রন্সুলুন্নাহ (সা) এর জন্মের বিবরণ
আমরা পুর্বে উল্লেখ করে এসেছি যে, আবদুস মুত্তাশির পুত্র আবদুরাহকে মরেহ করার
মান্নত করে পরে আরঘোই ৰ্স্খান্ব তার পরিবর্তে একপত উট যৰেহ করেন ৷ কারণ, মহান
অল্লেস্ফো আঅপাে নির্ধারণ মোতাবেক আশুয়াংর মৈং সমগ্র আদম সঙ্কানের সরদার সর্বশেম
রাসুদ ও fl! নর্ষীর আর্বিঙ্কার পুর্বেই নির্ধারিত করে ন্নেখেহিদেন ৷ এরপর আবদুস মুতাসিম
র্তাৰে ষুৰাইশের এক মাড়াষ্ পরিবারে ষুব্দিমষ্ঠী ৰিচক্ষণ কন্য আযিনা ৰিনতে ওহৰ্ (ইবন
আরদে মড়ানড়াফ্ ইবন বাহবা)-এর সঙ্গে বিবাহ দেন ৷ তাদের মিপন্মো পর রড়াসুসুল্লাহ (সা)
আমিনার পর্তে আসেন ৷ বনাবাহন্য, ওরকো ইবন নজ্যো বোন উত্তর কিতাব রকৌকা ৰিনতে
নওফ্স আমিনার সঙ্গে মিলনের পুর্বে আব্দুল্লাহর লশাটে নুর দেখতে পেয়েছিলেন ৷ ফলে তিনি
উক্ত নুরের হেয়াে লাভ করতে উদগ্রীব হয়ে পড়েন ৷ কারণ তিনি তার ডাই-এর নিকট শুনতে
পেয়েছিলেন যে, মুহাম্মদ নামক একজন নবী আবির্ভুত হবেন এবং সে সময়টি আসন্ন ৷ তাই
তিনি আবদুল্লাহর সাথে মিলনের জন্য, মতাস্তরে বিবাহের জন্য নিজেকে পেশ করেন ৷ বিবাহের
প্রস্তাবের কথাই সমধিক প্রসিদ্ধ ৷ কিস্তু আবদুল্লাহ সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ৷ পরবর্তীতে সেই
নুর আমিনার মধ্যে স্থানান্তরিত হলে ওরাকা ইবন নওফলের বোনের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করার জন্য
আবদুল্লাহ অনেকটা বিরত বোধ করেন ৷ এবার তিনি নিজে অনুরুপ প্রস্তাব দিলে মহিলাটি বলে
এখন আর তোমাকে দিয়ে আমার কোন প্রয়োজন নেই ৷ তখন সে সৌভাপ্য থেকে বঞ্চিত
হওয়ায় অড়াক্ষেপ করে এবং অত্যন্ত উচুমানেব কয়েকটি পংক্তি আবৃত্তি করে ৷ উল্লেখ যে, এভাবে
চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার ব্যাপারটি রাসুলুল্লাহ (না)-এর কারণেই ঘৰুটছিল, আব্দুল্লাহর জন্য
নয় ৷ আল্লাহ তাআলা বলেন :
“রাসুল কাকে বানাবেন, আল্লাহ নিজেই তা ভালো জানেন ৷ ”
ইতিপুর্বে এ মর্মে একটি হাদীস উদ্ধৃত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন যে, অবৈধ
মিলনে নয় বৈবাহিক বন্ধন থেকেই তিনি জন্মলাভ করেছেন ৷
রাসুলুল্লাহ (সা) মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় তার পিতা আবদুল্লাহ ইস্তিকাল করেন ৷ এটাই
প্রসিদ্ধ অভিমত ৷ মুহাম্মদ ইবন সাদ বর্ণনা করেন যে, আইয়ুব বলেন, আবদুল্লাহ ইবন আবদুল
মুত্তাণিব কুরায়শ-এর এক বণিক কাফেলার সঙ্গে সিরিয়ার গাজা অঞ্চলে যান ৷ বাণিজ্য শেষে
ফেরার পথে মদীনা পৌছলে আবদুল্লাহ অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ ফলে তিনি তার মাতুলগােষ্ঠী বনী
আদী ইবন নাজ্জার-এর কাছে থেকে যান এবং তাদের নিকট অসুস্থ অবস্থায় এক মাস অবস্থান
করেন ৷ সঙ্গীরা মক্কা পৌছলে আবদুল মুত্তাসিব পুত্রের কথা জানতে চাইলে তারা বলে, র্তাকে
অসুস্থ অবস্থায় তার মাতুলালয়ে রেখে এসেছি ৷ খবর শুনে আবদুল মুত্তালিব তার বড় ছেলে
হারিছকে প্রেরণ করেন ৷ হারিছ মদীনায় গিয়ে দেখেন, আবদুল্লাহর ইন্তিকাল হ্য়েছে এবং
দারুন্নাবিগায় র্তাকে দাফন করা হয়েছে ৷ তখন তিনি ফিরে এসে পিতাকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত
করেন ৷ সংবাদ শুনে পিতা আবদুল মুত্তালিব ও আবদুল্লাহর ভাই-বোনেরা শোকাহত হয়ে
পড়েন ৷ রাসুলুল্লাহ (সা) তখন মায়ের গর্ভে ৷ মৃত্যুকালে আবদুল্লাহব্ল বয়স ছিল পচিশ বছর া
ওয়াকিদী বলেন, আমাদের দৃষ্টিতে আবদুল্পাহর মৃত্যুর ব্যাপারে এটিই সর্বাপেক্ষা সঠিক
অভিমত ৷ তিনি বর্ণনা করেন যে, আবদুল মুত্তালিব আব্দুল্লাহকে খেজুর আনবার জন্য মদীনা
প্রেরণ করেছিলেন ৷ সেখানে তিনি ইন্তিকাল করেন ৷
মুহাম্মদ ইবন সাদ বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্পাহ (সা)এর বয়স যখন আটাশ মাস, তখন
তার পিতা আবদুল্লাহর মৃত্যু হয় ৷ কারও কারও মতে, তখন তার বয়স ছিল সাত মাস ৷ তবে
মুহাম্মদ ইবন সাদ-এর নিজের অভিমত হলো, আবদুল্লাহ মৃত্যুকালে রাসুলুল্লাহ (সা) মাতৃগর্ভে
ছিলেন ৷ যুবায়র ইবন বাক্কার-এর বর্ণনা মতে পিতার মৃত্যুকান্সে রাসুলুল্লাহ (সা) ছিলেন দুই
মাসের শিশু ৷ মায়ের মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল বার বছর আর যখন তার দাদার মৃত্যু হয়,
তখন তিনি আট বছরের কিশোর ৷ মৃত্যুকালে দাদা আবদুল মুত্তাশিব চাচা আবু তালিবের হাতে
তীর লালন-পালনের তার অর্পণ করে যান ৷ ওয়াক্ষিদী ও তার লিপিকার (ইবন সাদ) পিতার
মৃত্যুর সময় রাসুলুল্পাহ (সা) মায়ের গর্ভে ছিলেন ৷ এটিই এর্তীমত্বের উর্ধ্বতন স্তর ৷ এমর্মে
হাদীছ পুর্বেই উদ্ধৃত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, “আমি গর্ভে থাকাবন্থায় আমার মা
স্বপ্নে দেখেন যে, যেন তার মধ্য থেকে একটি নুর বের হয়ে সিরিয়ার রাজপ্রাসাদসমুহ
আলোকিত করে ফেলেছে ৷ মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন, আমিনা বিনতে ওহব নিজে বলতেন
যে, রাসুলুল্লাহ (সা) তার গর্ভে থাকাকালে স্বপ্নে কে যেন তাকে বলে যায় , তুমি এই উম্মতের
সরদারকে গর্ভে ধারণ করেছ ৷ তিনি ভুমিষ্ঠ হলে তুমি বলবে, একে আমি সকল হিংসুকের অনিষ্ট
ও যাবতীয় বিপদাপদ থেকে এক আল্লাহর আশ্রয়ে সােপর্দ করছি ৷ কারণ প্ৰশংসার্দু আল্লাহর
নিকট তিনি মর্যাদাবান ৷ র্তার সঙ্গে এমন একটি নুর বের হবে, যা সিরিয়ার রাজপ্রাসাদ সমুহকে
আলোকিত করে ফেলবে ৷ ভুমিষ্ঠ হলে তুমি তার নাম রাখবে মুহাম্মদ, তাওরাতে তার নাম
আহমদ ৷ আকাশ ও পৃথিবীর অধিবাসীরা তার প্রশংসা করে ৷ ইনজীলেও তার নাম আহমদ ৷
আর কুরআনে তার নাম মুহাম্মদ ৷
আমিনার স্বপ্ন সম্পর্কিত এই দুটি হাদীস প্রমাণ করে যে, তিনি স্বপ্নে দেখেছিলেন যেন তার
মধ্য হতে এমন একটি নুর বের হয়েছিল, যাতে সিরিয়ার প্রাসাদসমুহ আলোকিত হয়ে যায় ৷
অতঃপর নবী করীম (না)-এর জন্মের পর তিনি এই স্বপ্নের বাস্তবরুপ প্রত্যক্ষ করেন ৷
মুহাম্মদ ইবন সাদ (র) ইবন আব্বাস (বা) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমিনা বিনতে ওহব
বলেছেন মুহাম্মদ আমার গর্ভে থাকাবন্থায় প্রসব পর্যন্ত তার জন্য আমি বিন্দুমাত্র কষ্ট অনুভব
করিনি ৷ প্রসবের সময় তার সঙ্গে একটি নুর বের হয়, যা পৃথিবীর পুর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সব
আলোকিত করে তোলে ৷ আমার মত থেকে বের হওয়াকালে তিনি উভয় হাতে মাটিতে ভর
দেন ৷ অতঃপর হাতে এক মুঠাে মাটি নিয়ে আসমানের দিকে উচু করেন ৷ কারো কারো মতে
রাসুলুল্পাহ (সা) দুই ছুাটুতে ভর করে হামাগুড়িরত অবস্থায় তুমিষ্ঠ হন ৷ আর তীর সঙ্গে এমন
একটি আলো নির্গত হয় যে, তার আলোতে সিরিয়ার রাজপ্রাসাদ ও হাট-বাজার সব আলোকিত
হয়ে যায় ৷ আমিনা বলেন, সেই আলোতে বসরার উটের ঘাড;সমুহ দৃশ্যমান হয়ে উঠে ৷ তখন
শিশু নবীর মাথা আসমানের দিকে উথিত ছিল ৷ বায়হাকী উছমান ইবন আবুল আস থেকে
বর্ণনা করেন যে , তিনি বলেন, আমার যা আমাকে বলেন যে, আমিনা ৰিনতে ওহব শিশু নধীকে
প্রসবের সময় তিনি ঘটনাহলে উপস্থিত ছিলেন ৷ তিনি বলেন, যে রাতে আমিনার ঘরে আমি নুর
ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাইনি ৷ আমি দেখতে পেলাম, আকাশের তারকাগুলো যেন এসে
আমার পায়ের ওপর পড়ছে ৷
কাজী ইয়ায আবদুর রহমান ইবন আওফ এর মা শিফা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি
শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা) দুই হাতে ভর করে ভুমিষ্ঠ হয়ে কেদে ওঠেন ৷ তখন আমি শুনতে
পেলাম, কেউ একজন বসে উঠলেন : “আল্লাহ আপনাকে রহম করুন” ৷ আর তার সঙ্গে এমন
এক আলো উদ্ভাসিত হয় যে, তাতে রোমের বৃাজপ্রাসাদসমুহ দৃশ্যমান হয়ে ওঠে ৷
মুহ্াষ্মঙ্গ ইবন ইসহ্াক বলেন, রাসুলুল্পাহ (সা) তুমিষ্ঠ হওয়ার পর আমিনা তার দাসী
মারফত আবদুল মুত্তালিবের নিকট খবর পাঠান ৷ স্বামী আবদুল্লাহ তো আমিনার অন্তঃসত্ত্বা
অবন্থায়ই মারা গিয়েছিলেন ৷ কথিত আছে যে, আবদুল্লাহ যখন মৃত্যুবরণ করেন , রাসুলুল্লাহ
(না) তখন আটাশ মাসের শিশু ৷ আর কোনটা সঠিক, তা আল্পাহই ভালো জানেন ৷
দাসী গিয়ে আবদুল মুত্তালিবকে বলে যে, দেখে আসুন, আপনার একটি নাতি হয়েছে ৷
আবদুল মুত্তালিব আমিনার নিকট আসলে আমিনা সব ঘটনা খুলে বলেন ৷ এই সন্তানের ,
ব্যাপারে তিনি স্বপ্নে কি দেখেছিলেন এবং তার কি নাম রাখতে আদিষ্ট হয়েছেন, তাও তিনি
ব্যক্ত করেন ৷ সব শুনে আবদুল মুত্তালিব রাসুলুল্পাহ (না)-কে নিয়ে কাবার অভ্যন্তরে হোবল
এর কাছে গিয়ে দাড়িয়ে তার জন্য দোয়া করেন এবং মহান আল্লাহর সমীপে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন
করে বলেন :
— সকল প্রশংসা সেই আল্লাহর, যিনি আমাকে পবিত্র আস্তিন এর অবািকারী এই শিশুটি
দান করেছেন ৷ আমার বাসনা, দােলনায় বসেই এই শিশু আর সব শিশুর ওপর কর্তৃতু করবে ৷
রুকন বিশিষ্ট ঘরের নিকট আমি এর জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করছি ৷ এই শিশুকে আমি যুবকদের
আদর্শরুপে পরিণত বয়সে দেখতে চাই ৷ সকল অনিষ্ট ও হিংসুকের ৰিদ্বেষ থেকে এর জন্য আমি
আশ্রয় চাই ৷ আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি উদ্ধত ফণাবিশিষ্ট চক্ষুবিহীন সর্প থেকে ৷ তুমিই (হে
আমার প্রিয় নাতি !) কুরআনে-মহান গ্রন্থসমুহে আহমদ নামে আখ্যায়িত এবং লোকজনেব
রসনড়ায় তোমার নামটি লিপিবদ্ধ রয়েছে ৷
বায়হাকী বর্ণনা করেন, ইবন আব্বাস (বা) তার পিতা আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন
যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) খ তনাকৃত ও নাড়ি কর্ভিত জন্মগ্রহণ করেন দেখে তার দাদা
আবদুল মুত্তান্সিব মুগ্ধ হয়ে যান এবং বলেন, উত্তরকালে আমার এই সত্তানটি যশস্বী হ্বে ৷
বাস্তবেও তাই হয়েছে ৷ এর বিশুদ্ধতা সন্দেহমুক্ত নয় ৷ অনুরুপ একটি বর্ণনা আবু নুয়ায়মেরও
রয়েছে ৷ কেউ কেউ একে বিশুদ্ধ এমন কি মুতাওয়াতির পর্যন্ত বলেছেন ৷ কিত্তু তাও
সন্সেহ্মুক্ত নয় ৷ ইবন আসাকির বর্ণনা করেন যে, আনা’ঞ (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা)
বলেছেন : “আল্লাহর নিকট আমার মর্যাদার একটি হলো এই যে, আমি খতনাকৃত অবস্থায়
জন্মলড়াভ করেছি এবং আমার লজ্জা স্থান কেউ দেখতে পড়ায়নি ৷”
হাফিজ ইবন আসাকির আবু বাকরাহ থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেন, জিবরীল (আ)
যখন নবী করীম (না)-এর বক্ষ বিদারণ (সীনা চাক) করেন, তখন তিনি তার খতনাও করেন ৷
এটা নিতান্ত গরীব পর্যায়ের ৷ অন্য এক সুত্রে বর্ণিত আছে, নবী করীম (না)-এর দাদা আবদুল
মুত্তালিব তার খাতনা করেন এবং সেই উপলক্ষে কুরাইশদেরকে দাওয়াত দিয়ে আখ্যায়িত
করেন ৷
বায়হাকী আবুল হাকাম তানুখী থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, কুরাইশদের সমাজে
নিয়ম ছিল যে, কোন সন্তান জন্ম হলে তারা নবজাতককে পরবর্তী ভোর পর্যন্ত কতিপয় কুরাইশ
মহিলাদের নিকট দিয়ে রাখত ৷ শিশুটিকে তারা পাথর নির্মিত ডেপ দিয়ে ঢেকে রাখতো ৷
রাসুলুল্লাহ (না) ভুমিষ্ঠ হলে নিয়ম অনুযায়ী আবদুল মুত্তালিব র্তাকেও সেই মহিলাদের হাতে
অর্পণ করেন ৷ মহিলারা তাকেও ডেগ দিয়ে ঢেকে রাখে ৷ ভোর হলে এসে তারা দেখতে পায়
যে, ডেগ ফেটে দ্বিখণ্ডিত হয়ে আছে আর শিশু মুহাম্মদ দু’চোখ খুলে বিক্ষারিত নয়নে আকাশের
দিকে তাকিয়ে আছেন ৷ মহিলারা দৌড়ে আবদুল মুত্তালিবের নিকট এসে বলে, কি আশ্চর্য,
এরুপ নবজাতক তো আমরা কখনও দেথিনি ৷ ভোরে এসে আমরা দেখতে পেলাম যে, ডেগ
ফেটে দ্বিখণ্ডিত হয়ে আছে আর সে চোখ র্দু’টো খুলে বিহ্মারিত নয়নে আকাশের দিকে তাকিয়ে
আছে! শুনে আবদুল মুত্তালিব বললেন, তাকে তোমরা হেফাজত কর, আমি আশা করি,
ভবিষ্যতে এই শিশু যশস্বী হয়ে কিৎবা বললেন, যে প্রচুর কল্যাণের অধিকারী হবে ৷ সপ্তম দিনে
আবদুল মুত্তালিব তার আকীকা করেন এবং কুরাইশদেরকে দাওয়াত করেন ৷ আহার শেষে
মেহমানরা বলল, আবদুল মুত্তালিব! যে সন্তানের উপলক্ষে আজকের এই নিমন্ত্রণের আয়োজন,
তার নাম কি রাখলে? আবদুল মুত্তালিব বললেন, আমি তার নাম মুহাম্মদ রেখেছি ৷ শুনে তারা
আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (২য় খণ্ড) ৬২-
বলল, পরিবারের অন্যদের নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম রাখলেন না যে ৷ আবদুল মুত্তালিব
বললেন, আমার ইচ্ছা, আসমানে স্বয়ং আল্লাহ আর যমীনে তার সৃষ্টিকুল তার প্রশংসা করবেন ৷
ভাষাৰিদগণ বলেন, মুহাম্মদ কেবল র্তাষ্ককই বলা হয়ে থাকে, যিনি যাবতীয় মহৎ গুণের ধারক ৷
যেমন : করি বলেন-
— দুর হয়ে যাও, তুমি অভিশাপকে অস্বীকার করেছ ৷ আমি আমার গ্রাকে সর্বগুণে
গ্রুণৎসিত, সম্মানিত, আদরে শাসিত মর্যাদাবান মুহ্ষ্মদের উদ্দেশ্যে পরিচালিত করেছি ৷
কোন কোন আদিম বসেন,আল্লাহ ইনহাম করেছিলেন যে, তোমরা এর নাম রাখ মুহাম্মদ ৷
কারণ, এই শিশুর মধ্যে যাবতীয় মহৎগুণ বিদ্যমান ৷ যাতে নামে ও কাজে মিল হয় এবং যাতে
নাম ও নামকরণ আকারে ও তাংপর্যে সাযুজ্যপুর্ণ হয় ৷ যেমন নবীজি (না)-এর চাচা আবু তালিব
বলেন :
,মর্যাদা দানের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তার জন্য নিজের নাম থেকে নাম যের করে এসেছেন ৷
আরশের অধিপতি আল্লাহর নাম মাহমুদ আর ইনি মুহাম্মদ ৷
কারও কারও মতে এই পংক্তিটি হাসৃসান ইবনে সাধিত-এর রচিত ৷
রাসুলুল্লাহ (না)-এর নামসমুহ এবং তার শামায়িল তথা অবয়বের বর্ণনা, পুত-পবিত্র,
নবুওতেৱ প্রমাণাদি ও মর্যাদার বিবরণ সীরাত অধ্যায়ের শেষে উল্লেখ করব, ইনশাআল্লাহ ৷
বায়হাকী আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিব থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি
একদিন বললাম , ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার নবুওতের একটি আলামত আমাকে আপনার দীন
কবুল করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল ৷ দােলনড়ায় থাকতে আমি আপনাকে দেখেছি যে, আপনি চাদের
সঙ্গে কথা বলছেন এবং নিজের আঙ্গুল দিয়ে চাদের প্রতি ইংগিত করছেন ৷ আপনি যেদিকে
ইশারা করতেন র্চাদ সেদিকেই ঝুকে পড়তাে ৷ জবাবে নবী কবীম (সা) বললেন, “আমি তখন
র্চাদের সঙ্গে কথা বলতাম এবং র্চাদ আমার সঙ্গে কথা বলত্তো এবং আমার কান্না ভুলিয়ে দিত ৷
আর আমি আরশেৱ নিচে চাদের সিজদা করা কালে তার পতনের শব্দ শুনতে পেতাম ৷” রাবী
বলেন, এ বর্ণনার রাবী একজন মাত্র আর তিনি অজ্ঞাত পরিচয় ৷
রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর জন্মের রাতে সংঘটিত
অলৌকিক ঘটনাবলী
রাসুলুল্লাহ (সঃ) যে রাতে তুমিষ্ঠ হন, যে রাতে অসংখ্য মুর্তির উপুড় হয়ে পড়া ও স্থানচ্যুত
হওয়া, যবশা অধিপতি নাআশীর মোঃ ঘটনার বিবরণ, জন্মের সময় রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর সঙ্গে
নুর বের হয়ে তাতে সিরিয়ার প্রাসাদসমুহ আলোকিত হয়ে যাওয়া; রাসুল (না)-এর মাতুণর্ত
থেকে হামাগুড়ি দিয়ে আকাশপানে মাথা ডুবে বের হয়ে আসা, ডেণ ফেটে শিংধিত হয়ে
যাওয়া, রাসুলুল্লাহ (সঃ) যে বয়ে জন্মনাত করেন, যে য্যাটি আলোকিত হয়ে যাওয়া এবং
নজ্যোড়াঙ্গি মানুষের নিকটবর্তী হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ঘটনার বিবরণ আমরা ইতিপুর্বে অজ্ঞাত
স্থান থেকে অিনের কথা বলা অধ্যায়ে উল্লেখ করে এসেছি ৷
সুহায়শী বর্ণনা করেন যে, ইবশীস জীবনে চারবার বিলাপ করে : ১ অভিশপ্ত হওয়ার
সময় ৷ ২ জান্নাত থেকে বিতাড়িত হওয়ার সময় ৷ ৩ রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর জন্মের সময় এবং
৪ সুরা ফাতিহা নাযিল হওয়ার সময় ৷
মুহাম্মদ ইবন ইসহাক হযরত অড়ায়েশা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, এক
ইহুদী মক্কায় বাস করত ৷ যে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করতো ৷ রাসুলুল্পাহ (সা) যে রাতে ভুমিষ্ঠ
হন যে রাতে কুরইিশ এর এক মজলিসে সে বলল, আজ রাতে কি তোমাদের মধ্যে কারও
কোনও সন্তানের জন্ম হয়েছে? জবাবে তারা বলল, আল্লাহর কসম ! আমরা এ রকম কিছুই জানি
না ৷ ইহুদীটি বলল, আল্লাহ আকবার ! তোমাদের অজাম্ভে ঘটে থাকলে তো কোনও অসুবিধা
নেই ৷ তবে তোমরা খোজ করে দেখ এবং যা বলছি স্মরণ রাখ ৷ এ রাতে আখেরী নবী ভুমিষ্ঠ
হয়েছেন ৷ তার দুই র্কাধের মধ্যবর্তী স্থানে একটি চিহ্ন আছে ৷ তাতে ঘোড়ার কেশরের মত
একগুচ্ছ চুল আছে ৷ দুরাত তিনি দুধ পান করবেন না ৷ কারণ একটি দুষ্ট জিন তার মুখে আঙ্গুল
ঢুকিয়ে দিয়েছে ৷ ফলে তাকে দুধ পান থেকে নিবৃত্ত রাখা হয়েছে ৷
শুনে লোকজন মজলিস ছেড়ে উঠে চতুর্দিক ছড়িয়ে পড়ে ৷ ইহুদীর কথায় তারা হতভম্ভ
স্তঙ্কিত ! ঘরে গিয়ে প্রত্যেকে তারা ঘরের লোকদেরকে এ খবরটি শুনায় ৷ শুনে তারা বলে উঠে,
হীড়া , আল্লাহর শপথ ! আব্দুল্লাহ ইবন আবদুল মুত্তালিবের একটি পুত্র সন্তান তুমিষ্ঠ হয়েছে ৷ তারা
তার নাম ব্লেখেছে মুহাম্মদ ৷ এবার তারা ইহুদীর কথা ও এই নবজড়াতক সম্পর্কে কানাঘুষা করতে
করতে ইহুদীর নিকট যায় এবং তাকে এ খবরটি জানায় ৷ ইহুদীটি বলল, তোমরা আমাকে নিয়ে
চল, আমি তাকে একটু দেখব ৷ লোকেরা ইহুদীকে নিয়ে আমেনার ঘরে গিয়ে তাকে বলল,
তোমার পুত্রটিকে একটু আমাদের কাছে দাও ৷ আংমনা পুত্রকে তাদের কাছে দিলে তারা তার