Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ২ » হযরত ঈস্য (আ) কে আসমানে উঠিয়ে নেয়ার বর্ননা

হযরত ঈস্য (আ) কে আসমানে উঠিয়ে নেয়ার বর্ননা

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • হযরত ঈসা (আ) কে আসমানে উঠিয়ে নেয়ার বর্ণনা

    আল্লাহ তআিলা কতৃক ঈসা (আ) কে রক্ষা এবং ইয়াহুদী ও নাসারাদের
    তান্ক শুলে চড়াৰার মিথ্যা দাবি প্রসঙ্গ

    এ প্রস গে আল্লাহর বাণী৪

    এবং তারা চক্রান্ত করেছিল, আল্লাহও কৌশল করেছিলেন, আল্লাহ কৌশলীদের শ্রেষ্ঠ ৷

    স্মরণ কর, যখন আল্লাহ বললেন, “হে ঈসা ! আমি তোমার কাল পুর্ণ করছি এবং আমার নিকট

    তোমাকে তুলে নিচ্ছি এবং যারা কুযহ্বী করেছে তাদের মধ্য হতে তোমাকে পবিত্র করছি ৷ আর

    তোমার অনুসারীদেরকে কিয়ড়ামত পর্যন্ত কাফিরদের উপর প্রাধান্য দিচ্ছি ৷ অতঃপর আমার কাছে

    তোমাদের প্রত্যাবর্তন ৷ তারপর যে বিষয়ে তোমাদের মতাম্ভর ঘটছে আমি তা মীমাংসা করে
    দিব ৷ ” (আলে-ইমরান : ৫৪ ৫৫)

    অৰুল্লাহ্ আরও বলেন০ ং

    এবং তারা লানতগ্রস্ত হয়েছিল তাদের অংগীকার তংগের জন্যে, আল্লাহর আয়াতকে

    প্রত্যাখ্যান করার জন্যে ,নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার জন্যে এবং আমাদের হৃদয়
    আচ্ছাত,দি তাদের এই উক্তির জন্যে ৷ বরং তাদের কুফরীর কারণে আল্লাহ তাতে মােহর মেরে
    দিয়েছেন ৷ সুতরাং তাদের অল্প সং ×থ্যাক লোকই বিশ্বাস করে ৷ এবং তারা লা’নতগ্রস্ত হয়েছিল
    তাদের কুফরীর জন্যে ও মারয়ামের বিরুদ্ধে গুরুতর অপবাদেব জন্যে ৷ আর আমরা আল্লাহর
    রাসুল মারয়াম-তনয় ঈস৷ মসীহ্কে হত্যা করেছি তাদের এই উক্তির জন্যে ৷ অথচ তারা
    তাকে হত্যা করেনি, ক্রুশ্াৰিদ্ধও করেনি, কিন্তু তাদের এরুপ বিভ্রম হয়েছিল ৷ যারা তার সম্বন্ধে
    মতভেদ করেছিল, তারা নিশ্চয়ই তার সম্বন্ধে সং ×শয়যুক্ত ছিল; এ সম্পর্কে অনুমানের অনুসরণ
    ব্যতীত তাদের কোন জ্ঞা ৷নই ছিল না ৷ এটা নিশ্চিত যে, তারা তাদুক হত ৷ করেনি, এব০ আল্লাহ

    তাকে তার নিকট তলে নিয়েছেন এবং অ আভৃা৷হ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় ৷ কিত ৷বীদের মধ্যে
    প্রত্যেকে তার মৃত্যুর পুর্বে তাকে বিশ্বাস করবেই এবং কিয়ামতের দিন যে তাদের বিরুদ্ধে
    সাক্ষ্য দিবে ৷ (নিসা : ১ ৫৫ ১৫৯)

    উপরোক্ত আয়াতসমুহ দ্বারা আল্লাহ মানুষকে জানিয়ে দিলেন যে তিনি হযরত ঈস৷ ৷ আ)
    কে নিদ্রাচ্ছনু করার পরে আসমানে তুলে নেন এটা সন্দেহাভীতত৷ ৩াবে বিশুদ্ধ মত ৷ ইযাছদীরা
    ঐ যুগের জনৈক কাফির বাদশাহর সাথে ষড়যন্ত্র করে তাকে যে নির্যাতন করতে ঢেয়েছিল,
    আল্লাহ তা থেকে তাকে মুক্ত করেন ৷

    হাসান বসরী ও মুহাম্মদ ইসহাক বলেন, ঐ বাদশাহ্র নাম ছিল দাউদ ইবন নুর৷ ৷ সে ঈসা
    (আ) কে হত্যা ও ক্রুশবিদ্ধ করার হুকুম দেয় ৷ হুকুম পেয়ে ইয়ড়াহুদীরা শুক্রবার দিবাগত
    শনিবার রাত্রে বায়ত ল মুকাদ্দাসের একটি কক্ষে ঈসা (আ )-কে অবরুদ্ধ করে রাখে ৷ পরে যখন
    হত্যার উদ্দেশ্যে তারা কক্ষে প্রবেশ করে তখন আল্লাহ্ তা আলা কক্ষে বিদ্যমান ঈসা ( ন্ত্র৷ ) এর
    অনুসারীদের মধ্য হতে একজনের চেহারাকে তার চেহারার সদৃশ করে দেন এবং ঈস৷ (আ) )-কে
    বাতায়ন পথে আকাশে তলে নেন ৷ কক্ষে যারা ছিলত তারা ঈস৷ (অ ) কে তুলে নেয়ার দৃশ্য
    প্রত্যক্ষ করছিল ৷ ইতিমধ্যে বাদশাহ্র রক্ষীরা কক্ষে প্রবেশ করে ঈসা (আ) এর চেহারা বিশিষ্ট
    ঐ যুবককে দেখতে পায় ৷ তারা তাকেই ঈসা (আ) মনে করে ধরে এনে শুলে চড়ায় এবং
    মাথায় কটি ব টুপি পরায় ৷ত তাকে অধিক লাঞ্ছিত করার জন্যেত তারা এই ব্যবস্থা গ্রহণ করে ৷
    সাধারণ নাসারা, যারা ঈসা (আ ) এর ঘটনা প্রত তাক্ষ করেনি,ত ইরয়াহুদীদের ঈসা (আ ) (ক
    ক্রুশ বিদ্ধ করার দাবি মেনে নেয় ৷ ফলে, তার রাও সত্য থেকে স্পন্ট ও চুড়ান্ত বিভ্রান্তির অতল

    তলে নিক্ষিপ্ত হয় ৷ সেই জন্যে আল্লাহ বলেন, কিত ৷বীদের প্রত্যেকেই তার মৃত্যুর পুর্বেত

    প্ৰতি বিশ্বাস করবে ৷” অর্থাৎ কিয়ড়ামতের পুর্বে শেষ যুগে ঈসা (আ) যখন পৃথিবীতে পুনরায়
    আসবেন তখন ত ৷র স্বাভাবিক মৃত ত্যুর পুর্বে তখনকার সকল কিতাবীরাই তার প্রতি বিশ্বাস
    আনবে ৷ কেননা তিনি পুনর্বার পৃথিবীতে আসবেন এব০ শুকর বধ করবেন ক্রুশ ধ্বং ×স করবেন
    জিযিয়া কর রহিত করবেন এবং ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দীন কবুল করবেন না তাফসীর
    গ্রন্থে সুরা নিসায় এই আয়াতে র ব্যাখ্যার এ প্রসহ্গে যাবতীয় হাদীস আমরা উল্লেখ করেছি এবং
    এই কিভাবে ’ফিত ৷ন ও মালাহিম (কিয়ামত পুর্ব বিপর্যয় ও মহাযুদ্ধ) অধ্যায়ে মাসীহুদ্

    দাজ্জাল প্রসংণে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ৷ দাজ্জালকে হত্যার জন্যে ইমাম
    মাহদীর অবতরণ প্রসংগে যত হাদীস ও রিওয়ায়ত আছে, সবই সেখানে বর্ণনা করা হবে ৷
    এখানে আমরা ঈসা (আ)-কে আসমানে উঠিয়ে নেয়া সম্পর্কে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব ৷

    ইবন আবি হাতিম ইবন আব্বাস (না)-এর বরাতে বর্ণনা করেন, আল্লাহ যখন ঈসা
    (আ)-কে আসমানে তুলে নিতে ইচ্ছা করলেন তখন ঘটনা ছিল এই যে, বায়তৃল মুকাদ্দাসের
    একটি কক্ষে ঈসা (আ)-এর বারজন হাওয়ারী অবস্থান করছিলেন ৷ তিনি মসজিদের একটি
    ঝরনায় গোসল করে ঐ কক্ষে শিষ্যদের নিকট যান ৷ তীর মাথার চুল থেকে তখনও পানি ঝরে
    পড়ছিল ৷ তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি আছে, যে তার প্রতি ঈমান আনার
    পর বারো (১২) বার আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে ৷ এরপরে তিনি তাদের নিকট
    জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কে রাজী আছে যাকে আমার গঠনাকৃতি দ্বারা পরিবতনি করা
    হবে এবং আমার স্থলে তাকে হত্যা করা হবে, পরিণামে আমার সাথে সেমর্যদাে লাভ করবে?
    উপস্থিত শিষ্যদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ এক যুবক দণ্ডায়মান হলেন ৷ ঈসা (আ) তাকে বললেন, বন ৷
    এরপর তিনি দ্বিতীয় বার একই আহ্বান জানান ৷ এবারও ঐ যুবকটি দণ্ডায়মান হলেন ৷ ঈসা
    (আ) র্তাকে বসতে বললেন ৷ তৃতীয়বার তিনি আবারও একই আহ্বান রাখেন ৷ ঐ যুবক দাড়িয়ে
    বললেন, এ জন্যে আমি প্রস্তুত ৷ ঈসা (আ) বললেন, তাই হবে, তুমিই এর অধিকারী ৷ অতঃপর
    যুবকটির গঠনাকৃতিকে ঈসার গঠনাকৃতি দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়া এবং মসজিদের একটি
    বাতায়ন পথে ঈসা (আ) কে আসমানে তুলে নেয়া হয় ৷ এরপর ইয়ড়াহুদীদের একটি
    অনুসন্ধানকারী দল ঈসা (আ)-কে ধরার জন্যে এসে উক্ত যুবককে ঈসা (আ) মনে করে ধরে
    নিয়ে আসে ও তাকে হত্যা করে এবং ক্রুশবিদ্ধ করে ৷ জনৈক শিষ্য ঈসা (আ)-এর প্রতি ঈমান
    আনার পর বার বার বিশ্বাসঘাতকতা করে ৷ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বনী ইসরাঈল তিন দলে
    বিভক্ত হয়ে পড়ে; যথা৪

    ১ আল-ইয়াকুবিয়্যা৪ এই দল বিশ্বাস করে যে, এতদিন আল্লাহ স্বয়ং আমাদের মাঝে
    বিদ্যমান ছিলেন, এখন তিনি আসমানে উঠে গিয়েছেনৃ ৷

    ২ আলনাসতৃরিয়্যা : এই দলের বিশ্বাস হল, আল্লাহ্র পুত্র আমাদের মধ্যে এতদিন
    ছিলেন, এখন র্তাকে আল্লাহ নিজের কাছে উঠিয়ে নিয়েছেন;

    ৩ আল মুসলিমুন : এই দলের মতে ঈসা (আ) আল্লাহ্র বান্দা ও রাসুল ৷ আল্লাহর
    যতদিন ইচ্ছা ছিল ততদিন তিনি আমাদের মধ্যে ছিলেন ৷ এখন র্তাকে আল্লাহ নিজের সান্নিধ্যে
    উঠিয়ে নিয়েছেন ৷ উক্ত তিন দলের মধ্যে কাফির দুই দল একত্রিত হয়ে মুসলিম দলের বিরুদ্ধে
    লড়াই অব্যাহত রাখে; ফলে মুসলিম দল নিস্তেজ হয়ে পড়ে ৷ এ অবস্থা দীর্ঘদিন চলার পর
    আল্লাহ মুহাম্মাদ (না)-কে রসুলরুপে প্রেরণ করেন ৷ ইবন আব্বাস (রা) বলেন, এই দিকে
    ইৎগিত করেই কুরআনে বলা হয়েছে “পরে আমি মুমিনদেরকে শক্তিশালী করলাম তাদের
    শত্রুদের মুকাবিলায়; ফলে তারা বিজয়ী হল (৬ সাফ : ১৪) ৷ এ হাদীসের সনদ ইবন আব্বাস
    (রা) পর্যন্ত বিশুদ্ধ এবং মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ্ ৷ ইমাম নাসাঈ আবু কুরায়বের সুত্রে আবু
    মুআবিয়া থেকেও অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ ইবন জারীর মুসলিম ইবন জানাদার সুত্রে আবু

    মুআবিয়া থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন ৷ এ ছাড়া আরও অনেক গ্রন্থকার এ হাদীস স্ব-স্ব
    কিতাবে উল্লেখ করেছেন ৷ এ হাদীসটি সবচেয়ে দীর্ঘড়ায়িতভাবে বর্ণনা করেছেন মুহাম্মদ ইবন
    ইসহাক ৷ তার বর্ণনায় এস্যেছ, ঈসা (আ) আল্লাহর নিকট তার মত্যুকে পিছিয়ে দেয়ার জন্যে
    দোয়া করতেন, যাতে তিনি রিসালাতের দায়িত্ব পুর্ণ করতে পারেন ৷ দাওয়াতী কাজ সম্প্রসারণ
    করতে পারেন এবং অধিক পরিমাণ লোক যাতে আল্লাহর দীনে প্রবেশ করতে পারে ৷ কথিত
    আছে, হযরত ঈসা (আ)-এর সান্নিধ্যে রারজন হাওয়ারী ছিলেন; (১) পিতর, (২) ইয়াকুব ইবন
    যাবদা (সিবদিয়), (৩) ,ইয়াহ্নাস (য়ুহড়ান্না) ইনি ইয়াকুবের ভাই ছিলেন (৪) ইনদারাউস
    (আশ্রিয়), (৫) ফিলিপ, (৬) আবরো ছালমা (বর্তলময়), (৭) মথি, (৮) টমাস (থমা), (৯)
    ইয়াকুব ইবন হালকুবা (আলকেয়) , (১০) তড়াদাউস (থদ্দেয়), (১১) ফাতাতিয়া শিমন ও ( ১২)
    (ইয়াহুদা ইস্কারিযােৎ) ইউদাস কারয়া ইউতা এই শেষোক্ত ব্যক্তি ইয়াহুদীদেরকে ঈসা
    (আ)-এর সন্ধান দিয়েছিল ৷ ইবন ইসহাক লিখেছেন, হাওয়াবীদের মধ্যে সারজিস নামক আর
    এক ব্যক্তি ছিল যার কথা নাসারারা গোপন রাখে ৷ এই ব্যক্তিকেই মাসীহ্র রুপ দেয়া হয়েছিল
    এবং ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল ৷ কিংহ্ নাসারাদের কিছু অংশের মতে যাকে মাসীহ্র রুপ দেয়া হয়
    ও ক্রুশে ৰিদ্ধ করা হয়, তার নাম জভাস ইবন কারয়া ইউতা ৷

    যাহ্হড়াক ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, ঈসা (আ) শামউনকে তার
    স্থলাভিষিক্ত করেছিলেন এবং ইয়াহুদীরা জভাসকে হত্যা করেছিল যাকে ঈসার অনুরুপ আকৃতি
    দেয়া হয়েছিল ৷ আহমদ ইবন মারওয়ান বলেন, মুহাম্মদ ইবন জাহ্ম ফাবৃরা থেকে শুনেছেন
    কুরআনের আয়াত “তারা চক্রাম্ভ করেছিল আর আল্লাহ্ও কৌশল অবলম্বল করেছিলেন এবং
    আল্লাহ কৌশলীদের শ্রেষ্ঠ ৷” এ সম্পর্কে ফাবৃরা বলেছেন যে, ঈসা (আ) দীর্ঘ দিন তার খালার
    নিকট থেকে দুরে থাকার পর একদিন খালার বাড়িতে আসেন ৷ তার আগমন দেখে রা’স আল
    জালুত নামক ইয়াহুদী সেখানে উপস্থিত হয় এবং ঈসা (আ)ষ্এর বিরুদ্ধে লোকজনকে জমায়েত
    করে ৷ ফলে বহু লোক জমায়েত হলো আর তারা দরজা ভেত্গে ফেলে এবং রাস আল-জালুত
    ঈসা ,(আ)-কে ধরে আমার জন্যে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে ৷ আল্লাহ ঈসা (আ ) কে তার দৃষ্টি
    থেকে আড়াল করে রাখেন ৷ কিছু সময় পর সে বেরিয়ে এসে বলল, ঈসাকে ঘরের মধ্যে
    দেখতে পেলাম না ৷ রা’স আল জালুতের সাথে ছিল নাংগা তলােয়ার ৷ এ দিকে আল্লাহ তাকেই
    ঈসার রুপে রুপান্তরিত করে দিয়েছিলেন ৷ উপস্থিত সবাই বলল, তুমি-ই তাে ঈসা ৷ সুতরাং
    তারা তাকে ধরে হত্যা করল ও শুলে বিদ্ধ করল ৷ এদিকে ইংগিত করেই আল্লাহ বলেছেন ;
    “তারা তাকে হত্যা করেনি, ক্রুশবিদ্ধও করেনি; বিৎ তাদের এইরুপ বিভ্রম হয়েছিল ৷” ইবন
    জারীর ওহব ইবন মুনাববিহ্ থেকে বর্ণনা করেন যে, ঈসা (আ) সতের জন হাওয়ারী সহ
    এক ঘরে প্রবেশ করেন ৷ এ অবস্থা তাদেরকে যেরাও করে ফেলে ৷ যখন তারা দেখে
    ইয়াহুদীরা ঘরের ভেতর প্রবেশ করে তখন আল্লাহ তাদের সকলের চেহারাকে ঈসা (আ) এর
    চেহারার মত করে দেন ৷ এ দেখে বনী ইসরাঈলরা বলল, তোমরা সবাই যাদু করে আমাদেরকে
    ঘেড়াকা দিচ্ছ ৷ হয় আসল ঈসাকে আমাদের নিকট বের করে দাও, নচেৎ তোমাদের সবাইকে

    টীকা ও বন্ধনীযুক্ত নামগুলো বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটির প্রকাশিত ইনজীল শরীফ থেকে গৃহীত

    হত্যা করব ৷ তখন ঈসা (আ) সাথীদেরকে বললেন, তোমাদের মধ্যে কে আছ, যে নিজের
    প্রাণের বিনিময়ে আজ জান্নাত ক্রয় করবে ৷ এক ব্যক্তি বললেন, আমি রাজি আছি ৷ এরপর যে
    ব্যক্তি বনী-ইসরাঈলদের সম্মুখে এসে বললেন, আমিই ঈসা বন্তুত ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ ঈসা
    (আ)-এর আকৃতি দান করেছিলেন ৷ তখন তারা র্তাকে ধরে হত্যা করল ও ক্রুশবিদ্ধ করল ৷ এ
    জন্যই বনী-ইসরাঈলরা বিভ্রান্ত হয় ও ধারণা করে যে, তারা ঈসা (আ)-কেই হত্যা করেছে ৷
    অন্যান্য খ্রীষ্টানরাও এই একই ধারণা পোষণ করে এবং বলে ঈসাকে হত্যা করা হয়েছে ৷ অথচ
    ঐ দিনই আল্লাহ ঈসা (আ) কে আসমানে তুলে নিয়েছিলেন ৷

    ইবন জারীর ওহব থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ যখন ঈসা (আ) কে জানিয়ে দেন যে,
    অচিরেই তুমি দুনিয়া থেকে নিকৃতি পাচ্ছ তখন তিনি বিচলিত হয়ে পড়েন এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হন ৷
    এ সময় তিনি হড়াওয়ারীগণকে দাওয়াত করেন ৷ তাদের জন্যে খাদ্য প্রস্তুত করেন ৷ র্তাদেরকে
    জানিয়ে দেন যে, রাত্রে তোমরা আমার নিকট আসবে, তোমাদের কাছে আমার প্রয়োজন আছে; ৷
    হাওয়ারীগণ রাত্রে আসলে ঈসা (আ) তাদেরকে নিজ হাতে পানা পরিবেশন করে খাওয়ার ৷
    আহার শেষে নিজেই র্তাদের হাত ধুয়ে দেন ও নিজের কাপড় দ্বারা র্তাদের হাত মুছে দেন ৷ এ
    সব দেখে হড়াওয়ারীগণ আশ্চর্যানিত হলেন এবং বিরত বোধ করলেন ৷ ঈসা (আ) বললেন দেখ,
    আমি যা কিছু করব কেউ যদি তার প্রতিবাদ করে তবে সে আমার শিষ্যদের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং
    আমিও তার কেউ নই ৷ তখন তারা তা মেনে নিলেন ৷

    আর ঈসা (আ) বললেন, আমি আজ রাত্রে তোমাদের সাথে যে আচরণ করলাম, ণ্তামাদের
    সেবা করলাম, খাদ্য পরিবেশন করলাম, হাত ধুয়ে দিলাম, এ যেন তোমাদের জন্যে অনুকরণীয়
    আদর্শ হয়ে থাকে ৷ তোমরা জান যে, আমি তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ৷ সুতরাং তোমরা একে
    অপরের উপর নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করবে না; ৷ বরং নিজেকে অপরের চাইতে ছোট জ্ঞান
    করবে ৷ তোমরা তো প্রত্যক্ষ করলে, কিভাবে আমি তোমাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত
    করলাম ৷ তোমরাও ঠিক এই ভাবে করবে ৷ আর তোমাদের কাছে আমার যে প্রয়োজন তা হল,
    তোমরা আমাকে সাহায্য করবে, আমার জন্যে আল্লাহ্র নিকট দোয়া করবে এবং মনে প্রাণে
    দোয়া করবে যেন তিনি আমার মৃত্যকে পিছিয়ে দেন ৷ ঈসা (আ)-এর কথা শোনার পর
    হাওয়ারীগণ যখন দোয়া করার জন্যে প্রস্তুত হলেন এবং নিবিষ্ট চিত্তে দোয়া করতে বললেন
    তখন গভীর নিঃদৃ৷ তাদেরকে আচ্ছন্ন করে ফেললো ৷ ফলে র্তারা দোয়া করতে সমর্থ হলেন না ৷
    ঈসা (আ) তাদেরকে ঘুম থেকে জাগাবার চেষ্টা করেন এবং বলেন, কী আশ্চর্য, তোমরা কি মাত্র
    একটা রাত আমার জন্যে ধৈর্যধারণ করতে ও আমাকে সাহায্য করতে পারবে না? তারা
    বললেন, আল্লাহ্র কসম, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না যে, আমাদের এ কী হল? আমরা তো
    প্রতি দিন রাত্রে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত জেগে থাকি, কথাবার্তা বলি; কিন্তু আজ রাত্রে তার কিছুই
    করতে পারছি না ৷ যখনই দোয়া করতে যাই তখনই ঘুম এসে মাঝখানে বাধা হয়ে দাড়ায় ৷
    তখন হযরত ঈসা (আ) বললেন, রাখলে মাঠ থেকে বিদায় নিচ্ছে আর বকরীগুলো চারিদিকে
    ছড়িয়ে পড়ছে ৷ এ জাতীয় আরও বিভিন্ন কথা তিনি বলতে থাকেন এবং নিজের বিয়োগ রাখার
    কথা ব্যক্ত করেন ৷

    প্ অতঃপর ঈসা (আ) বললেন : আমি তোমাদেরকে একটি সত্য কথা বলছি তোমাদের
    মধ্যে একজন আজ মােরগ ডাক দেয়ার পুর্বে আমার সাথে তিনবার বিশ্বাসঘাতকতা করবে,
    তোমাদের মধ্যে একজন সামান্য কয়েকটি দিরহামের বিনিময়ে শত্রুদের কাছে আমার সন্ধান
    বলে দেবে এবং আমার বিনিময়ে প্রাপ্ত অর্থ ভক্ষণ করবে ৷ এরপর তারা সেখান থেকে বেরিয়ে
    পড়ল ও বিক্ষিপ্ত হয়ে গেল ৷ এদিকে ইয়াহুদীরা ঈসা (আ)-কে সন্ধান করে ফিরছে ৷ তারা
    শামউন নামক এক হাওয়ারীকে ধরে বলল, এই ব্যক্তি ঈসার শিষ্য ৷ কিন্তু সে অস্বীকার করে
    বলল, আমি ঈসার শিষ্য নই ৷ এ কথা বললে, তারা শামউনকে ছেড়ে দিল ৷ কিছুক্ষণ পরে
    তাকে অন্য ইয়াহুদীরা পাকড়াও করলে সে পুর্বের ন্যায় উত্তর দিয়ে আত্মরক্ষা করল ৷ এমন সময়
    ঈসা হঠাৎ মোরগের ডাক শুনতে পান ৷ মোরগের ডাক শুনে তিনি চিস্তিত হয়ে পড়েন এবং
    র্কাদতে থাকেন ৷ প্রভাত হওয়ার পর র্জ্যনক হাওয়ারী ইয়াহুদীদের নিকট গিয়ে বলল, আমি যদি
    তোমাদেরকে ঈসা মাসীহ্র সন্ধান দিই, তা হলে তোমরা আমাকে কী পুরস্কার দিবে? ইয়াহুদীরা
    তাকে ত্রিশটি দিরহাম দিল, বিনিময়ে সে তাদের নিকট তার সন্ধান বসে দিল ৷ কিন্তু এর পুর্বেই
    তাকে ঈসার অনুরুপ চেহারা দান করা হয় এবং তাদেরকে বিভ্রাস্তিতে ফেলা হয় ৷ ফলে তাকেই
    তারা পাকড়াও করে বলি দ্বারা শক্ত করে বাধল এবং একথা বলতে বলতে টেনে হেচড়ে নিয়ে
    গেল যে, তৃমিই তো মৃতকে জীবিত করতে, জীন-ভুত তাড়াতে, পাগল মানুষকে সুস্থ করে
    দিতে ৷ এখন এই রশির বন্ধন থেকে নিজেকে যুক্ত কর দেখি তারা তার উপর থুথু নিক্ষেপ
    করল, দেহে র্কাটা ফুটাল এবং যেই ক্রুশে বিদ্ধ করার জন্যে স্থাপন করা হয়েছিল সেখানে
    তাকে নিয়ে আসল ৷

    ইতিমধ্যে ঈসা (আ) কে আল্লাহ নিজ সান্নিধ্যে তুলে নিয়েছেন এবং ইয়াহুদীরা ঐ চেহারা
    পরিবর্তিত ব্যক্তিকে ক্রুশবিদ্ধ করল ৷ ক্রুশের উপরে লাশ সাত দিন পর্যন্ত ছিল ৷ এরপর ঈসা
    (আ)-এর মা এবং অন্য এক মহিলা যে পাগল ছিল এবং যাকে ঈসা (আ) সুস্থ করেছিলেন
    উভয়ে র্কাদতে র্কাদতে ক্রুশবিদ্ধ লােকটির কাছে আসলেন ৷ তখন হযরত ঈসা (আ )-র্তাদের
    কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা র্কাদছেন কেন? তারা বললেন, আমরা তো তোমার
    জন্যে র্কাদছি ৷ ঈসা (আ) বললেন, আমাকে আল্লাহ তার সান্নিধ্যে তুলে নিয়েছেন এবং উত্তম
    অবস্থায় রেখেছেন; আর এই যাকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে তার ব্যাপারে ইয়াহুদীরা বিভ্রান্তির
    শিকার হয়েছে ৷ অতঃপর তিনি হাওয়ারীদের প্রতি নির্দেশ দিলেন যেন, অমুক স্থানে তারা তার
    সাথে সাক্ষাত করেন ৷ নির্দেশ মতে এগারজন হাওয়ারী তথায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাতে মিলিত
    হন ৷ সেই এক হাওয়ারী অনুপস্থিত থাকে, যে ঈসাকে দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করেছিল এবং
    ইয়াহুদীদেরকে তার সন্ধান বলে দিয়েছিল; তার সম্পর্কে ঈসা (আ) শিষ্যদের নিকট জিজ্ঞেস
    করলেন ৷ উত্তরে তারা জানাল যে, সে তার কর্মের উপর অনুতপ্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷ ঈসা
    (আ) বললেন, যদি সে তওবা করত তবে আল্লাহ তার তওবা কবৃল করতেন ৷ অতঃপর তিনি
    ইয়াহ্ইয়া নামক সেই যুবকের কথা জিজ্ঞেস করলেন, যে তাদেরকে অনুসরণ করত ৷ তিনি
    জানালেন, সে তোমাদের সাথেই আছে ৷ এরপর ঈসা (আ) বললেন, তোমরা এখান থেকে চলে
    যাও; কেননা, অচিরেই তোমরা নিজ নিজ সম্প্রদায়ের ভাষায় কথা বলবে ৷ সুতরাং তাদেরকে
    সতর্ক করবে এবং দীনের দাওয়াত দেবে ৷

    এই হাদীসের সনদ গরীব ও অভিনব ৷ তবে নাসারাদের বর্ণনা সমুহের মধ্যে এটা অনেকটা
    বিশুদ্ধ ৷ত তারা বলেছে মসীহ্ মারয়ামের নিকট এসেছিলেন ৷ মারযাম খেজুর গাছের শাখার
    কাছে বসে কাদছিলেন ৷ ঈসা (আ)ত তাকে দেহের ক্ষত-ৰিক্ষত স্থানগুলাে দেখান এবং
    মারয়ামকে জানান যে, তার রুহ্কে উপরে তুলে নেয়া হয়েছে এবং দেহকে ক্রুশবিদ্ধ করা
    হয়েছে ৷ নাসা রাদের বর্ণিত এ ঘটনা সম্পুর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া , অতিবঞ্জিত ও বাতিল ৷
    সত্যের পরিপন্থী ও অতিরিক্ত সং৷ য়ােজন ৷

    ইবন আসাকির ইয়াহ্ইয়া ইবন হাবীবেব সুত্রে বর্ণনা করেন যে যে ব্যক্তিকে ক্রুশবিদ্ধ করা
    হয়েছিল, মারযাম ধারণা করেছিলেন যে, সে তারই পুত্র ৷ত তাই তিনি ঘটনার সাত দিন পর
    বাদশাহ্র লোকদের নিকট গিয়ে লাশটি নামিয়ে দেয়ার আবেদন জানান ৷ তারা তার আবেদনে
    সাড়া দেয় এবং সেখানেই লাশটি দাফন করা হয় ৷ত তারপর মারযাম ইয়াহ্ইয়া ৷র মাকে বললেন,
    চল, আমরা মাসীহ্র কবর যিয়ারত করে আসি ৷ উভয়ে রওয়ানা হলেন ৷ কবরের কাছাকাছি
    পৌছলে মারযাম ইয়াহ্ইয়ার মাকে বললেন, পর্দা কর ৷ ইয়াহ্ইয়ার মা বললেন কার থেকে পর্দা
    করব? বললেন কেন কবরের কাছে ঐ যে লোকটিকে দেখা যায়, তার থেকে ৷ ইয়াহ্ইয়ার মা
    বললেন, কী বলছ? আমি তে ৷ কাউকে দেখতে পাচ্ছি না ! মারযাম তখন ভাবলেন, ইনি
    জিবর৷ ঈল ফিরিশতা হযেন ৷ বস্তুত জিবরাঈলকে ৷তান বহু পুর্বে দেখেছিলেন ৷

    যা হোক, ইয়াহ্ইয়া ৷র মাকে সেখানে রেখে মারযাম কবরের কাছে গেলেন ৷ কবরের নিকট
    গেলে তিনি তাকে চিনতে পান ৷ আর জিবরাঈল বললেন, মারযাম ! কোথায় যাচ্ছা মারযাম
    বললেন, মাসীহ্র কবর যিয়ারত করতে এবং তাকে সালাম জানাতে ৷ জিবরাঈল বললেন
    মারযাম এ তো মাসীহ্ নয় ৷ তাকে তাে আল্লাহ তার স ৷তুন্নিধ্যে লে নিয়েছেন কাফিরদের হাত
    থেকে তাকে পবিত্র করেছেন ৷ তবে কবরবাসীকে মসীহ্র আকৃতি বদলে দেয়৷ হয়েছে এবং
    তাকেই, ক্রুশৰিদ্ধ করা হয়েছে ৷ এর নিদর্শন হচ্ছে এটা যে, ঐ লোকটির পরিবারের লোকজন
    একে খুজে বেড়াচ্ছে, কোথাও তার সন্ধান পাচ্ছে না এবং তার কি হয়েছে তাও তারা জানে না;
    এর জন্যে তারা কেবল কান্নাকাটি করে ফিরছে ৷ তুমি অমুক দিন অমুক বাগানের নিকট আসলে
    মাসীহ্র সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে ৷ এ কথা বলে জিবরাঈল সেখান থেকে প্রস্থান করেন ৷

    মারযাম তার বোনের নিকট ফিরে এসে জিবরাঈলের ব্যাপারে জানালেন এবং বাগানের
    বিষয়টিও বললেন ৷ নির্দিষ্ট দিনে মারয়াম সেই বাগানের নিকট গেলে সেখানে মাসীহ্কে দেখতে
    পান ৷ ঈসা ৷(আ) মাকে দেখতে পেয়ে তার দিকে ছুটে আসেন, মা তাকে জড়িয়ে ধরেন এবং
    তার মাথায় চুম্বন দেন ৷ তিনি পুর্বের মত তার জন্যে দোয়া করেন ৷ তারপর বলেন যা! আমার
    সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাকে হত্যা করতে পারেনি, আল্লাহ আমা৷,ক তার সান্নিধ্যে তুলে
    নিয়েছেন এবং আপনার সাথে সাক্ষাত করার অনুমতি দিয়েছেন ৷ অচিরেই আপনার মৃত্যু হবে ৷
    ধৈর্য ধরুন ও বেশী বেশী আল্লাহ্কে স্মরণ করুন ৷ অত ংপর ঈসা উর্ধলোকে চলে গেলেন ৷
    এরপর মারয়ামের সাথে তার মৃত্যুর পুর্বে ঈসার আর সাক্ষাত হয়নি ৷ রাবী বলেন, ঈসা
    (আ) এর উর্ধারোহনের পরে তার মা পাচ বছর জীবিত ছিলেন এবং তিপ্পান্ন বছর বয়সকালে
    তিনি ইনতিক৷ ৷ল করেন ৷
    আল-বিদায়৷ ওয়ান নিহায়া (২য় খণ্ড) ২৪-

    হাসান বসরী (র) বলেছেন, যে দিন হযরত ঈস৷ (আ)-কে আসমানে নেয়া হয় সে দিন
    পর্যন্ত তার বয়স হয়েছিল চৌত্রিশ বছর ৷ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে জা ৷ন্নাতবাসীদের চুল ছোট হয়ে
    দীড়ি উদ্ধৃত ৩হয়নি তারা এমন যুবকই হবেন ৷ তাদের চোখে সুরম৷ লাগান থাকবে ও তারা
    তেত্রিশ বছরের যুবক হবেন ৷ অন্য এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে , জ ৷ন্নাতবাসীর৷ ঈস৷ (আ) এর
    সযবয়সের হবেন এবং ইউসুফ (আ)-এর সৌন্দর্যমণ্ডিত চেহারা লাভ করবেন ৷ হাম্মাদ ইবন
    সালম৷ সাঈদ ইবনুল মুসায়িাব থেকে বর্ণা৷ করেন, ঈস৷ (আ) কে যখন আসমানে ভুলে নেয়া
    হয় তখন তার বয়স ছিল তেত্রিশ বছর ৷

    হাকিম তার মুসতড়াদরাক গ্রন্থে এবং ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান ফাসাবী তার ইতিহাস গ্রন্থে
    ইবন আবি মারয়ামের সুত্রে আয়েশা (রা ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমাকে
    ফাতিমড়া (রা) বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) ত কে জা ৷নিয়েছেন৪ একজন নবীর পরে যদি আর
    এক জন নবীর আ ৷বির্তার হয়ত তবে পরবর্তী নবীর বয়স পুর্ববর্তী নবীর বয়সের অর্ধেক হয় ৷ নবী
    (সা) আমাকে আরও বলেছেন যে, ঈস৷ ইবন মারয়ড়াম একশ বিশ বছর জীবিত ছিলেন ৷
    সুতরাং আমি দেখছি, ষাট বছরের মাথায় আমার মৃত্যু হবে ৷ ফাসাবীর বর্ণিত এ হাদীসের সনদ
    গরীব পর্যায়ের ৷

    ইবন আসাকির বলেন, বিশুদ্ধ মত এই যে, ঈস৷ ৷(আ) ঐ পরিমাণ বয়স পাননি ৷ এর দ্বারা
    তার উস্মতের মধ্যেত তার অবন্থানকাল বুঝানই উদ্দেশ্য ৷ যেমন সুফিয়ান ইবন উয়ায়না

    ইয়াহ্য়৷ ইবন জা ’দা থেকে বর্ণনা করেন, হযরত ফা ৷তিমা (রা) বলেন, রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে
    জানিয়েছেন : ঈস৷ ইবন মারয়াম বনী ইসরাঈলের মধ্যে চল্লিশ বছর অবস্থান করেছিলেন ৷ এ
    হাদীসের সনদ বিচ্ছিন্ন ৷ জারীর ও ছাওরী আমাশের মাধ্যমে ইবরাহীম থেকে বর্ণনা করেন :
    ঈস৷ (আ) তার সম্প্রদায়ের মধ্যে চল্লিশ বছর অবস্থান করেছিলেন ৷ আমীরুল মুমিনীন হযরত
    আলী (রা) থেকে বর্ণিত : হযরত ঈস৷ (আ)-কে রমযান মাসের বাইশ তারিখের রাত্রে আকাশে
    উঠিয়ে নেয়া হয় ৷ হযরত আলী (রা) ও শত্রুদের বর্শার আঘাত পাওয়ার পাচ দিন পর
    রমযানের বাইশ তারিখ রাত্রে ইনতিকা ৷ল করেন ৷

    যাহ্হাক (র) ইবন আব্বাস (যা) থেকে বণ্টা৷ করেন ঈস৷ (আ) কে যখন আসমানে তুলে
    নেয়া হয় তখন এক খণ্ড যেঘ তার নিকটবর্তী হয় ৷ তিনি এর উপর বসেন ৷ মা মারয়াম সেখানে
    উপস্থিত হন ৷ পুত্রকে বিদায় জানান ও ক ন্নাকাটি করেন ৷ তারপরে তাকে তুলে নেয়া হয় ৷
    মারয়াম তাকিয়ে সে দৃশ্য দেখতে থাকেন ৷ উর্ধে উঠার সময় ঈস৷ (আ)ত তার মাকে নিজের
    চাদরখানা দিয়ে যান এবং বলেন, এইটি হবে কিয়ামতের দিনে আমার ও আপনার মধ্যে
    পরিচয়ের উপায় ৷ শিষ্য শাযউনের উদ্দেশ্যে তিনি নিজের পাগডীটি নিক্ষেপ করেন ৷ ঈস৷ যখন
    উপরের দিকে উঠতে থাকেন তখন মা মারয়াম হাতের আঙ্গুল উঠিয়ে ইংগিতে তাকে বিদায়
    জানাতে থাকেন ৷ যতক্ষণ না তিনি চোখের আড়ালে চলে যান ৷ মারয়াম ঈসাকে অত্যধিক স্নেহ
    করতেন ৷ কেননা, পিতা না থাকার কারণে ঈস৷ পিতড়ামাত৷ উভয়ের ভালবাসা মাকেই দিতেন ৷
    সফরে হোক কিৎব৷ বাড়িতে ৩হোক মারয়াম ঈসাকে সর্বদা কাছে রাখতে ,ন মুহ্রতেরি জন্যেও দুরে
    যেতে তেন না ৷ জনৈক কবি বলেছেন :

    এক মুহুর্তের বিরহ যেখানে আমার নিকট মৃতুদ্র যন্ত্রণার ন্যায় কঠিন, সেখানে রোজ হাশর
    পর্যন্ত দীর্ঘ বিরহ ব্যথা আমি কিভাবে সইবঃ

    ইসহাক ইবন বিশর মুজ৷ ৷হিদ ইবন জুবায়র (র) সুত্রে বর্ণনা করেন, ইয়াহুদীরা মসীহ্রুপী
    যেই ব্যক্তিকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল তাকে তারা আসল মসীহ্ বলেই বিশ্বাস করত ৷ অধিকাৎশ
    নাসারা মুর্থতাবশত এই বিশ্বাসেরই সমর্থক ছিল ৷ এরপর তারা মাসীহ্র শিষ্য সমর্থকদের উপর
    ধর-পাকড়, হত্যা ও নির্যাতন আরম্ভ করে ৷ এ সংবাদ রোম অধিপতি ও তদানিন্তন দামিশকের
    বাদশাহ্র নিকট পৌছে ৷ বাদশাহ্কে জানান হয় যে, ইয়াহুদীরা এমন এক ব্যক্তির শিষ্য
    সমর্থকদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে, যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর রাসুল বলে দাবী করে, সে
    মৃত্যকে জীবিত করে, জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ রোপীকে নিরা ৷ময় করে এবং আরো অনেক বিস্ময়কর ঘটনা
    ঘটায় ৷ ইয়াহুদীরা তার উপর চড়াও হয় এবং তাকে হত্যা করে ৷ তার শিষ্য ও অনুসারীদেরকে
    লাঞ্ছিত করে ও বন্দী করে রাখে ৷ এ সব কথা শুনে বাদশাহ উক্ত নবীর কতিপয় অনুসারীকে
    তার নিকট আনার জন্যে দুত প্রেরণ করেন ৷

    বাদশাহ্র দুত কয়েকজন অনুসারীকে সেখানে নিয়ে আসে ৷ এদের মধ্যে ইয়াহ্ইয়৷ ইবন
    যাকা ৷বিয়্যা এবং শামউন সহ বেশ কিছুলোক ছিলেন ৷ বাদশাহ তাদের নিকট মাসীভ্রু র কার্যাবলী
    সম্পর্কে জিজ্ঞ৷ ৷সাবাদ করেন ৷ ত ৷রা বিস্তারিত ভাবে মাসীহ্র কাজকর্ম সম্পর্কে বাদশাহকে অবগত
    করেন ৷ সবকিছু শুনে বাদশাহ তাদের নিকট মাসীহ্র দীন গ্রহণ করেন ৷ তাদের দীনের
    দাওয়াতের প্রসার ঘটান ৷ এভাবে ইয়৷ হুদীদের উপরে সত্য বিজয় লাভ করে এবং নাসারাদের
    বাণী তাদের উপর গ্রেষ্ঠত্বের সম্মানে ভুষিত হয় ৷ অতঃপর বাদশাহ ক্রুশবিদ্ধ লাশের কাছে লোক
    প্রেরণ করেন ৷ শুল কাষ্ঠ থেকে লাশ নামান হয় এবং ক্রুশ ৷-ফলকটি নিয়ে আসা হয় ৷ বাদশাহ
    ক্রুশ ফলককে সম্মান প্রদর্শন করেন ৷ তখন থেকে নাসারা সম্প্রদায় ক্রুশচিহ্নকে সম্মান করতে
    শুরু করে ৷ এ ঘটনার পর থেকে নাসারা (খ্রীষ্টান) ধর্ম রোম সাম্রাজে প্রসার লাভ করে ৷ কিন্তু
    কয়েকটি কারণে এই বর্ণনাটি সৎশয়মুক্ত নয় ৷ এক৪ ইয়াহয়৷ ইবন যাকারিয়্যা (আ) নবী
    ছিলেন ৷ ঈসা (আ) কে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে, এ কথা তিনি স্বীকা ৷র করতেন না ৷ কেননা তিনি
    ছিলেন যা সুম নবী ৷ ঈসা (আ) কে নিরাপদ হেফাজতে নেয়া হয়েছে এই সত্যে তিনি বিশ্বাস
    করতেন ৷ দুই৪ মাসীহ্র আগমনের তিনশ’ বছর পর রোম সাম্রাজেব্র খৃষ্টান ধম প্রবেশ করে
    তার পুর্বে নয় ৷ এটা ই ঐতিহাসিক সত্য ৷ কেননা রোমে খ্রীষ্টা ৷ন ধর্ম প্রবেশ করেছিল কুসতুনভীন
    ইবন কুসতু ন এর শাসনামলে, যিনি ছিলেন কনষ্টানটিনােপল তথা ৷ইস্তাম্বুল শহরের প্রতিষ্ঠাতা ৷
    এ বিষয়ে আমরা পরে আলোচনা করব ৷ তিন ন ৪াইয় হুদীরা ঐ ব্যক্তিকে শুলে চড়ানাের পর সেই
    স্থানটিকে একটি ঘৃণিত স্থান হিসেবে ফেলে রাখে ৷ সেখানে তারা ময়লা-আবর্জনা ও মৃত
    জীবজভু নিক্ষেপ করত ৷ সম্রাট কনক্টানটাইনের আমল পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে থাকে ৷
    অতঃপর সম্রাট কনন্টানটাইনে ম৷ হাযলানা আল হার্বানিয়৷ আল-ফুনদুকানিয়৷ উক্ত ক্রুশবিদ্ধ
    লােকটিকে মাসীহ্ বলে বিশ্বাস করেন এবং সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করেন ৷ তিনি সেখানে

    লোক প্রেরণ করেন ৷ তারা ক্রুবুশর শুল দণ্ডটি খুজে পায় ৷ কথিত আছে উক্ত শুলদণ্ড যেই কোন

    বুরাগী স্পর্শ করবুল আরোগ্য লাভ করত ৷ আল্লাহই ভাল জানেন ঘটনা এই রকম হয়েছিল কিন৷ ৷
    কেননা যেই ব্যক্তি শুলে জীবন দিয়ে আবুত্ম৷ ৷ৎসর্গ করেছিল যে একজন নেককার বুলাক ছিল ৷
    অথবা হতে পারে এটা সেই যুগের খ্রীষ্টবুদর জন্যে একটি ফিৎন৷ বিশেষ ৷ যে কারণে তারা উক্ত
    দণ্ডবুক সম্মান করত এবং স্বর্ণ ও মুক্তাদ্ব র বা তাবুক ঘুড়িবুয় রেবুখাছল এখান থেকে তারা বরকত
    ও কল্যাবুণর প্রতীক হিসেবে ক্রুশটিক ব্যবহার করা আরম্ভ করে ৷

    এরপর সম্রাটের ম৷ হায়লানার নির্দেশে ঐ স্থানের সমস্ত আবর্জন৷ পরিষ্কার করে যেখানে
    উন্নত মানের পাথর দ্বারা একটি সুশোভিত র্গীর্জা নির্মাণ করা হয় ৷ বর্তমান কাবুল যা বায়তৃল
    মুকাদ্দাস শহর নামে খ্যাত ৷ এই শহরটির অপর নাম কুমাম৷ ৷কুমাম ৷ অর্থ আবর্জন৷ যেহেতু
    পুর্বে এখানে আবর্জনা ছিল) ৷ খৃষ্টানর৷ একে কিয়ামাহ্ও ববুল ৷ কেননা কিয়ামবুত র দিন এই
    স্থান থেকে মাসীহ্র দেহ পুনরুথিত হবুব বলেও ৷ তাদের বিশ্বাস ৷ সম্র ট জননী হায়লান৷ অতঃপর
    নির্দেশ দেন যে, এখন থেকে এই শহরের সমস্ত ময়লা আবজন৷ ও পচা-গল৷ ইয়াহুদীদের
    কিবল৷ হিসেবে পরিচিত বায়তৃল মুকাদ্দাসে অবস্থিত শুভ্র পাথর (সাখরা)-এর উপর ফেলতে
    হবুব ৷ নির্দেশ মবুত সমস্ত আবজন৷ সেখানেই নিক্ষেপ করা অব্যাহত থাকে ৷ অবশেষে হযরত
    উমর ইবনুল থাত্তাব (বা) বায়তৃল মুকাদ্দাস জয় করেন ৷ তিনি স্বয়ং সেখানে গমন করে নিজের
    চাদর দ্বারা বায়তৃল মৃকাদ্দাংস ঝাড়ু দেন এবং সকল নাপাকী ও ময়লা আবর্জন৷ পরিষ্কার করেন ৷
    অবশ্য তিনি ইয়াহদীদেব কিবল৷ হিসেবে রক্ষিত পাথরের পেছনে মসজিদের প্রতিষ্ঠা করেন নি
    বরং তার সামনের দিকে রেখেবুছন যেখানে রাসুল (সা) ইসরার রাবুত্র নবীদের সাথে সালাত
    আদায় করেছিলেন ৷

    ঈস৷ (আ)-এর গুণাবলী স্বভাব-চরিত্র ও মাহাত্ম্য
    আল্লাহর বাণী ং

    মারয়াম-তনয় মসীহ্ তো কেবল একজন রাসুল, তার পুর্বে বহু রাসুল গত হয়েছে এবং
    তার মা সতানিষ্ঠ ছিল ৷ (৫ মায়িদা৪ ৭৫)

    মাসীহ্ অর্থ অত ৷ধিক ভ্রমণকারী ৷ ঈস৷ (আ) এর প্ৰতি ইয়াহুদীবুদর কঠোর শত্রুত৷ মিথ্যা
    আরোপ এবং তার উপর ও তার মায়ের উপর অপবাদ দেওয়ার কারণে সৃষ্ট ফিৎন৷ ফসাদ থেকে
    দীনকে রক্ষার জন্যে তিনি জীবনের অধিকা ৷ৎশ সময় সফরে কাটা ৷ন ৷ এই কা ৷রণে ৷তবুক মাসীহ্
    ববুল আখ্যায়িত করা হয় ৷ কেউ কেউ বলেন, তার পায়ের তলা সমতল থাকার কারণে হযরত
    ঈস৷ (আ) কে মাসীহ্ বলা হয় ৷ আল্লাহর বাণী :

    অতংপর আমিও তাদের অনুগামী করেছিলাম আমার রাসুলগণকে এবং অনৃগাহী৷ করেছিলাম
    মারযাম তনয় ঈসাকে আর তাকে দিয়েছিলাম ইনজীল ৷ (৫ ৭ হাদী দ ং ২ ৭ )

    আল্লাহ্র বাণী

    এবং মারয়াম তনয় ঈসাকে স্পষ্ট প্রমাণ দিয়েছি এবং পবিত্র আত্মা দ্বার৷ তাকে শক্তিশালী
    করেছি ৷ (২ বাকারা : ৮৭)

    এ সম্পর্কে কুরআনে প্রচুর আয়াত বিদ্যমান ৷ ইতিপুর্বে বৃথারী ও মৃসলিমে হাদীস বর্ণিত
    হয়েছে যে, এমন কোন শিশু সন্তান যেই, যাকে জন্মের সময় শয়তান পেটের পার্শ্বদেশে খোচা
    না দেয় ৷ জন্মের সময় শয়তানের ঘোচার কারণেই সে চিৎকার করে র্কাদে ৷ তবে মারয়াম ও
    তার পুত্র ঈস৷ (আ) এর ব্যতিক্রম ৷ শয়তান তাকে ঘোচ৷ ম রতে গিয়েছিল ৷ কিন্তু তা না পেরে
    ঘরের পর্দায় ঘোচ৷ মেরে চলে যায় ৷ উবাদা থেকে উমায়র ইবন হানীর বর্ণিত হাদীস ইতি পুর্বে
    উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসুলুলাহ্ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দিয়ে যে আল্লাহ ব্যতীত
    আর কোন ইলাহ্ নেই ৷ তিনি একক তার কোন শরীক নেই, আর মুহাম্মদ( (সা) তীর বান্দা
    রাসুল ৷ আ র ঈসা আল্লাহ্র বান্দা, তার রাসুল এবং৩ তার কলেমা যা তিনি মরয়াম এর নিকট
    প্রেরণ করেছিলেন এবং তার পক্ষ থেকে প্রেরিত রুহ্ ৷ (আরও সাক্ষ্য দিয়ে যে ) জান্নাত সত্য
    ও জাহান্নাম সত্য, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন তার অন্য আমল যাই হোক না
    কেন ৷ বৃথারী ও মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, তার এ পাঠটি বৃথারী ও মুসলিমে শাবী
    আবু বুরদা, আবু মুসা আশআরী (রা) থেকে বর্ণিত ৷

    রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন যদি কোন লোক তার দাসীকে আদব কায়দ৷ ৷শ্ খায় এবং তা
    ভালভাবে শেখার এবং তাকে ইলম শেখায় আরত ৷উত্তমভ৷ ৷বে শে খায় তারপর তাকে আ বাস
    করে দেয় এবং পরে তাকে বিয়ে করে নেয় তবে সে দু’টি প্রতিদ৷ ৷ন পাবে ৷ আর যদি কেউ ঈসা
    (আ) এর প্রতি ঈমান রাখে অতঃপর আমার প্রতিও ঈমান আসে তার জন্যেও দুটি পুরস্কার ৷
    আর গোলাম যদি৩ ৷র প্রতিপালককে ভয় করে এবং দুনিয়ার মুনিবদেরকেও মেনে চলে তবে
    সেও পাবে দু’টি পুরস্কার ৷ এ পাঠ বুখা ৷রীর ৷

    ইমাম বৃথারী (র) ইবরাহীম ইবন মুসার সুত্রে আবু হুরায়র৷ (রা) থেকে বংনিা
    করেন, নবী করীম (সা) বলেছেনঃ যে রাতে আমার মিরাজ হয়েছিল, সে রাতে মুসার সাথে
    আমার সাক্ষাত হয়েছিল ৷ অতঃপর রাসুলুল্লাহ তার বর্ননা দিয়ে বলেন, তিনি ছিলেন দীর্ঘ দেহী
    ব্যক্তি, তার চুল ফোকড়ান ছিল ৷ মনে হচ্ছিল, তিনি যেন ইয়ামান দেশীয় শ্া৷নুয৷ গোত্রের
    লোক ৷ তিনি বলেন, ঈসার সাথেও আমার সাক্ষাত হয়েছিল ৷ অতঃপর তিনি তার বর্ণনা দিয়ে
    বলেনঃ তিনি ছিলেন মধ্যম দেহী ও গৌরবর্ণেব ৷ যেন তিনি এই মাত্র হাম্মামখানা থেকে বের
    হয়েছেন ৷ ঐ রাতে আমি ইবরাহীমকেও দেখতে পেয়েছি ৷ আর তার বংশধরদের মধ্যে তার
    সাথে আমার চেহারার মিল সবচাইতে বেশী ৷ ইবরাহীম ও মুসা (আ)-এর বর্ণনায় আমরা এ
    হাদীসখানা উল্লেখ করেছি ৷ ইমাম বৃথারী মুহাম্মদ ইবন কাহীর সুত্রে ইবন উমর (রা)

    থেকে বর্ণনা করেন ৷ নবী করীম (সা) বলেছেনঃ মিবাজের রাতে আমি ঈসা, মুসা ও
    ইবরাহীমকে দেখতে পেয়েছি ৷ ঈসা পৌর বর্ণ, কৌকড়ানাে চুল এবং প্রশস্ত বক্ষ বিশিষ্ট লোক,
    মুসা বাদামী রং বিশিষ্ট, তার দেহ সুঠাম এবং মাথার চুল কৌকড়ান, যেন জাঠ গোত্রের লোক ৷

    এ হাদীসটি কেবল বুখারীতেই আছে ৷

    ইমাম বুখারী (ব) ইবরাহীম ইবন মুনযিরের সুত্রে আব্দুল্লাহ ইবন উমর (র৷ ) থেকে
    বর্ণনা করেন একদা নবী করীম (সা) লোকজনের সামনে মাসীহ্ দাজ্জালের কথা উল্লেখ
    করলেন ৷ তিনি বললেন, আল্লাহ একচক্ষু বিশিষ্ট নন ৷ শুনে রেখো, মাসীহ্ দাজ্জালের ডান চোখ
    কানা ৷ তার চোখ যেন ফুলে যাওয়া আৎগুরের মত ভাসাভাসা ৷ আমি এক রাতে স্বপ্নে আমাকে
    কাবার কাছে দেখলাম ৷ হঠাৎ সেখানে বাদামী রং এর এক ব্যক্তিকে দেখলাম ৷ তোমরা যেমন
    সুন্দর বাদামী রঙের লোক দেখে থাক তার চাইতেও বেশী সুন্দর ছিলেন তিনি ৷ তার মাথার
    সোজা চুলগুলাে তার দু’র্কাধ পর্যন্ত ঝুলছিল ৷ তার মাথা থেকে ফৌট৷ ফৌট৷ পানি ঝরে
    পড়ছিল ৷ তিনি দু’জন লোকের কাধে হাত রেখে কাবা শরীফ তাওয়ড়াফ করছিলেন ৷ আমি
    জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কো তারা জবাব দিল, ইনি হলেন মাসীহ্ ইবন মারয়াম ৷ তারপর তার
    পেছনে আর একজন লোক দেখলাম ৷ তার মাথার চুল ছিল বেশী কৌকড়ান , ডান চোখ কানা ৷
    আকৃতিতে সে আমার দেখা লোকদের মধ্যে ইবন কাতানের সাথে অধিক সাদৃশ্যপুর্ণ ৷ সে
    একজন লোকের দু’কীধে ভর করে কাবার চারদিকে ঘৃরছিল ৷ আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই
    সোকটি কে? তারা বলল, এ হল মাসীহ্ দাজ্জাল ৷ ইমাম মুসলিম এ হাদীসখানা মুসা ইবন
    উকবার সুত্রে বর্ণনা করেছেন ৷

    ইমাম বুখারী বলেন, আবদুল্লাহ্ ইবন নাফিও এ হাদীস অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ অতঃপর
    তিনি যুহরী থেকে বর্ণনা করেন, ইবন কাতান খুজাআ গোত্রের লোক, জাহিলী যুগে তার মৃত্যু
    হয় ৷ এ হাদীসে রাসুল (সা) হিদায়েতকারী মাসীহ্ ও গোমরাহকারী মাসীহ্র মধ্যে পার্থক্য বলে
    দিয়েছেন ৷ যাতে ঈসা মাসীহ্ পুনরায় আগমন করলে মুমিনগণ তার উপর ঈমান আনতে ও
    মাসীহ্ দাজ্জাল থেকে সতর্ক হতে পারেন ৷ ইমাম বুখারী আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদের সুত্রে
    আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ ঈসা (আ) এক ব্যক্তিকে চুরি
    করতে দেখে তাকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি চুরি করেছ? সে বলল, “কখনও নয় ৷ সেই সত্তার
    কসম, যিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ্ নেই ৷’ তখন ঈসা (আ) বললেন, আমি আল্লাহর প্রতি
    ঈমান আনলাম ও আমার দু’ চোখকে অবিশ্বাস করলাম ৷’ আবদুর রাজ্জাক (র) থেকেও
    অনুরুপ হাদীস মুহাম্মাদ ইবন রাফি বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম আহমদ আফ্ফানের সুত্রে আবু
    হুরায়রা (রা) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেন ৷

    এ হাদীস থেকে হযরত ঈসা (আ)-এর পবিত্র ও বলিষ্ঠ চরিত্র ফুটে উঠেছে ৷ যখন লোকটি
    আল্লাহর কসম বলল, তখন তিনি মনে করলেন যে, কোন ব্যক্তি আল্লাহ্র নামে মিথ্যা কসম
    যেতে পারে না, বরং নিজের চোখে দেখা বিষয়কে আগ্রাহ্য করে তার ওযরই গ্রহণ করলেন ৷
    তিনি বললেন, আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনছি ৷ অর্থাৎ তোমার কসমের জন্যে তোমার কথা

    সত্য বলে মেনে নিচ্ছি এবং আমার চােখকে অবিশ্বাস করছি ৷ ইমাম বুখারী (র) ইবন
    আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, তোমরা হাশরের মাঠে খালি পা,
    নগ্ন দেহ এবং খাতনা বিহীন অবস্থায় সমবেত হবে ৷ত তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন,“
    যেতা বে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছি, ঠিকশ্ব তমনিতা ৷বে দ্বিতা ৷য় বারও করবো ৷ এটা আমার
    ওায়াদ ৷ আমি তা অবশ্যই পুর্ণ করবো ৷ (২১ আম্বিয়াং : ১ :৪ )

    হাশরের দিন সর্বপ্রথম র্ষাকে কাপড় পরানাে হবে তিনি হলেন ইবরাহীম (আ) ৷ তারপর
    আমার অনুসারীদের কিছু সং খ্যককে ডান দিকে জান্নাতে এবং কিছু স খ্যককে বাম দিকে
    জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া হবে ৷ তখন আমি বলব, এরা তো আমার লোক ৷ তখন বলা হবে,
    আপনি তাদের থেকে বিদায় নেয়ার পর থেকেই তারা পিছটান দিয়েছে ৷ যেমন বলেছিলেন,
    পুণ্যবান বান্দা ঈসা ইবন মাবয়াম ৷ তার উক্তিটি হলো এ আয়াতহ্র “ আর আমি যতদিন
    তাদের মধ্যে ছিলাম, ততদিন আমি তাদের উপর সাক্ষী ছলাম ৷ এরপর আপনি যখন আমাকে
    উঠিয়ে নিলেন তখন আ ৷পনিই তাদের হেফাজতকা ৷রী ছিলেন ৷ আর আপনি তো সব কিছুর উপর
    সাক্ষী ৷ যদি আপনিত ৷দেরকে আমার দিতে চান তবে এরা তাে আপনারই বন্দো ৷ আর যদি
    আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেন, তবে আপনি নিশ্চয়ই পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় ৷
    হাদীসটি বর্ণিত সুত্রে কেবল ইমাম বুখারীই বর্ণনা করেছেন, ইমাম মুসলিম এ ত্রে বর্ণনা
    করেন নি ৷ এ ছাড়াও ইমাম বুখারী হুমায়দী সুত্রে ইবন আব্বাস (র৷ ) থেকে বর্ণনা করেন,
    তিনি হযরত ৩উমর (রা) ৫ক মিম্বারের উপর দী ড়িয়ে বলতে শুনেছেন, তিনি বলছেন, আমি নবী
    (সা) কে বলতে শুনেছি, তোমরা আমার প্রশং না করতে গিয়ে অতিশয়ােক্তি করে৷ না, যেমন
    ঈসা ইবন ম ৷রয়াম সম্পর্কে নাসারারা করেছিল ৷ আমি তাে আল্লাহর বান্দা মাত্র ৷ সুতরাং তোমরা
    আমার সম্পর্কে বলবে, আল্লাহর বান্দা ও তার রাসুল ৷

    ইমাম বুখারী (র) আবু হুরায়র৷ (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ নবী করীম (সা ) বলেছেন, তিন
    জন শিশু ব্যতীত আর কেউ দােলনায় কথা বলেন নি ৷ (১) হযরত ঈসা ( ২) বনী ইসরাঈলের
    মধ্যে এক ব্যক্তি ছিল, যাকে জুরাইজ বলে ডাকা হত ৷ একদা সে নামাযরত থাকা অবস্থায় তার
    না এসে তাকে ডাকল ৷ যে তা ৷,বল আমি কি ডাকে সাড়া দিব, না নামাঘে নিমগ্ন থাকর ৷ জবাব
    না পেয়ে তার মা বলল, ইয়৷ আল্লাহ! ব্যভিচ৷ রীণীর চেহারা না দেখা পর্যন্ত তুমি একে মৃত্যু দিও
    না ৷ জুরাইজ তার ইবাদত থানায় থাকতেন ৷ একবার তার কাছে এক মহিলা আসল ৷ সে অসৎ
    উদ্দেশ্যে তার সাথে কথা বলল ৷ কিভু জুরাইজ তাতে রাজী হলেন না ৷ অতঃপর মহিলাটি
    একজন রাখালের নিকট গেল এবং তাকে দিয়ে মনােবাসনা পুরণ করল ৷ পরে সে একটি পুত্র
    সন্তান প্রসব করল ৷ তাকে জিজ্ঞেস করা হল, এটি করি সন্তান ? ত্রীলােকটি বলল , জুরাইজের ৷
    লোকেরা তার কাছে আসল এবং তার ইবাদত খানাটি ভেঙ্গে দিল ৷ আর তাকে নিচে নামিয়ে
    আনল ও পালিপালাজ করল ৷ তখন জুরাইজ উযু করে সালাত আদায় করলেন৪ এরপর নবজাত
    শিশুটির নিকট এসেত তাকে জিজ্ঞেস করলেনং : হে শিশু তোমার পিতা ণ্ক৷ সে জবাব দিল
    অমুক রাখাল আমার পিতা ৷ তখন বনী ইসরাঈলের লোকেরা জুরাইজকে বলল, আমরা

    আপনার ইবাদতখানাটি সোনা দিয়ে তৈরি করে দিচ্ছি ৷ জুরাইজ বললেন, না, তবে কাদা মাটি
    দিয়ে তৈরি করে দিতে পার ৷ (৩) বনী ইসরাঈলের একজন মহিলা তার শিশুকে দুধ পান
    করাচ্ছিল ৷ তার কাছ দিয়ে একজন সুদর্শন পুরুষ আরোহী চলে গেল ৷ মহিলাটি দোয়া করল ,
    ইয়া আল্লাহ! আমার ছেলেটিকে তার মত বানাও ৷ শিশুঢি তখনই তার মায়ের স্তন ছেড়ে দিল
    এবং আরােহীর দিকে মুখ ফিরিয়ে বলল, ইয়া আল্লাহ ! আমাকে তার মত করে৷ না ৷ এরপর মুখ
    ফিরিয়ে মায়ের দুধ পান করতে লাগল ৷ আবু হুরায়রা (বা) বলেন, আমি যেন নবী কবীম
    (না)-কে দেখতে পাচ্ছি, তিনি নিজের আৎগুল চুষে দেখাচ্ছেন ৷ এরপর সেই মহিলাটির পাশ
    দিয়ে একটি দাসী চলে গেল ৷ মহিলাটি বলল, ইয়া আল্লাহ ! আমার শিশুটিকে এর মত করো
    না ৷ শিশুটি তৎক্ষণাৎ মায়ের স্তন ছেড়ে দিয়ে বলল, ইয়া আল্লাহ ৷ আমাকে তার মত কর ৷ মা
    জিজ্ঞেস করল, তা কেন? শিশুটি জবাব দিল, সেই আরোহী লোকটি ছিল বড় জালিম, আর এ
    দাসীটিকে লোকে বলছে তুমি চুরি করেছ, যেনা করেছ ৷ অথচ সে এসবের কিছুই করেনি ৷

    ইমাম (র) বুখারী আবু হুরায়রা (বা) থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেনআমি শুনেছি,
    রাসুলুল্পাহ (সা) বলেছেনঃ আমি মারয়ামের পুত্র ঈসার বেশী নিকটতম ৷ আর নবীগণ যেন
    পরস্পর বৈমাত্রেয় ভাই, অর্থাৎ বাপ এক, মা ভিন্ন ভিন্ন ৷ আমার ও ঈসার মাঝখানে কোন নবী
    নেই ৷ এই সুত্রে ইমাম বুখারীই-এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ৷ ইবন হব্বান এবং ইমাম আহমদ
    হাদীসটি ঈষৎ শাব্দিক পরিবর্ত্যসহ বর্ণনা করেন ৷ তবে ইমাম আহমদের বর্ণনায় অতিরিক্ত
    আছে, কিয়ামতের পুর্বে ঈসা পুনরায় দুনিয়ার অবতরণ করবেন ৷ যখন তাকে দেখবে তখন
    তোমরা চিনতে পারবে ৷ কারণ তিনি হবেন মাঝারি গড়নের ৷ গায়ের রং লালচে সাদা ৷ মাথার
    চুল সোজা ৷ মনে হবে যেন মাথার চুল থেকে পানি টপকে পড়ছে ৷ যদিও তিনি পানি ষ্ংপর্শ
    করেন নি ৷ তিনি এসে ক্রুশ ভাঙ্গবেন, শুকর হত্যা করবেন ৷ জিযিয়া কর রহিত করবেন ৷
    একমাত্র ইসলাম ছাড়া সে যুগের সকল ধর্ম ও মতবাদ খতম করবেন ৷ আল্লাহ তার হাতে
    মিথুব্রুক মাসীহ দাজ্জালকে ধ্বংস করবেন ৷ সমস্ত পৃথিবী শান্তি ও নিরাপত্তার ভরে যাবে ৷ এমনকি
    উট ও সিংহ, বাঘ ও গরু এবং নেকড়ে ও বকরী একই সাথে একই মাঠে বিচরণ করবে ৷
    কিশোর বালকগণ সাপের সাথে খেলা করবে ৷ কিন্তু কেউ কারও ক্ষতি করবে না ৷ যতদিন
    আল্লাহর ইচ্ছা ততদিন তিনি পৃথিবীতে থাকবেন ৷ তারপর তিনি স্বাভাবিকভাবে ইনতিকাল
    করবেন এবং মুসলমানরা র্তার জানাযা পড়বে ৷ আবুদাউদ হামমাম ইব ন ইয়াহ্য়া থেকে
    অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ হিশাম ইবন উরওয়া আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে,
    রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ঈসা (আ) পৃথিবীতে চল্লিশ বছর অবস্থান করবেন ৷ এই কিতাবের
    মালাহিম (যুদ্ধ বিগ্রহ) অধ্যায়ে ঈসা (আ)-এর অবতরণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ৷
    তাফসীর গ্রন্থেও আমরা সুরা নিসার এই আয়াত : “কিতাবীদের মধ্যে প্রত্যেকে তার মৃত্যুর
    পুর্বে তার প্রতি ঈমান আনবেই এবং কিয়ামতের দিন যে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে ( ৪নিসাঃ
    ১ ৫৯)-এর তাফসীর প্রসঙ্গে এ সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে ৷

    রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ঈসা (আ) এর পুনরায় দুনিয়ার আগমন কিয়ামতের অন্যতম
    লক্ষণ ৷ দামিশকের শুভ্র মিনারায় উপর তিনি অবতরণ করবেন ৷ তিনি যখন অবতরণ করবেন
    তখন ফজরের নামায়ের ইকামত হতে থাকবে ৷ র্তাকে দেখে মুসলমানদের ইমাম বলবেন, হে
    রুহুল্লাহ! সম্মুখে আসুন ও নামায়ের ইমামতি করুন ! ঈসা (আ) বলবেন, “না, আপনারা একে
    অন্যের উপর নেতা, এ সম্মান আল্লাহ এ উম্মতকেই দান করেছেন ৷” অন্য বর্ণনায় এসেছে, ঈসা
    (আ) ইমাম ছাহেবকে বলবেন, আপনিই ইমামতি করুন ৷ কেননা, আপনার জন্যে ইকামত
    দেয়া হয়েছে ৷ অতঃপর ঐ ইমামের পেছনে তিনি সালাত আদায় করবেন ৷ নামায শেষে তিনি
    বাহনে আরোহণ করে মাসীহ দাজ্জালের সন্ধানে বের হবেন এবং মুসলমানরা তীর সাথে
    থাকবেন ৷ দাজ্জালকে লুদ তোরণের নিকট পেয়ে সেখানেই তিনি নিজ হাতে তাকে হত্যা
    করবেন ৷ ইতিপুর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দামিশকের পুর্ব পার্শে এই মিনার যখন শুভ্র পাথর
    দ্বারা নির্মাণ করা হয় তখনই দৃঢ় আশা করা হয়েছিল যে, এখানেই তিনি অবতরণ করবেন ৷ এই
    স্থানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর নাসারাদের অর্থ দ্বারাই এটি নির্মাণ করা হয়েছিল ৷ ঈসা (আ) এখানে
    অবতরণ করে শুকর নিধন করবেন ৷ ক্রুশ তেৎগে চুরমার করবেন এবং ইসলাম ছাড়া অন্য কোন
    দীন তিনি গ্রাহ্য করবেন না ৷

    ঈসা (আ) রাওহা থেকে হজ্জ কিত্বা উমরা অথবা উভয়টির নিয়ত করে বের হবেন এবং
    তা’ সম্পন্ন করবেন ৷ চল্লিশ বছর জীবিত থাকার পর তিনি ইনতিকাল করবেন ৷ তাকে রাসুলুল্লাহ
    (না)-এর হুজরায় রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও তীর প্রথম দুই খলীফার নিকট দাফন করা হবে ৷ এ
    সম্পর্কে ইবন আসাকির তীর ইতিহাস গ্রন্থ ঈসা (আ)-এর বর্ণনা প্রসংগে হযরত আয়েশা (রা)
    বর্ণিত মারকু’ হাদীসে উল্লেখ করেছেন যে, হযরত ঈসা (আ)-কে রাসুলুল্লাহ (না)-এর ছজরা
    শরীফের মধ্যে রাসুলুল্লাহ, আবু বকর ও উমরের সাথে দাফন করা হবে ৷ কিন্তু এই হাদীসের
    সনদ বিশুদ্ধ নয় ৷ ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী আব্দুল্লাহ ইবন সালাম (বা) থেকে বর্ণনা করেন
    যে, তাওরাত কিভাবে মুহাম্মদ (সা) ও ঈসা ইবন মারয়ামের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে ৷
    সেখানে আছে যে, হযরত ঈসাকে মুহাম্মদ (স)এর সাথে দাফন করা হবে ৷ এ হাদীসের
    অন্যতম রাবী আবু মওদুদ মাদানী বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হুজরায় একটি কবর পরিমাণ
    স্থান খালি আছে ৷ ইমান তিরমিযী (র) এ হাদীসকে হাসান বলেছেন ৷ ইমাম বুখারী (র) বলেন,
    আমার মতে এ হাদীসটি বিশুদ্ধ নয় ৷ ইমাম বুখারী সুলায়মান থেকে বর্ণনা করেন যে, হযরত
    ঈসা ও মুহাম্মদ (না)-এর মধ্যে নবুওভের বিরতিকাল ছয় শ’ বহ্ব ৷ কাতদাের মতে, পাচ শ’
    ষাট বহ্ব ৷ কারও মতে পাচ শ’ চল্লিশ বহ্ব ৷ যাহ্হাকের মতে, চার শ’ ত্রিশ বছরের কিছু বেশী
    কিন্তু প্রসিদ্ধ মত ছয় শ’ বছর ৷ তবে কেউ কেউ বলেছেন, চান্দ্র বছরের হিসেবে ছয় শ’ বিশ
    বছর এবং সৌর বছর হিসেবে ছয় শ’ বছর ৷

    ইবন হিব্বান তার সহীহ গ্রন্থে ঈসা (আ)ষ্এর উষ্মতগণ কত কিং সঠিক দীসের উপরে ও
    নবীর আদর্শের উপরে টিকেকাি সে সম্পর্কে আংলাচনা করেছেন ৷ তিনি আবুদ দারদা (বা)
    থেকে বর্ণনা করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন : আল্লাহ দাউদ নবীকে তার অনুসারীদের মধ্যে
    মৃত্যু দেন ৷ কিত্তু এতে তার অনুসারীরা বিপথপামীও হয়নি, দীনও পরিবর্তন করেনি ৷ আর ঈসা

    আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (২য় খণ্ড) ২৫-

    মাসীহ্র অনুসারীরা তার বিদায়ের পরে দু শ বছরত তার নীতি ও আদর্শের উপরে টিকে ছিল ৷
    ইবন হিব্বান এ হাদীসকে সহীতন্বললেও মুলত এর সনদ পরীব পর্যায়ের ৷ ইবন জারীর মুহাম্মদ
    ইবন ইসহাকের বরাত দিয়ে লিখেছেন যে, ঈসা (আ)-কে আসমানে তুলে নেয়ার পুর্বে তিনি
    হাওয়ারীগণকে উপদেশ দিয়েছেলেন, তারা যেন মানুষকে এক ও লা-শরীক আল্লাহর ইবাদতের
    দিকে ডাকতে থাকে ৷ তিনি তাদের প্রত্যেককে সিরিয়া ও প্ৰাচ্য-প্রভীচ্যের জনগোষ্ঠির এক এক
    এলাকা দাওয়াতী কাজের জন্যে নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন ৷

    বর্ণনাকারীগণ বলেছেন যে, সে এলাকায় যে হাওয়ারীকে নাি,হাাগ করা হয়েছিল, তিনি সেই
    এলাকার অধিবাসীদের সাথে তাদের নিজ ভাষায় কথা বলতেন ৷ অনেক ঐতিহাসিক বলেছেন,
    হযরত ঈসা (আ) এর নিকট থেকে চার জন লোক ইনজীল উদ্ধৃত করেছেন ৷ তারা হলেন লুক
    মথি, মার্কস ( মার্ক) ও ইউহান্না (যোহন) ৷ কিন্তু এই ইনব্জীল চ তুষ্টয়ের মধ্যে একটির সাথে
    আর একটির যথেষ্ট গরমিল বিদ্যমান ৷ একটির মধ্যে বেশী ণ্’তা আর একটিতে কম ৷ উক্ত চার
    জনের মধ্যে মথি ও ইউহান্না হযরত ঈসার যুগের এবং তারা তাকে দেখেছিলেন ৷ মার্কা ও লুক
    তার সমসামায়িক ছিলেন না, বরং৩ তারা ছিলেন ঈসার শিষরুংার শিষ্য ৷ তবে তারা মাসীহর
    উপর যথার্থ ঈমান আসেন ও তাকে সত্য নবী বলোীকার করেন ৷ দামিশকের এক ব্যক্তি ঈসা
    মড়াসীহ্র উপর ঈমান আনেন, তার নাম যায়ন ( এে১) ৷ তবে তিনি গোল নামক জনৈক
    ইহুদীর ভয়ে দ মিশকেব পুর্ব পেটে পীর্জার নিকটে একটি গুহায় আত্মগোপন করে থাকেন ৷
    উক্ত ইহুদী ছিল অত ব্রুড়াচারী ও ঈসা (আ) এর প্রতি এবং তার আদর্শের প্রতি চরম বিদ্বেষী ৷ এই
    ব্যক্তির এক ভাইপো ঈসা (আ)-এর উপর ঈমান আনার কারণে সে তার মাথার চুল মুড়িয়ে
    দেয় ৷ শহরের রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরায় এবং পাথর মেরে তাকে হত্যা করে ৷ একদিন সে শুনতে
    পেল ঈসা (আ) দ মিশক অভিমুখে রওনা হয়েছেন ৷ তখন সে তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে
    খচ্চরে আরোহণ করে সেদিকে বেরিয়ে পড়ল ৷

    কাওকাব নামক স্থানে পৌছে সে ঈসা (আ)-কে দেখতে পেল ৷ ঈসা (আ) এর শিষ্যদের দিকে
    অগ্রসর হতেই এক ফেরেশতা এসে পাখা দিয়ে আঘাত করে তার চোখ কানা করে দিলেন এ
    ঘটনা প্রত্যক্ষ করে তার অন্তরে ঈসা (আ) এর প্রতি বিশ্বাস জন্মায় ৷ তখন সে ঈসাা(অ ) এর
    নিকটগ্ গিয়ে নিজের অপরাধাীকার করে ঈমান আসে ঈসা (আ)ত তার ঈমান গ্রহণ করলেন ৷
    অত০পর সে ঈসা (আ) কে৩ তার চক্ষুদ্বয়ের উপর হাত বুলিয়ে দিতে অনুরোধ করল, যাতে
    আল্লাহ তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেন ৷ ঈসা (আ) বললেন, তুমি যায়ন-এর কাছে ফিরে যাও ৷
    দামিশকের পুর্ব প্রান্তে লম্বা বাজারের পার্শে তাকে পাবে ৷ সে তোমার জন্যে দােয়া করবে ৷ ঈসা
    (আ)-এর কথামত যে সেখানে এসে যায়নকে পেল ৷ যায়ন তার জন্যে দোয়া করলে সে
    দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল ৷ গোল আম্ভবিকভাবে ঈসার প্রতি ঈমান এসেছিলেন তিনি তাকে আল্লাহর
    বন্দো ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন ৷ তার নামে দামিশকে একটি গীর্জা ভৈত বি করা হয় ৷
    গোলের গীর্জা নামে খ্যাত এই গীর্জাটি সাহাবাদের যুগে দামিশক বিজয়কালেও বিদ্যমান ছিল ৷
    পরবর্তীকালে এটা ধ্বংস হয়ে যায় ৷ সে ইতিহাস আমরা পরে বলব ৷

    পরিচ্ছেদ

    হযরত ঈসা মাসীহ (আ) কে আসমানে উঠানাের পর তার সম্পর্কে তার অনুসারীদের মধ্যে
    বিভিন্ন মতামতের সৃষ্টি হয় ৷ ইবন আব্বাসসহ প্রথম যুগের অনেক মনীষী এ সম্পর্কে বর্ণনা
    করেছেন ৷ আমরা সুরা সাফ এর আয়াত “পরে আমি মুমিনদেরকে শক্তিশালী করলাম
    তাদের শত্রুদের মুকাবিলায়; ফলে৩ারা বিজয়ী হল ৷” (৬১ সাফ৪ ১৪ )-এর ব্যাখ্যার ইবন
    আব্বাস (বা) প্রমুখ বলেছেন, তাদের একদল বিশ্বাস করে যে, তিনি আল্লাহ্র বান্দা ও তার
    রাসুল ৷ তিনি আমাদের মধ্যে ছিলেন, এখন তাকে আসমানে ভুলে নেয়া হয়েছে ৷ দ্বিতীয় দল
    বলে, তিনি হলেন স্বয়ং আল্লাহ ৷৩ তৃতীয় দলের মতে ,তিনি আল্লাহর পুত্র ৷ বন্তুত প্রথম দলের
    বিশ্বাসই যথার্থ ৷ অন্য দল দু’টির বক্তব্য জঘন্য কুফ্রী তাদের মতবিরোধ সম্পর্কে আল্লাহ
    বলেন : “অত০পর দলগুলো নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করল, সুতরাং দুর্তোগ কাফিরদের
    মহাদিবস অ ৷গামনক লে ৷” (১৯ মাবৃয়ামঃ ৩৭)

    এ ছাড়া ইনজীলের৷ চা রজন বর্ণনাকা রীর বর্ণনা উদ্ধৃত করার মধ্যেও কম, বেশী পরিবর্তন ও
    পরিবর্ধন করা হয়েছে৷ তারপর হযরত ঈসা (আ)-এব তিনশ বছর পর ইনজীল ও ঈসায়ী
    ধর্মের উপর বিরাট দুর্যোগ নেমে আসে ৷ চার দলের চারজন আর্ক বিশপ, পাদ্রী ও
    সাধু সন্নাসীগণ মাসীহ সম্পর্কে এত অসং থ্য মতে বিভক্ত হয়ে পড়েন, যা নির্ণয় করা কঠিন হয়ে
    পড়ে ৷ তারা তাদের এ বিরোধের ফয়সালড়ার জন্যে কনষ্টান্টিনোপল নগরীর প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট
    কনক্টান্টাইনের শরণাপন্ন হয় ৷ এটা ছিল তাদের প্রথম মহাসম্মেলন ৷ সম্রাট সবকিছু শুনে
    অধিকাৎশ দল যে মতে র উপর ঐকমত্য পোষণ করে, সে মতকেই গ্রহণ করেন ৷ এই দলের
    নামকরণ করা হয় মালাইক৷ (মালাকিয়া) ৷ এ মতের বাইরে যারা ছিল তাদেরকে নির্যাভীত
    করেন ও দেশাম্ভরি৩ করেন ৷ আবদুল্লাহ ইবন আদয়ুসের অনুসারী যারা ঈসা (আ) কে আল্লাহর
    বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন তারা একঘরে হয়ে পড়েন ৷ তারা বিভিন্ন পাহাড়ী
    অঞ্চলে ও উপত্যকায়শ্চ গিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন ৷ তারা সেখানে ইবাদতখানা , গীর্জা ও
    উপাসনালয় তৈরি করেন এবং সন্যুাসী জীবন-যাপন করতে থাকেন ৷ এরা উপরোক্ত
    ফের্কাসমুহের সংশ্রব থেকে দুরে থাকেন ৷ অপরদিকে মালাইক৷ সম্প্রদায় গ্রীক স্থাপত্যের
    অনুকরণে বিভিন্ন জায়গায় বিরাট বিরাট গীর্জ৷ স্থাপন করে ৷ তারা তাদের কিবলা পুর্ব দিকে
    পরিবর্তন করে , যদিও কিবলা ইতিপুর্বে উত্তরে জাদাইর দিকে ছিল ৷

    বেথেলহাম ও কুমামার ভিত্তি স্থাপন

    হযরত ঈস৷ মাসীহ (আ) যে স্থানে জন্মগহণ করেছিলেন যে স্থানে সম্রাট কনপ্টান্টাইন
    একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন, যার নাম রাখা হয় বায়তৃ লাহাম (বেথেলহাম) ৷ অপর দিকে
    সম্রাটের মা হায়লান৷ কথিত ক্রুশবিদ্ধ ঈসার কবরের উপর আর একটি প্রাসাদ তৈরি করেন, যার
    নাম রাখা হয় কুমামা ৷ ইহুদীদের প্রচারণায় পড়ে৩ ৷রাও বিশ্বাস করত যে, নবী ঈসা মাসীহকেই
    ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে ৷ কিন্তু এই মত পােষণকরীি পুর্বের ও পরের সকলেই কাফির ৷ এরা বিভিন্ন
    রকম মনগড়া বিধি বিধান ও আইন কানুন তৈরি করে ৷ এসব ৰিধানের মধ্যে ছিল পুরাতন

    নিয়ম তথা তাওরাতের বিরোধিতা করা ৷ তারা তাওরাতে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ ও হড়ারাম বস্তুকে
    হালাল করে নেয়, যেমন শুকর খাওয়া ৷ তারা পুর্বমুখী হয়ে উপাসনা করে ৷ অথচ ঈসা-মাসীহ
    বায়তুল মুকাদ্দাসের শুভ্র পাথরের দিকে মুখ করে ছাড়া ইবাদত করতেন না ৷ শুধু তিনিই নন
    বরং মুসা (আ)-এর পরবর্তী সকল নবী বায়তৃল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে নামায আদায়
    করেছেন ৷ এমনকি শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (না)-ও হিজরতের পরে যােল কিংবা সতের মাস
    পর্যন্ত বায়তুল মুকাদ্দাসকে কিবলা করে নামায আদায় করেছেন ৷ পরে তিনি আল্লাহর হুকুমে
    ইররাহীম খলীল (আ) কর্তৃক নির্মিত কাবা ঘরের দিকে ফিরে নামায পড়েন ৷

    তারা গীর্জাগুলোতে মুর্তি স্থাপন করে অথচ ইতিপুর্বে গীর্জায় কখনও কোন মুর্তি রাখা হতো
    না ৷ তারা এমন সব আকীদা তৈরি করে যা শিশু, মহিলা ও পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই বিশ্বাস
    করত ৷ এই আকীদার নাম ছিল আমান’ ৷ প্রকৃত পক্ষে এটা ছিল সম্পুর্ণ কুফরী আকীদা ও
    বিশ্বাস ভঙ্গের নামাম্ভর ৷ মালাকিয়া ও নাসতৃরিয়া দলভুক্ত সকলেই ছিল নাসতৃরাস এর
    অনুসারী ৷ এরা ছিল দ্বিতীয় মহা সম্মেলনপন্থী ৷ আর ইয়াকুবিয়া সম্প্রদায় হচ্ছে ইয়াকুব আল
    বারাদায়ীর অনুসারী ৷ এরা হল তৃতীয় মহা সমাবেশ পন্থী ৷ এ দুই দলই প্রথমােক্ত দলের একই
    আকীদা পোষণ করত, যদিও খুটিনাটি বিষয়ে পারস্পরিক বিরোধ ছিল ৷ আমি তাদের কুফরী
    আকীদার কথা বর্ণনা করছি ৷

    আর কুফরের বনাি করার কেউ কাফির হয় না ৷ তাদের আকীদার বাক্যগুলোর মধ্যে
    এমন সব জঘন্য শব্দ আছে, যার মধ্যে কুফরীর ভাব অতি প্রকট এবং তা অত্যন্ত বিভ্রাস্তিকর ৷
    এ আকীদা মানুষকে জ্বলম্ভ অগ্নিকুণ্ডে পৌছিয়ে দেয় ৷ তাদের বলে থাকে যে আমরা এক
    আল্লাহ্কে ৰির্শ্বসে কবি যিনি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক, আসমান ও যমীনের দৃশ্যমান, অদৃশ্যমান
    সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, ঐ একই প্ৰতিপালককে আমরা মানি ৷ মাসীহ সেই এক আল্লাহ্রই একক
    পুত্র ৷ অনাদিকালেই পিতা থেকে তার জন্য ৷ তিনি নুর থেকে সৃষ্ট নুর ৷ সদা প্রভু থেকে তিনিও
    সদা প্রভু ৷ তিনি জন্মলাভ করেছেন, সৃষ্ট হননি ৷ সেই মুল উপাদানে তিনি পিতার সমকক্ষ যার
    দ্বারা সবকিছু সৃষ্ট হয়েছে ৷ আমাদের ললাটলিপি অনুযায়ী আমরা মানুষ ৷ আমাদের মুক্তির জন্যে
    তিনি আসমান থেকে অবতরণ করেছেন এবং পবিত্র আত্মা দ্বারা দেহ ধারণ করেছেন ও কুমারী
    মার য়ামের গর্ত থেকে মানবরুপে আত্মপ্রকাশ করেছেন ৷ এরপর মালাতিস নবােতীর আমলে
    ক্রুশৰিদ্ধ হয়েছেন, দুঃখ পেয়েছেন ৷ তারপরে সমাধিস্থ হয়েছেন ৷ সমাধিস্থু হওয়ার তিন দিন পর
    কবর থেকে বেরিয়ে এসেছেন এবং আসমানে উঠে গিয়ে পিতার ডান পাশে বসে আছেন ৷
    আবার তিনি দেহ ধারণ করে আসবেন ৷ জীবিত ও মৃতদের খোজ খবর নিবেন ৷ তার রাজত্বের
    ক্ষয় নেই ৷ তিনি পবিত্র আত্মা ৷ তিনি প্রভু, জীবন দানকারী ৷ পিতার কাছ থেকে এসেছেন ৷
    পিতার সাথে থাকবেন ৷ পুত্র সিজদা পাওয়ার যোগ্য ৷ নবীকুলের মধ্যে দোলনয়ে কথা বলার
    :ণীরব তিনিই লাভ করেছেন৷ আল্লাহর সাথে পবিত্র ও পুর্ণাত্প সম্পর্ক তার ৷ সমস্ত পাপ ক্ষমা

    করার জন্যে তিনি প্রতিশ্রুতিরদ্ধ ৷ তিনি চিরঞ্জীব, মৃতকে জীবন দানকারী, সর্বদা বিরাজমান ও
    যিম্মাদার ৷

    অতীতকালের কাহিনী

    অর্তীতকাল বলতে এখানে রনী ইসরাঈলের যুগ থেকে আরবের জাহিলী যুগের পুর্ব পর্যন্ত
    সময় বুঝান হয়েছে ৷ এই সময়কালের বড় বড় ঘটনা এখানে আলোচনা করা হবে ৷ আর
    আরবের জাহিলী যুগ সম্পর্কে এই অধ্যায়ের পরে আলোচনা আসবে ৷ আল্লাহ্র বাণী : পুর্বে যা
    ঘটেছে তার সংবাদ আমি এভাবে তোমার নিকট বিবৃত করি এবং আমি আমার নিকট হতে
    তোমাকে দান করেছি উপদেশ (২০ তাহা : ৯৯) ৷ সুরা ইউসুফে আল্লাহ বলেন, “আমি তোমার
    নিকট উত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি, ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট এই কুরআন প্রেরণ করে; যদিও
    এর পুর্বে তুমি ছিলে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ৷ (১২ ইউসুফ ও ৩ )

    “ওরা তোমাকে যুল-কারনায়ন সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে ৷ বল, আমি তোমাদের নিকট তার
    বিষয় বর্ণনা করব ৷ আমি তাকে পৃথিবীতে কর্তৃতু দিয়েছিলাম এবং প্রতোক বিষয়ের
    উপায়-উপকরণ দান করেছিলাম ৷ অতঃপর সে এক পথ অবলম্বন করল ৷ চলতে চলতে সে
    যখন সুর্যের অস্তগমন স্থানে পৌছল তখন সে সুর্যকে এক পংকিল জলাশয়ে অস্তপমন করতে
    দেখল এবং যে সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল ৷ আমি বললড়াম, হে যুল কারনায়না

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ হযরত ঈস্য (আ) কে আসমানে উঠিয়ে নেয়ার বর্ননা Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.