আর মন্তক ছোদ্নকারী অলংকার খচিত ঝকঝকে সাদা ধারাল তরবারি দ্বারা আঘাত করা
ব্যতীত কোন উপায় ছিল না ৷
আর পখভ্রপথভ্রষ্ট উত যাকে আমরা মাটির সাথে মিশিয়ে দিই এবং শায়বাকে অন্ধকুপের
মধ্যে নিহত দের মাঝে উপুড় করে নিক্ষেপ করি ৷
তাদের যে সব মিত্রর৷ মাটির সাথে মিশে গিয়েছে, আমরও সেই সাথে মাটির সাথে মিশে
গিয়েছে ৷ ফলে বিলাপকারিণীদের আমার আন্তীন আমরের শোকে ছিড়ে-ফেটে গিয়েছে ৷
আস্তীন বিদীর্ণকারী এসব মহিলা হচ্ছে ফিহ্র গোত্রের শাখা লু-আই ইবন পানির-এর স্ল্লাম্ভ
মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত ৷
এরা এমন এক সম্প্রদায়ের লোক, যারা নিজেদের ভ্রান্তপথে চলর কারণে নিহত হয়েছে ৷
তারা শেষ পর্যন্ত ঝাণ্ডা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে এবং পরাজয়বরণ করা পর্যন্ত তাদের
সাহায্যার্থে কেউ এগিয়ে আসেনি ৷
তাদের সে ঝাণ্ডা ছিল ভ্রষ্টতা ৷র প্রতীক ৷ আর তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল স্বয়ং ইবলীস ৷ অবশেষে
সে তাদের সাথে বিশ্ব৷ সঘাতকতা করে ৷ যে খবীছ, বিশ্বাসঘ৷ ৷তকতা করা তার নীতি ৷
যখন সে মুসলমানদের সাহায্যার্থে ফেরেশত ৷দের অবতরণ স্পষ্টভাবে দেখতে পেল, তখন
সে বলল, আমি তোমাদের থেকে পৃথক হয়ে গেলাম, আজ আর ধৈর্য-ধারণ করার ক্ষমত ৷
আমার সেই ৷
কেননা, আমি যা দেখতে পা ৷চ্ছি তােমরা তা দেখছো না ৷ আমি আল্লাহর শা ৷স্তির ভয় করছি,
কারণ, আল্লাহ পরাক্রমশালী ৷
সে তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে, আর তারা তাতে আটকা পড়েছে ৷ সে যে
কথাটি তাদেরকে জানায়নি, ঐ কথাটি সে ভাল করেই জানতে৷ ৷
যে প্ৰভাতকালে তারা বদরের ক্যুপ পৌছায়, তখন তাদের সংখ্যা ছিল এক হাযার ৷ অন্য
দিকে আমাদের দলে ছিল শুভ্র রং বিশিষ্ট নব উটের ন্যায় তেজােদীপ্ত তিনশ’ যোদ্ধ৷ ৷
আর আমাদের মাঝে ছিল আল্লাহর প্রেরিত সৈনিকগণ ৷ র্তার৷ বদরে আমাদেরকে শত্রুদের
মুকাবিলায় সাহায্য করছিলেন ৷ এরপর এ কথা সর্বত্র আলোচিত হতে থাকে ৷
জিবরাঈল ফেরেশতা আমাদের পতাকড়াতলে থেকে তাদেরকে এক সংকীর্ণ স্থানে এমন
কঠে৷ ৷র আঘা ৷ত হানেন যে, তাদের উপর দিয়ে মৃতু ভ্যুর হিম শীতল বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে ৷
এই কবিত ৷র জবাবে রচিত হারিছ ইবন হিশামের কবিতার কথা ইবন ইসহাক উল্লেখ
করেছেন ৷ আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে তা বাদ দিয়েছি ৷
হযরত আলী (না)-এর কবিতা
বদর যুদ্ধ সম্পর্কে আ ৷লী ইবন আবৃত তালিব নিম্নলিখিত কবিতা রচনা করেন ৷ অবশ্য ইবন
হিশাম একে অস্বীকার করেছেন ৷
অর্থ : তুমি কি লক্ষ্য করনি, আল্লাহ্ তার রাসুলের কত কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন ? যেমন
কঠিন পরীক্ষা নেয়া হয় উচ্চ পদাধিকারী ও উচ্চ মর্যাদার আসীন ব্যক্তির ৷
যে পরীক্ষার দ্বারা কাফিরদের নামিয়ে দেয়া হয়েছে লাইনার স্থলেৰু ৷ তাই যারা বন্দী হয়েছে
ও নিহত হয়েছে তারা লাঞ্চুনার সম্মুখীন হয়েছে ৷
এই পরীক্ষার মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ্র প্রতি আল্লাহর সাহায্য মহীয়ান রুপ লাভ করেছে ৷ আর
রাসুলুল্লাহ্ তৌ ইনসাফের সাথেই প্রেরিত হয়েছেন ৷
তিনি আল্লাহ্র পক্ষ হতে এমন এক কিতাব নিয়ে এসেছেন, যা হক ও বাতিলের মধ্যে
পার্থক্য করে দেয় এবং জ্ঞানী লোকদের নিকট তার আয়াতগুলাে অতি সুস্পষ্ট ৷
কিছু লোক এই কিতাবের উপর ঈমান এন্যেছ ও বিশ্বাস স্থাপন করেছে ৷ এর ফলে
আল্লাহ্র রহমতে তারা তাদের শক্তিকে সংহত করতে সক্ষম হয়েছে ৷
পক্ষান্তরে কিছু লোক তা অস্বীকার করেছে ৷ তাই তাদের অন্তর বক্র হয়ে গেছে ৷ ফলে
আরশের অধিপতি তাদের বিভ্রান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন ৷
তিনি বদরের দিন তার রাসুলকে শত্রুদের উপর বিজয়ী করেছিলেন ৷ আর বিজয়ী
করেছিলেন এমন এক ক্ষিপ্ত দলকে যাদের কাজকর্ম ছিল অতি উত্তম ৷
তাদের হাতে ছিল হালকা সাদা তরবারি, যা দিয়ে তারা শত্রুদের উপর হামলা চালায় ৷
তারা এ তরবারিণ্ডালা নতুনভাবে শানিয়ে ও ধার দিয়ে নিয়েছিল ৷
এ সব তরবারি দিয়ে তারা শত্রুপক্ষের বহু জড়াত্যাভিমানী বীর সেনা ও শৌর্য-বীর্যের
অধিকারী যুবকদেরকে ভুপাতিত করে ৷
তাদের শোকে বিলাপকারিণী মহিলারা অশ্রু বিসর্জন করেছে ৷ এ সব মহিলা ছোট ও বড়
আকারে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ন্যায় অশ্রুবন্যা প্রবাহিত করেছে ৷
বিলাপকারিণী মহিলারা পথভ্রষ্ট উতবা, তার পুত্র ও শায়বা এবং আবু জাহলের মৃত্যুবার্তা
ঘোষণা করে বিলাপ করে যাচ্ছে ৷
বিলাপকারিণীরা ঘোড়া লোকটির জন্যে বিলাপ করছে এবং ইবন জাদআনও তাদের
অন্তর্ভুক্ত ৷ এ সব মহিলা শোকের কাল পোশাক পরিহিতা এবং তাদের ভারাক্রাত হৃদয়ের চিহ্ন
সুস্পষ্ট ৷
শত্রুদের মধ্য থেকে এমন একটি দল তুমি বদরকুপে দেখতে পাবে, যারা ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে
রণ-কুশলী ও দুর্ডিংক্ষর সময় সাহায্যকারী ৷
কেউ তাদেরকে ভ্রষ্টপথের দিকে আহ্বান করেছে ৷ আর তারাও সে ডাকে সাড়া দিয়েছে ৷
ভ্রষ্টপথে চলার নানাবিধ সুত্র ও উপায়-উপকরণ আছে, যেগুলো সেদিকে যাওয়ার জন্যে খুবই
আকর্ষণীয় ৷
অবশেষে তারা সীমালংঘন করে ও আর্তনাদ করে জাহান্নামের অতল গহ্ববে তলিয়ে
গেছে ৷
এই কবিতার জবাবে লিখিত হারিছের কবিতা ইবন ইসহাক তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন ৷
কিন্তু আমরা এখানে তার উল্লেখ থেকে বিরত থাকলাম ৷
কাআব ইবন মালিকের কবিতা
বদর যুদ্ধ সম্পর্কে কাব ইবন মালিক নিম্নলিখিত কবিতা রচনা করেন ৷
অর্থ : আমি আল্পাহ্র ফায়সড়ালায় চমৎকৃত ৷ তিনি যা ইচ্ছা করেন তা বাস্তবায়ন করতে
সক্ষম ৷ আল্পাহ্কে বাধ্য করার শক্তি কারও সেই ৷
বদরের দিনে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সীমালংঘনকারী এক সম্প্রদায়ের মুকাবিলা
করি ৷ আর সীমালংঘনকারীরা মানুষের সাথে জুলুম-অত্যাচারের নীতি অবলম্বন করে থাকে ৷
তারা যে দিন সৈন্যসামন্ত একত্রিত করেছিল এবং আশ-পাশের লোকদেরও যুদ্ধে শরীক
হওয়ার জন্যে আহ্বান জানিয়েছিল ৷ ফলে তাদের দলে সৈন্যসংখ্যা অনেক বেশী হয়ে যায় ৷
বনু কাআব ও বনু আমির সহ সকলেই আমাদের দিকে এগিয়ে আসে ৷ আমরা ছাড়া আর
কেউ তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবন্তু ছিল না ৷
আর আমাদের মাঝে রয়েছেন আল্লাহ্র রাসুল তার চারপাশে আছে আওস গোত্রের লোক
-যারা ছিল রাসুলের জন্যে দুর্গের ন্যায় শক্তিশালী ও সাহায্যকারী ৷
তার পতাকা তলে রয়েছে বনু নাজ্জারের দল ৷ হালকা ও সাদা বর্ম পরিধান করে তারা ধুলি
উড়িয়ে সম্মুখে অগ্রসর হচ্ছে ৷
আমরা যখন তাদের মুখোমুখি হই, তখন আমাদের প্রতিটি মুজাহিদ তার সাথীকে উৎসাহ
যােপায় ও দৃঢ়পদে অবস্থান করে ৷
আমরা সাক্ষ্য দিই যে, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন প্রভু নেই এবং আল্লাহ্র রাসুল সত্য নিয়ে
জয়ী হন ৷
তখন সাদা ও হালকা তরবারি খাপ থেকে বের করা হল ৷ দেখে মনে হচ্ছিল তা যেন
অগ্নিশিখা ৷ উত্তোলনকারী যেন তোমার দৃই চোখের সামনে নড়াড়াচাড়া করে চোখ ঝলসে দিঙ্গে ৷
এসব তরবারি দিয়ে আমরা তাদের দলকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছি ৷ ফলে তারা ছত্রতংগ হয়ে
পড়ে এবং যারা তাদের মধ্যে উদ্ধত, তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ৷