রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদের মধ্যে আঠারো রাত্রি অবস্থান করেন ৷ প্রন্থকার বলেন : ইতেড়াপুর্বে যুহ্বী
সুত্রে উরওয়া থেকে ইমাম বুখারীর বর্ণনা উল্লেখিত হয়েছে যে, তিনি তাদের মধ্যে ১০ রাত্রির
কিছু বেশী সময় অবস্থান করেছিলেন ৷ আর মুসা ইবন উকবা মুজাম্মা’ ইবন ইয়াযীদ ইবন হারিছ
সুত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কুবায় বনু আমর ইবন আওফের মধ্যে বাইশ রাত্রি
অবস্থান করেন ৷ আর ঐতিহাসিক ওয়াকিদী বলেন : কথিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদের
মধ্যে চৌদ্দ রাত্রি অবস্থান করেন ৷
মদীনা মুনাওওয়ড়ারায় প্রথম জুমুআর নামায
ইবন ইসহাক বলেন : বনু সালিম ইবন আওফে জুমুআর সময় হলে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বড়াতনে ওয়াদী-ওয়াদীয়ে রানুনায়-জুমুআর নামায আদায় করেন ৷ আর এটা ছিল মদীনায়
রড়াসুলুল্লাহ্ (না)-এর প্রথম জুমুআর নামায ৷ এরপর বনু সালিমের এক দল লোকের সঙ্গে
ইতবান ইবন মালিক এবং আব্বাস ইবন উবদো ইবন নাঘৃলা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর খিদমতে
হাযির হয়ে আরয করেন, ইয়া রড়াসুলাল্পাহ্ আপনি আমাদের মা;ধ্য অবস্থান করুন, আমরা
ৎখ্যায় অধিক, আমাদের প্রস্তুতি অনেক এবং আমরা প্রতিরোধ আর প্রতিরক্ষায়ও সক্ষম ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন :
“তোমরা উটনীটির পথ ছেড়ে দাও ৷ কারণ, সে (আল্লাহ্র পক্ষ থেকে) আদেশপ্রাপ্ত ৷
ফলে তারা উটনীটির পথ ছেড়ে দেয় ৷ উটনী চলতে থাকে ৷ শেষ পর্যন্ত বনু ৰিয়াযার মহল্লায়
পৌছলে যিয়াদ ইবন লাবীদ এবং ফারওয়া ইবন আমর একদল লোক নিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর
সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আবেদন জানান :
“ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আমাদের মধ্যে অবস্থান করুন, আমরা জনবল এবং অস্ত্র বলে অধিক
এবং প্রতিরোধ আর প্রতিরক্ষায় সক্ষম ৷” রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : “তোমরা তার পথ ছেড়ে
দাও, সে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে আদিষ্ট ৷ ” তারা তার পথ ছেড়ে দেয় এবং সে চলতে থাকে ৷ বনু
সাইদার মহল্লা দিয়ে গমনকালে বনু সাইদার একদল লোকসহ সাআদ ইবন উবাদা এবং মুনষির
ইবন আমর রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর খিদমতে হাযির হয়ে আবেদন জানান :
“হে আল্লাহ্র রাসুল ৷ আমাদের মধ্যে অবস্থান করুন ৷ সংখ্যায় আমরা অধিক এবং
প্রতিরোধে আমরা সক্ষম ৷ ” রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তোমরা তার রাস্তা ছেড়ে দাও ৷ কারণ,
সে (আল্লাহ্র পক্ষে থেকে) আদেশপ্রাপ্ত আছে ৷ উটনীটি চলতে থাকে ৷ বনু হারিছ ইবন
খাযরড়াজ এর মহল্লা বরাবর পৌছলে সাআদ ইবন রাবী , থারিজা ইবন যায়দ এবং আবদুল্পাহ্
ইবন রাওয়াহা বনু হারিছ ইবন খাযরাজএর একদল লোক নিয়ে রড়াসুলুল্লাহ্ (না)-এর খিদমতে
উপস্থিত হয়ে আরয করেন :
“হে আল্লাহ্র রাসুল ৷ আমাদের মধ্যে আগমন করুন ৷ জনবল আর অস্ত্রবলে আমরা বেশী
এবং প্রতিরোধ আর প্রতিরক্ষায়ও আমরা সক্ষম ৷” রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন :
“তোমরা তার পথ ছেড়ে দাও, সে যে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) আদিষ্ট ৷ তারা পথ ছেড়ে
দিলে সে চলতে থাকে ৷ বনী আদী ইবন নাজ্জারের মহল্লা দিয়ে অতিক্রমকালে উম্মু আবদুল
মুত্তালিব তাদের বংশের অন্যতম নারী সালমা বিনত আম্র এরা দু’জন নিকটে আসে ৷ এরা
সালীত ইবন কায়স এবং আবু সালীত আসীরা ইবন খারিজা বনী আদী ইবন নাজ্জারের একদল
লোক নিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দরবারে উপস্থিত হয়ে আরব করেন :
“হে আল্লাহ্র রাসুল (সা) ! আপনার মাতুলকুলে অবস্থান গ্রহণ করুন ৷ জনসংখ্যা আর
অস্ত্রবলে তারা বেশী এবং প্রতিরোধেও তারা সক্ষম ৷ ” রাসুলুল্লাহ্ (সা) এবারও বললেন :
“তোমরা তার পথ ছেড়ে দাও ৷ কারণ, সে তো আদিষ্ট আছে ৷ পথ ছেড়ে দিলে উটনীটি
আপন মনে চলতে থাকে ৷ শেষ পর্যন্ত বনু মালিক ইবন নাজ্জারের মহল্লার দরজায় এসে,
বর্তমানে যেখানে মসজিদে নববী অবস্থিত, সেখানে বসে পড়ে ৷ এ স্থানটি ছিল বনু মালিকের
দু’জন ইয়াতীম শিশু সহল এবং সুহায়লের খেজুর শুকাবার স্থান আর এ দু’জন ইয়াতীম
শিশু মুআয ইবন আফরার প্রতিপালনাধীন ছিলেন ৷
আমি অর্থাৎ (গ্রন্থকার) বলি, যুহ্রী সুত্রে উরওয়ার উদ্ধৃতিতে ইতােপুর্বে উল্লেখ করা
হয়েছে যে, ইয়ড়াতীমদ্বয় আসআদ ইবন যুৱারার প্রতিপালনাধীন ছিলেন হু আসল ব্যাপার আল্লাহ্ই
ভাল জানেন ৷
মুসা ইবন উকবা উল্লেখ করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) পথে আবদুল্লাহ্ ইবন উবাই ইবন
সালুল;এর গৃহের নিকট দিয়ে অতিক্রম করেন আর সে তখন কাছেই উপস্থিত ছিল ৷ আর
রাসুলুল্পাহ্ (সা) তখন এ আশায় অপেক্ষা করেন যে, হয়তো তাকে র্তার বাড়ীতে আহ্বান করবে
আর সে ছিল তখন খড়াযরাজের গোত্রপতি ৷ তখন আবদুল্লাহ বলে , যারা আপনাকে ডেকেছে,
তাদের নিকট গিয়ে অবস্থান করুন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) একজন আনসারীকে একথা জানালে
সাআদ ইবন উবড়াদা তার পক্ষ থেকে ওযর পেশ করে বলেন :
“ইয়া রাসুলাল্পাহ্! আপনার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন ৷ আমাদের
ইচ্ছা ছিল, আমরা তার মাথায় মুকুট স্থাপন করবো এবং তাকে আমাদের রাজারুপে বরণ
করবো ৷” মুসা ইবন উকবা আরো বলেন :
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বনু আমর ইবন অড়াওফ-এর গৃহ থেকে রওনা হওয়ার আগে আনসারগণ
একত্রিত হয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সওয়ারীর আগে-পিছে চলতে থাকেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এৱ
সম্মান আর মর্যাদা লাভের জন্যে কে তীর উটের রশি ধরবেন, এ নিয়ে কাড়াকাড়ি হয় ৷ কোন
আনসারীর গৃহের নিকট দিয়ে গমনকালে তারা রাসুলুল্পাহ্ (সা)-ফে আহ্বান জানাতেন ৷ তখন
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলতেন : ৰু
“তাকে ছেড়ে দাও, সে (আল্পাহ্র পক্ষ থেকে) আদিষ্ট ৷ আল্লাহ্ যেখানে আমাকে অবতরণ
করান, সেখানেই সে অবতরণ করবে ৷ হযরত আবু আইউবের গৃহের কাছে গিয়ে উটনীঢি তার
গৃহের দরজায় বসে পড়ে ৷ রাসুলুল্পাহ্ (সা) সেখানে অবরতণ করে হযরত আবু আইউবের গৃহে
প্রবেশ করেন এবং সেখানে মসজিদ ও বাসস্থান নির্মাণ করেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে নিয়ে (তার ) উটনী বসে পড়লে তিনি সঙ্গে সঙ্গে
উটনীর পিঠ থেকে অবতরণ করেননি; উটনীটি, আবার উঠে র্দড়াড়ায় এবং কিছু দুর চলে আর
রাসুলুল্পাহ্ (সা) উটনীর রশি ধারণ করে রাখেন, তাকে একেবারে ছেড়ে দেননি ৷ এরপর
উটনীটি কিছুটা পেছনে সরে আসে এবং তার বসার স্থানে এসে বসে পড়ে ৷ এরপর সে একটু
সরে যায় হনহন শব্দ করে এবং মাটিতে মাথা রাখে এবং তার পিঠ থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) নেমে
আসেন ৷ তখন আবু আইউব এবং খালিদ ইবন যায়দ (এগিয়ে এসে) উটের পালানটি বহন করে
ঘরে নিয়ে রাখেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার ঘরে অবতরণ করেন ৷ পুর্বেড়াক্ত খেজুর খলা সম্পর্কে
তিনি জানতে চান যে, এটা কার ? মুঅ্যায ইবন আফ্রা তাকে বলেন, ইয়া রড়াসুলাল্লাহ্! এটা
আম্র এর দৃইপুত্র সাহ্ল এবং সুহায়লের এবং তারা দুজন ইয়াভীম অবস্থায় আমার তত্ত্বড়াবধানে
রয়েছে ৷ আমি তাদের দৃ’জনকে রাযী করতে পারবো ৷ আপনি সেখানে মসজিদ বানিয়ে নিন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখানে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেন ৷ তিনি, আবু আইউবের গৃহেই অবস্থান
করেন ৷ মসজিদ আর বাসস্থান নির্মাণ না করা পর্যন্ত তিনি এখানেই অবস্থান করেন ৷ মসজিদ
নির্মাণের কাজে রাসুলুল্পাহ্ (সা) মুহড়াজির ও আনসারগণের সঙ্গে নিজেও অংশঃত্ত্বহণ করেন ৷
মসজিদ নির্মাণের কাহিনী একটু পরে আসছে ৷
ইমাম বায়হাকী দালাইলুন নবুওয়াত’ গ্রন্থে আবু আবদুল্লাহ্ সুত্রে আনাস (রা) থেকে বর্ণনা
করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় আগমন করে শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে আনসড়ার
নারী-পুরুষগণ উপস্থিত হয়ে তাদের ঘরে আহ্বান করেন ৷ জ্যি রাসুলুল্লাহ্ (সা ) পুর্বের মতই
জবাব দেন ৷
এ সময় বনু নাজ্জারের বালিকারা তাদের বাড়ী থেকে বেরিয়ে আসে এবং দফ বাজাতে
বাজাতে বলতে থাকে :
আমরা নাজ্জার বংশের বালিকারা, মুহাম্মদ (সা) কতই না উত্তম প্রতিবেশী ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) গৃহ থেকে বের হয়ে তাদের উদ্দেশে বললেন : তোমরা কি আমাকে
ভালবাসা তারা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আল্লাহর কসমশ্, আমরা অবশ্যই আপনাকে ভালবাসি
তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) একে একে তিনবার বললেন :
“আল্লাহ্র কসম, আমিও ভোমাস্থদ্যাকে ভালবাসি ৷ ”
এ সুত্রে হাদীছটি গরীব ৷ সুনান গ্রন্থকারগণের মধ্যে কেউই হাদীছটি উদ্ধৃত করেননি ৷
অবশ্য হাকিম তার মুস্তাদরাকে’ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷
ইমাম বায়হাকী আবু আবদুর রহমান সুলড়ামী সুত্রে আনাস (বা) থেকে অনুরুপ বর্ণনা
করেছেন ৷
এতে বাড়তি এতটুকু আছে যে, তখন রাসুলুল্লড়াহ্ (সা) বললেন :
“আল্পাহ্ জানেন যে, আমার অন্তর তােমাদেরকে ভালবাসে ৷
ইমাম ইবন মাজা হিশাম ইবন আমার সুত্রে ঈসা ইবন ইউনুস থেকে হড়াদীছটি বর্ণনা
করেন ৷ ইমাম বুখারী মামার সুত্রে আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (না)
দেখতে পেলেন যে, নারী আর শিশুরা এগিয়ে আসছে ৷ রাবী বলেন যে, আমার ধারণা, আনাস
(রা) বলেছেন, তারা বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরে আসছিল ৷ তখন নবী করীম (সা) সোজা
দাড়িয়ে বললেন : আল্লাহ জানেন, তোমরা আমার নিকট মানব জাতির মধ্যে সর্বাধিক প্রিয় !
রাসুলুল্পাহ্ (সা) কথাটা তিনবার বললেন ৷
ইমাম আহমদ আবদুস সামাদ সুত্রে আনাস ইবন মালিক (রা ) থেকে বর্ণনা করে বলেন :
রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনা অভিমুখে রওনা করেন, আর তার সঙ্গে উটে নওয়াব ছিলেন আবু
বকর (রা) ! আবু বকর (রা)-কে বৃদ্ধ দেখাচ্ছিল এবং তিনি পরিচিত ছিলেন আর রাসুলুল্লাহ্
(না)-যুবক দেখাচ্ছিল, চেনা যাচ্ছিল না ৷ হযরত আনাস (বা ) বলেন আবু বকর (রা)-এর সঙ্গে
(রাস্তায়) কারো সাক্ষাত হলে জিজ্ঞাসা করতে! :
হে আবু বকর! তোমার সম্মুখে ইনি কে ? হযরত আবু বকর বলতেন : ইনি আমার
পথ-প্রদর্শক ৷ প্রশ্নকর্তা মনে করতে! যে, ইনি (মদীনায়) রাস্তা দেখাচ্ছেন ৷ আর হযরত আবু
বকর (বা) কল্যাণ আর মঙ্গলের পথশ্প্ৰদর্শক বলে বুঝাতেন ৷ আবু বকর (বা) ওদিকে তাকিয়ে
দেখেন যে, একজন অশ্বারোহী তাদের নিকটে এসে গেছে ৷ তিনি (আতংকিত হয়ে) বলে
উঠলেন :
হে আল্লাহর নবী! এ অশ্বারোহী তো একেবারে আমাদের কাছে এসে গেছে! রাসুলুল্লাহ্
(সা) সেদিকে ফিরে বললেন :
হে আল্লাহ্ ! তাকে নীচে নিক্ষেপ কর ৷ ঘোড়া তাকে নীচে নিক্ষেপ করে হনহন করতে শুরু
করে ৷ এরপর (লোকটি ঘোড়ার পিঠ থেকে পতিত হয়ে) বললো :
হে আল্লাহর নবী! আমাকে যা ইচ্ছা নির্দেশ করুন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : এখানেই
থেমে যাও , আর কাউকে আমাদের দিকে আসতে দেবে না ৷ বর্ণনাকারী বলেন :
লোকটি দিনের শুরুতে ছিল রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বিরোধী, আর দিনের শেষে হয়ে যায় তার
সশস্ত্র রক্ষাকারী ৷ বর্ণনাকরী বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) হারবার দিকে অবতরণ করেন এবং
আনসারদের নিকট লোক প্রেরণ করেন তা এসে সালাম জানিয়ে বলেন : আপনারা দু’জন
শান্তিতে ও বরণীয়রুপে নওয়াব হোন! রাসুলুল্লাহ্ (সা) এবং আবু বকর (রা) সওয়ার হলেন
এবং আনসারগণ র্তাদেরকে সশস্ত্র অবস্থায় পরিবেষ্টন করে এগিয়ে নেয় ৷ ওদিকে মদীনায়
ত্বাদ রটে যায় যে, আল্লাহ্র নবী (সা) আগমন করেছেন ৷ তার! সকলে মাথা ভুলে তাকে
দেখে আর বলে : এসেছেন, আল্লাহর নবী এসেছেন ৷
বর্ণনাকাবী বলেন : নবী করীম (সা) এগিয়ে যান এবং আবু আইউবের গৃহের নিকটে গিয়ে
অবস্থান নেন ৷ বর্ণনাকারী আনাস (বা) বলেন : হযরত আবু আইউব তার গৃহে পরিবারের সঙ্গে
কথা বলছিলেন আর আবদুল্লাহ ইবন সালাম তা শুনতে পান ৷ তখন তিনি নিজের খেজুর বাগানে
পরিবারের লোকজনের জন্য খেজুর চয়ন করছিলেন ৷ খেজুর চয়ন রেখে দিয়ে যাতে চয়ন
করছিলেন সেই পাত্রটি সঙ্গে নিয়ে তিনি চলে আসেন এবং আল্লাহ্র কথা শুনে গৃহে ফিরে যান ৷
আর আল্লাহ্র নবী বললেন : কার ঘর আমাদের সবচাইতে কাছে ? আবু আইউব (রা) বললেন :
হে আল্লাহর নবী ৷ আমার ঘর ৷ এ আমার গৃহ, আর এ আমার গৃহের দরজা ৷ বললেন : যাও,
আমাদের বিশ্রামের আয়োজন কর ৷ তিনি যান এবং আয়োজন করে ফিরে এসে বলেন :
ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমি ব্যবস্থা করেছি ৷ আপনারা দু’জন চলুন এবং বিশ্রাম নিন ৷ আল্লাহর
নবী (সা) আগমন করলে আবদুল্লাহ ইবন সালাম খিদমতে হাযির হয়ে বলেন :
“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর সত্য নবী এবং আপনি আগমন করেছেন
সত্যসহ ৷” আর ইয়াহুদীরা আসে যে, আমি তাদের নেতার পুত্র নেতা এবং আমি তাদের মধ্যে
সবচেয়ে বেশী জ্ঞানী এবং সবচেয়ে বেশী জ্ঞানীর সন্তান ৷ আপনি তাদের আহ্বান করুন এবং
জিজ্ঞেস করুন ৷ তারা এসে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর দরবারে হাযির হলে রসৃলুল্লাহ্ (সা) তাদেরকে
বললেন :
হে ইয়াহুদী সমাজ! দুঃখ তোমাদের জন্য ৷ তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর ৷ সে আল্লাহর
কসম, যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ্ সেই ৷ তোমরা তাে ভাল করেই জান যে, আমি সত্যি
সত্যিই আল্লাহ্র রাসুল ৷ তোমরা এটাও জান যে, সত্য নিয়েই আমার আবির্ভাব হয়েছে ৷
সুতরাং ইসলাম গ্রহণ করো ৷ তারা বললো, আমরা তা জানি না (অর্থাৎ আপনি যে আল্লাহর
রাসুল ৷ তাতো আমাদের জানা নেই) ৷ কথাটা তারা তিনবার উচ্চারণ করে ৷ অনুরুপভাবে ইমাম
বুথারী আব্দুস সামাদের দিকে সম্পৃক্ত না করে এককভাবে মুহাম্মদ সুত্রে হাদীছঢি বর্ণনা
করেছেন ৷
ইবন ইসহাকের আরো একটা বর্ণনা
ইবন ইসহাক ইয়াযীদ ইবন আবু হাবীব সুত্রে আবুআইউব (রা) থেকে বর্ণনা করেন :
রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন আমার গৃহে উঠেন, তখন তিনি নীচের তলায় অবস্থান করেন ৷ আমি
এবং উম্মু আইউব (অর্থাৎ আমার শ্রী) অবস্থান করি উপর তলায় ৷ তখন আমি বললাম, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ ৷ আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ হোন ! আমি উপর তলায় থাকবাে আর
আপনি থাকবেন নীচতলায়, এটা আমার নিকট অসহ্য এবং জঘন্য বেয়াদবী ৷ তাই আমি চাই
যে, আপনি উপরে চলে আসুন এবং আমি নীচে নেমে যাই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন :
হে আবু আইউব ! আমি ঘরের নীচতলায় অবস্থান করলে তাহবে আমি এবং যারা আমাদের
কাছে আসা-যাওয়া করবেন, তাদের জন্য সুবিধাজনক ৷ তাই রাসুলুল্লাহ্ (সা) গৃহের নীচতলায়
অবস্থান করলেন, আর আমরা অবস্থান করতে থাকি উপর তলায় ৷ একদিন একটা বড় পানির
পাত্র ভেঙ্গে গেল যাতে পানি ছিল ৷ তখন আমি এবং উম্মু আইউব এবন্টা চাদর বা লেপ নিয়ে
দাড়ায় ৷ আর আমাদের ঘরে কেবল একটা চাদর ছিল-যাতে চাদর পানি চুষে নেয়, যেন তা