ছিল চারশ’র মত ৷ পথে আমরা পানিশুন্য এক প্রাম্ভরে যাত্রা বিরতি করলাম ৷ তখন তার
সাহাবীগণেৱ জন্য তা কষ্টকর হল, কিন্তু তারা বললেন, আল্পাহ্র রাসুলই অধিক জানেন ৷
সাহাবী নাফি বলেন, এ সময় দু’শিৎওয়ালা ছেটি একটি বকরী এসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
সামনে র্দাড়াল ৷ তখন তিনি এটাকে দোহন করলেন ৷ তারপর নিজে সেই দুধ পান করে তৃপ্ত
হলেন এবং তার সাহাবাগণাকও পান করিয়ে পরিতৃপ্ত করলেন ৷ তারপর বললেন, হে নাফি ৷
তুমি তাকে আজ রাতে হাতছাড়া করো না, অবশ্য আমার মনে হয় না তুমি তা পারবে ৷ তিনি
বলেন, এরপর আমি এটাকে ধরলাম এবং একটি খুটি পুতে তার সাথে দড়ি দিয়ে (ভালভাবে)
বেধে রাখলাম ৷ তারপর আমি রাতের একাৎশে উঠে দেখলাম বকরীটি নেই, আর আমি
দড়িটিকে পড়ে থাকতে দেখলাম ৷ তখন আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে আসলাম এবং তিনি
আমাকে প্রশ্ন করার পুর্কেহ আমি তাকে বিষয়টি অবহিত করলাম ৷ তখন তিনি বললেন, হে
নাফি! যিনি ওটাকে নিয়ে এসেছিলেন, তিনিই ওটা নিয়ে গেছেন ৷ বায়হাকী বলেন, মুহাম্মাদ
ইবন সাদ খালফ ইবন ওলীদ আবান সুত্রে হাদীসখানি রিওয়ায়াত করেছেন ৷ আর
বর্ণনাসুত্র এবং পাঠ উভয়টির দিক থেকেই হাদীসটি অত্যন্ত গরীব’ ৷ তারপর বায়হাকী আবু
সাঈদ আল-মালীনী আবু বকর (রা)-এর আযাদকৃত গোলাম সা’দ সুত্রে বর্ণনা করেন
যে, তিনি বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আমার জন্য বকরীটি দোহন কর ৷ তিনি
বলেন, আর আমার জানা মতে যে স্থানে কোন বকরী ছিল না ৷ তিনি বলেন, এরপর আমি
এসে (দেখলাম বকরীটি দৃধে পুর্ণ) সাদ বলেন, তখন আমি দুধ দোহন করে বকরীটিকে
দেখেশুনে রাখলাম এবং এটাকে দেখে রাখতে ণ্লাকজনকে বললাম ৷ রাবী বলেন, এরপর
আমরা সফরের প্রন্তুতিতে ব্যস্ত হওয়ায় তা হারিয়ে গেল ৷ তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্!
ৰ্জ্জীটি উধাও হয়ে গেছে ৷ তিনি বললেন, তার একজন মালিক রয়েছেন ৷ এটাও বর্ণনাসুত্র ও
পাঠের বিবেচনায় অত্যন্ত পরীব’ হাদীস ৷ এর সনদে অজ্ঞাত পরিচয় রাবী বিদ্যমান ৷ আর প্রাণী
ম্পের্কিত মুজিযা বর্ণনায় হরিণীর ঘটনা সম্বলিত হাদীস অচিরেই আসছে ৷
নবী (সা) কর্তৃক উম্মু সুলায়মের ঘি বর্ধন
হাফিয আবু ইয়ালা, শায়বান আনাস (রা) সুত্রে তার আম্মা সম্পর্কে বর্ণনা করেন ৷
তিনি (আনাস) বলেন যে, তার (মায়ের) একটি বকরী ছিল ৷ তিনি তার দুধের ঘি একটি
মাটির বয়ামে সংগ্রহ করলেন ৷ বয়ামটি পুর্ণ করার পর তিনি তার রাবীবাকে১ দিয়ে (রাসুলুল্লাহ্
সাএর কাছে) পাঠালেন ৷ তিনি তাকে বললেন, হে রাবীবা, এই ঘিয়ের বয়ামটি রাসুলুল্লাহ্
(সা)-এর কাছে পৌছে দিয়ে দাও ৷ তিনি তা ব্যঞ্জনরুপে ব্যবহার করতে পারবেন ৷ তখন
রাবীবা গিয়ে তার কাছে এসে বলল, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! ঘিয়ের এই বয়ামটি উন্মু সুলায়ম
আপনার কাছে পাঠিয়েছেন ৷ তিনি তখন তার ঘরের লোকদেরকে বললেন, তোমরা তার
বয়ামটি খালি করে দাও ৷ তখন বয়ামটি খালি করে তাকে দিয়ে দেয়া হল ৷ এরপর সে তা
নিয়ে ফিরে আসল ৷ উম্মু সুলায়ম তখন তার ঘরে ছিলেন না ৷ তখন সে বয়ামটি একটি পেরেকে
ঝুলিয়ে রাখল ৷ এরপর উম্মু সুলায়ম ঘরে ফিরে দেখলেন বয়ামটি পুর্ণ, তা থেকে টপাটপ করে
১ ৰ্াৰীৰা শব্দটি দাই এবং সতীন কন্যা উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে ৷ এখানে ঠিক কোন অর্থে শব্দটি
ব্যবহৃত তা সুনির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল ৷ এখানে রাবীৰা নামও হতে পারে ৷ — জদ্যোলাবাদী (সম্পাদক)
ঘি ঝরছে ৷ তখন তিনি বললেন, হে রাবীবা ! আমি কি তোমাকে এই ঘিয়ের বয়ামটি
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে পৌছিয়ে দিতে বলিনি ? তখন সে বলল, আমি তা করে এসেছি ৷
আপনার বিশ্বাস না হলে আপনি গিয়ে জিজ্ঞেস করে দেখুন ৷ তখন তিনি রাবীবাকে সাথে নিয়ে
রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে গেলেন ৷ তারপর তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্! তার
মাধ্যমে আমি আপনার কাছে ঘিপুর্ণ একটি বয়াম পাঠিয়েছিলাম ৷ তিনি বললেন, যে তা
করেছে ৷ যে তা নিয়ে এসেছিল ৷ উম্মু সুলায়ম বললেন, শপথ ঐ সভার যিনি আপনাকে সত্য ও
সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, তাতে৷ এখনও পুর্ণ হয়ে আছে, তা থেকে ঘি টপকাচ্ছে ৷ আনাস
(রা) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হে উম্মু সুলায়ম ! তুমি আল্লাহ্র নবীকে খাওয়াতে
চেয়েছ, তাই আল্লাহ্ যদি তোমাকে খাওয়াতে চান তাহলে আশ্চর্যের কী আছে ? তা থেকে
তুমি নিজে খাও অন্যদেরকেও খাওয়াও ৷ উম্মু সুলায়ম বলেন, তখন আমি ঘরে ফিরে আসলাম
এবং সেই ঘি আমাদের একটি বড়পাত্র এবং অন্যান্য পাত্রে নিয়ে বন্টন করলাম, আর এরপর
বয়ামে যা অবশিষ্ট থাকল তা আমরা একমাস বা দুইমাস ঘরে ব্যঞ্জনরুপে ব্যবহার করলাম ৷
এ প্রসঙ্গে আরেকটি হাদীস
বায়হাকী, হাকিম উম্মু আওস আল-বাহযিয়্যা সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন,
একবার আমি একটি পাত্রে ঘি জমা করে তা রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে হাদিয়া দিলাম ৷ তখন তিনি
তা গ্রহণ করলেন এবং পাত্রে সামান্য ঘি অবশিষ্ট রেখে তাতে কু দিয়ে বরকতের দৃআ
করলেন ৷ তারপর তার পৃহবাসীদের বললেন, তার পাত্রটি ফিরিয়ে দাও ৷ তারা যখন তা
ফিরিয়ে দিলেন তখন তা ঘিতে টইটম্বুর ৷ উম্মু আওস বলেন, তখন আমি ধারণা করলাম যে,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বুঝি তা গ্রহণ করেননি ৷ তখন তিনি বিলাপ করতে করতে এসে বললেন, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ ! আমি তা জমা করেছি আপনার খাওয়ার জা! (আপনি কেন তা গ্রহণ করেননি)
তখন নবী করীম (সা) বুঝতে পারলেন যে, তার দু আ কবুল হয়েছে তখন তিনি বললেন,
তোমরা গিয়ে তাকে বল, সে যেন বরকতের দু আ করে তা যেতে থাকে ৷ এরপর উম্মু আওস
নবী করীম (সা) এর অবশিষ্ট জীবনকাল এবং আবু বকর, উমর ও উছমানেব (রা)
খিলাফতকাল পর্যন্ত তা খেয়েছিলেন ৷ এরপর হযরত আলী ও মু আবিয়ার মাঝের বিরোধকালে
তা নিঃশেষ হয়ে যায় ৷
অপর একটি হাদীস
বায়হাকী, হাকিম আবু হুরায়রা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, উম্মু
শুরায়ক নামে দাওস গোত্রের একজন শ্ৰীলোক ছিলেন, এক রমযানে তিনি ইসলাম গ্রহণ
করেন ৷ এরপর আবু হুরায়রা তার ইিজরত এবং ঐ ইয়াহুদীর সহচার্য বিষয়ক হাদীস উল্লেখ
করেছেন, এবং আরও উল্লেখ করেছেন যে, তিনি পিপাসার্ত হলেন, কিভু ইয়াহ্দী না হওয়া
পর্যন্ত উক্ত ইয়াহুদী তাকে পানি পান করাতে অস্বীকার করল ৷ এরপর তিনি ঘুমিয়ে গেলেন ৷
স্বপ্নে দেখলেন যে, কেউ তাকে পানি পান করাচ্ছে ৷ এরপর তিনি যখন জাগলেন তখন তিনি
পিপাসামুক্ত-তৃপ্ত ৷ তারপর তিনি যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে আসলেন, তখন তিনি তাকে
নিজের ঘটনা বললেন ৷ তখন নবী করীম (সা) তার নিজের জন্য বিবাহের প্রস্তাব দিলেন; কিন্তু
তিনি নিজেকে নবী করীম (না)-এর উপযুক্ত ভাবলেন না ৷ তিনি বললেন, তার চেয়ে বরং
আপনার পছন্দের কারো সাথে আমার বিবাহ কাি ৷ তখন তিনি হযরত যায়দের সাথে তার
বিবাহ দিলেন এবং মােহরানা স্বরুপ তাকে তিরিশ সা (বব) প্রদানের নির্দেশ দিলেন এবং
বললেন, তা থেকে তোমরা খেতে থাক, মাপামাপি করো না ৷ আর তার সাথে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর জন্য হাদিয়া স্বরুপ একটি ঘিয়ের বয়াম ছিল ৷ তখন তিনি তার পরিচারিকাকে
নির্দেশ দিলেন তা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে পৌছিয়ে দিতে ৷ এরপর বয়ামটি খালি করা হল
এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার মুখ না বেধে তা ঝুলিয়ে রাখতে নির্দেশ দিলেন ৷ এরপর উম্মু
শুরায়ক এসে সেই পাত্রটিকে পুর্ণ দেখতে পেয়ে তার পরিচারিকাকে বললেন, আমি কি
তোমাকে তা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে পৌছিয়ে দিতে বলিনি ? তখন সে বলল, আমি তা
পৌছিয়ে দিয়েছি ৷ এরপর তারা বিষয়টি নবীজীর কাছে উল্লেখ করলে তিনি তাদেরকে তার মুখ
না বাধার নির্দেশ দিলেন, এভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর উম্মু শুরায়ক তার মুখ র্বড়াধলেন,
এরপর তারা সেই যব মেপে দেখলেন, তা ত্রিশ সা’ই রয়েছে, একটুওহ্রাস পায়নি ৷
এ প্রসঙ্গে আরেকটি হাদীস
ইমাম আহমদ, হাসান জাবির (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, উম্মু মালিক আল
বাহ্যিয়্যা নবী করীম (না)-কে তার একটি বয়ামে ঘি হাদিয়া পাঠাতেন ৷ একবার তার
সন্তানেরা তার কাছে ব্যঞ্জন চাইল, বিক্ষ্ম সে সময় তার কাছে কিছুই , কাি না ৷ তখন তিনি তার
ঐ ঘিয়ের বয়ামটি নিংড়ে তাদেরকে দিলেন যাতে তিনি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে হাদিয়া
পাঠাতেন ৷ তখন নবীব্জী তাকে জিজ্ঞেস করলেন তুমি কি তা নিংড়ে ফেলেছো ? তখন আমি
বললাম , জী হা ৷ তিনি বললেন, তুমি যদি তাকে তার অবস্থায় ছেড়ে দিতে তাহলে তার ঘি
প্রদান অব্যাহত থাকত ৷ তারপর ইমাম আহমদ এই সনদে জাবির থেকে বর্ণনা করেন যে,
একবার তার কাছে এসে এক ব্যক্তি খাবার চাইল, তখন তিনি তাকে অর্ধওয়াসাক যব দান
ৰল্মলেন ৷ এরপর সেই ব্যক্তি তার শ্রী এবং তাদের একজন অতিথি তা থেকে দীর্ঘদিন খেল ৷
অবশেষে তারা একদিন তা পরিমাপ করার তা নিঃশেষ হয়ে গেল ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন, তোমরা যদি তা না মাপতে তাহলে তোমরা অব্যাহতভাবে তা খেতে পারতে এবং তা
তোমাদের জন্য স্থায়ী হত ৷ মুসলিম, আবুঘৃ যুবায়র থেকে ডিন্নসুত্রে এই হাদীস দুটি রিওয়ায়াত
করেছেন ৷
আবু তালহা আনসারী কর্তৃক রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে আপ্যায়ন
বুখারী, আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ ইসহাক ইবন আবদুল্লাহ ইবন আবু তালহা সুত্রে
বর্ণনা করেন যে, তিনি জানান ইবন মালিক (রা)-কে বলতে শুন্যেছন-একবার আবু তালহা
টমু সুলায়মকে বললেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর ক্ষীণ স্বরে আমি ক্ষুধার আভাস পাচ্ছি, তোমার
কাছে কি খাওয়ার মত কিছু আছে ? জবাবে তিনি বললেন, হী ৷ এ কথা বলে তিনি কয়েকটি
ৰ্বের চাকতি রুটি বের করলেন, তারপর তার একটি ন্ওড়না বের করে তার একাত্শ দিয়ে
ৰুটিশুলি পেচিয়ে আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন আর একাংশ দিয়ে আমার হাত পেচিয়ে দিলেন ৷
ৰ্তঃপর আমাকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে পাঠালেন ৷ আনাস বলেন, তখন আমি তা নিয়ে