Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » গযওয়া ও বনু কুরায়যা

গযওয়া ও বনু কুরায়যা

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • গায্ওয়া বনু কুরায়যা

    ইসলামের দুশমনদের কুফরী রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করা এবং
    খন্দকের যুদ্ধে কাফির দলের সঙ্গে সহযােগি৩া সহমর্মিতার শাস্তিারুপ আল্লাহ তা আলা
    তাদেরকে পরকালের কঠোর শ্াান্তি ছা ড়াও দুনিয়ার জীবনেই মর্মভুদা শ্াণ্ডেস্তি নিপতিত করেছেন ৷
    কাফির দলের সঙ্গে৩ তাদের সহযোগিতা কোন কাজেই আসেনি ৷ বরং তারা আল্লাহ্ ও রাসুলুল্লাহ্
    (সা ) এর রোষানলে পতিত হয় এবং দুনিয়া ও আখিরাতের ক্ষয়-ক্ষতি ও লাঞ্চুনার সম্মুখীন হয় ৷ এ
    প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ বলেন :

    আল্লাহ কাফিরদেরকে ক্রুদ্ধাবন্থায় ফিরিয়ে দিলেন, পারা কোন কল্যাণ লাভ করেনি ৷ যুদ্ধে
    মু’মিনদের জন্যে আল্লাহ্ই যথেষ্ট ৷ অাল্লাহ্ সর্ব শক্তিমান ৷ পবা ক্রমশালী ৷ কিতাবীদের মধ্যে যারা
    ওদেরকে সাহায্য করছিল তাদেরকে তিনি তাদের দুর্গ ৫ধ্গ্লুক অবতরণ করালেন এবং তাদের
    অম্ভরে ভীতি সঞ্চার করলেন, এখন তোমরা তাদের কতককে হত্যা করছ আর কতককে করছ
    বন্দী ৷ আর তিনি (আল্লাহ্) ণ্তামাদেরকে অধিকারী করেছেন৩ তাদের ভুমি ঘর-বাড়ী, ধন-সম্পদ
    এবং এমন ভুমির, যাতে তোমরা এখনও পদার্পন করনি ৷ অাল্লাহ্ সব বিষয়ে সর্বশ্াক্তিমান ৷ (৩৩-
    আহযাব : ২৫-২৭) ৷

    বুখারী (র) মুহাম্মাদ ইবন মুকা৩াতিল আবদুল্লাহ (ইবন উমর) সুত্রে বর্ণনা করে বলেন :
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) যুদ্ধ-জিহাদ এবং হজ্জ ও উমরা থেকে প্রত্যাবর্তন করে এ দু আ পাঠ করতেন০

    আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই ৷ তিনি একক ৷ তার কো ন শরীক নেই ৷ রাজত্ব তারই তিনিই
    ৎসার মালিক ৷ তিনি সমস্ত কিছুর উপর সব শক্তিমান ৷ আমরা প্র৩াবর্জাকারী তাওবাকারী,
    বরের ইবাদতকারী ও সিজদাকারী এবং তারই প্ৰশ ৎসাকারী ৷ আল্লাহ্ তার ওয়াদা সত্য করে

    দেখিয়েছেন তার বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং তিনি একাই সম্মিলিত বাহিনীকে পর্বুদস্ত
    করেছেন ৷

    ঘুহাম্মাদ ইবন ইসহাক (র) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) প্রত্যুষে খন্দক যুদ্ধ থেকে

    মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন ৷ আর মুসলমানরা অস্ত্রশস্ত্র খুলে ফেলেন ৷ ইমাম যুহুরী (রা-এর
    বর্ণনামতে যুহরের সময় হযরত জিবরাঈল (আ) রেশমী বত্রের পাগড়ি পড়ে খচ্চরের পিঠে সওয়ার
    হয়ে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট এলেন ৷ খচ্চরটির পিঠে একটি মোটা রেশমী চাদর বিছানাে ছিল ৷
    তিনি বললেন : ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ ৷ আপনি কি হাতিয়ার খুলে ফেলেছেন ? রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    ইতিবাচক জবাব দিলে জিবৃরাঈল (আ) বললেন, ফেরেশতারাতাে এখনো অস্ত্র খুলেননি ৷ আর
    আমি ফিরে এসেছি কাফির সম্প্রদায়ের পশ্চাদ্ধাবনের জন্য ৷ হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ তাআলা তো
    আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন বনু কুরায়যার উদ্দেশ্যে অভিযানে বের হতে ৷ আর আমিও তাদের
    দিকে ধাবিত হওয়ার মনস্থ করেছি ৷ আমি তাদের অভ্যন্তরে ফটিল ধরাবাে ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (মা)
    একজন ঘোষককে লোকজনের মধ্যে ঘোষণা প্রচার করার নির্দেশ দান করেন : যে এ ঘোষণা
    শুনছে এবং অনুগত রয়েছে এমন ব্যক্তিরা যেন বনুকুরায়যার জনপদে না পৌছে আসরের সালাত
    আদায় না করে ৷ ইবন হিশামের বর্ণনা মতে (এ সময়) রাসুলুল্লাহ (সা) আব্দুল্লাহ ইবন উম্মে
    মাকতুমকে মদীনার প্রশাসক নিযুক্ত করেন ৷ আর ইমাম বুখারী (র) আব্দুল্লাহ ইবন আবু শায়রা
    সুত্রে হযরত আইশা (রা) এর বরাতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলছেন :

    রাসুলুল্লাহ্ (সা) খন্দক যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করে অস্ত্র খুলে গোসল করার সাথে সাথে
    জিবৃরাঈল (আ) তার নিকট আগমন করে বললেন আপনি অস্ত্র খুশুৰ্৷ ফেলেছেন ? আল্লাহ্র
    কসম! আমরা এখনো অস্ত্র খুলিনি ৷ আপনি ওদের উদ্দেশে বের হরুয়×পভুন৷ তিনি জানতে
    চাইলেন, কােনৃ দিকে ? জিবৃরাইল (আ) বললেন, এদিকে ৷ একথা বলে তিনি কুরায়যার প্ৰতি
    ইঙ্গিত করলেন ৷ তখন নবী করীম (সা) বের হয়ে পড়লেন ৷ ইমাম আহমদ (র) হাসান ও আইশা
    (রা) সুত্রে বণ্নাি করেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আহযাব যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবতনিঃ করে গোসল করার জন্য
    গোসল থানায় প্রবেশ করলে তার নিকট হযরত জিবৃরাঈল (আ) আগমন করলেন ৷ দরজার ফাক
    দিয়ে আমি জিবৃরাঈল (আ) কে দেখতে পইি যে, তার মাথায় ধুলাবালি লেগে আছে ৷ তখন তিনি
    বললেন, হে মুহাম্মাদ ! আপনারা কি অস্ত্র খুলে রেখেছেন ? আমরাতো এখনো অস্ত্র খুলিনি ৷ আপনি
    দ্রুত বনু কুম্মায়যা অভিমুখে রওয়ানা করুন ৷

    ইমাম বুখারী (র) মুসা , জারীর আনাস ইবন মালিক সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন বনু কুরড়ায়যা অভিমুখে রওয়ানা করেন তখন বনু গনম এর গলিতে জিবৃরাঈল
    (আ) এর সওয়ারীর (চলাচলের ফলে উখিত) ধুলাবালি যেন আমি নিজ চক্ষে অবলোকন করছি ৷
    অতঃপর ইমাম বুখারী (র) আব্দুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ — — ইবন উমর (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন
    যে, আহযাব যুদ্ধের দিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেন : বনু কুরায়যার এলাকায় না পৌছে কেউ যেন
    আসরের সালাত আদায় না করে ৷ পথে কারো কারো আসরের সালাতের সময় হয়ে যায় ৷ তখন
    কেউ কেউ বললেন, আমরা বনুকুরড়ায়যায় জনপদে না পৌছে আসরের সালাত আদায় করবো না ৷
    আবার কেউ কেউ বললো, বরং আমরা সালাত আদায় করে নেবাে ৷ আমরা সালাত আদায় না করি
    এটা রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) এর উদ্দেশ্য ছিল না, এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে আলোচনা করা
    হলে তিনি কারো ক্ষেত্রেই অসন্তুষ্টি ব্যক্ত করলেন না ৷ মুসলিম (র) ও আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মাদ
    ইবন আসমা সুত্রে অনুরুপ বনাি করেছেন ৷ ইমাম বায়হড়াকী হাফিয আবু আবদুল্লাহ কাযী আবু
    বকর আহমদ ইবন হাসান এর সুত্র উল্লেখ করেন : আবুল আব্বাস মুহাম্মাদ ইবন কাব ইবন

    মালিক তার চাচা উবায়দৃল্লাহর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন : রাসুলুল্পাহ্ (সা) আহযাব এর অনুসন্ধান শেষে
    ফিরে এসে লৌহ বর্য খুলে ফেলে গোসল করলে হযরত জিবৃরাঈল (আ) এসে বললেন : আপনি
    (তা দেখছি যুদ্ধে ক্ষাম্ভ দিয়েছেন ৷ আমি দেখতে পাচ্ছি যে, আপনি লৌহ বর্ম খুলে ফেলেছেন ৷
    আমরা তো এখনো তা থুলিনি, বর্ণনাকারী বলেন যে, একথা শুনে রাসুলুল্লাহ্ (সা) ব্যস্ত হয়ে উঠেন
    এবং সকলকে এ মর্মে তাগিদ দেন যে, তারা যেন বনু কুরায়যার জনপদে পৌছেই আসবের
    সালাত আদায় করেন ৷ রাবী বলেন যে, সকলেই অস্ত্র ধারণ করেন এবং বনু কুরায়যার জনপদে
    পৌছার পুর্বেই সুর্য অস্তমিত হয় ৷ সুযস্তি কালে লোকদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয় ৷ তাদের
    একদল বললেন যে, রাসুলুল্পাহ্ (সা) আমাদেরকে তাকীদ করেছেন যে, আমরা যেন বনুকুরায়যার
    জনপদে না পৌছে আসরের সালাত আদায় না করি ৷ তাই আমরা তার তাকীদ অনুযায়ী কাজ
    করেছি ৷ সুতরাং নামায আদায় না করায় আমাদের কোন গুনড়াহ হবে না ৷ সাওয়াবের আশায়
    একদল সালাত আদায় করেন আর অপর দল সুযস্তি পর্যন্ত নামায আদায়ে ক্ষাম্ভ থাকেন ৷ সুতরাং
    তারা সাওয়াবের আশায় বনুকুরায়যার জনপদে পৌছে সালাত অর্বদায় করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এ
    দু’দলের কাউকেই ভর্ধসনা করেননি ৷ বায়হাকী (র) আবদুল্লাহ আল-উমরী সুত্রে আইশার
    বরাতে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার কাছে ছিলেন ৷ এমন সময় জনৈক ব্যক্তি আগমন
    করে তাকে সালাম দিলে তিনি ঘাবড়ে গিয়ে দাড়িয়ে যান ৷ আমিও রাসুল (না)-এর সাথে সাথে
    দাড়িয়ে যাই ৷ দেখতে পাই যে, তিনি (আগভুকব্যক্তি) দিহ্ইয়া আল-কালবী ৷ রাবী বলেন,
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন বললেন, ইনি জিবৃরাঈল (আ ৷ বনু কৃরায়যা অভিমুখে মাত্রা করার জন্যে
    তিনি আমাকে বলে গেলেন ৷ জিবৃরাঈল (আ) বলক্টোন, আপনারা তো অস্ত্র খুলে ফেলেছেন ৷
    কিন্তু আমরা এখনো অস্ত্র খুলিনি ৷ মুশরিকদের পচকািবন করে আমরা হাম্রাউল আসাদ পর্যন্ত
    গিয়েছিলাম ৷ আর এটা সে সময়ের কথা যখন র লুল্লাহ্ (সা) খন্দক যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন
    করেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) ব্যতিব্যস্ত হয়ে তার সাহাবীগণকে বলেন যে, আমি তােমাদেরকে
    জোর নির্দেশ দিচ্ছি যে, তোমরা বনুকুরায়যার জনপদে না পৌছে আসরের সালাত আদায় করবে
    না ৷ তারা সেখানে পৌছার পুর্বেই সুর্য অস্ত যায় ৷ তখন একদল বললো যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
    এটা অভিপ্রেত ছিল না যে, তোমরা নামায ত্যাগ করবে; কাজেই তোমরা পথেই (সময়মত)
    নামায আদায় করে নাও ৷ অপর দল বলে , আল্লাহর শপথ, আমরা রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নির্দেশের
    উপর কঠােরভাবে অটল রয়েছি ৷ কাজেই আমাদের কোন গুনাহ হবে না ৷ তাই ছাওয়ড়াব লাভের
    আশায় একদল সালাত আদায় করেন আর সাওয়াবের প্ৰতাশ্যেয় অপর দল সালাত আদায়ে বিরত
    থাকেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এ দুদলের কোন দলের প্রতিই কঠোরতা দেখড়াননি ৷ আল্লাহর নবী বের
    হয়ে বনুকুরায়যার এক দল লোকের সমাবেশের নিকট দিয়ে অতিক্রমকালে জিজ্ঞেস করলেন এর
    মধ্যে তোমাদের নিকট দিয়ে কেউ কি অতিক্রম করেছে ? তারা বললো, এবল্টা খচ্চরে চড়ে
    দিহ্ইয়া কালবী এ দিক দিয়ে গিয়েছেন ৷ খচ্চরটির পিঠে একটা রেশমী চাদর বিছানো ছিল ৷ তিনি
    বললেন, ইনি ছিলেন জিবৃরাঈল (আ) ৷ বনু কুরায়যাকে ভীত-সন্ত্রস্ত করার জন্য তিনি প্রেরিত
    হয়েছেন ৷ নবী করীম (সা) তাদেরকে অবরোধ করে ফেললেন এবং সাহাবীগণকে নির্দেশ দিলেন
    তারা যেন তাকে ঘিরে শত্রু থেকে আড়াল করে রাখেন ৷ যাতে তিনি নিজেই তাদের কথা শুনতে
    পান ৷ নবী করীম (সা) তাদেরকে ডাক দিয়ে বললেন ; হে শুকর আর বানরের সমগােত্রীয়রা ৷

    তারা বললো : হে আবুল কাসিম ! তুমি তো কোন দিন অশ্লীল ভাষী ছিলে না ৷ মুসলমানরা বনু
    কুরায়যাকে অবরোধ করে রাখেন ৷ অবশেষে তারা হযরত সাদ ইবন মু“আযকে সালিশ মানতে
    রাযী হল ৷ তিনি ছিলেন বনুকুরায়যার মিত্র ৷ সাদ ইবন মুআঘৃ (রা) তাদের ব্যাপারে রায় দেন যে ,
    তাদের যুদ্ধক্ষম পুরুষদেরকে হত্যা করা হোক আর নারী এবং শিশুদেরকে বন্দী করা হোক ৷
    আইশা (রা) প্রমুখ থেকে বিভিন্ন উত্তম সনদে হড়াদীছটি বর্ণিত হয়েছে ৷

    আসরের নামায আদায়ের ব্যাপারে কাদের মত সঠিক ছিল ৷ এ ব্যাপারে আলিমগণের মধ্যে
    মতভেদ রয়েছে ৷ তবে সর্বসম্মত অভিমত এইঘে, উভয় পক্ষই ছাওযাব এবং মাগফিরাত পারেন ৷
    তাদের মধ্যে কোন পক্ষই ভর্ভুসনীয় নন ৷

    তবে একদল আলিম বলেন যে, সে দিন যারা নির্ধারিত সময়ের পর যনু কুরায়যার জনপদে
    গিয়ে সালাত আদায় করেছিলেন তারাই সঠিক কাজটি করেছিলেন ৷ কারণ, সে দিন নামায
    বিলম্বিত করার নির্দেশ ছিল এবল্টা বিশেষ নির্দেশ ৷ কাজেই শরীআত অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে
    নামায আদায় করার সাধারণ নির্দেশের উপর এ বিশেষ নির্দেশকে আঃাধিকার দিতে হবে ৷ আবু
    মুহাম্মাদ ইবন হায্ম যাহিবী কিতাবুল সীরাহ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেন : মহান আল্লাহ জ্ঞাত
    আছেন যে, আমরা সেখানে উপস্থিত থাকলে বনু কুরায়যার জনপদে উপস্থিত না হয়ে সালাত
    আদায় করতাম না ৷ কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হছুলাংৰু আমরা তাই করতাম ৷ তার এ উক্তি
    শরীঅতের বাহ্যিক নির্দেশের উপর আমল করার নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত ৷ পক্ষাস্তরে অপর একদল
    আলিম বলেন : যথা সময়ে যারা সালাত আদায় করেছিলেন তারাই সঠিক কাজটি করেছিলেন ৷
    কারণ, তারা বুঝেছেন যে, এ নির্দেশের তাৎপর্য হচ্ছে বনু কুরায়যার জন পদে তাড়াতাড়ি পৌছা ;
    সালাত বিলন্বিত করা এ নির্দেশের উদ্দেশ্য ছিল না ৷ ওয়াক্তেয় শুরুতে সালাত আদায় করা উত্তম
    বাহ্যিক এ প্রমাণের দাবী অনুযায়ী তারা আমল করেছিলেন ৷ এ ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
    উদ্দেশ্য অনুধাবন করতে তারা সক্ষম হয়েছিলেন ৷ এ কারণে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদের কাউকেই
    ভহ্সনা করেননি এবং পুনরায় সালাত আদায়ের নির্দেশও দেননি ৷ যেন সেদিন সালাত আদায়ের
    ওয়াক্তই পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল ৷ অবশ্য যারা সালাত বিলম্বিত করেছিলেন তারা যা বুঝেছিলেন
    তদনুযায়ী আমল করেছেন ৷ এ কারণে তারা ক্ষমাহ বিবেচিত হয়েছেন ৷ বিলম্বিত করার জন্যে বড়
    জোর তাদেরকে নামাষের কাযা আদায় করার নির্দেশ দেয়া যেতে৷ ৷ আর তারা যথারীতি তা
    করেছেনও ৷ অবশ্য যুদ্ধের ওযরে যিনি সালাত বিলন্বিত করাকে জাইয বলেন, যেমনটি ইমাম
    বুখারী (র) বুঝেছেন এবং ইতোপুর্বে উল্লিখিত হযরত ইবন উমরের হাদীছ দ্বারা তিনি প্রমাণ
    উপস্থাপন করেছেন ৷ তার মতে, নামায বিলম্বিত করা আর তৃরাম্বিত করার ক্ষেত্রে কোন জটিলতা
    দেখা দেয় না, আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন ৷

    ইবন ইসহাক (র) বলেন : রাসুল করীম (সা) আলী ইবন আবু তালিব (রা) কে পতাকাসহ
    অগ্রে প্রেরণ করেন এবং কিছু লোক তার সাথে সাথে গমন করেন ৷ আর মুসা ইবন উক্বা তার
    মাগাজী গ্রন্থে ইমাম যুহ্রীর সুত্রে উল্লেখ করেন যে, ঐতিহাসিকদের ধারণা অনুযায়ী রাসুলে করীম
    (সা) গোসল থানায় সবেমাত্র মাথার একাৎণের চুল আচড়িয়েছেন ৷ এমন সময় জিবৃরাঈল (আ)
    লৌহবর্ম সজ্জিত হয়ে ঘোড়ার চড়ে মসজিদের দরজার কাছে জানাযার নামায আদায়ের স্থানে

    হাযির হলে রাসুল কবীম (সা) তার দিকে এগিয়ে যান ৷ এ সময় জিবৃরাঈল (আ) তাকে বললেন,
    আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন, আপনি কি অস্ত্র খুলে ফেলেছেন ? রাসুলে কবীম (সা) বললেন,
    হা ৷ জিবৃরাঈল (আ) বললেন, তবে আমরাতাে আপনার নিকট শত্রু আগমন করার পর এখনও
    অস্ত্র খুলিনি ৷ আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পরাজিত করা পর্যন্ত আমি তো শত্রুর সন্ধানে রত
    ছিলাম ৷ ঐতিহাসিকরা বলেন যে, হযরত জিবৃরাঈল (আ)-এর ঢেহারায় ধুলাবালির চিহ্ন পরিলক্ষিত
    হয় ৷ এ সময় জিবৃরাঈল (আ) নবী কবীম (না)-কে বলেন, আল্লাহ্তে৷ আপনাকে বনু কুরায়যার
    সাথে যুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ আমার সঙ্গী ফেরেশতাদেরৰ্ক নিয়ে আমি তাদের দিকে
    অগ্রসর হচ্ছি ৷ আমরা তাদের দৃর্গে কম্পন সৃষ্টি করবো ৷ আপনি লোকজন নিয়ে রওয়ান৷ হয়ে
    পড়ুন ৷ জিবৃরাঈল (আ) এর পিছু পিছু রাসুলে কবীম (সা) বের হয়ে পড়লেন ৷ তিনি বনু গনমের
    একটা সমাবেশের নিকট দিয়ে অতিক্রম করেন ৷ সেখানে তারা রাসুল কবীম (না)-এর অপেক্ষায়
    ছিলেন ৷ রাসুল কবীম (সা) তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, ণ্ন্ধ্রাই মাত্র কোন অশ্বারোহী এদিক দিয়ে
    অতিক্রম করেছে কি ? তারা বলে, সাদা ঘোড়ার চড়ে দিহ্ইয়া কালবী আমাদের নিকট দিয়ে
    অতিক্রম করেছেন ৷ তার নীচে ছিল নকশী করা রেশমী চাদর ৷ ঐতিহাসিকগণ বলেন : রাসুল
    কবীম (না) এ সময় বলেছেন যে, ইনি ছিলেন জিবৃরাঈল (আ) ৷ রাসুল কবীম (সা) জিবৃরাইল
    (আ)-কে দিহ্ইয়া কালবীর সঙ্গে সাদৃশ্যপুর্ণ বলে অভিহিত করতেন ৷ রাসুল কবীম (সা) বললেন,
    তোমরা বনু কুরায়যার জনপদে গিয়ে আমার সঙ্গে মিলিত হবে এবং সেখানে আসরের সালড়াত
    আদায় করবে ৷ আল্লাহ্র ইচ্ছার মুসলমানরা উঠে দাড়ালেন এবং বনু কুরায়যা অভিমুখে রওয়ানা
    হয়ে পড়লেন ৷ তখন তারা একে অপরকে বলেন, তোমরা কি জাননা যে, রাসুল কবীম (সা)
    তােমাদেরকে বনু কুরায়যার জনপদে পৌছে সালাত আদায় করতে বলেছেন ? অন্যরা বললেন,
    সালাততে৷ যথা সময় আদায় করতে হয় ৷ একদল সালাত আদায় করলেন, অপর দল সালড়াত
    বিলম্বিত করলেন ৷ এমন কি বনুকুরায়যার জনপদে পৌছে সুযাঃস্তর পর তারা আসরের সালাত
    আদায় করলেন ৷ একদল তাড়াতাড়ি আর অপর দল বিলম্বিত করে সালাত আদায়ের কথা রাসুল
    কবীম (না)-কে জানালে তিনি এদের কোন দলকেই নিন্দা করেননি ৷

    মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক (র) বলেন, হযরত আলী ইবন আবুতালিব রাসুল কবীম (না)-কে
    এগিয়ে আসতে দেখে তার দিকে অগ্রসর হয়ে বললেন, ইয়া রাসুলড়াল্লাহ্ ! আপনি ফিরে যান,
    ইয়ড়াহুদীদের জন্য আপনার পক্ষে আল্লাহ্ যথেষ্ট ৷ আলী (বা) রাসুল কবীম (সা) এবং তার
    সহধর্মিনিপণের সম্পর্কে তাদের মুখে কটুক্তি শুনেন ৷ কিন্তু তা রাসুল কবীম (সা) শুনুন এটা তিনি
    পসন্দ করলেন না ৷ রাসুল কবীম (সা) বললেন, তুমি আমাকে ফিরে যেতে বলছ কেন ? ইয়াহ্রদী
    বনুকুরায়যার মুখ থেকে তিনি যা শুনেছিলেন তা তিনি তার কাছ থেকে গোপন রাখলেন ৷ তখন
    রাসুল কবীম (সা ) বললেন, আমার মনে হয়, তুমি আমার সম্পর্কে তাদের মুখে কষ্টদায়ক কোন
    কথা শুনেছ ৷ তা যেতে দাও ৷ কারণ, আল্লাহ্র দৃশমনরা আমাকে দেখলে তুমি যা শুনেছ, তার
    কিছুই বলবেনা ৷

    রাসুল কবীম (সা) ইয়াহুদীদের দৃর্গে পৌছে তাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদেরকে উচ্চস্বরে ডাক দিয়ে
    তাদেরকে শুনিয়ে বললেন, আর এরা ছিল দুর্গের চুড়ায় হে ইয়াহ্রদী সমাজ ! হে বানরের

    গোষ্ঠী ! এখন জবাব দাও ৷ মহানআল্লাহ্র পক্ষ থেকে তোমাদের উপর লাঞ্চুনা নেমে এসেছে ৷
    একদল মুসলিম বাহিনী নিয়ে র সুল করীম (সা) ইয়াহুদীদেরকে ১০ দিনের বেশী সময় অবরোধ
    করে রাখলেন ৷ আল্লাহ তা আমার ইচ্ছা হুয়া ই ইবন আখতার উপস্থিত হয়ে বনু কুরায়যার
    দুর্গে অ টকা পড়ে ৷ মহান আল্লাহ তাদের অন্তরে ভয়-ভীতির সঞ্চার করলেন ৷ এই অবরোধ
    তাদের কাছে দুর্বিষহ ঠেকে ৷ এসময় তারা আনসারদের মিত্র আবু লবাবা ইবন আবদুল
    মুনযিরকে চিৎক৷ ৷র করে ডাক দেয় ৷ তখন আবু লুবাবা বলেন রাসুল (সা) এর অনুমতি ৩ছাড়া
    আমি তাদের কাছে যাব না ৷ তখন রাসুল করীম (সা) তাকে বলেন, আমি ওে তামাকে অনুমতি
    দিলাম ৷ আবু লুবাবা তাদের নিকট উপস্থিত হলে তারা তাকে ঘিরে কাদাত কাদতে বলেং : হে
    আবুলুবাবা ৷ ভুমি কী মনে কর আর আমাদেরকে কী করতে বল ? ৰুকারন্ন্া আমাদেরতাে লড়াই
    ক র মত ক্ষমতা নেই ৷ তখন আবু লুবাবা হাতের আব্দুল দ্বারা গলার দিকে ইঙ্গিত করে বুঝান

    , হত্যাই তাদের জন্যে অবধারিত ৷ আবু লুবাবা ফিরে এসে লজ্জিত হন এবং মনে করেন যে,
    ,তিনি গুরুতর অন্যায় করে ফেলেছেন ৷ তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, আমি অন্তর থেকে
    খালিস তাওবা না করা পর্যন্ত রাসুল করীম (সা) এ-র চেহারা মুবারকের দিকে তাকাবাে না ৷ আর
    আল্লাহ্ তাআলা আমার এই আান্তরিক তাওবাজ জানবেন ৷ তিনি মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং
    মসজিদের একটা খাম্বার সাথে নিজেকে বেধে রাখেন ৷ ঐতিহাসিকরা ধারণা করেন যে, তিনি প্রায়
    ২০ দিন এভাবে খুটির সাথে নিজেকে বেধে ব্লেখেছিলেন ৷ আবু লুবাবাকে অনুপস্থিত দেখে রাসুল
    করীম (সা) বললেন, আবু লুবাবা কি মিত্রদের সঙ্গে কথাবাতা বলে এখনো ফিরে আসেনি ? আবু
    লুবাবা যা করেছেন তা তাকে জানান হলে তিনি বললেন : আমার এখান থেকে যাওয়ার পর সে
    ফ্যাসাদে পড়েছে ৷ সে আমার নিকট উপস্থিত হলে আমি তার জন্য আল্লাহর দরবারে
    মাগফিরাত চাই৩াম ৷ যখন এ কাজটা সে করেই এসেছে তখন তার ব্যাপারে অাল্লাহ্র সিদ্ধান্ত না
    আসা পর্যন্ত আমি তাকে তার স্থান থেকে সরাবাে না ৷ ইবন লাহিয়ার আবুল আসওয়াদ সুত্রে
    উরওয়ার বরাতে এরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক (র) তার মাগাযী গ্রন্থে যুহরী সুত্রে
    অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বনু কুরায়যার একটা কুপের নিকট অবস্থান করেন ৷
    এ কুপটি আন্না কুপ নামে পরিচিত ছিল ৷ এখানে তিনি বনু কুরায়যাকে ২৫ দিন পর্যন্ত অবরোধ
    করে রাখেন ৷ এ অবরোধে তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠে এবং তাদের অন্তরে ভীতির সঞ্চার হয় ৷ হুয়াই
    ইবন আখতাবও তাদের সঙ্গে দুর্গে প্রবেশ করেছিল যখন কুরায়শ ও গাতফান গোত্রের লোকেরা
    তাদের নিকট থেকে ফিরে গিয়েছিল ৷ হুয়াই এসেছিল কা’ব ইবন আসাদকে দেয়া তার প্রতিশ্রুতি
    রক্ষার জন্যে ৷ যখন বনুকুরায়যার দৃঢ় বিশ্বাস জন্যে যে, রাসুল করীম (সা) তাদের সঙ্গে লড়াই না
    করে ফিরে যাবেন না, তখন কাব ইবন আসাদ বলল, হে ইয়াহুদী সম্প্রদায় ! তোমাদের যে দশা
    হয়েছে তাতো তোমরা দেখতেই পাচ্ছ ৷ আমি তোমাদের সম্মুখে তিনটি প্রস্তাব রাখছি ৷ এর মধ্য
    থেকে তোমরা যেটি ইচ্ছা গ্রহণ করতে পার ৷ তারা রললাে : প্রন্তাবগুলো কী ? সে বললো (১)
    আমরা এ ব্যক্তির আনুগত্য করবো এবং তাকে সত্য বলে মেনে নেবাে ৷ আল্লাহ্র কসম ৷
    তোমাদের নিকট এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, তিনি অবশ্যই প্রেরিত নবী ৷ তোমরা তোমাদের গ্রন্থে যার

    পরিচয় দেখতে পাও, ইনি হলেন যে ব্যক্তি তার প্রতি ঈমান আমার মাধ্যমে তোমরা নিজেদের
    জীবন, সম্পদ, সন্তান এবং নারীদের নিরাপত্তা লাভ করতে পার ৷ একথা শুনে তারা বলে উঠলো :

    আমরা কখনো তাওরাতের বিধান ত্যাগ করবােনা , এবং তার পরিবর্তে অন্য কোন বিধান যেনেও
    নেবাে না ৷

    (২) কাব বলল : তোমরা এটা মেনে নিতে অস্বীকার করলে এসো , আমরা আমাদের সন্তান
    আর নারীদেরকে হত্যা করি এবং উন্মুক্ত তরবারি হাতে মুহাম্মাদ ও তার সঙ্গীদের উপর ঝাপিয়ে
    পড়ি ৷ পেছনে কোন বোঝা রেখে যাবো না, যতক্ষণ না আল্লাহ্ তাআলা আমাদের আর মুহস্ফোদের
    মধ্যে মীমাংসা করে দেন ৷ ধ্বংসই যদি আমাদের ভাগ্যে থাকে তা হলে আমরা এমনভাবে ধ্বংস
    হব যে, আমাদের পেছনে কোন বংশধর ছেড়ে যাবো না, যাদের জন্য আমাদের আশংকা থাকবে ৷
    আর যদি আমরা জয়ী হই তাহলে জীবনের শপথ করে বলছি, তাহলে নিশ্চিত আমরা নতুনভাবে
    নারী এবং সন্তান লাভ করবো ৷ একথা শুনে তারা বলে উঠা:লা- আমরা কি এ অসহায়দেরকে
    অকারণে হত্যা করবো ? এরপর জীবনের স্বাদ বলে কী আর কিছু অবশিষ্ট থাকবে ?

    (৩) কাব বলল : তোমরা যদি এটাও মেনে নিতে অস্বীকার কর তবে আজকের রাত তো
    শনিবার রাত ৷ হয়তো মুহাম্মাদ আর তার সঙ্গীরা এ রাতে আমাদের ব্যাপারে নিশ্চিত থাকবেন ৷
    চলো, আমরা হামলা চালাই, মুহাম্মাদ এবং তার সঙ্গীদের উপর হয়তো আমরা অতর্কিত হামলা
    চালাতে সক্ষম হবো ৷ তারা বললো , আমরা কি শনিবার দিনের অবমাননা করবো ? এদিনে আমরা
    কি এমন কাণ্ড করবো , যা ইতিপুর্বে যে ব্যক্তিই করেছে তার অবয়ব বিকৃতি ঘটেছে বলে তুমি
    নিজেও জানাে ৷ তখন সে বলল, তোমাদের কোন ব্যক্তির মায়ের গেট থেকে জন্মের পর সে
    এমন বোকার মতো কখনো রাত্রি যাপন করেনি ৷ তারপর তারা রাসুল করীম (সা) এর নিকট এ
    মর্মে বার্তা প্রেরণ করেন যে, বনু আমর ইবন আওফের আবু লুবাবা ইবন আবদুল মুনযিরকে
    আপনি আমাদের নিকট প্রেরণ করুন ৷ বনুকুরায়যা ছিল আওস গোত্রের মিত্র পক্ষ ৷ তারা বললো৪
    আমরা তার নিকট থেকে পরামর্শ গ্রহণ করবো ৷ নবী করীম (সা) তাকে প্রেরণ করলেন ৷ তাকে
    দেখে লোকেরা দণ্ডায়মান হলো ৷ তাকে দেখেই নারী এবং শিশুরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ৷ এতে আবু
    লুবাবার অন্তর বিপলিত হয় ৷ তারা বলে, হে আবু লুবাবা! তুমি কি মনে কর, আমরা কি
    মুহস্ফোদের নির্দেশ মতো দুর্গ থেকে বেরিয়ে আসবাে ? আবু লুবাবা বললেন, হা ৷ তিনি তার
    হাতের দ্বারা গলার দিকে ইঙ্গিত করে বুঝালেন, যে তাদের জবাই হতে হবে ৷ আবুলুবাবা বলেনঃ
    যে আমার স্থান ত্যাগের পুর্বেই আমি বুঝতে পারি যে, আমি আল্লাহ তাআলা এবং তার রাসুলের
    বিশ্বাস ভঙ্গ করেছি ৷ তারপর আবুলুবাবা রাসুল করীম (না)-এর নিকট আগমন না করে স্বেচ্ছা
    প্ৰণোদিত হয়ে মসজিদের একটা খুটির সঙ্গে নিজেকে বেধে ফেলেন ৷ তিনি বললেন, আমি যা
    করেছি যে জন্যে আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত আমি এ স্থান ত্যাগ করবো না ৷ তিনি
    অঙ্গীকার করেন যে, আমি কখনো বনু কুরায়যার জনপদে পা রাখবাে না এবং সে জনপদে আমি
    আল্লাহ ও তার রাসুলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি তাতে কখনো বিচরণ করবো না ৷

    ইবন হিশাম , সুফিয়ান ইবন উয়ায়না, ইসমাঈল ইবন আবু খালিদ এবং আবদুল্লাহ ইবন আবু
    কাতাদা সুত্রে বর্ণনা করেন যে, এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করেন :

    বহে ঈমানদ৷ ৷রগণ ! তোমরা জেনেশুনে আল্লাহ ও তার রাসুলের সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করবে না

    ৎতােমরা পরস্পরের আমানত সম্পর্কেও বিশ্বাস ভঙ্গ করবে না এবং তোমরা জেনে রাখবে
    যে, তোমাদের ধ্ন-সম্পদ আর সন্তান-সম্ভতিভাে এক পরীক্ষা মাত্র এবং ন্মাল্লাহ্রই নিকট রয়েছে
    মহা পুরস্কার ৷ (আনফাল : ২৭-২৮) ৷

    ইবন হিশাম বলেন : তিনি ৬ রাত পর্যন্ত খুটির সঙ্গে বাধা ছিলেন ৷ এ সময় নামাযের ওয়াক্ত
    হলে তার ত্রী উপস্থিত হয়ে বন্ধন খুলে দিতেন ৷ তিনি উয়ু করে নামায আদায় করে পুনরায়

    নিজেকে বেধে ফেলতেন ৷ শেষ পর্যন্ত মহান আল্লাহ তার তাওবা কবুল করে আয়াত নাযিল
    করলেন

    আর অপর কতক লোক নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছে ৷ তারা এক সৎ কমের
    সাথে অসৎ কম মিশ্রিত করেছে ৷ আল্লাহ হয়তো তাদেরকে ক্ষমা করবেন ৷ নিশ্চয়ই আল্লাহ মহা
    ক্ষমাশীল পরম দয়ালু (৯ তাওবাং : ১০২) ৷ পক্ষাম্ভরে মুসা ইবন উক্বা বলেন যে, তিনি খুটির
    সঙ্গে ২০ দিন বাধা ছিলেন ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ ইবন ইসহড়াক উল্লেখ করেন যে, আল্লাহ
    তাআলা রাসুল করীম (সা) এর উপর আবুলুবাবার তাওব৷ কবুলের আয়াত নাযিল করেন রাতের
    শেষ প্রহরে ৷ এ সময় রাসুল করীম (সা) হযরত ৩উষ্মে সালামার ঘরে ছিলেন ৷ আয়া৩ টি নাযিল
    হলে নবী করীম (সা) মুচকি হ সতে লাগলেন ৷ উম্মে সালামা (রা)-এর কারণ জিজ্ঞেস করলে নবী
    করীম (সা) তাকে জানান যে, মহান আল্লাহ আবু লুবাবার তাওব৷ কবুল করেছেন ৷ তিনি আবু
    লুবাবাকে এ সুসংবাদ দানের জন্য রাসুল করীম (সা) এর নিকট অনুমতি চাইলে রাসুল (সা)
    তাকে অনুমতি দান করেন ৷ উম্মে সালামা বের হয়ে আবু লুবাবাকে এ সংবাদ দান করলে
    লোকেরাও ছুটে আসে সুসংবাদ দানের জন্য ৷ লোকেরা তাকে বন্ধন মুক্ত করতে চাইলে তিনি
    বললেন : আল্লাহর কসম ! রাসুল করীম (সা) ছাড়া আর কেউই আমাকে বন্ধন মুক্ত করবেন না ৷
    রাসুল করীম (সা) ফ্জরের সালাতের জন্য বের হয়ে তাকে বন্ধন মুক্ত করলেন ৷ মহান আল্লাহ
    তার প্ৰতি প্ৰসন্ন হোন এবং তাকে প্ৰসন্ন রাখুন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : সালাবা ইবন সাইয়াহ ও উসায়দ ইবন সাইয়া এবং আসাদ ইবন
    উবায়দ এরা বনুকুরায়যা বা বনুনযীরের লোক ছিলেন না; বরং এরা ছিলেন বনুছুহালের অম্ভভুক্তি ৷
    এদের বংশধারা আরো উপরে পৌছেছে ৷ এরা ছিলেন ওদের জ্ঞাতি ভাই ৷ রাসুল করীম (সা)-এর
    নির্দেশক্রমে যে রাত্রে বনু কুরায়যাকে দুর্গ থেকে বের করা হয় সে রাত্রে এরা ইসলাম গ্রহণ

    করেন ৷ একই রাত্রে আমর ইবন সু’দা আল কুরাযীও দুর্গ থেকে বের হন ৷ ইনি রাসুল কবীম
    (সা) এর পাহারাদারদের নিকট দিয়ে পমনকালে তারা জিজ্ঞেস করলেন কে ? এ পাহারাদারদের
    নেতৃত্বে ছিলেন মুহাম্মাদ ইবন মাসলামা ৷ তিনি জবাবে বলেন, আমর ইবন সু’দা আর ইনি বনু
    কুরায়যার সঙ্গে যোগ দিয়ে রাসুল কবীম (সা) এর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে রাযী হননি ৷ তিনি
    বলেছিলেন আমি কখনো মুহাম্মাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে
    পারবােন৷ ৷ মুহাম্মার্দ ইবন মর্সের্লামা তাকে চিনতে পেরে বললেন :

    “হে আল্লাহ্ ! সম্মানিত ব্যক্তিদের পদস্থালন ক্ষমা করা থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন না ৷ ”
    মুহাম্মাদ ইবন মাসলড়ামা তাকে চলে যেতে অনুমতি দিলেন ৷ তিনি সোজা গিয়ে মসজিদে নববীতে
    উঠেন এবং সেখানে রাত্রিযাপন করেন ৷ পর দিন তিনি সেখান ণ্;থকে বের হন; কিন্তু তারপর তিনি
    সেখান থেকে কোথায় যে গেলেন অদ্যাবধি তা জানা যায়নি ; তার সম্পর্কে রাসুল কবীম (সা) — কে
    অব্যাহতি করা হলে তিনি বলেন :

    এ এমন ব্যক্তি যার বিশ্বস্ততার কারণে আল্লাহ্ তাকে মুক্তি দিয়েছেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : কোন কোন লোকের ধারণা, বনুকুরড়ায়যার যে সব লোককে রশি দিয়ে
    রাখা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ইনিও ছিলেন ৷ ভোরে তার রশি পড়ে থাকতে দেখা যায়; কিন্তু তিনি
    কোথায় গেলেন তা জানা যায়নি ৷ তখন নবী কবীম (সা) তার সম্পর্কে উপরোক্ত উক্তি করেন ৷
    ঘটনা কি ঘটেছিল তা আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷

    ইবন ইসহাক আরো বলেন : সকালে নবী কবীম (না)-এর নির্দেশে বনু কুরায়যা দুর্গের
    অভ্যন্তর থেকে বের হলে আওস গোত্রের লোকেরা এগিয়ে এসে বললাে : ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! এরা
    আমাদের মিত্র পক্ষ; খায্রাজরা নয় ৷ আমাদের খাবরাজী ভাইদের মিত্রদের সম্পর্কে আপনি পুর্বে
    যা করেছেন, করেছেন ৷ অর্থাৎ আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন ৷ মানে, আবদুল্লাহ ইবন
    ৬ রাই এর আ বে পনঞাম বনু কায়ণুকাকে যেমন ক্ষমা করেছিলেন ৷ এ সম্পর্কে ইতিপুর্বে
    আলোচনা করা হয়েছে ৷

    ইবন ইসহাক আরো উল্লেখ করেন যে, আওস গোত্রের লোকেরা রাসুল কবীম (না)-এর
    সঙ্গে কথা বললে উনি বললেন :

    হে আওস সম্প্রদায় ! তোমরা কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তাদের ব্যাপারে তোমাদের মধ্যকার
    একজনই ফায়সালা করবেন ? তারা বললাে, ত্মী হা, নিশ্চয়ই ৷ রাসুল কবীম (সা) এ সিদ্ধান্তের
    তার অর্পণ করেন সাদ ইবন মুআয এর উপর ৷ রাসুল কবীম (সা) হযরত সা“দকে মসজিদে
    নববী সংলগ্ন একটা তাবুতে থাকতে দেন ৷ এটি ছিল রুফায়দা নান্নী আসলাম গোত্রের এক
    মহিলার তাবু ৷ আর এ মহিলা আহত ব্যক্তিদের সেবা শুশ্রুষা করতেন ৷ রাসুল কবীম (সা) সাদকে
    বনু কুরায়যার বিচারক নিযুক্ত করলে আওস গোত্রের লোকেরা তার নিকট এসে তাকে গাধায়
    সওয়ার করে রাসুল কবীম (না)-এর দরবারে নিয়ে যান ৷ আর তিনি ছিলেন একজন হৃষ্টপুষ্ট সুদর্শন
    পুরুষ ৷ গাধার পৃষ্ঠে তারা তার জন্য একটা চামড়ার গদি বিছিয়ে দেন ৷ তারা তাকে বলেন : হে

    আবু আমর ! আপনার মিত্রদের সাথে সদয় ব্যবহার করবেন ৷ কারণ, তাদের সঙ্গে সদাচার করার
    জন্যই রাসুল করীম (সা) আপনাকে তাদের বিচারক মনোনীত করেছেন ৷ তারা হযরত সাদকে
    পীড়াপীড়ি করলে তিনি বললেন ?

    সাদের জন্য সময় এসেছে যে, সে আল্লাহ্র ব্যাপারে কোন ভর্চুসনকােরীর ভর্চুসনার পরওরা
    করবে না ৷ একথা শুনে তার গোত্রের কিছু লোক, যারা তার সঙ্গে ছিলেন তারা বনু আবদুল

    আশহাল গোত্রের নিকট এবং সেখানে সাদের প্রবেশের পুর্বেই বনুকুরাম্পের মৃত্যুর গােকবাতা
    পৌছিয়ে দেন ৷ হযরত সাদ (বা) রাসুল করীম (না)-এর নিকট পৌছলে তিনি বললেন :

    তোমরা তোমাদের নেতার উদ্দেশ্যে উঠে দাড়াও ৷ কুরায়শী ঘুহাজিররা বলেন একথা দ্বারা
    রাসুল করীম (সা) আনসারদেরকে সম্বোধন করেছিলেন ৷ আর আনসারগণ বলেন যে, রাসুল
    করীম (সা) সকল মুসলমানদের উদ্দেশ্যে তা বলেছিলেন ৷ তারা সকলেই হযরত সাদের
    উদ্দেশ্যে উঠে দাড়ান ৷ তখন তারা বলেন : হে আবু আমর ! রাসুল করীম (সা) আপনার মিত্রদের
    ব্যাপারে আপনাকে সালিশ মনোনীত করেছেন যাতে করে আপনি তাদের ব্যাপারে ফায়সালা
    করতে পারেন ৷ তখন হযরত সাদ বলেন : আল্লাহ ও রাসুল (সা)-এর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার
    তােমাদেরকে মেনে চলতে হবে ৷ তাদের ব্যাপারে আমি যে নির্দেশ দেবাে , তাই কি হবে চুড়ান্ত
    ফায়সালা ? তারা বললেন, হা ৷ হযরত সাদ বললেন, আর যিনি এ দিকে রয়েছেন ? সেখানে
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সম্মানার্থে তিনি তার নাম নিলেন না ৷ রাসুল করীম (সা) বললেন, হা ৷ তখন
    হযরত সাদ বললাম , তাদের ব্যাপারে আমি ফায়সালা দিচ্ছি যে, তাদের পুরুষদেরকে হত্যা করা
    হবে, তাদের সম্পদ বন্টন করা হবে এবং শিশু আর নারীদেরকে বন্দী করা হবে ৷

    মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক আলিম ইবন উমর আলকামা ইবন ওয়াক্কাস লাইহী সুত্রে
    বলেন, রাসুল করীম (সা) হযরত সাদকে বললেন :

    “সপ্ত আসমড়ান থেকে আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী তুমি তাদের মধ্যে ফায়সালা করেছ ৷ ইবন
    হিশাম বলেন, একজন আস্থাভাজন আলিম আমাকে বলেন যে, মুসলমানরা যখন বনুকুরায়যাকে
    অবরোধ করে রাখে তখন হযরত আলী ইবন আবু তালিব এবং যুবায়র ইবনুল আওয়াম সম্মুখে
    অগ্রসর হয়ে বলেন : হে ঈমানের বলে বলীয়ান বাহিনী ! আল্লাহ্র কসম , বীর হামযা যা আস্বাদন
    করেছেন, আমিও তা আস্বাদন করবো; অথবা আমি দুর্গ জয় করে তাতে প্রবেশ করবো ৷ তখন
    অবরুদ্ধরা বলে উঠে সাদ ইবন মুআয এর ফায়সালা সাপেক্ষে আমরা (দুর্গের ভেতর থেকে)
    বেরিয়ে আসছি ৷

    ইমাম আহমদ (র) মুহাম্মাদ ইবন জাফর আবু সাঈদ খুদরী সুত্রে বলেন ৷ হযরত সাদ
    ইবন মুআয এর ফায়সালা সাপেক্ষে বনুকুরায়যা গোত্র দুর্গ থেকে অবতরণ করলে রাসুল করীম

    (সা) হযরত সাদ-এর নিকট দুত প্রেরণ করেন ৷ তিনি পাধায় আরোহণ করে আগমন করেন ৷
    তিনি মসজিদের নিকটবর্তী হলে নবী করীম (সা) বললেনং : ,ব্লু)প্রু ৷ ,হ্রৰু৷ ৷,দ্বু
    তোমাদের নেতা বা উত্তম ব্যক্তির উদ্দেশ্যে তোমরা উঠে দাড়াও ৷৩ তারপর তিনি বললেন৪ এরা
    তোমার ফায়সালা সাপেক্ষে দুর্গ থেকে বের হয়ে এসেছে ৷ হযরত সা দ বললেন, তাদের মধ্যে
    যারা যোদ্ধা আমরা তাদেরকে হত্যা করবো আর তাদের সম্ভানদেরকে আমরা বন্দী করবো ৷ রাবী
    বলেন, তখন রাসুল করীম (সা) বললেন : এা ৷ ণ্ন্নুশু াও তুমি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী
    ফায়সালা করেছ ৷ কোন কোন বর্ণনায় এ্যা৷ ৷ ণ্দ্বু; অর্থাৎ বাদশাহের নির্দেশ অনুযায়ী উল্লেখ
    রয়েছে ৷ আবার কোন কোন বর্ণনায় কেবল এা বা বাদশাহ শব্দের উল্লেখ রয়েছে ৷ ইমাম
    বুখারী (র) ও ইমাম মুসলিম (র) শুব৷ সুত্রে বিভিন্ন সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ৷

    ইমাম আহমদ (র) হাজীন জাবির ইবন আবদুল্লাহ সুত্রে বর্ণনা করেন যে, খন্দকের
    যুদ্ধে হযরত সাদ ইবন মুআয তীর নিক্ষেপে আহত হলে লোকেরা তার বাহুর রগ
    কেটে ফেলে এবং রাসুল করীম (সা) তাতে আগুন দ্বারা দাগান ৷ এতে তার৷ হত ফুলে গিয়ে রক্ত
    প্রবাহিত হলে রাসুল (সা) পুনরায় দ গোন ৷ এবারও হাত ফুলে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকে ৷ হযরত
    সাদ এ অবস্থা দেখে দুআ করেন ং

    “হে অ ৷ল্লাহ্ ! বনু কুরায়যার ব্যাপারে আমার চক্ষু শীতল হওয়ার পুর্বেতু মি আমাকে মৃত্যু
    দিয়ে৷ না ৷ তখন রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং হযরত সা দের নির্দেশে বনু কুরায়য৷ দুর্গ থেকে বের
    হওয়ার পুর্ব পর্যন্ত আর এক ফোট৷ রক্তও নির্গত হয়নি ৷ রাসুল করীম (সা) তার নিকট দুত প্রেরণ
    করলে তিনি নির্দেশ দেন যে, বনুকুরায়যার পুরুষদেরকে হত্যা করা হবে এবং নারী ও শিশুদেরকে
    বন্দী করা হবে আর মুসলমানরা তাদের সেবা গ্রহণ করবেন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন :

    “তাদের ব্যাপারে তুমি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী যথার্থ নির্দেশ৷ দা ন করলে ৷ যাদেরকে হত্যা
    করা হয়, সং থ্যায় তারা ছিল ৪শ’ তারপর আবার ক্ষতস্থান থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকে এবং
    এতেই তার ইনতিকাল হয় ৷ তিরমিযী ও নাসা ঈ উভয়েই হাদীছটি বর্ণনা করেছেন কৃত ৷য়ব৷ সুত্রে
    লায়ছ থেকে এবং তিরমিযী (র) হাদীছটিকে হাসান সহীহ বলে অভিহিত করেছেন ৷

    ইমাম আহমদ (র) ইবন নুমাইর হযরত আইশা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুল
    করীম (সা) খন্দক যুদ্ধ থেকে প্রত্যাবর্তন করে অস্ত্র খুলে গোসল করলে তার নিকট হযরত
    জিবৃর ৷ঈল (আ) আগমন করেন ৷ তার মাথা তখনো ধুলাব৷ ৷লি ধুসরিত ৷ তিনি বললেন, আপনি অস্ত্র
    খুলে রেখেছেন ? আল্লাহর কসম! আ ৷মিতে৷ এখনো অস্ত্র খুলিনি ৷ আপনি তাদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে
    পড়ুন ৷ রাসুল কয়ীম (সা) জিজ্ঞেস করলেন, কোন দিকে ? জিবৃরাঈল (আ) বললেন, এদিকে ৷
    একথা বলে তিনি বনুকুরায়যা র দিকে ইঙ্গিত করলেন ৷ তখন রাসুল করীম (সা)ত ৷দের উদ্দেশ্যে
    বেরিয়ে পড়লেন ৷ হিশাম বলেন, আমার পিতা ৷আম৷ কে জানান যে, বনুকুরায়যার ইয়াহ্রদীরা রাসুল
    করীম (না)-এর নির্দেশক্রমে দুর্গ থেকে বের হয়ে আসে ৷ তিনি তাদের ব্যাপারে সাদ (রা)-কে
    সালিশ মনোনীত করেন ৷ তখন হযরত সাদ বলেন যে, তাদের ব্যাপারে আমি নির্দেশ দিচ্ছি যে,

    তাদের যােদ্ধাদেরকে হত্যা করা হবে, শিশুদেরকে বন্দী করা হবে এবং অর্থ-সম্পদ বণ্টন করা
    হবে ৷ হিশাম বলেন যে, আমার পিতা আইশা (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুল করীম (সা)
    তখন বলেছিলেন তাদের ব্যাপারে তুমি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী ফায়সালা করেছ ৷

    ইমাম বুখারী (র) যাকারিয়া ইবন ইয়াহ্য়া আইশা (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, খন্দক
    যুদ্ধের দিন হযরত সাদ তীরবিদ্ধ হন ৷ কুরায়শের হিব্বান ইবন আরাকা নামক জনৈক ব্যক্তি তীর
    নিক্ষেপ করলে তা তার বাহুর রগে বিদ্ধ হয় ৷ নিকট থেকে তার সেবা–শুশ্রাষা করার জন্য রাসুল
    কবীম (সা) মসজিদে একটা র্তাবু স্থাপন করেন ৷ রাসুল করীম (সা) খন্দক যুদ্ধ থেকে প্ৰতাবর্তন
    করে অস্ত্র খুলে গোসল করলে মাথা থেকে ধুলা ঝাড়তে ঝাড়তে হযরত জিবৃরাঈল (আ) তার
    নিকট আগমন করেন ৷ তিনি বললেন, আপনি অস্ত্র খুলে ফেলেছেন আল্লাহ্র কসম, আমি
    এখনো অস্ত্র খুলিনি ৷ আপনি তাদের উদ্দেশ্যে বের হোন ৷ নবী করীম ৷ সা) জানতে চাইলেন,
    কে নৃ দিকে ? তিনি বনু কুরায়যা র দিকে ইঙ্গিত করলেন ৷ রাসুল করীম ৷ সা ) বনু কুরায়য৷ অভিমুখে

    হযরত সা দের প্রতি ফায়সালার ভার অর্পণ করেন ৷ তিনি বললেন, তাদের ব্যাপারে আমি এ
    নির্দেশ দিচ্ছি যে,ত তাদের যােদ্ধাদেরকে হত্যা করা হবে, নারী আর শি ৷শুদেরকে বন্দী করা হবে
    এবং তাদের ধন-সম্পদ বিলি বণ্টন করা হবে ৷

    বলেন, হযরত আইশা সুত্রে আমার পিতা আমাকে জানান যে, হযরত সাদ ইবন
    মু আহত অবস্থায় দৃআ করেছিলেন : হে আল্লাহ! যে জাতি তোমার রাসুলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন
    কর্লরেছে এবং তাকে দেশাম্ভরিত করেছে, তাদের তুলনায় এমন কেউ নেই, তোমার নিমিত্ত যার
    বিরুদ্ধে জিহাদ করা আমার নিকট বেশী প্রিয় ৷ হে আল্লাহ্! আমি মনে করি যে, তুমি তাদের এবং
    আমাদের মধ্যে যুদ্ধকে চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছিয়ে দিয়েছ ৷ কুরায়শের যুদ্ধের কিছু অংশও যদি
    অবশিষ্ট থাকেত তবে সে জন্য তুমি আমাকে জীবিত রাখলে, যাতে আমি কেবল তোমারই
    উদ্দেশ্যে তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি ৷ আর যদি তুমি যুদ্ধের পালা শে ষ করে দিয়ে থাক
    তাহলে তুমি আমার আঘাত অব্যাহত রেখে তাতেই আমার শা হাদত তনসীব কর ৷

    তার ক্ষতন্থান থেকে রক্তের প্রবাহ অব্যাহত থাকে ৷ তা আর থামলো না ৷ মসজিদে বনু
    গিফারের একটা তাবু ছিল, রক্ত সে পর্যন্ত পড়ায় ৷ত তারা বলে, হে তাবু বাসীরা ! তোমাদের দিক
    থেকে আমাদের দিকে এটা কী আসছে ? হঠাৎ দেখা গেল যে, সাদের আঘাত থেকে রক্ত
    উথলে উঠছে ৷ এদুত ই তার ইনতিকাল হয় ৷ ইমাম মুসলিম (র) আবদুল্লাহ ইবন নুমায়র সুত্রে
    হাদীছটি উল্লেখ করেছেন ৷

    আমি বলি : বনু কুরায়যার ব্যাপারে প্রথম ফায়সালার পুর্বে হযরত নাম এ দৃআটি
    করেছিলেন ৷ এ কারণেই এ দৃআয় তিনি বলেছিলেন, বনুকুরায়যার ব্যাপারে আমার চক্ষু শীতল
    হওয়ার পুর্বে তুমি আমাকে মৃত্যু দিয়াে না ৷ আল্লাহ তাআলা তার দৃআ কবুল করেন ৷ হযরত
    সাদ যখন বনু কুরায়যার ব্যাপারে ফায়সালা জারী করেন এবং আল্লাহ তাআলাও তার চক্ষু শীতল
    করেন ৷ তখন তিনি পুনরায় এ দৃআ করলে আল্লাহ্ তাআলা এ আঘাতকেই তার শাহাদাতের

    কারণ হিসাবে গ্রহণ করেন ৷ মহান আল্লাহ তার প্রতি সভুষ্ট হোন এবং তাকে সভুষ্ট রাখুন ৷ তার
    মৃত্যু সম্পর্কে শীঘ্রই আলোচনা আসছে, ইনশাআল্লাহ ৷

    ইমাম আহমদ (র) অন্য সুত্রে হযরত আইশা থেকে হাদীছটি বিশুদ্ধভাবে বংনাি করেছেন ৷
    তাতে অনেক জ্ঞাতব্য বিষয় রয়েছে ৷ তাতে তিনি য়াযীদ হযরত আইশা সুত্রে বর্ণনা করেন
    যে, খন্দক যুদ্ধের দিন লোকজনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি বের হই ৷ আমি পেছন থেকে
    মাটির ধপধপ আওয়ড়ায শুনতে পাই ৷ হঠাৎ দেখি, সাদ ইবন মুআয় এবং তার সঙ্গে আছেন তার
    ভাতিজা হারিস ইবন আওস ৷ তিনি ঢাল ধারণ করে চলছেন ৷ হযরত আইশা (রা) বলেন, আমি
    মাটিতে বসে পড়ি ৷ এ সময় হযরত সাদ অতিক্রম করেন ৷ তার পায়ে ছিল লোহার বর্ম ৷ লৌহ
    বর্য থেকে তার দেহের পার্শ্বদেশ বেরিয়ে পড়েছিল ৷ আমি তার দেহের খোলা অংশ দেখে ভয়
    পাই ৷ হযরত আইশা (বা) বলেন, হযরত সাদ ছিলেন দীর্ঘ দেহী সুপুরুষ ৷ তিনি এ কবিতাটি
    আবৃত্তি করতে করতে অগ্রসর হলেন :

    একটু থামাে, উট যুদ্ধের নাপাল পাবে ৷ মৃত্যুর সময় যখন ঘনিয়ে আসে তখন তা কতইনা
    চমৎকার ৷

    হযরত আইশা (রা) বলেন : আমি দাড়ালাম এবং একটা বাগানে প্রবেশ করলাম ৷ সেখানে
    ছিলেন একদল মুসলমান ৷ তাদের মধ্যে উমর ইবনুল খাত্তাব (রা)-ও ছিলেন ৷ তাদের মধ্যে
    শিরস্ত্রাণধারী এক বক্তিও ছিল ৷ উমর (রা) বললেন, আপনি কেন এখানে এসেছেন ৷ আপনি তো
    দুর্দাম্ভ সাহসী দেখছি ৷ বিপদ যে ঘটবে না এ ব্যাপারে আপনি কেমন করে নিশ্চিত হলেন ? অন্য
    কিছুওতেড়া যুক্ত হতে পারতে৷ ? এভাবে তিনি আমাকে ভর্যসনা করতে থাকেন ৷ এতে শেষ পর্যন্ত
    আমার আকাক্ষে৷ জাগে যদি সে মুহুর্তে মাটি ফেটে যেত এবং আমি তাতে প্রবেশ করতড়াম ৷
    শিরস্ত্রড়াণধারী লোকটি শিরস্ত্রাণ সরালে দেখতে পাই যে, তিনি হলেন তালহা ইবন উবায়দুল্লাহ্ ৷
    তিনি বললেন, হে উমর ! আশ্চর্য, অদ্যাবধি আপনি অনেক বাড়াবাড়ি করেছেন ৷ আশ্রয় আর
    পলায়নতে৷ কেবল আল্লাহ্রই দিকে ৷

    হযরত আইশা (বা) আরও বলেন : ইবনুল আরাকা নামক কুরায়শের জনৈক ব্যক্তি হযরত
    সাদের প্রতি তীর নিক্ষেপ করে ৷ লোকটি বলেছিল এটা লও ! আমি আরাকার পুত্র ৷ তীর তার
    দেহের এক পাশের রগে বিদ্ধ হয় এবং এতে রগটি ছিড়ে যায় ৷ তখন হযরত সাদ আল্লাহর নিকট
    দৃআ করে বলেন :

    হে আল্লাহ ! বনুকুরায়যার ব্যাপারে আমার চক্ষু শীতল না হওয়া পর্যন্ত তুমি আমাকে মৃত্যু
    দিয়ো না ৷ হযরত আইশা বলেন, জাহিলী যুগে বনু কুরায়যা ছিল হযরত সাদের মিত্র ৷ তিনি
    বলেন, তার আঘাত শুকিয়ে যায় এবং আল্লাহ মুশরিকদের উপর ঝঞা বায়ু প্রেরণ করেন ৷ আর
    যুদ্ধে মু’মিনদের জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট ৷ আর আল্লাহ মহাশক্তিধর ও পরাক্রমশালী ৷

    আবু সুফিযান এবং সঙ্গীরা তিহামায় গিয়ে পৌছে ৷ আর উয়ায়না ইবন বদর এবং তার সঙ্গীরা
    নাজদে গিয়ে পৌছে ৷ বনু কুরায়যা প্রত্যাবর্তন করে নিজেদের দৃর্গে আশ্রয় নেয় ৷ আর রাসুল

    করীম (সা) মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন ৷ হযরত সাদের জন্য মসজিদে চামড়ার একটা তাবু প্রস্তুত
    করার জন্য রাসুল করীম (সা) নিদের্শি দান করেন ৷ হযরত আইশা (রা) আরো বলেন : জিবৃরাঈল
    (আ) আগমন করেন ৷ তখন তার সম্মুখে দাতে ধুলা লেগেছিল ৷ তিনি বললেন : আপনি কি অস্ত্র
    খুলে ফেলেছেন ? আল্লাহর কসম ! ফেরেশতারা এখনো অস্ত্র থােলেননিঃ ৷ বনু কুরায়যার উদ্দেশ্যে
    বেরিয়ে পড়ুন এবং তাদের সঙ্গে লড়াই করুন ৷ এরপর রাসুল করীম (সা) বর্য পরিধান করেন
    এবং লোকজনকে বনু কুরায়যড়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ার নির্দেশ দান কৰ্:রন ৷ তিনি বনু গনমের
    নিকট দিয়ে অতিক্রম করেন ৷ আর এরা ছিল মসজিদের আশপাশের প্রতিবেশী ৷ তিনি জিজ্ঞেস
    করলেন, কে তোমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করেছে ৷ লোকেরা বললাে, দিহইয়া কালবী ৷ আর
    তার দাড়ি র্দাত এবং চেহারা ছিল হযরত জিবৃরাঈল (আ)-এর সাথে সাদৃশ্য পুর্ণ ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    তাদের নিকট আগমন করেন এবং ২৫ দিন পর্যন্ত তাদেরকে অবরোধ করে রাখেন ৷ অবরোধ
    যখন তীব্র হয় এবং ওদের ভোগাস্তি চরমে পৌছে, তখন তাদেরকে বলা হয় যে, তোমরা
    রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর ফায়সালা সাপেক্ষে দুর্গ থেকে বেরিয়ে এসো ৷ তারা এ ব্যাপারে আবুলুরাবা
    ইবন আবদুল মুনযির এর পরামর্শ চাইলে তিনি ইঙ্গিতে বুঝান যে, জবইি হতে হবে ৷ তারা বলে,
    সাদ ইবন মুআয-এর ফায়সালা সাপেক্ষে আমরা বের হবো ৷ তখন রাসুল করীম (সা ) বললেন,
    তোমরা সাদ ইবন মুআয-এর ফায়সালা সাপেক্ষে বের হও ৷ সাদ ইবন ঘুআযকে পাধায়
    সওয়ার করে আনা হয় ৷ এর পালানাের গদি ছিল থেজুরের ছাল ভর্তি ৷ এর উপরে তাকে আরোহণ
    করানো হয় এবং তার চারপাশে লেড়াকজনের ভিড় লেগে যায় ৷ তারা বলে, হে আবু আমৃর ! এরা
    তোমার মিত্র ও বন্ধু ৷ এখন তারা বিপদগ্রস্ত ৷ তাদের যে দৃর্পতি , তাতো তোমার অজানা নেই ৷
    তিনি তাদের কথার কোন উত্তর দিচ্ছিলেন না এবং তাদের প্রতি ভ্রাক্ষেপও করছিলেন না ৷ তাদের
    বাড়ী ঘরের নিকট এসে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, এখন আমার জন্য সময় উপস্থিত
    হর্ধয়ছে যে, আমি আল্লাহর ব্যাপারে কোন ভর্ধসনাকারীর ভর্বৃসনার পরওয়া করবো না ৷

    হযরত অইিশা (রা) বলেন, আবু সাঈদ বলেছেন : হযরত সাদ উপস্থিত হলে রাসুল করীম

    (সা) বললেন :

    তোমরা তোমাদের সাইয়েদের (নেতার) প্রতি দাড়াও এবং তাকে নামাও ৷ এসময় হযরত
    উমর (রা) বলেন : আমাদের সাইয়েদ তথা মাওলাতো একমাত্র আল্লাহ তাআলাই ৷ রাসুল কয়ীম
    (সা) বললেন, তাকে গাধার পিঠ থেকে নামাও ৷ তখন তারা তাকে নামালেন ৷ রাসুল করীম (সা)
    বললেন, তুমি তাদের ব্যাপারে ফায়সালা দাও ৷ তখন হযরত সাদ (রা) বলেন, আমি তাদের
    ব্যাপারে ফায়সালা দিচ্ছি যে, তাদের যােদ্ধাদেরকে হত্যা করা হবে, সম্ভানদেরকে বন্দী করা হবে
    এবং তাদের ধন-সম্পদ বন্টন করা হবে ৷ তখন রাসুল করীম (সা) বললেন : তুমি তাদের মধ্যে
    আল্লাহ ও রাসুলের নির্দেশ অনুযায়ী ফায়সালা করেছ ৷ এরপর হযরত সাদ দৃআ করলেন ৷

    হে আল্লাহ ! কুরায়শের যুদ্ধের কোন অংশ যদি তুমি অবশিষ্ট রাখ তোমার নবীর জন্য তবে
    তুমি সেজন্য আমাকেও বীচিয়ে রেখো, আর যদি তুমি তাদের মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে থাক
    তাহলে আমাকে তোমার সান্নিধ্যে তুলে নাও ৷

    হযরত আইশা (বা) বলেন : তার যখমের ঘা শুকিয়ে গিয়েছিল ৷ সামান্য পরিমাণ বাকী ছিল ৷
    তারপর আবার আঘাতের স্থান থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে শুরু করে ৷ এ অবস্থায় তিনি রাসুল
    কবীম (সা) নির্মিত র্তাবুতে ফিরে আসেন ৷ হযরত তআইশা (বা) বলেন, মৃত্যুকালে তার কাছে
    উপ তছিলেন হযরত আবু বকর এবং হযরত উমর (রা) তিনি আরো বলেন, মুহাম্মাদ
    (সা) এর জীবন যে পবিত্র ন্সত্তার হাতে তার শপথ ! আমি আবু বকর ও উমর (রা)-এর ক্রন্দনের
    মধ্যে পার্থক্য করেছি ৷ এ সময় আমি আমার হুজরায় ছিলাম ৷ আর তারা ছিলেন যেমন আল্লাহ
    বলেছেন : পরস্পরে দয়ার্দ্র ৷

    আলকামা বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে উম্মুল মুঘিসীন ৷ (এমন সময়) রাসুল কবীম
    (সা) কেমন করতে ন ? জবাবে তিনি বলেন? তার চক্ষু কারো জন্য অশ্রু ঝরাতো না; তবে এমন
    ক্ষেত্রে তিনি দাড়িতে হাত বুলা(ত ন ৷

    এ হাদীছটির সনদ উত্তম এবং এজন্য বিভিন্ন সুত্রের অ(,ষ্নক প্রমাণও রয়েছে ৷ এতে স্পষ্ট
    প্রমাণ রয়েছে হযরত সাদের দু’দফা দুআ করার ৷ একবার বনু কুরায়যার ব্যাপারে তার ফায়সালা
    করার পুর্বে এবং একবার এরপরে ৷ আমরা ইতিপুর্বেও একথা উল্লেখ করেছি ৷ সমস্ত প্রশংসা
    আল্লাহর জন্য ৷ এ কাহিনীর আলোচনা শেষ করার পর তার মৃত্যুর ঘটনা দাফ(নর বৃত্তান্ত এবং
    তার ফযীলত ও মর্যাদার বিষয় উল্লেখ করব ৷

    ইবন ইসহাক (র) বলেন ং তারপর রাসুল কবীম (তসা) তাদেরকে দুর্গ থেকে (বর করে
    মদীনায় বনু ন ৷জ্জারের জনৈক৷ মহিলার বাড়ীতে আটক রাখেন ৷ আমি বলি ? (স মহিলার বংশ
    পরিচয় হলো নাসীব৷ বিনতুল হারিস ইবন কুরম ইবন হাবীব ইবন আবৃদ শামস ৷ এ মহিলাটি ছিল
    মুসায়লামা কায্যাবের প্রী ! অতঃপর আবদুল্লাহ ইবন আমির ইবন কুরায়যত তাকে বিবাহ করেন ৷
    অতঃপর রাসুল কবীম (সা) মদীনায় বাজারের পথে (বর হন এবং সেখানে কয়েকটি পরিখ৷ খনন
    করান ৷ এবং সেখানেই তাদের হত্যা করা হয় ৷ এক এক করে তাদেরকে তার নিকট হাযির করা
    হয়৷ এদের মধ্যে আল্লাহর দৃশমন হুয়াই ইবন আখতার এবং বনু কুরায়যার সদার কাব ইবন
    আসাদও ছিল ৷ যাদেরকে হত্যা করা হয় ত ৷দের স ×খ্যা ছিল ৬ শ বা সাত শ’ ৷ যারা অধিক
    বলেন, তাদের মতে এ স ×খ্যা ছিল ৮৯ শ র মাঝামাঝি ৷

    আমি বলি, ইতিপুর্বে আবুয যুবায়র সুত্রে জাবির বর্ণিত হাদীসে এদের সংখ্যা চারশ বলে
    উল্লেখ করা হয়েছে ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, রাসুল কবীম (সা) এর দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরকে জিজ্ঞেস
    করা হয়, যে কা’ র আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে বলে তুমি মনে কর ? সর্বত্রই কি
    তোমরা নিধোধ থাকবে ? তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ না যে, আহ্বানকারী আসছে না, আর
    তোমাদের ম( ধ্য যাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে (স আর ফিরে আসছেনা ৷ আল্লাহ্র কসম, তাভাে
    (করল হত্যা ৷ এ অবস্থা অব্যাহত ছিল তাদের হত্যা কার্যক্রম (শষ না হওয়া পর্যন্ত ৷ অবশেষে
    হুয়াই ইবন আখতাব(ক হাযির করা হয় ৷ তার পায়ে ছিল মক্শী৷ চ ৷দর ৷ চাদরটি (স চতৃর্সিক থেকে
    কয়েক আঙ্গুল পরিমাণ করে ছিড়ে (রখেছিল, যাতে করে (কউ তা গনীমত রুপে ব্যবহার করতে

    না পারে ৷ একটি রশি দিয়ে তার হাত দুটি গদনি পর্যন্ত উঠিয়ে বেধে রাখা হয়েছিল ৷ রাসুল করীম
    (না)-এর প্ৰতি দৃষ্টি পড়হুতই হুস বহুল উঠে : আল্লাহর কসম, আপনার প্রতি বৈরিতা হুপাষহুণর
    জন্যে আমি মোটেই অনুতপ্ত নই ৷ অবশ্য আল্লাহ্ যাকে লাঞ্ছিত ৩করেন সেই লাঞ্ছিত হয় ৷ তারপর
    লোকজহুনর দিকে মুখ করে সে বলে৪ হে লোকসকলঅ আল্লাহর নির্দেশে ৷র ব্যাপারে কোন দুঃখ
    নেই ৷ ত ৷হুত৷ ভাগ্যলিপি আর মহা হত্যাকান্ড ৷ যা আল্লাহ তা আলা নি ধাবণ করে দিয়েছেন বনী
    ইসৃর৷ ঈলদের জন্য ৷ একথা বলার পর সে বসে পড়লে তার মস্তক দ্বিখন্ডিত করা হয় ৷ এ প্রসঙ্গে
    করি জাবাল ইবন জা ওয়াল স৷ লাবী বহুলন০ং

    তোমার জীবনের শপথ, হুয়৷ ৷ই নিজেকে তিরস্কার করেনি ৷ কিন্তু আ ল্লাহ্ যাকে লাঞ্ছিত করেন
    সেই হয় লাঞ্ছিত
    সে পুরোপুরি চেষ্টা চা ৷লিয়েহুছন, এমন কি সে৩ তাহুত চেষ্টা ৷র কোন ত্রুটি করেনি ৷ আর ময়দাির
    সন্ধানে চেষ্টা চালিয়েহুছ পুরোপুরি ৷

    ইবন ইসহাক যুবায়র ইবন বাতার ঘটনা উল্লেখ করেছেন ৷ বহুয়াবৃদ্ধ এ লোকটি ভাল হয়ে
    গিয়েছিল ৷ বুয়াস যুদ্ধে এ ব্যক্তি ছাৰিত ইবন কায়স ইবন শামাম এর প্রতি ৩অনৃমহ করেছিল ৷ আর
    তার মাথায় সম্মুখ ভাগের চুল কেটে দিয়েছিল ৷ এ দিনটিহুত তিনি তাকে প্রতিদান দিবার ইচ্ছা
    করেন এবং তিনি যুবায়রের নিকট আগমন করে বলেন : হে আবু আবদুর রহমান ৷ তুমি কি
    আমাকে চিনতে প৷ রছ ? সে জবাবে বললাে, আমার মতো মানুষ আপনার মতো মানুষকে তুলতে
    পারে ? তখন ছাবি৩ তাকে বলহুলনহ’০ আমি আজ আমার অন্যুাহুহর প্রতিদান দিতে চাই ৷ তিনি

    বলহুলন০ মহান ব্যক্তিই মহান ব্যক্তিকে প্রতিদান দিয়ে থাকেন ৷ অতঃপর ছাৰিত রাসুল করীম
    (সা) এর নিকট গমন করেত তার কাছে অব্যাহতি চাইলে তিনি তাকে র্মুক্ত করে দেন ৷ এরপর
    ছাৰিত তার কাছে গিয়ে তাকে তার মুক্তির সংবাদ জানান ৷ তিনি বলহুলনঘ্র বৃদ্ধ লোক, না আছে
    পরিবার, না আছে সন্তান, এমন জীবন নিয়ে যে কী করবে ? তারপর ছ৷ ৩রাসুল করীম
    (সা) এর নিকট গিয়ে তার ত্রী এবং সন্তানের জন্য মুক্তি চ৷ ৷ইলে রাসুল করীম (সা) তাদেরকেও
    মুক্তি দা ন করলেন ৷ এরপর তিনি যুবায়র এর নিকট উপ ৩হলে সে বললাে, হিজ৷ ৷হুম এবল্টা
    পরিবার অর্থ সম্পদ ছাড় ৬াকিভা ৷হুব বেচে থাকবো তখন ছ বি৩ রাসুল করীম (সা) এর নিকট গিয়ে
    যুবায়র ইবন বাতার ধন-সম্পদ ফেরত দানের আবেদন জানালে রাসুল করীম (সা)৩ ৷ ৩াও মঞ্জুর
    করেন ৷ ছাৰিত ফিরে গিয়ে তাকে এ সংবাদ দিলে সে বলহুলা £ হে ছাৰিত ! যে লোকটির চেহারা
    ছিল চীনা আয়না র ন্যায় স্বচ্ছ, যার মধ্য দিয়ে কা ৷ব ইবন আমাদের পরিবারের রমণীদের মুখ দেখা
    যেহুতা, তার খবর কি ? তিনি বললেনং হুসহু৩ তা নিহত বৃদ্ধটি ৷ তখন বললাে০ গ্রাম আর শহর সব
    অঞ্চলের নেতা হয় ই ইবন আখ৩ যে, তিনি কী করলেন ? বললাম, সে ও নিহত হয়েছে ৷ সে
    বলহুলাং : আমরা যুদ্ধে শত্রুর মুখোমুখি হলে যিনি আমাদের অগ্রবর্তী থাকতেন, আর আমরা
    পলায়ন করলে যিনি আমাদের সহায়তা করা তন, সেই ইযাল ইবনশ ৷৷মওয়াহুলর খবর কি ? তিনি

    বললেন, সেও নিহত হয়েছে ৷ বৃদ্ধটি জিজ্ঞেস করলেন, তাহলে বনু কাব ইবন কুরায়যা এবং বনু
    আমব ইবন কুরায়যার কী খবর ? ছাবিত বললেন : তারা সকলেই বিদায় নিয়েছেন সকলেই নিহত
    হয়েছেন ৷ বৃদ্ধটি তখন বলে উঠলেড়া, হে ছাবিত ৷ তোমার প্রতি আমার যে অনুগ্রহ, তার দােহইি
    দিয়ে বলছি ৷ আমাকে আমার লোকজনের সঙ্গে মিলিত করে দাও ৷ আল্লাহর কসম ! এদের পরে
    বেচে থাকায় আর কোন মঙ্গল নেই ৷ বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হওয়া ছাড়া আমিতে৷ আর একটুও ধৈর্য
    ধারণ করতে পারছিনা ৷ ছাবিত তাকে আগে ঠেলে দিলে তার গদনি দ্বিখন্ডিত করা হয় ৷ বন্ধুদের
    সঙ্গে মিলিত হওয়ার কথা হযরত আবু বকর (রা)-এর নিকট <;পাছলে তিনি বলেন : আল্লাহর
    কসম , জাহান্নামের আগুনেই তাদের মিলন হবে ৷ সর্বদা সেখানে তারা বাস করবে ৷

    ইবন ইসহাক (র) বলেন : ববুকুরায়যার মধ্যে যেসব যুবকে-দু ৷ গোফ-দাড়ি পজিয়েছিল রাসুল
    করীম (সা) তাদের সকলকে হত্যা করার নির্দেশ দান করেছিলেন তিনি শুবা ইবন হাজ্জাজ
    আতিয়া আল-কারযীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে, বনুকুরায়যাহৃ৷ মধ্যে যাদের থেকে-দাড়ি গজিয়েছে
    তাদের সকলকে হত্যা করার নির্দেশ দান করেন ৷ তখন আমি বালক ছিলাম ৷ তারা দেখলো যে,
    আমার গোফ-দাড়ি গজায়নি, তাই তারা আমাকে অব্যাহতি দেয় ৷ চারটি সুনান’ গ্রন্থের
    ইমামগণও আবদুল মালিক ইবন উমায়র সুত্রে আতিয়া আল-কারযীর বরাতে অনুরুপ হাদীছ বর্ণনা
    করেছেন ৷ যেসব আলিমরা বলেন যে, লজ্জাস্থানের চারিপার্শেব সোম পযানাে বালিগ হওয়ার
    প্রমাণ, তারা এ হাদীছ দ্বারা প্রমাণ উপস্থাপন করেন ৷ ইমাম শাফিঈ (র)-এর দুটি উক্তির মধ্যে
    বিশুদ্ধতম উক্তি অনুযায়ী এটাই হলো সাবালকত্বের প্রমাণ ৷ কোন কোন আলিম যিস্বী শিশুদের
    মধ্যে পার্থাং করেন ৷ তাদের মতে, শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বালিগ হওয়ার প্রমাণ হিসাবে গৃহীত
    হবে, অন্যদের ক্ষেত্রে নয় ৷ কারণ, এ দ্বারা মুসলমানদের ৰিব্রত হওয়ার কারণ ঘটবে ৷

    ইবন ইসহাক আইউব ইবন আব্দুর রহমান সুত্রে বংনাি করেন যে, সালমা বিনত কায়স যাকে
    উন্মুল মুনযির বলে ডাকা হতে৷ তিনি রাসুল করীম (না)-এর নিকট রিফায়া ইবন শামওয়ালকে মুক্ত
    করার জন্য আবেদন জানালে তিনি তা মঞ্জুর করেন ৷ এ সময় তিনি বালিগ ছিলেন ৷ আর রিফায়া
    আগে থেকেই তাদেরকে জানতেন ৷ সালমা বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! রিফায়ার ধারণা যে, সে
    অচিরেই নামায আদায় করবে এবং উটের গোশত খাবে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না) তাতে সম্মতি দিয়ে
    রিফায়াকে মুক্ত করে দেন ৷ ইবন ইসহাক মুহাম্মাদ ইবন জাফর আইশা (বা) সুত্রে বলেন,
    বনু কুরায়যার মধ্যে কেবল একজন নারীকে হত্যা করা হয় ৷ তিনি বলেন, আল্লাহর কসম, যে
    মহিলা আমার সাথে কথা বলছিল প্রাণ খুলে হড়াসছিল ৷ আর এমন সময় রাসুল করীম (না)-এর
    নির্দেশে তাদের পুরুষদেরকে বাজারে হত্যা করা হচ্ছিল ৷ এ সময় হঠাৎ তার নাম ধরে ডাকা হয়
    হে অঘুকেব কন্যা ৷ সে বললাে, আল্লাহর কসম! আমি যে নারী ৷ তিনি বলেন, আমি তাকে
    বললাম , তোমার কী হয়েছে ? সে বললাে, আমি একটি ঘটনা ঘটিয়েছি বলে আমাকে হত্যা করা
    হবে ৷ হযরত আইশা (রা) বলেন, তাকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হল ৷ আইশা (বা) প্রায়ই বলতেন,
    আল্লাহর কসম ৷ তার এ আশ্চর্য ঘটনাটি আমি কােনদিন তুলতে পারবো না ৷ সে ছিল হাসিথুশী
    রমণী; অথচ সে জানতেড়া যে, তাকে হত্যা করা হবে ৷ অনুরুপ ইমাম আহমদ (র) ও ইয়াকুব ইবন
    ইব্রাহীম সুত্রে হাদীছটি বংনি৷ করেছেন ৷ ইবন ইসহাক বলেন, এ মহিলাটি খাল্লাদ ইবন সুওরায়দ

    -কে যাতায় নিক্ষেপে হত্যা করেছিল ৷ একারণে রাসুল করীম (না) তাকে হত্যা করেন ৷ ইবন
    ইসহাক অন্যত্র এ মহিলার নাম উল্লেখ করেছেন নাবাতা বলে ৷ সে ছিল হাকাম আল-কুরয়ীর ত্রী ৷

    ইবন ইসহাক আরো বলেন : রাসুল করীম (সা) খুমুস তথা এক পঞ্চমাৎশ বের করার পর
    বনু কুরায়যাব সম্পদ, নারী এবং সম্ভানদেরকে মুসলমানদের মধ্যে বন্টন করে দেন ৷ তিনি
    অশ্বারােহীর জন্য তিন অংশ দু’ অংশ অশ্বের আর একাৎশ অশ্বারােহীর এবং একাৎশ করে
    পদাতিকের দান করেন ৷ তখন অশ্ব ছিল ৩৬ টি ৷ ইবন ইসহাক বলেন, এই প্রথম বারের মতো
    গনীমতের মালে দৃই অংশ দান ও খুমুস বা এক-পঞ্চমাংশ সংরক্ষণের রীতি প্রবর্তিত হয় ৷

    ইবন ইসহাক আরো বলেন, রাসুল করীম (সা) বনুকুরায়যার বন্দীদ্ভ:দরকে সাযা দিয়ে সাঈদ
    ইবন যায়দকে নাজ্বদে প্রেরণ করে তার বিনিময়ে অশ্ব ও অস্ত্র ক্রয় করেন ৷ রাসুল করীম (সা ) বনু
    কুরায়যাব নারীদের মধ্যে রায়হানা বিনৃত আমৃর ইবন খানাকাকে নিজের জন্য পসন্দ করেন ৷ এ
    মহিলাটি ছিলেন বনু আমৃর ইবন কুরায়যা গোত্রের ৷ তিনি আন্ভ্যু রাসুল করীম (না)-এর
    মালিকানাধীন ছিলেন ৷ রাসুল করীম (সা) তার কাছে ইসলাম পোপ করলে তিনি প্রথমে বিরত
    থাকেন ৷ পরবর্তীতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন ৷ রাসুল করীম (সা) অত্যন্ত আনন্দিত হন ৷ তাকে
    মুক্ত করে বিবাহ করার প্রস্তাব দিলে তিনি রাসুলুল্লাহ্র সুবিধার কথা বিবেচনা করে একজন
    দাসীরুপে থাকাই পসন্দ করেন ৷ রাসুল করীম (না)-এর ইনতিকাল পর্যন্ত তিনি তার কাছেই
    ছিলেন ৷ তারপর ইবন ইসহাক খন্দক যুদ্ধের কাহিনী প্রসঙ্গে সুরা আহযাবের প্রথম দিকের আয়াত
    সম্পর্কে আলোচনা করেন ৷ সুরা আহযাবের তাফসীরে এ বিষয়ে আমরা বিশদ আলোচনা করছি ৷
    সমস্ত প্রশংসা আর সভুষ্টি আল্লাহর জন্য ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : বনু কুরায়যাব যুদ্ধের দিন মুসলমানদের মধ্যে খাল্লাদ ইবন সুওয়ায়দ
    ইবন সালাবা ইবন আমৃর আল-খাষ্ৱাজী শাহাদত বরণ করেন ৷ এক মহিলা তার প্রতি যাতা
    নিক্ষেপ করলে তিনি প্রচণ্ড আঘাত পান ৷ মুসলমানরা মনে করেন যে, রাসুল করীম (সা)
    বলেছেন : হযরত খড়াল্লাদের জন্য রয়েছে দুজন শহীদের পুরস্কার ৷ আমি বলি : প্রস্তর নিক্ষেপকারী
    মহিলা ছাড়া বনুকুরায়যার মধ্যে অন্য কোন নারীকে হত্যা করা হয়নি ৷ এ ঘটনা ইতিপুর্বেও উল্লেখ
    করা হয়েছে ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, বনু কুরায়যাব অবরোধকালে আবু সিনান ইবন মিহসান ইবন হুরসান
    ইনতিকাল করেন এবং সেখানেই তাকে দাফন করা হয় ৷ ইনি ছিলেন বনুআসাদ ইবন খুযায়মার
    লোক ৷ আজও সেখানেই তার কবর রয়েছে ৷

    হযরত সা দ ইবন মুআয (রা)-এর ইনতিকাল

    পুর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, অভিশপ্ত হিব্বান ইবন আরিকা সাদ ইবন মুআয (রা) এর
    প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে তা তার বাহুর প্রধান শিরায় বিদ্ধ হয় ৷ পরে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আগুন
    দাণালে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় ৷ এসময় সাদ (রা) আল্লাহর দরবারে দুআ করেন যা ইতিপুর্বে
    উল্লিখিত হয়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না) এবং বনু কুরায়যাব মধ্যেকার চুক্তিসমুহ তারা ভঙ্গ করে এবং
    রাসুলুল্লাহ্র বিরুদ্ধে মুশরিক দলের প্রতি ঝুকে পড়ে ৷ সম্মিলিত কাফির বাহিনী যখন দুরে চলে যায়
    এবং বনু কুরায়যা কালিমা লিপ্ত বদনে দুনিয়া ও আখিরাতের ক্ষয়ক্ষতিসহ নিজেদের আবাসন্থলে

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ গযওয়া ও বনু কুরায়যা Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.