তাদের মধ্যে কতক আপনার দিকে কান পেতে রাখে কিন্তু আমি তাদের অম্ভরের উপর
আবরণ দিয়ে রেখেছি যেন তারা তা উপলব্ধি করতে না পারে ৷ তাদেরকে বধিৱ করেছি এবং
সমস্ত নিদর্শন প্রত্যক্ষ করলেও তারা তাতে ঈমান আনবে ন ৷ এমনকি তারা যখন আপনার
নিকট উপস্থিত হয়েত তর্কে লিপ্ত হয় তখন কাফিররা বলে এটি তে ৷ অতীভ্রুত র উপাখ্যান
ব্যতীত আর কিছুই নয় ৷ তারা অন্যকে তা থেকে বিরত রাখে এবং নািউজরাও তা থেকে বিরত
থাকে ৷ আর তারা শুধু নিজেদেরকে ধ্বংস করে অথচ তারা উপলব্ধি কার না ৷ ” (৬ : ২৫ ২৬)
আয়াতে উল্লিখিত ণ্ছু১দ্ভু (তারা) শব্দ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে এটি দ্বার৷ একক ব্যক্তি নয় বরং
ব্যক্তি সমষ্টিকে বুঝানো হয়েছে আর তারা হল বাক্যের প্রথমে উল্লিাই৷ ও ব্যক্তিরা:
(তারা নিজেরা শুধু নিজেদেরকে ধ্ব স করে অথচ তারা তা উপলব্ধি করে না) আয়াতাৎশ
তাদের পুর্ণাঙ্গ ধ্বংস ও দৃর্নাম নির্দেশ করে ৷ আবৃত তালিব এই প্রকৃতির লোক ছিলেন না ৷ তিনি
বরং তাদের কথায় ও কাজে সর্বশক্তি দিয়ে রাসুলুল্লাহ্ ( সত্বেও তার সাথীদেরকে শত্রুদের হাত
থেকে রক্ষা করতেন ! কিন্তু তা সংত্ত্ব ও আল্লাহ্তাআলার মহান হিকমত ও প্রজ্ঞ৷ এবং অনন্য
যৌক্তিকতার প্রেক্ষাপটে আল্লাহ তাআলা আবু তালিবের ভাগ্যে ঈমান আনয়ন বরাদ্দ করেননি ৷
আল্লাহ তাআলার ওই প্ৰজ্ঞা ও যৌক্তিকতার প্রতি বিশ্বাস রাখা আমাদের কর্তব্য এবং তার
সিদ্ধ ৷ন্ত মেনে নিতে আমরা বাধ্য ৷ মুশরিকদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা
যদি আমাদেরকে নিষেধ না করতেন ত তাহলে আমরা অবশ্যই আবৃত তালিবের জন্যে ক্ষমা প্রার্থ্যা৷
করতাম এবং তার জন্যে আল্লাহর রহমত কামনা করতাম ৷
পরিচ্ছেদ
হযরত খাদীজা (রা) বিন্ত খুওয়াইলিদ-এর ওফাত
তার ফযীলত ও মর্যাদার কতক ইরুত ৷পুর্বে আলোচিত হয়েছে ৷ আল্লাহ তা ভালো তার প্রতি
সন্তুষ্ট হোন এবংত তাকেও সন্তুষ্ট করুন! তার শেষ বাসস্থান হিসাবে জান্নাত মনয়ুর করুন!
নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ত তা আল৷ হযরত খাদীজা (রা) এর শেষ বাসস্থান জ ন৷ ত নির্ধারণ করেছেন ৷
সতাবাদী ও সতাবাদীরু পে স্বীকৃত প্রিয়নবী (সা) এর বাণী দ্বারাও প্ৰমাণিত৷ তিনি হযরত
খাদীজ৷ ৷(রা) কে জান্নাতে মণি ঘুক্তার৩ ভৈত রী একটি বাসস্থানের সুস× বাদ দিয়েছেন, যেখানে
থাকবে না কোন শোরগােল আর থাকবেন, কোন দুঃখ-কষ্ট ৷
ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান উরওয়া ইরন যুবায়র (রা ) সুত্রে বলেছেন, নামায ফরয
হওয়ার পুর্বেই হযরত থাদীজা (রা)-এর ওফাত হয় ৷ অন্য সনদে যুহরী থেকে বর্ণিত ৷ তিনি
বলেছেন রাসুলুল্লাহ (না)-এর মদীনায় হিজরতের পুর্বে এবং নামায ফরম হওয়ার পুর্বে মক্কায়
হযরত থাদীজ৷ (রা)এর ওফাত হয় ৷ মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন, হযরত খাদীজ৷ (বা) এবং
অ ৩া৷বু তালিবের মৃত্যু একই বছরে হয় ৷ বায়হাকী (র) বলেন আমার নিকট বর্ণনা পৌছেহে যে,
আবু তালিবের মৃণ্ডু ভ্যুব তিন দিন পর হযরত খাদীজা (রা) এর ওফাত হয় ৷ আবদুল্লাহ ইবন
মুনদাহ্ তা ৷ব “আল মাআরিফাহ্’ গ্রন্থে এবং আমাদের শায়খ আবু আবদুল্লাহ হাফিয তা উদ্ধৃত
করেছেন ৷
বায়হাকী (র) বলেন, ওয়াকিদীব ধারণা যে , আবুতালিব ও হযরত থাদীজা (বা ) হিজবতের
তিন বছর , পুর্বে ইনতিকাল করেন ৷ গিরিসঙ্কটের নির্বাসন থেকে তারা যে বছর বেরিয়ে
এসেছিলেন সে বছরেই তাদের মৃত্যু হয় ৷ আবু তালিবের ৩৫ দিন পুর্বে খাদীজার (রা) ওফাত
হয় ৷
আমার মতে, তারা “নামায ফরয হওয়ার পুর্বে” বলে বুঝিয়েছেঃ৷ মিরাজের রাতে নামায
ফরয হওয়ার পুর্বে ৷ আমাদের জন্যে সমীচীন ছিল মিরাজের ঘটনা বর্ণনার পুর্বে খাদীজা ৷(রা )
ও আবু তালিবের ওফাণ্ডে র ঘটনা উল্লেখ করা যেমনটি করেছেন বায়হাকী প্রমুখ আলিমগণ!
তবে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে আমরা তাদের মৃত্যুর ঘটনা পরে উ ধ্ল্লখ করেছি ৷ অচিরেইত
বিবৃত হবে ৷ কারণ এই পদ্ধতিতে ই বাক্য ও ঘটনা সাজিয়ে গুছিয়ে বর্ণনা করা যাবে
ইনৃশাআল্লাহ্ ৷
ইমাম বৃখারী (র) বলেন, কুতায়ব৷ আবু হুরায়রা সুত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন
জিবরাঈল (আ) উপস্থিত হয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে বললেন, ইয়৷ বাসুলুল্লাহ্ৰু এই যে খাদীজা
(রা) , তিনি পাত্রের তরকারি অথবা আহার্য অথবা পানীয় নিয়ে আসছেন আপনার নিকট ৷ তিনি
যখন আপনার নিকট উপস্থিত হবেন তখন, তার প্রতিপালক আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে
এবং আমার পক্ষ থেকে আপনি তাকে সালাম পৌছিয়ে দিবেন এবং তাকে জ ন্নাতেব একটি
বাসন্থানের সুসংবাদ দেবেন ৷ সেটি হবে মুক্তার৩ তৈ রী ৷ তাতে কোন শোরগােল ও দুঃ খ কষ্ট
থাকবে না ৷ ইমাম মুসলিম (র) মুহাম্মদ ইবন ফুযায়ল থেকে এটি বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম বুখারী
(র) বলেন, মুসাদ্দাদ আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, ইয়াহ্ইয়া ইবন ইসমাঈল আবদুল্লাহ
ইবন আবু আওফা ৷কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, নবী করীম (সা) কি খাদীজা ৷(রা ) কে সুসং বাদ
দিয়েছিলেন ? উত্তরে আবদুল্লাহ ইবন আবু আওফা বললেন, হ্যা, তিনি সুসং বাদ দিয়েছিলেন
একটি জ ন্ননীি গৃহেব, যেটি মুক্তার তৈরী ৷ তাতে না থাকবে কোন শোরগােল আর না থাকবে
কোন দুঃখ-কষ্ট ৷ ইমাম বুখারী ও মুসলিম এই হাদীছটি ইসমাঈল ইবন আবু খালিদ থেকেও
বর্ণনা করেছেন ৷
সুহায়লী বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত খাদীজা (রা) কে জান্নাতে ৩বাশের তৈ গৃহের
সুসংবাদ দিয়েছিলেন অর্থাৎ মুক্ত ব র্বীশ ৷ কারণ, তিনি ঈমান আনয়নে সকল বাধা তুচছ
করে অগ্রগামিত ৷ লাভ করেছিলেন ৷ ওই গৃহে শোরগােল এবং ৪খ-কষ্ট থাকবে না ৷
কারণ তিনি কখনো রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে উট্টচ্চ৪স্বরে কথা বলেননি এবং৩ তার নিকট
শোরগােল করেননি ৷ তিনি জীবনে কো ন দিন রাসৃলুল্লাহ্ (সা) কে কষ্ট দেননি দুঃখ দেননিা
ইমাম বুথা ৷রী ও মুসলিম তাদের সহীহ্ গ্রন্থে হিশাম ইবন উরওয়ার মাধ্যমে তার পিতা সুত্রে
হযরত আইশা (রা) থেকে উদ্ধৃত করেছেন যে, হযরত আইশা (রা) বলেছেন আমি হযরত
খাদীজা (রা)-এর প্রতি যত ঈর্ষাকাতর ছিলাম রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর অন্য কোন সহধর্মিণীর প্ৰতি
তেমনটা ছিলাম না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে আমার বিবাহের পুবেই খাদীজা (রা) এর
ওফাত হয় ৷ ঈর্ষা৩ক৷ র ছিলাম এ জন্যে যে আমি তাকে বারবার খাদীজা (রা) এর কথা
আলোচনা করতে শুনতাম ৷ উপরন্তু আল্লাহ্৩ ত৷ আল৷ রাসুল (না)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাকে
জান্নাতে ঘুক্তার তৈরী একটি বাসগৃহের সংবাদ দিতে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) কখনো বকরীয
করলে খাদীজা (রা) এর বান্ধবীদের নিকট যথাসাধ্য অধিক পরিমাণে ৷গোশত পাঠাবু৩ ন ৷ এটি
ইমাম বৃখারীর ভাষ্য ৷
অন্য এক বংনািয় আছে, হযরত আইশ৷ (বা) বলেন, খাদীজা (রা)-এর প্ৰতি আমি যত
৩ছিলাম রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর অন্য কোন সহধর্মিণীর প্ৰতি আমি ড্ড ঈর্ষাম্বিত ছিলাম
না ৷ যারাসুলুল্লাহ্ (সা ) অধিক পরিমাণে তার কথা আলোচনা করচে ন বলে আমিত ৷করতাম ৷
তার ইনতিকালের তিন বছর পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে বিয়ে করেন ৷ আল্লাহ তা আলা
জিবরাঈল (আ )এর মাধ্যমে বাসুলুল্লাহ্ (না)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন খাদীজা (রা ) £ক জান্নাতে
মুক্তার তৈরী একটি বাসগৃহের সংবাদ দেয়ার জন্যে ৷ ইমাম বুখারী (র) এর অন্য এক বর্ণনায়
আছে হযরত আইশা (রা) বলেন, আমি খাদীজা ৷(রা) এর প্রতি যত ঈর্ষাকাত র ছিলাম অন্য
কারো প্রতি ততট৷ ছিলাম না ৷ আমি তাকে দেখিনি কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা ) অনেক বেশী বেশী
তার আলোচনা করতেন ৷ কোন কোন সময় বকরী যবাহ্ করলে তার কতক অঙ্গ প্ৰত্যঙ্গ তিনি
খাদীজার (রা) বান্ধবীদের জন্যে পাঠিয়ে দিতেন ৷ মাঝে মাঝে আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে
বলতাম, দুনিয়াতে যেন খাদীজাছ ছাড়া আর কোন মহিলাই ছিল না ৷ তখন তিনি বলতেন, সে
তো শ্রীর ন্যায় শ্রী ছিল বটে ৷ তার ঘরেই আমার ছেলেমেয়ে জন্ম নিয়েছিল ৷
এরপর ইমাম বুখারী (র) বলেছেন, ইসমাঈল আইশা (বা ) সুত্রে বর্ণিত ৷ তিনি
বলেছেন, খুওয়াইলিদের কন্যা এবং খাদীজার (রা) বোন হালাহ একদিন রাসুলুল্লাহ (সা) এর
নিকট প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করলেন ৷৩ তার কণ্ঠস্বর শুনে খাদীজা (রা) এর অনুমতি
করার কথা রাসুল (সা )-এর মনে পড়ল ৷ তাতে তিনি ব্যাকুল হয়ে উঠলেন এবং বললেন, হায়
আল্লাহ্ ৷ এ যে হালাহ্ এসেছে ৷ এ ঘটনায় আমি ঈর্ষাম্বিত হলাম এবং বাংলায় আপনার কী হল
যে, রক্তিম দু চোয়াল বিশিষ্ট কুরায়শী এক বুড়ীর কথা আপনি বারবার স্মরণ করছেন ৷ সে তো ,
করেই কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে ৷ তার উত্তম বিকল্প আল্লাহ তাআল৷ আপনাকে দান
করেছেন ৷ ইমাম মুসলিম (ব) সুওয়াইদ আলী ইবন মৃসহির থেকে অনুরুপ বর্ণনা
করেছেন ৷ এতে স্পষ্ট বুঝা যায় যে, হযরত আইশা (রা) হযরত খাদীজা (রা)-এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ
ছিলেন সম্মানের দিক থেকে হোক কিত্বা দাম্পত্য জীবনের দিক থেকে হোক ৷ কারণ, রাসুলুল্লাহ্
(সা) হযরত আইশা (রা)-এর উপরোক্ত মন্তব্য প্ৰত্যাথ্যান করেননি এবং এর কোন উত্তরও
দেননি ৷ ইমাম বুখারী (র) এর বর্ণনা থেকে তা প্রতীয়মান হয় ৷
পক্ষাম্ভরে ইমাম আহমদ হযরত আইশা (রা) থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, একদিন
রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত খাদীজা (বা) সম্পর্কে আলোচনা করলেন ৷ তার প্রশংসা তিনি আনেক
ঈর্ষা ত হয়ে উঠলাম এবং বললাম, ইয়া রড়াসুলাল্লাহ্ রক্তিম দু চোয়াল বিশিষ্ট এক কুরায়শী
বুড়ীর চেয়ে অনেক ভাল ত্রী তো আল্লাহ্ তাআলা আপনাকে দিয়েছেন ৷ আমার মন্তব্য শুনে
ক্ষোভে ও দু৪খে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মুখমণ্ডল এমনি বিবর্ণ হয়ে পড়েছিল যা ওহী নাযিল
হওয়ার সময় অথবা আকাশে কাল মেঘ দেখা দেয়৷ কালে তা রহমতের মেঘ, না আযাবের মেঘ
এটা আমার পুর্বে ছাড়া অন্য কোন সময় আমি দেখিনি ৷ ইমাম আহমদ (র) আবদুল
মালিক ইবন উমায়র সুত্রে অনুরুপ উদ্ধৃত করেছেন ৷ ওই বর্ণনার )ট্রুও১ট্রু;; ৷ ; ৷ স্পে ন্ (রক্তিম
দু চোয়াল) এর পরে (যে প্রথম যুগে মৃতৃবরণ করেছে) কথাটি
অতিরিক্ত রয়েছে এবং ) শ্াব্দের পরিবর্তে শব্দ রয়েছে ইমাম আহমদ (র) একা এই
বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন ৷
এটি একটি ভাল সনদ ৷ ইবন ইসহাক আইশা (রা) সুত্রে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন,
রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন হযরত খাদীজ৷ (রা)-এর কথা আলোচনা করতেন, তখন তার প্রশৎসায়
পঞ্চমুখ হয়ে উঠতেন ৷ আইশা (বা ) বলেন, একদিন আমি ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠলাম এবং বললড়াম,
আপনার কী হল যে, আপনি ব্যাপকভাবে রক্তিম চোয়াল বিশিষ্ট ওই মহিলার কথা আলোচনা
করছেন ৷ আল্লাহ (তা আপনাকে তার উত্তম বিকল্প দান করেছেন ৷ উত্তরে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন আল্লাহ তা আলা আমাকে তার উত্তম বিকল্প দেননি ৷ সে ৫৩ ৷ এমন এক মহিলা ছিল
সবাই যখন আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছে তখন সে আমার প্ৰতি ঈমান এনেছে ৷ সবাই যখন
আমাকে মিথ্যাবাদী ঠাওরিয়েছে, তখন সে আমাকে সতবােদীরুপে গ্রহণ করেছে ৷ মানুষ যখন
আমাকে কেবল বাংলা দিয়েছে, তখন সে আপন ধন-সম্পদ দিয়ে আমার সহযোগিতা করেছে ৷
আমার অন্যান্য শ্রী যেখানে আমাকে সন্তান দানে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে তার মাধ্যমে আল্লাহ
তাআলা আমাকে সন্তান দান করেছেন ৷ এটিও ইমাম আহমদ (র)-এর একক বর্ণনা ৷ এটির
সনদে কোন সমস্যা নেই ৷ বর্ণনাকারী মুজালিদ-এর বর্ণনার সমর্থনে ইমাম মুসলিম অন্য হাদীছ
উদ্ধৃত করেছেন ৷ তার সম্পর্কে বিতর্ক সর্বজন বিদিত ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
“অন্যান্য শ্রী যেখানে আমাকে সন্তান দিতে ব্যর্থ হয়েছে অথচ তার মাধ্যমে আল্লাহ আমাকে
সন্তান দান করেছেন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর এ উক্তিটি সম্ভবত মারিয়া (রা)-এর ঘরে নবীপুত্র
হযরত ইবরাহীম (রা) এর জন্মের পুর্বেকার ৷ মুলত এ মন্তব্য মারিয়া কিবতিয়্যাহ (বা ) রাসুলের
তত্তাবধানে আমার পুর্বের ৷ এটাই নিশ্চিত ৷ কারণ, ইণ্ডে তাপুর্বে আলোচিত হয়েছে এবং পরেও
আলোচিত হবে যে, একমাত্র ইবরাহীম (রা ) ব্যতীত রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সকল ছেলে-যেয়ে
হযরত খাদীজ৷ (রা)-এর যরেই জন্মগ্রহণ করেন ৷ ইবরাহীম (রা)-এর জন্ম হয় মিসরবাসিনী
হযরত মারিয়া কিবতিয়্যাহ এর গর্ভে ৷
একদল উলামায়ে কিরাম এই হাদীছ দ্বারা প্রমাণ করেন যে, হযরত আইশ৷ (বা) থেকে
হযরত খাদীজ৷ (ব ) অধিক মর্যাদাবান ও উত্তম ৷ অপর একদল এই হাদীছের সনদ সম্পর্কে
বিরুপ মন্তব্য করেছেন ৷ অন্য একদল এ ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, দ ম্প জীবনের দৃষ্টিকোণ থেকে
হযরত আইশা (বা) উত্তম ছিলেন ৷ বর্ণনা থেকে তা স্পষ্ট বুঝা যায় কিংবা এরুপ ধারণা পাওয়া
মুখের লাবণ্য সরে গািয় মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল ৷
যায় ৷ কারণ, রুপে-গুণে, যৌবন-সৌন্দর্যে এবং মনােরম সংসার জীবন যাপনে হযরত আইশা
(রা) ছিলেন পুর্ণাঙ্গ ও পরিপুর্ণ ৷ “আল্লাহ আপনাকে তার উত্তম বিকল্প দান করেছেন ৷” এ মন্তব্য
রানিজের পবিত্রত৷ বর্ণনা করা এবং নিজেকে খাদীজা ৷(রা) থেকে ভ ৷ল বলা হযরত আইশা
(রা) এর উদ্দিষ্ট ছিল না ৷ কে পবিত্রাত্ম৷ আর কে৩ তা নন, সে বিচারের তার মুলত আল্লাহ্রই
হাতে ৷ যেমন আল্লাহ তা ৩া৷লা বলেন :
“তোমরা আত্মপ্ৰশৎস৷ করো না ৷ ” তিনিই৩ ৷ল জানেন মুত্তাকা কে ?
আল্লাহ তা আল৷ অন্যত্র বলেন০ ং
া
“আপনি কি তাদেরকে দেখননি যারা নিজেদের পবিত্র মনে করেন ? না বরং আল্লাহ যাকে
ইচ্ছা পবিত্র করেন ৷” (৪৪ ৪৯)
খাদীজা (রা) ও আইশা (রা)-এর মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ এ মানআলাতে অতীত ও বর্তমান
উলামায়ে কিরাম ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করেন ৷ শিয়াপন্থিগণ কোন মহিলাকেই হযরত খাদীজা
(রা)-এর সমকক্ষ মনে করে না ৷ যুক্তি হিসেবে তারা বলে যে, স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তাকে
সালাম জানিয়েছেন ৷ ইবরাহীম (রা) ব্যতীত রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সকল সন্তান তার গর্ভে জন্ম
নেন ৷ তার জীবদ্দশায় তার সম্মানার্থে রাসুলুল্লাহ্ (সা) অন্য কাউকে বিয়ে করেননি ৷ ইসলাম
গ্রহণে ৷তিনি সকলের অংাণী ৷ তিনি স৩ ত্যানুসারীদের অন্যতম এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নবুওয়াত
লাভের সুচনায়৩ তিনি তার নবুওয়াতের স্বীকৃতি ৩দিয়েছেন ৷ তার জান মাল রাসুলুল্লাহ্( স৷ ) এর
জন্যে উৎসর্গ করে দিয়েছেন ৷
আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামাআতের কেউ কেউ বলেন, তাদের উভয়ের প্রকৃতব্রকেরই কোন
কোন দিকে অন্যজন থেকে শ্রেষ্ঠতৃ রয়েছে ৷ এটি সর্বজন বিদিত ৷ তবে হযরত আইশা (রা) কে
অধিকতর গ্রেষ্ঠতৃ প্রদানে যারা উৎসাহবােধ্ করেন, তাদের এমনাে ভাবের কারণ হচ্ছে তিনি
হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা) এর কন্যা ৷ তিনি হযরত খাদীজা ৷(রা) থেকে বেশী জ্ঞানী ৷
বস্তুত মেধা, জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা ও ভাষার প্রাঞ্জলতার ক্ষেত্রে উম্মণ্ডে র কেউই হযরতঅ অ্যাইশার (রা)
সমকক্ষ নন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত আইশা (রা) কে যত তা ৷লবাসতেন অন্য কা ৷উকে ততটা
নয় ৷ তার পবিত্রত৷ ও সতীত্বে র সমর্থনে সপ্ত আকাশের উপর থেকে আয়াত নাযিল হয়েছে ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর ইনতিকালের পর তার থেকে হাদীছ বর্ণনার মাধ্যমে হযরত আইশা (রা)
জ্ঞানের এক বিশাল ও বরকতময় ভাণ্ডার উম্ম৩ তাক উপহার দিয়েছেন ৷ এমনকি কেউ কেউ এ
প্রসিদ্ধ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন যে,
তোমাদের দীনের অর্ধাং শ তোমরা হুমায়রা অর্থাৎ আইশা (রা) থেকে গ্রহণ কর ৷ ” তবে
সঠিক কথা হল, তাদের প্ৰতেব্রুবেইি এক এক দিক থেকে গ্রেষ্ঠত্বে র অধিকারী ৷৩ ৩াদের গ্রেষ্ঠত্বের
বিষয়গুলো সম্পর্কে যে চিম্ভা-ভাবনা ও পর্যবেক্ষণ করবে, সে অবশ্যই পরম আনন্দিত ও বিস্মিত
হবে ৷ তবে এ বিষয়ে সর্বাধিক উত্তম পথ হল এটি আল্লাহর প্ৰতি ন্যস্ত করা যে, আল্লাহ্ই ভাল
জানেন তাদের দু’জনের কে অধিকতর মর্যাদাবান ও শ্রেষ্ঠ ৷ কোন বিশেষ ক্ষেত্রে অকাট্য ও
সন্দেহাতীত প্রমাণ গেলে সে ক্ষেত্রে নিশ্চিত মন্তব্য করা যেতে পারে ৷ অথবা কোন ক্ষেত্রে প্রবল
ধারণা জনা৷লে সে বলবে যে, আমার জানা মতে আমার এই মন্তব্য পেশ করলাম ৷ যে ব্যক্তি এ
মাসআলায় কিংবা অন্য কোন মাসআলায় মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে চায়, তার জন্যে
উত্তম পন্থা হল একথা বলা “আল্লাহ্ইতাল জ নেন”
ইমাম আহমদ বুখারী মুসলিম, তিরমিষী নাস ঈ প্রমুখ হিশাম ইবন উরওয়া
আলী ইবন আবু৩ তালিব (র ) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন ( য, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ইরশাদ
করেছেন০ ং
শ্রেষ্ঠ মহিলা ইমরানের কন্যা মারয়াম এবং শ্রেষ্ঠ মহিলা ন্াশু-য়াইলিদের কন্যা খাদীজা (র৷ )া
এর অর্থ তারা নিজ নিজ যুগের শ্রেষ্ঠ মহিলা ছিলেন ৷
শুব৷ বুররা ইবন ইয়াস থেকে বর্ণিত ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বলেছেন :
পুরুষদের মধ্যে অনেকেই কামালিয়াত অর্জন করেছেন কিত্তু মহিলাদের মধ্যে
কামালিয়াত ও পুর্ণতা পেয়েছেন তিনজন ৷ ইমরানের কন্যা মারয়াম, ফিরআওনের শ্রী আসিয়া
এবং খুওয়াইলিদের কন্যা খাদীজা (রা ) ৷ আর সকল মহিলার উপর আইশার (বা) শ্রেষ্ঠতৃ তেমন
যেমন সকল খাদ্যের উপর ছ৷ ৷রীদ অর্থাৎ গোশত-রুটির মিশ্রিত খাদ্যের শ্রেষ্ঠতু ৷
ইবন মারদাবিয়্যাহ এই হাদীছ তার তাফসীর গ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেন ৷ শু বা ও তার পরবর্তী
বংনিাকারিগণ ৷পর্যম্ভ এই হাদীছের সনদ বিশুদ্ধ ৷ বিশ্নেষকগণ ৷বলেন যে অবদান ও কমগুণ
উল্লিখিত তিন মহিলা ৩ার্থ ৎ আসিয়া, মারয়াচুাও খাদীজা ৷(রা) এর মধ্যে ছিল তাহল তাদের
প্ৰতোকেই এক একজন নবী-রাসুলের যিম্মাদারী গ্রহণ ৷করেছিলেন এবং অত্যন্ত বিশ্বস্তত৷ ও
নিষ্ঠার সাথে ওই যিম্মাদারী পালন করেছেন ৷ তারা সংশ্লিষ্ট নবীগণের প্ৰতি ঈমান এনেছেন ৷
আসিয়া হযরত মুসা (আ)-কে লালন, পালন করেছেন, তার উপকার করেছেন এবং নবুওয়াত
লাভের পর তাকে সত্য নবী রুপে গ্রহণ করে তবে প্রতি ঈমান এসেছেন ৷ মারয়াম (আ) তার
পুত্র ঈস৷ (আ)-এর যিম্মাদারী নিয়েছিলেন ৷ পরিপুর্ণতাবে সে যিম্মাদারী পালন করেছিলেন ৷
রিসালাত পাওয়ার পর তিনি তার প্রতি ঈমান এসেছিলেন ৷ হযরত খাদীজা (বা) প্রিয়নবী
(সা) এর সাথে স্বেচ্ছায়ও সাগ্রহে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
থিদমতে নিজের ধন সম্পদ ব্যয় করেছিলেন ৷ তার প্রাং ৩ ওহী নাযিল হওয়ার পর তাকে সত্য
নবী রুপে গ্রহণ করে তার প্রতি ঈমান এসেছিলেন ৷
“সকল মহিলার উপর আইশার গ্রেষ্ঠতৃ তেমন সকল খাদ্যের উপর ছারীদ খাদ্যের গ্রেষ্ঠতৃ
যেমন ৷” হাদীছের এই অংশটি শুবা আবু মুসা আশআরী (বা) সনদে সহীহ্ বুখারী এবং
সহীহ্ মুসলিমে উদ্ধৃত আছে ৷ আবু মুসা আশআরী (বা) বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন
“অনেক পুরুষ কামালিয়াত অর্জ্য৷ করেছে কিন্তু মহিলাদের মধ্যে কামালিয়াত লাভ করেছেন
মাত্র ফিরআওনের শ্রী আসিয়া, ইমরানের কন্যা মারয়াম ৷ আর সকল মহিলার উপর অইিশা
(রা)-এর গ্রেষ্ঠতৃ সকল খাদ্যের উপর ছারীদের শ্রেষ্ঠত্বের ন্যায় ৷ ছারীদ হল রুটি ও গোশতের
ৎমিশ্রণে তৈরী খাদ্য ৷ যেমন একজন কবি বলোছন০
“রুটির সাথে ব্যঞ্জনরুপে যখন গোশত মিশ্রিত করা হয় তখন এটি ছারীদ খাদ্যে পবিণত
হয় ৷ এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার বিশেষ ৷ ”
রাসুলুল্লাহ (না)-এর বাণী “আইশার শ্রেষ্ঠতৃ অন্য নারীদের উপর” এটি দ্বারা হয়ত
ব্যাপকতা বুঝানো হয়েছে ৷ তা হলে অর্থ হবে হাদীছে উল্লিখিত মহিলাগণ সকলে সমমর্যাদা
সম্পন্ন এবং তাদের একজনকে অন্যজনের উপর শ্রেষ্ঠতৃ দিতে গেলে অন্য দলীল-প্রমাণ
প্রয়োজন হবে ৷ আল্লাহ্ইভ ৷ল জানেন ৷
হযরত খাদীজা (না)-এর মৃত্যু-উত্তর রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বিবাহ
বিশুদ্ধ অভিমত এই যে, হযরত খাদীজা (রা)-এর পর রাসুলুল্লাহ (স৷ ) সর্বপ্রথম হযরত
আইশা (না)-কে বিবাহ করেন ৷ এ বিষয়ক আলোচনা শীঘ্রই আসছে ৷ ইমাম বুখারী (র)
“হযরত আইশা (রা)-এর বিবাহ” অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন যে যুআল্লা আইশা (র৷ )
থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সা) তাকে বলেছেন০ : স্বপে আমার নিকট( তামাকে দুইবার
দেখানো হয়েছে ৷ একবার আমাকে দেখানো হল যে, তুমি একটি রেশমী৷ চাদরে জড়ানাে ৷ কে
যেন আমাকে বলছেন, এই যে আপনার শ্রী, ঘোমট৷ তুলে তাকে দেখুন ৷ তখন আমি দেখলাম
যে , তুমি ৷ তখন আমি মনে মনে বললাম : “এটি যদি আল্লাহর ফায়সাল৷ হয়ে থাকে, তবে তা
আল্লাহ কার্যকরী করবেন ৷ ”
ইমাম বুখারী (র) “কুমারীর বিবাহ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন যে, ইবন আবু মুলায়কা
বলেছেন, হযরত ইবন আব্বাস (বা) হযরত আইশা (রা)-কে বলেছিলেন, বাসুলুল্লাহ্ (না) তো
আপনি ব্যতীত অন্য কোন কুমারী মেয়েকে বিবাহ করেননি ৷ ইসমাঈল ইবন আবদুল্লাহ
হযরত আইশা (রা) সুত্রে বলেছেন, তিনি বলেন, আমি বললাম , ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ !ৰু আপনি যদি
এমন কোন প্রান্তরে যান, যেখানে কতক গাছপালা রয়েছে যেগুলো থেকে ইতােপুর্বে কিছু
খাওয়া হয়েছে আর কতক আছে যেগুলো অক্ষত , যেগুলো থেকে ইভােপুর্বে খাওয়া হয়নি, তখন
আপনি কোন ঘাস-বৃক্ষে আপনার উট চরাবেন ? উত্তরে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, যে ঘাস-বৃক্ষ
থেকে ইতােপুর্বে খাওয়া হয়নি সেটিতে চরাব ৷ এ উক্তি দ্বারা হযরত আইশা (বা) বুঝাতে
চেয়েছেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা) র্তাকে ছাড়া অন্য কোন কুমারী শ্রী গ্রহণ করেননি ৷ ইমাম বুখারী
একাই এই হাদীছ উদ্ধৃত করেছেন ৷ তারপর ইমাম বুখারী (র) বলেছেন, উবায়দ ইবন