জিব্রাইল আলাইহিস সালামের মৃত্যু। সুবহানাল্লাহ, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুবরণ করেছেন এবং প্রত্যেকেই মৃত্যুবরণ করবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, এমনকি জিব্রীল-ও মৃত্যুবরণ করবে। চিন্তা করতে পারেন, জিব্রীল (আলাইহিস সালাম)- ও মারা যাবেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সিংগায় ফুতকার দেওয়ার পর আল্লাহ যাদের চান তারা ছাড়া আর কেউ স্থির থাকতে পারবে না (অন্য সবাই মৃত্যুবরণ করবে)। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা তাদেরকে তাঁর সম্মুখে নিয়ে আসবেন, তারা হলেনঃ জিব্রীল, ইস্রাফিল, মিকাল ও মৃত্যুর ফেরেশতা … যারা আল্লাহর আদেশ সমূহের বাস্তবায়ন করে থাকেন। আল্লাহ মৃত্যুর ফেরেশতাকে জিজ্ঞেস করবেন, আর কারা কারা বাকী আছে? মৃত্যুর ফেরেশতা বলবেন, ওহ আল্লাহ, আপনার সম্মানিত পবিত্র চেহারা (পূর্ণ সত্ত্বা), আপনার বান্দা আমি, আপনার বান্দা জিব্রীল, আপনার বান্দা মিকাল, আপনার বান্দা ইস্রাফিল। আল্লাহ বলবেন, মিকালের আত্মা নিয়ে নাও। তখন মিকালের আত্মা নিয়ে নেওয়া হবে। তখন আল্লাহ পূনরায় বলবেন, আর কে কে বাকী আছে? তিনি বলবেন, ওহ আল্লাহ, আপনি, আমি, জিব্রীল এবং ইস্রাফিল। আল্লাহ বলবেন, ইস্রাফিলের আত্মা নিয়ে নাও। ইস্রাফিলের আত্মা তাঁর থেকে নিয়ে নেওয়া হবে। আল্লাহ আবারও বলবেন, আর কারা বাকী আছে? তিনি বলবেন, ওয়াজহুকাল বাকিল কারিম – ওহ আল্লাহ, আপনার পবিত্র চেহারা, আপনার এই বান্দা এবং আপনার বান্দা জিব্রীল। আমরা দুই বান্দা সবশেষে বাকী রয়েছি। আল্লাহ বলবেন, জিব্রীলের আত্মা নিয়ে নাও। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, জিব্রীল তাঁর চেহারা নিয়ে পতিত হবেন এমন অবস্থায় যে তাঁর ডানাগুলো বিস্তৃত অবস্থায় থাকবে আর সেগুলো আল্লাহর প্রশংসা করতে থাকবে। তিনি তাসবিহ (আল্লাহর প্রশংসা)-রত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবেন। তাঁর চেহারা নিম্নে পতিত হবে এমতাবস্থায় তিনি আল্লাহর প্রশংসারত থাকবেন। এরপর আল্লাহ বলবেন, আর কে বাকী আছে? তখন মৃত্যুর ফেরেশতা বলবেন, ইয়া আল্লাহ, কেবল আপনি আর আমিই বাকী আছি। আল্লাহ মৃত্যুর ফেরেশতাকে আদেশ করবেন মৃত্যুবরণ করার জন্য। আর মৃত্যুর ফেরেশতা মারা যাবেন। আর আল্লাহ বলবেন, “কুল্লু মান আলাইহা ফান, প্রত্যেক ব্যক্তিই ধবংসপ্রাপ্ত হবেন, ওয়া ইয়াবকা ওয়াজহু রাব্বিকা জুলজালালি ওয়াল ইকরাম”- আর কেবল আপনার মহাসম্মানিত রবের চেহারাই (পূর্ণ সত্ত্বা) বাকী থাকবে” (সূরা আর-রাহমান)। আল্লাহ নিজেকেই তখন জিজ্ঞেস করবেন, ‘লিমানিল মুলকিল ইয়াউম’ – আজকের রাজত্ব কার? আল্লাহ নিজেকেই প্রতিউত্তরে বলবেন, ‘লিল্লাহিল ওয়াহিদিল কাহহার’- “কেবলই অদ্বিতীয় নিয়ন্ত্রণকারী আল্লাহর”। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন আখিরাতে আমরা সবাই হাজির হবো, তখন সমস্ত জমিন আল্লাহর আনুগতের প্রশংসায় একদম সমতল হবে। তিনি বলেন, হাশরের ময়দানে প্রত্যেকেই যে জায়গায় রয়েছে সে জায়গা থেকে একটুও নড়তে পারবে না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহর নিকট আমাকেই প্রথম আহবান করা হবে। অতএব তিনি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা এর নিকটে প্রবেশ করবেন। ”আমি সিজদায় পড়ে যাবো।” তিনি বলেন, অতঃপর আমি আমার মস্তক উত্তোলন করবো এবং আকস্মিকভাবে আমি সর্বোচ্চ দয়াময় (আল্লাহ) এর ডান পাশে জিব্রীলকে দেখতে পাবো! নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীসে বলেন, আল্লাহর কসম, ইতোপূর্বে জিব্রীল (আলাইহিস সালাম) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা-কে কোনো দিনই দেখেনি! জিব্রীল আল্লাহকে আগে কখনই দেখেনি। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিব্রীলের দিকে ইশারা করে বলবেন, হে আমার রব, এই ব্যক্তি আমাকে বলেছিলো যে আপনিই তাকে আমার নিকটে পাঠিয়েছিলেন। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি সত্য বলেছো। একইভাবে জিব্রীল-ও নবীকে বলবেন, আপনি সত্য বলেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কেন প্রতিদান দিবসে এই বিষয়টি করতে পছন্দ করলেন? তিনি কেন এটি ইচ্ছা পোষণ করলেন? কারণ হলো, প্রতিদান দিবসের দিন প্রত্যেক নবী-রাসূলকেই জিজ্ঞেস করা হবে যে সে (জিব্রীল) কি নবুওয়াতের বার্তাকে ঠিক মতো পৌছে দিয়েছে কিনা। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিব্রিলের পক্ষে সাক্ষ্য দিলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করার পূর্বেই তিনি নিজেই বললেন যে, উনি বলেছেন যে তাঁকে আপনি আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন? তিনি তাঁর কাজ ঠিকমত করেছিলেন। আল্লাহ বলবেন, তুমি সত্য বলেছো।

সম্পর্কিত পোস্ট
আমার নানা বা দাদার আপন ভাই তথা চাচাত নানা-দাদার সাথে...
08 Sep, 2025
অনুচ্ছেদ : রাসূলুল্লাহ (সা) এর ওফাতের তারীখ ও সময় ওফাত কালে উনার বয়স, তার গোসল ও কাফন দাফনের বিবরণ তাঁর সমাধির স্থান নির্ধারণ
08 Sep, 2025
হায়াতুস সাহাবা pdf
08 Sep, 2025
অভিধান (বাংলা, আরবী, উর্দূ ও ইংরেজী) Pdf
08 Sep, 2025
ছবি অঙ্কনকারী বা চিত্র শিল্পীদের পরিণাম
08 Sep, 2025

পর্নের ব্রেইন ইফেক্ট পর্ব-১
08 Sep, 2025

অন্তর মরে যাওয়ার দশ কারণ
08 Sep, 2025
পর্নের ব্রেইন ইফেক্ট পর্ব-২
08 Sep, 2025