ধরে নিয়ে আসবে ৷ ” এরপর বাযাম তার হিসাব রক্ষক ও সচিবকে পারস্যের পত্র সহকারে প্রেরণ
করলো এবং তার সাথে খরথুস্রা নামী পারস্যের একটি লোককে প্রেরণ করলো ৷ তাদের
দৃইজনের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে একটি পত্র লিখে যার মধ্যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে এ
দুজনের সাথে কিসরা সম্রাটের কাছে আগমন করার নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ অন্যদিকে বাযাম আবু
যুওয়াহকে বলেছিলেন, ঐ ব্যক্তির শহরে তুমি আগমন করবে তার সাথে তুমি কথা বলবে এবং
তার সম্বন্ধে বিস্তারিত খবর নিয়ে আসবে ৷ ইতে ৷মধ্যে পুর্বের প্রেরিত দু ব্যক্তি বের হয়ে গেল এবং
ন্৷ তায়েভ্রুফ গিয়ে পৌছল ৷ তারা তা ৷য়েফের ভুখণ্ডে কুরায়শের এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করল এবং
তাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল ৷ সে বলল যে, তিনি মদীনায় আছেন ৷ তায়েফবাসী
ও কুরায়ণের উল্লিখিত ব্যক্তি আগত্তুক দুই জনকে পেয়ে খুবই খুশী হল এবং একে অন্যকে
বলতে লাগল, শুভ সংবাদ গ্রহণ কর, কেননা, সম্রাট কিসরা তাকে লক্ষষ্ বন্তুতে পরিণত করেছেন,
এটা ই ঐ ব্যক্তির শায়েস্তা হবার জন্যে যথেষ্ট ৷ উক্ত দুই ব্যক্তি তায়েফ থেকে বের হয়ে মদীনায়
রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর কাছে আগমন করল ৷ আবু যুওয়াহ রাসুচ্পুহু; ৷ ন্ ( সা )-এর সাথে কথা বলল
এবংস ৎবাদ দিল যে, শাহানশা হ রাজ৷ ৷ধিরাজ কিসরা শাসনকতা বাবামের কাছে পত্র লিখেছেন ৷
পত্রে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছেত তিনি যেন আপনার কাছে এমন কোন ব্যক্তিকে প্রেরণ করেন
যে আপনাকে নিয়েত ৷র কাছে যাবে ৷ আর আমাকে পাঠানো হয়েছে যেন আপনি আমার সাথে
চলেন ৷ যদি আপনি তা করেন তাহলে তিনি সম্রাটের কাছে পত্র লিখবেন যাতে করে আপনার
উপকা ৷র হয় ৷ আর এটা ই অ পানার মঙ্গলের জন্যে যথেষ্ট ৷ অন্যদিকে যদি আপনি যেতে অস্বীকার
করেন, তাহলে আপনি ইতোমধ্যে জেনে নিয়েছেন যে এটা হবে আপনার আপনার সম্প্রদায় ও
দেশের জন্যে মারাত্মক বিপর্যয় ও ধ্বংসের কারণ ৷ তারা দু’ জন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে
আগমন করলেন ৷ তারা দুজনই দাড়ি মুণ্ডিত ছিল এবং বড় গৌফধারী ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
তাদের দিকে বিরুপ দৃষ্টিতে দেখলেন এবং বললেন, সর্বনাশ, কে তোমাদেরকে এরুপ করতে
বলেছে ?” তারা বলল , “আমাদের মনিব কিসরা আমাদেরকে এরুপ করতে বলেছেন ৷ ”
রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, “কিন্তু আমার প্রতিপালক দাড়ি বৃদ্ধি করতে ও পৌফ ছুাটতে হুকুম
দিয়েছেন ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তে ৷মরা ফিরে যাও আপামীকাল আবার এসে৷ ৷ ”
রাবী বলেন, আসমান থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে সংবাদ আসল যে, আল্লাহ তা জানা
কিসৃরার বিরুদ্ধে তার ছেলে শিরওয়েহকে আধিপত্য দা ন করেছেন ৷ সে তার পিতাকে অমুক
মাসে ও অমুক রাতে হত্যা করেছে ৷ রাবী বলেন, তাদের দৃ জনকে ডেকে এ সংবাদটি দিলেন ৷
তারা বললো, “আপনি কি জানেন আপনি কী বলছেন ? আমরা আপনার প্ৰতিশোধ (নব, তবে
হালকাভাবে ৷ আমরা আপনার এ মন্তব্যের ব্যাপারে কি শাসনকর্তা বাযামকে অবহিত করবো
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হীা তোমরা আমার পক্ষ থেকে তাকে এ সম্পর্কে জানিয়ে দাও ৷ আর
তাকে তোমরা বলে দাও আমার প্রচারিত ধর্ম ও আধিপত্য কিসরা ৷র মত খ্যাতি লাভ করবে এবং
পৃথিবীর আনাচে-কানাচে পৌছবে ৷ আবার তোমরা তাকে বল, যদি তুমি ইসলাম কবুল কর
তাহলে তোমার রাজত্ব ও আধিপতাণ্ তামার হাতেই থাকতে দেওয়া হবে ৷ এরপর খরখুসরা কে
একটি স্বর্ণারীপ্য খচিত কমরবন্দ দেওয়া হল আর তা তিনি কোন এক রাজার পক্ষ থেকে
১ টীকা ও বর্ণনান্তরে বাবুয়েহ বা বাবুইয়া আছে ৷ শ্সম্পাদক
উপচৌকন স্বরুপ প্রাপ্ত হয়েছিলেন ৷ উপরোক্ত দুই ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দরবার থেকে বের
হয়ে বাযামের কাছে আগমন করল এবং তাকে বিস্তা বিত ঘটনা জান ল ৷ বাযাম বললেন অ ৷ল্লাহ্র
শপথ, এটা কোন রাজা-বাদশার কথা নয় ৷ তিনি নিশ্চয়ই আমার মতে একজন নবী যেমন৩ তিনি
নিজে বলেছেন ৷ আর তিনি যা বলছেনত তা অবশ্যই বা ৷স্তবায়িত হবে ৷ আর এ খবরটি যদি সত
হয়ে থাকে তাহলে৩ তিনি সত্যিক৷ ৷র প্রেরিত রাসুল ৷ আর তার সং বাদ যদি সত্যি না হয়, তাহলে
আমরা তার সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্ত নেব ৷ কিছুদিনের মধ্যে বাযামের কাছে শিরওয়ের পত্র
পৌছল ৷ তাতে লিখিত ছিল আমি কিস্রাকে হ৩ ত্য৷ করেছি ৷ আর তা করেছি কেবল
পারস্যবাসীদের স্বার্থেই ৷ কেননা, তিনি পারস্যের সজ্রান্ত লোকদেরকে ও সীমান্ত পাহারাদারদেরকে
নির্বিচারে হত্যা করেছেন ৷ তোমার কাছে যখন আমার এ পত্রটি পীছ£ ৷ তখন তুমি তোমার
লোকদের থেকে আমার আনুগতাের শপথ গ্রহণ করবে ৷ আর ঐ ব্যক্তির কাছে গমন করবে যার
ব্লুকাছ কিসৃরা পত্র লিখেছিলেন ৷ এ ব্যাপারে তোমার কাছে আমার পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত
তাকে আর কোন প্রকার বিরত করবে না ৷ বাযামের কাছে যখন শিরওয়ের পত্র পৌছল তখন তিনি
বলতে লাগলেন, নিশ্চয়ই ইনি আল্লাহর রাসুল ৷ এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং
ইয়ামানস্থ পারসিক কর্মকর্তারা সকলে ইসলাম কবুল করে নিলেন ৷ রাবী বলেন, বাবুইয়া বাযামকে
বলেছিল , আমি তার মত এত প্রতাপশালী কোন ব্যক্তির সাথে আজ পর্যন্ত কথা বলি নাই ৷ বাযাম
তাকে বললেন, তার সাথে কি কোন সাত্রী থাকে ? সে বললো, না’ ৷
ওয়াকিদী বলেন, ৭ম হিজরীর জুমাদ৷ ল আখির৷ মাসের তের৩ তারিখে রাত্রির দ্বিতীয় প্ৰহরে
কিসৃর৷ তার ছেলের হাতে নিহত হয় ৷
আমি বলি, কোন কোন কবির কবিতায় দিক নির্দেশনা পাওয়া যায় যে, মুহাররম সালে তাকে
হত্যা করা হয়েছিল ৷ একজন কবি বলেন :
“তারা কিস্রাকে রাঃ৩ তর বেলায় নিষিদ্ধ মাসে হ৩ ত্যা করেছিল ৷ হত্যাকারিগণ তাকে ফেলে
গেল ৷ তার দাফন কাফনে তারা কোন প্রকার প্রতিবন্ধকত৷ সৃষ্টি করেনি ৷”
আবর কবিদের কোন একজন বলেন : কিসৃরাকে তার পুত্ররা তলোয়ার দ্বারা এমনভাবে টুক্রা
টুক্র৷ করে হত্যা করেছিল যেমন কসাই মাৎসকে টুক্রা টুক্র৷ করে থাকে ৷ এমন একদিন তার
জন্যে মৃত্যু প্রকাশ পেল যেদিন প্রত্যেক গ৩বির্তীই তার গর্ভস্থিত সন্তানকে প্রসব করে থাকে ৷
(অর্থাৎ এ রাত টি ৫তর৩ তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ ১৪৩ তারিখ যাকে আরবী ভায যায় লাইভ
তামাম’ বলা হয় ৷ আবার দৃংখের বা৩ ও বলা হয় ৷
হাফিয বায়হাকী আবু বকর (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “একদিন
পারস্যের এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে আগমন করে ৷ তিনি তাকে বললেন, “আমার
রব্ব গতকাল রাত তােমা র মনিবকে হত্যা করেছেন ৷” রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সামনে জনৈক ব্যক্তি
বললেন, “তার কন্যা নাকি৩ তার উত্তরাধিকারী হয়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “ঐ সম্প্রদায়
সফলকাম হবে না, যাদের রান্থীয় কর্ণধার হবে শ্রী লোক ৷
বায়হাকী বলেন, দিহইয়৷ কালট্রুবীর বর্ণনায় এসেছে যে, যখন তিনি কায়সারের নিকট থেকে
ফেরত আসলেন তখন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দরবারে কিসৃরার দুতদেরকে দেখতে পেলেন ৷
কিসরা সানৃআর শাসককে লিখেছিলেন, ওে তামার বাজে যে লোকটির আবির্ভাব হয়েছে এবৎ
আমাকে তার প্রচারিত ধর্ম গ্রহণ করার জন্যে আহ্বান জানিয়েছে ৷ তার ঘোজখবর নাও এবং
তাকে দমন করার চেষ্টা ৷কর; নচেৎ তোমার বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ত তাই ঐ
শাসনকর্তা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে লোক প্রেরণ করে ৷ রাসৃলুল্লাহ্ (সা) দুতদের লক্ষ্য করে
বলেন, “ তোমাদের যিনি প্রেরণ করেছেন তাকে সংবাদ দাও যে, গতরাত আমার রব্ব তার
মনিবকে হত্যা করেছেন ৷’ ’বা স্তরে তাই ঘটেছে বলে পরে তা র ৷ জানতে পায় ৷
ইমাম বায়হাকী আবুহুরায়রা (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “একদিন সা’দ
(বা) রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দরবারে উপস্থিত হন ৷ বাসুলুল্লাহ্ (সা) ববলন, “সা’দের কাছে নিশ্চয়ই
কোন সৎবাদ আছে ৷ সা’দ (বা) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ কিসরা ধ্বংস হয়েছে ৷” বাসুলুল্লাহ্
(সা) বললেন, কিসরার প্রতি লা নত ৷ সে পারস্যের প্রথম নিহত ব্যক্তি ৷ এরপর আরবদের পালা
আমি বলি বলা বা হল, ইয়ামানের শাসক বাযামের পক্ষ <ৰুখন্ক যে দুই ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর দরবারে এসেছিল যাদের কাছে তিনি কিসরার নিহত হওয়ার সংবাদ দিয়েছিলেন, ঐ
সংবাদটি যখন দেশ দেশান্তরে প্রচারিত হল, তখন হযরত সা’দ ইবন আবু ওক্কাস (রা)-ই প্রথম
তা শুনে রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে ওনান ৷ বায়হাকী (বা) এভাবেই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন ৷
তারপর বায়হাকী (র ) আবু সালাম৷ ইবন আবদুর রহমানের বরাতে বলেন, কিসরা
যখন তার প্রাসাদে বসবাস করছিল তখন তার কাছে সত্যের বাণী বিভিন্নভাবে পৌছতে থাকে ৷
একদিন সে এক আগন্তুকের উপস্থিতিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে ৷ আগন্তুকের হাতে ছিল একটি
লাঠি ৷ কিসরাকে লক্ষ্য করে আগন্তুক বলল, “হে কিসরা ! এ লাঠি তোমার মাথায় ভাঙ্গার পুর্বে
কি তুমি ইসলাম গ্রহণ করবে ? কিসরা বললেন, হী৷ , আপনি আমার মাথায় লাঠি মারবেন না ৷
আগভৃক চলে গেলেন ৷ কিসরা দারোয়ানকে ডেকে বললেন, “ এ আগন্তুককে আমার কাছে
আমার জন্যে কে অনুমতি দিল ? তারা বলল, “আপনার কাছেতো কেউ আসেনি ৷” কিসরা
বললেন, “তোমরা মিথ্যা বলছ ৷” রাবী বলেন, “কিসরা তাদের উপর রাপাষিত হলো ৷ তাদেরকে
কঠোরভাবে ধমক দিল ৷ তারপর তাদেরকে ক্ষমা করে দিল ৷ যখন বছর শেষ হবার পথে, পুনরায়
ঐ ব্যক্তি লাঠি নিয়ে আগমন করলেন এবৎ বললেন, হে কিসরা ! তোমার মাথায় এ লাঠিভ ৷ঙ্গার
পুর্বে কি তুমি ইসলাম গ্রহণ করবে ? উত্তরে কিসরা বলল, “হ্যা, আপনি আমার মাথায় লাঠি
মারবেন না ৷ এবারও আগন্তুক চলে গেলেন ৷ কিসরা দারোয়ানদের ডেকে প্রথমবারের ন্যায় ধমক
দিল ও তাদের প্রতি অত্যন্ত রাগাম্বিত হল ৷ পরবর্তী বছর যখন আসল, তখন আগন্তুক ও লাঠি
নিয়ে পুর্বের ন্যায় আগমন করলেন এবৎ বললেন, হে কিসরা ৷ তোমার মাথায় এ লাঠি মারার
পুর্বে তুমি ইসলাম গ্রহণ করবে ? তখন কিসরা বললেন, না, লাঠি মারবেন না, না ৷লাঠি মারবেন
ন৷ ৷ কিন্তু আগন্তুকত তার মাথায় লাঠি মা রলেন ৷ এরপর আল্লাহ তা আলা ৷কিসরাকে ধ্বংস করে
দিলেন ৷
ইমাম শাফিঈ (র) আবুহুরায়রা (বা) হতে তাবর্ণন ৷করেন ৷ তিনি বললেন, বাসুলুল্লাহ্
(সা) বলেছেন, বত মান কিসরা ধ্বংস হবার পর আর কো ন কিসরা হবে না এবং বর্তমান কায়সার
ধ্বংস হবার পর আর কোন কায়সার হবে না ৷ যে সভার হাতে আমার জান, তার শপথ করে
বলছি, “তোমরা তাদের গুপ্তধন পরবর্তীতে আল্লাহর রাস্তায় দান করবে ৷” ১ মুসলিম (র) ও
অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম শাফিঈ (র) আরো বলেন, “যখন কিসৃরার কাছ রড়াসুলুল্লাহ্
(সা ) এর পত্র উপস্থাপন করা হল , যে তা ছিড়ে ফেলে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) তখন বললেন, তার
সাম্রাজ্যও এরুপ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে ৷ অন্য দিকে কায়সার রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পত্রের প্রতি সম্মান
প্ৰদশ্নি করেছিলেন, পত্রটিকে মিশৃক আম্বরের কৌটোয পুরে রেখেছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন, তার সাম্রাজ্য টিকে থাকবে ৷
ইমাম শাফিঈ (র) ও অন্যান্য উলামায়ে কিরাম বলেন, “আরব কাফিররা যখন ব্যবসার
উদ্দেশ্যে সিরিয়া ও ইরাক অড়াসত তখন তাদের মধ্যে যারা সুযোগ <;পন্ৰুদুদ্র মুসলমান হয়ে যেত ৷
ইরাক ও সিরিয়ার মাধ্যমে আরব কাফিররা তাদের জনবলশু ৷স পাওয়ার ভীতি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্
(সা )-এর কাছে অনুযোগ করল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “যখন কিসৃরা ধ্বংস হয়ে যাবে,
তারপর আর কোন কিসরা হবে না এবং যখন কায়সার ধ্বংস হয়ে যাবে তারপর আর কোন
কায়সার জন্ম নেবে না ৷” রাবী বলেন, “কালক্রমে কিসৃরাদের রাজত্ব চিরদিনের জন্যে বিলুপ্ত হয়ে
গেল ৷ আর সিরিয়া থেকে কায়সারদের রাজতৃও চিরদিনের জন্যে একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেল ,
যদিও কিছুদিন রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর পত্রের সম্মান করায় তার দৃআর বরকতে টিকে ছিল ৷ আল্লাহ্ই
অধিক পরিজ্ঞাত ৷
এখানে একটি বড় শুভ সংবাদ এই যে, রোমান রাজত্ব আর কোন দিনও সিরিয়া ভুখণ্ডে
প্রতিষ্ঠিত হবে না ৷ যিনি (রামের উপদ্বীপটিসহ সিরিয়ার শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা কায়সার
বলে ৷ যিনি পারস্যের শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা কিসরা বলে ৷ যিনি হৰেশার শাসনকর্তা হন
তাকে আরবরা নাজাশী বলে ৷ যিনি আলেকজাদ্রিয়ার শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা মুকাওকিস
বলে ৷ যিনি মিসরের শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা ফিরআউন বলে এবং হিন্দুস্থানের যিনি
শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা বাতলীমুস’ বলে ৷ এরুপে এগুলি ব্যতীত অন্যান্য দেশের অন্যান্য
নাম তাদের কাছে ছিল সুপরিচিত ৷ অন্যত্র এ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ৷
মুসলিম জাবির ইবন সামুরা হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ইরশাদ
করেন : “মুসলমানদের একটি দল কিসৃরার শুভ্র প্রাসাদে সুরক্ষিত সুপ্ত সম্পদ অধিকার করবে ৷
অন্য একটি সনদেও জারির ইবন সামুরা হতে অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে ৷ তবে এটাতে অতিরিক্ত
রয়েছে, জাবির ইবন সামুরা বলেন, “মুসলমানদের এ দলের মধ্যে আমার পিতা ও আমি ছিলাম
এবং আমাদের ভাগে পড়েছিল এক হাজার দিরহাম ৷
আলেকজাদ্রিয়ার শাসনকর্তা মুকাওকিস জুরায়জ ইবন মীনা আল-কিবতীর কাছে
পত্র প্রেরণ
ইউনুস ইবন বুকায়র আবদুল্লাহ ইবন আবদুল কাবীর বর্ণনায় বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা)
হাতির ইবন আবু বালতাআ (রা) কে আলেকজাদ্রিয়ার শাসনকর্তা মুকাওকিস এর কাছে পত্র
সহকারে প্রেরণ করেন ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর পত্রটিকে চুম্বন করলেন, হাতির ইবন আবু
১ এ উক্তিতে আর কোন কিসরা বা কায়সার হবে না বলতে তাদের মত এত প্রতাপশালী শাসক আর
হবে না বুঝানো হয়েছে ৷ সম্পাদকদ্বয় ৷
বালত৷ আ (রা) কে সম্মান করলেন, তাকে উত্তম আতিথ্য প্রদান করলেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা)
উত্তম উপচৌকনসহ তাকে বিদায় দিলেন ৷ হা৩ ৷তিব ইবন আবুব৷ ল্ত আ (রা) এর সাথে রাসুলুল্লাহ্
(সা)-এর জন্যে প্রেরিত উপচৌকন সামগ্রীর মধ্যে ছিল বস্ত্র, জীনসহ একটি খচ্চর এবং দুইজন
দাসী একজন নবী তনয় ইব্রাহীম এর আম্মা ৷ দ্বিতীয় জনকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) মুহাম্মাদ ইবন
কায়স আল-আবদীকে দান করেন ৷
বড়ায়হাকী হাতির ইবন আবু বাল্তাআ (রা) হব্৩ বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
“রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে আলেকজাদ্রিয়৷ ৷র শাসনকর্তা মুকাওকিসের নিকট প্রেরণ করেন ৷ আমি
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পত্র নিয়ে তার কাছে গেলাম ৷ তিনি আমাকে ৩ার বাড়ীতে থাকতে দিলেন
এবং আমি সেখানে অবস্থান করলাম৷ তারপর তিনি আমার কাছে লোক পাঠালেন এবং তার
সভাসদবর্গকে জমায়েত হবার আদেশ দিলেন ৷ এরপর আমাকে বললেন, আ ৷৫মি তামাকে একটি
কথা জিজ্ঞেস করব ৷ আমি চাই যে,তু মি আমার কাছে এটা ৷ ব্যাখ্যা দান করবে ৷ আমি বললাম,
বলুন’ ! তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমাকে তোমার কর্তা সম্বন্ধে বল তিনি কি একজন নবী
নন ন্’ আমি বললাম, তিনি নিশ্চয়ই আ ল্লাহর রাসুল ৷ ’ তিনি বললেন, “তা ৷র সম্প্রদ৷ য়ের কাছে তার
সম্মান নেই কেন ?৩ তারা কেন নিজেদের দেশ হতে তাকে বের করেদিল ?” তিনি বললেন, আমি
বললাম, “আপনি কি সাক্ষ্য দেনন৷ যে, ঈস৷ (আ) একজন নবী ছিলেন ?” তিনি বললেন, হ্যা ৷
আমি বললাম, “তার সম্প্রদায়ের লোকেরা তার কোন মর্যাদা দিলনা তারা তাকে পাকড়া ও করতে
চেয়েছিল ৷ তবে শুলে চড়াতে মনন্থ করেছিল; কিন্তু তাদেরকে ধ্বংস করার জন্যে ৩া৷প্লাহ
তাআলার দরবারে তিনি কোন অভিশাপ দিলেন কেন ? বরং শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তাকে
প্রথম আসমানে উঠিয়ে নিলেন ৷ তিনি আমাকে বললেন, তুমি বিজ্ঞ ব্যক্তি এবং তুমি বিজ্ঞজনের
কাছ থেকেই এসেছ ৷ এ সামান্য উপচৌকন আমি তোমার সাথে মুহাম্মাদ (না)-এর জন্য প্রেরণ
করছি ৷ আর তোমার সাথে আমার কয়েকজনসান্থীকে প্রেরণ করছি যাতে তারা তোমাকে তোমার
নিরাপদ জায়গায় পৌছিয়ে দেয় ৷ ’ রাবী বলেন, “তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে তিনটি দাসী
প্রেরণ করেছিলেন৩ ৷৩াদের মধ্যে একজন হলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এ-র ছেলে ইবরাহীমেব৷ ম৩ ৷তা৷
আর একজন দা ৷সী রাসুলুল্লাহ্ (সা) হাসৃসা ৷ন ইবন ছাবিত আনসা বীকে৷ দা ন করেন ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্
(সা) এর কাছে একটি উত্তম খচ্চরও প্রেরণ করেছিলেন ৷
ইবন ইসহাকের বর্ণনায় চারটি দা ৷সীর উল্লেখ রয়েছে ৷৩ তাদের একজন হলেন মারিয়া (রা)
ইবরাহীমের মাতা ৷ অন্য একজন হলে সীরীন যাকে হানৃসান ইবন ছ৷ ৷বিত ( রা)-কে দান করেন
তার গর্ভে আবদুর রহমান ইবন হাসৃসান জন্ম নেন ৷
এ উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল একটি থােজ৷ দাস যার নাম ছিল মাবুর , দুটি নকশাবিহীন
কালো সোজা, একটি সাদা খচ্চর যার নাম দৃলদুল ৷ মাবুর যে থােজ৷ ছিলেন এ ব্যাপারটি কেউই
জানতন৷ ৷ তিনি হযরত মারিয়া (বা) এর ঘরে অবাধে যাতায়াত করতেন ৷ যেমনটি মিসরে এরুপ
অবাধ প্রবেশের প্রচলন ছিল ৷ এজন্য কেউ কেউ তাদের দুজন সম্বন্ধে নানারুপ কটুক্তি করতে
লাগল অথচ তারা প্রকৃত ঘটনা জা নতন৷ ৷ কেউ কেউ বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আলী ইবন আবু
তালিব (রা) কে তাকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু আলী (রা) থােজ৷ দেখতে পেয়ে
তাকে ছেড়ে দিলেন ৷ সহীহ্ মুসলিমেও এ ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায় ৷
ইবন ইসহাক বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা) বনু আমির ইবন লু’য়ীর সদস্য সালীত ইবন আমর
ইবন আ বদুদ (রা) কে ইয়ড়ামামার শাসনকর্তা হাওযা ইবন আলীর নিকট প্রেরণ করেন ৷ আর আলা
ইবন হাদরামী (রা) কে ওমানের শাসক জায়ফার ইবন আল-জালান্দি আল ইয দী এবংঅ ম্মআার ১
ইবন আল-জালা ৷ন্দি আল ইযদীর নিকট প্রেরণ করেন ৷
যাতুস সালাসিদ্বপ্ন্ব২ যুদ্ধ
হড়াফিয বাযহ কী মক্কা বিজয়ের পুর্বে এ যুদ্ধটির ঘটনা উল্লেখ করেন এবং মুসা ইবন উকবা ও
উরওয়া ইবন যুবায়র (রা) এর বরাতে তিনি বলেন যে, ত ৷রা দুইজন বলেছেন , “রাসুলুল্লাহ্ (সা)
সিরিয়া এলাকায় অবস্থিত বনু বালীও বনুকুযাআর বাসভুমির অন্তর্গত যাতুস সালাসিল নামক স্থানে
আমর ইবন আস (রা) কে প্রেরণ করেন ৷ উরওয়া ইবনুয যুবায়র (রা) বলেন, বনু বালী ছিল
আস ইবন ওয়ায়েলের মাতুল বংশ ৷ যখন আমর ইবন আস (রা) এর সেনাবাহিনী সেখানে
পৌছল, তখন তারা দুশমনের সং খ্যা অধিক হওয়ায় ভীত সস্ত্রস্ত হয়ে পড়েন ৷ র্তারা রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর কাছে লোক প্রেরণ করে সাহায্য প্রার্থনা করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) প্রথমদিকের
মুহাজিরগণকে যুদ্ধে যাবার জন্যে ডেকে পাঠালেন ৷ শীর্ষস্থানীয় মুহড়াজিরগণের একটি দল যার
মধ্যে আবু বকর এবং উমর (রা) ও ছিলেন, যুদ্ধে অংশ্যাহণের জন্যে সাড়া দিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্
(সা) আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ্ (রা)-কে র্তাদের আমীর নিযুক্ত করলেন ৷ মুসা ইবন উকবা
বলেন, নতুন সৈন্যদল যখন আমর (রা)-এর কাছে আগমন করেন তখন তিনি বলেন, আমি
তোমাদের আমীর ৷ আমি রাসুলুল্পাহ্ (সা)এর কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠিয়েছিলাম ৷ মুহাজিরগণ
বললেন, আপনি আপনার সাথীদের আমীর ৷ আর আবুউবায়দা (বা) মুহাজিরগণের আমীর ৷ আমর
(বা) বললেন, আপনারা আমার সাহায্যকারী ৷ আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে সাহায্য চেয়ে
পাঠিয়েছিলাম ৷ আবু উবায়দা (রা) ছিলেন নম্র, ভদ্র ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী ৷ তিনি এরুপ
পরিস্থিতি ৩লক্ষা করে বললেন “হে আমর ! তুমি জেনে রেখো, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে সর্বশেষ
নিদ্যেশ বলেছেন, যখন তুমি তোমার সাথীর কাছে পৌছবে, তখন তোমরা মিংল মিশে
থাকবে ৷” এখন তুমি যদিণ্ডু আমার কথা অমান্যও কর তবু আমি তোমার কথা মেনে চলব ৷
এভাবে আবুউবায়দা (বা) আমর ইবন আস (বা) এর নেতৃত্ব মেনে নিলেন ৷
মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক, মুহাম্মাদ ইবন আবদুর রহমান এর বরাতে বলেন , রাসুলুল্লাহ্ (সা)
আমর ইবন আসকে প্রেরণ করেন যাতে তিনি আরবদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান করেন ৷
প্রকাশ থাকে যে, আস ইবন ওয়ায়েলের মা ছিলেন বনু বালী গোত্রের ৷ এজন্যই আমর ইবন
আস (রা)-কে রাসুলুল্লাহ্ (সা) উক্ত গোত্রে পাঠালেন যাতে তিনি ইসলামের স্বপক্ষে তাদের মন
জয় করতে পারেন ৷ তাই আমর (বা) বনু জুযামের জলাশয় সালাসিলের নিকট পৌছলেন ৷ এ
কুয়ার নামানুসারে এ যুদ্ধের নাম যাতুস সালাসিল হয়েছে ৷ রাবী বলেন, তিনি উক্ত জায়গায় পৌছে
শত্রু সৈন্যের আধিক্যে ভীত হয়ে পড়েন ৷ তাই তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে সাহায্য প্রার্থনা
১ অন্য বর্ণনায় তার নাম আবদ বলে উল্লিখিত হয়েছে ৷
২ একে যাতুস সুলাসিলও বলা হয়ে থাকে ৷ — সম্পাদকদ্বয় ৷