Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ২ » হযরত লুকমান (অ) এর ঘটনা

হযরত লুকমান (অ) এর ঘটনা

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • হযরত লুকমান (আ)-এর ঘটনা

    আল্লাহ তাআলা বলেন

    “আমি লুকমানকে জ্ঞান দান করেছিলাম এবং বলেছিলাম যে, আল্লাহর প্ৰতি কৃতজ্ঞতা
    প্রকাশ কর ৷ যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে তো তা করে নিজেরই জন্যে এবং কেউ অকৃতজ্ঞ
    হলে আল্লাহ তো অভাবমুক্ত, প্ৰশংসার্চু ৷ স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে
    বলেছিল, হে বৎসৰু আল্লাহর কোন শ্ারীক করে৷ না, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলুম ৷ আমি তো
    মানুষকে তার পিতামাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি ৷ মা সন্তানকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ
    করে গর্ভে ধারণ করে এবং তার দুধ ছ ডান হয় দুবছরে ৷ সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার
    পিতামাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও ৷ প্রত্যাবর্তন তো আমারই নিকট ৷ তোমার ৷পতামা৩ ৷ যদি
    তোমাকে পীড়াপীড়ি করে আমার সমকক্ষ দী ড় করাতে, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই ৷

    তুমি তাদের কথা মানাে না তবে পৃথিবীতে তাদের সাথে বসবাস করবে সৎভারে এবং যে
    বিশুদ্ধচিত্তে আমার অভিমুথী হয়েছে তার পথ অবলম্বন কর ৷ অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন
    আমারই নিকট এবং তােমর৷ যা করতে সে বিষয়ে আমি ৷৩ আমাদেরকে অবহিত করব ৷ হে বৎসা
    কে ন বস্তু যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয় এবং সেটি যদি থাকে ৷ শলাগওে অথবা আকাশে
    কিংবা মাটির নিচে আল্লাহ তাও উপস্থিত করবেন ৷ আল্লাহ সুক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত ৷ হে বৎস
    সাল ৷ত কায়েম কর সৎ কর্মের নির্দেশ দেবে আর অসৎ কমে নিষেধ করবে এবং আপদে বিপদে
    ধৈর্যধারণ করবে ৷ এটিই তো দৃঢ় সং কল্পের কাজ ৷ অহংকার বলে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করবে
    না এবং পৃথিবীতে উদ্ধ৩ ৩াবে বিচরণ করবে না ৷ নিশ্চয আল্লাহ কোন ট্রদ্ধত অহং কারীকে পছন্দ
    করেন না ৷

    তুমি পা ফেলবে সংযততাবে এবং তোমার কণ্ঠস্বর নিচু কর ৷ নিশ্চয় সুরের মহুধ্য গর্দভের
    সুরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর ৷”

    আলোচ্য লুকমান হলেন লুকমান ইবন আনকা ৷ইবন সাদুন ৷ কেউ কেউ বলেন, লুকমান
    ইবন ছারান ৷ শেষোক্ত ম৩ ৩টি বর্ণনা ৷করেছেন সুহায়লী ইবন জা হ্ৰুা৷ৰু৷ ;নঃ কুতাযবী থেকে ৷ সুহায়লী
    বলেন, লুকমান ছিলেন আযল৷ গোত্রের নুবীয় স ৷ম্প্রদায়ের লোক ৷ আমি বলি, লুকমান একজন
    ইবাদতগুযার, বাশ্মী, প্ৰজ্ঞাবান ও পুণ্যবান ব্যক্তি ৷ কেউ কেউ এও বলেছেন যে, লুকমান
    ছিলেন হযরত দাউদ (আ) এর যুগের একজন কাযী ৷ আল্লাহই ভাল জানেন ৷

    সুফিয়ান ছাওরীইবন আব্বাস (বা) সুত্রে বলেন, লুকমান ছিলেন জনৈক আবিসিনীয
    দাস, পেশায় ৷ মাজার বা সুএধর কাতাদ৷ আব্দুল্লাহ ইবন ষুবায়র (রা ) সত্রে বর্ণনা করেন,
    তিনি বলেছেন, আমি জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রা)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, লুকমান
    সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত আপনাদের অভিমত কি নাজ্জার বা সুত্রধর তিনি বললেন, লুকমান ছিলেন
    খর্বাকৃতি এবং নুবী গোত্রন্থিত চ্যাপ্টা নাক বিশিষ্ট লোক ৷ ইয়াহয়৷ ইবন সাঈদ আনসড়ারী সাঈদ
    ইবন মুসায়্যাব থেকে বর্ণনা ৷করেন লুকমান ছিলেন মিসরীয় কৃষ্ণকায় লেকে ৷ তার ওষ্ঠাধর ছিল
    যে টা ও পুরু; আল্লাহ তা আলা৩ তাকে হিকমত ও প্ৰজ্ঞা ৷দিয়েছিলেন, নবৃওত দান করেন নিা
    আওযায়ী বলেন, আবদুর রহমান ইবন হারমালা বলেছেন জনৈক কৃষাঙ্গ ব্যক্তি সাঈদ ইবল
    মুসায়্যাব (রা)-এর নিকট এসে কিছু যাঞা করলেন তিনি বললেন, তুমি কষ্ণাঙ্গ বলে দুঃখ
    করে৷ না ৷ কারণ, তিনজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি শ্রেষ্ঠতম মানুষদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ৷ তারা হলেন,
    হযরত বিলাল (বা), হযরত উমার (রা) এর আজাদকৃত দাস মাহজা ৷র৷ ) এবং লুকমান
    হাকীম ৷৩ ততীয় লুকমান ছিলেন কৃষ্ণক ৷য় নুবীয় ৰ্ষ্ শোদ্ভুত পুরু ওষ্ঠাধর বিশিষ্ট শ্লাক ৷

    তাফসীরকার মুজা ৷হিদ (র) থেকে বর্ণিত, লুকমান ছিলেন কৃষ্ণকায় ক্রী৩ তদাস ৷ ৫ঠ ট দুটো
    পুরু এবং পা দুটো ফাট৷ ৷ এক বর্ণনায় আছে,৩ তিনি ছিলেন চ্যাপ্টা পা বিশিষ্ট ৷

    উমর ইবন কায়স বলেন, লুকমান ছিলেন একজন কৃষ্ণকায় ক্রীতদাস ৷ কোট দ টো পুরু
    পা দু’টো চ্যাপ্টা ৷ তিনি যখন লোকজনকে উপদেশ দিচ্ছিলেন এমন সময় একজন লোক এ
    বলল, আপনি না আমার সাথে অমুক অমুক স্থানে বকরী চরিয়েছিলেন? তিনি বললেন , ভুা৷স ;

    লোকটি বলল, তাহলে আমি এখন যা দেখছি, এ পর্যায়ে আপনি উন্নীত হলেন কেমন করে?
    তিনি উত্তর দিলেন, সত্য বলা এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে মৌনতা অবলম্বনের মাধ্যমে ৷ এ
    বর্ণনাটি ইবন জারীরের ৷ ইবন আবী হাতিম আবদুর রহমান ইবন আবী ইয়াষীদ ইবন জাবির
    থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, লুকমান হাকীমের হিকমত ও প্রজ্ঞার বদৌলতে আল্লাহ
    তা আলা তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছেন ৷ত তার পুর্ব পরিচিত এক ব্যক্তি তাকে দেখে বলল,
    আপনি কি অমুকের ক্রীত দাস ছিলেন না? আপনি কি পুর্বে বকরী চরাতেন না? তিনি বললেন
    হ্যা, লোকটি বলেন, কিসে আপনাকে আমার দেখা এ পর্যায়ে উন্নীত ৩করল? তিনি বললেন,
    তকদীরের লিখন, আমানতদারী, সতাবাদিতা ও অপ্রয়োজনীয় বিষয় বর্জন ৷

    আফরার আযাতকৃত দাস উমর থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন এক ব্যক্তি লুকমান হাকীমের
    নিকট উপস্থিত হয় এবং সে বলে আপনিতে ইারনী নুহাস গোত্রের ক্রীত দাস লুকমড়ান?৩ তিনি
    বললেন, হ্যা ৷ লোকটি বলল, আপনি সেই কৃষ্ণকায় বকরী চরানাে ব্যক্তিই৫ তা? তিনি বললেন
    আমার কালােরর্ণ বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ আমার কোন বিয়ঢিয় মাপনাকে বিস্মিত করছে? সে
    বলল, তা এই যে লোকজন আপনার কছে জড়ো হচ্ছে আপনার দরজা ওদেরকে আচ্ছাদিত
    করছে এবংঅ আপনার বক্তাব্য তা ৷ব৷ প্রীত ও হচ্ছে ৷ লুকমান বললেন, ভাতিজা আমি তোমাকে যা

    বলবো, তু যদি তা কর তবে তুমিও আমার মত হতে পারবে ৷

    সে বলল, তা কী? লুকমান বললেন আমি আমার দৃষ্টি অবনত রাখি ৷ আমার জিহব৷ সংযত
    রাখি ৷ আমার পানাহার ও যৌনাচারের ব্যাপারে আমি স ×যম অবলম্বন করি ৷ আমার দায়িতৃ
    পালন করি ৷ অঙ্গীকার পুরণ করি ৷ যেহমানদেরকে সম্মান করি ৷ প্রতিবেশীদের হক আদায়
    করি ৷ অপ্রয়োজনীয় বিষয় বর্জন করি ৷ এ কর্মগুলােই আমাকে এ পর্যায়ে এনে পৌছিয়েছে যা
    তুমি দেখতে পাচ্ছ ৷

    ইবন আবী হাতিম, আবু দারদা (রা) থেকে বর্ণিত ৷ লুকমান হাকীমের আলোচনায় একদিন
    তিনি বললেন, তার না ছিল উলেখযােগ্য পরিবার পরিজন, না ধ্ন-সম্পদ না কোন বংশ মর্যাদা
    না কো ন বৈশিষ্ট্য ৷৩ তবে তিনি ছিলেন সৃঠামদেহী নীরবত৷ ৷াঅবলম্বনক ৷রী চিন্তাশীল, গভীরভাবে
    পর্যবেক্ষণকারী ৷ দিনের বেলা তিনি কখনও ঘুমাতেন না, তাকে কেউ থুথু ফেলতে দেখেনি,
    দেখেনি কাশি দিতে, পেশাবষ্পায়খান৷ করতে, গোসল করতে ৎব৷ বাজে কাজকর্ম করতে

    বা ×কেউ তাকে হ সতেও দেখেনি ৷ খুব গভীর কোন জ্ঞানের কথা না হলে বা কেউ জিজ্ঞাসা না

    করলে তিনি কখনও তার বক্তব্য পুনঃউচ্চারণ করতেন না৷

    তিনি বিবাহ করেছিলেন এবং তার একাধিক সন্তানও জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৷ এদের মৃত্যুতে
    তিনি র্কাদেননি ৷ তিনি রাজত্ব-বাদশাহ ও আমীর-উমরাদের নিকট যেতেন তাদের অবস্থা দেখার
    জন্যে, চিভা-ভাবনা করার জন্যে এবং ওদের জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্যে ৷ ফলে তিনি এ
    মর্যাদার অধিকারী হন ৷

    কেউ কেউ বলেন যে, তাকে নবুওত গ্রহণের এখতিয়ার দেয়া হয়েছিল ৷ তিনি নবুওতের
    গুরু দায়িত্ব পালনে শ×কিত হলেন ৷৩ তাই তিনি হিকমত তথা প্ৰজ্ঞাকেই বেছে (নন ৷ কারণ

    এটি ছিল তার নিকট সহজতর ৷ এ মন্তব্যের যথার্থতা সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে ৷
    আল্লাহই ভাল জা নেন ৷ এটা হযরত ৩কাতাদ৷ (রা) থেকে বর্ণিত ৷ আমরা পরে তা উল্লেখ করব ৷

    ইবন আবী হাতিম ও ইবন জারীর ইকরামা সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, লুকমান নবী

    ছিলেন ৷ বর্ণনাকারী জাবির জুফী এর কারণে এই বর্ণনাটি দুর্বল বর্ণনারুপে গণ্য করা হয় ৷

    জমহুর তথা অধিকাংশ উলামা-ই-কিরড়ামের মতে উমান ছিলেন প্রজ্ঞাময ও বিচক্ষণ
    একজন ওলী ৷ তিনি নবী ছিলেন না ৷ আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে হযরত লুকমানের কথা
    উল্লেখ করে তার প্রশং সা করেছেনণ্হ্র৷ হযরত লুকমান তার প্রাণপ্রিয়ও সর্বাধিক স্নেহধন্য পুত্রকে
    যে উপদেশ দিয়েছেন, আল্লাহ তা জানা পবিত্র কুরআনে তাও উল্লেখ ৷করেছেন ৷ লুকমান তার
    পুত্রকে প্রথম যে উপদেশটি দেন, তাহল হে
    বৎসৰু আল্লাহর সাথে শরীক করো না ৷ নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলুম ৷ তিনি পুত্রকে শিরক করতে
    নিষেধ করলেন এবং সতর্ক করে দিলেন ৷ ইমাম বুখারী আবদুল্লাহ সুত্রে বর্ণনা করেন তিনি
    বলেন যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের
    ঈমানর্কে জুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি আয়াত যখন নাযিল হল, তখন সাহারা (রা) এর নিকট
    এটি গুরুতর বলে মনে হল ৷৩ তারা বললেন, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে তার ঈমানকে
    জুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি? রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, আয়াত দ্বারা তা বুঝানো হয়নি ৷ তোমরা
    কি লুকমানের উপদেশ শুননিঃ তিনি বলেছিলেন ং

    হে বৎস! আল্লাহর সাথে শরীক করে৷ না ৷ নিশ্চয় শিরক করা চরম জুলুম ৷ ইমাম মুসলিম
    (র) মুসলিম ইবন মিহরান আল আমাশ থেকে উক্ত হাদীছখানা উদ্ধৃত করেছেন ৷

    অতঃপর আল্লাহ তা আলা প্রসঙ্গক্রমে পিতামাত৷ সম্পর্কে তার নির্দেশের কথা উল্লেখ
    করেছেন ৷ তিনি সন্তানের ওপর পিতামাতার অধিকারের কথা, তারা মুশবিক হলেও তাদের প্রতি
    সদাচরণের কথা এবং তাদের দীন কবুল করার ব্যাপারে তাদের আনুগত্য না করার কথা উল্লেখ
    করেছেন ৷ এরপর পুত্রের প্ৰতি লুকমানের এ উপদেশের কথা উল্লেখ করেছেন,

    হে বৎস কো ন কিছু যদি সর্ষের দানা পরিমাণও হয় এবং চুসটি যদি থাকে ন্নেশিলা১ার্ভে অথবা
    আকাশে অথবা মাটির নিচে, আল্লাহত ৷ও উপস্থিত করবেন ৷ আল্লাহ সুক্ষ্মদর্শী সম্যক অবগত
    (নিসা : ৪০)

    এর দ্বারা লুকমান তার পুত্রকে মানুষের প্ৰতি জুলুম করতে বারণ করলেন ৷ জুলুম যদিও
    সর্ষে দানা পরিমাণও হয় ৷ কারণ, আল্লাহ তাআলা জুলুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন ৷
    জুলুমকে হিসাব নিকাশকালে হাজির করবেন এবং আমলের পাল্লায় রাখবেন ৷ যেমন আল্লাহ
    তা জানা বলেন ( :,টু৷ ৰুাণ্ড্র ণ্াষ্ ১’ ব্লু৷ ৷ আল্লাহ অণু পরিমাণও জুলুম করেন না

    এবং কিয়ামত দিবসে আমি স্থাপন করব ন্যায় বিচারের মানদণ্ড ৷ সুতরাং কারো প্রতি কোন

    অবিচার করা হবে না এবং কর্ম যদি তিল পরিমাণ ওজনেবও হয় তবুও আমি সেটি উপস্থিত
    করব ৷ হিসাব গ্রহণকারী রুপে আমিই যথেষ্ট ৷ (২১ আ ৷ংম্বিয়া , : ৭)

    এর দ্বারা জানিয়ে দেয়৷ হল যে, জুলুম দৃষ্টিতে তিল পরিমাণ ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ হলেও এবং তা
    দরজা জানালাহীন এমন কি ছিদ্র বিহীন কঠিন পাথরের মধ্যে রাখা হলেও অথবা বিশাল ও

    ত এই অসীম আসমানের গহীন অন্ধকার স্থান থেকে কোন বন্তুতে পতিত হলেও আল্লাহ
    তা’আ আলা সেটি সম্পর্কে অবগত থাকেন ৷ (,ৰু এছু এন্ ন্াএা ঠুা৷ ৷ ৷)অ ৷ল্লাহ সুক্ষ্মদর্ণী সম্যক
    অবহিত ৷ অর্থাৎ আল্লাহ তাঅ লার ইলম অত্যন্ত সুক্ষ্ম ৷ তা ৷ই সাধারণতঃ যা লোকচক্ষুর আড়ালে
    থাকে, সেই অণু পরিমাণ বিষয়ও তার অগােচরে থাকে না ৷

    আল্লাহ তাআলা বলেন :
    তার অজ্ঞাতসারে একটি পাতাও পড়ে না ৷ মৃত্তিকার
    অন্ধকারে এমন কোন শস্য কণাও অংকুরিত হয় না অথবা বসযুক্ত কিৎব৷ শুষ্ক এমন কোন বন্তু
    নেই , যা সুস্পষ্ট কিভাবে নেই ৷ (৬ আন আম : ৫৯)
    আল্লাহ তাআলা আরও বলেন
    আকাশে ও
    পৃথিবীতে এমন কোন গোপন রহস্য নেই, যা সুস্পষ্ট কিভাবে নেই ৷
    অন্যত্র আল্লাহ তা আলা বলেন

    তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে সম্যক অবগত, আকাশরাজি ও পৃথিবীতে তার অপোচর নয় অণু
    পরিমাণ কিছু, ৎবা তদপেক্ষা ক্ষুদ্র অথবা বৃহৎ কিছু, বরং এর প্ৰতে ৷কটি লিপিবদ্ধ আছে
    সুস্পষ্ট কিভাবে ৷ (৬ নামৃলং ৭৪ )

    সুদ্দী (র) কতিপয় সাহাবীর (বা) বরাতে বলেন, পুর্বোল্পেখিত আয়াতে সাখরা’ শব্দটি দ্বারা
    সাত যমীনের নিচে অবস্থিত পাথর বুঝানো হয়েছে ৷ আতিয়্যা আওফী , আবু মালিক ছাওরী ও
    মিনহাল ইবন উমর (রা) থেকে অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে ৷ তবে এই অভিমতের বিশুদ্ধতায়

    সন্দেহের অবকাশ রয়েছে ৷ এ ছাড়াও পাথর দ্বারা পৃথিবীর তলদেশের পাথর বুঝানাের
    ব্যাপারটিও সন্দেহমুক্ত নয় ৷ কেননা, উক্ত আয়াতে শব্দটি তানিল্টি জ্ঞাপক ৷ এটি দ্বারা
    তাদের বক্তব্য অনুযায়ী ঐ পাথরটি বুঝানো হলে নির্দিষ্ট বাচক ৷ব্দটি ব্যবহৃত হত ৷
    বন্তুতং আয়াতে ম্ভ ) অর্থ যে কো ন পাথর, যেমনটি ইমাম আহমদ (র) আবু সাঈদ খুদরী
    (র) সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন০ ং

    — তোমাদের কেউ যদি দরজা ও ছিদ্রহীন পাথরের মধ্যেও কোন আমল করে তাও
    মানুষের সম্মুখে প্রকা ৷শিত হয়ে পড়বে, আমলটি যে পর্যায়েরই হো ক না কেন ৷

    এরপর হযরত লুকমান তার পুত্রকে বললেন (টু; স্পো ! ঝুরু৷ জষ্টুঠু ) হে বৎস৷ নামায
    কায়েম কর ৷ অর্থাৎ সকল নিয়ম নীতি সহকারে ফরজ ওয়াজিব, ওয়াক্ত রুকু সিজদা,
    ধীর-ন্থির ও বিনয় সব কিছুর প্রতি ৩লক্ষ্য রেখে এবং এতদসম্পর্কিত শরীয়তের নিষিদ্ধ বিষয়াদি
    পরিহার করে পুর্ণাঙ্গ রুপে নামায আদায় কর ৷

    এরপর তিনি বললেন সৎকর্মের নির্দেশ দিয়ে
    এবং অসৎ কর্মে নিষেধ করবে ৷ অর্থাহ্ নিজে শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী তা করবে ৷ হাতে তথা
    বল প্রয়োগে বাধা দেয়ার ক্ষমতা থাকলে বল প্রয়োগে বাধা দিয়ে ৷ নতুবা মুখে, তাতে ও সমর্থ না
    হলে অন্তরে ৷ এরপর পুত্রকে নির্দেশ দিলেন ধৈর্য ধারণের ৷ বললেনং
    (বিপদে আপদে ধৈর্য ধারণ করো ৷) এ নির্দেশ এ কারণে দিলেন যে সৎকাজের
    আদেশ ও অসৎ কা জে নিষেধ করতে গেলে সাধারণতং বা বা ও প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হয় ৷
    তবে এর পবি ৷৷ম উৎকৃষ্ট ৷ এটি সর্বজনবিদিত যে, সবৃরে যেওয়৷ ফলে ৷ হযরত লুকমান বলেন

    ! এটিতাে দৃঢ় সৎকল্পেব কা জ, এটি অপরিহার্যও বটে ৷

    তিনি বললেন অহংকার বশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো
    না ৷ হযরত ইবন আব্বাসৰু মুজাহিদ, ইকরামা, সাঈদ ইবন জুবায়র , যাহ্হাক , ইয়াযীদ ইবন
    আসাম, আবুল যাওয়া ও অন্যরা বলেছেন যে, এর অর্থ হল মানুষের প্রতি অহৎকারী হয়ে৷ ন৷ ৷
    এবং লোকজনের সাথে কথা বলার সময় তাদের প্ৰতি পর্ব ভরে ও অবজ্ঞা বশে অন্য দিকে মুখ
    ফিরিয়ে কথা বলো না ৷

    ভাষাৰিদগণ বলেছেন, স্পো ৷ হচ্ছে উটের ঘাড়ের একটি রোগ বিশেষ, যাতে তার মাথা
    ঝুকে পড়ে ৷ অহৎকারী ব্যক্তি যে লোকের সাথে কথা বলতে গেলে দম্ভ তবে তার মুখমণ্ডল অন্য
    দিকে ফিরিয়ে রাখে, তাকে ঐ উটের সাথে তুলনা করা হয়েছে ৷

    আবু তালিব ভী ৷র কবিতায় বলেন :

    সুপ্রাচীন কাল থেকেই আমরা জুলুমকে প্ৰশ্রয় দেই না ৷ যখন তারা মুখ বীক৷ করে নেয় তখন
    আমরা তা সােজাকরে দিই ৷

    উমরা ইবন৷ হই ইতাপলিবী রদ্বলন০ ং

    কোন স্বৈরাচারী ব্যক্তি তা ৷র মুখ বাক্য করে নিলে আমরা তা সোজা করে দেই ৷ ফলে সেটি
    সে সাজা হয়ে যায় ৷

    অতঃপর লুকমান তার পুত্রকে বললেন০ ং
    এবং পৃথিবীতে ৩উর্ধ্বভাবে বিচরণ করো না ৷ কারণ অ৷ ন্নাহ কোন উদ্ধত অহংকারীকে পছন্দ

    করেন না ৷ তিনি ৷র৩ পুত্রকে মানুষের সম্মুখে দম্ভ অহংক হও ঔদ্ধতা সহকারে পথ চলতে
    নিষেধ করেছেন ৷ যেমন আল্লাহ তা ’আল৷ বলেন ষ্

    — ১ ১৬
    ভ পৃষ্ঠে দম্ভভারে বিচরণ করো না, ত্মি কখনই পদভারে ভু পৃষ্ঠ বিদীর্ণ ৷করভে পারবে না
    এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্ৰমাণ হতে পারবে না ৷ ( ১ ৭ ইসরা, ৩৭)
    অর্থাৎ তু তোমার দ্রুতগতি সম্পন্ন পথ চলার সকল শহর নগর অতিক্রম করে যেতে
    পারবে না, (তামার পদাঘাতে পৃথিবীকে বিদীর্ণ করতে পা ৷রবে না, আর তোমার বিশালতৃ
    অহংকার ও উচ্চতায় তুমি পাহাড়ের সমান উচু হতে পারবে না ৷সুতরাং নিজের প্ৰতি ত ৷কাও
    এবং বুঝে নাও যে তু তামার সীমাবদ্ধতা ছ ডিয়ে যেতে পারবে না ৷

    হাদীছ শরীফে আছে, এক ব্যক্তি দুটো কাপড় পরে পর্ব ভরে পথ চলছিল তখন আল্লাহ
    তাআল৷ তাকে ভুমিতে প্রোথিত করে দিলেন ৷ কিয়ামত পর্যন্ত সে নিচের দিকে প্রোথিত হতে
    থাকবে ৷ অপর এক হাদীছে এসেছে রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন০

    পােড়ালীর নিচ পর্যন্ত লুঙ্গি ঝুলিভ্রুয় দেওয়া থেকে তুমি নিজেকে রাচিয়ে রাখ ৷ কেননা ৷
    অহৎকাবের পরিচায়ক আল্লাহ তা পছন্দ করেন না ৷ এ আয়াতে আল্লাহ তা আল৷ বলেছেন :
    আল্লাহ কোন দান্তিক অহৎকারীকে পছন্দ করেন না ৷

    পথ চলতে অহংকার প্রদর্শন থেকে ধারণ করার পর লুকমান তার পুত্রকে মধ্যম গতিতে
    পথ চলতে নির্দেশ দিলেন ৷ কারণ, পথ চলাতে৷ লাপবেই ৷ তিনি এ বিষয়ে পুত্ররুক মন্দ দিক
    সম্পর্কে নিষেধ করলেন এবং কল্যাণকর দিকটি অবলম্বনের নির্দেশ দিলেন ৷ তিনি বললেন

    আল-বিদায়৷ ওয়ান নিহায়৷ (২য় হতো ৩২-

    পথ চলার মধ্য পন্থা অবলম্বন কর) অর্থাৎ খুব মন্থরগতি কিৎবা খুব
    দ্রুর্তপতির কৌনর্টাই অবলম্বন করবে না ৷ বরং মধ্যম গতি অবলম্বন করবে ৷ আল্লাহ তাআলা
    বলেন :
    রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন
    মুর্থরা কথা বলতে থাকে তখন তারা বলে সালাম ৷

    এরপর লুকমান র্তার পুএকে বললেন,এবং কষ্ঠার নিচু কর) ৷
    অর্থাৎ তুমি যখন কথা বলবে তখন প্রয়ােজনাতিরিক্ত উর্চচারে কথা বলবে না ৷ কারণ, সর্বোচ্চ
    এবং সর্বনিকৃষ্ট কন্ঠার হল পাধার হয় ৷ সহীহ বুখারী ও ঘুসলিমে ধ্র্ণিত আছে যে , রাত্রি বেলায়
    পাধার ডাক শুনলে রাসুলুল্লাহ (সা) আউযুৰিল্লাহ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ কারণ, গাধা
    শয়তানকে দেখতে পড়ায় ৷ এ জন্যেই বিনা প্রয়োজনে কণ্ঠার উচ্চ করতে নিষেধ করেছেন ৷
    বিশেষতঃ হীচি দেয়ার সময় ৷ হীচির সময় শব্দ নীচু রাখা এবং মুখ ঢেকে রাখা মুস্তাহাব ৷
    রাসুলুল্লাহ (সা) এরুপ করতেন বলে হাদীছে প্রমাণ রয়েছে ৷ অবশ্য, আযড়ানের সময় উচ্চারে
    আমান দেয়া, যুদ্ধের সময় উচ্চারে আহ্বান জানানো এবং বিপদ-আপদ ও মৃত্যুর আশংকায়
    উচ্চারে কাউকে ডাকা শবীয়তসম্মত ৷

    হযরত লুকমান (আ) এর এসব প্ৰজ্ঞাপুর্ণ বক্তব্য, কল্যাণকর ও অকল্যাণরোধক
    উপদেশাবলী আল্লাহ তা’আলা কুরআন মজীদে উল্লেখ করেছেন ৷ হযরত লুকমান (আা-এর
    বিবরণ ও উপদেশাবলী সম্পর্কে আরও বহু বর্ণনা রয়েছে ৷ তার বক্তব্য সম্বলিত হিকমতই
    লুকমান নামে তীর বলে কথিত একটি পুস্তক পাওয়া যায় ৷ সে পুস্তক হতে কিছু বক্তব্য এখন
    আমরা উল্লেখ করব ইন শা আল্লাহ ৷

    ইমাম আহমদ—ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) আমাদেরকে
    জানালেন যে, লুকমান হাকীম বলতেন, আল্লাহ তা’আলা কোন কিছু আমানত রুপে দিলে তিনি
    তা হিফাজতও করেন ৷

    ইবন আবী হড়াতিম কাসিম ইবন মুখায়মারা থেকে বর্ণিত ৷ রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন,
    লুকমান তার পুত্রকে বলেছিলেন, হে বৎস হিম্মত ও প্রজ্ঞা দরিদ্রদেরকে রাজার আসনে
    বসিয়েছে ৷ উবাই আওন ইবন আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিত ৷ লুকমান তার পুত্রকে বলেছিলেন, হে
    বৎস৷ তু কোন মজলিশে উপস্থিত হলে ইসলামের রীতি অর্থাৎ সালাম দ্বারা তাদের অন্যায়
    জয় করবে ৷ তারপর মজলিসের এক পাশে বসে পড়বে ৷ ওদের কথা বলার পুর্বে তু কোন
    কথা বলো না ৷ তারা আল্লাহর যিকর ও আল্লাহ সম্পর্কে আলোচনায় নিয়োজিত হলে তুমি
    তাদের সাথে আলোচনায় অংশ নিয়ে ৷ তারা যদি অন্য কোন বিষয়ে আলোচনা করে তবে ভু
    তাদেরকে ত্যাগ করে অন্যদের কাছে চলে যাবে ৷

    উবাই হাফস ইবন উমার থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, হযরত লুকমান (আ) এক থলে
    সরিষা পাশে নিয়ে তার পুএবুক উপদেশ দিবুত বলেছিলেন ৷ একটি করে উপদেশ দিচ্ছিলেন আর
    একটি করে সরিষা থলে থেকে বের করছিলেন ৷ এভাবে তার সব সরিষা শেষ হয়ে গেল ৷ তখন
    তিনি বললেন, হে বাংলা আমি তোমাকে এমন উপদেশ দিলাম, কোন পর্বত কে এ উপদেশ
    শুনাবুল সেটি ফেটে চৌচির হয়ে যেত ৷ ত৷ ৷র পুত্রের অবস্থাও তাই হয়েছিল ৷

    আবু কাসিম তাবারানী ইবন আব্বাস (বা) সুত্রে বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

    — তোমরা কৃষ্ণাঙ্গবুদর সাথে সুসম্পর্ক রাখ ৷ তাদেণ তিনজন নিশ্চিতভাবুবই জান্নাতী ৷
    লুকমান হাকীম , নাজাশী এবৎমুয়ায়যিন বিলাল (রা) ৷

    তাবারানী এর ব্যাখ্যার বলেন, অর্থাৎ বিলাল হাবশী ৷ হাদীছটি একাধারে গরীব ও মুনকার
    পর্যায়ের ৷ ইমাম আহমদ (র) তার কিতাবুয যুহদ নামক গ্রন্থে হযরত লুকমান (আ ) সম্পর্কে
    আলোচনা করতে গিয়ে অনেক গুরুত্বপুর্ণ ও কল্যাণকর তথ্যাদি পরিবেশন করেছেন ৷ তিনি
    বলেছেন, ওয়ার্কীদী মুজাহিদ সুত্রে (আমি লুকমানবুক প্ৰজ্ঞা
    দান করেছি) ৷ আয়াবুত তর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, হিকমত অর্থ ধর্মীয় প্রজ্ঞা ও সত্য প্রাপ্তি, নবুওত
    নয় ৷

    ওহব ইবন মুতানাব্বিহ ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে বলেন লুকমান ছিলেন হাবশী ক্রীতদাস ৷
    আসওযাদ স ৷ঈদ ইবন মুসায়্যাব সুত্রে বর্ণিত, লুকমান (আ) পেশায় ছিলেন দর্জি ৷ সা ৷ইয়াদ–
    মালিক ইবন দীনারকে উদ্ধৃত করে বলেন লুকমান তার পুত্রবুক বলেছিলেন হে বৎস! ত
    ব্যবসা রুপে আল্লাহর ইবাদতকে বেছে নাও,ত তাহবুল পুজি ছা ৷ড়াই লাভ পাবুব ৷ ইয়াযীদ মুহাম্মদ
    ইবন ওয়াছিবুক উদ্ধৃত করে বলেন, লুকমান তার পুত্রকে লক্ষ্য করে প্রায়ই বলতেন, হে বৎস ৷
    আল্লাহবুক ভয় কর ৷ তোমার অন্তর কলুষিত থাকা অবস্থায় মানুষের শ্রদ্ধা অর্জনের জন্যে তু
    আল্লাহবুক ভয় করার ভাল করে৷ না ৷

    ইয়াযীদ খালিদ বিরদবুক উদ্ধৃত করে বলেন, লুকমান ছিলেন একজন হাবশী ক্রীতদাস ৷
    পেশায় ছুতার ৷ তার মালিক তাকে একটি বকরী জব৷ ৷ই করতে বলেছিল ৷ সে মত ৩তিনি একটি
    বকরী জব ই করেন ৷ বকরীর উৎকৃষ্টত তম দুটো টুকরো আনতে মালিক তাকে নির্দেশ দেয় ৷
    তিনি বকরীটির জিহবা ও হৃৎপিণ্ড নিয়ে আসেন ৷ মালিক ৷তবুক জিজ্ঞেস করল এর চাইতে
    উৎকৃষ্ট কোন অঙ্গকি এ বকরীতে নেই? তিনি বললেন, না ৷ মালিক কিছু সময় চুপ করে থাকার
    পর আবার তাকে বলবুলা, আমার জবুন অপর একটি বকরী জবাই কর ৷ তিনি তার জন্যে অপর
    একটি বকরী জবাই করলেন ৷ মালিক বলবুলা, এটির নিকৃষ্টতম টুকরো দুটো ফেলে দাও ৷ তিনি
    বকরীটির জিহবা ও হৃৎপিও ফেলে দিলেন ৷

    মালিক বলল আমিধ্ব আমাকে উৎকৃষ্ট দুটো ৷টুকরো আনতে বললাম ৷ তুমি নিয়ে এলে
    জিহবা আর হৃৎপিন্ড ৷ আবার নিকৃষ্টত ম দুটো টুকরা ফেলে দিতে বলল্প ৷ম; তুমি জিহবা আর
    হৃত্পিণ্ড ফেলে দিলে, এর রহস্য কি? লুকমান বললেন জিহবা ও হৃৎপিণ্ড য়৩ তক্ষণ পবিত্র থাকে
    ততক্ষণ এ দুটো অপেক্ষা উৎকৃষ্ট কিছু থাকে না ৷ আর এ দুটো যখন কলুযিত হয় তখন এ
    দুটো অপেক্ষা ঘৃণিত অন্য কিছু থাকে না ৷

    দাউদ ইবন রশীদ অবু উছমান সুত্রে বলেন লুকমান তার ণ্দ্বু ত্ররুক বলেছিলেন মুর্থদের
    সাথে বন্ধুতৃ ন্থা পনে আগ্রহী হয়ো ন৷ ৷৷ তাহলে যে মনে করবে যে তার কর্মে তুমি সত্তুষ্ট ৷ বিজ্ঞ
    ব্যক্তিদের অসন্তুষ্টিকে তুচ্ছ ভেবাে না ৷ তাহলে সে তোমার সাথে সম্পর্ক ৷ হুন্ন করতে পারে ৷

    দাউদ ইবন উসায়দ আবদুল্লাহ ইবন যায়দ সুত্রে বলেন, লুকমান বল্যে:ছণঃ জেনে নাও যে
    প্ৰজ্ঞাবানদের মুখে আল্লাহর হাত থাকে ৷ তিনি যা তৈরি করে দেন, তা ব্যতীত তারা কথা বলেন
    না ৷

    আবদুর রায়যাক বলেন যে, তিনি ইবন জুরায়জকে বলতে ওন্যেছন, আমি রাতে মাথা
    ঢেকে রাখতাম ৷ উমর (রা) আমাকে বললেন, তুমি রাতে মাথা ঢেকে রাখ কেন? তুমি কি
    জানন৷ যে, লুকমান (আ) বলেছেন, দিনের (বলা মাথা ঢেকে রাখা অপমানজনক এবং যাতে তা
    ওযর বা অপারগতার নিদর্শন ৷ তাহলে তুমি রাতে মাথা ঢাক কেন? তখন আমি তাকে বললাম,
    লুকমান (আ)-এর তো কোন ঋণ ছিল না ৷ সুফিয়ান বলেন, লুকমান তার পুত্রকে বলেছিলেন
    হে রৎস ! নীরবতা অবলম্বন করে আমি কখনো লজ্জিত হইনি ৷ কথা বলা যদি রুপ৷ হয় তবে
    নীরব থাকা হচ্ছে সোনা ৷

    আবদুস সামাদ কাতাদ৷ সুত্রে বলেন, লুকমান তার পুত্রকে বলেছিলেন, (হ রৎস ৷ মন্দ থেকে
    দুরে থাক ৷ তাহলে মন্দ তোম৷ হতে দুরে থাকবে ৷ কারণ মন্দের জন্যেই মন্দের সৃষ্টি ৷ আর
    মুআবিয়৷ উরওয়৷ ত্রে বলেন, হযরত লুকমানের প্রজ্ঞাপুর্ণ বক্তাব্য আছে, হে বৎস! অতিরিক্ত
    মাখামাখি পরিহ৷ ৷র করবে ৷ কারণ, অতিরিক্ত মাখামাখি ঘনিষ্ঠজনকে ঘনিষ্ঠজন থেকে দুরে সরিয়ে
    দেয় ৷ এবং প্ৰজ্ঞ কে ঠিক৫ তমনি বিলুপ্ত করে দেয় যেমনটি আগে উচ্ছাস করে থাকে ৷ হে বৎস
    অতি ক্রোধ বর্জন কর, কারণ তা প্রজ্ঞাবান ব্যক্তির অন্তঃকরণকে ধ্বংস করে দেয় ৷

    ইমাম আহমদ উবায়দ ইবন উমায়ব সুত্রে বলেন, লুকমান (আ) উপদেশ স্থলে তার পুত্রকে
    বলেছিলেন, হে বৎস ৷ দেখে শুনে মজলিস বেছে নেবে ৷ যদি এমন মজলিস দেখ, যেখানে
    আল্লাহর যিকর হয়, তবে তুমি তাদের সাথে সেখানে বসবে ৷ কারণ তুমি নিজে জ্ঞানী হলে
    তোমার জ্ঞান তোমার উপকার করবে; আর তুমি মুর্থ হলে মজলিসের লোকেরা তোমাকে জ্ঞান
    দান করবে ৷ আল্লাহ তা আলা তাদের ওপর রহমত নাযিল করলে তাদের সাথে তুমিও রহমতেব
    অংশ পাবে ৷ ,

    হে বৎস যে মজলিসে আল্লাহর যিকর হয় না, সে মজলিসে বলো না ৷ কা ৷রণ ভুমি নিজে
    জ্ঞানী হলে তখন তোমার জ্ঞান তোমার কো ন উপকার করবে না ৷ আর তুমি যদি মুর্থ হও তারা
    তোমার মুর্থ৩৷ আরও বৃদ্ধি করে দিয়ে ৷ উপরন্তু আল্লাহ তাদের ওপর কোন গযব নাযিল করলে

    তাদের সাথে তুমিও গযবে পতিত হবে ৷ হে বৎস ! ঈমানদারের রক্তপাতকাবী শক্তিমান ব্যক্তিকে
    ঈর্ষা করােন৷ ৷ কারণ, তার জন্যে আল্লাহর নিকট এমন ঘাতক রয়েছে, যার মৃত্যু (নই ৷ আবু
    মুয়াবিয়া উরত্তয়া (র) সুত্রে বলেন, আলহিকমাহ’ :হ্রন্থে রয়েছে যে হে বৎন৷ তুমি ভাল
    কথা বলবে এবং হাসিমুখে থাকবে ৷ তাহলে দানশীল ব্যক্তিদের তুলনায় তুমি মানুষের নিকট
    অধিকতর প্রিয় হবে ৷

    তিনি আরও বলেন, আলহিকমাহ’ গ্রন্থে অথবা তাওনতে আছে যে, নম্রতা হল প্ৰজ্ঞার
    মস্তক স্বরুপ ৷ তিনি এও বলেছেন যে, তাওরাতে আছে, তুমি যেমন দয়া করবে, তেমন দয়া
    পাবে ৷ তিনি আরও বলেছেন যে, হিকমত গ্রন্থে আছে, যেমন বপন করবে তেমন ফসল তুলরে ৷
    তিনি বলেন, আলহিকমাহ’ গ্রন্থে আছে তোমার বন্ধুকে এবং <ফ্লদ্ভামার পিতার বন্ধুকে ভালবাসা ৷

    আবদুর রাযযাক- আবু কিলাবা সুত্রে বলেন, লুকমন (আ)ণ্ক জিজ্ঞেস করা হয়েছিল
    (কাল ব্যক্তি অধিক ধৈর্যশীল? তিনি বললেন, সেই ধৈর্য, ণ্হন্ব পরে কষ্ট দেওয়া হয় না ৷ র্তাকে
    জিজ্ঞেস করা হল, কোন ব্যক্তি সর্বাধিক জ্ঞানী? তিনি বললেন , যে ব্যক্তি , যে আমার জ্ঞান দ্বারা
    নিজের জ্ঞান বৃদ্ধি করে ৷ বলা হল, কোন লোক উত্তম? তি নি বললেন, ধনি ব্যক্তি বলা হল
    প্রাচুর্যের অধিকারী? সম্পদের প্রাচুর্য? তিনি বললেন, না বরং আমি যে ব্যক্তিকে বুঝিয়েছি, যার
    কাছে কোন কোন কল্যাণ চাওয়া হলে তা পাওয়া যায় ৷ তা না হলে অন্তত সে আমার দ্বারস্থ হয়
    না ৷ সুফিয়ান ইবন উয়ায়ন৷ বলেন, লুকমান (আ)কে বলা হল, নিকৃষ্টতম ব্যক্তি রুক? তিনি
    বললেন, যে ব্যক্তি এ কথার পরোয়া করে না যে, লোকে তাকে মন্দ কার্যে লিপ্ত দেখরে ৷

    আবু সামাদ মালিক ইবন দীনার সুত্রে বলেন প্রজ্ঞাপুর্ণ কথার মধ্যে আমি এটা পেয়েছি যে ,
    মানুষের খেয়াল খুশী ও কৃপ্ৰবৃত্তি সম্পর্কে সমাজের উপরতলার যে সকল লোক
    আলাপ-আলোচনা করে আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দেন ৷ আমি তাতে আরও শুপযেছি যে,
    তুমি যা জান তা আমল না করে যা জান না তা জানার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই ৷ এটি তাে সে
    ব্যক্তির ন্যায়, যে কাঠ সংগ্রহ করে বোঝা বাপ্নে , তারপর ত মাথায় তুলে নিতে চেষ্টা করে , কিত্তু
    পারে না ৷ তারপর গিয়ে আর ও কাঠ সংগ্রহ করে ৷

    আবদুল্লাহ ইবন আহমদ আবু সাঈদ (র) সুত্রে বলেন, হযরত লুকমান তার পুত্রকে
    বলেছিলেন, হে বৎস পরহেযগার ব্যক্তিরাই যেন তোমার খাদ্য যায় এবং তোমার কাজকর্মে
    বিজ্ঞজনদের পরামর্শ নিও ৷

    এ বিষয়ে ইমাম আহমদ (র) যা বর্ণনা করেছেন, এগুলো হচ্ছে তার সারসংক্ষেপ ৷ ইতি পুর্বে
    আমরা কতক বর্ণনা উল্লেখ করেছি, যা তিনি বর্ণনা করেন নি ৷ আবার তিনি এমন কতক বর্ণনা
    উল্লেখ করেছেন, যা আমাদের নিকট ছিল না ৷ আল্লাহ ভাল জানেন ৷ ইবন আবী হাতিম
    –কাতাদ৷ (র) সুত্রে বলেন, আল্লাহ তাআলা লুকমান হাকীমকে নবুওত ও হিকমতের যে
    কোন একটি বোছ নেয়ার ইখতিয়ার দিয়েছিলেন ৷ তিনি নবুওতের পরিবর্তে হিকমতই গ্রহণ
    করেন ৷ তারপর জিবরাঈল (আ) তার নিকট এলেন ৷ তিনি তখন জ্বিামগ্ন ৷ জিবরাঈল ( আ )
    তার নিকট হিকমতের বারি বর্ষণ করেন ৷ এরপর থেকে তিনি হিকমতপৃর্ণ কথা বলতে শুরু
    করেন ৷

    সাদ বলেন, আমি কাতাদা (ব)কে বলতে শুনেছি যে, লুকমানকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল,
    আপনি নবুওত না নিয়ে হিকমত নিলেন কেনঃ আপনাকে তো আপনার প্রতিপালক ইখতিয়ার
    দিয়েছিলেন ৷ উত্তরে তিনি বললেন, আমাকে যদি বাধ্যতামুলক ভাবে নবুওত দেয়া হত তাহলে
    আশা করি, আমি ঐ দায়িত্ব পালনে সাফল্য লাভ করতাম ৷ কিত্তু আমাকে যখন যে কোন
    একটি বেছে নেয়ার ইখতিয়ার দেয়া হল, তখন আমি নবুওতী গুরুদায়িতৃ পালনে অক্ষয় হয়ে
    যাব বলে আশংকা করলাম ৷ তখন হিকমতই আমার নিকট প্রিয়তর মনে হয় ৷

    এ বর্ণনাটি সংশয় মুক্ত নয় ৷ কারণ, কাতাদা (র) থেকে সাঈদ ইবন কাহীরের বণ্নাি
    সম্পর্কে হাদীছবেত্তাগণের বিরুপ সমালোচনা রয়েছে ৷ উপরভু সাঈদ ইবন আবী আরুবা কাতাদা
    (র) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আয়াতের ব্যাখ্যার তিনি বলেছেন, হিকমত অর্থ প্রজ্ঞা ও
    ইসলাম ৷ তিনি নবী ছিলেন না, তীর প্রতি ওহীও অবতীর্ণ হয়নি ৷ পৃববভী কালের উলামা-ই
    কিরামও স্পষ্টভাবে তা বলেছেন ৷ তাদের মধ্যে মুজাহিদ; সাঈদ ইবন মুসায়াব ও ইবন আব্বাস
    (বা) প্রমুখ প্রথম যুগের আলিমগণ দৃঢ়ভাবে এমত পোষণ করতেন ৷ আল্লাহই ভাল জানেন ৷

    অগ্নিকুণ্ড অধিপতিদের ঘটনা

    (১) শপথ বৃরুজ বিশিষ্ট আকাশের (২) এবং প্রতিশ্রুত দিবসের (৩) শপথ দ্রষ্টা ও দৃষ্টের
    (৪) ধ্বংস হয়েছিল কুণ্ডের অধিপতির৷ (৫) ইন্ধনপুর্ণ যে কুণ্ডে ছিল আগুন (৬) যখন তারা
    সেটির পাশে উপবিষ্ট ছিল (৭) এবংতারা ঘুমিনদের সাথে যা করছিল তা প্রত্যক্ষ করছিল (৮)
    ওরা তাদেরকে নির্যাতন করেছিল শুধু এ কারণে যে তারা বিশ্বাস করত পরাক্রমশালী ও
    প্রাৎসাহ আল্লাহে (৯) আকাশ রাজি ও পৃথিবীর সর্বময় কর্তৃতু যার আর আল্লাহ সর্ববিষয়ে
    দ্রষ্টা ৷ (১০) যারা ঈমানদার নর নারীকে বিপদাপন্ন করেছে এবং পরে তাওবা করেনি তাদের
    জন্য আছে জাহান্নামের শাস্তি , আছে দহন যন্ত্রণা ৷ (৮৫ বুরুজং : ১ ১ : )

    এ সুরার তফসীর প্রসঙ্গে আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে আমরা ব্যাপক ও বিস্তারিত আলোচনা
    করেছি, আলহামদুলিল্লাহ ৷ মুহাম্মদ ইবন ইসহাক মনে করেন যে, কুও অধিপতির৷ হযরত ঈসা
    (আ) এর নবুওত প্রাপ্তির পরবর্তী যুগের লোক ৷ পক্ষাম্ভরে অন্যান্যরা মনে করেন যে, এটি তার
    পুর্বের যুগের ঘটনা ৷ এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীতে একাধিকবার ঘটেছে ৷ ভৈস্বরাচারী কাফির রাজা
    বাদশাহরা বারে বারে ঈমানদার মানুষদের ওপর এ প্রকার নির্যাতন চালিয়েছে ৷ তবে কুরআন
    মজীদে উল্লেখিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে একটি মারফু হাদীছ এবং ইবন ইসহাক বর্ণিত একটি
    বর্ণনা রয়েছে ৷ এ দুটো পরস্পর বিরোধী ৷ পাঠকের জ্ঞাতার্থে আমি উভয় বর্ণনাই উল্লেখ করছি ৷
    ইমাম আহমদ সুহায়ব (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, তোমাদের পুর্বের
    যুগে এক রাজা ছিল ৷ তার ছিল এক যাদুকর ৷ যাদুকর বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার পর রাজাকে
    বলল, আমি ( তা বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছি আর আমার মৃত তাও ঘনিয়ে এসেছে ৷ এখন আমাকে একটি
    বালক যােগাড় করে দিন, থাকে আমি যাদু শি ৷খাব ৷ রাজা একটি বালক যােগাড় করে দিলেন ৷

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ হযরত লুকমান (অ) এর ঘটনা Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.