Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » পারস্য সম্রাট কিসরার কাছে পত্র প্রেরণ

পারস্য সম্রাট কিসরার কাছে পত্র প্রেরণ

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • ধরে নিয়ে আসবে ৷ ” এরপর বাযাম তার হিসাব রক্ষক ও সচিবকে পারস্যের পত্র সহকারে প্রেরণ
    করলো এবং তার সাথে খরথুস্রা নামী পারস্যের একটি লোককে প্রেরণ করলো ৷ তাদের
    দৃইজনের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে একটি পত্র লিখে যার মধ্যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে এ
    দুজনের সাথে কিসরা সম্রাটের কাছে আগমন করার নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ অন্যদিকে বাযাম আবু
    যুওয়াহকে বলেছিলেন, ঐ ব্যক্তির শহরে তুমি আগমন করবে তার সাথে তুমি কথা বলবে এবং
    তার সম্বন্ধে বিস্তারিত খবর নিয়ে আসবে ৷ ইতে ৷মধ্যে পুর্বের প্রেরিত দু ব্যক্তি বের হয়ে গেল এবং
    ন্৷ তায়েভ্রুফ গিয়ে পৌছল ৷ তারা তা ৷য়েফের ভুখণ্ডে কুরায়শের এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করল এবং
    তাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল ৷ সে বলল যে, তিনি মদীনায় আছেন ৷ তায়েফবাসী
    ও কুরায়ণের উল্লিখিত ব্যক্তি আগত্তুক দুই জনকে পেয়ে খুবই খুশী হল এবং একে অন্যকে
    বলতে লাগল, শুভ সংবাদ গ্রহণ কর, কেননা, সম্রাট কিসরা তাকে লক্ষষ্ বন্তুতে পরিণত করেছেন,
    এটা ই ঐ ব্যক্তির শায়েস্তা হবার জন্যে যথেষ্ট ৷ উক্ত দুই ব্যক্তি তায়েফ থেকে বের হয়ে মদীনায়
    রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর কাছে আগমন করল ৷ আবু যুওয়াহ রাসুচ্পুহু; ৷ ন্ ( সা )-এর সাথে কথা বলল
    এবংস ৎবাদ দিল যে, শাহানশা হ রাজ৷ ৷ধিরাজ কিসরা শাসনকতা বাবামের কাছে পত্র লিখেছেন ৷
    পত্রে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছেত তিনি যেন আপনার কাছে এমন কোন ব্যক্তিকে প্রেরণ করেন
    যে আপনাকে নিয়েত ৷র কাছে যাবে ৷ আর আমাকে পাঠানো হয়েছে যেন আপনি আমার সাথে
    চলেন ৷ যদি আপনি তা করেন তাহলে তিনি সম্রাটের কাছে পত্র লিখবেন যাতে করে আপনার
    উপকা ৷র হয় ৷ আর এটা ই অ পানার মঙ্গলের জন্যে যথেষ্ট ৷ অন্যদিকে যদি আপনি যেতে অস্বীকার
    করেন, তাহলে আপনি ইতোমধ্যে জেনে নিয়েছেন যে এটা হবে আপনার আপনার সম্প্রদায় ও
    দেশের জন্যে মারাত্মক বিপর্যয় ও ধ্বংসের কারণ ৷ তারা দু’ জন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে
    আগমন করলেন ৷ তারা দুজনই দাড়ি মুণ্ডিত ছিল এবং বড় গৌফধারী ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    তাদের দিকে বিরুপ দৃষ্টিতে দেখলেন এবং বললেন, সর্বনাশ, কে তোমাদেরকে এরুপ করতে
    বলেছে ?” তারা বলল , “আমাদের মনিব কিসরা আমাদেরকে এরুপ করতে বলেছেন ৷ ”
    রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, “কিন্তু আমার প্রতিপালক দাড়ি বৃদ্ধি করতে ও পৌফ ছুাটতে হুকুম
    দিয়েছেন ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তে ৷মরা ফিরে যাও আপামীকাল আবার এসে৷ ৷ ”
    রাবী বলেন, আসমান থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে সংবাদ আসল যে, আল্লাহ তা জানা
    কিসৃরার বিরুদ্ধে তার ছেলে শিরওয়েহকে আধিপত্য দা ন করেছেন ৷ সে তার পিতাকে অমুক
    মাসে ও অমুক রাতে হত্যা করেছে ৷ রাবী বলেন, তাদের দৃ জনকে ডেকে এ সংবাদটি দিলেন ৷
    তারা বললো, “আপনি কি জানেন আপনি কী বলছেন ? আমরা আপনার প্ৰতিশোধ (নব, তবে
    হালকাভাবে ৷ আমরা আপনার এ মন্তব্যের ব্যাপারে কি শাসনকর্তা বাযামকে অবহিত করবো
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হীা তোমরা আমার পক্ষ থেকে তাকে এ সম্পর্কে জানিয়ে দাও ৷ আর
    তাকে তোমরা বলে দাও আমার প্রচারিত ধর্ম ও আধিপত্য কিসরা ৷র মত খ্যাতি লাভ করবে এবং
    পৃথিবীর আনাচে-কানাচে পৌছবে ৷ আবার তোমরা তাকে বল, যদি তুমি ইসলাম কবুল কর
    তাহলে তোমার রাজত্ব ও আধিপতাণ্ তামার হাতেই থাকতে দেওয়া হবে ৷ এরপর খরখুসরা কে
    একটি স্বর্ণারীপ্য খচিত কমরবন্দ দেওয়া হল আর তা তিনি কোন এক রাজার পক্ষ থেকে

    ১ টীকা ও বর্ণনান্তরে বাবুয়েহ বা বাবুইয়া আছে ৷ শ্সম্পাদক

    উপচৌকন স্বরুপ প্রাপ্ত হয়েছিলেন ৷ উপরোক্ত দুই ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দরবার থেকে বের
    হয়ে বাযামের কাছে আগমন করল এবং তাকে বিস্তা বিত ঘটনা জান ল ৷ বাযাম বললেন অ ৷ল্লাহ্র
    শপথ, এটা কোন রাজা-বাদশার কথা নয় ৷ তিনি নিশ্চয়ই আমার মতে একজন নবী যেমন৩ তিনি
    নিজে বলেছেন ৷ আর তিনি যা বলছেনত তা অবশ্যই বা ৷স্তবায়িত হবে ৷ আর এ খবরটি যদি সত
    হয়ে থাকে তাহলে৩ তিনি সত্যিক৷ ৷র প্রেরিত রাসুল ৷ আর তার সং বাদ যদি সত্যি না হয়, তাহলে
    আমরা তার সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্ত নেব ৷ কিছুদিনের মধ্যে বাযামের কাছে শিরওয়ের পত্র
    পৌছল ৷ তাতে লিখিত ছিল আমি কিস্রাকে হ৩ ত্য৷ করেছি ৷ আর তা করেছি কেবল
    পারস্যবাসীদের স্বার্থেই ৷ কেননা, তিনি পারস্যের সজ্রান্ত লোকদেরকে ও সীমান্ত পাহারাদারদেরকে
    নির্বিচারে হত্যা করেছেন ৷ তোমার কাছে যখন আমার এ পত্রটি পীছ£ ৷ তখন তুমি তোমার
    লোকদের থেকে আমার আনুগতাের শপথ গ্রহণ করবে ৷ আর ঐ ব্যক্তির কাছে গমন করবে যার
    ব্লুকাছ কিসৃরা পত্র লিখেছিলেন ৷ এ ব্যাপারে তোমার কাছে আমার পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত

    তাকে আর কোন প্রকার বিরত করবে না ৷ বাযামের কাছে যখন শিরওয়ের পত্র পৌছল তখন তিনি
    বলতে লাগলেন, নিশ্চয়ই ইনি আল্লাহর রাসুল ৷ এরপর তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং
    ইয়ামানস্থ পারসিক কর্মকর্তারা সকলে ইসলাম কবুল করে নিলেন ৷ রাবী বলেন, বাবুইয়া বাযামকে
    বলেছিল , আমি তার মত এত প্রতাপশালী কোন ব্যক্তির সাথে আজ পর্যন্ত কথা বলি নাই ৷ বাযাম
    তাকে বললেন, তার সাথে কি কোন সাত্রী থাকে ? সে বললো, না’ ৷

    ওয়াকিদী বলেন, ৭ম হিজরীর জুমাদ৷ ল আখির৷ মাসের তের৩ তারিখে রাত্রির দ্বিতীয় প্ৰহরে
    কিসৃর৷ তার ছেলের হাতে নিহত হয় ৷

    আমি বলি, কোন কোন কবির কবিতায় দিক নির্দেশনা পাওয়া যায় যে, মুহাররম সালে তাকে
    হত্যা করা হয়েছিল ৷ একজন কবি বলেন :

    “তারা কিস্রাকে রাঃ৩ তর বেলায় নিষিদ্ধ মাসে হ৩ ত্যা করেছিল ৷ হত্যাকারিগণ তাকে ফেলে
    গেল ৷ তার দাফন কাফনে তারা কোন প্রকার প্রতিবন্ধকত৷ সৃষ্টি করেনি ৷”

    আবর কবিদের কোন একজন বলেন : কিসৃরাকে তার পুত্ররা তলোয়ার দ্বারা এমনভাবে টুক্রা
    টুক্র৷ করে হত্যা করেছিল যেমন কসাই মাৎসকে টুক্রা টুক্র৷ করে থাকে ৷ এমন একদিন তার
    জন্যে মৃত্যু প্রকাশ পেল যেদিন প্রত্যেক গ৩বির্তীই তার গর্ভস্থিত সন্তানকে প্রসব করে থাকে ৷
    (অর্থাৎ এ রাত টি ৫তর৩ তারিখ দিবাগত রাত অর্থাৎ ১৪৩ তারিখ যাকে আরবী ভায যায় লাইভ
    তামাম’ বলা হয় ৷ আবার দৃংখের বা৩ ও বলা হয় ৷

    হাফিয বায়হাকী আবু বকর (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “একদিন
    পারস্যের এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে আগমন করে ৷ তিনি তাকে বললেন, “আমার
    রব্ব গতকাল রাত তােমা র মনিবকে হত্যা করেছেন ৷” রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সামনে জনৈক ব্যক্তি
    বললেন, “তার কন্যা নাকি৩ তার উত্তরাধিকারী হয়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “ঐ সম্প্রদায়
    সফলকাম হবে না, যাদের রান্থীয় কর্ণধার হবে শ্রী লোক ৷

    বায়হাকী বলেন, দিহইয়৷ কালট্রুবীর বর্ণনায় এসেছে যে, যখন তিনি কায়সারের নিকট থেকে
    ফেরত আসলেন তখন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দরবারে কিসৃরার দুতদেরকে দেখতে পেলেন ৷

    কিসরা সানৃআর শাসককে লিখেছিলেন, ওে তামার বাজে যে লোকটির আবির্ভাব হয়েছে এবৎ
    আমাকে তার প্রচারিত ধর্ম গ্রহণ করার জন্যে আহ্বান জানিয়েছে ৷ তার ঘোজখবর নাও এবং

    তাকে দমন করার চেষ্টা ৷কর; নচেৎ তোমার বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ত তাই ঐ
    শাসনকর্তা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে লোক প্রেরণ করে ৷ রাসৃলুল্লাহ্ (সা) দুতদের লক্ষ্য করে
    বলেন, “ তোমাদের যিনি প্রেরণ করেছেন তাকে সংবাদ দাও যে, গতরাত আমার রব্ব তার
    মনিবকে হত্যা করেছেন ৷’ ’বা স্তরে তাই ঘটেছে বলে পরে তা র ৷ জানতে পায় ৷

    ইমাম বায়হাকী আবুহুরায়রা (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “একদিন সা’দ
    (বা) রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দরবারে উপস্থিত হন ৷ বাসুলুল্লাহ্ (সা) ববলন, “সা’দের কাছে নিশ্চয়ই
    কোন সৎবাদ আছে ৷ সা’দ (বা) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ কিসরা ধ্বংস হয়েছে ৷” বাসুলুল্লাহ্
    (সা) বললেন, কিসরার প্রতি লা নত ৷ সে পারস্যের প্রথম নিহত ব্যক্তি ৷ এরপর আরবদের পালা

    আমি বলি বলা বা হল, ইয়ামানের শাসক বাযামের পক্ষ <ৰুখন্ক যে দুই ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্
    (না)-এর দরবারে এসেছিল যাদের কাছে তিনি কিসরার নিহত হওয়ার সংবাদ দিয়েছিলেন, ঐ
    সংবাদটি যখন দেশ দেশান্তরে প্রচারিত হল, তখন হযরত সা’দ ইবন আবু ওক্কাস (রা)-ই প্রথম
    তা শুনে রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে ওনান ৷ বায়হাকী (বা) এভাবেই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন ৷

    তারপর বায়হাকী (র ) আবু সালাম৷ ইবন আবদুর রহমানের বরাতে বলেন, কিসরা
    যখন তার প্রাসাদে বসবাস করছিল তখন তার কাছে সত্যের বাণী বিভিন্নভাবে পৌছতে থাকে ৷
    একদিন সে এক আগন্তুকের উপস্থিতিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে ৷ আগন্তুকের হাতে ছিল একটি
    লাঠি ৷ কিসরাকে লক্ষ্য করে আগন্তুক বলল, “হে কিসরা ! এ লাঠি তোমার মাথায় ভাঙ্গার পুর্বে
    কি তুমি ইসলাম গ্রহণ করবে ? কিসরা বললেন, হী৷ , আপনি আমার মাথায় লাঠি মারবেন না ৷
    আগভৃক চলে গেলেন ৷ কিসরা দারোয়ানকে ডেকে বললেন, “ এ আগন্তুককে আমার কাছে
    আমার জন্যে কে অনুমতি দিল ? তারা বলল, “আপনার কাছেতো কেউ আসেনি ৷” কিসরা
    বললেন, “তোমরা মিথ্যা বলছ ৷” রাবী বলেন, “কিসরা তাদের উপর রাপাষিত হলো ৷ তাদেরকে
    কঠোরভাবে ধমক দিল ৷ তারপর তাদেরকে ক্ষমা করে দিল ৷ যখন বছর শেষ হবার পথে, পুনরায়
    ঐ ব্যক্তি লাঠি নিয়ে আগমন করলেন এবৎ বললেন, হে কিসরা ! তোমার মাথায় এ লাঠিভ ৷ঙ্গার
    পুর্বে কি তুমি ইসলাম গ্রহণ করবে ? উত্তরে কিসরা বলল, “হ্যা, আপনি আমার মাথায় লাঠি
    মারবেন না ৷ এবারও আগন্তুক চলে গেলেন ৷ কিসরা দারোয়ানদের ডেকে প্রথমবারের ন্যায় ধমক
    দিল ও তাদের প্রতি অত্যন্ত রাগাম্বিত হল ৷ পরবর্তী বছর যখন আসল, তখন আগন্তুক ও লাঠি
    নিয়ে পুর্বের ন্যায় আগমন করলেন এবৎ বললেন, হে কিসরা ৷ তোমার মাথায় এ লাঠি মারার
    পুর্বে তুমি ইসলাম গ্রহণ করবে ? তখন কিসরা বললেন, না, লাঠি মারবেন না, না ৷লাঠি মারবেন
    ন৷ ৷ কিন্তু আগন্তুকত তার মাথায় লাঠি মা রলেন ৷ এরপর আল্লাহ তা আলা ৷কিসরাকে ধ্বংস করে
    দিলেন ৷

    ইমাম শাফিঈ (র) আবুহুরায়রা (বা) হতে তাবর্ণন ৷করেন ৷ তিনি বললেন, বাসুলুল্লাহ্
    (সা) বলেছেন, বত মান কিসরা ধ্বংস হবার পর আর কো ন কিসরা হবে না এবং বর্তমান কায়সার
    ধ্বংস হবার পর আর কোন কায়সার হবে না ৷ যে সভার হাতে আমার জান, তার শপথ করে

    বলছি, “তোমরা তাদের গুপ্তধন পরবর্তীতে আল্লাহর রাস্তায় দান করবে ৷” ১ মুসলিম (র) ও
    অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম শাফিঈ (র) আরো বলেন, “যখন কিসৃরার কাছ রড়াসুলুল্লাহ্
    (সা ) এর পত্র উপস্থাপন করা হল , যে তা ছিড়ে ফেলে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) তখন বললেন, তার
    সাম্রাজ্যও এরুপ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে ৷ অন্য দিকে কায়সার রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পত্রের প্রতি সম্মান
    প্ৰদশ্নি করেছিলেন, পত্রটিকে মিশৃক আম্বরের কৌটোয পুরে রেখেছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    বললেন, তার সাম্রাজ্য টিকে থাকবে ৷

    ইমাম শাফিঈ (র) ও অন্যান্য উলামায়ে কিরাম বলেন, “আরব কাফিররা যখন ব্যবসার
    উদ্দেশ্যে সিরিয়া ও ইরাক অড়াসত তখন তাদের মধ্যে যারা সুযোগ <;পন্ৰুদুদ্র মুসলমান হয়ে যেত ৷
    ইরাক ও সিরিয়ার মাধ্যমে আরব কাফিররা তাদের জনবলশু ৷স পাওয়ার ভীতি সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্
    (সা )-এর কাছে অনুযোগ করল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “যখন কিসৃরা ধ্বংস হয়ে যাবে,
    তারপর আর কোন কিসরা হবে না এবং যখন কায়সার ধ্বংস হয়ে যাবে তারপর আর কোন
    কায়সার জন্ম নেবে না ৷” রাবী বলেন, “কালক্রমে কিসৃরাদের রাজত্ব চিরদিনের জন্যে বিলুপ্ত হয়ে
    গেল ৷ আর সিরিয়া থেকে কায়সারদের রাজতৃও চিরদিনের জন্যে একেবারে বিলুপ্ত হয়ে গেল ,
    যদিও কিছুদিন রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর পত্রের সম্মান করায় তার দৃআর বরকতে টিকে ছিল ৷ আল্লাহ্ই
    অধিক পরিজ্ঞাত ৷

    এখানে একটি বড় শুভ সংবাদ এই যে, রোমান রাজত্ব আর কোন দিনও সিরিয়া ভুখণ্ডে
    প্রতিষ্ঠিত হবে না ৷ যিনি (রামের উপদ্বীপটিসহ সিরিয়ার শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা কায়সার
    বলে ৷ যিনি পারস্যের শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা কিসরা বলে ৷ যিনি হৰেশার শাসনকর্তা হন
    তাকে আরবরা নাজাশী বলে ৷ যিনি আলেকজাদ্রিয়ার শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা মুকাওকিস
    বলে ৷ যিনি মিসরের শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা ফিরআউন বলে এবং হিন্দুস্থানের যিনি
    শাসনকর্তা হন তাকে আরবরা বাতলীমুস’ বলে ৷ এরুপে এগুলি ব্যতীত অন্যান্য দেশের অন্যান্য
    নাম তাদের কাছে ছিল সুপরিচিত ৷ অন্যত্র এ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ৷

    মুসলিম জাবির ইবন সামুরা হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ইরশাদ
    করেন : “মুসলমানদের একটি দল কিসৃরার শুভ্র প্রাসাদে সুরক্ষিত সুপ্ত সম্পদ অধিকার করবে ৷
    অন্য একটি সনদেও জারির ইবন সামুরা হতে অনুরুপ বর্ণিত হয়েছে ৷ তবে এটাতে অতিরিক্ত
    রয়েছে, জাবির ইবন সামুরা বলেন, “মুসলমানদের এ দলের মধ্যে আমার পিতা ও আমি ছিলাম
    এবং আমাদের ভাগে পড়েছিল এক হাজার দিরহাম ৷

    আলেকজাদ্রিয়ার শাসনকর্তা মুকাওকিস জুরায়জ ইবন মীনা আল-কিবতীর কাছে
    পত্র প্রেরণ

    ইউনুস ইবন বুকায়র আবদুল্লাহ ইবন আবদুল কাবীর বর্ণনায় বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    হাতির ইবন আবু বালতাআ (রা) কে আলেকজাদ্রিয়ার শাসনকর্তা মুকাওকিস এর কাছে পত্র
    সহকারে প্রেরণ করেন ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর পত্রটিকে চুম্বন করলেন, হাতির ইবন আবু

    ১ এ উক্তিতে আর কোন কিসরা বা কায়সার হবে না বলতে তাদের মত এত প্রতাপশালী শাসক আর
    হবে না বুঝানো হয়েছে ৷ সম্পাদকদ্বয় ৷

    বালত৷ আ (রা) কে সম্মান করলেন, তাকে উত্তম আতিথ্য প্রদান করলেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    উত্তম উপচৌকনসহ তাকে বিদায় দিলেন ৷ হা৩ ৷তিব ইবন আবুব৷ ল্ত আ (রা) এর সাথে রাসুলুল্লাহ্
    (সা)-এর জন্যে প্রেরিত উপচৌকন সামগ্রীর মধ্যে ছিল বস্ত্র, জীনসহ একটি খচ্চর এবং দুইজন
    দাসী একজন নবী তনয় ইব্রাহীম এর আম্মা ৷ দ্বিতীয় জনকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) মুহাম্মাদ ইবন
    কায়স আল-আবদীকে দান করেন ৷
    বড়ায়হাকী হাতির ইবন আবু বাল্তাআ (রা) হব্৩ বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
    “রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে আলেকজাদ্রিয়৷ ৷র শাসনকর্তা মুকাওকিসের নিকট প্রেরণ করেন ৷ আমি
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পত্র নিয়ে তার কাছে গেলাম ৷ তিনি আমাকে ৩ার বাড়ীতে থাকতে দিলেন
    এবং আমি সেখানে অবস্থান করলাম৷ তারপর তিনি আমার কাছে লোক পাঠালেন এবং তার
    সভাসদবর্গকে জমায়েত হবার আদেশ দিলেন ৷ এরপর আমাকে বললেন, আ ৷৫মি তামাকে একটি
    কথা জিজ্ঞেস করব ৷ আমি চাই যে,তু মি আমার কাছে এটা ৷ ব্যাখ্যা দান করবে ৷ আমি বললাম,
    বলুন’ ! তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমাকে তোমার কর্তা সম্বন্ধে বল তিনি কি একজন নবী
    নন ন্’ আমি বললাম, তিনি নিশ্চয়ই আ ল্লাহর রাসুল ৷ ’ তিনি বললেন, “তা ৷র সম্প্রদ৷ য়ের কাছে তার
    সম্মান নেই কেন ?৩ তারা কেন নিজেদের দেশ হতে তাকে বের করেদিল ?” তিনি বললেন, আমি
    বললাম, “আপনি কি সাক্ষ্য দেনন৷ যে, ঈস৷ (আ) একজন নবী ছিলেন ?” তিনি বললেন, হ্যা ৷
    আমি বললাম, “তার সম্প্রদায়ের লোকেরা তার কোন মর্যাদা দিলনা তারা তাকে পাকড়া ও করতে
    চেয়েছিল ৷ তবে শুলে চড়াতে মনন্থ করেছিল; কিন্তু তাদেরকে ধ্বংস করার জন্যে ৩া৷প্লাহ
    তাআলার দরবারে তিনি কোন অভিশাপ দিলেন কেন ? বরং শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তাকে
    প্রথম আসমানে উঠিয়ে নিলেন ৷ তিনি আমাকে বললেন, তুমি বিজ্ঞ ব্যক্তি এবং তুমি বিজ্ঞজনের
    কাছ থেকেই এসেছ ৷ এ সামান্য উপচৌকন আমি তোমার সাথে মুহাম্মাদ (না)-এর জন্য প্রেরণ
    করছি ৷ আর তোমার সাথে আমার কয়েকজনসান্থীকে প্রেরণ করছি যাতে তারা তোমাকে তোমার
    নিরাপদ জায়গায় পৌছিয়ে দেয় ৷ ’ রাবী বলেন, “তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে তিনটি দাসী
    প্রেরণ করেছিলেন৩ ৷৩াদের মধ্যে একজন হলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এ-র ছেলে ইবরাহীমেব৷ ম৩ ৷তা৷
    আর একজন দা ৷সী রাসুলুল্লাহ্ (সা) হাসৃসা ৷ন ইবন ছাবিত আনসা বীকে৷ দা ন করেন ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্
    (সা) এর কাছে একটি উত্তম খচ্চরও প্রেরণ করেছিলেন ৷
    ইবন ইসহাকের বর্ণনায় চারটি দা ৷সীর উল্লেখ রয়েছে ৷৩ তাদের একজন হলেন মারিয়া (রা)
    ইবরাহীমের মাতা ৷ অন্য একজন হলে সীরীন যাকে হানৃসান ইবন ছ৷ ৷বিত ( রা)-কে দান করেন
    তার গর্ভে আবদুর রহমান ইবন হাসৃসান জন্ম নেন ৷
    এ উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিল একটি থােজ৷ দাস যার নাম ছিল মাবুর , দুটি নকশাবিহীন
    কালো সোজা, একটি সাদা খচ্চর যার নাম দৃলদুল ৷ মাবুর যে থােজ৷ ছিলেন এ ব্যাপারটি কেউই
    জানতন৷ ৷ তিনি হযরত মারিয়া (বা) এর ঘরে অবাধে যাতায়াত করতেন ৷ যেমনটি মিসরে এরুপ
    অবাধ প্রবেশের প্রচলন ছিল ৷ এজন্য কেউ কেউ তাদের দুজন সম্বন্ধে নানারুপ কটুক্তি করতে
    লাগল অথচ তারা প্রকৃত ঘটনা জা নতন৷ ৷ কেউ কেউ বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আলী ইবন আবু
    তালিব (রা) কে তাকে হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু আলী (রা) থােজ৷ দেখতে পেয়ে
    তাকে ছেড়ে দিলেন ৷ সহীহ্ মুসলিমেও এ ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায় ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা) বনু আমির ইবন লু’য়ীর সদস্য সালীত ইবন আমর
    ইবন আ বদুদ (রা) কে ইয়ড়ামামার শাসনকর্তা হাওযা ইবন আলীর নিকট প্রেরণ করেন ৷ আর আলা
    ইবন হাদরামী (রা) কে ওমানের শাসক জায়ফার ইবন আল-জালান্দি আল ইয দী এবংঅ ম্মআার ১
    ইবন আল-জালা ৷ন্দি আল ইযদীর নিকট প্রেরণ করেন ৷

    যাতুস সালাসিদ্বপ্ন্ব২ যুদ্ধ

    হড়াফিয বাযহ কী মক্কা বিজয়ের পুর্বে এ যুদ্ধটির ঘটনা উল্লেখ করেন এবং মুসা ইবন উকবা ও
    উরওয়া ইবন যুবায়র (রা) এর বরাতে তিনি বলেন যে, ত ৷রা দুইজন বলেছেন , “রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    সিরিয়া এলাকায় অবস্থিত বনু বালীও বনুকুযাআর বাসভুমির অন্তর্গত যাতুস সালাসিল নামক স্থানে
    আমর ইবন আস (রা) কে প্রেরণ করেন ৷ উরওয়া ইবনুয যুবায়র (রা) বলেন, বনু বালী ছিল
    আস ইবন ওয়ায়েলের মাতুল বংশ ৷ যখন আমর ইবন আস (রা) এর সেনাবাহিনী সেখানে
    পৌছল, তখন তারা দুশমনের সং খ্যা অধিক হওয়ায় ভীত সস্ত্রস্ত হয়ে পড়েন ৷ র্তারা রাসুলুল্লাহ্

    (না)-এর কাছে লোক প্রেরণ করে সাহায্য প্রার্থনা করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) প্রথমদিকের
    মুহাজিরগণকে যুদ্ধে যাবার জন্যে ডেকে পাঠালেন ৷ শীর্ষস্থানীয় মুহড়াজিরগণের একটি দল যার
    মধ্যে আবু বকর এবং উমর (রা) ও ছিলেন, যুদ্ধে অংশ্যাহণের জন্যে সাড়া দিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্
    (সা) আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ্ (রা)-কে র্তাদের আমীর নিযুক্ত করলেন ৷ মুসা ইবন উকবা
    বলেন, নতুন সৈন্যদল যখন আমর (রা)-এর কাছে আগমন করেন তখন তিনি বলেন, আমি
    তোমাদের আমীর ৷ আমি রাসুলুল্পাহ্ (সা)এর কাছে সাহায্য চেয়ে পাঠিয়েছিলাম ৷ মুহাজিরগণ
    বললেন, আপনি আপনার সাথীদের আমীর ৷ আর আবুউবায়দা (বা) মুহাজিরগণের আমীর ৷ আমর
    (বা) বললেন, আপনারা আমার সাহায্যকারী ৷ আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে সাহায্য চেয়ে
    পাঠিয়েছিলাম ৷ আবু উবায়দা (রা) ছিলেন নম্র, ভদ্র ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী ৷ তিনি এরুপ
    পরিস্থিতি ৩লক্ষা করে বললেন “হে আমর ! তুমি জেনে রেখো, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে সর্বশেষ
    নিদ্যেশ বলেছেন, যখন তুমি তোমার সাথীর কাছে পৌছবে, তখন তোমরা মিংল মিশে
    থাকবে ৷” এখন তুমি যদিণ্ডু আমার কথা অমান্যও কর তবু আমি তোমার কথা মেনে চলব ৷
    এভাবে আবুউবায়দা (বা) আমর ইবন আস (বা) এর নেতৃত্ব মেনে নিলেন ৷

    মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক, মুহাম্মাদ ইবন আবদুর রহমান এর বরাতে বলেন , রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    আমর ইবন আসকে প্রেরণ করেন যাতে তিনি আরবদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান করেন ৷
    প্রকাশ থাকে যে, আস ইবন ওয়ায়েলের মা ছিলেন বনু বালী গোত্রের ৷ এজন্যই আমর ইবন
    আস (রা)-কে রাসুলুল্লাহ্ (সা) উক্ত গোত্রে পাঠালেন যাতে তিনি ইসলামের স্বপক্ষে তাদের মন
    জয় করতে পারেন ৷ তাই আমর (বা) বনু জুযামের জলাশয় সালাসিলের নিকট পৌছলেন ৷ এ
    কুয়ার নামানুসারে এ যুদ্ধের নাম যাতুস সালাসিল হয়েছে ৷ রাবী বলেন, তিনি উক্ত জায়গায় পৌছে
    শত্রু সৈন্যের আধিক্যে ভীত হয়ে পড়েন ৷ তাই তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে সাহায্য প্রার্থনা

    ১ অন্য বর্ণনায় তার নাম আবদ বলে উল্লিখিত হয়েছে ৷
    ২ একে যাতুস সুলাসিলও বলা হয়ে থাকে ৷ — সম্পাদকদ্বয় ৷

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ পারস্য সম্রাট কিসরার কাছে পত্র প্রেরণ Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.