Home » অন্যান্য » ●|● জিব্রাইল আঃ এর গল্প (১ম পর্ব) || ওমার সুলেইমান ●|●

●|● জিব্রাইল আঃ এর গল্প (১ম পর্ব) || ওমার সুলেইমান ●|●

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • আপনি কীভাবে জিব্রাইল আঃ এর নাম বলেন, কীভাবে উচ্চারণ করেন তার নাম? জিব্রীল, জিব্রাই–ল, জিব্রাইল, জিব্রাই’ল, জিব্রিইল এই পাঁচ ভাবে তার নাম উচ্চারণ করা হয়। আর এটা বিভিন্ন কিরাতের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বার বার কি শোনা যাচ্ছে? ই-ল। ই-ল মানে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালা। এ নিয়ে কোন মতপার্থক্য নেই। জিবরা মানে বান্দাহ, দাস। তাহলে জিব্রাইল অর্থ- আল্লাহর দাস। সুতরাং এটা হলো তার নাম এবং নামের অর্থ।

    রাসূল সঃ এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কিভাবে তাঁকে সম্বোধন করতেন? এটা আসলেই একটা মজার বিষয়। যখন আমি এই বিষয়ে গবেষণা করা শুরু করলাম, প্রথম দিন এটা দেখে খুব অবাক হলাম যে- কারণ আমি বুখারি শরীফ থেকে শুরু করেছিলাম। আমি বুখারি শরীফ থেকে জিব্রাইল আঃ সম্পর্কে বর্ণিত সকল হাদিস সংগ্রহ করলাম। প্রথম যে হাদিসে জিব্রাইল আঃ এর নাম উল্লেখ আছে, রাসুল সঃ বলেন, জিব্রিল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমরা সাধারণত জিব্রিলকে আলাইহিস সালাম হিসেবে সম্বোধন করি। যার অর্থ তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হউক। কিন্তু রাসুল সঃ তাঁর উপর সালাওয়াত ও পেশ করলেন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে। রাসুল সঃ এটা করলেন জিব্রাইল আ এর উচ্চ মর্যাদার কারণে।

    আরেকটা ব্যাপার, রাসুল সঃ প্রায়ই তাঁর নাম বলে তাঁকে সম্বোধন করতেন না। জানেন, কিভাবে করতেন? তিনি বলতেন, যিনি আমার রবের নিকটে থাকেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বিভিন্ন উপায়ে তাঁকে সম্বোধন করতেন। সব গুলো আমার পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। এটা আরেকটা বিশাল অধ্যয়নের ব্যাপার। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আলোচনা করা যাবে। তবে সবচেয়ে কমন যে বিষয়টি আপনি পাবেন তা হলো ‘রুহ’ শব্দটি, আত্মা, স্পিরিট। আল্লাহ তাঁকে বলেন আর রুহুল কুদুস(পবিত্র আত্মা), আর রুহুল আমিন(বিশ্বাসী আত্মা), রুহানা(আমাদের আত্মা), আল্লাহ তাঁকে আরও ডাকেন ‘রাসুলুন কারীম (সম্মানিত বার্তাবাহক) বলে। সর্বশেষ আর একটি নাম বলেই আমরা অগ্রসর হব, সময় স্বল্পতার কারণে। এই নামটি আল্লাহ বা রাসূল সঃ এর পক্ষ থেকে নয় বরং ওয়ারাকা ইবনে নাওফেলের কাছ থেকে, যিনি ছিলেন খাদিজা রা এর চাচাতো ভাই। ওয়ারাকা বলেছিলেন, ইনি হলেন ‘আন নামুস’, যাকে মূসা আঃ এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল।

    জিব্রাইল আঃ দেখতে কেমন ছিলেন?

    তিনি দেখতে কেমন ছিলেন? জিব্রাইল আঃ বিভিন্ন রকম আকৃতি ধারণ করতেন। তিনি মানুষের আকৃতি ধারণ করতেন। আবার কখনো কখনো তিনি ফেরেশতার আকৃতিও ধারণ করতেন কিন্তু সেটা তাঁর পূর্ণাঙ্গ আকৃতি ছিল না। রাসূল সঃ বলেন, আমি জিব্রাইল আঃ কে দেখেছি আর তাঁর ছিল ৬০০ ডানা। রাসূল সঃ বলেন, তিনি আল্লাহ প্রদত্ত একটি বিশাল সিংহাসনে উপবিষ্ট হয়ে সম্পূর্ণ দিগন্তকে ঢেকে ফেলতেন। রাসূল সঃ আরও বলেন, ঐ ৬০০ ডানা শুধু ছড়ানোই থাকতো না, তাঁর ডানাগুলো থেকে প্রতিনিয়ত মনি মুক্তা ঝরতে থাকতো। আর তাঁর ডানার রং ছিল সবুজ, তাঁর পায়ের পাতার রং ও ছিল সবুজ। ফেরেশতার আকৃতিতে তাঁকে এমন দেখাতো, আর তিনি হলেন অন্য সকল ফেরেশতাদের চেয়ে আলাদা।

    মনুষ্য আকৃতিতে তাঁকে কেমন দেখাতো? জিব্রাইল আ কয়েকজন মানুষের আকৃতি ধারণ করতেন। তাঁকে বিভিন্ন রকম দেখাতো। কিন্তু যখন তিনি রাসূল সঃ এর নিকটে আসতেন তিনি সুনির্দিষ্ট একটি রূপ নিয়ে আসতেন। রাসূল সঃ বলেন, জিব্রিল আ কে দিহইয়াহ ইবন খালিফা আল কালবি রা এর মত দেখাতো। দিহইয়াহ রা কে বলা হতো বনু কালবের ইউসুফ। ইউসুফ আ সম্পর্কে মহিলারা কি বলেছিল – ইনি একজন সুন্দর ফেরেশতা। তো দিহইয়াহ কে বলা হতো বনি কালবের ইউসুফ। মহিলারা দিহইয়াহকে পছন্দ করতো।

    জিব্রিল আ এর সাথে নবী রাসুলদের সম্পর্ক।

    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং জিব্রিল আ এর সম্পর্ক কেমন? প্রথমত- তিনি হলেন ‘কালিমুল্লাহ মিনাল মালাইকা’। ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে যার সাথে আল্লাহ কথা বলেন তিনি হলেন জিব্রিল আ। আপনি হয়ত ভাবতে পারেন আল্লাহ কি সকল ফেরেশতার সাথে কথা বলেন না? উত্তর হলো – না। মানুষের মাঝ থেকে যেমন নির্দিষ্ট কয়েকজনের সাথে আল্লাহ সরাসরি কথা বলেন ঠিক তেমনি ফেরেশতাদের মাঝ থেকেও নির্দিষ্ট কয়েকজনের সাথে আল্লাহ সরাসরি কথা বলে থাকেন। আল্লাহ চারজন ফেরেশতার সাথে কথা বলে থাকেন। ‘মুকাসসিমাতে আমরা’ যারা আল্লাহর বিভিন্ন নির্দেশের বাস্তবায়ন ঘটান, এই চারজনের সাথে আল্লাহর সরাসরি কথা বলার বর্ণনা পাওয়া যায়। কিন্তু আল্লাহ সবসময় সরাসরি জিব্রিল আ এর সাথে কথা বলে থাকেন। এমন একজন নবীর কাহিনী আপনি পাবেন না যেখানে জিব্রিল আ এর আলোচনা নেই। আপনি যদি ‘কাসাসুল আম্বিয়া’ পড়েন প্রত্যেক নবীর আলোচনায় কোন না কোন ভাবে জিব্রাইল আ এর নাম উঠে আসবেই। তাঁর উল্লেখ থাকবেই। কারণ তাঁকে এক লাখ চব্বিশ হাজার পয়গম্বরের কাছে পাঠানো হয়েছিল। মুসনাদে ইমাম আহমাদের একটি হাদিসে এক লাখ চব্বিশ হাজার নবীর কথা উল্লেখ আছে। তাঁদের মাঝে তিনশত পঞ্চাশ জন ছিলেন রাসূল। তাঁদের প্রত্যেকের কাছে জিব্রিল আ কে পাঠানো হয়েছিল তাঁদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্য, গড়ে তোলার জন্য, সমর্থন দেয়ার জন্য, প্রতিরক্ষার জন্য। তিনি প্রথম থেকেই তাঁদের সাথে ছিলেন। তাঁর আরেকটি উপাধি কি ছিল? নাসুরুল আম্বিয়া। তিনি ছিলেন নবীদের সাহায্যকারী। জিব্রাইল আঃ ই ইব্রাহীম আঃ কে শয়তানের প্রতি পাথর ছুঁড়তে বলেছিলেন। আর আমরা সেই ঘটনার স্মরণে শয়তানের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করি। সুব হানাল্লাহ! দেখুন, সেই ঘটনার কত চমৎকার ঐতিহ্য আমাদের! জিব্রাইল আঃ ই ইব্রাহীম আঃ কে হজ্বের নিয়ম কানুন শিখিয়েছিলেন।

    কখনো কখনো জিব্রাইল আঃ এর ভূমিকাকে স্পষ্টরূপে উল্লেখ করা হয় না। ইয়ুসুফ আঃ এর গল্পে কখনো কি জিব্রাইল আঃ এর উল্লেখ পেয়েছেন? আপনি ইয়ুসুফ আঃ এর উপর বিশাল আলোচনা শুনতে পারেন, সেখানে হয়তো জিব্রাইল আঃ এর কথা কখনো বলা হয় না। কিন্তু তিনি সেখানে আছেন।

    আয়াত —–

    যখন তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক হলেন তখন আমরা তাঁকে প্রজ্ঞা এবং জ্ঞান দিয়েছি। এতে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে তাঁর নবুয়ত অনেক কম বয়সে শুরু হয়। আল্লাহ এবং জিব্রাইল আঃ এর সাথে তাঁর সম্পর্ক অনেক কম বয়স থেকে শুরু হয়। জিব্রাইল আঃ এর সাথে হযরত ইউসুফের কখন প্রথম দেখা হয়? যখন তাঁর ভাইরা তাঁকে সেই কূপে নিক্ষেপ করেছিল, আর তিনি কূপের তলায় পড়তে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি এমন এক লোকের হাতের উপর ল্যান্ড করেন যাকে তিনি আগে কখনো দেখেননি। তিনি ছিলেন জিব্রিল আ। জিব্রিল তাঁকে ধরে ফেলেন যেন ইউসুফ আ পড়ে গিয়ে ব্যাথা না পান। সুবহান আল্লাহ, চিন্তা করে দেখুন। ইবনেল কাইয়েম র এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, এই ঘটনায় নিদর্শন রয়েছে যে- কোন সৃষ্টি আল্লাহর রজ্জু ধারণ করলে আল্লাহ অবশ্যই তাকেও ধারণ করেন, তিনি আপনাকে পড়ে যেতে দিবেন না। তিনি আপনাকে নষ্ট হয়ে যেতে দিবেন না।

    মাঝে মাঝে এই উল্লেখটা খুবই সূক্ষ্ম। আপনি হয়তো কোন লক্ষণীয় উল্লেখের কথা শুনেন না। এখানে জিব্রাইল আঃ এর ভূমিকাটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ইয়সুফ আঃ যেন পড়ে গিয়ে ব্যাথা না পান সে জন্য আল্লাহ তাঁকে পাঠালেন ধরে ফেলার জন্য।
    কখনো কখনো বর্ণীত গল্পের নবীর সাথে নয় বরং নবীর শত্রুদের সাথে জিব্রিল আঃ এর উল্লেখ পাওয়া যায়। তো মূসা আঃ এর ঘটনায় তিনি মূসা আঃ এর সাথে বহুবার ছিলেন। কিন্তু মূসা আঃ এর ঘটনায় আমরা জিব্রিল আঃ এর উল্লেখের যে সহিহ বর্ণনা পাই, তা আসলে তাঁর শত্রু ফেরাওনের সাথে। তিরমিজি শরীফের একটি সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে- জিবরাইল আঃ নবী করিম সঃ এর নিকট আসলেন এবং তাঁকে বললেন, ”ফেরাওনের মৃত্যুর দিন যদি আপনি আমাকে দেখতেন! সে যখন সমুদ্রের তলায় ডুবে মারা যাচ্ছিল, আমি গিয়ে তাকে পেলাম এবং তার মুখে কাদা নিক্ষেপ করতে লাগলাম। আমি ভয় পাচ্ছিলাম যে সে হয়তো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে ফেলবে আর ফলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন।” কারণ আমি ভয় পাচ্ছিলাম সে হয়তো অনুশোচনা করে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে ফেলবে আর আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন।

    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে জিব্রিল আ এর চেয়ে বেশি কে চেনে? জিব্রিল আ জানেন, আল্লাহ এতোই দয়ালু যে এমনকি ফেরাওনের মত পাপিষ্ঠরও সুযোগ আছে। আর তিনি আশংখা করছিলেন যে, ফেরাওনের এক মুহূর্তের অনুশোচনা তার হয়তো সারা জিন্দেগীর অপরাধ মুছে দিতে পারে। জিব্রিল আ চিন্তিত ছিলেন যে, ফেরাউনের জন্য হয়তো একটা সুযোগ তৈরি হতে পারে। এখন, জিব্রিল আ কি ফেরাউনের ভাগ্য নষ্ট করে দিলেন? না। এরপর, আল্লাহ জিব্রিল আঃ কে বলেন, হে জিব্রিল! আমার ইজ্জত এবং গৌরবের কসম! যদি সে আন্তরিকতার সাথে ক্ষমা চাইতো, আমি তাকে ক্ষমা করে দিতাম! তার মুখে তোমার কাদা নিক্ষেপ কোন কাজে আসতো না। আমি তবু তাকে ক্ষমা করে দিতাম! এখন দেখুন, আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, মুখে কাদা মারার কারণ কি? যখন কোন পাপি ব্যক্তি মারা যায়, ফেরেশতারা তার মুখে আঘাত করতে থাকে। জিব্রিল আঃ কেন ফেরাউন কে এত ঘ্রণা করতেন? তিনি বলেন, আমি সে দিন থেকে তাকে ঘৃণা করতাম যেদিন সে বলেছিল- আমি তোমাদের শ্রেষ্ঠ প্রভু। হাদিসে আমরা জিব্রাইল আঃ এর একটা বিষয় দেখতে পাই, মাঝে মাঝে যখন জিব্রিল আঃ রাসূল সঃ এর কাছে আসতেন তিনি বলতেন না- আল্লাহ এটা বলেছেন। বরং তিনি বলতেন, আল আ’লা (সর্বোত্তম প্রভু)বলেছেন। এতে আল্লাহ সুব হানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি জিব্রিল আ এর অপরিসীম শ্রদ্ধার প্রকাশ পায়।

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ ●|● জিব্রাইল আঃ এর গল্প (১ম পর্ব) || ওমার সুলেইমান ●|● Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.