ইসলামী ফতোয়া

গরুর পেশাব পাক না নাপাক !

উত্তর

প্রশ্ন একজন আহলে হাদীস আলেম আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ মাসআলার জবাব দিতে গিয়ে বলেছেন গরুর " প্রস্রাব "পাক "এবং গরুর প্রস্রাব সহ নামাজ পড়লে নামাজ হবে। এ বিষয়ে শরীয়তের বিধান কি? রেফারেন্স দিয়ে জানালে আমি এবং সবাই খুবই উপকৃত হতাম ৷ শুকরিয়া। উত্তর যে সকল প্রাণীর গোশত খাওয়া জায়েজ সে সকল প্রাণীর পেশাব পাক না নাপাক এ বিষয়ে হাদীসের মাঝে ভিন্নতা থাকার কারণে ইমামদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। তবে এ বিষয়ে গ্রহনযুগ্য ফতওয়া ও শক্তিশালী মত হল এসকল প্রানীর পেশাব পাক নয়, নাপাক। এর স্বপক্ষের দলিল হল- হযরত আবু হুরায়রা রা.থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কবরের অধিকাংশ আযাবই পেশাব এর কারণে হয়ে থাকে। মুস্তাদরাকে হাকেম হাদীস নং ৬৫৩ ৷ হযরত আবু উমামা রা.থেকে বর্ণিত তিনি রাসূল সাঃ থেকে ইরশাদ করেছেন, “তোমরা পেশাব থেকে বেচে থাক। কেননা কবরে সর্বপ্রথম এ বিষয়ে হিসাব নেওয়া হবে।” মাজমাউয যাওয়ায়েদ ১/২০৯ হাদীস নং ১০৩৪৷ অন্য আরেকটি বর্ননায় এসেছে হযরত আবু হুরায়রা রা. রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে ইরশাদ করেছেন, তোমরা পেশাব থেকে পবিত্র থাক বা বেচে থাক। কেননা কবরের অধিকাংশ আযাবই পেশাব থেকে না বাচার কারণে হবে। সহীহ ইবনে খুযায়মা ৷ এসব হাদীসে যে পেশাবের কথা বলা হয়েছে তা কোন নির্দিষ্ট প্রানীর কথা বলা হয়নি বরং ব্যাপক অর্থে এসেছে। চাই মানুষ হোক বা মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণী হোক , গোশত খাওয়া বৈধ এমন প্রাণীর পেশাব হোক বা গোশত খাওয়া বৈধ নয় এমন প্রাণীর পেশাব হোক সবই এই নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভোভূক্ত। হযরত ইবনে উমর রা.থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাঃ জাল্লালা প্রাণীর গোশত ও দুধ খেতে নিষেধ করেছেন। তিরমীযী হাদীস নং ১৮২৪ জাল্লালা হলো, যে সকল প্রাণী নাপাকী, বিষ্ঠা ইত্যাদি খায়। সুতরাং এ হাদীসটি গোশত খাওয়া বৈধ এমন প্রাণীর বর্জ্য নাপাক হওয়া প্রমাণিত হয়। কেননা শরীয়াত জাল্লালা প্রাণীর গোশত ও দুধ খেতে নিষেধ করেছে। আর জাল্লালা হলো যে সকল উট বকরী ও অন্যান্য প্রাণী যারা বিষ্ঠা খায়। যেহেতু উট, বকরী বিষ্ঠা খেলে তাদের দুধ ও ঘাম দুর্গন্ধ হয়ে যায়। যদি এ সকল বর্জ্য ও বিষ্ঠা পাক হয় তাহলে এ সকল প্রাণীর গোশত ও দুধ খেতে নিষেধ করা হবে কেন? অতএব বুঝা গেল এ সকল প্রাণীর বর্জ্য নাপাক। এবং গোশত খাওয়া বৈধ এমন প্রানীর পেশাবও নাপাক, গরুর পেশাবও নাপাক । ইলাউস সুনান ১/৪১২-৪১৭৷ আদদুররুল মুখতার ১/ ২৯৬ ৷ এছাড়া যুক্তিও গরুর পেশাব নাপাক হওয়ার দাবী রাখে। কারন মানুষের গোশত পাক। কিন্তু মানুষের রক্ত নাপাক, এজন্যই মানুষের পেশাবও নাপাক। ঠিক তেমনি গরুর গোস্ত সর্বসম্মতিক্রমে পাক ৷ কিন্তু তার রক্ত নাপাক৷ সুতরাং তার পেশাবও নাপাক হবে। কারণ তার রক্ত নাপাক। যেমনভাবে মানুষের রক্ত নাপাক তাই তার পেশাবও নাপাক। আপনি তথাকথিত আহলে হাদীস আলেম আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ সাহেবের কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, তিনি বলেন গরুর পেশাব পাক ৷ আপনি তাকে আদবের সাথে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, গরুর পেশাব পাক এ মর্মে তিনি কোনধরনের কিয়াসের আশ্রয় ছাড়া কোন সহীহ হাদীস দেখাতে পারবেন কি? তিনি তো শরীয়তে কিয়াস মানতে চান না বরং কিয়াস নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ ও উপহাস করেন। মুফতী মেরাজ তাহসীন মুফতীঃ জামিয়া দারুল উলুম দেবগ্রাম ব্রাক্ষণবাড়িয়া ৷ উত্তর দিয়েছেন : মুফতি মেরাজ তাহসিন গরুর গোবর দিয়ে রান্না করার বিধান মুরগির পায়খানা কি নাপাক কোন প্রাণীর পায়খানা পাক গায়ে প্রস্রাব লাগলে নামাজ হবে কি কবুতরের পায়খানা কি নাপাক উটের পেশাব খাওয়া কি জায়েজ হালাল প্রাণীর মল মুত্র পাক নাকি নাপাক গরুর রক্ত কি নাপাক
সব ফতোয়া দেখুন কসম-মান্নত ক্যাটাগরি