নাজ্জার মাযিনিয়্যা নাজ্জারিয়্যা ৷ ইবন ইসহাক বলেন, ইনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে বহু যুদ্ধে
উপস্থিত ছিলেন ৷ তার বোন এবং স্বামী যায়দ ইবন আসিমও যুদ্ধে উপ ত ছিলেন ৷ তার দু’পুত্র
থুবায়ব এবং আবদুল্লাহ তার সাথে যুদ্ধে শরীক ছিলেন ৷ তার পুত্র খুবায়বকে ভও নবী
মুসায়লামা কায্যাব হত্যা করেছিল ৷ মুসায়লামা র্তাকে বলেছিল, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে,
মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর রাসুল ? খুবায়ব (রা) বললেন, হীা, আমি তো ওই সাক্ষব্রই দিই ৷ এবার
মুসায়লামা বলল, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে, আমি আল্লাহর রাসুল ? তিনি বললেন, না, আমি ওই
সাক্ষ্য দিই না ৷ তুমি ভাল করে শুনে নাও যে, আমি ওই সাক্ষ্য র্দিহ্ না ৷ ফলে সে একটি একটি
করে তার অঙ্গ-প্রতক্ষোদি কটিতে থাকে ৷ ওই অবস্থায় মুসায়লড়ামার হাতেই তিনি শাহড়াদাতবরণ
করেন ৷ তিনি অবিরত বলে যাচ্ছিলেন, না, আমি তোমার কোন কথাই শুনছি না ৷ তার মা উম্মু
আন্মারাহ (রা) মুসলমানদের সাথে ওই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন ৷ যাতে যুসায়লামা নিহত
হয় ৷ যুদ্ধ শেষে তিনি যখন বাড়ী ফিরে এলেন, তখন তার দেহে তীর ও ছবির আঘাত মিলিয়ে
প্রায় ১২ টি ক্ষতচিহ্ন ছিল ৷
আকাবার শপথে উপস্থিত অপর মহিলা হলেন উম্মু মানী’ আসমা বিনৃত আমর ইবন আদী
ইবন নাবী ইবন আমর ইবন সাওয়াদ ইবন গানাম ইবন কাআব ইবন সালামা ৷ আল্লাহ র্তাদের
সকলের প্রতি প্রসন্ন হোন ৷
মক্কা থেকে মদীনায় হিজৱত
ইমাম যুহরী উরওয়া সুত্রে হযরত আইশা (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ আইশা (রা) বলেন,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন : আর তখন তিনি ছিলেন মক্কায় আমাকে দেখানো হয়েছে হিজৱত
ভুমি ৷ তা কােলাহলপুর্ণ এলাকা, খর্জুর বৃক্ষ পরিরেষ্টিত কৃষ্ণ প্রস্তরময় দু’টি অঞ্চলের মধ্যখড়ানে
তা অবস্থিত ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন একথা বলেন, তখন কিছু লোক মদীনায় দিকে হিজৱত করে
এবং মুসলমানদের মধ্যে যারা হাবশায় হিজৱত করেছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ ফিরে
এসে মদীনায় হিজৱত করেন ৷ ইমাম বুখড়ারী এ বর্ণনা করেন ৷ হযরত আবু মুসা (বা) নবী (সা)
থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ আমি স্বপ্নে দেখি যে, আমি মক্কা থেকে এমন এক ভুমিতে হিজৱত
করছি, যা খর্জুর বৃক্ষ পরিরেষ্টিত ৷ আমার ধারণা হল যে, এলাকাটা হবে ইয়ামামা বা হিজর,
দেখা গেল যে তা মদীনা অর্থাৎ ইয়াছরিব ৷ ইমাম বুখড়ারী অন্যত্র দীর্ঘ এ হাদীছটি বর্ণনা
করেছেন ৷ আর ইমাম মুসলিম আবু কুরাইব সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন কায়স এর বরাতে নবী (সা)
থেকে দীর্ঘ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷ বায়হাকী হাফিয সুত্রে জারীর (যা) থেকে বর্ণনা করেন যে,
নবী সাল্লাল্পাহ্ আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন :
আল্লাহ তাআলা আমার প্রতি ওহী প্রেরণ করেন, এ তিনটি শহরের যেখানেই অবস্থান
করবে তা-ই হবে তোমার হিজৱত ভুমি মদীনা, বাহরাইন বা কিন্নড়াসিরীন ৷ বিজ্ঞজনেরা
বলেন যে, এরপর তার জন্যে মদীনাকেই সুনির্দিষ্ট ভাবে নির্ধারিত করে দেয়া হয় ৷ তখন তিনি
তার সঙ্গী সাহাবীদেরকে সেখানে হিজৱত করার নির্দেশ দান করেন ৷
এ হাদীছটি অতিশয় গরীব (অর্থাৎ কোন এক যুগে মাত্র একজন রাবী হাদীছটি রিওয়ায়াত
করেন) ৷ আর ইমাম তিরমিযী র্তার জামি’ গ্রন্থের মানাকিব তথা গুণাবলী অধ্যায়ে আবু
আম্বার সুত্রে জারীর থেকে এককভাবে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷ তার বর্ণিত হাদীছে তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন : আল্লাহ তা’আলা আমার প্রতি ওহী করেন যে, এ তিন স্থানের
যেখানেই তুমি অবতরণ করবে তাহলে তোমার হিজরত-স্থল : মদীনা, বাহরাইন অথবা
কিন্নাসিরীন ৷ এরপর ইমাম তিরমিযী বলেন : হাদীছটি গরীব ৷ ফযল ইবন মুসা ব্যতীত অপর
কোন সুত্রে আমরা হাদীছটি জানি না ৷ আবু আম্মার এককভাবে হাদীছটি বর্ণনা করেন ৷
আমি বলি, এ পায়লান ইবন আদুল্লাহ্ আল-আমিরীকে ইবন হাব্বান নির্ভরযোগ্য
বর্ণনাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন ৷ অবশ্য তিনি একথাও বলেছেন যে, তিনি আবু যুরআ সুত্রে
হিজরত সংক্রান্ত একটা মুনকার তথা অগ্রহণযােপ্য হাদীছ বর্ণনা করেছেন ৷ আল্লাহ্ই ভাল
জানেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, আল্লাহ তাআলা যখন নিম্নোক্ত আয়াত দ্বারা যুদ্ধের অনুমতি দান
করেন :
“যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হলো তাদেরকে, যারা আক্রান্ত হয়েছে ৷ কারণ তাদের প্রতি জুলুম
করা হয়েছে ৷ আর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করতে সম্যক সক্ষম, তাদেরকে তাদের
বাড়ীঘর থেকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে শুধু এ কারণে যে, তারা বলে আল্লাহ
আমাদের পালনকর্তা (২২ : ৩৯) ৷
আল্লাহ্ যখন যুদ্ধের অনুমতি দান করেন, ইসলামের ব্যাপারে আনসার গোত্র রাসুলের
আনুসরণ করেন, রাসুলকে তারা সাহায্য করেন, তারা রাসুলের অনুসারীকেও সাহায্য করেন
এবং অনেক মুসলমান আনসারদের নিকট আশ্রয় গ্রহণ করেন, তখন রাসুল (সা) তার কওমের
ৰু সঙ্গী-সাথী এবং মক্কায় বসবাসরত মুসলমানদেরকে মদীনায় হিজরত করার নির্দেশ দান করে
আনসার ভাইদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য বলেন ৷ এ নির্দেশে তিনি বললেন : আল্লাহ
তাআলা তোমাদের জন্য এমন কিছু ভাই এবং এমন কিছু স্থানের ব্যবস্থা করেছেন, যেখানে
তোমরা নিরাপত্তা লাভ করবে ৷ ফলে তারা দলে দলে বের হলেন আর রাসুলুল্লাহ (সা) মক্কা
থেকে মদীনায় হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার জন্য আপন পালনকর্তার নির্দেশের অপেক্ষায়
মক্কায় অবস্থান করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাহাবীগণের মধ্যে কুরায়শের বনু মাখযুম শাখা
থেকে যিনি সর্ব প্রথম হিজরত করেন তিনি ছিলেন আবু সালামা আবদুল্লাহ ইবন আব্দুল আসাদ
ইবন হিলাল ইবন আবদুল্লাহ ইবন উমর ইবন মখবুম ৷ আকাবার বায়আতের এক বছর পুর্বে
তিনি হিজরত করেন ৷ হাবশা থেকে মক্কায় ফিরে আসার পর কুরায়শের নির্যাতনের মুখে তিনি
হড়াবশায় ফিরে যাওয়ার সংকল্প করেন ৷ মদীনায় র্তার কিছু ভাই আছে বলে জানতে পেয়ে তিনি
মদীনায় হিজরত করতে মনস্থ করেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : আমার পিতা সালামা ইবন আবদুল্লাহ ইবন উমর সুত্রে তদীয় দাদী
উম্মে সালামা (রা) থেকে বর্ণনা করে বলেন : আবু সালামা যখন মদীনায় হিজরত করার সিদ্ধান্ত
নেন, তখন তিনি আমার জন্য৩ তার সওয়ারী প্রন্তুত করেন এবং আমাকে তার পিঠে আরোহণ
করান এবং আমার পুত্র সালামা ইবন আবু সালামাকে আমার কোলে দেন ৷ তারপর আমাকে
নিয়ে বের হয়ে৩ তার সওয়াবী চালনা করেন ৷ বনু মুগীরার লোকেরা তাকে দেখে তার দিকে
তােড় এসে বলে : তুমি নিজে তো আমাদেরকে অশ্রা ব্যকর হিজরত করে যাচ্ছো সে যাও, কিন্তু
আমাদের এ কন্যাকে নিয়ে কি কারণে আমরা তোমাকে দেশে দেশে সফর করতে দেবে৷ ? উম্মু
সালামা বলেন, তাই তারা তার হাত থেকে উটের রশি ছিনিয়ে নেয় এবং তার নিকট থেকে
আমাকেও নিয়ে নেয় ৷ তিনি বলেন, এসময় বনু আবদুল আসাদ অর্থাৎ আবু সালামার বংশের
লোকেরা ক্রুদ্ধ হয়ে বললো, আল্পাহ্র কসম, আমরা আমাদের বংশের সম্ভানকে তার কাছে
থাকতে দেবাে না ৷ তোমরা তো আমাদের সঙ্গীর নিকট থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছ ৷ উম্মু
সালামা বলেন, আমার পুত্র সালামাকে নিয়ে৩ ৷রা পরস্পবে টান৷ ৷-৫ইাপ্ড়া করে এবং শেষ পর্যন্ত
তারা তার হাতকে ছ৷ ৷ড়িয়ে নেয় ৷ বনু আবদুল আসাদ তাকে নিয়ে চলে যায় এবং বনু মুপীরা
আমাকে তাদের কাছে আটকিয়ে রাখে এবং আমার স্বামী আবু ৷সালাম৷ একা মদীনা অভিমুখে
রওনা হলেন ৷ তিনি বলেন : এভাবে তারা আমার, আমার স্বামী এবং সন্তানের মধ্যে বিচ্ছেদ
সৃষ্টি করে দেয় ৷ তিনি বলেন : প্রতিদিন ভোরে আমি বের হতাম এবং প্রাম্ভরে গিয়ে সন্ধ্য৷ পর্যন্ত
কান্নকােটি করতাম ৷ এক বছর বা তার কাছাকাছি সময় পর্যন্ত এ অবস্থা চলতে থাকে ৷ শেষ
পর্যন্ত বনু মুগীরার মধ্য থেকে আমার চাচাত ভাই এসে আমার অবস্থা দেখে আমার প্ৰতি দয়া
পরবশ হয়ে বনু মুগীরাকে বলে :
এ অসহায় নারীঢির প্ৰতি জু৩লু-ম অবিচ৷ ৷র থেকে তোমরা কি নিঃবৃত্ত হবে না? তার স্বামী এবং
সন্তানের মধ্যে তোমরা তো বিচ্ছেদ ঘটালে ৷ তিনি বলেন, তখন তারা আমাকে বলেং : তুমি
ইচ্ছা করলে তোমার স্বামীর সঙ্গে মিলিত হতে পার ৷ তিনি বলেন, এ সময় আবদুল আসাদ
গোত্রে লোকজন আমার সত্তানকে আমার নিকট ফিরিয়ে দেয় ৷ তিনি বলেন এ সময় আমার
উটনী রওনা হয় এবং আমি আম৷ ৷র সন্তানকে আমার কো লে তুলে নিইা তারপর আমার স্বামীর
উদ্দেশ্যে আমি মদীনায় রওনা হই এবং এসময় আল্লাহর সৃষ্টিকুলের কেউই আমার সঙ্গে ছিল
না ৷ এমনকি আমি যখন তানঈমে’ এসে পৌছি, তখন বনু আদি গোত্রের উছমান ইবন তালহা
ইবন আবু তালহার সাথে আমার সাক্ষাত হয় ৷ তিনি আমাকে বললেন, হে আবু উমায়্যার কন্যা ৷
কোথায় যাচ্ছা আমি বললাম, মদীনায় আমার স্বামীর নিকট যেতে চাই ৷ তিনি বললেন, তোমার
সঙ্গে আর কেউ আছে কি ? আমি বাংলায় : আল্লাহ্ তাআল৷ এবং আমার এ সত্তানটি ছাড়া
আমার সাথে আর কেউ নেই ৷ তখন তিনি বললেন : আল্লাহ্র কসম, আমি তো তোমাকে একা
ছাড়তে পারি না ৷ এ বলে তিনি আমার উটের লাগাম ধরে আমার সঙ্গে চলতে থাকেন ৷
আল্লাহ্র কসম, আরবের যেসব লোকের সঙ্গে আমি চলেছি, তাদের মধ্যে তার চেয়ে বেশী ভদ্র
কাউকে দেখিনি আমি ৷ কোন মনযিলে উপনীত হলে তিনি আমার জন্য উটকে বসাতেন এবং
নিজে পেছনে সরে যেতে তন ৷ আমি নিচে অবতরণ করলে তিনি সওয়ড়ারী থেকে হাওদাটি
নামাতেন এবং দুরে গাছের সঙ্গে বেধে তিনি নীচে বিশ্রাম গ্রহণ করতেন ৷ রওনা করার সময়
এলে তিনি উটের নিকট এগিয়ে আসতেন, উটকে এগিয়ে দিতেন এবং উটকে তৈয়ার করে তিনি
নিজে দুরে সরে যেতেন এবং আমাকে বলতেন : তুমি সওয়ড়ার হও ৷ আমি উটের পিঠে ঠিক
মতো সওয়ার হয়ে বসলে তিনি এসে উটের লাপাম ধরতেন এবং আমাকে নিয়ে তিনি অগ্রে
অগ্রে চলতেন ৷ এভাবে তিনি আমাকে মনযিলে নিয়ে যেতেন ৷ আমাকে মদীনায় নিয়ে যাওয়া
পর্যন্ত তিনি আমার সঙ্গে এরুপই করতে থাকেন ৷ শেষ পর্যন্ত কৃবায় বনু আমর ইবন আওফের
জনপদের প্রতি দৃষ্টি পড়লে তিনি বলে উঠলেন : এ জনপদেই তোমার স্বামী রয়েছেন ৷ আর
আবু সালামা সে জনপদেই অবস্থান করছিলেন ৷ আল্লাহ্ তাআলার বরকত ও কল্যাণ নিয়ে তুমি
যে জনপদে প্রবেশ কর ৷
একথা বলেই তিনি মক্কার পথে রওনা হয়ে যান ৷ তিনি বলণ্তন ও ইসলামের কারণে আবু
সালামার পরিবারের লোকজন যেসব বিপদাপদের সম্মুখীন হয়েছে অন্য কোন পরিবারের
লোকজন তেমন বিপদের সম্মুখীন হয়েছে বলে আমার জানা নেই এবং উছমান ইবন তালহার
চাইতে ভদ্র মানুষ আমি কখনো সঙ্গী হিসাবে পাইনি ৷ এ উছমান ইবন তালহা ইবন আবু তালহা ,
আল আবদারী হুদায়বিয়ার সন্ধির পর ইসলাম গ্রহণ করেন ৷ তিনি এবং খালিদ ইবন ’ওয়ালীদ
এক সঙ্গে হিজরত করেন ৷ উহুদ যুদ্ধের দিন র্তার পিতা, তিন ভাই-হারিছ, কিলাব এবং মুসাফি
এবং তার মামা উছমান ইবন আবু তালহা-এরা সকলেই শহীদ হন ৷ মক্কা বিজয়ের দিন
রাসুলুল্লাহ্ (না) তার এবং তার চাচাত ভ শায়বার নিকট কাবা শরীফের চাবি অর্পণ করেন ৷
তার চাচাত ভাই শায়বা ছিলেন বনু শায়বার আদি পুরুষ ৷ জাহিলী যুগে কাবড়া শরীফের চাবি
তাদের নিকট ছিল ৷ নবী (সা) ইসলামী ষুগেও তা বহাল রাখেন ৷ এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা
নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করেন :
“নিশ্চয় আল্লাহ তােমাদেরকে নির্দেশ দেন আমানত তার হকদারকে প্রত্যর্পণ করতে” (৪ :
৫৮) ৷
ইবন ইসহাক বলেন : আবু সালামার পর প্রথম যে ব্যক্তি মদীনায় হিজরত করেন তিনি
হলেন বনী আদীর মিত্র আমির ইবন রাবীআ ৷ তার সঙ্গে তার শ্রী লায়লা বিন্ত আবু হাছমা
আল-আদর্বিয়াও ছিলেন ৷ এরপর বনু উমাইয়া ইবন আবদে শামস-এর মিত্র আবদুল্লাহ ইবন
জাহাশ ইবন রিয়াব ইবন ইয়ামার ইবন সুরুরা ইবন সুবরা ইবন কাবীর ইবন গানাম দুদান এবং
আসাদ ইবন খুযায়মা ৷ তিনি পরিবার-পরিজন এবং তার ভাই আবদ আবু আহমদকেও সঙ্গে
নিয়ে গমন করেন ৷ ইবন ইসহাকের বর্ণনানুযায়ী তার নাম ছিল আবদ ৷ কারো কারো মতে তার
নাম ছিল ছুমামা ৷ সুহায়লী বলেন : প্রথম অভিমতই বিশুদ্ধতর , আর আবু আহমদ ছিলেন দৃষ্টি
শক্তিহীন ব্যক্তি, কিন্তু কোন দিশারী-সহকড়ারী ব্যভীতই তিনি মক্কার উচ্চভুমি নিম্নভুমি ঘুরে
রেড়াতেন ৷ তিনি একজন কবিও ছিলেন ৷ তার শ্রী ছিলেন আবু সুফিয়ান ইবন হাবব এর কন্যা
ফারিআহ ৷ আর তার মাতা ছিলেন উমায়ম৷ বিন্ত আবদুল মুত্তালিব ইবন হাশিম ৷ হিজরত বনু
জাহশের ঘরবাড়ী জনশুন্য করে দেয় ৷
এক দিনের ঘটনা ৷ মক্কার উচ্চতুমি দিয়ে যাচ্ছিলেন উতবা ইবন রাবীআ, আব্বাস ইবন
আবদুল ঘুত্তালিব এবং আবু জাহ্ল ইবন হিশাম ৷ উতব৷ দেখতে পেলেন যে, বনু জাহাশের
বসত বাড়ির দরজা রুদ্ধ ৷ তাতে কেউ বসবাস করে না ৷ এ অবস্থা দেখে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে
আরোহণকারী বলে উঠে :
যে কোন গৃহ যত দীর্ঘ দিন তা নিরাপদে থাকুক না কেন, একদিন বায়ুপ্রবাহ তা গ্রাস
করবে, আচ্ছন্ন করবে তাকে ধ্বংসলীলা ৷
ইবন হিশাম বলেন, এই কবিতাটি আবু দাউদ আয়াদীর কাসীদা থেকে নেয়া হয়েছে ৷
সুহায়লী বলেন, আবু দাউদের নাম হল হানযালা ইবন শারকী ৷ কারো কারো মতে তীর নাম
হারিছা ৷ এরপর উতবা বললো, বনু জাহশের গৃহ জনশুন্য পড়ে আছে বসবাস করার কেউ
নেই ৷ তখন আবু জাহ্ল বললাে : তবে এ ফাল ইবন ফাল-এর জন্য কেন তুমি বোদন করছ ?
এরপর আব্বড়াসকে উদ্দেশ করে বলে এতেড়া তোমার ভাতিজার কাণ্ড ৷ সেই তো আমাদের দলে
র্ভাঙ্গন ধরিয়েছে, আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করেছে এবং আমাদের ম হত্ব;াকার আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন
করেছে ৷
ইবন ইসহাক বলেন : এরপর আবু সালামা আমির ইবন রাবীআ এবং বনু জাহাশ কুবায়
মুবাশৃশির ইবন আবদে মুনযির-এর নিকট অবস্থান করতে থাকেন ৷ এরপর মুহড়াজিরগণ দলে
দলে আগমন করতে থাকেন ৷ ইবন ইসহাক বলেন : বনু গানাম ইবন দুদান ইসলাম গ্রহণ করে
এবং তাদের নারী-পুরুষরা হিজরত করে মদীনায় আগমন করেন ৷ আর তারা ছিলেন আবদুল্লাহ্
ইবন জাহাশ, তার ভাই আবু আহমদ উক্কশা ইবন মিহসান, ওয়াহ্বের পুত্র শুজা ও উকবা
আরবাদ ইবন জামীরার মুনকিয ইবন নাবাতা, সাঈদ ইবন রড়াকীশ মিহরায ইবন নাযলা, যায়দ
ইবন ফাকীশ, কায়স ইবন জাবির , আমৃর ইবন মিহসান, মালিক ইবন আমর, সাফওয়ড়ান ইবন
আমর, সাকাফ ইবন আমৃর ও রাবীআ ইবন আকছুম যুবড়ায়র ইবন উবায়দা তামাম ইবন
উবায়দা, সাখবারা ইবন উবায়দা, মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ ইবন জাহাশ এবং তাদের নারীদের
মধ্যে যয়নব বিনৃত জাহাশ, বিনৃত জাহাশ উম্মে হাবীব বিনৃত জাহাশ জুদামা বিনৃত জন্দল, উম্মু
কায়স বিনৃত মিহসান, উম্মু হাবীব বিনৃত সুমামা, আমিনা বিনৃত রড়াকীশ এবং সাখবারা বিনৃত
তামীম ৷ মদীনায় তাদের হিজরত প্রসঙ্গে আবু আহমদ ইবন জাহাশ নিম্নোক্ত কবিতা রচনা
করেন :
যে সত্তাকে আমি না দেখে ভয় করি ভোরে তার পানে রওনা হওয়ার সময় উম্মে আহমদ
যখন আমাকে দেখে ফেলে ৷
তখন সে বলে : তোমাকে যদি হিজরত করতেই হয়, তবে ইয়াছরিব থেকে দুরে সরে
অপর কোন নগরে আমাদেরকে নিয়ে চল ৷
তাকে আমি বললাম, ইয়াছরিব আমার আকাভক্ষার স্থান নয়, রহমান যা চান ইনসান তো
সেদিকেই ধাবিত হয় ৷
আল্লাহ্ এবং রাসুলের দিকেই আমার মুখ ফিরালড়াম ৷ আর যে আল্লাহর দিকে মুখ ফিরাবে
সে কোন দিন ব্যর্থ মনােরথ হবে না ৷
কতো উপদেশদাতা বন্ধুকে আমরা বিসর্জন দিয়েছি, বিসর্জন দিয়ছি, কতো উপদেশদাতা
নারীকে, অশ্রুজলে ত্রুন্দনরত আর বিলাপরত অবস্থায় ৷
তারা মনে করতো জুলুম আমাদের শহর থেকে দুরে (তাই হিজরত নিম্প্রয়ােজন) ৷ আর
আমরা মনে করি মুল্যবান বন্তুই আমরা সন্ধান করছি
আমি বনু গুনামকে আহ্বান জানিয়েছি তাদের রক্তের হিফাযতের তার , সত্যের তবে , যখন
তা প্রকাশ পায় জনগণের নিকট স্পষ্ট ভাবে ৷
যখন তাদের ডাকা হয়, তারা আল-হামদু লিল্লাহ্ বলে সাড়া দেয় ৷ যখন আহ্বান করে
তাদেরকে আরোহণকারী সত্যের দিকে , সাফল্যের দিকে, তখন তারা সাড়া দেয় ৷
আমরা এবং আমাদের বন্ধুরা দুরে ছিলাম ইিদায়াত থেকে ৷ তারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র
ধারণ করে এবং হামলা চালায় ৷
তারা ছিল যেন দু’টি বাহিনী, একটি ছিল তাওফীকধন্য হিদায়াতের পথে, আর অপর
বাহিনী ছিল আযাবে নিপতিত ৷
একটা বাহিনী বিদ্রোহ করে আর মিথ্যা আশা করে আর ইবলীস তাদের পদস্থালিত করে ৷
ফলে তারা হয় ব্যর্থ মনােরথ ৷
আমরা প্রত্যাবর্ভা করি নবী মুহাম্মাদের বাণীর প্রতি ৷ ফলে সত্যের সাধকরা হয় আমাদের
প্রতি প্রসন্ন ৷
আমরা তাদের সঙ্গে নৈকটোর সম্পর্ক দ্বারা সম্পর্ক স্থাপন করি, আর আত্মীয়তার সম্পর্কের
তােয়াক্কা না করলে তা মযবুত হয় না ৷ এমন সম্পর্ক কোন কাজেও আসে না ৷
সুতরাং আমাদের পর কোন বোনের ছেলে তোমাদের থেকে নিরাপদ থাকবে, আর আমার
জামইি হওয়ার পর কোন জামাইয়ের প্রতীক্ষায় ?
এক দিন তুমি জানতে পারবে আমাদের মধ্যে কে সতোব নিকটতর, যখন জনগণের
ব্যাপার নিয়ে তারা বিবাদে জড়িয়ে পড়বে ৷
ইবন ইসহাক বলেন: এরপর (হিজরতের উদ্দেশ্যে) বহিগ্তি হন উমর ইবন খাত্তাব এবং
আইয়্যাশ ইবন আবী রাবীআ ৷ নাফি আবদুল্লাহ্ ইবন উমর সুত্রে তার পিতা থেকে বর্ণনা করে
বলেন, আমি যখন হিজরতের সংকল্প করি , তখন আমি, আইয়াশ ইবন আবু রাবীআ এবং
হিশাম ইবন আস সরফ নামক স্থানের কাছে বনু গিফারের জলাশয়ের নিকট তানাযুব নামক
স্থানে মিলিত হয়ে প্রতিজ্ঞা করি যে, আমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি প্ৰতুব্রুষে সেখানে পৌছতে পারবে
না, ধরে নেয়া হবে যে, সে আটকা পড়েছে সুতরাং তার সঙ্গীদ্বয় তোর অপেক্ষায় না থেকে যাত্রা
অব্যাহত রাখবে ৷ ভোরে আমি এবং আইয়াশ তানাযুব উপস্থিত হই আর হিশাম আটকা পড়ে
এবং নির্যাতনের শিকার হয় ৷ মদীনায় পৌছে আমরা কইবনয় বনু আমর ইবনু আওফের পল্লীতে
অবস্থান করি ৷ আবু জাহ্ল ইবন হিশাম এবং হারিস ইবন হিশাম বেরিয়ে আইয়াশের নিকট
আসে ৷ আর আইয়াশ ছিলেন উভয়ের চাচাত ভাই এবং বৈমাত্রেয় ভাই ৷ আর রাসুলুল্লাহ্ (না)
তখনো মক্কায় অবস্থান করছিলেন ৷ এরা দুজন আইয়াশের নিকট আগমন করে তার সঙ্গে কথা
বলতে গিয়ে তাকে জানায় যে, তোমার মা মানত করেছেন যে, তোমাকে না দেখে তিনি মাথার
চুল আচড়াবেন না ৷ তিনি আরো মানত করেছেন যে, তোমাকে না দেখা পর্যন্ত তিনি কোন
ছায়ায় বসবেন না ৷ এসব শুনে তার অন্তর বিগলিত হয় ৷ আমি তাকে বললাম, আল্লাহ্র কসম,
এরা আসলে তোমাকে দীন থেকে বিচ্যুত করতে চায় ৷ কাজেই তাদের ব্যাপারে তুমি সতর্ক
থাকবে ৷ আমি আল্লাহ্র কসম করে বলছি, উকুন তোমার মাকে উত্যক্ত করলে তিনি অবশ্যই
চিরুনী ব্যবহার করবেন ৷ আর মক্কার উষ্ণতা তীব্র আকার ধারণ করলে তিনি অবশ্যই ছায়ায়
যাবেন ৷ আইয়াশ বললেন, আমি আমার মায়ের কসম পুর্ণ করবো এবং মক্কায় আমার যে
ধ্ন-সম্পদ রয়েছে তাও নিয়ে আসবাে ৷ তিনি বলেন, আমি তাকে বললাম , আল্লাহর কসম, তুমি
তো ভাল করেই জান যে, আমি কুরায়শের মধ্যে সর্বাধিক ধনী ব্যক্তি ৷ আমার অর্ধেক সম্পদ
তোমাকে দান করবো, তবু তুমি তাদের সঙ্গে যেয়াে না ৷ তিনি বলেন, ফলে তিনি তাদের সঙ্গে
বের হতে অস্বীকার করেন ৷ তিনি যখন এটা অর্থদুৎ মক্কদুয় ফিরে যাওয়া ছাড়া আর সবই
অস্বীকদু র করলেন, তখন আমি তাকে বললদুম যে, তুমি যখন যা করা র তইি করবে তখন আমার
এ উটনীটি গ্রহণ কর ৷ এটি উচ্চ বংশজাত এবৎ অনুগত উটনী ৷ তুমি তার পিঠে চড়বে আর
এদের কো ন বিষয় তোমাকে সন্দেহে ফেললে তার পিঠে চড়ে তুমি ফিরে আসবে ৷ ফলে উটনীর
পিঠে চড়ে তিনি তাদের উভয়ের সঙ্গে বের হলেন, পথিমধ্যে আবু জাহ্ল তাকে বলে; তাই
আল্লাহ্র কসম, আমি মনে করি আমার উটনীটি বেশ অবসন্ন হয়ে পড়েছে ৷ তুমি কি আমাকে
তোমার উটনীর পিঠে বসতে দেবে আ দুইয়দুশ বললেন ৷ কেন নয় অবশ্য অবশ্যই তিনি উটনী
বসালেন আর তা দুরদু দু জানও উটনী বসদুলেদু ৷ত তারদু সকলে মতদুটিং নামলে দু’জনে ছুটে এসে
তাকে কষে বেধে ফেলে এবং মক্কদুয় পৌছে তার প্রতি নির্যাতন দু>দুলদুয় ৷ উমর বলেন, আমরা
বলতড়াম, যে ব্যক্তি পরীক্ষায় পড়েছে অদুল্লাহ্ তার তাওবদু কবুল করবেন না ৷ আর তারাও
নিজেদের জন্য একথদুই বলতেদু ৷ এ সময় রদুসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় আগমন করেন এবং আল্লাহ্
তাঅদুলা নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করেন :
বল, হে আমার বান্দদুগণ তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচদুর করেছ আল্লাহ্র অনুগ্রহ
থেকে নিরদুশ হবে না ৷ আল্লাহ সম্মুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন ৷ তিনি তেদু ক্ষমাশীল, পরম
দয়দুলু ৷ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমুখী হও এবং তার কাছে আত্মসমর্পণ কর
তোমাদের নিকট আমার আমার পুর্বে ৷ তার পরে তোমদুদেরকে সাহায্য করা হবে না ৷
তোমাদের প্রতি তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে উত্তম যা নাযিল করা হয়েছে তোমরা
তার অনুসরণ কর তোমাদের উপর অতর্কিত ভাবে তোমাদের অজ্ঞাতসদুরে আযাব আসার পুর্বে
(৩৯ :
উমর (রা) বলেন, আমি উপরোক্ত আয়াত লিপিবদ্ধ করে হিশদুম ইবন আস এর নিকট
প্রেরণ করি ৷ হিশদুম বলেন৪ লিপিটি আমার নিকট পৌছলে আমি যীতৃয়দু’ উপত তক্যেয় উঠতে
উঠতে ও নদুমতে নদুমতে তা পাঠ করতে থাকি ৷ কিন্তু তার মর্ম উদ্ধার করতে ৩পদুরছিলাম না ৷
শেষ পর্যন্ত আ দুমি দু ’আ করি০ : হে আল্পাহ্ ৷ আমার নিকট আয়াতটি নাযিলের মর্ম স্পষ্ট করে দিন ৷
তখন অদুল্পাহ্ আমার অত্তরে এ তারের উদয় ঘটান যে, এটি তেদু আমাদের প্রসঙ্গেই নাযিল
হয়েছে ৷ আমরদু নিজেদের সম্পর্কে যা বলদুবলি কবতাম এবং আমাদের সম্পর্কে লোকেরা যা
বলদুবলি করতো, যে প্রসঙ্গেই আয়দুতগুলাে নাযিল হয়েছে ৷ তিনি বলেন, আমি আমার উটের
নিকট ফিরে এলাম এবং তদুর পিঠে সওয়ার হয়ে মদীনায় গিয়ে রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর সঙ্গে
মিলিত হলাম ৷ ইবন হিশদুম উল্লেখ করেন যে, ওয়দুলীদ ইবন মুগীরা হিশদুম ইবন আস এবং
আইয়দুশ ইবন আবু রাবীআকে মদীনায় নিয়ে আসে ৷ তাদের দু জনকে মক্কদু থেকে চুরি করে
নিজের উটের উপর সওয়ার করে মদীনায় নিয়ে আসে আর সে নিজে তাদের সঙ্গে পায়ে হেটে
আসে ৷ পথে পা ফসকে গিয়ে তার আঙ্গুল যখম হলে সে বলে :
তুমি তাে একটা আঙ্গুল বৈ নও! রক্তাপুত হয়েছো ৷ আর যা কষ্ট করলে তা তো করলে
আল্লাহ্র রাস্তায়ই ৷
ইমাম বুখারী আবুল ওয়ালীদ সুত্রে বারা’ ইবন আযিব (রা)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন :
সর্বপ্রথম যিনি আমাদের নিকট আগমন করেন, তিনি ছিলেন মুসআব ইবন উমায়র, তারপর
ইবন উম্মে মাকতুম ৷ এরপর আমাদের নিকট আগমন করেন আমার এবং বিলাল ৷ মুহাম্মাদ
ইবন বাশৃশার বারা’ ইবন আযিব সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন : সর্বপ্রথম আমাদের নিকট
আগমন করেন মুসআর ইবন উমায়র এবং ইবন উম্মে মাকতুম এবং এরা দু’জনে লোকদেরকে
কুরআন মজীদ শিখাতেন ৷ এরপর আগমন করেন বিলাল, সাআদ এবং আমার ইবন ইয়াসির ৷
এরপর নবী করীম (না)-এর ২০ জন সাহাবীর একটা দল নিয়ে উমর ইবন খাত্তার আগমন
করেন ৷ তারপর আগমন করেন রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) ৷ রাসুলের আগমনে মদীনাবাসীরা যতটা
আনন্দিত হয়, ততটা আনন্দিত হতে তাদেরকে আমি আর কখনেৰু দেখিনি ৷ এমনকি নারীরাও
রাসুলের আগমনের কথা বলাবলি করে ৷ তার আগমন পর্যন্ত আমি ঘৃফাসৃসাল সুরাগুলোর মধ্যে
সুরা আলা’ শিখে নেই ৷ আর ইমাম মুসলিম তার সহীহ্ গ্রন্থে ইসরাঈল সুত্রে বারা ইবন আযিব
থেকে অনুরুপ হাদীছ বর্ণনা করেন ৷ তাতে স্পষ্ট করে একথার উল্লেখ রয়েছে যে, মদীনায়
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর আগমনের পুর্বেই সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাস আগমন করেছিলেন ৷ মুসা
ইবন উকবা যুহরী সুত্রে ধারণা ব্যক্ত করেন যে , সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাস রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর
পরে হিজরত করেন ৷ তবে প্ৰথমােক্ত মতটিই বিশুদ্ধ ৷
ইবন ইসহাক বলেন : উমর ইবন খাত্তাব (বা) এবং তার সঙ্গী-সাথীদের মধ্যে ছিলেন তার
ভাই যায়দ ইবন খাত্তাব, আমর ও আরদৃল্লাহ্ৰু এরা দু’জন ছিলেন সুরাকা ইবন মু’তামির এর
পুত্র, উমরের কন্যা হাফসার স্বামী থুনায়স ইবন হুযাফা সাহ্মী এবং তার চড়াচাত ভাই সাঈদ
ইবন যায়দ ইবন আমর ইবন নুফায়ল তাদের মিত্র ওয়াকিদ ইবন আবদৃল্লাহ্ তাযীমী, বনু
আজল এবং বনু বুকায়র থেকে তাদের মিত্রদ্বয় খাওলা ইবন আবু খাওলা এবং মালিক ইবন
আবু খাওলা এবং বনু সাআদ ইবন লায়ছ থেকে তাদের মিত্র ইয়াস, খালিদ, আকিল এবং
আমির, এরা কুবায় বনু আমর ইবন আওফ-এর শাখা গোত্র রিফাআ ইবন আবদুল মুনযির ইবন
যিন্নীর এর গৃহে অবস্থান করেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, এরপর এক এক করে মুহাজিরদের আগমন-ধারা অব্যাহত থাকে ৷
তালহ৷ ইবন উবায়দুল্লাহ্ এবং সুহড়ায়ব ইবন সিনড়ান ইবন হারিছ ইবন খাযরাজের ভাই খুবায়ব
ইবন ইসাফ-এর গৃহে অবস্থান করেন সুনাহ্ নামক স্থানে ৷ কেউ কেউ বলেন, তালহ৷ আসআদ
ইবন যুরারার গৃহে অবস্থান করেন ৷
ইবন হিশাম বলেন : আবু উছমান নাহদী সুত্রে আমি জানতে পেয়েছি যে, সুহায়ব
হিজরতের ইচ্ছা করলে কুরায়শের কাফিররা তাকে বলে, তুমি তো আমাদের কাছে এসেছিলে
নিঃস্ব, হীন ও তুচ্ছ অবস্থায় ৷ এরপর তোমার ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে এখন তো তুমি
বেশ মর্যাদাসম্পন্ন আর এখন তুমি এখান থেকে চলে যেতে চাও তোমার জান আর মাল নিয়ে ৷
আল্লাহর কসম, তা হতে পারবে না ৷ তখন সুহায়ব (বা) তাদেরকে বললেন, কি বল, আমি
সম্পদ তোমাদের হাতে তুলে দিলে তোমরা কি আমার পথ ছেড়ে দেবে ? তারা বলে, হাপ্রু
অবশ্যই ৷ তখন সুহায়ব বললেন৪ আমি আমার সমস্ত সম্পদ তোমাদের হাতে অর্পণ করলাম ৷
এ সংবাদ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট পৌছলে তিনি বলেন০ : ০ রু০ ৰু০, মোঃ রুশ্শু
সুহায়ব লাভবান হয়েছে লাভবান হয়েছে সুহায়ব ৷ আর ইমাম বাযহ কী (র) বলেন৪ হাকিম
আবু আবদৃল্লাহ্ সুত্রে সাআদ ইবন মুসাইয়াব সুহায়ব সুত্রে বর্ণনা করেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বলেছেন :
“আমাকে (স্বপ্নযাে গে) তোমাদের হিজর৩ ভুমি দেখানো হয়েছে ৷ তা দেখানো হয়েছে দুই
কঙ্করময় ভুমির মাঝখান থেকে ৷৩ তা হয়ে হয় হিজর, অথবা তা হবে ইয়াছবিব ৷”
সুহায়ব বলেন৪ রাসুলুল্পাহ্ (সা) মদীনা অভিমুখে রওনা হন, তার সঙ্গে রওনা হন আবু
বকর (বা) ৷ আমি তার সঙ্গে বের হওয়ার স০ কল্প করেছিলাম ৷ কিন্তু কিছু স০ খ্যক কুবায়শী
যুবক আমাকে বাধা দেয় ৷ সে রাত আমি দাড়িয়ে থাকি, বসতে পারিনি ৷ তারা বললো, তার
পেটের কারণে আল্লাহ তাকে তোমাদের থেকে মুক্ত রেখেছেন ৷ আৰু লে আমার পেটে কোন
অসুখ ছিল না ৷ ফলে তারা ঘুমিয়ে পড়লে চুপিসারে আমি বেরিয়ে পড়ি তাদের কিছু লোক
আমার সঙ্গে এসে মিলিত হয় ৷ আমি বেরিয়ে আসার পর তারা আমাকে ফিরিয়ে নিতে চায় ৷
আমি তাদের বলি, আমি তোমাদেরকে কয়েক উকিয়া স্বর্ণ দান করলে তোমরা আমার পথ ছেড়ে
দেবে ? তোমরা কথা রাখবে তো : তারা তা ৷ই করে ৷ আমি তাদের সঙ্গে মক্কা ফিরে আসি এব০
তাদেরকে বলি, তোমরা দরজার দেহলিজ খুড়ে দেখ ৷ কারণ, সেখানে ঐ উকিয়াগুলাে আছে
আর অমুক নারীর কাছে যাও এব০৩ তার কাছ থেকে দুই জোড়া পবিধেয় বস্ত্র নিয়ে নাও ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) কুবড়া থেকে মদীনায় যাওয়ার পুর্বে আমি তার নিকট উপস্থিত হই ৷ আমাকে
দেখে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেন : ব্লু ৷ ৷
হে আবু ইয়াহ্ইয়া, ব্যবসা লাভজনক হয়েছে ৷ ”
তখন আমি বললড়াম, ইয়৷ রাসুলাল্পাহ্! আমার আগে তো কেউ আপনার কাছে আসেনি
এবং জিবরাঈল (আ) ব্যতীত কেউ আপনাকে এ খবর দেয়নি ৷ ইবন ইসহাক বলেন : হামযা
ইবন আবদুল মুত্তালিব, যায়দ ইবন হারিছা আবু মারছাদ, কুনড়ায ইবন হুসাইন এবং তার
পুত্র মারছাদ-এর৷ উভয়েই গানাবী এবং হামযার মিত্র ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর আযাদকৃত গোলাম
আনিসা এবং আবুকাবশা এরা কুবায় বনু আমর ইবন আওফ গোত্রের কুলছুম ইবন হিদাম-এর
গৃহে অবস্থান করেন ৷ আবার কেউ কেউ বলেন, সাআদ ইবন খায়সামার গৃহে অবস্থান করেন ৷
আবার কারো কারো মতে বরং হাময৷ অবস্থান করেন আসআদ ইবন যুবারার গৃহে ৷ আসল
ব্যাপার আল্লাহই ভাল জানেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, উবায়দা ইবন হারিছ এবং তার দুই ভাই তুফায়ল ও হুসাইন এবং বনু
আবদৃদদার এর সুয়৷ ৷ইবিত ইবন স ৷আদ ইবন হুরায়মালা এব০ মিসতাহ্ ইবন উছাছা, বনু আবদ
বনু কুসাই এর তুলায়ব ইবন উযায়র এবং উতবা ইবন গাযওয়ান এর আযাদকৃত গোলাম
খাব্বাব কুবায় বা লাজালান গোত্রের আবদুল্লাহ ইবন সালামার গৃহে অবস্থান করেন ৷ আর
একদল মুহড়াজিরসহ আবদুর রহমান ইবন আওফ অবস্থান করেন সাআদ ইবন রবী’-এর গৃহে ৷
আর সুবায়র ইবন আওয়াম এবং আবু সুবরা ইবন আবু রাহাম অবস্থান করেন যুনযির ইবন
মুহাম্মদ ইবন উক্বা ইবন উহায়হা ইবন জাল্লাহ বনু জাহজীর মহল্লা আবায় অবস্থান
করেন ৷ আর যুসআব ইবন উমায়র অবস্থান করেন সাআদ ইবন মুআয-এর গৃহে ৷ আর
আবু হুযায়ফা ইবন উতবা এবং তার আযাদকৃত গোলাম সালিম অবস্থান করেন সালামার গৃহে ৷
উমাবীর উদ্ধৃতি দিয়ে ইবন ইসহাক বলেন যে, বনু হারিছার খুবাণ্;বেঃ ইবন আসাফ এর গৃহে
তিনি অবস্থান করেন ৷ আর উতবা ইবন গাযওয়ান অবস্থান করেন বনু আবদুল আশহালে
আব্বাদ ইবন বিশৃর ইবন-ওয়াক্কাশ এর গৃহে ৷ আর উছমান ইবন আফফান অবস্থান করেন বনু
নাজ্জার মহল্লায় হাসৃসান ইবন ছাবিত এর ভাই আওস ইবন ছাবিত বৃন মুনযির-এর গৃহে ৷
ইবন ইসহাক বলেন, একদল অবিবাহিত ঘুহাজির অবস্থান করেন সাআদ ইবন খায়ছামার
গৃহে ৷ কারণ, তিনি নিজেও ছিলেন অবিবাহিত ৷ আসল ব্যাপা<:৷ কি ছিল তা আল্লাহ্ই
ভাল জানেন ৷ ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান আহমদ ইবন আবু বকর সুত্রে ইবন উমরের উদ্ধৃতি
দিয়ে বলেন : মদীনায় উপস্থিত হয়ে আমরা আস্বা অঞ্চলে অবস্থান করি ৷ (আমাদের মধ্যে
ছিলের্স’) উমর ইবন খাত্তাব আবু উবড়ায়দা ইবন জাররড়াহ্ এবং আবু হুযায়ফার আযাদকৃত
গোলাম সালিম ৷ আবু হুযায়ফার আযাদকৃত গোলাম সালিম তাদের মধ্যে ইমামতি করতেন ৷
কারণ, তাদের মধ্যে তিনি কুরআন পাঠে বেশী পারঙ্গম ছিলেন ৷
পরিহেদ
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর হিজরত
আল্লাহ্ পাক বলেন :
বল, হে আমার পালনকর্তা৷ আমাকে প্রবেশ করাও কল্যাণের সাথে এবং আমাকে বের
কর কল্যাণের সাথে এবং তোমার নিকট থেকে আমাকে দান কর সাহায্যকারী শাক্তি” (১৭ :
৮০) ৷
এভাবে দুআ করার জন্য আল্লাহ তাআলা তীর নবীকে নির্দেশ দেন ৷ কারণ, এতে রয়েছে
আসন্ন প্রসন্নতা এবং দ্রুত নিক্রমণের পথ ৷ তাই তো আল্লাহ তাআলা তাকে নবীর শহরের প্রতি
হিজরত করার অনুমতি দান করেন, যে স্থানে রয়েছে সাহায্যকারী এবং বন্ধু ভাবাপন্ন লোকজন ৷
ফলে মদীনা তার জন্য হয়েছে নিবাস আর নিরাপদ স্থান, আর মদীনায় বাসিন্দারা হয়েছেন তার
জন্য আনসার তথা সাহায্যকারী ৷
আহমদ ইবন হাম্বল এবং উছমান ইবন আবু শায়বা জারীর সুত্রে ইবন আব্বাস থেকে বর্ণনা
করেন :
“রাসুল (সা) মক্কায় ছিলেন, এরপর তাকে হিজরতে র নির্দেশ দান করা হয় এবং তার উপর
নাযিল করা হয়ং :
কাতাদ৷ বলেন অর্থ
মক্কা থেকে হিজরত আর ৷ অর্থ আল্লাহর র্ধকিতাব , তার
নির্ধারিতকরণ এবং দণ্ডবিধি প্রভৃতি বিধানসমুহ ৷ ’
ইবন ইসহাক বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাহাবী মুহাজিরদের হিজরতের পর রাসুলুল্লাহ্
(সা) নিজের হিজরতের জন্য অনুমতির অপেক্ষায় মক্কায় অবস্থান ল করছিলেন এবংঅ আটকা পড়া
বা নির্যা ৷তনগ্রস্ত ব্যক্তিবর্গ ছ৷ ৷ড়া তার সঙ্গে পেছনে কেউ থেকে ধাননি ৷ যারা মক্কায় থেকে যান
তাদের মধ্যে আ ৷লী ইবন আবু৩ তালিব এবং আবু বকর ইবন আবু কুহম্ফ৷ ৷রাযিয়াল্লাহু আনহুমাও
ছিলেন ৷ আর আবু বকর (রা) রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট ৷ইজরাতর জন্য প্রায়ই অনুমতি
চাইতেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে বলতেন৪ “তুমি তাড়া হুড়৷ বরাে না হয়তো আল্লাহ
তোমাকে একজন সঙ্গী দান করবেন ৷”এ সময় আবু বকর (রা) রাসুলুল্লাহ্ (সা,)-এর সঙ্গী
হওয়ার আকাম্ভক্ষা পোষণ করতেন ৷ কুরায়শরা যখন দেখলো যে, দেশের বাইরে রাসুলুল্লাহ্
(সা) এর সঙ্গী সাথী এবং সমর্থক একটি দল সৃষ্টি হয়ে গেছে এবং তারা ঘুহাজির
সাহাবীদেরকেও বের হয়ে৩ তাদের নিকট গমন করতে দেখলো তখন তারা বুঝতে পারলাে যে
তারা এমন এক স্থানে অবতরণ করেছে এবং সেখানে তারা নিরাপদ স্থা ন করে নিয়েছে , তখন
তাদের আশঙ্কা জাগলো যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আয়োজন সম্পন্ন করেছেন ৷
তখন তারা তার প্রসঙ্গ (আলোচনা করার জন্য) দারুন নাদওয়ায়’ সমবেত হয় ৷ আর এ দারুন
নাদওয়া’ ছিল কুসা ৷ই ইবন কিলাব এর গৃহ ৷ কুরায়শরা পরামর্শের জন্য এখানে সমবেত হতো ন্
এবং সেখানে পরামর্শক্রমে৩ ৷র৷ সিদ্ধ ন্ত গ্রহণ করতো ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর ব্যাপারে তারা
শংকিত হয়ে সিদ্ধা ৷ম্ভ গ্রহণ করার নিমিত্ত দারুন নাদওয়ায় সমবেত হওয়া ঠিক করে ৷
যার বিরুদ্ধে কোন অপবাদ সম্পর্কে আমি জ্ঞাত নই এমন রাবী আবদুল্লাহ ইবন আবু নাজীহ
সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস থেকে ইবন ইসহাক বর্ণনা করেন : কুরায়শের লোকেরা যখন এ
বিষয়ে একমত হয় এবং রাসুলুল্লাহ (না)-এর প্রসঙ্গ নিয়ে আলোর্চন৷ ও পরামর্শের দিনক্ষণ
নির্ধারণ করে এবং দারুন নাদওয়ায় একত্রিত হওয়া সাবস্তে হয় এবং তারা এ দিনটার নামকরণ
করে ইয়াওঘুন যাহ্মা’ তথা ভিড়ের দিন ৷ এ দিন সকালে অভিশপ্ত ইবলীস একজন প্রবীণের
বেশভুষড়া ধারণ করে উক্ত পরামর্শ-গৃহের দরজায় এসে দীড়ায় ৷ তাকে দরজায় দেখে লোকেরা
তার সম্পর্কে জানতে চায় ৷ সে বলে৪ নাজদের একজন শায়খ ৷ তোমাদের কর্মসুচী সম্পর্কে
জানতে পেরে তোমরা কী আলোচনা কর তা শোনার জন্য উপস্থিত হয়েছেন হতে পারে উত্তম
প্রস্তা ব আর হিতকর মতামত দান থেকে তোমাদেরকে তিনি বঞ্চিত করবেন না ৷ তার বক্তব্য
শুনে সকলে বললো , ঠিক আছে ৷ দয়া করে ভেতরে এসে বসুন ৷ শায়খে নাজদী ভেতরে প্রবেশ
করে তাদের সঙ্গে বসে ৷ কুরায়শের স্স্রান্ত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে এ সমাবেশে যারা সমবেত হয়,
তাদের মধ্যে ছিল উতবা, শায়বা, আবু সুফিয়ান, তুয়ায়মা ইবন আলী এবং জুবায়র ইবন
মুতঈম ইবন আদী হারিছ ইবন আমির ইবন নাওফিল, নযর ইবন হারিছ, আবুল বুখ৩ তারী
ইবন হিশাম , যামৃআ ইবন আসওয়াদ, হাকীম ইবন হিযাম , আবু জাহ্ল ইবন হিশাম৷ হ ৷জ্জাজের
দু’পুত্র নাবীহ্ ও মুনাব্বিহ, উম৷ ইয়৷ ইবন খা ৷ল্ফ প্রমুখ ৷ কুরায়শ আর কুরায়ণের বাইরের আরো
অনেকে এ পরামর্শ সভায় উপস্থিত হয়, যাদের স০ খ্যা অগণিত ৩৷ পরামর্শ সভায় উপস্থিত
লোকজন একে অপরকে বলে, লোকট৷ ৷র ব্যাপার তো তোমরা দেখতেই পাচ্ছে৷ ৷ আমাদের বাদে
তার অন্য অনুসারীদেরকে নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালাবার ব্যাপারে তার সম্পর্কে তো
আমরা নিরাপদ নই ৷ কাজেই তার ব্যাপারে তোমরা ঐকমতে তা উপনীত ণ্১হও ৷ বর্ণনাকাবী ইবন
ইসহাক বলেন : এরপর তারা পরস্পরে পরামর্শ করে ৷ তাদের মধ্যে একজন বক্তা-কথিত
আছে যে, সে ছিল আবুল বুখতা তারী ইবন হিশাম সে বলে, লোহা বাশকলে তাকে বেধে ঘরের
মধ্যে বন্দী করে রাখতে হবে ৷ এরপর লক্ষ্য রাখতে ৩হবে যে তার পুর্বে এ ধরনের করি, যথা
যুহায়র, নাবিগা ষুবইয়ানী প্রমুখের কী পরিণতি হয়েছিল একে ষ্ যাতে তাদের পরিণতি বরণ
করতে হয় এবং সেও যেন তাদের মতো মরতে পারে , সে দিকেইং কলকে লক্ষ্য রাখতে হবে ৷
তার এ বক্তব্য শ্রবণ করে শায়খে নাজদী’ বলে উঠে না , আল্লাহ্র কসম , এটা তো কোন
যুক্তিযুক্ত অভিমত হল না ৷ (আমি তো তোমাদের নিকট থেকে এমন হাসস্পদ পরামর্শ আশা
করিনি) ৷ কারণ, আল্লাহর কসম , তোমাদের কথা মত তোমরা তাকে আটক করলে, তার কথা
বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ৷ তার বন্ধু সঙ্গী-সাথীদের কাছে পৌছে যাবে এবং অবিলম্বে তারা
তোমাদের উপর হামলা চালিয়ে তাকে তোমাদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেবে ৷ আর এভাবে দিন
দিন তাদের সং খ্যা বৃদ্ধি পাবে, শেষ পর্যন্ত তারা তোমাদের উপর জয়ী হয়ে ৷ কা ৷জেই তোমাদের
পক্ষ থেকে এটা তো কোন সঠিক সিদ্ধা ৷ন্ত হলো না
শায়খে নাজদীর এ বক্তব্য গুনে তারা পুনরায় পরামর্শ করতে বসে ৷ একজন বললো৪
আমাদের মধ্য থেকে তাকে বহিষ্কা ৷র করতে হবে, নির্বাসনে পাঠাতে ৩হবে, দেশ থেকে নির্বা
করার পর সে কোথায় গেল বা কী করলো, তা নিয়ে আমাদের কোন মাথা ব্যথা থাকবে না ৷
আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, যে আমাদের থেকে দুরে চলে গেলে আমরা তার থেকে মুক্ত
হলাম আর আমরা নির্বিবাদে আমাদের কাজ করে যেতে পারবো ৷ আগে যা করতাম তা ই
করবো ৷
শায়খে নাজদী বললাে, তোমাদের জন্য এটা তো কোন অভিমত হল না ৷ তোমরা দেখতে
পাচ্ছ না তার কথা কতো চমৎকার, বক্তব্য কতো মিষ্টি মাখা এবং চিত্তাকর্ষক ৷ কিভাবে সে কথা
দ্বারা মানুষের মন জয় করে নেয় ৷ তোমরা তাকে বহিষ্ক৷ ৷র করলে আরবের কোন না কোন গোত্র
তাকে আশ্রয় দেবে ৷ নিজের কথা আর বচন দ্বারা সে তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করবে ৷ শেষ
পর্যন্ত যে লোকগুলো তা ৷র অনুসারী হয়ে যাবে ৷ শেষ পর্যন্ত সে তার অনুসারীদেরকে নিয়ে
তামাদের উপর চড়াও হবে ৷ তোমাদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেবে ৷ এরপর তোমাদের
সঙ্গে যথেচ্ছ আচরণ করবে ৷ কাজেই তার সম্পর্কে তোমরা অন্য কোন চিন্তা করতে পার ৷
তখন আবু জাহ্ল ইবন হিশাম বলে উঠে : আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, এ
লোকটি সম্পর্কে আমার ভিন্ন মত আছে ৷ আমি মনে করি, আমি যা ভাবছি, তোমরা (অনেক)
পরেও তা ভাবতে পারবে না ৷ লোকজন বলে উঠে, হে আবুল হাকাম ৷ কী তোমার সে ভিন্নমত ?
সে বললো : আমি মনে করি যে, আমরা প্রত্যেক গোত্র থেকে একজন তাগড়া সম্ভান্ত যুবক
বাছাই করে নেবো, সে যুবক হবে সমান আর মর্যাদার অধিকারী ৷ আমরা প্রতিটি যুবকের হাতে
তুলে দেবাে একটা করে শাণিত তরবারি এক ব্যক্তির মতো তারা সকলে একযোগে তার উপর
আঘাত হানবে ৷ তার জীবনলীলা সড়াঙ্গ করবে ৷ এভাবে আমরা তার উৎপাত থেকে শান্তি আর
মুক্তি লাভ করবো ৷ যুবকরা যখন এ কাজটা করবে, তখন তার রক্ত সকল গোত্রের মধ্যে বিভক্ত
ও বপ্টিত হবে ৷ আর বনু আবৃদ মানাফ তার কাওমের সকল গোত্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সক্ষম
হবে না ৷ ফলে তারা আমাদের নিকট থেকে রক্তপণ গ্রহণ করতে রাযী হয়ে যাবেন ৷ আমরা
অনায়াসেই সে রক্তপণ পরিশোধ করবো ৷
ইবন ইসহড়াক বলেন, শায়খে নাজদী বলে : এ ব্যক্তি যা বলরুলা এটাই তো সঠিক কথা ৷
এটাই হলো অভিমতের মতো অভিমত ৷ আর কোন কথা আর কোন অভিমত দরকার করে না ৷
এ ব্যাপারে সকলে একমত হয়ে বৈঠক সমাপ্ত করে এবং সকলে নিজ নিজ ঘরে ফিরে যায় ৷
ইতোমধ্যে জিবরাঈল (আ) রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট আগমন করে তাকে বললেন : যে
শয্যায় আপনি ঘুমা তেন আজ রাতে সে শয্যায় আপনি ঘুমাবেন না ৷ ইবন ইসহাক বলেন, রাত
গভীর হলে তারা সকলে তার গৃহের দরজায় সমবেত হয়ে অপেক্ষায় থাকে, তিনি ঘুমালে তারা
সকলে মিলে তার উপর হামলা চালাবে ৷ তাদের উপস্থিতি আচ করতে পেরে রাসুলাল্লাহ্ সো)
আলী ইবন আবু তালিবকে বললেন : আমার এই সবুজ হাঘৃরামী চাদর গায়ে দিয়ে তুমি আমার
শয্যায় শুয়ে পড়াে ৷ এ চাদর গায়ে দিয়ে ঘুমালে তাদের পক্ষ থেকে তোমাকে কোন অপ্রীতিকর
পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে না আর রাসুলল্লোহ্ (সা) সাধারণত এ চাদর পায়ে দিয়েই
ঘুমাতেন ৷
ইবন ইসহাক যে কাহিনী বর্ণনা করেছেন, ঠিক একই কাহিনী বর্ণনা করেছেন ওয়াকিদী,
আইশা, ইবন আব্বাস, আলী, সুরাকা ইবন মালিক ইবন জাশম প্রমুখের বরাতে ৷ ওয়াকিদীর
বর্ণনার সঙ্গে ইবন ইসহাকের বর্ণনার অনেকটা মিল আছে এবং তার ৰ্ণ্নািও পুর্ববর্তী বর্ণনার
অনুরুপ ৷
ইয়াযীদ ইবন আবু যিয়াদ মুহাম্মদ ইবন কাব কুরাযীর সুত্রে ইবন ইসহড়াক বলেন,
কুরায়শের লোকজন যখন রাসুলড়াল্লাহ্ (না)-এর গৃহের দরজায় জমায়েত হয়, তখন তাদের
মধ্যে আবু জাহ্লও ছিল ৷ তারা সকলেই দরজায় দাড়িয়ে ৷ আবু জাহ্ল বললো, মুহাম্মদের
ধারণা তোমরা তার অনুসরণ করলে তোমরা আরব-আজমের বাদশাহ বনে যাবে, মৃত্যুর পর
পুনরুজ্জীবিত হবে এবং তোমাদের জন্য জর্দানের উদ্যানের মতো উদ্যান বানানো হবে ৷ আর
তা না করলে তোমরা ধ্বংস হবে, যবাই হবে, মৃত্যুর পর আবার জীবিত হবে এবং তোমাদের
জন্য আগুন সৃষ্টি করা হবে এবং তাতে তােমাদেরকে দন্ধীভুত করা হবে ৷
বর্ণনাকারী ইবন ইসহাক বলেন, রাসুলাল্লাহ্ (সা) গৃহ থেকে বের হন, এক মুঠো ধুলো
হাতে নিয়ে বলেন, “হ্যা, আমি একথা বলি, আর তুমিও তাদের একজন ৷” আল্লাহ তাদের
চোখে আবরণ সৃষ্টি করেন, তারা তাকে দেখতে পায়নি ৷ কুরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াত
শ্তিলাওয়াত করতে করতে তাদের দিকে ধুলাে ছিটাতে ছিটাতে রাসুল (সা) বের হয়ে যান :
“ইয়াসীন শপথ জ্ঞানগর্ভ কুরআনের ৷ তুমি অবশ্যই রড়াসুলদের অন্তর্ভুক্ত ৷ তুমি সরল পথে
প্রতিষ্ঠিত ৷কুরআন অবতীর্ণ পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু আল্লাহ্র নিকট থেকে ৷ যাতে তুমি
সতর্ক করতে পার এমন এক জা ৷তি,কে যাদের পিত তট্রুপুরুষদেরকে সতর্ক করা হয়নি, যার ফলে
ওরা পাফিল ৷ ওদের অধিকাৎশের জন্য সে বাণী অবধারিত হয়েছে ৷ সুতরাং ওরা ঈমান আনবে
না ৷ আমি ওদের গলদেশে বেড়ি পরিয়েছি চিবুক পর্যন্ত ৷ ফলে ওরা উর্ধ্বমুথী হয়ে গেছে ৷ আমি
ওদের সম্মুখে প্রাচীর ও পশ্চাতে প্রাচীর স্থাপন করেছি এবং ওদেরকে আবৃত করেছি ৷ ফলে ওরা
দেখতে পায় না” (৩৬ : ১-৯) ৷
তাদের প্রত্যেকের মাথার উপর মাটি নিক্ষেপ করে তিনি (নবী সা) যেখানে যাওয়ার ইচ্ছা
করেছিলেন, সেখানে চলে গেলেন ৷ তাদের মধ্যে একজন লোকও ছিল না যার মাথায় ধুলো
লাগেনি ৷ এরপর তাদের সঙ্গে ছিল না এমন এক আগভুক আগমন করে জিজ্ঞাসা করলো:
তামরা এখানে কিসের জন্য আপেক্ষা করছো ? তারা বললো০ : আমরা মুহাম্মদের জন্য অপেক্ষা
করছি ৷ লোকটি বললো : আল্লাহ তােমাদেরকে ব্যর্থ করেছেন ৷ আল্লাহর কলম, সে তো
তোমাদের প্ৰতেব্রুকের মাথায় মাটি নিক্ষেপ করে বেরিয়ে গেছে ৷ সে তো বেরিয়ে গেছে তার
প্রয়োজনে ৷ তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ না তোমাদের উপর কী আছে ৷ বর্ণনড়াকারী ইবন ইসহাক
বলেন : এরপর তাদের প্ৰতেব্রকে নিজ নিজ মাথায় হাত দিয়ে মাটি পায় ৷ এরপর তারা
মুহাম্মদকে খুজতে থাকে ৷ তারা শয্যায় আলী (রা)-কে দেখতে পড়ায় ৷ রাসুলুল্লাহ (না)-এর চাদর
পায়ে জড়িয়ে তিনি শুয়ে আছেন (মনের আনন্দে এবং সম্পুর্ণ নিশ্চিত ও নির্বিকার চিত্তে) , ৷ এ
অবস্থা দেখে তারা বললো : আল্লাহর কসম, এতো মুহাম্মদ তার চাদর পায়ে দিয়ে শুয়ে আছে ৷
ভোর পর্যন্ত তারা এ ভাবে পাহারা দিতে থাকে ৷ ভোর হলে তারা দেখতে পায় যে, তার শয্যা
থেকে আলী (রা) বেরিয়ে এসেছেন ৷ তখন তারা বলে : যে আমাদেরকে বলেছিল, সে তো
ঠিকই বলেছিল ৷
ইবন ইসহাক বলেন : সেদিন যে উদ্দেশ্যে কাফিররা সমবেত হয়েছিল, সে প্রসঙ্গে মহান
আল্লাহ নাযিল করেন :
আর (হে মুহাম্মদ !) তুমি সে সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন তারা (কাফিররা) তোমার
বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দী করার জন্য, তোমাকে হত্যা করা বা নির্বাসিত করার জন্য ৷
তারা ষড়যন্ত্র করে, অল্লোহ্ও কৌশল অবলম্বন করেন ৷ আর আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী ( ৭ ৪৩০) ৷
ওরা কি বলতে চায় যে, সে একজন কবি ? আমরা তার মৃত্যুর প্ৰতীক্ষা করছি ৷ তুমি (হে
মুহাম্মদ) বল, তোমরা প্ৰভীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সঙ্গে প্রভীক্ষারতদের অন্তর্ভুক্ত আছি’
(৫২ : ৩০-৩১ ) ৷
ইবন ইসহাক বলেন : এ সময় মহান আল্লাহ্ তার নবী (না)-কে হিজরতের অনুমতি দান
করেন ৷
পরিছেদ
রাসুলুল্লাহ্ (সা) নিজে মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেন এবং তীর সঙ্গে ছিলেন আবু
বকর সিদ্দীক রাযিয়াল্পাহ্ আনহু ৷ আর এ ঘটনা ছিল ইসলামের ইতিহাসে হিজরী গণনার
সুচনাকাল ৷ উমর (রা)-এর শাসনকালে এ বিষয়ে সাহাবায়ে কিরামের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয় ৷
তাদের প্রতি আল্পাহ্ প্রসন্ন হোন ৷ উমর (রা)-এর জীবনী গ্রন্থে আমরা বিষয়টা সবিস্তারে
আলোচনা করেছি ৷
ইমাম বুখারী (র) মাতার ইবন ফযল সুত্রে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন :
রাসুলুল্লাহ্ (সা) চল্লিশ বছর বয়সে নবুওয়াত লাভ করেন ৷ মক্কা মুকাররামায় ১৩ বছর কাল
অবস্থান করেন ৷ এ সময় তার নিকট ওহী নাযিল হয় ৷ এরপর তাকে হিজরতের নির্দেশ দেয়া
হয় এবং তিনি হিত্তরেত করেন দশ বছর (মদীনায় অতিবাহিত করেন) এবং ৬৩ বছর বয়সে
তিনি ইনতিকাল করেন ৷ নবুওয়াত লাভের এয়ােদশ বর্ষে রবিউল আউয়াল মাসে তিনি হিজরত
করেন ৷ আর হিজরতের দিনটি ছিল সোমবার ৷ ইমাম আহমদ ইবন হান্বল ইবন আব্বাস (রা)
থেকে বর্ণনা করে বলেন, তোমাদের নবী (সা) জন্মগ্রহণ করেছেন সোমবারে ৷ মক্কা থেকে
(মদীনায় উদ্দেশ্যে) বহির্গত হন সোমবারে ৷ তিনি নবুওয়াত লাভ করেন সোমবারে ৷ তিনি
মদীনায় প্রবেশ করেন সোমবারে এবং তিনি ইনতিকাল করেন সোমবারে ৷
মুহাম্মদ ইবন ইসহাক বলেন : আবু বকর (রা) রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট হিজরতের
অনুমতি চাইলে তিনি বলেন , তাড়াহুড়া করবে না (বরং ধৈর্যধারণ কর এবং অপেক্ষা করতে
থাক) আল্লাহ্ হয়তো তোমার জন্য একজন সঙ্গী জুটাবেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর মুখে একথা
শুনে তিনি আশা পোষণ করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) নিজেই তার সঙ্গী হবেন ৷ তিনি দুটি
সওয়ারী ক্রয় করেন ৷ নিজ গৃহে রেখে হিজরতের জন্য প্রন্তুতির উদ্দেশ্যে সেগুলোকে সযত্বে
লালন করেন ৷ ওয়ড়াকিদী বলেন : হযরত আবু বকর (বা) আটশ দিরহামের বিনিময়ে সওয়ারী
দু’টি ক্রয় করেছিলেন ৷
ইবন ইসহাক নির্ভরযোগ্য সুত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে উরওয়া ইবন যুবায়র থেকে উম্মুল মু’মিনীন
হযরত অইিশা (রা)-এর বরাতে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) প্রতিদিন
সকালে বা বিকালে এক বেলায় আবু বকর (রা)-এর ঘরে আসতে ভুলতেন না ৷ হয় সকালে, না
হয় বিকালে অবশ্যই আগমন করতেন ৷ শেষ পর্যন্ত সেদিনটি উপস্থিত হলো যেদিন আল্লাহ
তাআলা তার রাসুল (সা)-কে হিজরত করা এবং মক্কা থেকে মদীনায় উদ্দেশ্যে বের হওয়ার
অনুমতি দিলেন ৷ হযরত আইশা (বা) বলেন : এদিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) দুপুরে আমাদের গৃহে
আগমন করেন ৷ এটা ছিল এমন এক সময়, যে সময় তিনি সাধারণত আসতেন না ৷ রাসুলুল্লাহ্
(সা)-কে দেখে আবু বকর (রা) বলেন : নিশ্চয়ই কোন ঘটনা ঘটেছে, যে জন্য রাসুলুল্লাহ্ (সা)
এমন অসময়ে আগমন করেছেন ৷ হযরত আইশা সিদ্দীক৷ (বা) বাণ্ল্ান : র্তাকে দেখে আবু বকর
(বা) তার খাট থেকে একটু সরে বসেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) খাটে উপবেশন করলেন ৷ এ
সময় রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকটে আমি এবং আমার বোন আসম৷ যিনৃত আবু বকর ছাড়া অন্য
কেউ ছিল না ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন ং তোমার নিকট থেকে আন্যদেরকে বের করে
দাও ৷ আবু বকর (রা) বললেন, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্!৩ তারা উভয়েই ম, বনু ফিহরের অন্যতম সদস্য ৷ এরপর আগমন করেন উমর ইবন
খাত্তছব (বা) ২০ সদস্যের একটি দল নিয়ে ৷ তখন আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
খবর কিং তিনি বললেন৪ আমার পেছনে আসছেন ৷ এরপর আগমন করলেন রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলায়হি ওয়া সাল্লাম ৷ তার সঙ্গে ছিলেন হযরত আবু বকর (রা) ৷ যারা ইবন আযিব (রা)
বলেন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মদীনায় আগমনের পুর্বেই আমি কতিপয় মুফাস্সাল সুরা শিখে
নিয়েছিলাম ৷ বুখারী , মুসলিম হাদীসটি ইসরাঈলেব সনদে বর্ণিত হয়েছে ৷ তবে বারা’র উক্তি ?
(সর্বপ্রথম যিনি আমাদের নিকট আগমন করেন) শুধু মুসলিম এককভারে বর্ণনা করেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) গুহায় তিন দিন অবস্থান করেন এবং তার সঙ্গে
ছিলেন আবু বকর (রা) ৷ কুরায়শরা যখন থেকে তাকে সন্ধান করতে থাকে, তখন থেকেই
তাকে ফেরত তে পারলে একশ’ উট পুরস্কার ঘোষণা করে ৷ যখন তিন দিন অতিক্রাস্ত হয়
এবং তাদের ব্যাপারে লোকজন নিরাশ হয়ে পড়ে, তখন তাদের দু’জনের এবং তার নিজের উট
নিয়ে পুর্ব বর্ণিত পথ প্রদর্শক আবদুল্লাহ হা ড়াযির হয় এরংঅ আসমা বিনত আবু বকর খাদ্যদ্রব্যের
পুটলি নিয়ে আসেন ৷ কিন্তু তা বাধবার জন্য রশি আনতে ভুলে যান ৷ তারা উতয়ে রওনা হয়ে
গেলে আসমা খাদ্যদ্রব্যের পাত্র ঝুলাতে গিয়ে দেখেন যে, তাতে রশি নেই ৷ তখন তিনি
কােমরবন্ধ ছিড়ে রশি বানান এবং পুটলিটি বেধে দেন ৷ একারণে তাকে যাতুন নিতাকাইন’ বলা
হয় ৷
ইবন ইসহাক বলেন : হযরত আবু বকর (বা) দুটি বাহনের নিকটে গিয়ে তাদের মধ্যে
উত্তমটি পেশ করে বলেন : আমার পিতামাতড়া আপনার জন্য কুরবান হোন, আপনি আরোহণ
করুন তখন রাসুলুল্পাহ্ (সা) বললেন :
যে উটের মালিকানা আমার নয়, আ মি তাতে আরোহণ করবো না ৷ তখন হযরত আবু বকর
(রা) বলেন৪ ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমার পি৩ ড়ামাতা আপনার জন্য কুরবান হোন, উটটি
আপন বাই ৷ রাসুলুল্পাহ্ (সা) বললেন : না, বরং কত মুল্যে তুমি তড়া কিন্যেছা ? হযরত আবু
বকর (রা) বললেন৪ এত এত মুংল্য ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন৪ এ মুল্যে আমি ক্রয় করলাম ৷
আবু বকর (রা) বললেন : হে আল্লাহ্র রাসুল! তা আপনারই জন্য ৷
ওয়াকিদী তার একাধিক সনদে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সা) কড়াসওয়া নামক উটটি
গ্রহণ করেন ৷ তিনি একথাও বলেন যে, আবু বকর উটনী দু’টি আটশ’ দিরহামের বিনিময়ে
খরিদ করেন ৷ আর ইবন আসাকির হযরত আইশা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন, তা ছিল জাদআ ৷
অনুরুপভাবে সুহায়লীও ইবন ইসহাক সুত্রে এরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন৪ র্তারা দু’জন সওয়ড়ার হয়ে রওনা করেন এবং আবু বকর (রা)
পথিমধ্যে তাদের খিদমতের জন্য তার আযাদকৃত গোলাম আমির ইব ন ফুহায়রাকে৩ তার উটের
পেছনে বসান ৷ এ সম্পর্কে হযরত আসমা (রা) বলেন৪ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর০ আবু বকর (রা)
বেরিয়ে যাওয়ার পর কুরায়শের একদল লোক আমাদের কাছে আসে ৷ তাদের মধ্যে আবু
জাহ্লও ছিল ৷ এরপর ইবন ইসহাক আবু জাহ্ল কর্তৃক আসমার গালে চপেটাঘাত করে এবং
এর ফলে তার কানের বালি (দৃল) পড়ে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন, যা পুর্বেই বর্ণনা করা
হয়েছে ৷ হযরত আসমা (রা) বলেন : আমরা তিন রাত অতিবাহিত করি ৷ আমরা জানতাম না
যে, তিনি কোন দিকে গিয়েছেন ৷ শেষ পর্যন্ত মক্কার নিম্নভুমি থেকে জনৈক জিন আগমন করে
আরবদের মধ্যে প্রচলিত কয়েকটা কবিতা আবৃত্তি করতে করতে ৷ লোকেরা তার আওয়ায
শুনছিল, কিভু তাকে দেখতে পাচ্ছিল না ৷ শেষ পর্যন্ত মক্কার উচ্চভুমি থেকে বেরিয়ে এসে সে
আবৃত্তি করেং
মানুষের পালনকর্তা আল্লাহ্ উত্তম প্রতিদান দিন সে দু’জন সঙ্গীকে, যারা অবতরণ করেছে
উম্মে মারাদের র্তাবুতে ৷
তারা অবতরণ করেছে পুণ্য আর তাকওয়৷ নিয়ে ৷ আর সফল হয়েছে যে ব্যক্তি, যে
মুহাম্মদের সঙ্গী হয়েছে ৷
জো
বনু কাআবুবর জন্য মুবারক হোক তাদের নারীর স্থান, আর তাদের অবস্থান মুসলমানদের
জন্যে শান্তিধাম ৷
হযরত আসম৷ (রা) বলেন : সে লোকটির কথা অর্থাৎ এ কবিতা শুনে আমরা বুঝতে পারি
রাসুল (সা) কোন দিকে যাচ্ছেন ৷ আমরা বুঝতে পারি যে, তিনি মদীলার দিকে যাত্রা করেছেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : তারা ছিলেন চার জন : রাসুল (সা) , আবু বকর (রা) , আমির ইবন
ফুহায়রা এবং আবদুল্লাহ ইবন আরকাদ ৷ ইবন ইসহড়াক এরুপই বলেহ্নে’ ৷ আর প্রসিদ্ধ হল ইবন
আরীকত দুয়ালী ৷ তখন পর্যন্ত যে ছিল মুশরিক ৷
ইবন ইসহাক বলেন ং তাদের পথ প্রর্দশক আবদুল্লাহ ইবন আরকাদ যখন তাদের উভয়কে
নিয়ে বের হয়, তখন তারা মক্কার নিম্নাঞ্চল দিয়ে পথ চলে ৷ এরপর তাদেরকে নিয়ে উপকুলীয়
অঞ্চল দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে উসফা ৷বুনর নিম্নাঞ্চল দিয়ে পথ চলতে থাকে ৷ এরপর আমাজ এবং
ফুদায়দ অঞ্চল অতিক্রম করার পর তাদেরকে নিয়ে আগ্রসর হয় ৷ এরপর তাদেরকে নিয়ে সে
স্থান থেকে খার কে১ এর পথ হয়ে ছানিয়৷ আল-মুবরা’ ৷অতিক্রম করে ৷ সেখান থেকে তাবুদরকে
নিয়ে যায় লাবচুফ’ অঞ্চলে ৷ সেখান থেকে তাদেরকে নিয়ে অতিক্রম করে মাদলাজা লাক্ফ ৷
সেখান থেকে মাদলাজা মাজাজ ৷ এরপর তাদেরবুক নিয়ে গমন করে মারজাহ মাজাজ ৷ সেখান
থেকে তাদেরবুক নিয়ে যায় যুল-আযওয়ায়ন মারজাহ ৷ এরপর যী কাশাদ প্রান্তবুর ৷ এরপর
তাদেরকে নিয়ে যায় জাদাজিদ-এর উপর দিয়ে ৷ এরপর আজরাদ এর উপর দিয়ে ৷ এরপর
তাদেরকে নিয়ে চলে আ’দ৷ প্রান্তর ও যা-সালম হয়ে তি’হিন-এর মাদলাজায় ৷ এরপর আবাবীদ
হয়ে তাদেরবুক নিয়ে অতিক্রম করে আল-কাহা অঞ্চল ৷ এরপর তাদেরকে নিয়ে নেমে আসে
আল আরজ অঞ্চলে ৷ এরপর একটি উট পেছনে পড়ে গেলে আসলাম গোত্রের জনৈক ব্যক্তি-
যাকে বলা হয় আওস ইবন হাজার-রাসুলুল্লাহ্ (সা) বুক তা ৷র উবুট সওয়া র করান ৷ এ উটবুক
বলা হতো ইবনুর রিদ৷ ৷ এ উট তাকে মদীনা পর্যন্ত বহন করে নেয় ৷
আওস ইবন হাজারত তার উবুটর সঙ্গে একজন সেবকও দেয়, বা ব নাম ছিল মাসউদ ইবন
ধ্ণ্া৷হ্ দা ৷ তাদেরকে নিয়ে বের হয় তাদের পথ প্রদর্শক আল-আরাজ থেকে রাকুবার দক্ষিণে
ছানিয়াঅ আল আইর এর পথে অগ্রসর হয় ৷ ইবন হিশামের মতে এ স্থানবুক বলা হয় আল গা ৷ইর
( ,;এে ৷ ) ৷ সেখান থেকে তাদেরকে নিয়ে নেমে আসে রীম প্রান্তবুর ৷ সেখান থেকে তাদেরকে
নিয়ে অ্যাসর হয়ে কুবায় পৌছে ৷ সেখাবুন বনু আমর ইবন আওবুফর পল্লীবুত তিনি অবস্থান
১ মুল দুটি কপিবুত আছে আল-হারার সীরাবুত ইবন হিশামে
আছে আল খারারএটা হিজায়ের একটা স্থানের নাম ৷ মত৷ স্তরে মদীনায় একটা উপত্যকা বা কুয়ার
নাম (ইয়াকুত প্রণীত মৃজামুল বুলদান ) ৷
করেন ৷ এটি ছিল সোমবার রবিউল আউয়াল মাসের ১ ২ তারিখ রাত্রি ৷ সুর্য তখন প্রথর কিরণ
দিচ্ছিল এবং তখন ছিল প্রায় দুপুরের কাছাকাছি সময় ৷
ওয়াকিদী সুত্রে আবু নুআয়ম এই মনযিলগুলোর অনুরুপ নাম উল্লেখ করেছেন ৷ তবে কোন
কোন মনযিলের নামের ক্ষেত্রে তিনি ভিন্ন মতও পোষণ করেছেন ৷ আবু নুআয়ম আবু হামিদ
ইবন জাবালা সুত্রে মালিক ইবন আওস-এর মাধ্যমে তীর পিতাকে উদ্ধৃত করে বলেন :
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এবং হযরত আবু বকর (রা) হিজরত কালে জুহ্ফায় আমাদের উটের নিকট
দিয়ে অতিক্রম কালে জিজ্ঞেস করেলেন, এ উটগুলাে কার ? ণ্লাকেরা বললো , আসলাম গোত্রের
জনৈক ব্যক্তির ৷ রাসুলুল্পাহ্ (সা) আবু বকর (রা)-এর দিকে লক্ষ্য করে বললেন : আল্লাহ্ চাহেন
তো আমি নিরাপদ ৷ তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কি ? সে বললো, মাসউদ ৷
তিনি হযরত আবু বকরের প্রতি তাকিয়ে বললেন :
“ইনশা আল্লাহ্ আমি সফল হয়ে গেছি ৷” তিনি বলেন, এরপর তার নিকট আমার পিতা
আগমন করেন এবং তাকে উটে আরোহণ করান ৷ সে উটঢির নাম ছিল ইবনুর-রিদা ৷
আমি (গ্রন্থকড়ার) বলি, ইতােপুর্বে ইবন আব্বাস (বা) সুত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুলুল্পাহ্
(সা) মক্কা থেকে সােমবারে বের হন এবং মদীনায় প্রবেশ করেন সােমবারে ৷ বলা বাহুল্য,
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মক্কা থেকে বের হয়ে মদীনায় প্রবেশ করার মধ্যখানে ১৫ দিন অতিবাহিত
হয়েছিল ৷ কারণ তিনি ছওর গুহায় অবস্থান করেন তিন দিন ৷ এরপর উপকুলীয় পথ ধরে
চলেন ৷ এ পথ সচরাচর চলাচলের পথ থেকে অনেক দীর্ঘ ৷ এ পথ অতিক্রম কালে পথিমধ্যে
তিনি বনু কাআব ইবন খুযাআর উম্মু মাবাদ বিনৃত কাআবের নিকট দিয়ে যান ৷ ইউনুসের
উদ্ধৃতি দিয়ে ইবন ইসহাক সুত্রে ইবন হিশাম বলেন : মহিলার নাম আতকা বিনৃত খাল্ফ ইবন
মাবাদ ইবন রাবীআ ইবন আসরাম ৷ আর উমুবী বলেন : তিনি হলেন বনী মুনকিয ইবন
রাবীআ ইবন আসরাম ইবন সাম্বীস ইবন হড়ারড়াম ইবন খায়সা ইবন কাআব ইবন আমর
গোত্রের মিত্র আতিকা বিনৃত তাবী’ ৷ এ মহিলার সন্তানদের মধ্যে ছিলেন মাবাদ, নাযরা এবং
হুনায়দা ৷ এরা সকলেই আবু মা’বাদের সন্তান ৷ আর তার নাম আকতাম ইবন আবদুল উয্যা
ইবন মাবাদ ইবন রাবীআ ইবন আসরাম ইবন সামবীস ৷ তার কাহিনী প্রসিদ্ধ এবং বিভিন্ন সুত্রে
বর্ণিত, যার একটা অপরটাকে শক্তিশালী করে ৷
এ হল উম্মু মাবাদ আল-খুযাইয়ার কাহিনী ৷ ইবন ইসহাক সুত্রে ইউনুস বলেন, এরপর
রাসুলুল্লাহ্ (সা) উম্মে মাবাদের র্তাবুতে অবস্থান গ্রহণ করেন ৷ তারা যেহমান-দারীর অভিপ্রায়
ব্যক্ত করলে মহিলাটি বলেন, আমার নিকট কোন খাবার নেই, নেই কোন দৃধেল বকরী: এ
অল্পবয়সী ছাপলগুলাে ছাড়া ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে একটা মেষ আনার জন্য বললেন ৷
যেষ হাযির করা হলে তিনি ওলানে হাত বুলালেন,আল্লাহ্র নিকট দৃআ করলেন এবং একটা
বড় পাত্রে দুধ দােহন করলেন ৷ এমনকি দৃধে ফেনা দেখা দিল এবং তিনি বললেন : হে উম্মু
মাবাদ, তুমি পান কর ৷ উম্মু মাবাদ বললো, না, বরং আপনিই পান করুন ৷ আপনিই তো পান
করার বেশী হকদার ৷ তিনি উম্মু মা’বাদকে তা ফিরিয়ে দিলে তিনি পান করলেন ৷ এরপর আরো
একটি অল্প বয়সী ছাগী তলব করে আনড়ান এবং সেটিকেও এরকম করেন এবং তার দুধ পান
করেন ৷ এরপর অপর একটা অল্প বয়সী বকরী তলব করে সেটিকেও এরুপ করে তার দুধ
দোহন করে পথ-প্ৰদর্শককে পান করান ৷ পরে আরো একটি অল্প বয়সী ছাপী তলব করান এবং
সেটিকেও এরুপ করে তার দুধ আমিরকে পান করান ৷ তারপর তিনি সেখান থেকে প্রন্থান
করেন ৷ ওদিকে কুরায়ণের লোকজন উন্মু মাবাদের নিকট পৌছে তাকে রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) সম্পর্কে
জিজ্ঞাসাবাদ করে ৷ বলে : তুমি কি মুহাম্মদকে দেখেছে ? তার এই এই হলিয়া ৷ তারা উম্মু
মাবাদের নিকট তার পরিচয় পেশ করে ৷ উন্মু মাবাদ বলেন : তোমরা কি বলছো কিছুই তো
বুঝতে পারছি না ৷ আমাদের নিকট এক যুবক এসেছিল, সে অল্প বয়সী বকরীর দুধ দোহন
করেছে ৷ কুরায়শরা বললাে : আমরা তো তাকেই খুজছি ৷
হাফিয আবু বকর বাঘৃযার (র) মুহাম্মদ ইবন মামার সুত্রে জাবির ( রা) থেকে বর্ণনা করে
বলেন : মুহাম্মদ (সা) এবং হযরত আবু বকর (রা) হিজরতের উদ্দেশেৰ বোর হয়ে উভয়ে গুহায়
প্রবেশ করেন ৷ গুহায় ছিল বেশ কয়েকটি ছিদৃ ৷ তা থেকে কিছু (বব হয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা )-কে
যাতে দংশন না করে এ আশংকায় হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা) পায়ের পােড়ালি দিয়ে একটি
গর্তের মুখ বন্ধ করেন ৷ তারা দুজন গুহায় তিন রাত্রি অবস্থান করেন ৷ তারা সেখান থেকে বের
হয়ে উন্মু মাবাদের তাবুতে অবস্থান নেন ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে দেখে বললেন আমি এক
অনিন্দব্র সুন্দর মুখমণ্ডল দেখতে পাচ্ছি ৷ তবে আপনাদের যেহমানদারীর জন্য এ গোত্র আমার
চাইতে বেশী শক্তিশালী ও যোগ্য ৷ সন্ধ্য৷ হলে মহিলাটি তার এক অল্পবয়সী ছেলে মারফত
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট একটা চাকু এবং একটা বকরী প্রেরণ করেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বলেন, চাকুটি নিয়ে যাও এবং একটি পাত্র নিয়ে এসো ৷ তখন মহিলাটি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর
নিকট (এ মর্মে) খবর পাঠায় যে, বকরীটির দুধ আর বাচ্চা কিছুই নেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন : আমাদের নিকট পাত্র নিয়ে এলো ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বকরীর পিঠে হাত বুলালে তা
চাঙ্গা হয়ে উঠে এবং তার ওলানে দুধ নেমে আসে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) দুধ দোহন করে নিজে পান
করেন এবং আবু বকর সিদ্দীক (রা)-কে পান করান ৷ এরপর আবার দুধ দোহন করে পাত্রে
করে উন্মু মাবাদের নিকট পাঠান ৷ এরপর ইমাম বায্যার (র) বলেন, এ সনদ ব্যতীত (অন্য
কোন সনদে) হাদীসটি বর্ণনা করা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই ৷ আর ইয়াকুব ইবন
মুহাম্মদ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে অন্যতম রাবী আবদুর রহমান ইবন উকবা হাদীসটি বর্ণনা
করেছেন বলে আমাদের জানা নেই ৷
হাফিয বায়হাকী (র) ইয়াহ্ইয়া ইবন যাকারিয়া সুত্রে আবু বকর সিদ্দীক (বা) থেকে বর্ণনা
করে বলেন : আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সঙ্গে মক্কা থেকে বের হয়ে আরবের একটি কবীলার
নিকট গেলাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এক কোণে একটা গৃহ দেখতে পেয়ে সেদিকে যেতে মনস্থ
করলেন ৷ আমরা যখন সেখানে অবতরণ করি, তখন সেখানে একজন মহিলা ছাড়া আর কেউ
ছিল না ৷ মহিলাটি বললেন : হে আল্লাহর বান্দা ! আমি তো একজন মেয়ে মানুষ, আমার সঙ্গে
অন্য কেউ নেই ৷ আপনারা মেহমড়ানদারী চাইলে কবীলার কোন প্রধান ব্যক্তির নিকট যান ৷ কিভু
তিনি একথার কোন জবাব দিলেন না ৷ আর তখন ছিল সল্যার সময় ৷ মহিলার এক পুত্র সন্তান
বকরী ইাকিয়ে নিয়ে আসে ৷ মহিলাটি সন্তানকে বলে : বাংলা এ বকরী আর এ ছোরা এ দু’জন
লোকের কাছে নিয়ে যাও এবং বল : আমার আম্ম৷ বলছেন, বকরী যবাহ্ করে নিজে পারেন
এবং আমাদেরকেও খাওয়াবেন ৷ সে নবী (না)-এর নিকট গেলে তিনি তাকে বলেন : ছোরাটা
নিয়ে যাও এবং আমার জন্য একটা পেয়ালা নিয়ে এসো ৷ সে বললো বকবীটি তো এখনো
বাচ্চা দেয়নি ৷৩ তা এখনো দুধেল নয় ৷ তিনি বললেন তুমি যাও (এবং থেয়াল৷ নিয়ে এসো) ৷
সে (পয়াল৷ নিয়ে আসে ৷ নবী কবীম (সা) বকরীটির ওলানে হাত বুলান এবং দুধ দােহন
করেন ৷ এমনকি পাত্র দুধে ভরে যায় ৷ এরপর বললেন০ : এ পাত্র তোমার মায়ের কাছে নিয়ে
যাও ৷ তিনি দুধ পান করেন, এমনকি পবিত প্ত হয়ে যান ৷ এরপর সে পেয়ালা নিয়ে তিনি বলেন
এ ছা ৷র্গীটি নিয়ে যাও এবং অন্য একটি আমার কাছে নিয়ে এসো ৷ তিনি এ বকরীর সঙ্গেও এরুপ
করলেন এবং এবার আবু বকর (রা) কে পান করালেন ৷ এরপর আরেকটি বকরী নিয়ে আসে
এবং তিনি তার সঙ্গেও অনুরুপ করেন ৷ এরপর নবী করীম (সা) নিজে পান করেন এবং আমরা
রাত্রি যাপন করি ৷ তার পরে আমরা প্ৰস্থান করি ৷ মহিলাটি রাসুলুল্যুহ্ (না)-কে ঘুবারক বলে
অভিহিত করেন ৷ মহিলার মেষ পাল অনেক বৃদ্ধি পড়ায়, এমনকি তা মদীনা পর্যন্ত বিস্তার লাভ
করে ৷
আবু বকর (রা) গমনকালে মহিলার সন্তান তাকে দেখে চিনতে পায় ৷ তখন সে বলে, এ
লোকটি মোবারক ব্যক্তির সঙ্গে ছিল ৷ তখন মহিলা তার দিকে দাড়িয়ে বলে, যে আল্লাহর বান্দা!
তামার সঙ্গে যে লোকটি ছিলেন তিনি যে : তিনি বললেন, তুমি কি জান না তিনি কে ?
মহিলাটি বললেন, না ৷ তখন তিনি বললেন : তিনিই তো আল্লাহর নবী ৷ মহিলাটি বললেন,
আমাকে তার কাছে নিয়ে চলো ৷ বললেন, মহিলাকে তার কাছে নিয়ে গেলে রাসুলুল্লাহ্ (যা)
তাকে আখ্যায়িত করেন এবং উপচৌকন দেন ৷ ইবন আবৃদান তার বর্ণনায় অতিরিক্ত যোগ
করেনং : মহিলাটি বলেনং : সে মুবারক ব্যক্তির নিকট গমন করার পথ আমাকে দেখাও ৷ মহিলাটি
আবু বকর (রা) এর সঙ্গে গমন করেন এবং তাকে কিছু পনির এবং কিছু আরবীয় পণ্যসম্ভার
উপহার দান করেন ৷ রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে পবিধেয় বস্ত্র এবং উপচৌকন দান
করেন ৷ তিনি আরো বলেন : আমার মনে হয়,৩ তিনি একথাও বলেছেন যে, মহিলাটি ইসলাম
কবুল করেন ৷ বর্ণনাটির সনদ হাসান ৷ ইমাম বায়হাকী বলেন, এ কাহিনীটি উম্মু মাবাদের
কাহিনীর অনুরুপ ৷ বলা বাহুল্য , উনিই ছিলেন উম্মু মাবাদ ৷
বায়হাকী হাফিয আবু আবদুল্লাহ সুত্রে আবু মাবাদ থুযাঈ থেকে বর্ণনা করে বলেন যে,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের জন্য বের হন ৷ তার সঙ্গে ছিলেন আবু বকর
সিদ্দীক (বা), তার আযাদ করা গোলাম আামির ইবন ফুহায়রা এবৎ৩ তাদের পথ প্রদর্শক
আবদুল্লাহ্ ইবন আরীকত আল লায়হী ৷৩ তারা উম্মুট মা বাদ খুযাঈর ত বুব নিকট দিয়ে গমন
করেন ৷ আর উম্মু মা’ বাদ ছিলেন একজন গৌঢ়৷ মোট সেটা মহিলা ৷ তিনিত তাবুর বাইরে বসে
থাকতেন এবং আগত্তুকদেরকে আপ্যায়ন করাতেন ৷ তারা মহিলাটিকে জিজ্ঞেস করলেন,
মহিলার নিকট থেকে ক্রয় করতে পারেন এমন কোন গোশৃত বা দুধ কি তার নিকট আছে ?
কিন্তু তারা তার নিকট এমন কিছুই পেলেন না ৷ মহিলাটি আরো বলে : আমাদের কাছে কিছু
থাকলে আমরা তোমাদের মেহমানদারী করা থেকে বিরত থাকতাম না ৷ আর গোত্রের লোকেরা
তো বিপন্ন ও দুর্তিক্ষ পীড়িত ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকিয়ে দেখেন যে, তাবুর এক প্রান্তে একটা
বকরী আছে ৷ তিনি বললেন, উম্মু মাবাদ-এ বকরীটা কেমন ? মহিলাটি জবাব দিল, দুর্বলতার
কারণে অন্য বকরীদের সঙ্গে চলতে না পেরে এটি পেছনে পড়ে থাকে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
জিজ্ঞাসা করলেন : তার কি দুধ আছে ? মহিলা বললেন, তাতে৷ নিতাম্ভই দুর্বল ৷ দুধ আসবে
কোখেকে ? বললেন, তুমি কি আমাকে তার দুধ দোহন করার অনুমতি দেবে ? মহিলাটি
বললো৪ তাতে দুধ থাকলে দোহন করে দেখতে পারেন ৷ তখন রাস্ফুণুল্লাহ্ (সা) বকরীটিকে
আনতে বললেন ৷ বকরীটি হড়াযির করা হলে তিনি আল্লাহ্র নাম নিয়ে বকরীটির গায়ে হাত
বুলান ৷ ওলান মুছে দেন ৷ আল্লাহ্র নাম নিয়ে একটা বড়সড় পাত্র আনতে বলেন, যাতে একদল
লোকের তৃপ্তি হতে পারে ৷ বকরীটি চড়াঙ্গা হয়ে উঠে ৷ রড়াসুলুল্লাহ্ সজােণ্চ্ব দুধ দোহন করেন ৷
এমনকি পাত্রটি ভরে যায় ৷ আর তিনি সে দুধ মহিলার নিকট প্রেরণ করেন তিনি পান করেন,
পান করেন তার সঙ্গীরাও একের পর এক করে বারবার ৷ তারা তৃপ্ত হলে পর তিনি (রাসুলুল্লাহ)
নিজে পান করেন ৷ এ সময় তিনি বলেন ?
“জাতিকে যে পান করার যে সকলের শেষে পান করে থাকে ৷
এরপর তিনি পুনরায় বকরীটির দুধ দোহন করেন ৷ র্তারা সেখানে রাত্রি যাপন করেন ৷
দুধটুকু রেখে তারা প্রস্থান করেন ৷
তিনি বলেন, অল্পক্ষণ পরই মহিলাটির স্বামী আবু মাবাদ দুর্বল কৃশ, শক্তি-সামর্থ্যহীন মেষ
গুলো তাড়া করতে করতে ফিরে আসে ৷ এসব যেষে মজ্জা খুব সামান্যই ছিল ৷ দুধ দেখে
স্বামীঢি অবাক হয় এবং জিজ্ঞাসা করে, হে উম্মু মাবাদ ! এ দুধ কোখেকে এলো ? দুধ দেয়ার
মতো বকরী তো ঘরে একটাও নেই ৷ যে বকরীগুলো আছে সেগুলোতে৷ নেহাৎ অল্প বয়সী ৷ উম্মু
মাবাদ বললো : না, আল্লাহ্র কলম, আমাদের নিকট দিয়ে এক মুবারক (বরকতময় ও
পুণ্যবান) ব্যক্তি অতিক্রম করে গিয়েছেন ৷ তার কথা আর বচন ছিল এমন এমন ৷ তার স্বামী
বললেন ? সে মুবারক ব্যক্তিটির পরিচয় আমার কাছে পেশ কর ৷ তার বর্ণনা দাও ৷ আমার
ধারণা ইনিই যে ব্যক্তি, কুরায়শরা যাকে খুজছে ৷ তখন মহিলাটি বললো ? আমি এমন ব্যক্তিকে
দেখেছি যার চেহারা উজ্জ্বল গৌরবর্ণ, সুন্দর চরিত্র, লাবণ্যময় মুখ, বিরাট বপু তাকে কদর্য
করেনি, মাথার টাক বা ক্ষুদ্র মাথা তাকে ক্রটিপুর্ণ করেনি, উজ্জ্বল গৌরবর্ণ ও চিত্তহারী ব্যক্তিত্ব,
তার চোখ দু’টি ডাগর কালো ৷ চোখের পলক দীর্ঘ ও ঘন, কণ্ঠস্বরে পান্তীর্য ও ভারিকীপনা,
উজ্জ্বল সুর্মামাখা চোখ, সরু পাতলা ভুরু , ঘাড় খাড়া সোজা, দাড়ি ঘন-কৃষ্ণ , না অতি দীর্ঘ না
অতি খাটো, যখন তিনি চুপ থাকেন তখন থাকেন পাম্ভীর্ঘ নিয়ে, যখন তিনি কথা বলেন তখন
কন্ঠস্বর হয় ভরাট মিষ্টভ্যষী, থেমে থেমে কথা বলেন, বেশী কথাও বলেন না, আবার
প্রয়েজেনের চাইতে কম কথাও বলেন না ৷ তার কথা যেন ছড়ানাে মুক্তামালা, দুর থেকে দেখতে
সৃদর্শন ও চিত্তহারী, আর নিকট থেকে দেখলে আরো উজ্জ্বল, আরো সুন্দর, মধ্যম অবয়ব, দীর্ঘ
আকৃতি নয়, যা দেখতে খারাব দেখায়, আর এমন খাটোও নয়, যা দৃষ্টিতে তৃচ্ছ ঠেকে, দু’টি
শাখার মধ্যন্থলে একটা শাখা, যা তিনটি শাখার মধ্যে সবচেয়ে নযরকাড়া, দৈহিক আকৃতিতে
তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ৷ তার কিছু সঙ্গী-সাথী আছেন যারা সর্বদা তাকে পরিবেষ্টন করে
রাখে ৷ তিনি কথা বললেতার৷ গভীর মনোনিবেশ সহকারে শুনেন, তিনি নির্দেশ৷ দ ন করলে তা
পালন করার জন্য তারা ছুটে যান ৷ সকলেই তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন সকলেই তার
চারিপাশে সমবেত হন কানকথাও বলে না আবার বেশী কথাও না ৷ মহিলার ভ ৷ষায় রাসুলের
পরিচয় এরকম ৷
তখন মহিলার স্বাযীটি বললো :
“আল্লাহ্র কসম , এ তো কুরায়শের যে ব্যক্তি, যাকে তারা খুজছে ৷” তার সঙ্গে আমার
সাক্ষাত হলে আমাকে তার সঙ্গী করার জন্য আবেদন জানাতাম ৷ এ জন্য কোন পথ পেলে আমি
যথাসাধ্য চেষ্টা চালাবাে ৷ আবু মাবাদ আল-খুজাঈ বলেন : এরপর মক্কাভুমি থেকে উচ্চকণ্ঠে
বুলন্দ আওয়াজ উখিত হয় ৷ আসম৷ ৷ন-যমীনে এ আওয়াজ ভেসে অৰুসে ৷ সকলে এ আওয়াজ
শুনতে পায় ৷ কিন্তু কোথা থেকে আসছে আর কে আওয়াজ দিচ্ছে, কেউ তা জানে না ৷ কেউ
তাকে দেখতে পাচ্ছে না ৷ আওয়াজদাত৷ বলছিলং :
মানুষের পালনকর্তা মহান আল্লাহ্ উত্তম প্রতিদান দিন যে সঙ্গীদ্বয়কে, যারা অবস্থান
নিয়েছিলেন উম্মু মাবাদের তাবুতে ৷
তারা দু’জনে অবস্থান নেন সম্মান আর মর্যাদার সঙ্গে এবং প্রস্থান করেন ৷ যে ব্যক্তি
মুহাম্মদের সঙ্গী হয়েছে সেইতো হয়েছে সফলকাম ৷
সুতরাং হে কুসাই এর ব০ শধরগণ! আল্লাহ্ তাআল৷ তােমাদেরকে কেমনতর কীর্তি আর
কর্তৃহ থেকে বঞ্চিত করেছেন ৷
তোমরা জিজ্ঞেস কর তোমাদের বোনকে তার বকরী আর ভ ৷ও সম্পর্কে ৷ কারণ৫ আমরা যদি
বকরীকে জিজ্ঞেস কর, তবে সেও সাক্ষ্য দেবে ৷
তিনি সে মহিলাকে একটি অল্পবয়সী বকরী দিতে বলেন, আর তা তাকে দুধ দেয় স্পষ্ট
রুপে, বকরীর ওলানে ছিল ফেনাষুক্ত দুধ ৷
তিনিত তার নিকট দুধ দােহনক৷ ৷রীর জন্য দুধভর্তি ওলান রেখে যান যা সে না ৷রীকে দুধ দেয়
দিনের শুরুতে আর র শেষে (অর্থাৎ সকাল ও সন্ধ্যড়ায়) ৷
তিনি বলেন পরদিন প্রতুব্রষে লোকেরা নবী কবীম (সা) কে মক্কায় আর খুজে পেলাে না ৷
তারা উম্মু যা বাদের৩ তাবুর পথ ধরে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাখে মিলিত হয় (মদীনায়) ৷ আবু
যা বাদ আল-খুযাঈ বলেন, উপরোক্ত কবিতার জবাবে হাসসান ইবন ছাবিত নিম্নোক্ত কবিতা
রচনা করেন :
ব্যর্থ হয়েছে সে জাতি হিজরত করেছেন যাদের নবী আর আনন্দিত হয়েছে যে ব্যক্তি যে
সকাল ড়াল-বিকা ড়াল ছুটে যায় তার পানে ৷
এমন এক জাতির নিকট থেকে তিনি প্রন্থান করেছেন, যাদের জ্ঞানবুদ্ধি লোপ পেয়েছে ৷
অপর এক জাতির নিকট অবস্থান নিয়েছেন নিত্য নতুন নুর তথা আলো নিয়ে ৷
গোমরড়াহীর পর তাদের পালনকর্তা তাদেরকে হিদায়াত করেছেন, পথ-প্ৰদর্শন করেছেন ৷
যে সত্যের অনুসরণ করে , সে হিদায়াত পায় ৷
fl;
জাতির গোমরড়াহ লোকেরা, যারা গ্রহণ করেছে নির্বুদ্ধিতা আর অন্ধতৃ, তারা কি সমান হতে
পারে ওদের, যারা হিদায়াত লাভে ধন্য হয়েছে ?
তিনি এমন এক নবী, যিনি দেখেন তার আশেপাশের লোকজন যা দেখে না এবং
তিলাওয়াত করেন আল্লাহ্র কিতাব সকল স্থানে ৷
কোন দিন যদি তিনি পায়বের কথা বলেন, তবে তা সত্য প্রতিপন্ন হয় সেদিনই; অথবা পর
দিন পুর্বাহে ৷
আবু বকরের জন্য মুবারক হোক তার সাধনার সৌতাগ্য সাহচর্য লাভের কারণে; আল্লাহ্
যাকে তাগ্যবান করেন সে-ই হয় তাগ্যবান ৷
“)ঞ্জএে
বনু কাআবকে মুবারকবাদ যে, তাদের বংশে মইিলাটি রয়েছেন এবং মুসলমানদের তার
ড়াস্তানায় বিশ্রামের জন্য ৷ ১
১ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর জীবনীকার সুহায়লী উপরোক্ত কবিতাগুলো তৎপুর্বরর্তী কবিতাগুলাের সঙ্গে সম্পৃক্ত
করেন এবং তা জিনদের মধ্যে কোন ব্যক্তির রচনা বলে উল্লেখ করেছেন ৷ এ কবিতাগুলো সাহাবী করি
হাসৃসান ইবন ছাবিতের রচনা বলে তিনি মেনে নিতে চান না ৷
আবদুল মালিক ইবন ওয়াহাব বলেন, আমি জানতে পােরছি যে, আবু মাবাদ আল খুযাঈ
ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং হিজরত করে (মদীনায়) নবী করীম (না)-এর নিকট গমনও
করেছিলেন ৷ রর্ণনাটি আবু নুআয়ম-এর ৷ এ বর্ণনার শেষে তিনি এটুকু যোগ করেন যে, আমি
জানতে পেয়েছি উম্মু মাবাদ হিজরত করেছিলেন ৷ ইসলামও গ্রহণ করেছিলেন এবং রাসুলুল্পাহ্
(সা) এর সঙ্গে গিয়ে মিলিতও হয়েছিলেন ৷ এরপর আবু নুআয়ম বকর ইবন মুহ্ব্রিম
আল-কালবী সুত্রে সাহাবী হুবায়শ ইবন খালিদ সুত্রে বর্ণনা করে বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা ) কে
যখন মক্কা থেকে বহিষ্কার করা হয় , তখন তিনি তথা থেকে ঘুহাজিররুপে বের হন ৷ সঙ্গে ছিলেন
আবু বকর সিদ্দীক (রা), আমির ইবন ফুহায়রা এবং তাদের পথ প্রদর্শক আবদুল্লাহ ইবন
আরীকত লাইহী ৷ তারা উম্মু মা বাদের৩ তাবুর নিকট দিয়ে গমন করেন ৷ উম্মু ম৷ বাদ ছিলেন
বয় ৷স্কা কিত্তু শক্ত সমর্থ এক মহিলা ৷ তিনিও ৷ তাবুর আঙ্গিনা য় ঠ য় বহু: ন্ থাকতেন ৷
এরপর তিনি ঠিক পুর্বের মত বর্ণনা করেন ৷ তিনি মুহাম্মদ ইবন আহমদ সুত্রে সালীত
আলবদ্রী থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (না) যখন হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হন আর তার
সঙ্গে ছিলেন আবু বকর (বা) , আমির ইবন ফুহায়রা এবং ইবন আবীকত , যে তাদেরকে পথ
দেখতে৷ ৷ র্তারা উম্মু মা বাদ আল খুযাইয়ার নিকট দিয়ে গমন করেন ৷ মহিলাটি তাদেরকে
চিনতেন না ৷ রাসুলুল্লাহ (সা ) মহিলাটিকে বললেন :
হে উম্মু ম৷ বাদ! তোমার কাছে কি কিছু দুধ পাওয়া যাবে ? মহিলাটি বলে৪ না আল্লাহর
কসম, বকরীঢি৫ তা অল্পবয়সী ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন৪ এ বকরীটি কেমন ? মহিলাটি বলে০ :
দুর্বলত ৷র কারণে অন্য বকরী থেকে পেছনে পড়ে আছে ৷ এরপর পুর্বের মতে ৷ গোটা হাদীছ
বর্ণনা করেন ৷
বায়হাকী (র) বলেন, এ ঘটনাগুলাে একই কাহিনী হতে পারে ৷ এরপর তিনি উম্মু মাবাদের
বকরীর কাহিনীর সঙ্গে অনুরুপ কাহিনী বর্ণনা করেন ৷ হাফিয আবু আবদুল্লাহ কায়স ইবন নৃমান
থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (মা) এবং আবু বকর (বা) যখন গোপনে রওনা হন, তখন
তারা একজন যেষচারকের নিকট দিয়ে গমন কালে তার কাছে দুধ চান ৷ সে বললো, দুধ দোহন
করার মতো বকরী আমার কাছে নেই ৷ তবে একটা বকরী শীত মওসুমের শুরুতে গর্ভব্তী
হয়েছিল, তা একটা অসম্পুর্ণ বাচ্ছা জন্ম দিয়েছিল, এখন তো তার ওলানে কোন দুধ নেই ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) বকরীটি হাযির করতে বললেন ৷ তা হাযির করা হলে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে
স্পর্শ করলেন, তার ওলানে হাত বুলালেন এবং তার জন্য দুআ করলেন ৷ ফলে তার ওলানে
দুধের সঞ্চার হলো এবং আবু বকর (রা) একটা ঢাল নিয়ে এলেন রাসুলুল্লাহ্ (না) সে পাত্রেই
দুধ দোহন করলেন ৷ আবু বকর (রা)-কে তিনি দুধ পান করালেন ৷ আবার দোহন করে
রাখালকে পান করালেন ৷ এরপর আবার দোহন করে তিনি নিজে পান করলেন ৷ তখন রাখালটি
বললো , আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, সত্য করে, বলুন, আপনি কে ? আল্লাহর কসম ,
আপনার মতো মানুষ তো আমি কখনো দেখিনি ৷ রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন : বিষয়টা তুমি
গোপন রাখতে পারলে আমি ৰুতামাকে বলবো, রাখালটি বললো, আচ্ছা ৷ তিনি বললেন : আমি
মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল ৷ তখন রাখালটি বললো ৷ আপনি কি যে ব্যক্তি, যার সম্পর্কে কুরায়শের
ধারণা যে, লো ৷কটি সাবী তথা পুর্বপুরুষের ধর্ম ত্যাগী হয়ে গেছে ? রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন হ্যা
তারা তো এমন কথাই বলে ৷ তখন রাখালটি বললোং :
“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি (আল্লাহর) নবী ৷ আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি
(আল্লাহর পক্ষ থেকে) যা কিছু নিয়ে এসেছেনত তাও সত্য ৷ আসল কথা এই যে, আপনি যা
করেছেন, তা কেবল একজন নবীই করতে পারেন (অন্য কেউ এমনটি করতে পারে না) ৷ আজ
থেকে আমি আপনার অনুসারী ৷” তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে বললেন
বর্তমান সময়ে তুমি এটা করতে সক্ষম হবে না ৷ তুমি যখন জ’নতে পারবে যে আমি
জয়যুক্ত হয়েছি, তখন তুমি আমার কাছে আসবে ৷ আবু ঈয়াল৷ আল মাওসেলী জা ফর সুত্রে
এটি বর্ণনা ৷করেন ৷
আবু নুআয়ম এখানে আবদুল্লাহ ইবনমাসউদের কা ৷হিনী বর্ণনা করে বলেন আমি ছিলাম
বালিগ হওয়ার কাছাকাছি যুবক মক্কায় আমি উত বা ইবন আর মুআয়তের যেষ চরাতাম ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এবং আবু বকর (রা) আমার পাশ দিয়ে অতিৰুওন্থণ্ম করছিলেন ; তখন তারা
মুশবিকদের কবর থেকে বেরিয়ে আসছিলো ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, বালক তোমার কাছে কি
আমাদেরকে পান করাবার মতো দুধ আছে ? আমি বললাম, এটা তো আমার কাছে আমানত
স্বরুপ, কাবুইে আমি তাে আপনাদেরকে দুধ পান করাতে পারি না ৷ তারা দু’জনে বললেন,
তোমার কাছে এমন ছোট ছাগল আছে, যা এখনো সঙ্গমের উপযুক্ত হয়নি ? আমি বললাম হীা৷
এরপর আমি তাদের দু’ জনের নিকট তা নিয়ে এলাম ৷ আবু বকর (রা) আমার কাছে ছাগলটিকে
ধরলেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার ওলানে হাত দিলেন ৷ দু আ করলেন ৷ এর ফলে ওলান দুধে
ভয়ে গেল ৷ এরপর আবু বকর (রা) পেয়ালার মতো একটা পাত্র নিয়ে আসলেন ৷ তাতে দুধ
দোহন করলেন ৷ তিনি নিজে এবং আবু বকর (রা)-কে পান করালেন এবং আমাকেও পান
করালেন ৷ এরপর ওলানকে সংকুচিত হওয়ার জন্য বললে তা সংকুচিত হয়ে গেল ৷ পরবর্তীতে
আমি রাসুলুল্লাহ (সা) এর নিকট পৌছার পর আরয করলাম-এ পবিত্র বাণী অর্থাৎ কুরআনুল
করীম থেকে আমাকে কিছু শিক্ষা দান করুন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন০ ং তুমি তো
একজন শিক্ষিত ৩যুবক ৷ আমি সরাসরি তার যবান মুরারক থেকে ৭০টি সুরা শিক্ষা করি ৷ এতে
কেউ আমার প্রতিদ্বন্সী ছিল না ৷ এ প্রসঙ্গে তিনি যে বলেছেন তারা দু’ জনে মুশবিকদের কবল
থেকে বেরিয়ে এসেছেন, এর অর্থ হিজরতে র সময় নয় ৷ এ হলো হিজরতের পুর্বে কে ন এক
পর্যায়ে ৷ কারণ ,সুচনাতেই যারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন ইবন মাসউদ ছিলেন এবং মক্কায় ফিরে
আসেন, সে কথা পুর্বেই আলোচনা করা হয়েছে ৷ আর তার এ কাহিনী বিশুদ্ধ এবং সিহাহ্
ইত্যাদি গ্রন্থে প্রমাণিত প্ৰতিষ্ঠিত আ৷ল্লাহ্ই ভ ৷ল জানেন ৷
ইমাম আহমদ (র) আবদুল্লাহ ইবন মুসআব ইবন আবদুল্লাহ যুবায়রী সুত্রে আবাদিল এর
আযাদকৃত গোলাম ফাইদ থেকে বর্ণনা করে বলেন, ইবরাহীম ইবন আবদুর রহমান ইবন
সাআদের সঙ্গে আমি বের হলাম ৷ আমরা যখন আল-আরাজ নামক স্থানে পৌছি, তখন ইবন
সাআদ উপস্থিত হন ৷ আর এ সাআদ হলেন যে ব্যক্তি যিনি রাসুলুল্পাহ্ (না)-কে রাকুবার১ পথ
প্রদর্শন করেছেন ৷ তখন ইব্রাহীম বলেন, আপনার পিতা আপনাকে যে হাদীছ বলেছেন, আপনি
আমাকে সে হাদীছটি বলুন ৷ তখন ইবন সাআদ বলেন, আমার পিতা আমাকে বলেছেন যে,
রাসুলুল্লাহ্ (না) তাদের নিকট আগমন করেন, আর তার সঙ্গে ছিলেন আবু বকর (রা) ৷ আর
আমাদের নিকট আবু বকর (রা)-এর একটা দুগ্ধপােষ্যা কন্যা ছিল-আর রড়াসুলুল্পাহ (সা )
মদীনায় দিকে সংক্ষিপ্ত রা স্তা তালাশ করছিলেন ৷
এখন সাআদ তাকে বলেন রাকুবা’ উপত্যকার এই বিমান প্রাম্ভরে আসলাম গোত্রের দু’জন
চোর রয়েছে ৷ এদেরকে মুহানান’ বলা হয় ৷ আপনি চাইলে আমরা তাদেরকে পাকড়াও করে
আনতে পারি ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, না, তাদেরকে পাকড়াও করে আমার দরকার
নেই ৷ বরং আমাদেরকেই তাদের কাছে নিয়ে চলো ৷ সাআদ বলেন, এরপর আমরা বের হলাম ৷
আমরা কিছু দুর এগিয়ে গেলে তাদের একজন তার সঙ্গীকে বলে : এই যে ইয়ামানী ! রাসুলুল্লাহ্
(সা) তাদের দু’জনকে ডেকে ইসলামের দাওয়াত পেশ করলেন ৷ তারা ইসলাম গ্রহণ করে ৷
এরপর তাদের নাম জিজ্ঞেস করলে তারা বলে–আমরা হলাম ঘুহানান ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন :
(না, তোমরা ঘুহানান নও) বরং তোমরা তো মুকরামান’ তথা সম্মানিত ৷ রাসুলুল্লাহ (সা)
তাদেরকে মদীনায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বলে দেন ৷
বর্ণনাকারী বলেন, আমরা বের হলাম ৷ আমরা যখন কুবার নিকটে উপস্থিত হই, তখন বনু
আমর ইবন আওফ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ৷ রাসুলুল্পাহ্ (সা) তাদেরকে জিজ্ঞেস
করলেন : আবু উমামা আসআদ ইবন যুরারা কোথায় : সাআদ ইবন খায়ছড়ামা বললেন, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্! তিনি তো আমার আগে পৌছেছেন ৷ আমি কি এ সংবাদ দেব না ? এরপর
রাসুলুল্লাহ্ (সা) অগ্রসর হলেন ৷ তিনি একটা খেজুর বাগাংনউপন্থিত হয়ে দেখেন যে, সেখানে
পর্যাপ্ত পানি ভর্তি একটি হাওয রয়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখানে হযরত আবু বকর (রা)-এর
প্রতি লক্ষ্য করে বললেন :
হে আবু বকর ! এটাই তো সে স্থান, বা আমি স্বপ্নে দেখেছিলড়াম যে, আমি একটা
হাওযওয়ালা অঞ্চলে অবতরণ করছি ৷ যেমন বনী মৃদলাজের হাওযওয়ালা অঞ্চল ৷ বর্ণনাটি
এককভাবে ইমাম আহমদের ৷
পরিষ্মেদ
নবী (না)-এর মদীনায় প্রবেশ ও তার অবস্থান-স্থল
যুহরী সুত্রে উরওয়া থেকে ইতোপুর্বে বুখড়ারীর বর্ণনা উল্লিখিত হয়েছে যে নবী করীম (সা)
দুপুরে মদীনায় প্রবেশ করেছিলেন ৷ গ্রস্থকার বলেন : হয়তো এটা দৃপুরের পর হয়ে থাকবে ৷
কারণ, হিজরতের হাদীছ বুখারী-মুসলিমের বর্ণনায় ইসরাঈল সুত্রে আবু বকর (রা)-এর বর্ণনায়
আছে : আবু বকর (রা) বলেন :
১ মুল কপিতে নুন যােগে শু,ও ) (রকুনা) লিখা হয়েছে, যা ভুল ৷ আর রকুবা মক্কান্মদীনার মধ্যস্থলে
আল-আরাজ নামক স্থানের কাছে ওয়ারকান’ পর্বতের কাছে একটা ঘীটির নাম ৷