Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৬ » রাসূলুল্লাহ্ (সা)- এর গাত্রবর্নের বিবরণ

রাসূলুল্লাহ্ (সা)- এর গাত্রবর্নের বিবরণ

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • আবু ইসহাক বলেন আমি (মহিলাটিকে) বললাম, আপনি কি উপমা দ্বারা তার অবস্থা
    বর্ণনা করতে পারেন? তিনি বললেন, (হী) পুর্ণিমার পুর্ণচরুন্দ্রর ন্যায়, এর আগে বা পরে তার
    মত কাউকে আমি দেখিনি ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান আমার ইবন ইয়াসিরের পৌত্র আবু
    উবায়দা ইবন মুহাম্মাদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রুবায়ি বিনৃত মুআববিযকে আমি
    বললাম, আমাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর (দৈহিক সৌন্দর্যের) বর্ণনা দিন ৷ তিনি বললেন, বাছা,
    তুমি তাকে দেখলে উদয়কালীন সুর্য দেখতে ৷ বায়হাকী তার সনদে হাদীসখানি য়৷ কুব ইবন
    মুহাম্মদ আয় যুহরী এর হাদীস সংগ্রহ থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ তার ভাষ্য হল তখন মহিলাটি
    বললেন, যদি তুমি তাকে দেখতে তাহলে বলতে, উদীয়মান সুর্য ৷ আর বুখাবী-মুসলিমে যুহরী
    আইশার সনদে প্রামাণ্য বর্ণনা রয়েছে যে, আয়েশ৷ (রা) বলেন, আনন্দিত অবস্থায়
    একবার রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমার কাছে আসলেন, তখন আনন্দে তার মুখমণ্ডলের ব্লেখাগুলাে
    চমকাচ্ছিল ৷

    রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর গাত্রবরুংরি বিবরণ

    বুখাবী ইয়াহয়া ইবন বুকায়র রাবীআ ইবন আবু আবদুর রহমান সুত্রে বর্ণনা করেন

    যে, তিনি বলেছেন, আমি আনাস ইবন মালিক (রা)-কে নবী করীম (না)-এর দেহাবয়ব ও
    সৌন্দর্যের বিবরণ দিতে শুনেছি ৷ তিনি (আনাস) বলেন তিনি ছিলেন মধ্যম আকৃতির মানুষ-
    না দীর্ঘকায়, না খর্বাকৃতি ৷ তর গাত্রবর্ণ ছিল না উজ্জ্বল ফব্রাকাশে আর নাত তা বাদামী বা
    শ্যামল৷ বর্ণ ৷ আর তার মাথার চুল না অতি কােকড়ানাে আর না তা ৷অতি সরল সোজা ৷ চল্লিশ
    বছর বয়সে তার প্রতি ওহী নাযিল হয় ৷ এরপর তিনি মক্কায় দশ বছর অবস্থান করেন ও তার
    প্রতি ওহী নাযিল হতে থাকে ৷৩ তারপর মদীনায় দশ বছর ৷ তখনও তার মাথার চুল ও দাড়িতে
    কুড়িটি সাদা (পাকা) চুল ছিল না ৷ রাবী আ বলেন, পরে আমি তার একটি চুল দেখলাম, আর
    তা লাল দেখলাম ৷ এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আমাকে বলা হল, সুগন্ধি ব্যবহারের কারণে ৷
    তারপর বুখাবী আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ আনাস ইবন মালিক সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি
    রাবীআ (ইবন আবদুর রহমান) র্তাকে (আনাসকে) বলতে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) অতি
    দীর্ঘকায়ও ছিলেন না আবার বেটেও ছিলেন না, অতিরিক্ত সাদাও ছিল না আবার শ্যামলাও হ্নিা
    না ৷ তার মাথায় চুল অতি কৌকড়ানােও ছিল না আবার একেবারে সােজাও ছিল না ৷ চল্লিশ
    বছরের মাথায় আল্লাহ্ তাকে নুবুওয়াত দান করেন ৷৩ তারপর তিনি মক্কায় দশ বছর এবং
    মদীনায় দশ বছর অবস্থান করেন ৷ এরপর আল্লাহ্ র্তাকে ওফাত দান করেন; অথচ তার মাথা
    ও দাড়িতে কুড়িটি সাদা চুলও ছিল না ৷ মুসলিম ইয়াহয়া ইবন ইয়াহয়া মালিক সুত্রে হাদীসটি
    এভাবে রিওয়ায়াত করেছেন ৷ অনুরুপ তিনি তা কুতায়বা, ইয়াহয়া ইবন আয়ুদ্রব এবং আলী
    ইবন হাজার সুত্রেও বর্ণনা করেছেন ৷ আর তিরমিযী ওন্নড়াসাঈ উভয়ে হাদীসটি রিওয়ায়ড়াত
    করেছেন কুতায়ব৷ সুত্রে ঐ সনদে ৷ আর তিরমিযী হাদীসখানি হাসান সহীহ্ বলে মন্তব্য
    করেছেন ৷ হাফিয বায়হাকী বলেন, হযরত ৩আনাস থেকে ছাবিত তা বর্ণনা করে বলেন, তিনি
    ছিলেন উজ্জ্বল গাত্রবর্ণের অধিকারী ৷ তিনি (বায়হাকী) আরও বলেন, হুমায়দ তা আমাদের
    অনুরুপ সনদে বর্ণনা করেছেন ৷ এরপর তিনি তার সনদে ইয়া কুব ইবন সুফিয়ান সুত্রে
    আনাস ইবন মালিক থেকে বর্ণনা করেন যে,৩ তিনি বলেছেন, নবী করীম (সা ) এর গাত্রবর্ণ ছিল
    উজ্জ্বল বাদামী বা শ্যামলা ফর্স৷ ৷ হাফিয আবু বকর আল-বায্যার একইভাবে এই হাদীসখানি

    আলী (বা) হযরত আনাস (বা) সুত্রে বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি (আল বাবযার) মুহাম্মদ
    ইবন মুছান্ন৷ আনাস সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) দীর্ঘকায়ও
    ছিলেন না আবার খর্বাকৃতিও ছিলেন না ৷ তিনি যখন ছুাটতেন সামনের দিকে ঝুকে হাটতেন ৷
    তার গায়ের রঙ ছিল (উজ্জ্বল) বাদামী বর্ণ ৷ এ হাদীস বর্ণনা করে বাযযার বলেন, হুমায়দ সুত্রে
    খালিদ ও আবদুল ওয়াহ্হাব ব্যতীত অন্য কেউ হাদীসটি বিওয়ায়াত করেছেন বলে আমাদের
    জানা নেই ৷৩ তারপর বায়হাকী আবুল হুসায়ন ইবন বুশরান হুমায়দ সুত্রে বলেন যে, তিনি
    বললেন, আমি আনাস ইবন মালিক (রা) ণ্-ক বলতে শুনেছি এরপর তিনি নবী করীম
    (সা) এর দেহাকৃতি ও সৌন্দর্য বিষয়ক হাদীস উল্লেখ করে বললেন, তিনি ছিলেন বাদামী ফর্সা
    বর্ণের ৷ আমি (গ্রন্থকার) বলি, এই বর্ণনাধারাটি তার পুর্বেরটিরতু লনায় উত্তম ৷ আর এ থেকে
    বুঝা যায় যে রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর মুখমণ্ডলে যে বাদামী বা তামাটে বর্ণের ছাপ ছিল, তা তবে
    অধিক সফর ও বৌদ্রব্লিল্ট হওয়ার কারণে ৷ অড়াল্লাহ্ই সম্যক অবগত ৷ ইয়া কুব ইবন সুফিয়ান
    ফাসাবী আবু তফায়লের বরাতে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি (আবুতু ফায়ল) বলেন আমি
    নবী করীম (সা) কে দেখেছি ৷ আর আজ আমি ব্যতীত তাকে দেখেছেন এমন আর কেউ বেচে
    নেই ৷ তখন আমরা তাকে বললাম, আমাদের রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দেহ গঠন ও সৌন্দর্যের
    বিবরণ দিন ৷ তিনি বললেন, তিনি ছিলেন ফর্স৷ লাবণ্যময় মুখমণ্ডলের অধিকারী ৷ মুসলিম
    সাঈদ ইবন মানসুর সুত্রে এ সনদে৩ তা বর্ণনা করেছেন ৷ এ ছাড়া আবু দাউদ ও সাঈদ ইবন
    ইয়ান আল জারীরীর হাদীস থেকে আবৃত তৃফায়ল আমির ইবন ওয়াছিলা লায়হীর বরাতে তা
    বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) ছিলেন ফর্স৷ ও লাবণ্যময় চেহারার অধিকারী ৷
    যখন তিনি ইাটতেন তখন মনে হত যেন ঢালু (উচু) ভুমি থেকে অবতরণ করছেন ৷

    এই ভাষ্য আবু দাউদের ৷ ইমাম আহমদ, যায়দ ইবন হারুন আল জারীরীর বরাতে বর্ণনা
    করেন যে, যায়দ বলেছেন, আমি আবু তুফায়লের সাথে তাওয়াফ করছিলাম ৷ হঠাৎ তিনি বলে
    উঠলেন, আমি ব্যতীত এমন কেউ বেচে নেই, যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে দেখেছে ৷ আমি
    বললাম, আপনি কি সত্যিই তাকে দেখেছেন ? তিনি বললেন, হা ৷ যায়দ বলেন, আমি তখন
    বললাম, তিনি দেখতে কেমন ছিলেন ? তিনি বললেন, তিনি ছিলেন ফর্স৷ লাবণ্যময় ও মধ্যম
    দেহাবয়বের অধিকারী ৷ আর তিরমিযী তা বর্ণনা করেছেন, সুফিয়ান ইবন ওকী ও মুহাম্মদ
    ইবন বাশৃশার সুত্রে ইয়াযীদ ইবন হারুন থেকে ৷ বায়হাকী আবু আবদুল্লাহ আল-হাফিয
    আবু জুহায়ফ৷ সুত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা )-কে ফর্স৷ দেখেছি, তখন
    তার বা র্ধক্য শুরু হয়ে গিয়েছিল ৷ হাসান ইবন আলী (বা) দেখতে তারই মত ছিলেন ৷ তারপর
    তিনি বলেন, ওয়াসিল ইবন আবদুল আলা থেকে এবং বুখারী আমর ইবন আলী মুহাম্মদ ইবন
    ফুযায়ল সুত্রে তা বর্ণনা করেছেন ৷ আর হাদীসঢির মুল ভাষ্য হচ্ছে সহীহাযনে উল্লেখিত ভায্যের
    অনুরুপ ৷ কিন্তু তার শব্দমাল৷ ভিন্ন ৷ যেমনটি শীঘ্রই আসছে ৷ মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বর্ণনা
    করেন যুহরী সুরাকা ইবন মালিক থেকে, তিনি বলেন (একবার) আমি রাসুলুল্লাহ্
    (সা) এর খিদমতে হাযির হলাম, আমি যখন তার নিকটবর্তী হলাম, আর তিনি তার উটনীর
    উপর সওয়ার ছিলেন তখন আমি তার পায়ের গোছার দিকে তাকাতে লাগলাম, যেন তা
    খেজুর বৃক্ষের নব মঞ্জরী ৷ ইবন ইসহাকের বরাতে ইউনুসের বর্ণনার ভাষা হল আল্লাহর
    শপথ ৷ আমি যেন রেকাবীতে এখনও তার পায়ের গোছা দেখতে পাচ্ছি, যেন তা খেজুর বৃক্ষের

    নব মঞ্জরী ৷ আমি (গ্রন্থকার) বলি, শুভ্রতার প্রাঞ্জল্য যেন তা সদ্য উদগত খেজুর মঞ্জরী ৷ ইমাম
    আহমদ সুফিয়ান ইবন ইয়ায়নার সুত্রে বনু খুযাআর এক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেন, যার
    নাম ছিল মিহ্রাশ বা মিখরাশ যে, নবী করীম (সা) রাত্রিকালে জিরানা’ থেকে বের হয়ে
    এসে উমরা করলেন ৷ অতঃপর ফিরে এসে সেখানে রাত্রি যাপনকারীর ন্যায় সকাল করলেন ৷
    তখন আমি তার পিঠের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, যেন তা ছুাচে ঢালাইকৃত রুপার পাত ৷ এই
    হাদীসখানি ইমাম আহমদের একক বর্ণনা ৷ এভাবেই ইয়াকুব ইবন সুফিয়ড়ান, সুফিয়ড়ান ইবন
    উয়ায়না থেকে তা বর্ণনা করেছেন ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান ইসহাক ইবন ইবরাহীম সাঈদ
    ইবনুল মুসাব্যির সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি হযরত আবু হুরায়রাকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
    দেহাবয়ব ও দেহ সৌন্দর্যের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলতে শুনেছেন, তিনি অতি ফর্সা ছিলেন ৷ এই
    সনদটি হাসান’ শ্রেণীর ৷ তবে সিহড়াহ্ সিত্তার সংকলকগণ তা বর্ণনা করেননি ৷

    ইমাম আহমদ, হাসান আবু হুরায়রার মাওলা আবু ইউনুস সুলায়মান ইবন জুবায়র
    এর বরাতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি আবু হুরায়রাকে বলতে শুনেছেন,’ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর চাইতে
    সুন্দরতর কিছু আমি দেখিনি ৷ তিনি এমন ছিলেন, যেন সুর্যকিরণ তার কপালে প্রবাহিত হত, ৷
    রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর চাইতে দ্রুতগতিতে কাউতে আমি হীটতে দেখিনি ৷ ভুমি (পথের দুরত্ব)
    যেন তার জন্যে গুটিয়ে ভাজ করে (সংক্ষিপ্ত) দেয়া হত ৷ তার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে
    আমরা প্রাণাম্ভ চেষ্টা করতাম অথচ তিনি অবলীলায় অগ্রসর হতেন ৷ তিরমিযী হাদীসটি
    রিওয়ায়ড়াত করেছেন ৷ কুতায়বার সুত্রে ঐ সনদে তিনি বলেন যেন তার মুখমণ্ডলে সুর্যের
    দীপ্তি প্রবাহিত হত ৷ আর তিনি মন্তব্য করেন, হাদীসখানি গরীব পর্যায়ের ৷ আর বায়হাকী
    আবদুল্লাহ ইবন মুবারকের হাদীস থেকে আবু হুরায়রা (রা)-এর বরাতে তা বর্ণনা
    করেছেন ৷ তিনি বলেন, তার মুখমণ্ডলে যেন সুর্যের দীপ্তি প্রবাহিত হত ৷ অরুপ ইবন আসাক্লির
    হারমালার হাদীস থেকে হযরত আবু হুরায়রার বরাতে হুবহু উক্ত বর্ণনায় হাদীসটি
    রিওয়ায়াত করেন ৷

    বায়হাকী আলী ইবন আহমদ ইবনধ্ আবদান হযরত আলী (রা)-এর বরাতে বর্ণনা
    করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর গাত্রবর্ণ ছিল উজ্জ্বল ফর্সা ৷ আর আবু দাউদ
    তায়ালিসী, মাসউদীর বরাতে আলী (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্
    (সা)-এর মুখমণ্ডল ছিল লালাভ ফর্সা (সাদা) ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ড়ান নাফি ইবন
    জুবায়র থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি (নাকি) বলেন, হযরত আলী আমাদেরকে নবী করীম
    (সা)-এর দেহাবয়ব ও সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে বললেন, তিনি ছিলেন লালাভ সাদা গাত্রবর্ণের
    অধিকারী ৷ আল-মাসউদীর হাদীস থেকে তিরমিযী অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ তারপর তিনি
    মন্তব্য করেছেন, এটা সহীহ্ হাদীস ৷ বায়হাকী বলেন, অন্য একটি সুত্রেও হযরত আলী থেকে
    অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে ৷ আমি (গ্রন্থকার) বলি, ইবন জুরায়জ সালিহ ইবন সাঈদ সুত্রে হযরত
    আলী থেকে তা বর্ণনা করেন ৷ বায়হাকী বলেন, (রিওয়ায়াতসমুহের আপাত বিরোধ নিরসনে)
    বলা হয়, তার শরীরে সুর্য কিরণ ও বায়ু লাগা উন্মুক্ত অংশ ছিল লালাভ সাদা, আর কাপড়ে
    আবৃত অংশ ছিল উজ্জা৷ শুভ্র ৷

    রাসুল (সা)শ্এর মুখমগুল ও সৌন্দর্যের বিবরণ
    তার দাত, কপাল, ভুরু, চোখ ও নাকের গঠন-সৌন্দর্যের বর্ণনা

    এ প্রসঙ্গে ইতিপুর্বে আবৃত তুফায়লের উক্তি উল্লেখিত হয়েছে তিনি ছিলেন ফর্সা ও
    লাবণ্যময় চেহারার অধিকারী ৷” হযরত আনাসের উক্তি-তিনি ছিলেন উজ্জ্বল গাত্রবর্ণের
    অধিকারী ৷ ” রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর চেহারা তরবারির মত উজ্জ্বল ও লম্বাকৃতি ছিল কিনা? এ
    প্রশ্নের জবাবে বারা (রা)-এর উক্তি, না; বরং চাদের ন্যায় গোলাকার ৷ অনুরুপ প্রশ্নের জবাবে
    জাবির ইবন সামুরা (রা)-এর উক্তি, না বরং চন্দ্র সুর্যের মত গোলাকার ৷ রুবায় বিনত
    মুআব্বিয (রা)-এর উক্তি-“তৃমি র্তাকে দেখলে বলতে, উদীয়মান সুর্য এবং অন্য রিওয়ায়াতে
    “দেখতে পেতে উদীয়মান সুর্য” ৷ রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর সাথে হজ্জ সমাপণকারী হামাদানী
    মহিলা সাহাৰীকে জিজ্ঞাসার জবাবে আবু ইসহাক আসৃ-সুবায়ঈকে বলা তার উক্তি-“তিনি
    ছিলেন পুর্ণিমা রাতের চাদের মত ৷ তার আগে বা তারপরে তার তুলা কাউকে আমি দেখিনি ৷ ”
    আবু হুরায়রা (বা) বলেন, “সুর্য (কিরণ) যেন তার মুখমণ্ডলে প্রবহমান ৷” অন্য রিওয়ায়াতে
    “তার কপালে ৷” ইমাম আহমদ আফ্ফান ও হাসান ইবন মুসা সুত্রে হযরত আলী (রা) থেকে
    বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা) ছিলেন বিশাল মাথা, ডাগর চক্ষুযুগল ও প্রশস্ত
    ভ্রযুগলের অধিকারী ৷ র্তারদুচােখ ছিল লাল আভা মিশ্রিত, দাড়ি ছিল ঘন, গাত্রবর্ণ উজ্জ্বল ফর্সা
    আর তার হাতের তালুদ্বয় ও পা দু’টি ছিল ভরাট ও বড় বড় ৷ যখন তিনি ইাটতেন তখন মনে
    হত তিনি যেন ঢালু ভুমিতে (নিচের দিকে) হীটহ্নেম্ব ৷ যখন তিনি কোন দিকে ঘুরে তাকাতেন
    তখন সম্পুর্ণ ঘুরে তাকাতেন ৷” এটি আহমদের একক বর্ণনা ৷ আবু ইয়ালা যাকারিয়্যা ও
    ইয়াহইয়া আল-ওয়াসিতী হযরত আলী সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী করীম (না)-এর
    দেহাবয়বসম্পর্কে ঙিজ্ঞেড়াসিত হয়ে বলেছিলেন, “তিনি বেটেও ছিলেন না, অতি দীর্ঘকায়ও না ৷
    আধাকৌকড়ানা সুন্দর চুলের অধিকারী, চেহারায় রক্তিম আভা মিশ্রিত পুষ্ট অঙ্গসন্ধি, মাংসল
    গোড়ালী ও পদযুগল, বিশাল মাথা, বুকের মাঝে প্রলন্বিত ণ্কশরেখা-এর অধিকারী, তার পুর্বে
    বা পরে তার মত কাউকে আমি দেখিনি ৷ হাটার সময় পা তুলে তুলে ছুটিতেন যেন তিনি চালু
    ভুমি থেকে নামছেন ৷ ”

    মুহাম্মদ ইবন সাদ ওয়াকিদীর বরাত দিয়ে হযরত আলী থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি
    (আলী) বল্যেছন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে ইয়ামানে পাঠড়ালেন ৷ একদিন আমি (সেখানে)
    লোকদের সম্বোধন করে কথা বলছিলাম ৷ আর তখন জনৈক ইয়াহুদী পুরোহিত দাড়িয়ে তার
    হাতের ধর্মগ্রন্থে নজর রাখছিল ৷ এরপর সে যখন আমাকে দেখল তখন বলল, আমাদেরকে
    ’ আবুল কাসিম (না)-এর দেহাবয়রের বর্ণনা দিন ৷ তখন আলী (বা) বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    ঘেটে নন, অতি দীর্যায়তও নন, তার চুল অতি কৌকড়ানোও নয়, আবার অতি সােজাও নয় ৷
    তিনি আধা-কৌকড্যানা ও কাল চুলের অধিকারী, তার মাথা বিশাল, পাত্র বর্ণ লাল আভা
    মিশ্রিত, পরিপুষ্ট অঙ্গসন্ধি, হস্তদ্বয় ও পদযুগলের তালু মাংসল ও কোমল, বুক থেকে বাড়ি পর্যন্ত
    প্রলন্বিত কেশরেখার অধিকারী, তার চোখের পাতায় ঘন পালক, ভ্রযুগল সংযুক্তপ্রায়, কপাল
    প্রশস্ত ও মসৃণ, উভয় র্কাধের মাঝে প্রশস্ত দুরত্ব ৷ যখন তিনি ছুড়াটেন তখন পা তুলে তুলে
    হীটতেন যেন নিচের নিকে নেমে যাচ্ছেন ৷ তার পুর্বেও আমি তার মত কাউকে দেখিনি তার

    পরেও না ৷ আলী (রা) বলেন, এরপর আমি চুপ হলে ইয়াহ্রদী পুরোহিত আমাকে বলল, আর
    কি? আলী বলেন, (তখন আমি বললাম) “এখন আমার এতট্রুকুই স্মরণ হচ্ছে ৷” তখন
    ইয়াহুদী পুরোহিত টি বলল, তার দৃ ’চােখে লাল আভা রয়েছে, তিনি সুন্দর দাড়ি, সুন্দর মুখ এবং
    পুর্ণ কর্ণদ্বয়ের অধিকারী, পুর্ণদেহে সামনে তড়াকান এবং পুর্ণদেহে পিছনে তাকান (অর্থাৎ আড়
    চোখে তড়াকান না) ৷ তখন আলী (রা) বললেন, আল্লাহ্রকসম, এগুলিও তার বৈশিষ্ট্য ৷
    ইয়াহুদী পুরোহিত বলল, আর কি জানেন ? আলী বললেন, তা কি? পুরোহিতটি বলল, তার
    মাঝে রয়েছে সম্মুখে ঝোক ৷ আলী বললেন, এটাই তো আমি আপনাকে বললাম, যেন তিনি
    ঢালু ভুমি থেকে নামেন ৷ পুরোহিতটি বলল, আমার পুর্ব পুরুষদের গ্রন্থসমুহে আমি এই বিবরণ
    পাই ৷ এছাড়া আমরা আরো পাই যে, তিনি আল্লাহ্র হারামে-সম্মানিত স্থানে, নিরাপত্তাস্থুলে ও
    তার পবিত্র ঘরের স্থানে প্রেরিত হবেন ৷ তারপর তিনি এমন হারামে (ভুখণ্ডে) হিজরত করবেন,
    যাকে তিনি নিজে হারাম’ (সম্মানিত) ঘোষণা করবেন এবং তার জন্যও আল্লাহ ঘোষিত
    হরোমের ন্যায় মর্যাদা সুচিত হবে ৷ আমরা আরো পাই যে, তার সাহায্যকারী আনসারগণ হবেন
    খর্জুর বীথির অধিকারী উমর ইবন আমিরের বংশধর একগােত্র ৷ আর তাদের পুর্বে সেখানকার
    বাসিন্দা হল ইয়াহুদীরা ৷ আলী বললেন, তিনিই তিনি এবং তিনি আল্লাহ্র রাসুল ৷ তখন সেই
    ইয়াহুদী পুরোহিত টি বলল, এখন আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি নবী এবং সমগ্র মানবজাতির
    কাছে প্রেরিত আল্লাহর রাসুল ৷ এ সাক্ষ্য ও বিশ্বাস নিয়েই বেচে থাকর এবং মৃত্যুবরণ করব
    এবং এ বিশ্বাস নিয়েই ইনশাআল্লাহ্ পুনরুথিত হব ৷

    রর্ণনাকারী বলেন, এরপর থেকে সেই ইয়াহ্দী পুরোহিত হযরত আলীর কাছে আসতেন
    এবং তিনি তাকে কুরআন শিক্ষা দিতেন এবং ইসলামী শরীয়তের বিধি-বিধান অবহিত
    করতেন ৷ এরপর হযরত আলী এবং ঐ পুরোহিতু সেখান থেকে চলে আসশেন এবং ঘোকটি
    হযরত আবু বকর (রা)-এর খিলাফতকালে মৃত্যুবরণ করলেন ৷ আর এ সময়ে তিনি রাসুলুল্লাহ্
    (সা) এর প্রতি ঈমান রাখতেন এবং তিনি যে আল্লাহর রাসুল একথা স্বীকার করতেন ৷
    আমীরুল মু মিনীন আলী ইবন আবু৩ তালিবের বরাতে বিভিন্ন সুত্রে এই বিবরণ উপস্থাপিত
    হয়েছে, যার বিশদ বিবরণ শীঘ্রই আসছে ৷

    ইয়া কুর ইবন সুফিয়ান সাঈদ ইবন মনসুর উমর ইবন আলী সুত্রে বর্ণনা করেন যে,
    তিনি বলেছেন, (একবার) হযরত আলীকে জিজ্ঞেস করা হল বা বলা হল, আমাদেরকে
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দেহাবয়বের রংনাি দিন! তখন তিনি বললেন, তিনি পােলাকৃতি চেহারার
    এবং ফর্স৷ ছিলেন ৷ আর তার মাঝে লালাভ আভা মিশ্রিত ছিল ৷ তার চোখের মণি ছিল কাল
    এবং প্রশস্ত আর পাপড়ি হ্নিম ঘন ৷ এছাড়া ইয়া কুব আবদুল্লাহ্ ইবন সালাম৷ এবং সাঈদ ইবন
    মনসুর হযরত আলীর কোন রং শধরের বরাতে উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি বলেন, হযরত
    আলী যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর দেহাবয়বের বর্ণনা দিতে ন তখন বলতেন, তার মুখারয়ব ছিল
    গোলাকার,৩ তিনি ছিলেন ফর্স৷ ডাগর চক্ষু ও ঘন পাপড়ির অধিকারী ৷ বিশিষ্ট আরবী অভিধান
    প্রণেত৷ আল জাওহারী বলেন, চোখের ক্ষেত্রে ং৫;র্দুা৷৷ (যা হাদীসে বিদ্যমান) হল চোখের ঘন
    কৃষ্ণ ও প্রশ্াস্ত হওয়া ৷ আর আবু দ উদ আৎ তায়ালিসী শু বার সুত্রে সাম্মাক থেকে বর্ণনা
    করেন (তিনি বলেন), আমি জাবির ইবন সামুরা (রা) কে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    ছিলেন চোখের কাল অংশে লাল আভা মিশ্রিত অ-মাৎসল গোড়ালি এবং প্রশস্ত মুখের
    অধিকারী ৷ শুবার সুত্রে আবু দাউদের বর্ণিত রিওয়ায়াতে এমনই এসেছে ৷

    আমি (গ্রন্থকার) বলি, এই হাদীসখানি ইমাম মুসলিম, আবু মুসা ও বুনদার সুত্রে
    শুবা থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ তাতে তিনি পুর্ববর্তী বিওয়ায়াত স্পো ৷াপ্রুদু;৷ এর স্থলে
    )া৷ ৷ ট্রুা;দ্বু৷ বলেছেন, এরপর তিনি হাদীসখানি “হাসান সহীহ্’ বলে মন্তব্য করেছেন ৷
    আর সহীহ্ মুসলিমে স্পো ৷ এও এর ব্যাখ্যা করা হয়েছে আয়ত সোচন ৷ আসলে এটা
    হচ্ছে কোন কোন রাবীর নিজস্ব বক্তব্য ৷ তবে আবু উবড়ায়দের ব্যাখ্যা তাহলাে চোখের সাদা
    অংশের মাঝে লাল আভা ৷ এটাই প্রসিদ্ধতর ও সঠিক ব্যাখ্যা ৷ আর তা শক্তি ও সাহসের এবং
    শৌর্য-বীর্যের প্রমাণবহ ৷ আর সঠিক বিষয় আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান
    ইসহাকৰু ইবন ইবরাহীম সুত্রে সাঈদ ইবন মুসায়্যাব থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আবু
    হুরায়রা (রা) কে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দেহাবয়বের বর্ণনা দিতে শুনেছেন ৷ তিনি বলেন, তিনি
    ছিলেন প্রশস্ত কপাল ও ঘন পাপড়ির অধিকারী ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান আবু গাসৃসড়ান সুত্রে
    হাসান ইবন আলী থেকে তার জনৈক খালুর বরাতে বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ছিলেন প্রশস্ত
    ললাংটর অ ধিকারী,তার ভ্রদ্বয়ণ্ ছিল ণ্ধনুকের ন্যায় র্বাকানাে সরু ও দীর্ঘ, তবে অসংযুক্ত, এ
    দুয়ের মঝে একটি শিরান্ ছিল যা রাপের সময় ফুলে উঠতন্ ৷ নড়াকের ডগার মধ্যভাগ উচু এবং
    ছিদ্রদ্বয়্ প্সৎকীর্ণ, তার উপর জোড়াতির আভা বিকীর্ণ হলে অগভীর দৃষ্টির দর্শক তাকে উচু নাক
    ভারত, গণ্ডদ্বয় স্বাভাবিক সমতল, মুখ প্রশস্ত, দীতসমুহ সুদৃশ্য সুৰিন্যস্ত ও সুষম যগক বিশিষ্ট ৷

    এ ছাড়া ইয়াকুব ইবরাহীম ইবন আব্বাস সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
    রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সামনের র্দাতদ্বয়ের মাঝে (সুষম) ফীক ছিল ৷ তিনি যখন কথা বলাতন,
    তখন তীর সামনের দস্তদ্বয়ের মধ্যে আলোর দ্যুতির ন্যায় দ্যুতি দৃশ্যমান হত ৷ তিরমিযী তা
    বর্ণনা করেছেন আবদুল্লাহ্ইবন আবদুর রহমান সুত্রে ঐ সনদে ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান
    সামুরার সনদে বর্ণনা করেন“ যে, তিনি বলেছেন, আমি যখন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দিকে
    তাকাতাম তখন বলতাম (ভাবতাম) তিনি দু’চোখে সুরমা লাগিয়েছেন, অথচ সুরমা লাগাননি ৷
    রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পায়ের গোছাদ্বয় সরু ছিল ৷ আর যখনই তিনি হাসতেন মৃদু হাসতেন ৷
    , ইমাম আহমদ ওকী আলী (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    খর্ব কায় কিৎবা (অতি) দীর্ঘকায় ছিলেন না, পুষ্ট মাথা ও মোটা দাড়ির অধিকারী, তার হস্তদ্বয় ও
    পদদ্বয়ের তালু এবং অস্থি সন্ধিসমুহ্ ভরাট ও মাংসল ছিল ৷ তার ঢেহারায় লাল আভা মিশ্রিত
    বুকের নিচ থেকে নাভি পর্যন্ত প্রলম্বিত কেশরেথা ছিল ৷ ইাটড়ার সময় সামনের দিকে ঝুকে
    হীটতেন, যেন কোন শিলাখণ্ড থেকে নামছেন ৷ তীর পুর্বে বা পরে তার মত কাউকে আমি
    দেখিনি ৷ ইবন আসাকির্বৃবলেন, আবদুল্লাহ ইবন দাউদ আল থুরায়বীও এ হাদীসটি রিওয়ায়াত
    করেছেন (পুর্ববর্তী সনদের) মুজাম্মি সুত্রে ৷ তবে তিনিরাবী ইবন ইমরান ও আলীর মাঝে
    একজন নামহীন ব্যজ্যিক প্রবেশ করিয়েছেন ৷ জনৈক আনসারী সুত্রে বর্ণনা করেন, আমি হযরত
    আলী (রা)-কে রাসুলুল্লাহ্ (সা);এর দৈহিক গঠন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম ৷ তখন তিনি
    কুফার মসজিদে তরবরির সংযুক্ত ফিত৷ দিয়ে হীর্টু জড়িয়ে বলেছিলেন ৷ তখন তিনি বললেন,
    তিনি ছিলেন ফর্সা রঙের, লাল আভা মিশ্রিত, ডাগর কাল চোখ বিশিষ্ট, ঈষৎ কৌকড়ানাে চুল,
    বুকে সুক্ষ্ম পশমের রেখা, সমতল গণ্ডদেশ এবং ঘন দাড়ির অধিকারী এবং বাবরি চুলওয়ালা ৷
    তীর ঘাড় যেন রুপার জগ, তীর বুকের নিচ থেকে নাভি পর্যন্ত প্রলন্বিত ণ্কশরেখা খেজুর শাখার
    ন্যায়, তার পেটে বা বুকে এছাড়া কোন পশম ছিল না ৷ হাত ও পায়ের তালু কোমল ও

    মাংসল ৷ যখন তিনি ছুটিতেন মনে হত ঢালু ভুমি থেকে নামছেন, যেন তিনি শিলাখণ্ড থেকে
    নামছেন ৷ কোন দিকে ঘুরে তড়াকালে পুর্ণ দেহে ঘুরে তাকাতেন ৷ তিনি দীর্ঘকায় নন আবার
    খঃর্বকায়ও নন, দুর্বল অসহায় নন ৷ তার মুখমণ্ডলের ঘাম যেন মুক্তাবিন্দু আর তার ঘামের ঘ্রাণ
    সুগন্ধি মিশৃকের চইিতেও অধিকতর সুঘ্রাণযুক্ত ৷ তার পুর্বে বা পরে আমি তার সাথে তৃল্য
    কাউকে দেখিনি ৷

    ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান সাঈদ ইবন মনসুর ইউসুফ ইবন মাযিন থেকে বর্ণনা করেন
    যে, এক ব্যক্তি হযরত আলীকে জিজ্ঞেস করল, হে আমীরুল মুমিনীন! আমাদেরকে রাসুলুল্লাহ্
    (না)-এর দৈহিক গঠনের বর্ণনা দিন ৷ তখন তিনি বললেন, তিনি ছিলেন লাল আভা মিশ্রিত
    ফর্সা চেহারা, বিশাল খুলি; উজ্জ্বল ফর্সা বর্ণ, বিযুক্ত ভ্রদ্বয় এবং দীর্ঘ পাপড়ির অধিকারী ৷ ইমাম
    আহমদ আসওয়াদ ইবন আমির সুত্রে হযরত আলী থেকে বর্ণনা করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    ছিলেন বিশাল খুলির অধিকারী ৷ তার পাত্র বর্ণ ছিল লাল আভা মিশ্রিত, হাত ও পায়ের তালু
    কোমল ও মাংসল, দাড়ি বিশাল, বুকের নিচ থেকে নাভি পর্যন্ত দীর্ঘকায় কেশরেখা এবং গ্রন্থি
    জােড়াসমুহ বিশাল ৷ ঢালু ভুমিতে হাটার ন্যায় সামনে ঝুকে ইাটতেন, খর্বকায় নন, দীর্ঘকায়ও
    নন ৷ তার পুর্বে বা পরে আমি তার মত কাউকে দেখিনি ৷ হযরত আলী থেকে এই হাদীসের
    অনেক সমর্থক (শাহিদ) রিওয়ায়াত বর্ণিত হয়েছে ৷ এ ছাড়া হযরত উমর থেকেও অনুরুপ
    বর্ণিত হয়েছে ৷ ওয়াকিদী বুকায়র ইবন মিসৃমার সুত্রে যিয়াদ ইবন সাদ থেকে বর্ণনা করেন ৷
    তিনি বলেন, আমি সাদ ইবন আবু ওয়াক্কাসকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কি খিযাব
    ব্যবহার করেছেন? তিনি বললেন, না তিনি তা করেননি এবং তার ইচ্ছাও করেননি ৷ তার
    বার্ধক্য প্রকাশ পেয়েছিল তার চিবুকের নীচের ক্ষুদ্র দাড়িতে এবং মাথার অগ্রভাগে ৷ যদি আমি
    তার সাদা দাড়ি ও চুল গণনা করতে চাইতাম তাহলে অবশ্যই তা গণনা করতে পারতাম ৷
    আমি বললাম, আর তার দেহাবয়বের বিবরণ কি ? তিনি বললেন, তিনি ছিলেন এমন এক
    পুরুষ, যিনি অতি লম্বা নন, বেটেও নন, অতি শুভ্রও নন, শ্যামলাও নন, তার চুল একেবারে
    সােজাও নয়, আবার অতি কৌকড়ানােও নয়, তার দাড়ি ছিল মানানসই, কপাল মসৃণ ও
    রক্তিমাভা মিশ্রিত, আঙ্গুলসমুহ কোমল ও মাংসল, মাথার চুল ও দাড়ি ঘন কাল ৷

    হাফিয আবু নুআয়ম আল-ইম্ফহানী আবু মুহাম্মদ আবদুল্লাহ ইবন জাফর আবদৃস্লাহ্
    ইবন মাসউদ থেকে বর্ণনা করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সম্পর্কে যে বিষয় আমি সর্বপ্রথম
    জানতে পারি, তা হল আমার কয়েকজন চাচা সম্পর্কীয়দের সাথে মক্কায় আগমন করলাম,
    তখন লোকেরা আমাদেরকে আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিবকে দেখিয়ে দিল ৷ আমরা তার
    কাছে গিয়ে পৌছলাম ৷ এ সময় তিনি যমযমের কাছে বসা ছিলেন, তখন আমরা গিয়ে তার
    কাছে বসলাম ৷ আমরা তার কাছে বসা ছিলাম, হঠাৎ বাবুস সাফা’ (সাফা তােরণ) দিয়ে
    সেখানে এক ব্যক্তি আগমন করলেন, যীর গাত্রবর্ণ ছিল লাল আভা মিশ্রিত ফর্সা, তার অর্ধকান
    পর্যন্ত প্রলন্বিত ছিল ঈষৎ কোকড়ানাে বাবরি চুল, তীক্ষ্ণ উচু নাক, সামনের র্দাতগুলি দ্যুতিময়,
    উজ্জ্বল কান, ডাগর চক্ষুদ্বয়, ঘন দাড়ি, বুকের নীচ থেকে নাতিঃ দিকে সরু পশমের রেখা,
    হস্তদ্বয় ও পদদ্বয়ের তালু মাংসল ও কোমল ৷ তিনি দুটি সাদা কাপড় পরিহিতছিলেন, মনে
    হচ্ছিল তিনি যেন পুর্ণিমার রাত্রের পুর্ণ চন্দ্র ৷ এরপর তিনি (ইবন মাসউদ) সম্পুর্ণ হাদীস এবং
    নবী করীম (না)-এর বায়তৃল্লার তাওয়াফ এবং সেখানে হযরত খাদীজা ও আলীসহ তার

    নামাংযর কথা উল্লেখ করেছেন ৷ তারা আব্বাস (রা)-কে তীর সম্পর্কে জিজ্ঞসো করলে তিনি
    বললেন, ইনি হলেন আমার ভাতৃম্পুত্র মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ্ ৷ তার দাবি হল আল্লাহ তাকে
    মানুষের কাছে রাসুল করে পাঠিয়োছন ৷

    ইমাম আহমদ জাফর সুত্রে ইয়াযীদ ফারিসী থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
    ইবন আব্বাসের জীবদ্দশায় (একবার) আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে স্বপ্নে দেখলাম ৷ তিনি
    (বর্ণনাকারী) বলেন, আর ইয়াযীদ মুসহাফ অর্থাৎ পবিত্র কুরআনের অনুলিপি লিখতেলা
    ইয়াযীদ বলেন, তখন আমি ইবন আব্বাসকে বললাম, স্বপ্নে আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে
    দেখেছি ৷ ইবন আব্বাস বললেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা) বলতেন-

    শয়তান আমার আকৃতি (ছুরত) ধারণ করতে পারে না ৷ সুতরাং স্বপ্নে যে আমাকে দেখেছে
    সে প্রকৃত আমাকেই দেখেছে (অন্য কাউকে নয) ৷ তুমি কি আমাদের কাছে তোমার স্বপ্নে
    দেখ ৷ এই ব্যক্তির দৈহিক গঠনের বিবরণ দিতে পার ? সে বলল, হী! আমি ইে ব্যক্তির মধ্যে
    অবস্থানরত এক ব্যক্তিকে দেখেছি, যার দেহ বর্ণ হল শ্যামলা, হাসি সুন্দর, সুরমা রাঙা চোখ,
    মুখাবয়ব সুন্দর, তীর দাড়ি পুর্ণ করে রেখেছে এখান থেকে ওখান পর্যন্ত ৷ এমনকি তা তীর বুক
    ভরে ফেলার উপক্রম করেছে ৷ আওফ বলেন, এর সাথে আর কী কী বর্ণনা ছিল, তা আমি
    জানি না ৷ বর্ণনাকারী বলেন, ইবন আব্বাস বলেন, জাগ্রত অবস্থায় তুমি তাকে দেখলেও এর
    চেয়ে বেশি কিছু বর্ণনা করতে পারতে না ৷ মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহ্ইয়া আয্ যুহালী আবদুর
    রাজ্জাক যুহরী সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, (একবার) হযরত আবু হুরায়রা (রা)-কে
    রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর ণ্দহ-গঠানর বিবরণ জিজ্ঞেস করা হল ৷ তখন তিনি বললেন, তিনি
    সর্বোত্তম ও সর্বাধিক সুন্দর ছিলেন ৷ তিনি ছিলেন মধ্যম আকৃতির চেয়ে একটু দীর্ঘকায়, দুই
    র্কাধের মাঝে বেশ দুরতু সম্পন্ন প্রশস্ত ও মসৃণ ণণ্ডের অধিকারী, ঘন কাল চুল, সুরমা রাঙা
    চোখ, পাপড়িপুর্ণ চোখের পলক, পা দিয়ে যখন ভুমি মাড়াতেন তখন গোটা পায়ের তালু দ্বারা
    মাড়াতেন, পায়ের তালুতে তেমন কোন শুন্যস্থান ছিল না ৷ তিনি যখন তার পরিধেয় চাদৱ
    র্কাধের উপর রাখতেন, তখন মনে হত তা ঢালাইকৃত রুপা ৷ তিনি যখন হাসতেন, তখন তার
    হাসির দ্যুতিময় আভা ছড়িয়ে পড়ত ৷ তার আগে বা পরে তার মত কাউকে আমি দেখিনি ৷
    মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহ্ইয়া এ হাদীসখানি অন্য একটি অবিচ্ছিন্ন (মুত্তাসিল) সনদে বর্ণনা
    করেছেন৷ ইসহাক ইবন ইব্রাহীম হযরত আবু হ্বায়রা সুত্রে তিনি পুর্ববর্তী বিওয়ায়াতটির
    প্ ন্যায় বর্ণনা করেছেন ৷ এছাড়া আঘৃ যুহ্লী ইসহাক ইবন রাহ্ওয়ায় আবু হুরায়রা সুত্রে
    বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি (আবু হ্বায়রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দেহকে যেন রুপা ঢালাই
    করে তৈরি করা হয়েছিল ৷ ঈষৎ কৌকড়ানাে চুল, প্রশস্ত উদয়, উর্ভয় কাধের মধ্যে বেশ ব্যবধান
    ছিল এবং জোড়ার হাড় বেশ মেটি৷ ছিল ৷ গোটা পায়ের পাতা দিয়ে ভুমি মাড়াতেন ৷ সামনে
    তাকালে গোটা দেহ ঘুরিয়ে দেখতেন অনুরুপ পিছে ফিরে তাকালে গোটা দেহ ফিরিয়ে
    তাকাতেন

    আবদুল মালিক হযরত আবু হুরায়রা সুত্রে ওয়াকিদী হাদীসখানি বর্ণনা করেছেন ৷
    তিনি (আবু হুরায়রা) বলেন, ৱাসুলুল্পাহ্ (মা) ছিলেন কোমল ও মাংসল (ভরাট) হাত-পায়ের

    তালুর অধিকারী, বিশাল ইে পায়ের গোছা, ইে বাহু ও দুই র্কাধ এবং উভয় র্কাধের মাঝে বেশ
    দুরত্ব, প্রশস্ত বক্ষ, ঈষৎ কোকড়৷ নো চুল, পাপড়িপুর্ণ চোখের পলক, সুন্দর মুখ ও দাড়ি, পরিপুর্ণ
    কর্ণদ্বয়, মধ্যম আকৃতির পুরুষ, অতি লম্বাও নন, বেটেও নন, সুন্দর৩ তম গাত্রবর্ণ, সর্ব শরীরে
    সামনে তাকাতেন এবং সর্ব শরীরে পিছু হটতেন ৷ আমি আগে বা পরে তার মত কাউকে
    দেখিনি এবং তার মত কারো কথা শুনিনি ৷ হড়াফিয আবু বকর আল বায়হাকী আবু আবদুর
    রহমান সুত্রে জনৈক বর্ণনাকারীর বরাত দিয়ে বলেন, আমার দাদা আমার নিকট বর্ণনা
    করেন, আমি মদীনায় উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম, সে সময় আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দর্শন লাভ

    হ্ক্রান্ত হাদীস স্মরণ করছিলাম, হঠাৎ সুঠামদেহী, বিশাল বাবরি, সরু নাক ও সরু ভ্রাদ্বয়
    বিশিষ্ট এক ব্যক্তি দেখলাম, তার বুক হতে নাভি পর্যন্ত প্রলম্বিত কেশরেথা, তার চুলও
    মাথাপুর্ণ ৷ এরপর তিনি আমার নিকটবর্তী হয়ে বললেন, আস্সালামু ইলাইকা

    নবী (না)-এর কেশ বা চুলের বিবরণ

    বুখারী ও মুসলিমে ইবন আব্বাস সুত্রে ণ্যুহ্রী বর্ণিত হাদীস থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, ইবন
    আব্বাস (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যে বিষয়ে আদিষ্ট না হতেন, সে বিষয়ে আহলে
    কিতাবদের অনুসরণ পছন্দ করতেন ৷ আর আহলে কিতাবরা তাদের চুলে সিথি না কেটে
    অদ্বৈচড়াত ৷ তাই রাসুলুল্লাহ্ (সা) প্রথম দিকে সিথিবিহীন চুল আচড়াতেনঃ, তারপর পরব৩
    সিথি কাটতে ন ৷ ইমাম আহমদ হাম্মাদ ইবন খালিদ সুত্রে আনাস (রা) থেকে বর্ণন৩া
    করেন যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বেশ কিছুকাল তার মাথার সামনের চুল সিথিবিহীন আচডাতেন,
    পরবর্তীতে তিনি সিথি কাটতেন ৷ এই সুত্রে এটি ইমাম আহমদের একক বর্ণনা ৷ এছাড়া
    মুহাম্মদ ইবন ইসহাক মুহাম্মদ ইবন জাফর আইশা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
    বলেন, আমি (নিজে) রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) এর মাথায় সিথি করে দিয়েছি, র্তাব মাথার চীদি বা
    মধ্যন্থল থেকে সিথি বের করেছি ৷ আর মাথার সামনের চুল৩ তার কপালে নামিয়ে দিয়েছি ৷
    ইবন ইসহাক বলেন, সর্বজন স্বীকৃত ফকীহ মুহাম্মদ ইবন জা ফর ইবন যুবায়র মন্তব্য করেন-
    এট৷ খ্রিস্টানদের বৈশিষ্ট্য, মানবজাতির মধ্যে তারাই এ বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করেছে ৷ বুখারী ও
    মুসলিমে বারা (না) থেকে একথা সাব্যস্ত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বাববি চুল তার ন্র্কাধ
    ছুয়ে যেত ৷ এ ছাড়া সহীহ্ বুখারীতে তার ও অন্যদের থেকে এ বর্ণনাও এস্যেছ যে ,ভীর এই
    বাববি তার অর্ধ কান পর্যন্ত পৌছত ৷ আর এ দুই অবস্থার মধ্যে কোন বৈপরি৩ ৷ নেই ৷ কেননা
    চুল কখনও বড় হয় আবার কখনও ছোট হয় ৷ আর প্ৰতে তাক বর্ণনাকারীই৷ যা দেখেছেন সেই
    অনুযায়ী বর্ণনা করেছেন ৷ আবু দাউদ ইবন নুফায়ল আইশা (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷
    তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর মাথার চুল ওয়াফ্রার (কান পর্যন্ত বেয়ে নাম৷ চুল) চাইতে
    লম্বা এবং জুম্মার (র্কাধ স্পর্শকারী চুল) চাইতে খাটো ছিল ৷ একথা সাব্যন্ত হয়েছে যে, নবী
    (সা) বিদায় হরুজ্জর সময় তার মাথায় সব চুল মুণ্ডন করে ফেলেছিলেন ৷ আর এর একাশি দিন
    পর তিনি ইনতিকাল করেন ৷ কিয়ামত দিবস পর্যন্ত সব সময় তার প্রতি ৩আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও
    করুণ৷ বাবি বর্ষিত হোক ৷

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ রাসূলুল্লাহ্ (সা)- এর গাত্রবর্নের বিবরণ Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.