বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩৬৪ দিন মানুষকে ধোঁকায় ফেলে শয়তান যতটা না বিজয়ী হয়, তার চেয়ে শয়তান বেশি বিজয়ী হয় এই একটি দিনে।
যে দিনটির কথা আপনাদের কারো অজানা থাকার কথা নয়, অর্থাৎ, ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ নামে যে দিবসটি সারা পৃথিবীতে পরিচিত। এটি এমন একটি দিবস, যে দিবসে কিছু যুবক-যুবতী এমন সব অনাচার-অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়, যার কারণে পুরো পৃথিবীটাই একটি অসভ্য ভুমিতে পরিণত হয়।
বিভিন্ন পার্ক, অন্ধকার রেস্টুরেন্টের ছোট্ট কেবিনগুলো একেকটা যেন ‘আইয়্যামে জাহেলিয়াতের’ বেশ্যাখানায় পরিণত হয়। বাবা-মায়ের আদরের ছেলেটি অন্য কোনো ভাইয়ের আদরের বোনকে নিয়ে এমন বেহেল্লাপনায় মেতে উঠে। যা একটি সভ্যদেশ কখনো মেনে নিতে পারে না, কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমরা নিজেদেরকে ‘মুসলিম’ বলে দাবী করি কিন্তু ঐটা নামে মাত্র খুলোস।
পৃথিবীর প্রায় সব মুসলিম নামধারী দেশগুলোতে ‘ভালোবাসা দিবসের’ নাম দিয়ে তরুন-তরুনীরা ব্যাভিচারে মেতে উঠে। এ ক্ষেত্রে সরকার যেন নিরব। সরকারের যেনো এখানে কিছুই করার নেই! অথচ এই তরুন- তরুনীরাই আগামী দিনের মন্ত্রী, এমপি বা রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল কেউ হবে। আমার তো ভাবতেই কেমন যেন ঘৃনা ঘৃনা লাগছে, আমার এলাকার এমপি হবে বা আমার দেশের কেবিনেট মন্ত্রী হবে তরুন বয়সে যিনা-ব্যাভিচারে লিপ্ত ছিলো এমন কোনো ব্যাক্তি?
এর চেয়ে মূর্খ কোনো সৎ ব্যাক্তিকেও আমি মেনে নিতে রাজী। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, এটি এমন একটি দিবস, যে দিনে কিছু মেয়ে পতিতা হবে, কিছু মেয়ে প্রতারিত হবে, কিছু ছেলে খারাপ কাজে জড়িত হবে। আপনার পরিবার যে আক্রান্ত হবে না, তার কি কোনো গ্যারান্টি আছে?
আপনারা হয়তো জানেন, এই বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ৯০,২৪০ জন নারী তাদের গর্ভপাত করে। কি নির্লজ্জতা? এটা কি আইয়্যামে জাহেলিয়াতের চেয়ে কোন অংশ কম?
তাই এ’দিনটিকে কোনো মতেই বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বলা যাবে না, ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দিবসের নাম হবে ”বিশ্ব বেহায়া দিবস”।
এই দিবসের সঙ্গে কোনো মুসলিমের সম্পর্ক থাকতে পারে না। কারণ, মুসলিমদের প্রতিটি দিনই ভালোবাসার।
”আদ্দিনুন-নাছী’হাহ” দ্বীন মানেই হলো কল্যাণ কামনা (ভালোবাসা, উপকার)”, সুবহানাল্লাহ। ক্বুরআনের প্রত্যেকটি পাতায় পাতায় কেবল ভালোবাসার কথা।
মা-বাবাকে কিভাবে ভালবাসতে হবে, আত্মীয়- স্বজনকে কিভাবে ভালোবাসতে হবে, স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে কিভাবে ভালোবাসতে হবে, প্রতিবেশী, মুসলিম-অমুসলিম বন্ধু-বান্ধবসহ এমনকি মাতা-পিতার বন্ধুদের সাথে কি আচরণ করতে হবে, সব পুন্ঙখানো পুন্ঙ্খানো আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা তার নিয়ম সহকারে আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন।
সুতরাং ধিক্কার জানাই এই বিশ্ব বেহায়া দিবসকে। এটা মুসলমানের কোনো প্রয়োজন নাই, এটা প্রয়োজন ঐ দেশে যে দেশের জীবনে, পরিবারে, সমাজে কোনো ভালোবাসা নাই।
যে দেশের ছেলে- মেয়েরা ১৮ বছর পার হলেই মা- বাবাকে ছেড়ে গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে লিভ-টুগেদার করে, সেই দেশের জন্য ভালোবাসা দিবসের প্রয়োজন থাকতে পারে। যেই দেশে বার্ধক্যে বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হয়, সেই দেশে নির্দিষ্ট একটি দিন ভালোবাসার নামে বেহায়াপনার জন্য প্রয়োজন হতে পারে।
আমাদের মতো শান্তির দেশ, ভালোবাসার দেশে ‘ভালোবাসা দিবসের’ মতো ‘বেহায়া দিবসের’ কোনো প্রয়োজন নাই।
অতএব ধিক্কার জানাই ঐ সকল তরুন-তরুনীদের যারা লাল গোলাপ নিয়ে প্রেমিক/প্রেমিকার সাথে ১৪ ই ফেব্রুয়ারী যিনা-ব্যাভিচারে মত্ত হবে।
ধিক্কার জানাই ঐ সব বুদ্ধিজীবি, লেখক, সাহিত্যিকদের, যারা ১৪ ই ফেব্রুয়ারী দিনটিকে পূঁজি করে তরুন-তরুনীদেরকে অশ্লীলতার দিকে ধাবিত করে।
আল্লাহ বলেন,
”সেই ব্যাক্তির চেয়ে আর কার কথা উত্তম হবে যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকলো, সৎ কাজ করলো, আর বললো আমি মুসলমান”।
.
অতএব মুসলমান হয়েও যারা ইসলামী সংস্কৃতিকে বাদ দিয়ে Western Culture গ্রহন করে নিয়েছো, তোমরা প্রস্তুত থাকো কবর তোমাদেরকে হাতছানী দিয়ে ডাকছে।
আল্লাহ আমাদের বিশ্ব বেহায়া দিবস নামক আল্লাহর গজব থেকে রক্ষা করুন।
(সংগৃহীত)