Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » রাসূলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট মালিক ইবৃন আওফ নাসরীর আগমন

রাসূলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট মালিক ইবৃন আওফ নাসরীর আগমন

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • তা দিলেন এবং কিছু লোককে বাদ রাখলেন ৷ যাদেরকে বাদ রাখলেন, তাদের সম্পর্কে তিনি
    জানতে পারেন যে, তারা তার উপর অসভুষ্ট হয়েছেন ৷ তখন তিনি তাদের উদ্দেশ্যে এক ভাষণ
    দেন ৷ প্রথমে আল্লাহ্র প্রশংসা ও গুণগান প্রকাশ করেন ৷ তারপর উপরোক্ত বর্ণনার মত কথা
    বলেন ৷ বুখারী একাই এ হাদীস উক্ত সুত্রে বর্ণনা করেছেন ৷

    ইবন হিশাম বলেন, আনঃসারদেরকে গনীমত থেকে বঞ্চিত করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে
    করি হাসৃসান ইবন ছাবিত বলেন :

    “দুঃখ বেড়ে গেছে, চোখের পানি অঝোরে গড়িয়ে পড়ছে ৷ সে পানি একত্রিত করছে অশ্রু
    নির্গমনের পথ” ৷

    আমার এ দুঃখ শাম্মার জন্যে ৷ শাম্মা তো সুঠাম দেহের অধিকারী, সরু কােমর বিশিষ্ট ৷ তার
    মধ্যে নেই কোন নােৎবামি, নেই কোন দুর্বলতা ৷

    শাম্মার কথা এখন ছেড়ে দাও ৷ কেননা, তার ভালবাসা ছিল ক্ষণিকের জন্যে ৷ আর মিলন
    প্রত্যাশীর কাছে নিকৃষ্ট মিলন তাে সেটাই যা হয় ক্ষণিকের ভরে ৷

    তুমি বরং বাসুলুল্লড়াহ্ (না)-এর কাছে যাও এবং বল : হে মু’মিনদের বিশ্বস্ত আশ্রয়স্থল ! যখন
    লোক গণনা করা হয়, তখন বনু সুলায়মকে ডাকা হয় কিসের ভিত্তিতে, সেই সম্প্রদায়ের
    ঘুকাবিলায় যারা এবং একমাত্র যারাই আশ্রয় দিল ও সাহায্য করলো ?

    ১ কোন কোন মুদ্রণে রু,ম্পা ৷ এ১ (“দুঃখের কথা বাদ দাও ) রয়েছে ৷

    আল্লাহ্ই তাদের নাম দিয়েছেন আনসার (সাহায্যকারী) কারণ, তারা সত্য দীনের সাহায্য
    করেছে এমন সময় যখন যুদ্ধের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছিল ৷

    আল্লাহর পথে তারা অগ্রগামী ৷ ঘুসীবত ও দৃর্যোগের মুকাবিলা করেছে তারা ৷ কখনও তারা
    বিশ্বাসঘাতকতা করেনি, অস্থিরতাও দেথায়নি ৷

    আপনার ব্যাপার নিয়ে মানুষ আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ৷ তখন আমাদের আর কোন উপায়
    থাকে না তলােয়ার ও বর্শার হাতল ছাড়া ৷

    বাপিয়ে পড়া লোকদের সাথে আমরা যুদ্ধ করি ৷ এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দিই না ৷ আর
    ওহীলব্ধ সুরা সমুহে যা আদেশ করা হয়েছে তার আমরা ব্যর্থ হতে দিই ন ৷ ৷

    যুদ্ধের অপরাধীরা আমাদের সমাবেশকে করেনা অপসন্দ ৷ আমরা তখনই জ্বলে উঠি, যখন
    যুদ্ধের আগুন জ্বলে ওঠে ৷

    যে রকম আমরা প্রতিহত করে দিয়েছিলাম বদর যুদ্ধে মুনাফিবরা যা চেয়েছিলো তা ৷ ফলে
    আমাদের মধ্যেই নেমে আসে জয়ের মালা ৷

    আমরাই তো ছিলাম আপনার সৈনিক সেই যুদ্ধে যা সংঘটিত হয় উহুদ পর্বতের টিলার পাশে,
    যে দিন ষুযার গোত্র গর্বভরে সংপ্নহ করেছিলাে সে যুদ্ধের সৈন্যগণকে ৷

    আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়িনি, দুর্বলও হয়ে য়াইনি ৷ আমাদের থেকে কোন পদস্থালন কেউ পায়নি,
    যখন অন্য সব লোকের পদস্থালন ঘটেছিলাে ৷

    ইমাম বুখারী বলেন : কুবায়সা সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ থেকে বর্ণিত যে, তিনি
    বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা) যখন হুনায়নের গনীমত বণ্টন করে দেন, তখন আনসারদের এক ব্যক্তি
    বলে উঠলো, “এ বণ্টনে তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাথেননি” ৷ এ কথা ওনার পর আমি
    রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর কাছে এসে ভীকে কথাটি জানালাম ৷ তখন তার চেহারার রং পরিবৃর্তা হয়ে
    গেল ৷ তারপর তিনি বললেন, “আল্লাহ মুসা (আ)-এর প্রতি রহমত করুন ৷ র্তাকে এ থেকেও
    বেশি কষ্ট দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু তিনি সবর করেছিলেন ৷ ইমাম মুসলিমও এ হাদীছ আমাশ
    সুত্রে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম বুখারী আরও বলেন : কুতায়বা ইবন সাঈদ আবু ওয়াইল
    সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, যখন হুনায়নের দিন গনীমত
    বণ্টনেব সময় হলো, তখন নবী (সা) কতিপয় ব্যক্তিকে কিছু বেশী দিলেন ৷ আকরা’ ইবন
    হাবিসকে দিলেন একশ’ উট ৷ উয়ায়নাকেও দিলেন অনুরুপ ( একশ’ উট) ৷ এভাবে আরও কিছু
    লোককে বেশি বেশি করে দিলেন ৷ তখন এক ব্যক্তি বলে ফেললাে, এ বণ্টনের মধ্যে আল্লাহর
    সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য করা হয়নি ৷ রাবী বলেন, আমি বললাম , নবী কবীম (না)-কে অবশ্যই আমি এ
    কথা জানিয়ে দিব ৷ (তারপর আমি তাকে কথাটি জানিয়ে দিলাম) ৷ কথাটি শুনার পরে তিনি
    বললেন, “আল্লাহ মুসা (আ)-এর প্রতি রহমত বর্ষণ করুন ৷ র্তাকে এর চেয়েও অধিক কষ্ট দেওয়া
    হয়েছে ; কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন” ৷ বুখড়াবীর এক বর্ণনায় কথাটি এভাবে আছে যে , এক
    ব্যক্তি রললাে, “এ বণ্টনে ন্যায়-নীতি রক্ষিত হয়নি এবং এতে আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতিও লক্ষ্য রাখা
    হয়নি” ৷ রাবী বলেন, আমি বললাম , আল্লাহর কসম ! আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-কে অবশ্যই জানিয়ে

    দিব ৷ এরপর আমি রড়াসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট আসলাম এবং তাকে সে বিষয়ে অবহিত করলাম ৷
    কথা শুনে তিনি বললেন, “আর কে ন্যায়-নীতি রক্ষা করবে ৷ যদি আল্লাহ্ ও তার রাসুল ন্যায়-নীতি
    রক্ষা না করেন ? আল্লাহ মুসা (আ)-এর উপর সদয় হোন ৷ তাকে এর চেয়েও অধিক কষ্ট দেওয়া
    হয়েছিল ৷ কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করেন” ৷

    মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক বলেন : আবু উবায়দা ইবন মুহাম্মাদ ইবন আমার ইবন ইয়াসির
    আবদুল্লাহ ইবন হারিছ ইবন নওফলের আযাদকৃত গোলাম মিকসাম আবুল কাসেম থেকে বর্ণনা
    করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি ও তালীদ ইবন কিলাব বেরিয়ে পড়লাম এবং আবদুল্লাহ ইবন
    আমর ইবন আস (রা ) এর নিকট উপস্থিত হলাম ৷ তিনি তখন বায়তুল্লাহ্র তাওয়াফ করছিলেন ৷
    তার হাতে ঝুলানাে ছিল তার জুতা ৷ আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম, হুনায়নের দিন তামীমী যখন
    রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে কথা বলছিলো, তখন কি আপনি সেখানে উপ ত ছিলেন ? তিনি
    বললেন, “হী৷ ৷ বনুতামীমের যুল খুওয়ায়সিরা নামক এক লোক এসে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর পাশে
    দাড়ায় ৷ তিনি তখন মানুষের মধ্যে গনীমত বণ্টন করছিলেন ৷ ৷:লাকটি বললাে , “হে মুহাম্মাদ !
    আজ যা আপনি করেছেন, আমি তা দেখেছি ৷” রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলা:লন, “আচ্ছা ৷ তা তুমি কি
    দেখেছো” ? সে বললো, দেখলড়াম, আপনি ইনসাফ মত কাজ করেননি ৷ এ কথা শুনে তিনি
    ৫ক্রাধান্বিত হলেন ৷ তিনি বললেন, “ধিক্কার তোমাকে ; আমার কাছে যদি ইনসাফ না থাকে তবে
    আর কার কাছে ইনসাফ থাকবে” ? তখন উমর ইবন খড়াত্তাব (রা ) বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ্ !
    আমি কি তাকে হত্যা করবো না” ? তিনি বললেন ছেড়ে দাও ওকে ৷ ’ ভবিষ্যতে তার একটি দল
    হবে ৷ যারা দীনের মধ্যে বাড়াবাড়ি করবে ৷ ণ্শষ পর্যন্ত তারা দীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে,
    যেমনভাবে তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায় ৷ যার ফলকে লক্ষ্য করলে কিছুই পাওয়া যায়না ৷
    তাবপবে দণ্ডের দিকে দৃষ্টি দিলেও কিছু পাওয়া যায় না ৷ এরপরে গোড়ার দিকে তাকালেও কিছু
    পাওয়া যায় না ৷ অথচ তা গোবর ও রক্ত ভেদ করে বেরিয়ে গেছে” ৷

    লায়ছ ইবন সা’দ ইয়াহয়া ইবন সাঈদ জাবির ইবন আবদুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন যে
    তিনি বলেছেন : একজন লোক জিইররানায় রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে আসে ৷ তিনি হুনড়ায়ন
    থেকে যেখানে এসেছিলেন ৷ বিলালেব কাপড়ের মধ্যে ছিল রৌপ্য ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখান
    থেকে তুলে নিয়ে লোকদের মধ্যে বিলিয়ে দিচ্ছিলেন ৷ তখন লোকটি বললাে , “হে মুহাম্মাদ !
    ইনসাফ মত কাজ করুন” ৷ তিনি বললেন, “তোমাকে ধিক্কার ! আমি যদি ইনসাফ মত কাজ না
    করি তবে আর কে ইনসাফ করবে ? যদি আমি ইনসাফ না করি তাহলে তো আমি ক্ষতি ও

    ত্সের মধ্যে পতিত হবো” ৷ তখন উমর ইবন খাত্তাব বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আমাকে

    অনুমতি দিন, এ মুনাফিককে হত্যা করে দিই” ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন, “আল্লাহর কাছে আশ্রয়
    চাই, একে হত্যা করলে লোকে বলবে, আমি আমার সাথীদের হত্যা করি ৷ এই লোক ও তার
    অনুপামীরা কুরআন পাঠ করে ; কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালীব নীচে যায় না ৷ তারা কুরআন থেকে
    এমনভাবে বের হয়ে যায়, যেমনভাবে তীর বের হয়ে যায় শিকার ভেদ করে” ৷

    ইমাম মুসলিম এ হাদীছটি মুহাম্মাদ ইবন রুমহ্ থেকে লায়ছ এর সুত্রে বর্ণনা করেছেন ৷
    ইমাম আহমদ বলেন : আবু আমির কুবরা আমর ইবন দীনার সুত্রে জাবির থেকে বর্ণিত যে, তিনি
    বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন হুনায়নেব গনীমত বণ্টন করছিলেন, তখন এক ব্যক্তি তার পাশে
    ৮০ —

    দাড়িয়ে বললো , ইনসাফ করুন ৷ তিনি বললেন, ইনসাফ না করলে তো আমি দুর্ভাগা হয়ে যাবো ৷
    ইমাম বুখরী এ হাদীছ মুসলিম ইবন ইবরাহীমের সুত্রে কুবৃরা ইবন খালিদ সাদুসী থেকে অনুরুপ
    বর্ণনা করেছেন ৷

    বুখারী ও মুসলিমে ইমাম যুহরী আবু সালমার সুত্রে আবু সাঈদ (না) থেকে বংনাি করেন যে,
    তিনি বলেছেন, আমরা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম ৷ তিনি গনীমতের মাল বণ্টন
    করছিলেন ৷ এ সময় বনুতামীমের যুল-খৃঅয়ায়সিরা নামক স্থানে এসে বললো, “ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ !
    আপনি ন্যায় বিচ৷ ৷র করুন” ৷ তিনি বললেন “ওহে দুর্ভ৷ গ৷ ! আমি যদিা৷ায় বিচার না কবি,৩া
    হলে ন্যায় বিচ৷ ৷র করার আর কে আছে ? আমি তো তখন ধ্বং স ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব ৷ আমি ন্যায়
    বিচ৷ ৷র না করলে আর কে ন্যায় বিচ৷ ৷র করবে ?” তখন উমর ইবন খ্যত্তাব (রা) বললেন “ইয়া
    রাসুলাল্লাহ্ অনুমতি দিন, আমি এর গর্দান উড়িয়ে দিই” ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : “ওর
    ব্যাপারটি ছেড়ে দাও ৷ ওর কিছু অনুসারী আছে ৷ তাদের সালাত ও সিয়ামের তুলনায় তোমরা
    নিজেদের সালাত ও সিয়ামকে নিম্ন মানের মনে করবে ৷ তারা কুরআন পাঠ করে, কিন্তু৩া

    তাদের কণ্ঠ নালীর নীচে পৌছায় না ৷৩ তারা ইসলামের মধ্য থেকে এমনভাহ্ র বের হয়ে যাবে

    যেমনভাবে বের হয়ে যায় ভীর শিক কার ভেদ করে ৷ কিন্তু র্তীরের ফলার দিকে লক্ষ্য করলে কিছুই
    দেখা যায় না ৷ কলার গোড়ার দিকে লক্ষ্য করলেও কিছু পাওয়া যায় না ৷ কা ৷ঠির দিকে তাকালেও
    কিছু পাওয়া যায় না ৷ ফলার বক্র অ ×শের দিকে লক্ষ্য করলেও কোন আলামত দেখা যায় না ৷
    অথচ তা শিকারের দেহের রক্ত ও গোবর ভেদ করে চলে গেছে” ৷ এই দলের একটি লক্ষণ
    হলো, “তাদের এমন এক লোকের আবির্ভাব হবে যার গায়ের রং কৃষ্ণ বর্ণের ৷৩ তার একটা বাহু
    হবে নারীর স্তনের মত ৎব৷ উচু মাংস খঃডের মত ৷ মাংস খণ্ডটি কাপত্তে থাকবে ৷ আমার
    উম্মতের মধ্যে যখন দলাদলির সৃষ্টি হবে তখন এদের আবির্ভাব ঘটরে ৷ আবু সাঈদ (রা) বলেন,
    আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) থেকে আমি নিজে এ কথা শুনেছি ৷ আমি আরও সাক্ষ্য
    দিচ্ছি যে, আলী ইবন আবু৩ তালিব (তার ৷খলাফত কালে) এদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন ৷ সে
    লড়াইয়ে আমিও শরীক ছিলাম ৷ তিনি ঐ লোকটিকে খুজে বের করার নির্দেশ দেন ৷ লোকজন
    তাকে পাওয়ার জন্যে অনুসন্ধান চালায় ৷ পরে সে ধৃত হয়ে তার কাছে আনীত হয় ৷ আমি ঐ
    ব্যক্তির প্রতি লক্ষ্য করে দেখেছি, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যে সব আলামতের কথা বলেছিলেন, সে সবই
    তার মধ্যে বিদ্যমান আছে ৷ ইমাম মুসলিমও এ হাদীছটি কাসিম ইবন ফযল আবুনাদরার সুত্রে
    আবু সাঈদ থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷

    রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দুধ বোনের জিইর্রানায় আগমন

    ইবন ইসহাক বলেন : সা’দ ইবন বকর গোত্রের এক ব্যক্তি আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে,
    হাওয়াযিন যুদ্ধের সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাহাবীদেরকে বলেছিলেন যে, তোমরা যদি সা’দ ইবন
    বকর গোত্রের নাজাদ নামক লোকটিকে পাও তবে সে যেন পালিয়ে যেতে তনা পারে ৷ এই ব্যক্তি
    কোন একটি ঘটনা ঘঢিয়েছিল ৷ মুসলমানগ ৷ণ তাকে ধরতে সক্ষম হন ৷ তারা তাকে তার
    পরিবারবর্গসহ ধরে আনেন ৷ সেই সাথে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দুধ বোন শায়ম৷ বিনত হারিছ ইবন
    আবদুল উঘৃযাকেও ধরে আনেন ৷ আনার পথে শায়মার প্রতি কিছু কঠোরতা করা হয় ৷ শায়মা

    তখন মুসলমানদেরকে বলেন, “আল্লাহ্র কসম ! জেনে রেখ, আমি কিন্তু তোমাদের সাথী
    (সা) এর দুধ বোন” ৷ তারা তার কথা বিশ্বাস করলেন না এবং তাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর নিকট
    উপস্থিত করলেন ৷ ইবন ইসহাক বলেন : আমার কাছে ইয়াযীদ ইবন উবায়দ সা’দী অর্থাৎ আবু
    ওয়াজরা বর্ণনা করেছেন যে, শায়মাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট হাযির করা হলে তিনি বললেন,
    “ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আমি আপনার দুধ বোন” ৷ তিনি জিজ্ঞেস করলেন “তোমার দাবির প্রমাণ
    কি” ? শায়মা বললেন, “শিশুকালে আপনাকে কোলে রেখেছিলাম, তখন আপনি আমার পিঠে
    কামড় দিয়েছিলেন, সেই কামড়ের দাগ এখনও আছে” ৷ রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সে আলামত
    দেখে শ্ানাক্ত করলেন এবং নিজের চাদর বিছিয়ে তাকে বসতে দিলেন ও মুরারকবাদ জানালেন ৷
    এরপর তিনি তাকে প্রস্তাব দিলেন, “ইচ্ছা করলে তুমি আমার কাছে ধকতে পার ৷ আমি ভালবাসা
    ও সােহাগ দিয়ে তোমাকে রাখবাে ৷ আর যদি নিজ গোত্রে ফিরে যেতে ইচ্ছা কর, তা হলে
    মাল-সামগ্রীসহ সেখানে পাঠিয়ে দিব ৷ যেটা ইচ্ছা করতে পার” ৷ শায়মা বললেন, “আমাকে
    মাল-সামগ্রীসহ আমার গোত্রে পাঠিয়ে দিন ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) প্রচুর মাল সামগ্রীসহ তাকে
    তার গোত্রের নিকট পাঠিয়ে দেন ৷ বনু সা’দের লোকেরা বলে থাকে যে , রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    শায়মাকে মাকহুল নামক একজন দাস ও একজন দাসী দিয়েছিলেন ৷ শায়ম৷ তাদের দুজনের
    মধ্যে বিয়ে দিয়ে দেন ৷ ঐ গোত্রের মধ্যে এ দু’জনের বংশধারা অব্যাহতভাবে চলে আসছে ৷
    ইমাম বায়হাকী হাকাম ইবন আবদুল মালিকের সুত্রে কাতদাে থেকে বর্ণনা করেন ৷ যেদিন
    হাওয়াযিন বিজয় হয়, সে দিন একজন মহিলা রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন,
    “ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ ! আমি আপনার দুধ বোন ৷ আমি শায়মা বিনত হারিছ” ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (না)
    তাকে বললেন, “তোমার কথা যদি সত্য হয়, তা হলে তোমার সাথে আমার এমন একটা চিহ্ন
    আছে যা মুছে যায়নি” ৷ এ কথা ওনার পর মহিলাটি তার বাহু উন্মুক্ত করে বললেন, “হ্যা, ইয়া
    রাসুলাল্লাহ্ ! শিশুকালে আপনি আমার এ বাহুতে কামড় দিয়েছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা ) তখন তাকে
    চাদর বিছিয়ে দেন এবং বলেন : “তুমি আবেদন জানাও ৷ তোমাকে আবেদন অনুযায়ী দেওয়া
    হবে ৷ তুমি সুপারিশ কর, যা সুপারিশ করবে তাই রক্ষা করা হবে ৷ বায়হাকী বলেন : আবুনাসর
    ইবন কাতদাে আবৃত তুফায়ল থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, আমি ছোট ছিলাম উটের
    গোশতের খন্ডিত টুকরা বহন করতাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে দেখলাম, জিইররানায় গনীমতের উট
    বণ্টন করছেন ৷ সে সময় তার কাছ একজন মহিলা আসেন ৷ তিনি তার জন্যে নিজের চাদর
    বিছিয়ে দেন ৷ এ অবস্থা দেখে আমি লোকজনের কাছে জিজ্ঞেস করলাম, “এ মহিলাটি কে ?”
    তারা রললাে, ইনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর দুধ মা ৷ এ হাদীছটি গরীব পর্যায়ের ৷ হতে পারে বর্ণনাকারী
    যা বলে বোনকে বুঝাতে চেয়েছেন ৷ কেননা, তিনি তার মা হালীমা সা’দিয়া (রা)-এর সাথে
    থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে লালন পালনে সহযোগিতা করতেন ৷ আর যদি হাদীছটি মাহফুয
    (সুরক্ষিত নির্ভু-৷ ) পর্যায়ের হয়ে থাকেশ্ অর্থাৎ মহিলাটি দুধ মা-ই হয়ে থাকেন ৷ তবে বুঝতে হবে
    যে, হালীমা সা’দিয়া (রা) দীর্ঘ দিন জীবিত ছিলেন ৷ কেননা, দুধ পান করান সময় থেকে
    জিইবৃরানার ঘটনা পর্যন্ত ষাট বছরের অধিক ব্যবধান রয়েছে ৷ আর যখন তিনি দুধ পান করান
    তখন তার বয়স কমপক্ষে ত্রিশ বছর হয়েছিল ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ এরপর তিনি কত বছর
    জীবিত ছিলেন ৷ এ সম্পর্কে একটি মুরসাল হাদীছে বর্ণিত হয়েছে যে, সে দিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর

    দুধ মা ও দুধ পিতা দু ’জনেই তার কাছে এসেছিলেন ৷ এটা ক৩ ৩টুকু সত্য আ ৷ল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
    আবুদাউদ তার মুবসাল বর্ণনায় আহমদ ইবন স৷ ঈদ হামদানী উমার ইবন স ৷ইব সুত্রে
    বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) একদা বসা অবস্থায় ছিলেন ৷ এমন সময়৩ তার দুধ পিতা তার
    কাছে আসেন ৷ তিনি তাকে নিজের কাপড়ের এক অংশ বিছিয়ে দেন ৷৩ তার উপর তিনি বললেন ৷
    এরপর তা ৷র দুধ মা ও সেখানে এসে হাযির হন ৷ এবার তিনি ঐ কাপড়ের অপর অংশ তার জন্যে
    বিছিয়ে দেন ৷ তিনি তার উপর বসে পড়েন ৷ এরপর আসে তার দুধ তা ৷ই ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    দাড়িয়ে তাকে সম্মুখে বসতে দেন ৷ ইতোপুর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হাওয়াযিনের গোটা
    সম্প্রদায়ই বনু সা দ ইবন বকরের দুধ পান করানোর ফলে উপকৃত হয় ৷ বনৃ সাদ হাওয়াযিনেরই
    একটি ক্ষুদ্র দল ৷ এ জন্যেই তাদের বক্তা যুহায়র ইবন সাবৃদ বলেছিল, “ইহ্৷ রাসুলাল্লাহ্ ! এই
    ঘোরর মধ্যে যাব ৷ বআছে তারা তাে আপনারই (দুধ) মা, খালা ও লালন পালনকাবী ৷৩ তাই আপনি
    আমাদের প্ৰতি সদয় হন, আল্লাহ আপনার প্রতি সদয় হবেন” ৷ এরপর তিনি কবিতায় বলেন :

    “আপনি অনুগ্রহ করুন সেই সব বমণীদের প্ৰতি যাদের দুধ আপনি পান করেছিলেন ৷ যাদের
    বিশুদ্ধ দুধ সর্বদা আপনার পেট পরিপুর্ণ করে রাখভো ৷

    অনুগ্রহ দান করুন ঐসব মহিলাদের প্রতি যাদের দুধ সেবন করে আপনি লালিত পালিত
    হয়েছেন ৷ যা সংরক্ষণ করে ও যা পরিত্যাগ করে তা আপনার মর্যাদাকে সুশোভিত করে” ৷

    গোটা হাওয়াযিন সম্প্রদায়ের মুক্তিলাভের এটাই ছিল প্রকৃত কারণ ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
    অনুগ্রহ তাদের প্রবীণ, নবীন, ব্যক্তি বিশেষ ও সর্ব সাধারণের উপর পতিত হয় ৷ ওয়াকিদী ইবরাহীম
    ইবন মুহাম্মাদ ইবন শুরাহবীল সুত্রে৩ তার পিতা থেকে বণ্নাি ৷করেন যে তিনি বলেছেন, নাদীর
    ইবন হারিছ ইবন কলদাহ ছিলেন একজন সুদর্শন পুরুষ ৷ তিনি বলতেন৪ “যাবতীয় প্রশং যা সেই
    আল্লাহর যিনি ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দিয়ে আমাদের প্রতি বড় অনুগ্রহ করেছেন ৷ আর মৃহ ৷স্মাদ
    (সা) এর মাধ্যমে আমাদের উপর ইহসান করেছেন ৷ ফলে আমাদের মৃত্যু সেই ভ্রান্তির উপর
    হচ্ছেনা, যে ভ্রান্তির উপর আমাদের ভ্রাতাগণ ও পিতৃব্য পুত্রগণ নিহত হয়েছে” ৷ এরপর নাদীর
    ইবন হারিছ নবী (না)-এর সাথে শত্রুতার কথাও উল্লেখ করেন ৷ তিনি বলেন যে “কুরায়শদের
    মধ্য হতে তাদের সম্প্রদায়ের সাথে তিনিও হুনায়ন গমন করেন ৷ কুরায়শদের এ অংশটি
    পরবর্তীকালে তাদের দীনের উপরই থেকে যায় ৷ নাদীর বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল, যদি
    মুহাম্মাদের বিপর্যয় ঘটে তাহলে আমরা তার উপর হামলা করবো ৷ কিন্তু আমরা তাতে সক্ষম
    হলাম না ৷ এরপর যখন তিনি জিইবরানায় আসেন, তখনও আমি আমার পুর্বের পরিকল্পনার উপরই
    ছিলাম ৷ তখন আল্লাহর কসম ! আল্লাহর রাসুল (সা ) ব্যতীত আমার অন্য কোন চিন্তা ছিল না ৷
    এমন সময় তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কি, নাদীর না কি ? আ ৷মি বললাম, জি হীা, আ ৷মি হাযির ৷ তিনি
    বললেন, হুনা য়নের দিন তমি যে পরিকল্পনা করেছিলে-যা যার মাঝে অ ৷ল্লাহ্ প্রতিরন্ধকতা সৃষ্টি করে
    দিয়েছিলেন, নতার চেয়ে উত্তম জিনিস কি তুমি পেতে চাও ? এ কথা শুনে আমি দ্রুত তার কাছে

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ রাসূলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট মালিক ইবৃন আওফ নাসরীর আগমন Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.