ইমাম আহমদ বলেন : আমার নিকট আবদুর রাঘৃযাক আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা)
সুত্রে বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) খালিদ ইবন ওলীদকে আমার যতদুর মনে
পড়ে জুযায়মা গোত্রে প্রেরণ করেন ৷ তিনি সে গোত্রের লে ৷কজনকে ইসলাম গ্রহণ করার আহ্বান
জানান কিন্তু তারা স্পষ্টভাবে এ কথা বলেনি যে, আমরা ইসলাম গ্রহণ করলাম’ বরং তারা এ
কথা বলে যে, আমরা ধর্মান্তরিত হলাম ৷ আমরা ধর্মান্তরিত ৩হলাম ৷ ফলে খালিদ তাদেরকে বন্দী
ও হত্যা করার জন্যে পাকড়াও করেন ৷ ইবন উমর (রা ) বলেন, খালিদ আমাদের প্রত্যেকের কাছে
একজন করে বন্দীকে তুলে দেন ৷ পরের দিন সকাল বেলা আমাদের প্ৰতেককে নিজ নিজ
বব্দীকে হত্যা করার নির্দেশ দেন ৷ জবাবে আমি বললাম, আল্লাহর কলম আমি আমার বন্দীকে
হত্যা করবো না এবং আমার য ৷রা ভক্ত আছে তা ৷রাও কেউ৩ তাদের বন্দীবে হত্যা করবে না ৷ ইবন
উমার (রা) বলেন, এরপর সকলে নবী করীম (সা) এর কাছে ৷ফরে এসে খালিদের কর্মকাণ্ড
সবিস্তারেড় তাকে জানায় ৷ তখন নবী করীম (সা) দুহাত ৩উঠিয়ে দুআ করেন, : “হে আল্লাহ্ !
খালিদ যে কাজ করেছে৩ তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই ৷ এ কথা টি রাসুলুল্লাহ্ (সা) দু বার
বলেন ৷ বুখারী ও নাসাঈ আবদুর রাবযাক সুত্রে, আবদুল্লাহ ইবন উমার (বা ) থেকে এ হাদীছঢি
অনুরুপ বর্ণনা করেন ৷ ইবন ইসহাক বলেন ০; খালিদ যখন তার কর্মকাণ্ড শুরু করেন, যে দৃশ্য
দেখে জাহ্দাম বলেছিল, ওহে বনী জ্বযায়মা ! লড়াই বৃথ৷ গেল, তোমরা এখন যে অবস্থায়
পড়েছ আমি পুর্বেই সে ব্যাপারে তােমাদেরকে সতর্ক করেছিলাম ৷
ইবন ইসহাক বলেন০ আমার নিকট এ স০ বাদ পৌছেছে যে, ঐ দিনের ঘটনার ব্যাপারে
খালিদ ও আবদুর রহমান ইবন আওফের মধ্যে কথা ক৷ ৷টাকাটি হয় ৷ আবদুর রহমান খালিদকে
বলেছিলেন, তুমি ইসলামের মধ্যে এসে একটা জাহিলী যুগের কাজ করলে ৷ জবাবে খালিদ
বলেন : আমি তোমার পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিয়েছি ৷ আবদুর রহমান বললেন, তুমি মিথ্যা
বলছে৷ ৷ আমার পিতার হত্যাকারীকে তো আমি হত্যা করেছি ৷ তুমি বরং তোমার চাচ৷ ফাকিহ
ইবন মুগীরার হত্যার প্রতিশোধ নিয়েছে৷ ৷ এ বিতণ্ডা শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে তিক্ততার সৃষ্টি
করে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট যখন এ সংবাদ পৌছলাে তখন তিনি বললেন :
“ ধীরে , খালিদ ! ধীরে ৷ আমার সাহাবীদের ব্যাপারে সাবধান আল্লাহ্র কসম , যদি তোমার
কাছে উহুদ পরিমাণও স্বর্ণ থাকে, আর তা তুমি আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দাও, তা হলেও তুমি
আমার সাহাবীদের এক সকাল কিৎবা এক বিকালের পুণ্য লাভেও সমর্থ হবে না ৷ ”
তারপর ইবন ইসহাক খালিদ ও আবদুর রহমানের মধ্যকার দ্বরুন্দুর মুল ঘটনা উল্লেখ করেন ৷
তিনি বলেন ঘ্র তিন ব্যক্তি যথা : ( ১ ) খালিদ ইবন ওয়ালীদের চাচা ফাকিহ ইবন মুপীর৷ ইবন
আবদুল্লাহ ইবন উমার ইবন মাখবুম, (২) আওফ ইবন আবদ আওফ ইবন আবদুল হারিছ ইবন
যুহ্রা ৷ আওফের সাথে তার পুত্র আবদুর রহমানও ছিল (৩) আফ্ফান ইবন আবুল আস ইবন
উমাইয়৷ ইবন আবদে শাম্স ৷ আফফানের সাথে তার পুত্র উছমানও ছিল ৷ উক্ত তিন ব্যক্তি
বাণিজের উদ্দেশ্যে ইয়ামানে গমন করে ৷ বাণিজ্য শেষে তার৷ দেশের দিকে প্রত্যাবর্তন করে ৷
বনু জুযায়মার এক ব্যক্তি ইয়ামড়ানেগ্ গিয়ে মারা যায় ৷ তার মালামাল ওয়াবিছদেব নিকট পৌছে
দেওয়া র জন্যে ঐ তিন জন সাথে করে নিয়ে আসে ৷ত তারা মান নিয়ে জুযায়মা গোত্রে পৌছলে ঐ
মৃত ব্যক্তির ওয়া ৷রিছদের নিকট অর্পণ ৷করার পুর্বেই একই গোত্রের খ৷ লিদ ইবন হিশাম নামের এক
ব্যক্তি উক্ত মালামালের দাবী করে ৷ কিন্তু তারা তাকে মাল দিতে অস্বীকার করে ৷ ফলে উভয়ের
মধ্যে সংঘর্ষ ৰ্বাধে ৷ সংঘর্ষে আওফ ও ফাকিহ নিহত হয় এবং তাদের দৃ’জনের অর্থ-সম্পদ ও
তারা লুট করে নিয়ে যায় ৷ আওফের পুত্র আবদুর রহমান তার পিতার ঘাতক খালিদ ইবন
হিশামকে হত্যা করেত তার প্রতিশোধ নেন ৷ আফ্ফান ও তার পুত্র উছমান প্রাণে বেচে যান এবং
পালিয়ে মক্কায় চলে আসেন ৷ কুরায়শরা এ ঘটনা ৷র প্রতিশে ৷ ধ নেয়ার জন্যে বনু জুযায়মা র বিরুদ্ধে
যুদ্ধের পরিকল্পনা করে ৷ বনু জুযায়মা কুরায়শদের নিকট এই মর্মে ওযর পেশ করে সংবাদ পাঠায়
যে, আমাদের গোটা গোত্র ও নেতৃবৃন্দ তোমাদের লোকদের সংগে সংঘর্ষ ৰ্বাধায়নি ৷ তারা নিহত
দৃ’কুরায়শীর বক্তপণ পরিশোধ করে এবং তাদের অর্থসম্পদও ফিরিয়ে দেয় ৷ এভাবে একটি
ঘনায়মান যুদ্ধের অবসান ঘটে ৷
এ কারণেই খালিদ ইবন ওয়ালীদ আবদুর রহমান ইবন আওফকে বলেছিলেন, তোমার
পিতাকে বনু জুযায়মা হত্যা করেছিল, আজ আ ৷মি সেই হত আর প্ৰতিশোধ নিলাম ৷ আর আবদুর
রহমান তার জবাবে বলেছিলেন, আমার পিতার হত্যার প্রতিশোধ আমিই নিয়েছি এবং পিতার
ঘাতককে আমিই হত্যা করেছি ৷ খালিদ ইবন ওয়ালীদের দাবির প্রতিবাদ করে আবদুর রহমান
বলেন যে, সেতাে তার চাচা ফাকিহ ইবন মুগীরার হত্যার প্রতিশোধ নিয়েছে ৷ কেননা, বনু
জুযায়মা তার চাচাকে হত্যা করে ও মালামাল কেড়ে নেয় ৷
বন্তুতপক্ষে খালিদ ও আবদুর রহমান প্রকৃত ব্রকেই নিজ নিজ ধারণার সঠিক ছিলেন ৷ তর্কের
ক্ষেত্রে এ জা ৷ভীয় বক্তব্য স্বাভাবিক ৷ কেননা, এ যুদ্ধে খালিদের উদ্দেশ্য ছিল ইসলামের ও
মুসলমানদের সাহায্য করা যদিও তার ঐ পদক্ষেপটি ছিল ভ্যুন ৷ এ ছাড়া খালিদ মনে করেছিলেন
যে, বনুজুযায়মার৷ “ধমা ম্ভরিত হয়েছি ৷ ধর্মান্তরিত হয়েছি” (াএ্া১ ৷এ্) বলে ইসলামকে
হেয় প্রতিপন্ন করছে ৷ এ কথার দ্বারা তার৷ ইসলাম গ্রহণ করেছে, খালিদ তা বুঝতে পারেন নি ৷
সে কারণে তিনি তাদের বিপুল সং খ্যক লোককে হত্যা করেন এর০ অবশিষ্টদের বন্দী করেন ৷
আবার বন্দী ৷দেব মধ্যে বেশীরভাগকে পরে হত্যা করে ফেলেন ৷ এতদৃসত্বেও বাসুলুল্লাহ্ (সা)
তাকে সেনাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারণ করেননি ,বরং পরবর্তী অভিযানের জন্যেও তাকে এ
পদেই বহাল রাখেন ৷ অবশ্য তার এ তৎপরতার জন্যেও তিনি তা ৷ল্লাহ্র নিকট নিজের দায়িত্ব মুক্তির
কথা ব্যক্ত করেন ৷ অপর দিকে ত ৷র ভুলের জন্যে রক্তপণ ও আর্থিক ক্ষতিপুরণ প্রদান করেন ৷
রাষ্ট্র প্রধান বা সেনা প্রধানের ভুলের ক্ষতিপুরণ তার নিজের অর্থ থেকে যাবে না, বায়তৃল-মাল
থেকে দেওয়া হবে ৷ এ ব্যাপাঝেউলামাদেব এক অ০ শের মত হল বায়তুল সাল থেকে দেওয়া
হবে ৷ খালিদের উপরোক্ত ঘটনায় রাসুলুল্লাহ্ (সা) কত র্তৃক ক্ষতিপুরণ আদায় করা ঐ সব আলিমের
মতের পক্ষে বলিষ্ঠ দলীল ৷ রিদ্দার যুদ্ধে খালিদ ইবন ওয়ালীদ মালিক ইবন নুওয়ায়রাকে হত্যা
করে তার শ্রী উম্মে তামীমকে নিজে গ্রহণ করলে উমার ইবন খাত্তাব (রা) খলীফ৷ আবু বকর
সিদ্দীক (বা) এর নিকট খ৷ লিদের অপসারণ দ বি করেন এবং বলেন
-ত ৷র তরবাবির মধ্যে যুলুম আছে ৷ কিন্তু খলীফা আবুবকর (রা) তাকে অপসারণ করেননি এবং
বলেন০ — যে তরবারি আল্লাহ্ মুশরিকদের
উপর কােষমুক্ত করেছেন, সে৩ তরবারি অ ৷মি কোষবদ্ধ করবো না ৷
ইবন ইসহাক বলেনং : আমা র নিকট ইয়া কুব ইবন উতবা ইবন মুগীরা ইবন আখনাস যুহরীর
সুত্রে ইবন আবু হাদরাদ আসলামী থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি বলেন, একদা আমি খালিদ ইবন
ওয়ালীদের অশ্বারোহী বাহিনীর মধ্যে ছিলাম ৷ তখন আমার সমবয়সী বনু জুযায়মার এক যুবক-
যার হাত দু’পাছি রশি দিয়ে ঘাড়ের সাথে বাধা এবং তার থেকে তার দ্রেই কতিপয় মহিলা
সমবেত, এ অবস্থায় সে আমাকে সম্বোধন করে বললো : ওহে যুবক ৷ ন্ভ্রা৷মি বললাম, তুমি কি
চাও ? সে বললো, তুমি কি এই রশি ধরে আমাকে ঐ মহিলাদের কাছে নিয়ে যেতে পার ? তাদের
কাছে আমার কিছু প্রয়োজন আছে ৷ প্রয়োজন শেষে তুমি আবার ৰু মামাকে ফিরিয়ে আনবে ৷
তারপরে তোমাদের যা মনে চ ৷য় ৷তাই করবে ৷ আ ৷মি বললাম, আল্লাহ্র কলম, তৃমি যা চা ৷৷৩ইছো
তা একেবারে মামুলী ব্যাপার ৷ এরপর আমি রশি ধরে৩ তাকে নিয়ে গেলাম এব০ মহিলাদের
সামনে হাযির করলাম ৷ যে সেখানে দ৷ ৷ড়িয়ে বললো :
“আমার জীবনের শেষ প্রান্তে দা ৷ড়িয়ে তুমি শা ৷স্তিতে থ৷ ৷ক হে হুবায়শ ৷”
অর্থং (হায়রে হুবায়শ !)তু মি কি লক্ষ্য করনি, অ মি যখনই৫ আমাদেরকে খুজেছি, তখনই
পেয়েছি হয় হিলিয়ায়, না হয় পেয়েছি খাওয়ানিকে ৷
ঐ প্রেমিক কি কিছু পাওয়ার যোগ্য হয়নি, যে অন্ধকার রাত্রে ও প্রচন্ড গরমে সফরের কষ্ট
বরণ করেছে ?
আমার কোন অপরাধ নেই ৷ কেননা আমার লোকজন যখন একত্রে ছিল, তখন আমি
বলেছিলাম কোন একটা বিপদ ঘটার আগেই তুমি প্রেমের বদলা দাও ৷
আমি আরও বলেছিলাম আমাকে তুমি তা ৷৷লবাস র বিনিময় দাও, দুর্যোগ এসে দুরত্ব সৃষ্টি
ক ৷র আগেই ৷ কেননা, বিরহী বন্ধুর কারণে নিজ পরিবারের কর্তাও দুরে চলে যায় ৷
কেননা, আমি গোপন আমানত ফীস করে দিয়ে খিয়ানত করিনি ৷ আর তোমার পরে আর
কান সুন্দরীকে আমার চক্ষু( তোমার চেয়ে আকর্ষণীয় পায়নি ৷
তবে সমাজ সম্প্রদায়ের কারণে ভালবাসার কখনও বা সাময়িকভাবে ডাটা পড়তে পারে ৷ তবে
উভয় দিক থেকে ভালবাসা থাকলে কোন অসুবিধা হয় না ৷
কবিতা শোনার পর মহিলাটি বললোং আমি ৫৩ তা মাঝে মাঝে বিরতিসহ উনিশ বছর এবং
বিরতিহীনভা ৷৫ব আট বছর যাবত তোমার ডাকে সাড়া দিয়েছি ৷ আবু হাদরাদ বলেন, আমি
৫লাকটিকে সেখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলাম ও৩ার গর্দান উড়িয়ে দিলাম ৷
ইবন ইসহাক বলেনং আবু ফারাস ইবন আবু সুনৃবুল৷ আসলাযী ব্ওর কতিপয় প্রত্যক্ষদর্শী
শায়খের উদ্ধৃতি ৩দিয়ে আমার নিকট বর্ণনা করেন, ঐ যুবকটির পর্দা ন যখন উড়িয়ে দেয়৷ হচ্ছিল,
তখন তার সেই প্রেমিকা সেখানে দ৷ ৷ড়ি৫য় তা’ প্রত্যক্ষ করছিল ৷ তারপর সে তার ৫প্ৰমি৫কর উপর
উপুড় হয়ে পড়ে এবং তাকে চুম্বন করতে করতে সেও সেখানে প্রাণ বিসর্জন দেয় ৷ হাফিয
বায়হাকী হুমায়দী সুত্রে — ইসাম মুযায়নী থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (না)
কোন অভিযানে সৈন্য প্রেবণকা৫ল উপদেশ দিতেন যে, কোথাও ৷ৰুপ্কান মসজিদ দেখলে কিৎবা
কোন যুয়ায্যিনের আযান শুনতে পেলে তথাকার কাউ৫কও হত্যা করবে না ৷ একবা৫রর ঘটনা ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাদেরকে এক অভিযানে প্রেরণ করেন ৷ যাত্রাকালে তিনি আমাদেরকে অনুরুপ
নির্দেশ দিলেন ৷ আমরা তিহামা ৷ব দি৫ক৷ য ৷ত্রা করলাম ৷ পথিমধ্যে দেখলাম একজন পুরুষ একটি
মহিলা কা৫ফলার পশ্চাতে ৩ছুটছে ৷ আমরা তাকে ডেকে বললাম, ও৫হ, ইসলাম গ্রহণ কর ! সে
বললো, ইসলাম কী ? আমরা তাকে ইসলামের ব্যাখ্যা জানালে ৫স৩ তা ৷বুঝতে ব্যর্থ হলো ৷ যে
আমাদের কাছে জিজ্ঞেস করলো ৷ ৫৩ামর৷ যা কর, আমি যদি৩ ৷ ৷ন৷ করি ৫তব আমার কী হবে ?
আমরা বললাম, তা হলে আমরা তোমাকে হত্যা করবো ৷ তখন সে বললো, আমাকে ঐ মহিলা
কা৫ফলার সাথে মিলিত হওয়ার এবন্টু অবকাশ দেবেন কি ? আমরা বললাম, হীা, তোমাকে
অবকাশ দেওয়া হলো ৷ তবে তুমি যেতে থাক ৷ আমরাও তোমার কাছে আসছি ৷ বর্ণনাকারী
বলেন, ৫লাকটি যেতে ৫য৫ত মহিলা কা৫ফলার নাগাল ৫পল ৷ সেত তাদের একজনকে উদ্দেশ্য
করে বললো : তুমি সু৫খ থাক, আমার
আবু ফুরিয়ে যাওয়ার পুর্বে ৷ অপরজন বললো , বিরতিসহ উনিশ বছর এবং বিরতিহীন আট বছর
(এর প্রেম বিনিময় নিয়ে) তুমিও শান্তি৫ত থাক ৷ বংনািকারী এরপর উপরোল্লিখিত কবিতা
এ পর্যন্ত উল্লেখ করলেন ৷ এরপর ৫লাকটি সেখান থেকে ফিরে
এসে আমাদেরকে বললোং : এবার তোমাদের যা ইচ্ছা ৷করতে পার ৷ আমরা তখন অগ্রসর হয়ে
তার গর্দান উড়িয়ে দিলাম ৷ এ সময় ঐ মহিলাটিার হাওদ৷ থেকে বেরিয়ে এসে ৫লাকটির
দেহের উপর উপুড় হয়ে পড়লো এবং এ অবস্থায়ই৩ ৷ তার মৃত্যু হয়ে গেল ৷ এরপর ইমাম বায়হাকী
আবুআবদৃর রহমান নাসাঈ সুত্রে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্
(সা) একবার এক অভিযানে একটি ক্ষুদ্র সেনর্দুাদল প্রেরণ করেন ৷ সে অভিযানে তারা প্রচুর
পনীমত লাভ করেন ৷ আটককৃত বন্দীদের মধ্যে এমন একজন লোক ছিল , যে মুসলিম সৈন্যদের
নিকট নিবেদন করলো, আমি তোমাদের শত্রুপক্ষের লোক নই ৷ আমি এখানকার এক মহিলা৫ক
ভালবাসি৩ ৷৩ার সাথে মিলিত হওয়া র উদ্দেশ্যে এখানে এসেছি ৷ সুতরাং আমাকে একটু অবকাশ
দাও, আমি তাকে শেষ বারের মত একটি বার দেখে আমি ৷ তারপরে তোমাদের যা মনে চায় তা
করো ৷ বর্ণনাকারী বলেন, দেখা গেল লোকটি গিয়ে এক দীর্ঘকায় সুন্দরী মহিলাকে উদ্দেশ্য করে
বলছে : ওহে হুবায়শ ! “তুমি শাস্তিতে থাক, আমার আয়ু শেষ হওয়ার পুর্বে ৷ ” এরপর সে এ
জাতীয় অর্থবােধক কবিতার দু’টি পংক্তি আবৃত্তি করলো ৷ তখন মহিলাটি তার জবাবে বললো :
হীড়া , আমি তো তোমাকে আমার জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছি ৷ এরপর মুসলিম সেনারা তার নিকট
এগিয়ে গিয়ে তার গর্দান উড়িয়ে দিল ৷ তখন মহিলাটি দৌড়ে এসে নিহত লোকটির উপর উপুড়
হয়ে পড়লাে এবং একবার অথবা দুবায় চিৎকার ধ্বনি দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লাে ৷ অভিযান
শেষে মুসলিম সেনাগণ ফিরে এসে রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর নিকট এ ঘটনা ব্যক্ত করলে তিনি
বললেন : তোমাদের মধ্যে কি একজন দয়ার্দ্র হৃদয় লোকও নেই ?”
উয্যা মুর্তি ধ্বংসে খালিদ ইবন ওয়ালীদকে প্রেরণ
ইবন জারীর বলেন : উযযা মুর্তিকে ধ্বংস করা হয়েছিল ঐ বছরের রমযান মাস শেষ হওয়ার
পাচ দিন অবশিষ্ট থাকতে ৷ ইবন ইসহাক বলেন : মক্কা বিজয়ের পর উযযা মুর্তি ৎস করার
জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) খালিদ ইবন ওয়ালীদকে প্রেরণ করেন ৷ নাখলা নামক স্থানে একটি মন্দিরে
উঘৃযা বিগ্রহ স্থাপিত ছিল ৷ কুরায়শ, কিনানা ও মুদার গোত্র এর পুজা করতো ৷ এবং সেবাযতু ও
পাহারাদারীর দায়িতু ছিল বনুহাশিমের মিত্র ও বনুসুলায়মের শাথাঃগাত্র বনু শায়বানের উপর ৷
সুলামী দারোয়ান যখন খালিদ ইবন ওলীদের আগমনবার্তা শুনতে £প্াল, তখন সে তার তলে ৷য়ার
যেতে যেতে সে নিম্নের কবিতা আবৃত্তি করলো :
অর্থ : হে উয্যা ! তুমি খালিদের উপর প্রচণ্ড আঘাত হান, যাতে সে পংগু হয়ে যায় ৷ আর
ঘোমটা ফেলে দিয়ে চাদর পেচিয়ে লও ৷
হে উঘৃযা ! তুমি যদি খালিদকে হত্যা করতে না পার, তবে দ্রুত পাশের বোঝা র্কাধে নিয়ে
ফিরে এসো ; অথবা নাসারা-ধর্মগ্রহণ কর ৷
খালিদ যখন সেখানে পৌছলেন, তখন মুর্তিকে সম্পুর্ণ ধ্বংস করে তবে ছাড়লেন এবং কাজ
সম্পাদন করে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট ফিরে এলেন ৷ ওয়াকিদী ও প্রমুখ ঐতিহাসিকগণ
লিখেছেন, রমযান মাস শেষ হওয়ার পাচ দিন বাকি থাকতে খালিদ উয্যা ধ্বংস করার জন্যে গমন
করেন ৷ ধ্বংস-ক্রিয়া সম্পন্ন করে ফিরে আসেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে অবহিত করেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি সেখানে কী দেখলে ? খালিদ বললেন, কিছুই
দেখিনি ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) র্তাকে পুনরায় সেখানে যেতে নির্দেশ দিলেন ৷ খালিদ যখন
দ্বিতীয়বার সেখানে গেলেন, তখন দেখলেন, ঐ মন্দিরের মধ্য থেকে কৃষ্ণকায় কোকড়ান
এলােকেশী এক মহিলা তলোয়ার উচু করে বেরিয়ে আসছে এবং কবিতার ছন্দে বলছে :
“হে উবৃযা ! আমি তোমার অবাধ্যতার ঘোষণা দিচ্ছি ৷ তোমার পবিত্রতার ঘোষণা দিচ্ছি না ৷
আমি প্রত্যক্ষ করলাম, আল্পাহ্ তোমাকে কিভাবে অপদস্থু করেছেন ৷”
৬৯
এরপর খালিদ ঐ মন্দিরও ধ্বংস করে দেন, যাতে উঘৃযার বিগ্রহ ছিল এবং মন্দিরের মালপত্র
যা ছিল সব কিছু নিয়ে আসেন ৷ খালিদ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট এসে সমস্ত ঘটনা শুনালে তিনি
বললেন : ৷ হলো উঘৃযা, তার পুজা আর কখনও হবে না ৷ ইমাম
বায়হাকী মুহাম্মাদ ইবন আবু বকর ফকীহ আবুৎ তুফায়ল থেকে বর্ণনা করেন : রাসুলুল্লাহ্
(সা) মক্কা বিজয়ের পর থালিদ ইবন ওলীদকে নাখলায় প্রেরণ করেন ৷ কারণ, তথায় উয্যা মুর্তি
স্থাপিত ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নির্দেশ পেয়ে তিনি সেখানে গমন করেন ৷ সে মুর্তি তিনটি
মুল্যবান কাঠের পায়ার উপর স্থাপিত ছিল ৷ খালিদ ঐ পায়াগুলি কেটে দেন এবং যে ছাদের নীচে
মুর্তি ছিল সে ছাদও ধ্বসিয়ে দেন ৷ এরপর তিনি সেখান থেকে এতড়াবর্তন করে রাসুলুল্লাহ্
(না)-কে সবকিছু অবহিত করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না) তাকে বললেন, পুন্ রায় ফিরে যাও, তুমি
কিছুই করতে পারনি ৷ সুতরাং খালিদ আবার সেখানে ফিরে পেলেন ৷ উঘৃয৷ মুর্ডিং সেবায়েতগণ
খালিদকে দেখেই ভীত বিহ্বল হয়ে পাহাড়ে গিয়ে উঠলাে ৷ পালাবার ন্সময় তারা বলতে লাগলো :
ওহে উয্যা ! ওকে নিশ্চল করে দাও ৷ ওকে অন্ধ করে দাও ৷ যদি তা না পার , তবে নিজে লাঞ্ছিত
হয়ে মরে যাও ৷ রাবী বলেন, খালিদ মুর্তির কাছে পৌছলে দেখেন, এক উলংগ এলোকেশী নারী,
মাটি খুড়ে খুড়ে মাথায় ও মুখে মাখছে ৷ খালিদ তাকে তলোয়ারের আঘাতে হত্যা করলেন ৷
তারপর তিনি ফিরে এসে নবী করীম (না)-কে ঘটনা জানালে তিনি বললেন : এটাই প্রকৃত
উযযা ৷
মক্কায় রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর অবস্থান-কাল
মক্কা বিজয়ের পর রমযান মাসের অবশিষ্ট দিনগুলো রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখানেই কাটান ৷ এ
সময়ে তিনি যে নামায কসর পড়েন ও রােযা রাখেননি এ ব্যাপারে কারও কোন দ্বিমত নেই ৷ এটা
সেসব আলেমদের মতের স্বপক্ষে দলীল যীরা বলেন, মুসাফির যাঈ কোথাও অবস্থান (ইকামত)
করার দৃঢ় সংকল্প না করে, তবে আঠার দিন পর্যন্ত যে নামায কসর করতে পারবে ৷ অবশ্য এ
আলিমদের আর একটি মত যথাস্থানে লিপিবদ্ধ আছে ৷ ইমাম বখারী আবু নৃআয়ম আনাস
ইবন মালিক সুত্রে বণ্নাি করেন, তিনি বলেন : আমরা রাসুলুল্লাহ্ সাট্রুা-এর সাথে দশ দিন অবস্থান
করেছিলাম ৷ এ সময়ে তিনি নামায়ে কসর করতেন ৷ সিহাহ্সিতাং অন্যান্য সংকলকগণ ইয়াহ্য়া
ইবন আবুইসহাক হাদরামী আল-বসরী সুত্রে আনাস (রা) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ ধুখারী
আবদান ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) (মক্কায়) উনিশ দিন
অবস্থান করেন এবং দৃরাকআত করে নামায আদায় করেন ৷ এ হাদীছ বুখারী অন্য সুত্রেও বর্ণনা
করেছেন ৷ বুখারী ও আবু হুসায়ন উত্তরে এবং আবু দাউদ, তিরমিযী ও ইবন মাজা এ হাদীছটি
আসিম ইবন সুলায়মান ইবন আব্বাস সুত্রে কিছুটা অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন ৷ তবে আবু
দাউদের ভাবে অবস্থানকাল সতের দিন বলে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ আহমদ ইবন ইউনুস
ইবন আব্বাস সুত্রে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন : আমরা কোন এক সফরে রাসুলুল্লাহ্
(সা ) এর সাথে উনিশ দিন একই স্থানে অবস্থান করি ৷ তখন আমরা নামায়ে কসর করেছি ৷ ইবন
আব্বাস (রা) বলেন, এ কারণেই আমরা যখন কোন স্থানে উনিশ দিন পর্যন্ত অবস্থান করি তখন
নামায কসর পড়ি ৷ কিভু উনিশ দিনের বেশী অবস্থান করলে নামায পুরোপুরি পড়ি ৷ আবু দাউদ
ইব্রাহীম ইবন মুসা ইমরান ইবন হুসায়ন সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন : আমি
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে থেকে যুদ্ধ করেছি ৷ মক্কা বিজয়ে তীর সাথে থেকেছি ৷ তিনি তথায়
আঠার রাত পর্যন্ত অবস্থান করেন ৷ এ সময়ে তিনি দৃরাকআত করে নামায পড়েছেন ৷ তার চেয়ে
বেশী পড়েননি ৷ তিনি পরিষ্কার বলে দিতেন : “হে মক্কার অধিবাসীরা ! তোমরা নামায চার
রাকআত পড় ৷ আমরা তাে মুসাফির ৷” ইমাম তিরমিযী এ হাদীছ আলী ইবন যায়দ ইবন জ্বাদআন
থেকে অনুরুপ বংনাি করে মন্তব্য করেছেন যে, এ হাদীছ হাসান পর্যায়ের ৷ এরপর ইমাম তিরমিযী
এ হাদীছ মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক যুহরী আবদুল্লাহ ইবন আবদুল্লাহ সুত্রে ইবন আব্বাস (রা) সুত্রে
বনাি করেন ৷ তিনি বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) মক্কা বিজয়ের পর সেখানে পনের রাত অবস্থান
করেন এবং নামায়ে কসর করেন ৷ এরপর তিরমিযী বলেন, এ হাদীছ ইবন ইসহাক থেকে
একাধিক রাবী বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তারা কেউ ইবন আব্বাসের উল্লেখ করেননি ৷ ইবন ইদরীস
মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক থেকে, তিনি যুহরী ও মুহাম্মাদ ইবন আলী ইবন হুসায়ন , আসিম ইবন আমর
ইবন কাতাদা, অড়াবদুল্লাহ্ ইবন আবু বকর, আমর ইবন শুআয়ব ও আরও কতিপয় রাবী থেকে
রক্ষা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) মক্কায় পনের রাত অবস্থান করেন ৷