আরো সহজ করে দেয়ার প্রার্থনা জানান ৷ আমি
বললাম, আমি আমার প্রতিপালকের নিকট অনেক প্রার্থনা করেছি ৷ আবার প্রার্থনা করতে আমি
লজ্জাবােধ করছি ৷ আমি বরং এই নির্দোশর প্রতি আমার সত্তুষ্টি প্রকাশ করছি এবং তা মেনে
নিচ্ছি ৷ বাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আমি যখন মুসা (আ) কে অতিক্রম করে এলাম, তখন একটি
ঘোষণা শুনতে পেলাম, “আমি আমার ফরয ও কর্তব্য নির্ধারণ করে দিয়েছি এবং আমার
বান্দাদের বোঝা লাঘব করে দিয়েছি ৷ ইমাম বুখারী (র ) এ স্থলে এ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বুখারী (র ) তার সহীহ্ গ্রন্থের অন্যত্র ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযী ও ইমাম নাসাঈ
(র) বিভিন্ন সনদে কাতাদার মাধ্যমে আনাস (বা ) সুত্রে মালিক ইবন সা’সাআ থেকে হাদীছটি
বংনাি করেছেন ৷ আমরা আনাস ইবন মালিক সুত্রে উবায় ইবন কাআব (বা) থেকে আবার
আনাস ইবন মালিক সুত্রে আবু নয় (বা) থেকে এবং আরো একাধিক সনদে আবাস ইবন মালিক
থেকে হাদীছখানা উদ্ধৃত করেছি ৷ তাফসীর গ্রন্থে আমি সরিস্তারে সেগুলো উল্লেখ করেছি ৷
আলোচ্য হাদীছে বায়তুল মুকাদ্দাসের কথা উল্লেখ করা হয়নি ৷ এর কারণ হিসেবে বলা যায় যে,
ওই বিষয়টি সুপ্রসিদ্ধ এবং সর্বজন বিদিত হওয়ায় কোন কোন বর্ণনড়াকারী তা বাদ দিয়েছেন
অথবা ৎশ্রিষ্ট বর্ণনাকারী হাদীছের ওই অংশটি ভুলে গিয়েছেন ৷ অথবা তার নিকট যে অংশটি
অধিকতর গুরুতুপুর্ণ মনে হয়েছে, সে অংশটি উল্লেখ করেছেন ৷ অথবা অবস্থাভেদে বর্ণনাকারী
হাদীছ বিস্তারিত ও পরিপুর্ণ ভাবে বর্ণনা করেছেন আবার শ্রোতার জন্যে যে অংশটি অধিকতর
কল্যাণকর সেটি রেখে বাকীটি বাদ দিয়েছেন ৷ যারা বলে যে পৃথক পৃথক ঘটনার প্রেক্ষিতে
বর্ণনার বিভিন্নতা হয়েছে, তাদের কথা সত্য থেকে বহুদুরে ৷ বন্ডুষ্:প্চ ঘটন’ ঘটেছে মাত্র একটাই ৷
কারণ, প্রত্যেক বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ্ (সা ) কর্তৃক নবীগণকে সালাম দেয়ার উল্লেখ আছে ৷ প্রত্যেক
বর্ণনায় নবীগণের সাথে তার পরিচিত হওয়ার কথা উল্লেখ আছে এবং প্রতেব্রক বর্ণনায় নামায
ফরয হওয়ার কথা উল্লেখ আছে ৷ তাহলে এ প্রকারের ঘটনা একাধিকবার সংঘটিত হওয়া কেমন
করে সম্ভব ? একাধিকবার সংঘটিত হওয়া অসম্ভব ও অবাস্তব ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ ,
এরপর ইমাম বুখাবী (র) বলেছেন , হুমায়দী ইবন আব্বাস (বা) থেকে বর্ণিত ৷ আল্লাহ্
তা’আলার বাণী :
চুড়ু
(আমি যে দৃশ্য আপনাকে দেখিয়েছি, তা কেবল মানুষের পরীক্ষার জংন্য) সম্পর্কে তিনি
বলেছেন, এটি স্বচক্ষে দেখা ঘটনা ৷ বায়তৃল মুকাদ্দাস পর্যন্ত মিবাজের রাতে রাসুলুল্লাহ্
(সা) কে তা দেখানো হয়েছে৷ কুরআনে উল্লিখিত অভিশপ্ত বৃক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, সেটি হল
যাক্কুম বৃক্ষ ৷
পরিছেদ
শব-ই মিরাজের পরের দিন জিবরাঈল (আ) রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর নিকট মধ্যাহ্নের
পরপরই এসেছিলেন ৷ তিনি নামাযের নিয়মকানুন ও সময় সবিস্তারে রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে
জানিয়ে দিয়েছিলেন ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্ (মা) ও সাহাবীগণকে একত্রিত হওয়ার জন্যে বললেন ৷
সবাই একত্রিত হলেন ৷ জিবরাঈল (আ) রড়াসুলুল্লাহ্ (না)-কে নিয়ে পরের দিন সকাল পর্যন্ত
নির্ধারিত নামাযগুলাে আদায় করলেন ৷ ঘুসলমানগণ রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর অনুসরণ করছিলেন
আর তিনি অনুসরণ করছিলেন জিবরাঈল (আ ) এর ৷ এ প্ৰসংগে ইবন আব্বাস ও জাঘির ( ব )
থেকে বর্ণিত বাসুলুল্লাহ্ (সা ) বলেছেন :
“জিবরাঈল দু’বার আমার ইমামতি করেছেন বায়তুল্লাহ্ শরীফের নিকট ৷ ”
দু’বার তিনি নামায়ের শুরু ওয়াক্ত ও শেষ ওয়াক্ত সম্পর্কে অবগত করিয়েছেন ৷ সুতরাং
শুরু ও শেষ এবং এ দৃয়ের মধ্যবর্তী সময়র্টুকু নামায়ের সময় বলে গণ্য হয় ৷ কিত্তু মাগরিরের
সময় বর্ণনায় তিনি এরুপ ব্যাপ্ত ও বিন্তুত সময়ের শিক্ষা দেননি সহীহ্ যুসলিমে উল্লিখিত
হযরত আবু মুসা, বুবায়দ৷ ও আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা) এর হাদীছ থেকে তা জানা যায় ৷
আমি আমার রচিত “আল আহকাম” কিত ৷বে এ সকল বিষয় বিস্তারিত ভাবে আলোচনা
করেছি ৷ সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যে ৷ সহীহ্ বুখারীতে উল্লিখিত আছে যে, ম৷ মার
আইশা (বা) থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেছেন, প্রথম নামায ফরয হয়েছিল দু’ রাকআত করে ৷
পরবর্তীতে সফরকালীন নামায আ ই থেকে যায় আর মুকীম ও স্থানীয় অধিবাসীর নামায়ে
রাকঅড়াতের স০ খ্য৷ বৃদ্ধি করা হয় ৷ যুহরী সুত্রে ইমাম আওযাঈ এবং মাসরুক সুত্রে ইমাম শা বী
হযরত আইশা (রা) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ এরুপ বর্ণনাহ্ব সমস্যা সৃষ্টি হয় বটে ৷
কারণ, হযরত আ ৷ইশা (রা) সফর অবস্থায় পুর্ণ নামায আদায় করতেন যা তার বর্ণিত হাদীছের
বিপরীত ৷ হযরত উছমান (রা)-ও ত ৷ই করতেন ৷ আল্লাহ্ ত৷ আল৷ র বাণীং :
যখন তোমরা দেশ বিদেশ সফর করবে, তখন যদিও তামাদের আশংকা হয় যে, কাফিরপণ
তোমাদের জন্যে ফিতনা সৃষ্টি করবে, তবে নামায স০ ক্ষিপ্ত করলে৫ তামাদের কোন দোষ নেই
(৪ : ১০১) ৷ আয়াতের ব্যাখ্যার তাফসীর গ্রন্থে আমি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ৷
বায়হাকী বলেন, হাসান বসরী এই অভিমত পোষণ করেন যে, মুকীমেব নামায শুরু
থেকেই চার রাকআত করে ফরয করা হয়েছে ৷ এ প্রসংগে তিনি একটি ঘুরসাল হাদীছ বর্ণনা
করেছেন যে, শব ই মিরাজের পরবর্তী দিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) যুহর ও আসরেব নামায আদায়
করেছেন চার রাকআত করে ৷ মাগরিব তিন রাকআত, তন্মধ্যে প্রথম দু ’রাকআতে উইচ্চ৪স্বরে
কিরাআত পাঠ করেছেন ৷ ইশ ৷৷র নামায আদায় করেছেন চার রাকআত ৷
তন্মধ্যে প্রথম দু’রাকাআত কিরাআতে পাঠ করেছেন উভৈচ্চ৪স্বরে ৷ ফজর আদায় করেছেন
দৃ’ব বাকআত উভয় রাকআঃত উভৈচ্চংস্বরে কিরাআত পাঠ করেছেন ৷
আমি বলি, হযরত আইশা (রা)ত তার উপরোল্লিখিত তবক্তব্য দ্বারা সম্ভবত একথা বুঝিয়েছেন
যে, শব-ই-মি রাজের পুর্ব পর্যন্ত নামায ছিল দু রাকআত দুরাকআত ৷ তারপর যখন পাচ
ওয়াক্ত নামায ফরয হল, তখন মুকীমদেব জন্যে এখন যে বিধান কার্যকর অর্থাৎ পুর্ণ নামায
আদায় করা সে হিসাবেই ফরয হল ৷ আর সফর অবস্থায় দু’রাকআত করে আদায়ের অনুমতি
দেয়৷ হল ৷ যেমনটি পাচ ওয়াক্ত ফরয হওয়ার পুর্বে ছিল ৷ এ ব্যাখ্যানুসারে হযরত আইশা
(না)-এর বর্ণনা নিয়ে কোন সমস্যা থাকে না ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর যামানায় চন্দ্র বিদীর্ণ হওয়া
বাসুলুল্লাহ্ (সা) যে হিদায়াত ও সত্য দীন নিয়ে এসেছেন তার স৩ ৷৷য়নে চভ্রুন্দ্রর খাণ্ডত হয়ে
যাওয়াকে আল্লাহ তা ভালো একটি নিদর্শন করে দিয়েছেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর ইশাবা যার সাথে
সাথে চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায় ৷ পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ এ সম্পর্কে বলেন :
কিয়ামত আসন্ন, চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে ৷ ওরা কোন নিদর্শন দেখলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং
বলে এটি তো চিরাচরিত জাদু ৷ ওরা সত্য প্ৰতব্লাথ্যান করে এবং নিজ খেয়াল-খুশীর অনুসরণ
করে ৷ আর প্রত্যেক ব্যাপারেই তার লক্ষ্যস্থলে পৌছবে ( ৫৪ : ১ ৩) ৷
প্রিয়নবী (সা) এর জীবদ্দশায় চন্দ্র খণ্ডিত হওয়ার দ্ ন্মো ঘটেছে এ ব্যাপারে দলমত
নির্বিশেষে সকল মুসলমান একমত৷ ৷বহু মুতাওয়াতির হাদীছ এ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে ৷ হা ৷দীছু
বিশারদ ও হাদীছ গবেষকদের নিকট এ ঘটনা অকাটদ্র সত ৷রুপে প্রমাণিত ৷ আল্লাহ চাহেন তো
আমরা এ বিষয়ে কিছু আলোচনা পেশ করব ৷ তাওয়াক্কুল ও নির্ভরত৷ তা ৷ল্লাহ্র উপর ৷
তাফসীর গ্রন্থে অবশ্য আমি এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ৷ সেখানে আট হ দীছ
গুলোর সনদ ও ভাষ্য উল্লেখ করেছি ৷ এখানে ওই সনদগুহুলা এবং প্রসিদ্ধ কি৩ বেঃস্পোলার দিকে
ইঙ্গিত করব ৷ এসব হাদীছ বর্ণিত হয়েছে হযরত আনাস ইবন মালিক, জুবায়র ইরন মুতঈন
হুযায়ফা, আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস আবদুল্লাহ ইবন উমর ও আবদুল্লাহ ইবন ষাসউদ (রা) প্রমুখ
থেকে
হযরত আনাস (রা) এর হাদীছ সম্পর্কে ইমাম আহমদ ৷;ৰ্া৷ বলেন; আবদুক
রাযযাক আনাস ইবন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত ৷ তিনি অ্যাংন্ৰুশ্ মক্টার অধিবাসিগণ
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট একটি নিদর্শন দেথাঃনার অনুল্পেল্পি করে ৷ ফলে মোঃ র্চন্দে দু
টুকংরাহয়ে যায় ৷ এ এসহ্গে তিনি এ অযােততিলাওযাতকাচুবন
তখনই র্চাদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায় এবং ঘটনাটি দুইবার ঘটে ৷ ইমাম মুসলিম (র) উক্ত হাদীছ
মুহাম্মদ ইবন রাফি সুত্রে আবদুর রাঘৃত্থাক থােক রংহুন৷ করেছেন ৷ এটি হন সাঢ়হ্ন্াবী-গচল্লার
মুরসা ল হাদীছের অন্তর্ভুক্ত ৷ বাহ্যত বুঝা যায় যে বহু থােক সাহাবী থেকে তিনি এই হাদীছ
পেয়েছেন ৷ অথবা সরাসরি নবী করীম (সা) থেকে তিনি এটি শুহুনছেন ৷ অথব৷ সকল সাহাবী
থােক তিনি এটি পেয়েছেন ৷ ইমাম বুখারী ও মুসলিম (র) এ হাদীদুখড়ান্য উদ্ধৃত করেছেন
মোঃাস্ৰু সুত্রে ৷ (ইমাম বুখারী (র) সাঈদ ইবন আৰুট্রু আরুবাৱ নাম এবং ইমমি মুসলিমৃ (ব)
ও যার নাম তপ্টিক্ত ছুয়ার্গ কধোছন ৷) উ৷ ৷র৷ তিন জনৈই ধ্ণ্নাি কগুরছেন কা ৷দা ষ্র্বুত্রে৷ আ নাস
(রা) থােক :যরতদ্ব আনাস ব্রা) বলোঃন ঘে,
অর্বুরেধ্যে কম্নেন্থিলোঃত্তিনিঃণ্ যেন ন্তড়াদেরর্ল্ডক একটিৰুনিদগ্র্ণনদেখ্যন, ৷ তিনি