প্রতিটি ঘটনার স্বপক্ষে কুরআন কারীমের আয়াত বের করতে পারা, জীবনের বড় স্বপ্নগুলোর একটি। ওআইসির ঘোষণার পর থেকেই ভাবছিলাম, কুরআন আমাকে কী বলে? বেশিরভাগ মানুষই, ঘোষণার স্বপক্ষে যেভাবে খুশি আর আনন্দ প্রকাশ করছে, দ্বিধাতেই পড়ে গেলাম, ভুলের মধ্যে আছি কি না!
ঘটনা যেহেতু ইহুদিদের নিয়ে, প্রথমেই ইহুদিদের ঘটনা সম্বলিত আয়াতগুলোতে খোঁজার চেষ্টা করলাম। বেশিদূর যেতে হল না। প্রথম পারার মাঝামাঝিতেই কাঙ্খিত আয়াতের হদিস মিলল।
ইহুদিদেরকে বলা হল, গাভী যবেহ করো। ইহুদিরা নানা টালবাহানা শুরু করল। আল্লাহ তা‘আলার সাথে (تفاوض) আলোচনায় লিপ্ত হল। তারা আলোচনা-তর্ক করে, গরু যবেহ থেকে বাঁচতে চেয়েছিল। সহজ কোনও পন্থা বের করতে চেয়েছিল। উল্টো তাদের কাজ আরও কঠিন হয়ে গিয়েছিল।
আমেরিকা পূর্ব-পশ্চিম মিলিয়ে পুরো ‘আলকুদস’কেই ইসরায়েলের রাজধানি ঘোষণা করেছে। ওআইসি তার পাল্টা পদক্ষেপ হিশেবে, পূর্ব ‘কুদস’কে ফিলিস্তীনের রাজধানি ঘোষণা করেছে। তার মানে (تفاوض)-এর দরজা খোলা রাখা হল। দরকষাকষি শেষে যা টিকে, সেটাই ফিলিস্তীনের থাকবে। বাকিটুকু ইসরায়েল পাবে। কিন্তু ওআইসির কি এটা জানা নেই, আজ অর্ধেক কুদস ছাড়লে, আগামীতে বাকি কুদস ছাড়তে হবে?
আমরা যারা উক্ত ঘোষণায় খুশি হয়েছি, তারাও নিশ্চয়ই অর্ধেক ‘কুদস’কে ছেড়ে দিয়েই খুশি?
বাকি রইল, মক্কা-মদীনা হাতছাড়া হওয়ার আশংকা?
হাস্যকর এক ‘চোখেধূলো’ দেয়ার প্রয়াস!
কার দখলে যাবে?
আমেরিকার?
তারা তো সেই কবে থেকেই সেখানে আছে। আরও মজার ব্যাপার হল, মক্কা-মদীনার দেশে আমেরিকা আগের মতো নেই, যতটা আছে ঘোষণাদাতার দেশের ইনসিরলিকে।
কার দখলে যাবে?
ইরানের?
কিন্তু ইরান তো এখন ঘোষণাদাতার ‘বূজমফ্রেন্ড’? দোস্ত গোস্ত নিয়ে গেলে আপত্তি কিসের? ও বুঝতে পেরেছি, ওটা ফ্রেন্ডশীপ নয়, ‘ট্র্যাটেজিক এলায়েন্স’। কী জানি, হবেওবা। আমি বোকা!
কার দখলে যাবে?
ইসরায়েলের?
কিন্তু ইসরায়েলে যে এখনো কার দূতাবাস আছে? কার সাথে বিশাল বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে? কার সাথে সামরিক চুক্তি আছে? কার সাথে জ¦ালানিচুক্তি আছে?
ইহুদিরা কি আমার প্রতি কখনোই সন্তুষ্ট হতে পারে? আমি আজ ঢাকঢোল পিটিয়ে অর্ধেক ‘কুদস’ তার হাতে তুলে দিলাম। কাল কি বাকীটুকুও তুলে দেব না? সূরা বাকারার ১২০ নং আয়াত আমাকে কী শিক্ষা দেয়?
মাওলানা আতিক উল্লাহ