Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শাসকদের কাছে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর পত্র ও দূত প্রেরণ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শাসকদের কাছে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর পত্র ও দূত প্রেরণ

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • করবে না, কিন্তু আমি ছিলাম একজন সর্দার ও নেতৃস্থানীয় সম্মানিত ব্যক্তি ৷ কাজেই আমি মিথ্যা
    বলাটাকে লজ্জাজনক মনে করলাম ৷ আমি আরো জানতাম যে, যিথ্যার মত সামান্য কিছু ত্রুটিও

    যদি তারা আমার মধ্যে দেখতে পায়, তাহলে তারা এটা নিয়ে মক্কায় সমালোচনা করবে, এজন্যে
    আ ৷মি মিথ্যা বলিনি ৷

    তারপর সম্রাট জিজ্ঞেস করলেন, ৩৫ আমাদের মধ্যে যিনি নুবুওতের দা ৷বী করেছেন তার সম্বন্ধে
    আমাকে বিস্তারিত সংবাদ পরিবেশন কর ৷ আবু সুফিয়ান বলেন, আমি তাকে খাটো করে
    দেখাবার প্রয়াস পেলাম ৷ তা ই আমি বললাম, আপনার যা কিছু জান র দরকার মনে করেন, তা
    জিজ্ঞেস করতে পারেন ৷ তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যেত তার বংশ মর্যাদা কেমন ? উত্তরে
    আমি শুধুমাত্র বললাম, আমাদের মধ্যে তার বংশ মর্যাদা উত্তম ৷ তিনি ন্,ৱললেন আমাকে তুমি
    সংবাদ দাও যে, তা ৷র পরিবারের মধ্যে পুর্বে কেউ এরুপ দ ৷বী করেছিল কি না ? তাহলে বুঝা যেত
    যে, তিনি৩ তার অনুকরণ করছেন ৷’ আমি বললাম, না’ ৷ তিনি বললেন আমাকে সংবাদ দাও যে
    তার কোন রাজত্ব ছিল কি না-য৷ তোমরা তার থেকে জােরপুর্বক ছিনিয়ে নয়েছ ? সুতরাং এটাকে
    তোমাদের থেকে ফেরত নেবার জন্যে৩ তিনি নুবুওভ্রুত র দাবী করছেন ৷ আমি বললাম, না ৷ তিনি
    বললেন, তাহলে তার অনুসারীদের ব্যাপারে আমাকে সংবাদ দাও যে তারা কারা ? অ৷ ৷মি বললাম ,
    কিশোর , দুর্বল এবং নিঃস্ব গোত্রের লোকেরা ৷ তবে তাদের মধ্যে যারা ভদ্র ও উচ্চ বংশের তারা
    তাকে বিশ্বাস করছেন৷ ৷ ’ তিনি বললেন, অড়ামাকে সংবাদ দাও যে, তার অনুসারীরা তাকে
    ভালবাসে এব× সম্মান করে কি না ? নাকি তাকে ঘৃংা৷ করে কিৎবা তার থেকে পৃথক হয়ে যায় ?
    আমি বললাম, এমন কোন অনুস৷ ৷রী তার নেই যেত তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ৷ তিনি বললেন
    এখন আমাকে তুমি তোমাদের ও তার মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের খবর দাও খতন আমি তাকে
    বললাম, যুদ্ধ হচ্ছে একটি পানির বালতির ন্যায় কখনও আমাদের দখলে থাকে আবার কখনও
    তার দখলে থাকে ৷ অর্থাৎ পালাক্রমে জয় পরাজয় চলছে ৷ ’ তিনি বললেন, আমাকে সংবাদ দাও
    তিনি ওয়াদ৷ ভঙ্গ করেন কি ?’ আবু সুফিয়ান (রা) বললেন “তাকে ওয়াদ৷ ভৎগকারী হিসেবে
    চিহ্নিত করার কোন সুযোগ না পেয়ে শুধুমাত্র বললাম, না৩ তবে আমরা তার সাথে একটি চুক্তির
    মধ্যে আছি, এ ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তা নেই যে, তিনি কোন প্রকার ওয়াদ৷ ভৎগ করবেন না ৷
    আল্লাহর শপথ, রোম সম্রাট আমার এ কথার প্রতি কোন কর্ণপাতই করলেন না ৷ ’ আবুসুফিয়ান
    র(া) বলেন, তারপর আব৷ র৩ তিনি কথা শুরু করলেন এব× বললেন তুমি বলেছ তিনি তোমাদের
    মধ্যে উত্তম ব×শের সন্তান ৷ এরুপে আল্লাহ্ তা আলা নবীপণকে উত্তম ব ×শ হতে মনোনীত
    করেন ৷ আমি ওে তামাকে প্রশ্ন করেছিলাম যে তার পরিবার পবিজনের মধ্যে কেউ কি তার মত
    এরুপ দাবী করেছে ? তাহলে বুঝতাম যে, তিনিও অনুরুপ বলছেন ৷ তুমি বলেছ, না’ আবার
    তোমাকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম৩ তার ৷কি কো ন রাজত্ব আছে যা তোমরা তার থেকে ছিনিয়ে নিয়েছ
    ? সুতরা× তিনি তার রাজত্ব ফিরে পাবার জন্যে নুবুওয়াতের দাবী করছেন ৷ তুমি উত্তরে বলেছ
    না ৷ তোমাকে আমি তার অনুসারীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছি ৷ উত্তরে তুমি বলেছ, তারা
    কিশোর, দুর্বল ও নিঃস্ব গোছের লোকজন ৷ আর সকল যুগের নবীদের অনুসারীর৷ এরুপই
    ছিলেন ৷ আবার আমি৫ তামাকে প্রশ্ন করেছি যে, যারা তার অনুসারী তারা কি ভাবে ভালবাসে
    এবং সম্মান করে ? না তাকে ঘৃণা করে ও তার থেকে পৃথক হয়ে যায় ? তুমি বলেছ, যারা তার

    সাথী হয়েছে৩ তাদের কেউই তার থেকে পৃথক হয়ে যায়নি ৷ আর এরুপই হচ্ছে ঈমানের স্বাদ ৷
    যদি একবার অম্ভরে প্রবেশ করে তাহলে তা বের হয়ে যায় না ৷ আমি তে তামাকে প্রশ্ন করেছি, তার
    আর তোমাদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের খবর কী ? তুমি বলেছ,৩ তা একটি পানির বা লাতির ন্যায়
    কিছুদিন এটা তোমাদের দখলে থাকে আবার কিছুদিন তার দখলে থাকে ৷ আর এরুপই হয়েছিল
    নবীদের যুদ্ধ ৷ পরিণামে তাদেরই জয় হয় ৷ আ ৷মি প্রশ্ন করেছিলাম তিনি কি ওয়াদ৷ তংপ করেন ?
    তুমি বলেছ, তিনি ওয়াদ৷ ভঙ্গ করেন না ৷ যদি আমার কাছে সব সত্য কথা বলে থাকে৷ তাহলে
    মনে রেখো, তিনি আমার দৃপায়ের৩ তলা পর্যন্ত জয় করে নেবেন ৷ আমার ইচ্ছে হয় যে আমি যদি
    তার কাছে পৌছতে পারি তাহলে তার পা ধুইয়ে দেই ৷ এরপর তিনি বললেন,তু মি তোমার
    কাজে চলে যাও ৷ আবুসুফিয়ান (রা) বলেন, আমি দাড়িয়ে গেলাম এবং এক হাতকে অন্য হাত
    দ্বারা আঘাত করলাম এবং বললাম , হে আল্লাহ্র বান্দাগণ ! চেয়ে দেখো , আবু কাবসার ছেলের
    ব্যাপারটি কী পর্যন্ত পৌছে গেছে ৷ বনৃল আসফাবের (রোম) শাসকরাও তার দরুন তাদের
    রাজত্বের জন্যে ভয় করছে ৷ ”
    ইবন ইসহাক বলেন, যুহরী আমাকে বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর যুগের খৃক্টানদের এক
    ধর্মযাজক আমাকে বলেছেন যে, দিহইয়৷ ইবন খলীফা (রা) রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর একটি পত্র নিয়ে
    রোমক সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে আগমন করেন ৷ পত্রের পাঠ ছিল নিম্নরুপ :

    পরমদাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে, মুহাম্মাদৃর রাসুলুল্লাহ্ (সা) হতে রোমের সম্রাট
    হিরাক্লিয়াসের প্রতি ৷ যে হিদায়াতের পথ অনুসরণ করে তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক ৷ এরপর
    ইসলাম গ্রহণ কর, নিরাপত্তা লাভ করবে ৷ তোমাকে আল্লাহ তাআলা দ্বিগুণ ছওয়াব দান করবেন ৷
    আর তুমি যদি ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার কর, তাহলে তোমাকে কৃষক প্ৰজাদের গুনাহ্ ও
    তোমার উপর বতাবে ৷ যখন তার কাছে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পত্র পৌছল, তখন তিনি এটা
    পড়লেন এবং ধরে রাখলেন ৷ তারপর পত্রটি কােমরও উরুর মধ্যবর্তী জায়গায় হিফাযত করে
    রাখলেন ৷ তারপর তিনি তার একজন রোমীয় বন্ধুর কাছে পত্র লিখলেন ৷৩ ৷র বন্ধুটি হিব্রুভ্য
    জানতেন ৷ তার মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পক্ষ থেকে যে পত্রটি এসেছিল৩ ৷র অর্থ অনুধাবন
    করে ৷ তারপর সে তার পত্রের উত্তরে লিখে যে,৩ তিনি সত্য নবী যার জন্যে অপেক্ষা করা হচ্ছে ৷
    তার মধ্যে কোন সন্দেহ নেই ৷ তাই তার অনুসরণ কর ৷

    এরপর রোমের সম্রাট, রোমের শাসনকর্তাদেৱকে আদেশ দিলেন, তারা যেন তার সাম্রাজ্যের
    দ্বাররুদ্ধ একটি প্রাসাদে সমবেত হয় ৷ প্রাসাদে আলোর ব্যবস্থা করা হয় ৷ আর তিনি দােতলার
    একটি বারো থেকে তাদের প্ৰতি ৩দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন ৷ তিনি তাদেরকে অনেক ভয় করতেন ৷
    এরপর তিনি বলেন, হে রােমানগণ ৷ আহমদের পক্ষ হতে আমার কাছে একটি পত্র এসেছে ৷
    নিশ্চয়ই তিনি এমন একজন নবী আমরা যার অপেক্ষা করছি, যার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা আমাদের কিভাবে

    রয়েছে এবং আমরা যাকে তার যুগ ও তার বিশেষ বিশেষ নিদর্শনসমুহের সাহায্যে সহত্তেইি
    চিনতে পারি ৷ সুতরাং তোমরা সকলে মুসলমান হয়ে যাও এবং তার অনুসরণ কর ৷ তাহলে
    তোমরা দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি লা ত করতে পারবে ৷ তখন তারা এবইি লোকের ন্যায় সমস্বরে
    চীৎকাব করতে লাগল এবং প্রাসাদের দরজার দিকে ধাবিত হল ৷ তবে এগুলোকে তারা পিছন
    থেকে বন্ধ দেখতে পেল ৷ সম্রাট তাতে ভড়কে গেলেন এবং বললেন, তাদেরকে আমার কাছে
    ফিরিয়ে নিয়ে এসো ৷ তাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হল ৷ তখন তিনি তাদেরকে বললেন, “হে
    রোমানগণ ! আমি কেবল তোমাদেরকে পবীক্ষার উদ্দেশ্যে এ কথাটি বলছি যেন তোমরা
    তোমাদের ধর্মে কতটুকু দৃঢ় আছ৩ তা আচ করতে পারি ৷ এখন আমি কে ৷মাদেরকেএ অবস্থা
    দেখে খুশী হলাম ৷” তখন তারা তার সামনে সিজদায় লুটিয়ে পড়ল ৷ তারপর তাদের জন্যে
    প্রাসাদের দ্বার থােল৷ হল এবং তারা বের হয়ে গেল ৷

    ইমাম বৃখারী (র) হিরাক্লিয়াসের সাথে আবু সুফিয়ান (রা) এর ন্হার্টনাটি কিছু বর্ধিত কলেবরে
    বর্ণনা করেছেন ৷ আমি সহীহ্ বুখারীর উপস্থাপিত সনদ ও শব্দ উল্লেখ সহকারে ঘটনাটি বর্ণনা
    করার আশা পোষণ করি ৷ যাতে দুই ঘটনার মধ্যে পুর্বাপর পার্থক্য ও এগুলোর মধ্যে সন্নিবেশিত
    তথ্যাদি প্রকাশ পায় ৷

    বুখারী (রা) সহীহ্ কিত৷ ৷রে ঈমান অধ্যায়ের পুর্বে৩ তার বর্ণনাটি উল্লেখ করেছেন ৷ তিনি আবুল
    ইয়ামান আল হ-াকাম আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে বর্ণনা ৷করেন ৷ তিনি বলেছেন,
    আবু সুফিয়ান (রা)ত তার কাছে বর্ণনা করেছেন নিশ্চয়ই রােমক সম্রাট হিরাক্লিয়াস তার কাছে
    একজন লোককে প্রেরণ করেন ৷ তিনি কুরায়শের একটি ক ৷ফেলায় ছিলেন ৷ কাফেলার সদস্যগণ
    ছিলেন সিরিয়ার ব্যবসায়ী ৷ আর সময়টি ছিল রাসুলুল্লাহ্ (সা) এবং আবু সুফিয়ান (রা) ও
    কুরায়শদের কাফিরদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তির মেয়াদের মধ্যে ৷ তারা তখন সম্রাটের কাছে
    আগমন করলেন ৷ সম্রাট তার সভা ৷সদবর্গ নিয়ে ইলিয়ায় অবস্থান করছিলেন ৷ সম্রাট আরবদেরকে
    তার মজলিসে ডাকলেন ৷ আর তার পাশেই ছিল রোমের নেতৃতৃস্থুানীয় ব্যক্তিবর্গ ৷ এরপর
    দোভা ষীকেও ডাকলেন ৷ তিনি প্রশ্ন করলেনং : তোমাদের মধ্যে কে ঐ লোকটির বংশের দিক দিয়ে
    সর্বাধিক নিকটবর্তী যিনি নবী বলে দাবী করেছেন ? আবু সুফিয়ান (রা) বলেন, আমি বললাম ,
    আমি বা শের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে তার নিকটতম ৷ সম্রাট বললেন তাকে আমার আরো
    নিকটে আনয়ন কর এবং তার সাথীদেরকেও নিকটে নিয়ে এসো ৩৩ তার পিছনের দিকে বসা ও ৷
    এরপর তিনি দােত ৷ষীকে বললেন যে, তাদেরকে বলে দাও যে আমি তাকে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে
    জিজ্ঞাসাব৷ ৷দ করব যিনি নবী বলে দা ৷বী করেন ৷ যদি সে আমার কা ছে মিথ্যা বলে তাহলে যেন তারা
    আমাকে বলে দেয় যে, সে মিথ্যা বলছে ৷ আবু সুফিয়ান (রা) বলেন, আল্লাহর শপথ, যদি তারা
    আমাকে মিথুাক বলে প্রচার করবে এরুপ আশংকা না থাকত, তাহলে আমি অবশ্যই মিথ্যা
    বলতাম ৷ এরপর প্রথম যে প্রশ্নটি সম্রাট আমাকে করেছিলেন, তাহল যে, তোমাদের মধ্যে তার
    ৎশ মর্যাদা কীরুগ ? আমি বললাম, তিনি আমাদের মধ্যে স্জ্রাম্ভ বংশের অধিকারী ৷ তিনি
    বললেন, তার পুর্বে তোমাদের মধ্যে কি কেউ এরুপ নুবুওয়াণ্ডে র দাবী করেছিল ?’ আমি বললাম,
    না’ ৷ তিনি বললেন,৩ তার পুর্বপুরুষদের মধ্যে কি কেউ রাজা ৷ছিল ? আমি বললাম, ’ান ৷ তিনি

    বললেন, স্ন্তুাওবংশের লোকেরা তার অনুসরণ করে, না কি তাদের মধ্যকার দুর্বলরা ? আমি
    বললাম, বরং দৃর্বলরা ই তার অনুসরণ করছে ৷ তিনি বললেন, তারা কি দিন দিন সং খ্যায় বাড়ছে,
    না কমছে ?’ আমি বললাম, বরং ত ৷রা দিন দিন বাড়ছে’ ৷ তিনি বললেন, তাদের মধ্যে কি কেউ
    তার ধর্মে প্রবেশ করার পর নারাজ হয়ে ধর্ম ছেড়ে দিচ্ছে ? ’ আমি বললাম ’না’ ৷ তিনি বললেন,
    তোমরা ঐ ব্যক্তিকে নুবুওয়ারু তর দাবী করার পুর্বে মিথ্যার কোন অপবাদ দিতে পেরেছিলে ?’
    আমি বললাম, না ৷ তিনি বললেন, সে কি ওয়াদা ভঙ্গ করে ? অ৷ ৷মি বললাম না’ , তবে আমরা
    তার সাথে একটি চুক্তির মধ্যে আছি, জানিনা সে এটার মধ্যে কী করবে ? আবু সুফিয়ান বলেন,
    উপরোক্ত বাক্যাত্শ ছাড়া ডআর আমি কিছুই৩ ৷ ৷র বিরুদ্ধে বলভ্রুন্ পাবিনি ৷ তিনি বললেন, তোমরা
    কি তার সাথে যুদ্ধ করেছ ?’ আমি বললাম, হ্যা ৷ তিনি বললেন তাহলে তার সাথে যুদ্ধ করার
    ফলাফল কী ? আমি বললাম, তার ও আমাদের মধ্যে সংঘ ঘটিত যুদ্ধটি বালতির ন্যায় ৷ কোন সময়
    তা আমাদের হাতে আবার কোন সময় তার হাতে থাকে ৷ অর্থাৎ কোন সময় আমাদের আবার
    কোন সময় তারই জয় হয় ৷ তিনি বললেন, তিনি তোমাদেরহ্রক কিসের আদেশ দেন ? আমি
    বললাম, তিনি আমাদেরকে বলেন, তোমরা শুধুমাত্র এক আল্লাহর ইবাদত করবে ,তার সাথে
    আর কাউকে শরীক করবে না ৷ আর তোমাদের পি৩ তুপুরুষের রীতিনীতি পরিহার কর ৷ তিনি
    সালাত আদায় করা, সত্য কথা বলা, সৎ হওয়া, এবং আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখার জন্যে
    আমাদেরকে নির্দেশ দেন ৷ দেভে ৷ষীকে সম্রাট বলেন, তুমি তাকে বলে দাও যে, তোমাকে আমি
    তার বংশের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেছি আর তুমি বলেছ যে, সে তোমাদের মধ্যে সল্লাও বংশের
    অধিকারী, এরুপে বাসুলগণকে তাদের সম্প্রদায়ের সণ্ড্রাম্ভ বংশেই প্রেরণ করা হয়ে থাকে ৷ আমি
    তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, ঐ ব্যক্তির নুবুওয়াতের দ বীর পুর্বে কি তোমাদের মধ্যে কেউ
    এরুপ দাবী করেছিল ? ’উওরে তুমি বলেছ যে, না ৷ তাই আমি বলব, যদি কেউ এই কথা আগে
    বলে থাকতো তাহলে আমি বল৩ তাম, লোকটি তার পুর্বের লোকের কথা ৷র অনুসরণ করছে ৷ আমি
    তোমাকে প্রশ্ন করেছি, ৷ তার পিতৃ পুরুষের মধ্যে কেউ কি রাজা ছিল ? তুমি উত্তরে বলেছ, না ৷
    আমি বলব, যদি৩ তার পি৩ তৃপুরুষদের মধ্যে কেউ রাজা থাক তাহলে আমি বলতাম যে, সে৩ার
    পিতৃপুরুষের রাজতৃ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে ৷ আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, এ
    নুবুওয়াতের দাৰীর পুর্বে৩ তাকে কি তোমরা মিথ্যার অপবাদ দিতে পেরেছিলে ? উওরে তুমি বলেছ,
    না’ ৷ সুতরাং আমি বুঝতে ৩পেরেছি যে, তিনি মানুষের মধ্যে মিথ্যার প্রসা ৷র ঘটাননি,াই তিনি
    আল্লাহর উপর মিথ্যা আরোপ করতে পারেন না ৷ আমি তোমাকে প্রশ্ন করেছি যে, তাদের মধ্যে
    ক্ষমতাবান লোকেরা তার অনুসরণ করছে, না দুর্বল লোকেরা ? উওরে তুমি বলেছ, দুর্বল লোকেরা
    তার অনুসরণ করছে ৷ আসলে দুবলব ই নবী রাসুলগণের অনুসরণকারী হয়ে থাকে ৷’ আমি
    তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, তার অনুসারীর৷ দিন দিন৷ বা ড়ছে, না কমছে ? উত্তরে তুমি উল্লেখ
    করেছ যে, তারা সং খ্যায় দিন দিন বাড়ছে ৷ ঈমানের ব্যাপারটি এরকমই ৷ পরিপুংতাি অর্জন পর্যন্ত
    তা বাড়তেই থাকে’ ৷ আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, তাদের মধ্যে ধর্মের প্রতি৷ ন ৷রায হয়ে
    কেউ ধর্ম৩ ত্যাগী হচ্ছে কি না ? আর উওরে তুমি উল্লেখ করেছ যে, না ৷ ঈমান বন্তুটি এরুপই যে,
    যখন তার ছোয়া অন্তরে লাগে তখন সে আর বের হয় না ৷ আমি তে তামাকে প্রশ্ন করেছি যে, সে
    কি ওয়াদা ঙ্গ করে ? উত্তরে তুমি উল্লেখ করেছ, না’ ৷ আসলে রাসুলগণ কােনদিনও ওয়াদ৷ ভঙ্গ

    করেন না ৷ আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, তিনি তোমাদেরকে কিসের নির্দেশ দেন !’ ভুমি
    জবাব দিয়েছ যে, তিনি আদেশ দেন তোমরা আল্লাহ্র ইবাদত করবে, র্তার সাথে কাউকে
    অং শীদার করবে না ৷ আর তিনি তামাদেরকে মুর্তিপুজা করতে নিষেধ করেন ৷ তিনি
    তোমাদেরকে সালাত আদায় করতে, সত্য কথা বলতে এবং সৎ হতে আদেশ করেন ৷ তুমি যা
    বলছ তা যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে তিনি আমার এ দুই পায়ের নীচের ভুমি পর্যন্ত অধিকার
    করে নেবেন ৷ আমি জানতাম যে, তিনি আবির্ভুত হবেন, তার আমি ধারণাও করতে পারিনি যে,
    তিনি তোমাদের মধ্য হতে হবেন ৷ আর আমি যদি জানতাম যে আমি তার কাছে পৌছতে
    পারব, তাহলে তার সাথে সাক্ষাতের আপ্রাণ চেষ্টা করতাম ৷ আর যদি আমি তার কাছে
    পৌছতে পারতাম, তাহলে আমি তার পদযুগল ধুয়ে দিতাম ৷ তারপর তিনি পত্রটি তলব
    করলেন যা রাসুলুল্লাহ্ (সা) দেহ্ইয়া (রা)-এর মারফত বুসরার শাস্যাকর কাছে প্রেরণ
    করেছিলেন ৷ আবার বুসরার শাসনকর্তা তা’ রোমের সম্রাট হিরা৷ক্লয়াসের কাছে হস্তান্তর
    করেছিলেন ৷ পত্রে লিখা ছিল :

    পরম দাতা পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি, মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ রাসুলুল্লাহ্
    (সা) এর নিকট হতে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্ৰতি ৷ যিনি হিদায়াতের অনুগত তার উপর শান্তি
    বর্ধিত হোক ৷ এরপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি ৷ ইসলাম গ্রহণ করুন এবং

    নিরাপদ থাকুন ৷ আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ পুণ্য দান করবেন ৷ আর যদি অন্যথা করেন তা হলে
    ৩া৷াপন র প্রজা কৃষককুলের পাপ আপনারই উপর বতাবে ৷

    অর্থাৎ “ তুমি বল, হে কিতাবীগণ ! এস সে কথায় যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সমান;
    যেন আমরা আল্লাহ ব্যতীত করে৷ ইবাদত না ৷করি, কোন কিছুকেই তার শরীক না ৷করি এবং

    আমাদের কেউ কা ৷উকেও আল্লাহ ব্যতীত প্ৰতিপ৷ ৷লক রুপে গ্রহণ না ৷করি ৷ যদি তারা মুখ ফিরিয়ে
    নেয়, তবে বল, ভোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম ৷ ” (৩-অ ৷ল ইনরান৪ ৬৪)

    আবু সুফিয়ান (রা) বলেন, যখন তিনি তার বক্তব্য এবং পত্র পা ৷ঠ শেষ করলেন, তখন তাদের
    মধ্যে গোলমাল প্রচণ্ড আকার ধারণ করল এবং উচ্চস্বরে বাকবিতণ্ডা চলতে লাগল ৷ তখন
    আমাদেরকে বের করে দেওয়া হল ৷ আমাদের বের হয়ে আসার পর আমি আমার সাথীদেরকে
    বললাম , আবু কাবশার ছেলের ব্যাপারটিত বিরাট আকার ধারণ করেছে ৷ বনুল আসফারের সম্রাট

    তাকে ভয় করছে ৷ আবুসুফিয়ান (রা) বলেন, তখন হতে আমি দৃঢ় প্ৰ৩ ক্রয় পোষণ করেছিলাম
    যে, ওঅচিরেই তিনি জয়ী হবেন ৷ এরপর আল্লাহ্ তা জানা আমাকে ইসলামের সুশীতল ছ৷ ৷য়াতলে
    আশ্রয় দান করেন ৷ আবু সুফিয়ান (রা ) বলেন, ইলিয়ার শাসনকর্তা, হিরাক্লিয়াসের বন্ধু এবং
    সিরিয়ার খৃণ্টানদের বিশপ ইবন নাতৃর বর্ণনা করেন, একদা রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস ইলিয়ায় এসে
    রাত যাপন করলেন এবং ভোরে তিনি বিমর্ষ অবস্থায় ঘুম থেকে উঠেন ৷ চেহারা মলিন দেখে
    যাজকদের কেউ কেউ বললেন, জাইাপনা ! আপনাকে চিন্তিত মনে হচ্ছে ! ইবন নাতুর বলেন,
    হিরাক্লিয়াস একজন জ্যোতির্বিদ ছিলেন ৷ তিনি তারকারাজি পর্যহ্:বক্ষণ করে ভবিষ্যদ্বাণী করতেন ৷
    তিনি তার সভাসদবর্গকে লক্ষ্য করে বললেন, তারকারাজি পর্যবেক্ষণ করে আমি দেখতে পাচ্ছি
    যারা খাতনা করায় তাদের বাদশাহর আবির্ভাব হয়েছে ৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কোন জাতির লোকেরা
    খাতনা করে থাকে ? সভাসদবর্গ বললেন, ইয়াহুদীর৷ ব্যতীত অন্য কেউ খাতনা করেন৷ ৷ আর
    তাদের ব্যাপারে আপনার মিঃার কোন কা ৷রণ নেই ৷ কেননা, তারা একটি শক্তিশালী জা৩ ৷তি নয় ৷
    আপনার ক্ষমতা দখল করার মত তাদের কোন শক্তি নেই ৷ আপনার রাজত্বের বিভিন্ন শহরে
    নির্দেশ জারী করুন যেন তথাকা র ইয়াহ্রদীদেরকে হত্যা করা হয় ৷৩ তারা এরুপ চিন্তা ভ ৷বনায় ছিল
    এমনি সময়ে হিরাক্লিয়াসের কাছে ’পাসসানের শাসনকর্তা র প্রেরিত একজন লোক এসে পৌছল ৷
    যিনি রাসুলুল্লড়াহ্ (সা) সম্বন্ধে সংবাদ পরিবেশন করলেন ৷ হিরাক্লিয়াস যখন রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) সম্পর্কে
    জানতে পারলেন তখন বললেন, তোমরা পরীক্ষা করে নাও এ দুতঢির খাতনা করানো আছে
    কিনা ৷৷৩ তার পরীক্ষা ৷করে (দখল এবং সম্রাটকে সংবাদ দিল যে, দুতটি খা৩ তনাকৃত ৷ সম্রাট দুতকে
    আরবদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন ৷ দুত সং বাদ দিলেন আরবরা খাতন৷ করান ৷ হিরাক্লিয়াস
    বলেন, ইনিই এ উম্মতের বাদশাহ এবং৩ তা ৷র আবির্ভাব ঘটেছে ৷ এরপর তিনি৩ তার এক রোমীয়
    বন্ধুর কাছে একটি পত্র লিখেন, যিনি জ্ঞ ৷নে গরিমায় তার সমকক্ষ ছিলেন ৷ হিরড়াক্লিয়াস হিমৃস ভ্রমণ
    করেন এবং হিমৃস পৌছ তই তিনি তার বন্ধু থেকে পত্র গেলেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
    আবির্ভ৷ ৷ব সম্পর্কে একই অভিমত জা নতে পারলেন ৷ তারপর হিরাক্লিয়াস রোমের প্রধানদেরকে
    হিষ্স এ অবস্থিত একটি প্রাসাদে জমায়েত হবার জন্যে নির্দেশ প্রদান করেন ৷ প্রাসাদের
    দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়ারও হুকুম দিলেন ৷ তাই দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হল ৷ তারপর
    তিনি তাদের প্রতি দৃষ্টি দিলেন এবং বললেন, “হে রোমের বাসিন্দারা ! তোমরা যদি কল্যাণ ও
    মুক্তি চাও এবং তোমাদের সাম্রাজ্য বহাল রাখতে চাও৩ তাহলে এ নবীর হাতে বায়আত গ্রহণ
    কর ৷” তার এ ধরনের বক্তব্যে সবাই চীৎক৷ ৷র করে উঠল এবং বন্য গাধার ন্যায় দরজা র দিকে
    ছুটে গিয়ে দরজা বন্ধ পেল ৷ যখন হিরাক্লিয়াস৩ তাদের অসদ্ভুষ্টি লক্ষ্য করলেন এবং তাদের ঈমান
    আনা সম্পর্কে নিরাশ হলেন তখন বললেন, তাদেরকে আমার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে এস ৷ তিনি
    বললেন, এইমা ৷ত্র যা বলেছি, তা কেবল তোমাদের ধর্মে তোমরা অটল আছ কিনা তা যাচাই করার
    জন্যে ৷ হিরাক্লিয়াসের একথা শুনে সবাই তাকে সিজদ৷ করল এবং৩ তার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ
    করল ৷ আর এটাই ছিল রোমের সম্রাট হিরাক্লিয়াসের সর্বশেষ অবস্থান ৷ ইমাম বুখারী (র) তার
    কিতাবের বিভিন্ন জায়গায় এ হাদীছটি বিভিন্ন সনদে বর্ণনা করেছেন ৷ ইবন মাজা ব্যতীত অন্যান্য
    সিহাহ সৎকলকগণ আবু সুফিয়ান (রা) ও হিরাক্লিয়াসের ঘটনা বর্ণনা করেছেন ৷ আমার লিখিত
    বুখারীর ব্যাখ্যা গ্রন্থে এই সম্পর্কে আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি ৷

    ইবন লাহীআ ওরওয়া (রা)-এর সনবুদ বলেন, কুরায়শের কিছু ব্যবসায়ীবুক সাথে নিয়ে আবু
    সুফিয়ান (বা) ইবনা হ বব ব্যবসা র উদ্দেশ্যে সিবিয়ায় যান ৷ এদিকে হিরাক্লিয়াসের কাছে রাসুলুল্লাহ্
    (সা) এর আবির্ভাব খবরও পৌছল ৷৩ তাই তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্বন্ধে জনানার বজন্যে আগ্রহ প্রকাশ
    করেন এবং সিবিয়ায় তার একজন আরব শাসকের কাছে লোক প্রেরণ কবু ৱনও বলে পাঠান যে,
    আরব থেকে কিছু সং খ্যক লোক যেন সিবিয়ায পাঠাবুনা হয় যাতে ক৩বুর তিনি তাদেরবুক রাসুলুল্লাহ্
    (সা) সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তপাবুরন ৷ তিনি তখন তার কাছে ত্রিশ জন লোককে প্রেরণ
    করেন ৷ তাদের মধ্যে একজন হলেন, আবু সুফিযান (বা) ইবন হারব ৷ তারা ইলিয়ার একটি
    গির্জার হিরাক্লিয়াসের সাথে সাক্ষাত ৩করেন ৷ হিরাক্লিয়াসত তাদেরকে লক্ষ্য করে বলেন, আমি
    তোমাদের কাছে লোক প্রেরণ কবুরছিা যা বুত তোমরা আমাকে মক্কার এ ল্যেকটি সম্পর্কে বিস্তারিত
    ৎবাদ পরিবেশন কর ৷৩ তারা বলেন, লোকটি জ দুকব মিথুাক এবং বুস নবীন নয় ৷ তিনি বলেন,
    বুতামরা আমাকে বল, তোমাদের মধ্যে কে তার সম্বন্ধে বেশী জা সে ও আাীয়তা র দিক দিয়ে কে
    তার কাছে অধিকতর নিকটবর্তী ?৩ তারা বললেন, এই আবু সুফিয়ান (বা) তার চাচাবুতা ভাই ৷
    তিনি তার সাথে যুদ্ধ করেছেন ৷ যখন তারা এরুপ বলল, তখন হিরাক্লিয়াস আবু সুফিয়ান ব্যতীত
    সকলকে ঘর থেকে বুবর হয়ে যাওয়ার আদেশ দিলেন এবং আবু সুফিয়ান হবুত সংবাদ সংগ্রহের
    জন্যে তাকে তার কাছে বসালেন এবং বললেন, হে আবু সুফিয়ানা তুমি আমাকে বিস্তারিত
    সংবাদ জানাও ৷ আবু সুফিয়ান উত্তরে বললেন সে জা দৃকর ও মিথুাকষ্ট্ৰ ৷ হিবাক্লিয়াস বললেন,
    আমি চাইনা বুয তুমি তাবুক পালি দাও ৷ তবুব তুমি আমাকে তোমাদের মধ্যে তার বা শ মর্যাদা
    কী রুপ তা বল ৷ আবু সুফিয়ান (রা) বললেন, আল্লাহর শপথ সে কুরায়শ বং বুশর লোক ৷
    হিরাক্লিয়াস বললেন, তার বুদ্ধি বিবেচনা কেমন ? আবু সুফিয়ান (বা) বললেন, তার বৃদ্ধির ঘাটতি
    আমরা কখনও লক্ষ্য কবিনি ৷ হিরাক্লিয়াস বললেন, সে কি মিথ্যা শপথকারী, মিথুাক ও কাজে“-
    কর্মে প্রতারণাকারী ? আবু সুফিয়ান বললেন, না ৷ আল্লাহর শপথ, তিনি কখনও এরুপ ছিলেন
    না ৷ হিরাক্লিয়াস বললেন, সম্ভবত তিনি রাজতু বা উচ্চ পদমর্যাদা অর্জন করতে চান যা তার
    পরিবারের কেউ পুর্বে অর্জন করেছিল ? আবু সুফিয়ান বললেন, ’না ৷ এরপর হিরাক্লিয়াস বললেন,
    তােমাদের মধ্যে যারা তার অনুসরণ করে তাদের মধ্যে কি কেউ কোন দিন তোমাদের মধ্যে
    আবার ফিরে এসেছে ? তিনি বললেন, না’ ৷ হিরাফ্লিয়াস আবার বললেন, তিনি যখন ওয়াদা
    করেন তাকি তিনি কখনও ভঙ্গ করেন ? আবু সুফিয়ান বললেন, না’ ৷ তবুব আশংকা আছে এ
    চুক্তির কাবুল ওয়াদা ভঙ্গ করতে পারেন ৷ হিরাক্লিয়াস বললেন, এ চুক্তিরা কা লে তোমরা কি নিয়ে
    আশংকা করছ ? তিনি বললেন, “আমার সম্প্রদায়ের বুলাকজন৩ তার মিত্রের বিরুবুদ্ধ তাদের
    মিত্রকে সাহায্য করেছে আর তিনি ঐসময় ছিলেন মদীনায় ৷ হিরাক্লিয়াস বললেন, এভাবে তোমরা
    যদি প্রথম শুরু করে থাক তাহলে তো বুতামরাই চরম ওয়াদা ভঙ্গকারী ৷ আবু সুফিয়ান রাগান্বিত
    হলেন এবং বললেন, “তিনি আমাদের বিরুবুদ্ধ মাত্র একবার জয়লাভ করেছেন আর ঐদিন আমি
    অনৃপ ত ছিলাম, এটা ছিল বদবুরর দিন ৷ এরপর আমি তার বিরুদ্ধে দুই দুই বার তাদের ঘরে
    গিয়ে লড়েছি ৷ মরালাবুশর পেট, কান, নাক ই৩াদি চিবুরছি, বিদীর্ণ করেছি ও কতন করেছি ৷”
    হিরাক্লিয়াস বললেন, মি তাকে মিথুাক মনে কর, না স৩ তাবাদী মনে কর ? আবু সুফিয়ান
    বললেন, বরং সে মিথুাক ৷ হিরাক্লিয়াস বললেন, যদি তোমাদের মধ্যে নবী এসে থাকেন তাহলে

    আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪৬৩

    তোমরা তাকে হত্যা করো না ৷ কেননা, এ কাজটি বেশী বেশী করে করেছে ইয়াহদীরা ৷ এরপর
    আবু সুফিয়া ন তার ঘরে ফিরে না ন ৷

    এ বর্ণনায় বিরলতা পরিলক্ষিত হয় ৷ তবে এর মধ্যে অনেক তথ্য রয়েছে যা ইবন ইসহাক বা
    বুথা খারীর বর্ণনায় নেই ৷ মুসা ইবন উকবার বর্ণনা এ বর্ণনার কাছাকাছি ৷

    ইবন জারীর তার ইতিহাস গ্রন্থে মুহাম্মাদ ইবন ইসহাকের বরা ৷৩ বলেন, তিনি কিছু জ্ঞানী
    লোকের বরাতে বলেছেন, যখন দেহইয়াতু ল কালবী (বা ) রাসুলুল্লাহ (সা) এর পত্র নিয়ে
    হিরাক্লিয়াসের কাছে আগমন করলেন তখন তিনি বললেন, “আল্লাহর শ প্াথ, আমি জানি যে,
    নিশ্চয়ই তোমাদের সাথী একজন প্রেরিত নবী (সা) ৷ যার জন্যে আমরা প্রভীক্ষারত ৷ আমাদের
    কিভাবে তার বর্ণনা রয়েছে ৷ কিন্তু আমি রোমানদের পক্ষ থেকে আমার প্রাণের আশং কা করছি ৷
    তা না হলে আমি অবশ্যই তার আনুগত্যাীকার করতাম ৷ ণ্ডুাণ্ মএখন বিশপ য়াগাতিরের কাছে
    যাও এবং তার কাছে তোমাদের সাথীর কথা উল্লেখ করো ৷ আল্লাহর শপথ, রোম দেশে তিনি
    আমার চেয়ে বড় এবং তার কথা আমার কথার চাইতে তাদের কাছে বেশী গ্রহণযাোগ্য ৷ গিয়ে
    দেখ, তোমাকে তিনি কী বলেন ? রাবী বলেন, দেহইয়া (রা)৩ তার কাছেও তিনি রাসুলুল্লাহ (সা) এর
    বার্তা এবংদ দাওয়াত সম্পর্কে তাকে বিস্তারিত অবহিত করেন ৷ যাপাতির বললেন, আল্লাহর শপথ,
    তোমার সাথী একজন প্রেরিত নবী, তার গুণাবলী সম্বন্ধে আমরা অবগত রয়েছি ৷ আমাদের
    আসমানী কিভাবে আমরা তার নাম পেয়েছি ৷ত তারপর তিনি ঘরের ভিতর গেলেন ৷৩ তার পরিহিত
    কালো কাপড় ছেড়ে সাদা পোশাক পরিধান করলেন ৷ এরপর তার লাঠিটা হাতে নিলেন এবং
    রোমের একটি গির্জায় আগমন করলেন ও বললেন, “হে রোমের বাসিন্দাগণ ! আহমদ (না)-এর
    পক্ষ হতে আমাদের কাছে একটি পত্র এসেছে যার মাধ্যমে আমাদেরকে আল্লাহর দিকে আহ্বান
    করা হয়েছে ৷ আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ্ ব্যতীত কো ন মাবুদ নেই এবং আহমদ আল্লাহর
    বান্দা এবং তার রাসুল ৷” রাবী বলেন, “উপস্থিত রোমানরা তার উপর একত্রে ঝাপিয়ে পড়ল,
    তাকে মারতে লাগল, এমনকি তারা তাকে হত্যা করে ফেলল ৷ এরপর দেহইয়া কালবী (রা)
    হিরাক্লিয়াসের কাছে প্রত্যাবর্তন করেন ও তাকে এ বিষয়ে অবহিত করেন ৷ হিরাক্লিয়াস বললেন,
    দেখুন, আপনাকেও বলেছি যে, তারা আমার প্রাণ নাশ করে ফেলবে তাদের এ আশংকা করছি ৷
    য়াগাতির তাদের কাছে আমার চাইতে অধিক শ্রদ্ধাবান ছিলেন এবং আমার কথার চাইতে তার
    কথার দাম তাদের কাছে বেশী ছিল ৷

    তাবারানী (র) দেহ্ইয়া কালবী (রা)-এর বরাতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
    “রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে একটি পত্রসহ রোমের সম্রাটের কাছে প্রেরণ করেন ৷ আমি দরজায়
    দাড়িয়ে দারওয়ানকে বললাম, আল্লাহ্র রাসুলের দুতের জন্যে অনুমতি প্রার্থনা কর ৷ সে সম্রাটের
    কাছে ভিতরে গেল এবং সংবাদ দিল যে, প্রাসাদের দরজ্যয় এক ব্যক্তি র্দা ড়িয়ে আছেন এবং তিনি

    তাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দুত বলে পরিচয় দিচ্ছেন ৷ এ সং বাদ শুনে ভিতরের লোকজন ভীত

    হয়ে পড়ল ৷ সম্র ট বললেন, তাকে ভিতরে আসতে দাও ৷’ আমাকে ভিতরে নেয়া হল ৷ তার
    কাছে তার সভাসদবর্গহাযির ছিলেন ৷ আমি তার কাছে পত্রটি সমর্পণ করলাম ৷ পত্রে লিখা ছিল ং
    পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহর নামে ঘুহাষ্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ হতে রোমের শাসনকতা কায়সার এর

    প্রতি ৷ তখন সম্রাটের নীলাভ চোখ বিশিষ্ট পৌর বর্ণের জনৈক ভাতিজা চীৎকার দিয়ে বলতে
    লাগল, আজকে এ পত্রটি পড়বেন না; কেননা, পত্র প্রেরক পত্রের শুরুতে নিজের নাম উল্লেখ
    করেছে ৷ আর রোমের সম্রাট কথাটি না লিখে রোমের শাসনকর্তা লিখা হয়েছে ৷ রাবী বলেন,
    “পরে তিনি পত্রটি পড়লেন এবং যখন পত্র পড়া শেষ হল তখন তিনি সভাসদবর্গকে বের হয়ে
    যেতে বললেন ৷ তারা বের হয়ে গেলে আমার কাছে লোক প্রেরণ করলেন ৷ আমি প্রবেশ
    করলাম ৷ আমাকে তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করলেন আর আমি তাকে বিস্তারিত সংবাদ দিলাম ৷ এরপর
    তিনি প্রধান বিশপের কাছে লোক প্রেরণ করেন ৷ তিনি আসলেন ৷ তিনি ছিলেন তাদের
    পরামর্শদাতা ৷ তার কথা ও পরামর্শ তারা মান্য করতো ৷ যখন তিনি পত্রঢি পড়লেন তখন তিনি
    বললেন, আল্লাহ্র শপথ, তিনিও ঐ ব্যক্তি যার সম্বন্ধে মুসা ও ঈসা (আ) অমাদেরকে সুসমাচার
    দিয়ে গেছেন ৷ আর যার জন্যে আমরা প্রতীক্ষারত ৷ কায়সার বললেন, তাহলে আপনি আমাদেরকে
    কী নির্দেশ দিচ্ছেন ? বিশপ বললেন, তবে আ ত তাকে সত্য বলে ঘিশ্বাস্ করি এবং আমি তার
    অনুসারী ৷ কায়সার বললেন, আমিও জানি যে, তিনি এরুপই ৷ তবে আমি তা করতে পারছি না ৷
    যদি আমি তা করি, তাহলে আমার রাজত্ব চলে যাবে এবং রোমানরা আমাকে হত্যা করবে ৷

    মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক, থালিদ ইবন ইয়াসারের বরাতে সিরিয়ার একজন প্রবীণ অধিবাসী হতে
    বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সম্বন্ধে হিরাক্লিয়াসের কাছে যখন সংবাদ পৌছল,
    তখন তিনি সিরিয়া ভুমি থেকে কনষ্টান্টিনিপলে চলে যেতে মনস্থ করেন ৷ তার প্রাক্কালে রোমের
    বাসিন্দাদের জমায়েত করে তিনি বললেন, “হে রোমের বাসিন্দার৷ ! আমি তোমাদের কাছে একটি
    বিষয় উপস্থাপন করছি ৷ তোমরা আরো মনোযোগ সহকারে শোন ! তারা বলল, “বলুন, তা কী ?”
    তিনি বললেন, আল্লাহ্র শপথ, তোমরা জান যে , ইনি একজন প্রেরিত নবী ৷ আমাদের কাছে তার
    যে সমস্ত গুণ বর্ণনা করা হয়েছে এগুলোর মাধ্যমে আমরা তাকে চিনতে পেরেছি ৷ চল, আমরা
    সকলে তার অনুসরণ করি , তাহলে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে শান্তি লাভ করব ৷” তারা বলল,
    আমরা আররদের অধীনস্থ হয়ে পড়ব অথচ আমাদের দেশ তাদের চেয়ে বড় দেশ এবং জনসংখ্যা
    তাদের থেকে অধিক আর আমাদের শহর তাদের থেকে অনেক দুরবর্তী ৷ তিনি বললেন, তা’হলে
    চল, আমরা তাকে বার্ষিক জিযিয়া কর প্রদান করি তাহলে তার আক্রোশহ্রাস পাবে ৷ আর এর
    বিনিময়ে তার আক্রমণ থেকে আমরা শান্তিতে থাকতে পারব ৷ তারা বলল, “আমরা আররদেরকে
    খারাজ বা কর দেব এবং আমাদের থেকে তা তারা গ্রহণ করবে অথচ আমরা তাদের চেয়ে
    জনসংখ্যার দিক দিয়ে অধিক, দেশ হিসাবে তাদের দেশ থেকে বড় এবং শহর হিসেবে অধিক
    সুরক্ষিত ? না, তা হতে পারে না ৷ আল্লাহর শপথ, আমরা কোন দিনও এরুপ করব না ৷”
    হিরাক্লিয়াস বললেন, তা’হলে চল, আমরা তার সাথে এ মর্মে সন্ধি করি যে, আমরা মুহাম্মাদ
    (না)-কে (দক্ষিণ সিরিয়া) ভুখণ্ড ছেড়ে দেব এবং তিনি আমাদেরকে শামে (উক্ত সিরিয়ার)
    থাকতে দেবেন ৷ রাবী বলেন, ঐসময়কার সিরিয়ার অন্তর্ভুক্ত ছিল ফিলিস্তীন, জর্দান, দামেস্ক,
    হিম্স ও সীমান্তবর্তী গিরিপথের এ পার ৷ গিরিপথের বাইরের অংশ ছিল তখনকার শাম ৷ এরপর
    তারা বলল, আমরা মুহাম্মাদ (না)-কে সিরিয়ার ভুখণ্ড ছেড়ে দেব অথচ আপনি জানেন সিরিয়ার
    ভুখণ্ডঢি শামেরই অংশ ৷ আমরা এটা কোন দিনও ছাড়বাে না ৷ যখন তারা তার কাছে অস্বীকৃতি
    জানাল, তখন তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ, তোমরা তোমাদের শহরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে

    নিজেদেরকে সফলকাম বলে ভাবতে পসন্দ করছো, এর বেশি আর কিছু নয় ৷ রাবী বলেন,
    “এরপর তিনি তার একটি খচ্চরে সওয়ার হয়ে রওয়ানা দিলেন ৷ সীমান্ত গিরিপথের নিকটে এসে
    তিনি সিবিয়৷ ভুখণ্ডের দিকে মুখ করে বললেন৷ শু৷ ৷ হে সিবিয়৷ ভুমি ! তোমার উপর রহমত বর্ধিত হো তোমাকে বিদায়ী সালাম
    এরপর দ্রুত চলতে লাগলেন এবং কনষ্ট৷ ন্টিনিপা ৷ল শহরে প্রবেশ করলেন ৷ আল্লাহই অধিক জ্ঞা ত

    সিরিয়ার আরব খৃক্টান শাসনকর্তার নিকট পত্র প্রেরণ

    ইবন ইসহাক বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) বনু আসাদ ইবন খুযায়মা গোতত্রের শুজা ইবন
    ওছারকে পত্র সহ দামেস্কের শাসনকর্তা মুনযির ইবন হাবিছ ইবন আবু শুমর গাসৃসানীর কাছে
    প্রেরণ করেন ৷

    ওয়াকিদী বলেন, পত্রটি ছিল এরুপ : যে হিদায়াতের পথ অনুসরণ করবে ও ঈমান গ্রহণ
    করবে তার প্রতি সালাম ৷ আমি তোমাকে আহ্বান করছি তুমি যেন এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস
    স্থাপন কর, যার কোন অংশীদার নেই ৷ তাহলে তোমার রাজ্য তোমার কাছেই থাকবে ৷ শুজা
    তার কাছে গেলেন এবং পত্রটি পড়ে শুনালেন ৷ তখন সে বলল, কে আমার রাজ্য ছিনিয়ে নেবে ?
    আমি অচিরেই তার দিকে রওয়ানা দিচ্ছি ৷

    পারস্য সম্রাট কিসৃরার কাছে পত্র প্রেরণ

    ইমাম বুখারী (র) ইবন আব্বাস (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    তার পত্রসহ এক ব্যক্তিকে কিসৃরার কাছে প্রেরণ করেন এবং আদেশ করেন যেন পত্রটি বাহরায়-
    নের শাসনকর্তাকে দেওয়া হয় ৷ বাহরায়নের শাসনকর্তা পত্রটি কিসৃরার কাছে হস্তান্তর করেন ৷
    যখন কিসৃরা পত্রটি পড়ল সে পত্রটি ছিড়ে ফেলে ৷ রাবী বলেন, সম্ভবত ইবনুল মুস৷ ৷ইয়িব বলেন,
    রাসুলুল্লাহ (সা)৩ ৷ তাদের প্রতি অভিশাপ দিয়েছিলেন, তারা যেন একেবারে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় ৷

    আবদুল্লাহ ইবন ওহব আবদুর রহমান ইবন আবদুল কা ৷য়ীর বরাতে বলেন, “একদিন
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) খুতবা দেয়ার জন্যে মিম্বরে দীড়ালেন ৷ তারপর আল্লাহর প্রশংসা করলেন,
    তাশাহ্হুদ পাঠ করলেন এবং বললেন, অনারব দেশের রাজাদের কাছে আমি তোমাদের কাউকে
    কাউকে পত্র সহকারে প্রেরণ করতে চাই ৷ তোমরা আমার সাথে এ ব্যাপারে কোন মতবিরোধ
    করবেনা যেরুপ বনু ইসরাঈল ঈসা ইবন মবিয়ম (আ)-এর সাথে করে ছিল ৷ মুহাজিরগণ উত্তরে
    বললেন, হে আল্লাহর রাসুল ! আমরা কখনও আপনার সাথে কোন ব্যাপারে মতবিরোধ করব না ৷
    সুতরাং আপনি আমাদেরকে আদেশ করুন এবং প্রেরণ করুন ৷ রাসুলুল্লাহ (সা) তখন সুজা ইবন
    ওহব (রা) কে কিসৃরার কাছে প্রেরণ করেন ৷ কিসৃরা তার দরবার হল সাজানাের জন্যে হুকুম
    দিল ৷৩ তারপর পারস্যের প্রধানদেরকে দরবারে প্রবেশের অনুমতি দিল ৷ এরপর সে সুজা ৷ইবন
    ওহবকে প্রবেশের অনুমতি দিল ৷ তিনি প্রবেশ করার পর তার থেকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পত্র
    হস্তগত করার জন্যে কিসৃরা অন্য একজনকে আদেশ দিল; কিন্তু সুজা ইবন ওহব (বা ) বললেন,
    না আমি অন্যের হাতে পত্র দেব না ৷ আমি শুধু আপনার হাতেই অর্পণ ৷করবাে, যেমনটি
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে আদেশ করেছেন ৷ কিসৃরা তখন বলল, একে আমার কাছে নিয়ে

    এসো ৷ ’ তিনি নিকটে গেলেন এবং তাকে পত্রটি হস্তান্তর করলেন ৷ তারপর কিসৃরা হীরাহবাসী
    তীর এক সচিবকে ডাকলেন ৷ সে পত্রটি পড়ে শুনাল ৷ পত্রে লিখা ছিল : আবদৃল্লাহ্র পুত্র ও
    আল্লাহর রাসুল মুহাম্মাদ এর পক্ষ হতে পারস্যের শাসনকর্তা কিসৃরার নিকট ৷ রাবী বলেন, পত্রের
    শুরুতে রড়াসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নাম দেখে সে রাগান্বিত হল, পর্জে উঠল এবং পত্রের মধ্যে কী আছে
    তা জানার পুর্বেই পত্রটি ছিড়ে ফেলল এবং সুজা (রা)-কে দরবার থেকে বের করে দেওয়ার
    হুকুম দিল ৷ তিনি এরুপ অবস্থা লক্ষ্য করে সাওয়ারী চড়ে চলে গেলেন ৷ তারপর তিনি বলেন,
    আল্লাহ্র শপথ, আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর পত্র পৌছে দেওয়ার পর আমার আর কোন ভাবনা রইল
    না যে, আমি কোন পথে যাবো ৷ রাবী বলেন, কিসৃরার রাগ পড়ে গেলে সুজাকে ডাকার জন্য সে
    লোক প্রেরণ করে; কিন্তু তাকে আর খুজে পাওয়া যায়নি ৷ হীরা নামক ন্থান পর্যন্ত লোক পাঠানো
    হল; কিন্তু তিনি তা অতিক্রম করে চলে গিয়েছিলেন ৷ সুজা যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর কাছে
    আগমন করেন তখন কিস্রার দরবারে সংঘটিত ঘটনা সম্পর্কে রাসৃলুল্লাহ্ (না)-কে অবগত
    করলেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর পত্র ছিড়ে ফেলার কথাটিও তিনি উঘ্নে;ক্ট্রাখ করলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্
    (সা) বললেন, কিসৃরা তার সাম্রাজ্যকেই টুকরো টুকরো করে দিল ৷

    মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক — — আবুসালামা (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্
    (সা) আবদুল্লাহ ইবন হুযাফাকে তার পত্র সহকারে কিসরার নিকট প্রেরণ করেন ৷ যে তা পাঠ
    করে ছিড়ে ফেলে ৷ এ খবর যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর কাছে পৌছল তখন তিনি বললেন, “ সে
    তার নিজের সাম্রাজ্যকেই ছিড়ে ফেলেছে ৷ ”

    ইবন জারীর যায়দ ইবন আবু হাবীব থেকে বণ্নাি করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্
    (সা) আবদুল্লাহ ইবন হুযাফা ইবন কায়স ইবন আদী ইবন সাঈদ ইবন সাহাম (রা ) কে তার পত্র
    সহকারে পারস্য সম্রাট কিসৃরা ইবন হুরমুয এর কাছে প্রেরণ করেন ৷ তাতে লিখা ছিল :

    পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহ্র নামে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সা) হতে পারস্য সম্রাট কিস্রার
    প্রতি ৷ যে হিদায়াতের পথ অনুসরণ করে, আল্লাহ্ ও রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে,
    সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন মা’বুদ নেই ৷ তিনি এক, তার কোন অংশীদার নেই ৷
    মুহাম্মাদ (সা) তার বান্দা ও রাসুল, তার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক ৷ আমি তোমাকে আল্লাহ্র প্রতি
    আহ্বান করছি, আমি আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুল সমস্ত জনগণের প্রতি , যাতে আমি জীবিতকে ভয়
    দেখাতে পারি এবং কাফিরদের উপর আল্লাহ্ তাআলার বাণী বাস্তবে পরিণত হয় ৷ যদি তুমি
    ইসলাম কবুল কর শান্তি পাবে ৷ আর যদি অস্বীকার কর তাহলে অগ্নিপুজকদের পাপ তোমার উপর
    বর্তাবে ৷ রাবী বলেন, যখন সম্রাট পত্রটি পড়ল অমনি ছিড়ে ফেলল ৷ আর বলল, যে আমার দাস
    হয়ে আমার উদ্দেশ্যে এভাবে লিখে ? তারপর সম্রাট ইয়ামানে নিয়োজিত তার প্রতিনিধি বাযামকে
    পত্র লিখে হুকুম দিল “হিজাযের লোকটির কাছে দুইজন শক্তিশালী লোককে পাঠাও , বাবা তাকে

    ধরে নিয়ে আসবে ৷ ” এরপর বাযাম তার হিসাব রক্ষক ও সচিবকে পারস্যের পত্র সহকারে প্রেরণ
    করলো এবং তার সাথে খরথুস্রা নামী পারস্যের একটি লোককে প্রেরণ করলো ৷ তাদের
    দৃইজনের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে একটি পত্র লিখে যার মধ্যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে এ
    দুজনের সাথে কিসরা সম্রাটের কাছে আগমন করার নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ অন্যদিকে বাযাম আবু
    যুওয়াহকে বলেছিলেন, ঐ ব্যক্তির শহরে তুমি আগমন করবে তার সাথে তুমি কথা বলবে এবং
    তার সম্বন্ধে বিস্তারিত খবর নিয়ে আসবে ৷ ইতে ৷মধ্যে পুর্বের প্রেরিত দু ব্যক্তি বের হয়ে গেল এবং
    ন্৷ তায়েভ্রুফ গিয়ে পৌছল ৷ তারা তা ৷য়েফের ভুখণ্ডে কুরায়শের এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করল এবং
    তাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল ৷ সে বলল যে, তিনি মদীনায় আছেন ৷ তায়েফবাসী
    ও কুরায়ণের উল্লিখিত ব্যক্তি আগত্তুক দুই জনকে পেয়ে খুবই খুশী হল এবং একে অন্যকে
    বলতে লাগল, শুভ সংবাদ গ্রহণ কর, কেননা, সম্রাট কিসরা তাকে লক্ষষ্ বন্তুতে পরিণত করেছেন,
    এটা ই ঐ ব্যক্তির শায়েস্তা হবার জন্যে যথেষ্ট ৷ উক্ত দুই ব্যক্তি তায়েফ থেকে বের হয়ে মদীনায়
    রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর কাছে আগমন করল ৷ আবু যুওয়াহ রাসুচ্পুহু; ৷ ন্ ( সা )-এর সাথে কথা বলল
    এবংস ৎবাদ দিল যে, শাহানশা হ রাজ৷ ৷ধিরাজ কিসরা শাসনকতা বাবামের কাছে পত্র লিখেছেন ৷
    পত্রে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছেত তিনি যেন আপনার কাছে এমন কোন ব্যক্তিকে প্রেরণ করেন
    যে আপনাকে নিয়েত ৷র কাছে যাবে ৷ আর আমাকে পাঠানো হয়েছে যেন আপনি আমার সাথে
    চলেন ৷ যদি আপনি তা করেন তাহলে তিনি সম্রাটের কাছে পত্র লিখবেন যাতে করে আপনার
    উপকা ৷র হয় ৷ আর এটা ই অ পানার মঙ্গলের জন্যে যথেষ্ট ৷ অন্যদিকে যদি আপনি যেতে অস্বীকার
    করেন, তাহলে আপনি ইতোমধ্যে জেনে নিয়েছেন যে এটা হবে আপনার আপনার সম্প্রদায় ও
    দেশের জন্যে মারাত্মক বিপর্যয় ও ধ্বংসের কারণ ৷ তারা দু’ জন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে
    আগমন করলেন ৷ তারা দুজনই দাড়ি মুণ্ডিত ছিল এবং বড় গৌফধারী ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    তাদের দিকে বিরুপ দৃষ্টিতে দেখলেন এবং বললেন, সর্বনাশ, কে তোমাদেরকে এরুপ করতে
    বলেছে ?” তারা বলল , “আমাদের মনিব কিসরা আমাদেরকে এরুপ করতে বলেছেন ৷ ”
    রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, “কিন্তু আমার প্রতিপালক দাড়ি বৃদ্ধি করতে ও পৌফ ছুাটতে হুকুম
    দিয়েছেন ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তে ৷মরা ফিরে যাও আপামীকাল আবার এসে৷ ৷ ”
    রাবী বলেন, আসমান থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে সংবাদ আসল যে, আল্লাহ তা জানা
    কিসৃরার বিরুদ্ধে তার ছেলে শিরওয়েহকে আধিপত্য দা ন করেছেন ৷ সে তার পিতাকে অমুক
    মাসে ও অমুক রাতে হত্যা করেছে ৷ রাবী বলেন, তাদের দৃ জনকে ডেকে এ সংবাদটি দিলেন ৷
    তারা বললো, “আপনি কি জানেন আপনি কী বলছেন ? আমরা আপনার প্ৰতিশোধ (নব, তবে
    হালকাভাবে ৷ আমরা আপনার এ মন্তব্যের ব্যাপারে কি শাসনকর্তা বাযামকে অবহিত করবো
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হীা তোমরা আমার পক্ষ থেকে তাকে এ সম্পর্কে জানিয়ে দাও ৷ আর
    তাকে তোমরা বলে দাও আমার প্রচারিত ধর্ম ও আধিপত্য কিসরা ৷র মত খ্যাতি লাভ করবে এবং
    পৃথিবীর আনাচে-কানাচে পৌছবে ৷ আবার তোমরা তাকে বল, যদি তুমি ইসলাম কবুল কর
    তাহলে তোমার রাজত্ব ও আধিপতাণ্ তামার হাতেই থাকতে দেওয়া হবে ৷ এরপর খরখুসরা কে
    একটি স্বর্ণারীপ্য খচিত কমরবন্দ দেওয়া হল আর তা তিনি কোন এক রাজার পক্ষ থেকে

    ১ টীকা ও বর্ণনান্তরে বাবুয়েহ বা বাবুইয়া আছে ৷ শ্সম্পাদক

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শাসকদের কাছে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর পত্র ও দূত প্রেরণ Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.