আবদুল মুত্তালিব কারও সামনে পড়লে তাকেও হত্যা করো না ৷ কেননা , তাকে জোর করে
যুদ্ধে আনা হয়েছে ৷ এ কথা শুনে আবু হুযায়ফা উতবা ইবন রাবীআ বললেন আমরা আমাদের
বাপ, ভাই ও পুত্রদের হত্যা করবো আর আব্বাসকে ছেড়ে দিবাে, তা কী করে হয় ? আল্লাহর
কসম, সে যদি আমার সামনে পড়ে, তবে আমি তাকে তরবাবি দ্বারা আঘাত করবোই ৷ এ
সংবাদ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট পৌছলে তিনি উমরকে ডেকে বলেন : ওহে আবু হাফ্স!১
আল্লাহর রাসুলের চাচার চেহারায় কি তরবাবি চালান যায় ম্ব উমর বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ্া
আমাকে অনুমতি দিন আমি তলোয়ার দিয়ে তার পর্দান উড়িয়ে < দ্য:ব৷ ৷ আল্লাহর কসম, সে
মৃনাফিক হয়ে গেছে ৷ পরবর্তীতে আবু হুযায়ফা বলতেন, ঐ দিন আমি ৷যে কথাটি বলেছিলড়াম,
তার জন্যে আমি নিজেকে নিরাপদ মনে করি না ৷ একমাত্র শাহাদংশ্চেভ্রর দ্বারা কাফ্ফারা দেওয়া
ছাড়া রক্ষা হবে না বলে আমি সর্বদা শংকিত থাকি ৷ অবশেষে ইয়ামামার যুদ্ধে তিনি শহীদ হন ৷
আবুল বুখতারী ইবন হিশামের হত্যার ঘটনা
ইবন ইসহাক বলেন, বদর যুদ্ধে রাসুলুল্পাহ (সা) আবুল বুখতস্টুরীকে হত্যা করতে নিষেধ
করেন ৷ কেননা, মক্কায় রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে নির্যাতন করা থেকে তিনি কুয়ায়শদেরকে নিবৃত্ত
করতেন ৷ তিনি নিজে কখনও রাসুলুল্লাহ্কে কষ্ট দেননি এবং এমন কোন আচরণও করেননি
যাতে তার মন ব্যথিত হয় ৷ এছাড়া কুরায়শদের যে লিখিত চুক্তিপত্রের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
ও বনু হাশিমকে আবু৩ তালিব গিবিসঙ্কটে অবরুদ্ধ রাখা হয় সে চুক্তিপত্র ভঙ্গের ব্যাপারে তিনি
অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন ৷ বদর রণাংগনে আবুল বুখ৩ তারী যুজায়যার ইবন যিয়াদের সামনে
পড়েন ৷ মুজাযযার ছিলেন আনসারদের মিত্র ৷ তিনি আবুল বুখতারীকে জানিয়ে দেন যে,
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তোমাকে হত্যা করতে আমাদেরকে ধারণ করে দিয়েছেন ৷ আবুল বৃখ৩ তারীর
সঙ্গে ছিল ৰু জুনাদ৷ ইবন মালীহ৷ নামক লায়ছ গোত্রীয় তার এক বন্ধু ৷ মক্কা থেকে সে আবুল
বুখতারীর সঙ্গে এসেছিল ৷ তার সম্পর্কে আবুল বুখতারী বললেন, আমার সংপীটির কী হবে ?
উত্তরে যুজাযুযার জানালেন আল্লাহর কসম, তোমার সঙ্গীকে ছাড়া হবে না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
কেবল তোমার একার কথাই বলেছেন ৷ আবুল বুখত তারী বললেন, তাহলে আল্লাহর কসম করে
বলছি, আমি ও সে এক সাথেই মরব ৷ যাতে পশ্চাতে ৩কুরায়শ মহিলারা আমার সম্পর্কে এ কথা
বলতে না পারে যে, নিজের জীবন রক্ষার্থে আমি আমার সঙ্গীকে ত্যাগ করেছি ৷ একথা বলেই
তিনি যুজাযযারের উপর আক্রমণ করলেন এবং নিম্নের ছন্দটি পড়লেন ং
“কোন সস্তুাম্ভ লোক তার সঙ্গীকে কখনও পবি৩ ৷৷গ করে না ৷ হয় সে সঙ্গীর জন্যে জীবন
বিলিয়ে দেয় , না হয় অন্য কো ন উপায় বের করে নেয় ৷
তারপর উভয়ের মধ্যে লড়াই শুরু হলে আবুল বুখতারী মারা যায় ৷ এ প্রসঙ্গে ঘুজাযুযার
নিম্নোক্ত কবিতাটি আবৃত্তি করেন :
১ হযরত উমর বলেন, আল্লাহর কসম এই দিনই সর্বপ্রথম রাসুলুল্লাহ (না) আমাকে “আবু হাফস’ কৃনিয়াতে
আখ্যায়িত করেন ৷
“হয়তো তুমি আমার বৎ শপবিচয় জান না; কিৎব৷ জানলেও ভুলে গিয়েছ ৷ তবে বাস্তব
প্রমাণের মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছি যে আমি বাল৷ গোত্রের লোক ৷ যারা ইয়ামানের ভৈত বি বর্শ৷ দ্বারা
(শত্রুকে) আঘাত করে এবং শত্রুপক্ষের বীর যোদ্ধারা যতক্ষণ পরাভুত না হয়, ততক্ষণ তাদের
উপর আঘাতের পর আঘাত হানতে থাকে ৷ (হে পথিক ) বুখতারীর সন্তানদেবকে ইয়াত্তীম
হওয়ার সংবাদ দাও; কিৎবা আমার সন্তানদের নিকট এ জাতীয় কোন সৎ বাদ পৌছিয়ে মা ও ৷
আমি সেই ব্যক্তি, যার সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে যে , আমার মুল হচ্ছে বাল৷ গোত্র ৷ আমি বর্শা
দ্বারা আঘাত করতে থাকি যতক্ষণ না তা বীকা হয়ে যায় ৷ আপন্ই৷ আমার প্রতিপক্ষকে ধারাল
মাশরাফী তরবারি দ্বারা হত্যা করি ৷ আমি মৃত ভ্যুকে সেইরুপ দ্রুত কামনা করি যেরুপ কামনা
করে ঐ উদ্রী যার স্তনে দুধ জমাট বেধে যাওয়ায় যন্ত্রণ৷ ৷ভাগ করে মুজাযযারের এ
কথাগুলােকে কেউ মিথ্যা হিসেবে দেখতে পাবে না ৷”
এরপর মুজায্যার রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট এসে বললেন সেই সভার কসম , যিনি
আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন আমি তাকে বন্দী অবস্থায় আপনার নিকট নিয়ে আসতে
প্রাণপণ চেষ্টা করেছি; কিন্তু সে আমার সাথে যুদ্ধ করা ছা ড়৷ আর ৷কছুণ্ডে ই রাষী হল না ৷ ফলে
আমাকে তার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয় এবং আমার হাতে সে নিহত হয় ৷
উমাইয়া ইবন খাশৃফের হত্যার ঘটনা
ইবন ইসহাক আবদুর রহমান ইবন আওফ থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন,
মক্কায় অবস্থানকালে উমাইয়া ইবন খাল্ফের সাথে আমার বন্ধুতু ছিল ৷ আমার নাম ছিল আবৃদে
আমর ৷ ইসলাম গ্রহণ করার পর ঐ নাম পরিবর্তন করে আমার নতুন নামকরণ করা হয় আবদুর
রহমান ৷ তখন সে আমার সাথে সাক্ষাত করে বলল, ওহে আবদে আমর ! তোমার পিতার রাখা
নাম কি পরিবর্তন করে ফেলেছ ? আমি বললাম, হী৷ ৷ সে বলল, আমি রহমান চিনি না ৷ সুতরাং
তোমাকে ডাকার জন্যে এমন একটা নাম রাখ, যা আমাদের দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে ৷
এখন থেকে তোমাকে পুর্বের নামে ডাকলে তুমি সাড়া দিয়ে না আর আমিও তোমাকে এমন নাম
ধরে ডাকবাে না যে নাম আমি চিনি না ৷ এরপর থেকে আমাকে আবদে আমর বলে ডাকলে
আমি তার ডাকে সাড়া দিতাম না ৷ আবদুর রহমান বলেন, আমি উম ৷ইয়াকে বললাম হে আবু
আলী ! তুমি তোমার পসন্দমত একটা নাম রাখ ৷ সে বলল, তোমার নাম “আবদুল ইলাহ্া
আমি বাংলায়, তাই হোক ৷ এরপর থেকে আমি যখন তার পাশ দিয়ে যেতাম সে আমাকে
আবদুল ইলাহ বলে সম্বোধন করতো ৷ আমি তার সে ডাকে সাড়া দিতাম এবং তার সাথে
কথাবার্তা বলতাম ৷ বদরের যুদ্ধে আমি তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম দেখলাম উমাইয়া তার পুত্র
আলীর হাত ধরে দাড়িয়ে আছে ৷ আমার কাছে ছিল কয়েকটি লৌহবর্ম ৷ এগুলো আমি আমার
হাতে নিহত৷ ৷ত্রুদের থেকে সৎগ্র হ করেছিলাম ৷ উমাইয়া আমাকে দেখে আবদে আমর বলে
ডাক দিল ৷ কিন্তু আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম না ৷ তখন সে আবদে ইলাহ বলে ডাকল ৷
এবার তার ডাকে আমি সাড়৷ দিলাম ৷ সে বলল, আমার ব্যাপারে কি তোমার কোন দরদ নেই ?
তোমার কাছে সে বর্মগুলো আছে তার থেকে কি আমি তোমার জন্যে অধিক কল্যাণকর নই ?
আমি বললাম, অবশ্যই ৷ তারপর আমি হারুত তর বর্মগুলাে ফেলে দিয়ে তার ও তার পুত্রের