সে ওগুলো রক্ষার্থে প্রাণপণে যুদ্ধ করে ৷ বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা শুনে দুরায়দ মড়ালিককে ধমক
দেয় ৷ সে তাকে আরও বলে , ওহে যেষ-পালক ! আল্লাহর কসম , যারা পরাজিত হয়, তাদেরকে
কিছু ফেরত দেওয়া হয় বলে কখনও শুনেছ কি ? যুদ্ধ যদি তোমার অনুকুলে আসে, তা হলে
তলােয়ার ও বল্লমধারী পুরুষ লোকই তোমার কাজে আসবে, অন্য কেউ নয় ৷ আর যদি যুদ্ধ
তোমার বিপক্ষে যায়, তবে তুমি তোমার পরিবার ও ধন-সম্পদসহ লাঞ্ছিত হবে ৷ তারপর সে
জিজ্ঞেস করলো ? আচ্ছা কা’ব ও কিলাব গোত্রের ভুমিকা কি ? মালিক বললাে, তাদের থেকে
কেউই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি ৷ দুরায়দ বললাে ও তা হলে তো ক্ষিপ্রতা ও বীরতৃই অনুপস্থিত ৷
আজকের এ দিনটা যদি মর্যাদা ও সুখ্যাতি বয়ে আনভাে তা হলে কড়া’ব ও কিলাব এ থেকে দুরে
থাকতো না ৷ আমার মনে হয়, তোমরাও যদি কা’ব ও কিলাবের পথ ধরতে, তবে কতই না ভাল
হতো ৷ বল তো, তা হলে কারা তোমরা যুদ্ধ করতে এসেছো ? লোকজন বললাে, আমর ইবন
আমির ও আওফ ইবন আমির গোত্রদ্বয় এসেছে ৷ সে বললাে, হায় এতেড়া আমির গোত্রের দুটো
যুদ্ধ-অনভিজ্ঞ শাখা ৷ এরা না কোন উপকার করতে পারবে, আর না কোন ক্ষতি করতে পারবে ৷
তারপরে সে বললাে, শুন হে মালিক তুমি হাওয়াযিনের দলকে ঘোড়ার সামনে আদৌ পেশ
করো না ৷ এরপর দুরায়দ মালিক ইবন অড়াওফকে বললাে : নিজের দেশের হিফাযতে ও নিজ
গোত্রের সম্মান রক্ষার্থে এদেরকে এ অবস্থান থেকে উঠিয়ে আন এবং ধর্মত্যাণীদের (অর্থাৎ
মুসলমানদের)-কে অশ্বারোহী বাহিনীর সম্মুখে করে দাও ৷ যদি যুদ্ধ তোমার অনুকুলে এসে যায়,
তবে পিছনের লোকজনও এসে তোমাদের সাথে মিলিত হয়ে ৷ আর যদি যুদ্ধ তোমার প্ৰতিকুলে
যায়, তাহলে এরা বাকী থাকবে এবং তোমার পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ নিরাপদে থাকবে ৷
জবাবে মালিক বললাে ও আল্লাহর কসম ! আমি তা করবো না ৷ তুমি বুড়াে হয়েছে৷ ৷ সেই সাথে
তোমার জ্ঞান-বুদ্ধিও বৃড়াে হয়ে গিয়েছে ৷ এরপর মালিক তার দলবলকে সম্বোধন করে বললাে :
হে হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা আল্লাহ্র কসম ৷ হয় তোমরা আমার আনুগত্য করবে ; না হয়
আমি এই তলােয়ারের উপর উপুড় হয়ে পড়বাে, যাতে আমার পেট চিরে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায় ৷
যুদ্ধের ব্যাপারে সে দুরায়দের কথাবার্তা ও মতামতকে আদৌ আমল দিল না ৷ জবাবে সবাই
সমস্বরে বলে উঠলাে , আমরা তােমারই আনুগত্য করবো ৷ তখন দুরায়দ বললাে : এট৷ এমন একটা দিন যাতে আমি অন্তর্ভুক্ত হলাম না এবং এ থেকে
দুরেও থাকলাম না ৷
“হয়ে, যদি আমি আজ যুবক হতাম , তা’হলে এতে ঘোড়া ইাকিয়ে দিতাম ৷ দৃঢ় সংকল্প নিয়ে
এগিয়ে যেতাম ৷ আর এদেরকে মেয়ের পাল বলেই মনে হতো ৷
তারপর মালিক সমবেত লোকজনের উদ্দেশ্যে বললাে : তোমরা যখন মুসলমানদের দেখতে
পারে, তখন তোমরা তোমাদের তরবারির কোষসমুহ ভেৎগে ফেলবে এবং একযোগে তাদের
উপর হামলা করবে ৷
ইবন ইসহাক বলেন ;; উমাইয়া ইবন আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন উছমান আমার নিকট বর্ণনা
করেছেন যে, মালিক ইবন আওফ কয়েকজন গুপ্তচর প্রেরণ করে ৷ তারা বিপর্যস্ত অবস্থায় তার
কাছে প্রত্যাবর্তন করে ৷ সে বললো, তোমাদের সর্বনড়াশ হোক ! তোমাদের এ দৃর্দশা কেন ?
জবাবে তারা বললাে , আমরা বিচিত্র রং এর ঘোড়ার উপর কিছু সংখ্যক শুভ্র লোক দেখতে পাই ৷
আল্লাহর কসম ৷ তারপরে আমাদের যে অবস্থায় দেখতে পাচ্ছেন তা ঠেকাবার সাধ্য আমাদের ছিল
না ৷ আল্লাহর কসম ! এ বিস্ময়কর ঘটনা তাকে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা থেকে ফিরিয়ে
রাখতে পারলো না ৷
ইবন ইসহাক বলেন : নবী কবীম (সা) হাওয়াযীনদের এ যুদ্ধ উন্মাদনার কথা শুনতে পেয়ে
আবদুল্লাহ ইবন আবু হাদরাদ আসলামীকে প্রেরণ করেন এবং শত্রুদের মধ্যে ঢুকে অবস্থান করে
তাদের গোপন সংবাদ সংগ্রহ করে ফিরে আসতে নির্দেশ দেন ৷ ইবন আবু হাদরাদ চলে গেলেন ৷
তিনি তাদের মধ্যে ঢুকে পড়লেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ প্রস্তুতি সম্পর্কে
তালরুপে অবগত হলেন ৷ তিনি মালিক ইবন আওফ ও বনু হাওয়ৰুগ্রিইানের সমস্ত পরিকল্পনা সম্পর্কে
তথ্য সংগ্রহ করেন ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট ফিরে এসে তাকে যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে
অবহিত করেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন হাওয়াযিন গোত্রের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন, তখন
তাকে জানান হয় যে, সাফওয়ড়ান ইবন উমাইয়ার কাছে তার নিজস্ব অনেক ধর্ম ও অস্ত্র আছে ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাফওয়ানকে ডেকে পাঠালেন ৷ যে তখনও মুশরিক ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে
বললেন : হে আবু উমাইয়া ! তোমার অস্ত্রগুলো আমাদেরকে ধার দাও ! আমরা তা দিয়ে আগামী
কাল আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়বাে ৷ সাফওয়ান বললো , হে মুহাম্মাদ ৷ আপনি কি তা
জােরপুর্বক নেবেন ? তিনি বললেন ও না, বরং ধার হিসেবে নিতে চাই এবং তোমাকে ফেরত
দেওয়ার শর্তে ৷ সাফওয়ান বললো, তাহলে আপত্তি নেই ৷ সুতরাং সে একশ’ রর্ম এবং সে
অনুপাতে অস্ত্রশস্ত্র দিল ৷ লোকজন বলে, রাসুলুল্লাহ্ (সা ) সাফওয়ানের কাছে সৈন্যদের জন্যে
প্রয়োজনীয় পরিমাণ অস্ত্র চেয়েছিলেন, আর সে তাই দিয়েছিল ৷ ইবন ইসহাক সনদবিহীনভাবে এ
ঘটনা এরুপই বর্ণনা করেছেন ৷
ইউনুস ইবন বৃকায়র ইবন ইসহাক জাবির থেকে ; এবং আমর ইবন শুআয়ব, যুহরী,
আবদুল্লাহ ইবন আবু বকর ইবন আমর ইবন হড়াযম প্রমুখ, হুনড়ায়নের ঘটনা পুর্বোল্লিখিত ঘটনার
অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ তবে উক্ত বর্ণনায় শত্রু হাওয়াযিনদের মধ্যে প্রবেশ করা ও সংবাদ
সংগ্রহের ব্যাপারে এ কথা অতিরিক্ত বলা হয়েছে যে, আবু হাদরাদ সেখান থেকে ফিরে এসে
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট হড়াওয়াযিনদের সংবাদ বলেন ৷ তখন উমর ইবন খাত্তাব তাকে মিথ্যা
বলে উড়িয়ে দেন ৷ ইবন আবুহড়াদরাদ তখন তাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন , ওহে উমর ! আজ
যদি তুমি আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করো তবে তাতে আর আশ্চর্যের কি ! ইতিপুর্বে তুমি তো
দীনে হক্কেও মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলে ৷ তখন উমর (রা) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ যে কী
বলছে তা কি আপনি শুনছেন না ? জবাবে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : “তুমি বিভ্রান্ত বিপথগড়ামী
ছিলে , তারপরে আল্পাহ্ তোমাকে সঠিক সত্য পথের সন্ধান দিয়েছেন ৷ ” (এ তো সত্য কথাই ৷)
ইমাম আহমদ বলেন : ইয়াযীদ ইবন হারুন সাফওয়ান (বা) সুত্রে বার্ণিত ৷ তিনি
বলেন, হুনায়নের যুদ্ধে বাসৃলুল্লাহ্ (সা) উমাইয়াব নিকট কতকণ্ডলো বর্য ধার চেয়েছিলেন ৷
উমাইয়া জিজ্ঞেস করেছিল, হে মুহাম্মাদ ! এগুলো কি আপনি কেড়ে নেবেন ? রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বলেন : না, ধার হিসেবে (নব এবং কাজ শেষে ফেরত দেব ৷ রাবী সাফওয়ান বলেন, যুদ্ধে কিছু
বর্ম থােয়৷ যায় ৷ তাই ফেরত দেওয়ার সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা) থােয়া যাওয়া বর্মগুলাের ক্ষতিপুরণ
পেশ করেন ৷ তখন উমাইয়া বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ৷ আজ আমি ইসলামের প্রতি অনুপ্রাণিত
(সুতরাং ক্ষতি পুরণ লাগবে না) ৷ আবুদাউদ ও নাসাঈ — ইয়াযীদ ইবন হারুন সুত্রে অনুরুপ বর্ণনা
রেছেন ৷ তবে ইমাম নাসাঈ ইসরাঈল সুত্রে সাফওয়ান ইবন উমইিয়ার পুত্র আবদুর
রহমান থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাফওয়ানের নিকট থেকে বর্য-ধার নিয়েছিলেন ৷
বাকী ঘটনা উপরের অনুরুপ ৷ এ ছাড়া ইমাম নাসাঈ হুশায়য় হাজ্বজাজ আতা সুত্রে বর্ণনা
করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাফওয়ানের নিকট থেকে অনেকগুলো বর্ম ও অশ্ব ধার নিয়েছিলেন ৷
এর পরের কথা উপরের অনুরুপ ৷
ইমাম আবুদাউদ বলেন : আমার কাছে বর্ণনা করেছেন আবু বকর ইবন অড়াবুশায়বা
আবদুল্লাহ ইবন সাফওয়ানের পরিবারের লোকদের থেকে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাফওয়ানকে ডেকে
জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কি অস্ত্র-শস্ত্র আছে ৷ সাফওয়ান বললাে : ধার স্বরুপ নিবেন, না
জোর করে ? রাসৃলুল্লাহ্ (সা) বললেন : না, ধার স্বরুপ ৷ এরপর সাফওয়ান রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে
ত্রিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে বর্ম ধার স্বরুপ প্রদান করেন ৷ এগুলো নিয়ে তিনি হুনায়নের যুদ্ধে
ব্যবহার করেন ৷ যুদ্ধে যুশরিক বাহিনী পরাজিত হলে সাফওয়ানের বর্মগুলো একত্রিত করা হয় ৷
তখন দেখা গোল কয়েকটি হারিয়ে গিয়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাফওয়ানকে বললেন : তোমার
দেওয়া বর্য থেকে কয়েকটি বর্ম হারিয়ে গিয়েছে — এগুলোর ক্ষতিপুরণ দিব কি ? সাফওয়ান
বললাে ;; ইয়া বাসুলাল্লাহ্ ৷ সে দিন আমার হৃদয়ের যে অবস্থা ছিল ৷ আজ আর সে অবস্থা নেই ৷
এ বর্ণনাটিও মুরসাল ৷
ইবন ইসহাক বলেন ; এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) অভিযানে বেরিয়ে পড়লেন ৷ তার সাথে ছিলেন
মক্কা বিজয়ের উদ্দেশ্যে আগত দশ হাজার সাহাবী এবং মক্কা থেকে নতুন যোগদানকারী দুই
হাজারসহ মোট বার হাজার সৈন্য ৷
আমি বলি, উরওয়া, যুহরী ও মুসা ইবন উকবার মতে হাওয়াযিন অভিযানে সর্বমোট সৈন্য
হ্খ্যা ছিল চৌদ্দ হাজার ৷ তাদের মতে মদীনা থেকে মক্কা অভিযানে এসেছিলেন বার হাজার ৷
আর এদের সাথে যোগ দেন মক্কার দৃ’ হাজার নও মুসলিম ৷ ইবন ইসহাক বলেন : রাসুলুল্লাহ্
(সা) হাওয়াযিনের উদ্দেশ্যে মক্কা থেকে বের হন শাওয়াল মাসের পাচ তারিখে ৷ মক্কা দেখাশুনার
দায়িত্ব দেওয়া হয় আত্তাব ইবন উসায়দ ইবন আবুল ঈস ইবন উমাইয়া ইবন আবদে শামস
উমাবীর উপর ৷ তখন তার বয়স ছিল বিশ বছরের কাছাকাছি ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) হাওয়াষিন
গোত্রের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন ৷
আব্বাস ইবন মিরদাস সুলামী এ সম্পর্কে তীর কাসীদায় বলেন :
অর্থ : হে পথিক ! আমার পক্ষ থেকে হাওয়াযিন গোত্রের উচ্চ-নিম্ন সকল পর্যায়ের ণ্লাকের
কাছে এ উপদেশ রাণীটি পৌছিয়ে দাও, এতে রয়েছে বিস্তারিত বর্ণনা ৷
আমার ধারণা, আল্লাহ্র রাসুল (সা) প্রভ্যুষকালে তোমাদের উপর তার এমন এক সৈন্য
বাহিনী নিয়ে হামলা করবেন যারা এ ভুপৃষ্ঠের উপর অত্যন্ত শক্তিশালী ৷
এদের মধ্যে আছে ণ্ভামারুদ্যা ভাই সুলায়ম ণ্গাত্র যারা ৷তামাদেরকে কিছুতেই ছেড়ে দেবে
না ৷ আর মুসলমানগণ হ্যা আল্লাহর অনুগত কিং! সৈনিক ৷
তাদের সমর্থনে দক্ষিণ বাহিনীতে আছে বনু আসাদ গোত্র ৷ আর নাংগা তলোয়ারধাৰী রনু
আব্বাস ও যিবয়ান (গাত্রদ্বয় ৷
এ বাহিনীর ভয়ে যমীন কেপে উঠে ৷ আর এ বাহিনীর অগ্নভ্যবে আছে আওস ও উছমান
গোত্রদ্বয় ৷
ইবন ইসহাক বলেন : আওস ও উছমান হলো মুযায়না গোত্রের দুটি শাখাগােত্র ৷ ইবন
ইসহাক বলেন : ষুহরী হারিছ ইবন মালিক সুত্রে বলেন, যে তিনি বন্যেছন, আমরা রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর সাথে হুনায়নের উদ্দেশ্যে বের হলাম ৷ তখন আমরা সৰেমাত্র জাহিণী জীবন ত্যাগ করে
ইসলামে এসেছি ৷ তিনি বলেন, আমরা তার সাথে হুন্যয়ন অভিমুখে যাত্রা করলাম ৷ তিনি বলেন :
ঐ যুগে বুল্পায়শ কাফির ও অন্যান্য আরব গোত্রের লােৰেল্পা একটি প্রকাণ্ড সবুজ বৃষ্মেস্ম ভক্ত দাি ৷
সে বৃক্ষটিকে যাভু আনওয়াত’ বা ঝুলস্ত বৃক্ষ বলা হত ৷ প্রতি বহ্ব তারা একবার ঐ বৃক্ষের কাছে
আসতো, তাদের অস্ত্রপাতিঃলাে বৃক্ষের উপর লটকিয়ে রাখতাে, বৃক্ষের কাছে পশু বলি দিত এবং
সেখানে একদিন অবস্থান করতো ৷ তিনি বলেন, আমরা যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সাথে পথ
অতিক্রম করছি, তখন পথে একটি বিশাল সবুজ কুল বৃক্ষ দেখতে পইি ৷ আমরা তখন পথের
পর্শে থেকে জোর আওয়াজে ডেকে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আমাদের জন্যে একটি যাতু
আনওয়াত’ এর ব্যবস্থা করুন, যেমন ওদের যাভু আনওয়াত’ আছে ৷ তখন রাসুলুন্নাহ্ (সা)
বললেন : আল্লাহ আকবার ! সেই সত্তার কসম৷ যার হাতে আমার জীবন, তোমরা আজ এমন
একটি কথা বললে, যেমন কথা বলেজ্জি মুসা (আ) এর সম্প্রদায় মুসা (আ) কে ৷ তারা বলেহাি,
আমাদের জন্যে একটি ইলাহ্র ব্যবস্থা করুন ৷ যেমন ওদের রয়েছে অনেক ইলাহ্ ৷ মুসা (আ)
জবাবে তাদেরকে বলেছিলেন, তোমরা একটি অজ্ঞ সম্প্রদায় ৷ এটা তো নিছক একটি পতানু-
গতিক ভ্রান্ত প্রথা ৷ এরুপ করা হলে তোমরা ণ্তামাদের পুর্ববর্তীদের ভ্রান্ত প্রথারই অনুকরণ
করবে ৷ ইমাম তিরমিযী এ হাদীছটি সাঈদ ইবন আবদুঃ৷ রহমান সুত্রে সুফিয়ান থেকে এবং ইমাম
নাসাঈ মুহাম্মাদ ইবন রাফি আবদুর রায্যাক মামার সুত্রে, এরপর উভয়েই যুজ্জী থেকে বর্ণনা
করেন ৷ যেমন ইবন ইসহাক যুহরী থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ তিরমিযী এ হাদীছকে হাসান-সহীহ্
বলে অভিহিত করেস্ফো ৷ ইবন আবুহাতিম তার তাফসীর গ্রন্থে এ হাদীছটি কাহীর ইবন আবদুল্লাহ
ইবন আমর ইবন আওফ্ তার পিতা, তীর দাদা থেকে মারকুরুপে বর্ণনা করেছেন ৷
আবু দাউদ বলেন : আমার নিকট আবু তাওবা সাহল ইবন হানজালিয়া সুত্রে বর্ণনা
করেন যে , মুসলিম বাহিনী রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর সাথে হুনায়ন যুদ্ধে যাত্রা করে ৷ তারা দ্রুত গতিতে
যাত্রা করে লন্ধায় সেখানে পৌছে ৷ যােহ্র নামাযের সময় হলে একজন ন্ত্রশোরোহী এসে বললোশ্
ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আমি আপনাদের আগেভাগে গিয়ে অমুক অমুক পাহাড়ে আরোহণ করে
দেখলাম, হাওয়াযিন ণ্গাত্রের ছোটণ্ৰ্ড়, নারী-পুরুষ তাদের উট , মেষ ও অন্যান্য গবাদি পশু নিয়ে
হুনায়ন প্রাম্ভরে সমবেত হয়েছে ৷ তার বক্তব্য শুনে রাসুলুল্লাহ্ (সা) ফুচকি হেসে বললেন,
আপামীকাল এ সবই পনীমত হিসেবে মুসলমানদের করায়তু হবে ইন্শাআল্লাহ্ ৷ এরপর তিনি
আহ্বান জানালেন, আজ রাত্রে আমাক্দঃ পাহারা দেওয়ার জন্যে কে প্রস্তুত আছ ? জবাবে আনাস
ইবন আবুমারছাদ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! এ কাজের জন্যে আমি প্রস্তুত আছি ৷ তিনি বললেন,
তাহলে তুমি একটি বাহনে আরোহণ কর ৷ তিনি তখন গিয়ে তার ঘোড়ার আরোহণ করে
রাসুলুল্পাহ্ (সা)-এর নিকট উপস্থিত হল ৷ ৱাসুলুল্পাহ্ (সা) তাকে বললেন, এই গিরিপখ ধরে
অগ্রসর হও এবং তার উপরে আরোহণ কর ৷ আমরা তোমার পক্ষ থেকে নামে কোন দৃশ্চিন্তা
বোধ করবো না ৷ রাবী বলেন, ভোর হলে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তীর নির্ধারিত নামাযের স্থানে গিয়ে দু’
রাকআত (সুন্নাত) নামায আদায় করেন ৷ তারপরে আমাদের কাছে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা
তোমাদের অশ্বারোহী ভাইয়ের প্রত্যাপমন সম্পর্কে কিছু আচ করতে পারলে ষ্ জবাবে সকলেই
বললেন, আমরা কিছুই আচ করতে পারিনি ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! এরপর ফজরের নামায জামায়াতে
পড়ার জন্যে ঘোষণা দেওয়া হলো ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) নামায পড়াচ্ছিলেন এবং গিরিপথের দিকে
তাকাচ্ছিলেন ৷ নামায শেষ করে তিনি সৃসৎবাদ দিলেন যে, তোড়ামাদের অশ্বারােহী ভাই তোমাদের
মাঝে এসে গেছে ৷ এ কথা বলে তিনি পাহাড়ের ঢালে পাছ-পাছালির দিকে তাকাচ্ছিলেন ৷ হঠাৎ
তিনি ঐ পথ দিয়ে বের হয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট এসে থামলেন ৷ এরপর বলতে লাগলেন ৷
আমি গিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নির্দেশিত এই পাহাড়ের উপর আরোহণ করি ৷ ভোর হলে আমি
দুটি পাহাড়ের উপরেই উঠি এবং সেখান থেকে সম্মুখে লক্ষ্য করি, কিন্তু কাউকেও দেখতে
পেলাম না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তীরে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি রাত্রে নীচে অবতরণ করেছিলে ৷
তিনি বললেন, জী না ৷ নামায আদায় কিংবা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া ছাড়া আমি পাহাড়ের উপর
থেকে নীচে অবতরণ করিনি ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে বললেন : তুমি তাে জান্নাত ওয়াজিব
করে নিয়েছো ৷ এরপর আর কোন আমল না করলেও তোমার কোন ক্ষতি হবে না ৷ ইমাম
নাসাঈও এ হাদীছ মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহ্য়া সুত্রে আবুতাওবা রাৰী ইবন নাফি থেকে
অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
হুনায়ন যুদ্ধে প্রথম দিকে মুসলিম বাহিনীর পলায়ন
এবং শেষে বিজয় লাভ
ইউনুস ইবন বুকায়র প্রমুখ মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন :
আমার নিকট আসিম ইবন উমার জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, মালিক ইবন
আওফ তার গোটা বাহিনী নিঃয় হুনায়ন অভিমুখে যাত্রা করে ৷ এ সংবাদ পেয়ে রাসুলুল্লাহ্ (না) ও
তার বাহিনী নিয়ে সেখানে গমন করেন ৷ শত্রু সৈন্যরা পাহাড়ের গিরিপথ ও উপত্যকার আশ-
পাশের সংকীর্ণ স্থানসমুহে ওৎপেতে থাকে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও তীর সাহাবীপণ অগ্রসর হয়ে
ভোরের আধারে উপত্যকার ঢালু এলাকায় অবতরণ করেন ৷ মুসলিম বাহিনী যখন সে প্রাত্তরে
অবতরণ করে, তখন শত্রুপণ তাদের গোপন স্থান থেকে অতর্কিতে অশ্বারােহী দল নিয়ে এক
সংগে হামলা চালায় ৷ ফলে মুসলিমপণ হতবুদ্ধি হয়ে ছুটে পলায়ন করতে থাকে, কেউ কারও
দিকে ফিরে তাকাতেও পারছিন না ৷ এ সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা) ডান দিকে একটু সরে গিয়ে বলতে
লাগলেন : হে লোক সকল ! তোমরা যাচ্ছে কোথায় ? আমার দিকে ফিরে এসো, আমি আল্লাহ্র
রাসুল, আমি আল্লাহ্র রাসুল, আমি আবদ্বপ্লাহ্র পুত্র মুহাম্মাদ ৷
রাবী জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর তাকে কোন কাজ হলো না ৷
বরং পলায়নকালে তাদের উটগুলো একটার উপর অপৱটা হুমড়ি খেয়ে পড়ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
যখন মানুষের এ অবস্থা দেখেন, তখন তিনি তার দাদা খচ্চরের উপর বসা ছিলেন যা সেখানে
রশি দিয়ে ৰীধা ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সংগে তখন মাত্র কয়েকজন লোক উপস্থিত ছিলেন ৷
আহলে বায়তের মধ্যে বাবা ছিলেন, তারা হলেন আলী ইবন আবু তালিব, আবু সুফিয়ান ইবন
হারিছ ইবন আবদুল মুত্তালিব, তার ভাই রাবীআ ইবন হারিছ ইবন আবদুল মুত্তালিব, ফযল ইবন
আব্বাস, কারও মতে ফুযায়ল ইবন আবু সুফিয়ান, আয়মান ইবন উম্মে আয়মান এবং উসামা
ইবন যায়দ (বা) ৷ কেউ কেউ এ তালিকায় কুদাম ইবন আব্বাসের কথাও উল্লেখ করেহ্নেধ্ ৷ আর
মুহাজিরদের মধ্যে যারা সেখানে ছিলেন, তারা হলেন, আবু বকর, উমার ও আব্বাস ৷ আব্বাস
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর খচ্চরের লাগান ধারণ করে ছিলেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : হাওয়াষিন গোত্রের এক লোক তার লাল উটে আরোহণ করে একটি
লম্বা বর্শার মাথায় কাল পতাকা বেধে হাতে নিয়ে আগে আগে চলজ্জি ৷ আর অন্যান্য হাওয়াযিনরা
তার পিছে পিছে ছুটছিণ্লা ৷ কোন মুসলমান সামনে পড়লে সে তার ঐ বর্শা দ্বারা তাকে আঘাত
করতো ৷ এতে পতাকা নীচে নেমে যাওয়ায় লোকেরা তাকে হারিয়ে £ফ্যাতে৷ ৷ তখন সে
পশ্চাতের লোকদের উদ্দেশ্যে আবার বর্শাটি উপরে তুলে ধরতে! ৷ তখন পশ্চাত্যের লোকজন
তাকে অনুসরণ করে চলতো ৷ রাবী জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রা) বলেন, পতাকাবাহী লোকটি যখন
এ ধরনের হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছিল, তখন আলী ইবন আবু তালিৰ (রা) ও জনৈক আনসার
সাহাবী তাকে বধ করার জন্যে তার দিকে অগ্রসর হন ৷ আলী (বা) পিছন দিক থেকে গিয়ে তার
উটের পশ্চাতের পা দুটি তলোয়ারের আঘাতে কেটে ফেলেন ৷ ফলে উটটি নিতন্বের উপর বসে
পড়ে ৷ তখন আনসার সাহাবী তার উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং তলোয়ারের প্রচণ্ড আঘাতে তার
পায়ের নলা মাঝখান থেকে কেটে পা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেন ৷ রাবী বলেন, এরপর মুসলিম
বাহিনী শত্রুদের উপর তলোয়ার দ্বারা আঘাতের পর আঘাত হানতে থাকে ৷ আল্লাহ্র কসম ৷
তলোয়ারের প্রচণ্ড আঘাতে তারা দিপৰিদিক ছুটে পালায় ৷ আর যে পালিয়েছে সে আর যুদ্ধক্ষেত্রে
ফিরে আসার সাহস পায়নি ৷ শেষ পর্যন্ত শত্রু পমেন্ম বিরাট সংখ্যক লোক বন্দী হয়ে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর নিকট নীত হয় ৷ ইমাম আহমদ ইয়াকুব ইবন ইব্রাহীম যুহবী থেকে ৷ মুহাম্মাদ ইবন
ইসহাক থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবু সুফিয়ান ইবন হারিছ ইবন আবদুল মুত্তালিবের
দিকে তাকালেন ৷ সে দিন যারা চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছিলেন তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম ৷
ইসলাম গ্রহণ করার পর থেকে তিনি একজন নিষ্ঠাবান মুসলমান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত
করেন ৷ তিনি তখন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর খচ্চরের অিনের এক অংশ ধরে দাড়িয়ে ছিলেন ;
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কে ওখানে ? জবাবে তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ !
আমি আপনার দৃধ-মায়ের পুত্র ৷ ইবন ইসহাক বলেন : যুদ্ধের প্রথম দিকে মৃসলমানকৃদ্যা বিপর্যয়
দেখে মুর্থ বেদৃঈনরা এমন সব মন্তব্য করতে লাগলো যার দ্বারা তাদের অন্তরে লুকিয়ে থাকা
বিদ্বেষ প্রকাশ গোল ৷ আবুসুফিয়ান সাখর ইবন হারব বসে উঠলে৷ , তাদের পরাজয় সমুচ্যে তীর
পর্যন্ত পৌছার আগে শেষ হবে না ৷ এই আবু সুফিয়্যানর ইসলাম গ্রহণ তখনও দুর্বল জ্জি ৷ ঐদিন
তার কাছে ভাগ্য গণনার পর্যাপ্ত তীর মওজুদ ন্ডিং ৷ কালদা ইবন হাম্বল সে দিন তার ভাই
সাফওয়ান ইবন উমইিয়ার সাথে এক জায়গায় ছিল ৷ সাফ্ওয়ান তখনও মুশরিক ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্
হুসা) ইসলাম সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করার জন্যে যে সময় বেধে দিয়েছিলেন, এটা ছিল সেই
সময়ের কথা ৷ কালদা তখন চিৎকার দিয়ে বলালা : দেখলােতা ! যাদুর কারসাজি আজ ভণ্ডুল
গেছে ৷ তখন সাফওয়ান তাকে বললো : চুপ কর ! আল্লাহ্ তোমার মুখ বন্ধ করে দিন ৷ আল্লাহর
কসম ! আমার উপর কোন কুরায়শের নেতৃত্ব যে কোন হাওয়াযিনের নেতৃত্ব অপেক্ষা অধিকতর
পসন্দসীয় ৷ ইমাম আহমদ আফ্ফান ইবন মুসলিমের সুত্রে আনাস ইবন মালিক থেকে
বর্ণনা করেন যে, হ্না৷য়ন যুদ্ধে হাওয়াষিন গোত্র নারী, শিশু, উট ও যেষপালসহ রণাংগনে উপস্থিত
হয় এবং তাদেরকে সারিবদ্ধভাবে র্দাড় করার ৷ এভাবে তার! রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর উপর দল ভারী
করে ৷ এরপর যুদ্ধ আরম্ভ হলে মুসলমানগণ পরাজিত হয়ে পশ্চাতের দিকে পলায়ন করেন ৷
যেমনটি কুরআন মব্জীদে আল্লাহ্ তাআলা এ ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন
আওয়ায দিয়ে বললেন : “ওহে আল্লাহর বন্দোগণ ! আমি আল্লাহ্ব বন্দো ও তার রাসুল ৷ তারপরে
বললেন, “হে আনসার সম্প্রদায় শু আমি আল্লাহর বন্দো ও তার রাসুণ ৷ রাবী বলেন, অবশেষে
আল্লাহ তাআলা মুশরিক বাহিনীকে পরাজিত করেন ৷ এতে র্তার তলোয়ারও চালাতে হয়নি এবং
বর্শাও নিক্ষেপ বরোর প্রয়োজন হয়নি ৷
রাবী আনাস ইবন মালিক (রা) বলেন, হুনায়নের যুদ্ধের দিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেন :
যে ব্যক্তি কোন কাফিরকে হত্যা করবে, যে ঐ কাফিরের সাথে থাকা দ্রব্য সামগ্রীর মালিক হবে ৷
রাবী বলেন : সে দিন আবু তালহা (রা) বিশজন কাফিরকে হত্যা করে এবং তাদের
দ্রব্য-সামগ্রীর অধিকারী হন ৷ যুদ্ধের ময়দানে আবুকাতাদা (বা) রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে জানান, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ আমি এক ব্যক্তির র্কাধের শিরায় তলোয়ারের আঘাত মেরে চলে যাই ৷ তার পারে
একটি বর্ম ছিল ৷ একটু সন্ধান নিয়ে দেখুন, বর্মটি কে নিয়েছে ? এক ব্যক্তি দাড়িয়ে বললেন, ইয়া
রাসুলাল্লাহ্ ! বর্মটি আমি নিয়েছি ৷ এখন তাকে রাযী করিয়ে বর্যটি আমাকে দেওয়ার ব্যবস্থা
করুন ৷ বর্ণনাকারী বলেন, রড়াসুলুল্পাহ্ (সা)এর নিকট কেউ কিছু চাইলে হয় তিনি তাকে তা দিয়ে
দিতেন নয়ত নীরব থাকতেন ৷ এ সময় তিনি নীরব থাকলেন ৷ তখন উমর (রা) বললেন, আল্লাহর
কসম! আল্লাহর সিংহদের মধ্যকার একটি সিংহের উপর প্রাধান্য দিয়ে তিনি কিছুতেই তোমাকে
তা দিবেন না ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলে উঠলেন : উমর যথার্থই বলেছে ৷ রাবী বলেন,
রণাংগনে আবু তালহা (রা) এর সাথে (তার শ্রী) উম্মু সুলায়মের সাথে সাক্ষাৎ হয় ৷ তখন তার
কাছে একটি খঞ্জর দেখতে পেয়ে আবু তালহা (রা) জিজ্ঞেস করলেন, এটা আবার কি ৷ জবাবে
উম্মু সুলায়ম (রা) বললেন, কোন মুশরিক যদি আমার কাছ দিয়ে যায়, তবে এটা আমি তার
পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দিব ৷ আবু তালহা (রা) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ৷ উম্মু সুলায়ম কি বলছে,
তা কি শুনতে পাচ্ছেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন একটু হেসে দিলেন ৷ উম্মু সুলায়ম (রা) বললেন,
ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! এরপর আমি সেই সব নও মুসলিমকে হত্যা করবো, যারা আপনাকে ফেলে
পালিয়ে গিয়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : ওহে উম্মু সুলায়ম ৷ আল্লাহ্ই তাদের জন্যে যথেষ্ট ও
উত্তম ৷ ইমাম মুসলিম আবু তালহ৷ (রা) থেকে উম্মু সুলায়মের খঞ্জরের ঘটনা এবং ইমাম আবু
দাউদ নিহতের দ্ৰব্য-সামগ্রী হত্যাকারীর প্রাপ্য রাসুলুল্লাহ্র (সা) এ উক্তি উল্লেখ করেছেন ৷ তারা
উভয়েই হাম্মাদ ইবন সালমার সুত্রে এ হাদীছ বর্ণনা করেছেন ৷ এ ক্ষেত্রে উমরের কথিত বলে
উল্লিখিত উক্তিটি নির্ত্যযোগ্য নয় ৷ বরং প্রসিদ্ধ মতে ঐ উক্তিটি ছিল আবু বকর সিদ্দীকের ৷
ইমাম আহমদ বলেন : আবদুস সামাদ ইবন আবদুল ওয়ারিছ থেকে বর্ণনা করেন
যে, নাফি আবু গালিবের উপস্থিতিতে আলা ইবন যিয়াদ আদাবী আনাস ইবন মলিক (রা)-কে
জিজ্ঞেস করেন, হে আবুহামযা ! নুবুওয়াত প্রাপ্তিকালে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বয়স কত ছিল ৷ তিনি
বললেন, চল্লিশ বছর ৷ তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, এরপরের হিসেব কি ৷ তিনি জবাব দিলেন,
এরপর তিনি মক্কায় থাকেন দশ বছর ৷ তারপরে মদীনায় থাকেন আরও দশ বছর ৷ এই মোট ষাট
বছর পুর্ণ হওয়ার পর আল্লাহ তাকে তার নিকট উঠিয়ে নেন ৷ আলা ইবন যিয়াদ জিজ্ঞেস করেন,
ইনতিকালের সময় তার শারীরিক অবস্থা কেমন ছিল ৷ আবুহামযা বলেন, তখনও তিনি ছিলেন
সর্বোৎকৃষ্ট যুবক ৷ সবার চেয়ে সুন্দর ও উত্তম দৈহিক গঠন বিশিষ্ট এবং সবচেয়ে অধিক
শৌর্য-বীর্যের অধিকারী ৷ প্রশ্নকারী আবার জিজ্ঞেস করলো, হে আবুহামযা ! আপনি কি রাসুলুল্পাহ্