ফুসসিলাত
فصلت
بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতিশয় মেহেরবান।
1
حمٓ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
হা মীম।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১. হা-মীম, এ সব ব্যাপারে আলোচনা সূরা বাকারার শুরুতে অতিক্রান্ত হয়েছে।
2
تَنزِيلٌ مِّنَ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
ইহা দয়াময়, পরম দয়ালুর নিকট হতে অবতীর্ণ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২. এই কুরআন পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
3
كِتَـٰبٌ فُصِّلَتْ ءَايَـٰتُهُۥ قُرْءَانًا عَرَبِيًّا لِّقَوْمٍ يَعْلَمُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এটা এক কিতাব, বিশদভাবে বিবৃত হয়েছে এর আয়াতসমূহ আরাবী ভাষায়, কুরআনরূপে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩. এটি এমন এক কিতাব যা আরবী কুরআনরূপে এসেছে এবং যার আয়াতগুলো জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য পর্যাপ্ত ও পূর্ণাঙ্গভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। কেননা, তারাই এর অর্থ ও এর মধ্যকার হকের পথনির্দেশনা থেকে উপকৃত হয়।
4
بَشِيرًا وَنَذِيرًا فَأَعْرَضَ أَكْثَرُهُمْ فَهُمْ لَا يَسْمَعُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিমুখ হয়েছে। সুতরাং তারা শুনবে না।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪. মু’মিনদেরকে আল্লাহ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মহা পুরস্কারের সুসংবাদ প্রদান ও কাফিরদেরকে আল্লাহর কষ্টদায়ক শাস্তি থেকে ভীতি প্রদর্শক হিসাবে এটি অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তাদের বেশীর ভাগই বিমুখ হয়েছে। ফলে তারা এর মধ্যকার হেদায়েতের বাণীগুলো গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে শ্রবণ করে না।
5
وَقَالُوا۟ قُلُوبُنَا فِىٓ أَكِنَّةٍ مِّمَّا تَدْعُونَآ إِلَيْهِ وَفِىٓ ءَاذَانِنَا وَقْرٌ وَمِنۢ بَيْنِنَا وَبَيْنِكَ حِجَابٌ فَٱعْمَلْ إِنَّنَا عَـٰمِلُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা বলেঃ তুমি যার প্রতি আমাদেরকে আহবান করছ সেই বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আচ্ছাদিত, কর্ণে আছে বধিরতা এবং তোমার ও আমাদের মধ্যে আছে অন্তরাল; সুতরাং তুমি তোমার কাজ কর এবং আমরা আমাদের কাজ করি।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৫. আর তারা বলে, আমাদের অন্তরগুলো তালাবদ্ধ হয়ে আছে। ফলে সেগুলো তোমরা যে বিষয়ের প্রতি আমাদেরকে আহŸান করছো তা বুঝে না। আমাদের কানে তুলা রয়েছে। ফলে সেগুলো তা শ্রবণ করে না। আর আমাদের ও তোমার মাঝে অন্তরায় রয়েছে। ফলে তোমার কথা আমাদের নিকট পৌঁছে না। তাই তুমি তোমার নিয়মানুযায়ী আমল করো। আর আমরা আমাদের নিয়মানুযায়ী কাজ করতে থাকি। আমরা তোমার অনুসরণ করবো না।
6
قُلْ إِنَّمَآ أَنَا۠ بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَىٰٓ إِلَىَّ أَنَّمَآ إِلَـٰهُكُمْ إِلَـٰهٌ وَٰحِدٌ فَٱسْتَقِيمُوٓا۟ إِلَيْهِ وَٱسْتَغْفِرُوهُ ۗ وَوَيْلٌ لِّلْمُشْرِكِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ আমিতো তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি অহী হয় যে, তোমাদের মা‘বূদ একমাত্র মা‘বূদ। অতএব তাঁরই পথ দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর এবং তাঁরই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। দুর্ভোগ অংশীবাদীদের জন্য –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৬. হে রাসূল! আপনি এসব অবাধ্যদেরকে বলুন, আমার নিকট কেবল এ মর্মে প্রত্যাদেশ এসেছে যে, তোমাদের প্রকৃত মা’বূদ হলেন কেবল একজন। আর তিনি হলেন আল্লাহ। অতএব, তোমরা তাঁর জন্যই ইবাদাতকে একনিষ্ঠ করো এবং পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো। যারা গাইরুল্লাহর ইবাদাতকারী কিংবা তাঁর সঙ্গে অন্যকে অংশী স্থাপনকারী তারা সুস্পষ্টভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
7
ٱلَّذِينَ لَا يُؤْتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَهُم بِٱلْـَٔاخِرَةِ هُمْ كَـٰفِرُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যারা যাকাত প্রদান করেনা এবং তারা আখিরাতেও অবিশ্বাসী।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৭. যারা স্বীয় সম্পদের যাকাত প্রদান করে না এবং তারা পরকালকে ও তার স্থায়ী নি‘আমত ও কষ্টদায়ক শাস্তিকে অবিশ্বাস করে।
8
إِنَّ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ لَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৮. আর যারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলগণে বিশ্বাসী হওয়ার পাশাপাশী নেক আমল করে তাদের জন্য রয়েছে অবিচ্ছিন্ন চিরস্থায়ী নি‘আমত তথা জান্নাত।
9
۞ قُلْ أَئِنَّكُمْ لَتَكْفُرُونَ بِٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْأَرْضَ فِى يَوْمَيْنِ وَتَجْعَلُونَ لَهُۥٓ أَندَادًا ۚ ذَٰلِكَ رَبُّ ٱلْعَـٰلَمِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ তোমরা কি তাকে অস্বীকার করবেই যিনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন দুই দিনে এবং তোমরা তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করাতে চাও? তিনিতো জগতসমূহের রাব্ব।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৯. হে রাসূল! আপনি মুশরিকদেরকে ধমকির স্বরে বলুন, তোমরা কেন সেই আল্লাহকে অবিশ্বাস করো যিনি রবি ও সোম এই দু’দিনে যমীনকে সৃষ্টি করেছেন। উপরন্তু তাঁর জন্য সমকক্ষ স্থির করে তাদের ইবাদাত করছো?! অথচ তিনি সকল সৃষ্টিকুলের ¯্রষ্টা।
10
وَجَعَلَ فِيهَا رَوَٰسِىَ مِن فَوْقِهَا وَبَـٰرَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَآ أَقْوَٰتَهَا فِىٓ أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَآءً لِّلسَّآئِلِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তিনি স্থাপন করেছেন অটল পর্বতমালা ভূপৃষ্ঠে এবং তাতে রেখেছেন কল্যাণ এবং চার দিনে ব্যবস্থা করেছেন খাদ্যের - সমভাবে, যাঞ্চাকারীদের জন্য।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১০. আর তার উপর সুদৃঢ় পাহাড় স্থির করেছেন। যাতে করে তাকে স্থির রাখে এবং সেগুলো নড়াচড়া না করে। আর চার দিনে তাতে মানুষ ও পশুকুলের জীবিকা নির্ধারণ করেছেন। যা পূর্বের দু’দিনের পরিপূরক। সে দিনদু’টো হলো মঙ্গল ও বুধ। এগুলো সম্পর্কে যে জিজ্ঞেস করতে চায় তার জন্য এটাই হবে সঠিক উত্তর।
11
ثُمَّ ٱسْتَوَىٰٓ إِلَى ٱلسَّمَآءِ وَهِىَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ ٱئْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَآ أَتَيْنَا طَآئِعِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন যা ছিল ধূম্রপুঞ্জ বিশেষ। অতঃপর তিনি ওটাকে এবং পৃথিবীকে বললেনঃ তোমরা উভয়ে এসো স্বেচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বললঃ আমরা এলাম অনুগত হয়ে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১১. অতঃপর মহান আল্লাহ আসমান সৃষ্টির ইচ্ছা পোষণ করলেন। সে দিন তা ছিল ধূ¤্রপুঞ্জবিশেষ। তিনি তাকে ও যমীনকে বললেন, তোমরা উভয়ে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় আমার নির্দেশের অনুগত হও। এ নির্দেশকে এড়িয়ে চলার কোন উপায় নেই। তারা বললো, আমরা অনুগত হয়ে এসে গেলাম। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার ইচ্ছার বাহিরে আমাদের কোন পছন্দ নেই।
12
فَقَضَىٰهُنَّ سَبْعَ سَمَـٰوَاتٍ فِى يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِى كُلِّ سَمَآءٍ أَمْرَهَا ۚ وَزَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنْيَا بِمَصَـٰبِيحَ وَحِفْظًا ۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْعَلِيمِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দুই দিনে সপ্তাকাশে পরিণত করলেন এবং প্রত্যেক আকাশে উহার বিধান ব্যক্ত করলেন এবং আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা দ্বারা এবং করলাম সুরক্ষিত। এটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১২. অতঃপর আল্লাহ আসমান সমূহের সৃষ্টি বৃহস্পতি ও শুক্র দু’দিনে পূর্ণ করলেন। বস্তুতঃ এর মাধ্যমে আসমান-যমীনের সৃষ্টি ছয় দিনে পূর্ণ হলো। আল্লাহ প্রত্যেক আসমানে তার জন্য নির্ধারিত বিষয় এবং আনুগত্য ও ইবাদাতের ব্যাপারে প্রত্যাদেশ অবতীর্ণ করলেন। আর আমি দুনিয়ার আসমানকে তারকারাজি দ্বারা সৌন্দর্য প্রদান করেছি এবং এর মাধ্যমে আসমানকে শয়তানদের চোরাই পথে শ্রবণের পথ রুদ্ধ করেছি। উল্লেখিত সবগুলো বিষয় সেই পরাক্রমশালীর নির্ধারণ যাঁকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। যিনি তদীয় সৃষ্টির ব্যাপারে পরিজ্ঞাত।
13
فَإِنْ أَعْرَضُوا۟ فَقُلْ أَنذَرْتُكُمْ صَـٰعِقَةً مِّثْلَ صَـٰعِقَةِ عَادٍ وَثَمُودَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তবুও তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে বলঃ আমিতো তোমাদেরকে সতর্ক করছি এক ধ্বংসকর শাস্তির; আদ ও সামূদ জাতির অনুরূপ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৩. হে রাসূল! তারা যদি আপনার দ্বারা আনিত বিষয়ের উপর ঈমান আনতে অস্বীকার করে তাহলে আপনি তাদেরকে বলুন, আমি তোমাদেরকে এমন এক শাস্তি পতিত হওয়ার ভয় দেখাচ্ছি যা পতিত হয়েছিলো হূদ, আদ, সালেহ ও সামূদের উপর যখন তারা উভয়কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো।
14
إِذْ جَآءَتْهُمُ ٱلرُّسُلُ مِنۢ بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ أَلَّا تَعْبُدُوٓا۟ إِلَّا ٱللَّهَ ۖ قَالُوا۟ لَوْ شَآءَ رَبُّنَا لَأَنزَلَ مَلَـٰٓئِكَةً فَإِنَّا بِمَآ أُرْسِلْتُم بِهِۦ كَـٰفِرُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যখন তাদের নিকট রাসূলগণ এসেছিল তাদের সম্মুখ ও পশ্চাৎ হতে এবং বলেছিলঃ তোমরা আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদাত করনা তখন তারা বলেছিলঃ আমাদের রবের এই রূপ ইচ্ছা হলে তিনি অবশ্যই মালাক/ফেরেশতা প্রেরণ করতেন। অতএব তোমরা যাসহ প্রেরিত হয়েছ আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৪. যখন তাদে নিকট তাদের রাসূলগণ ধারাবাহিকভাবে এই দা‘ওয়াত নিয়ে এলো যে, এক আল্লহ ব্যতীত তারা যেন অন্য কারো ইবাদাত না করে। তখন তাদের মধ্যকার কাফিররা বললো, আমাদের প্রতিপালক চাইলে আমাদের উদ্দেশ্যে রাসূল হিসাবে ফিরিশতা পাঠাতে পারতেন। তাই আমরা তোমাদের কর্তৃত আনিত বিষয়কে অবিশ্বাস করলাম। কেননা, তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ।
15
فَأَمَّا عَادٌ فَٱسْتَكْبَرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ بِغَيْرِ ٱلْحَقِّ وَقَالُوا۟ مَنْ أَشَدُّ مِنَّا قُوَّةً ۖ أَوَلَمْ يَرَوْا۟ أَنَّ ٱللَّهَ ٱلَّذِى خَلَقَهُمْ هُوَ أَشَدُّ مِنْهُمْ قُوَّةً ۖ وَكَانُوا۟ بِـَٔايَـٰتِنَا يَجْحَدُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আর ‘আদ সম্প্রদায়ের ব্যাপার এই যে, তারা পৃথিবীতে অযথা দম্ভ করত এবং বলতঃ আমাদের অপেক্ষা শক্তিশালী কে আছে? তারা কি তাহলে লক্ষ্য করেনি, যে আল্লাহ তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনি তাদের অপেক্ষা শক্তিশালী? অথচ তারা আমার নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৫. হূদের জাতি আদের কিছু বর্ণনা হলো এই যে, তারা কুফরী করার পাশাপাশি যমীনে অন্যায়ভাবে দাম্ভিকতা প্রদর্শন করে। আর তাদের আশপাশের লোকদের উপর অবিচার করে। এ ছাড়া তারা নিজেদের ক্ষমতার অন্ধ দাপট দেখিয়ে এ পর্যন্ত বলে যে, আমাদের চেয়ে কে অধিক শক্তিশালী?! তাদের ধারণা অনুযায়ী তাদের অপেক্ষা শক্তিশালী আর কেউ নেই। আল্লাহ তাদের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, তারা কি জানে না ও প্রত্যক্ষ করে না যে, আল্লাহই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের মধ্যে শক্তি নিহিত রেখেছেন। যে শক্তি তাদেরকে ঔদ্ধত্য শিখিয়েছে। সুতরাং তিনিই সর্বাপেক্ষা বেশী শক্তিশালী?! আর তারা হূদ (আলাইহিস-সালাম) যে সব নিদর্শনাবলী নিয়ে এসেছিলেন সেগুলোও অবিশ্বাস করতো।
16
فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيحًا صَرْصَرًا فِىٓ أَيَّامٍ نَّحِسَاتٍ لِّنُذِيقَهُمْ عَذَابَ ٱلْخِزْىِ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا ۖ وَلَعَذَابُ ٱلْـَٔاخِرَةِ أَخْزَىٰ ۖ وَهُمْ لَا يُنصَرُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
অতঃপর আমি তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করার জন্য তাদের বিরূদ্ধে প্রেরণ করেছিলাম ঝঞ্ঝা-বায়ু, অমঙ্গলজনক দিনে। আখিরাতের শাস্তিতো অধিকতর লাঞ্ছনাদায়ক এবং তাদের সাহায্য করা হবেনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৬. তাই আমি তাদের উপর তাদের দুর্দিনে বিরক্তিকর শব্দসহ শাস্তিপূর্ণ বায়ু প্রেরণ করলাম। যাতে করে তাদেরকে পাথিব জীবনে অপমানকর শাস্তি আস্বাদন করাই। বস্তুতঃ পরকালের অপেক্ষমাণ শাস্তি সমধিক অপমানকর। আর তারা তাদেরকে শাস্তি থেকে উদ্ধারকারী হিসাবে সাহায্যের জন্য কাউকে পাবে না।
17
وَأَمَّا ثَمُودُ فَهَدَيْنَـٰهُمْ فَٱسْتَحَبُّوا۟ ٱلْعَمَىٰ عَلَى ٱلْهُدَىٰ فَأَخَذَتْهُمْ صَـٰعِقَةُ ٱلْعَذَابِ ٱلْهُونِ بِمَا كَانُوا۟ يَكْسِبُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আর সামূদ সম্প্রদায়ের ব্যাপার এই যে, আমি তাদেরকে পথ নির্দেশ করেছিলাম, কিন্তু তারা সৎ পথের পরিবর্তে ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করেছিল। অতঃপর তাদেরকে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আঘাত হানলো তাদের কৃতকর্মের পরিণাম স্বরূপ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৭. আর আমি সালেহের জাতি সামূদকে সত্যের পথ বাতলে দেয়ার মাধ্যমে দিক নির্দেশনা দিলাম। কিন্তু তারা হেদায়েতের উপর ভ্রষ্টতাকে প্রাধান্য দিলো। ফলে তাদের কৃত কুফরী ও পাপের বিনিময়ে তাদেরকে অপমানকর শাস্তি পাকড়াও করলো।
18
وَنَجَّيْنَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَكَانُوا۟ يَتَّقُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমি উদ্ধার করলাম তাদেরকে যারা ঈমান এনেছিল এবং যারা তাকওয়া অবলম্বন করত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৮. আর অমি আল্লাহ ও তদীয় রাসূলে বিশ্বাসীদেরকে রেহাই দিলাম। বস্তুতঃ তারা আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহকে ভয় করতো। তাই তাদেরকে সেই শাস্তি থেকে উদ্ধার করেছি যা তাদের জাতির উপর নিপতিত হয়েছিলো।
19
وَيَوْمَ يُحْشَرُ أَعْدَآءُ ٱللَّهِ إِلَى ٱلنَّارِ فَهُمْ يُوزَعُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যেদিন আল্লাহর শত্রুদেরকে জাহান্নাম অভিমুখে সমবেত করা হবে সেদিন তাদেরকে বিন্যস্ত করা হবে বিভিন্ন দলে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৯. আর যে দিন আল্লাহ তাঁর শত্রæদেরকে জাহান্নামে সমবেত করবেন সে দিন জাহান্নামের রক্ষী তাদের প্রথম অংশকে শেষ অংশের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে বিন্যস্ত করবে। তখন তারা আগুন থেকে পালানোরও পথ পাবে না।
20
حَتَّىٰٓ إِذَا مَا جَآءُوهَا شَهِدَ عَلَيْهِمْ سَمْعُهُمْ وَأَبْصَـٰرُهُمْ وَجُلُودُهُم بِمَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
পরিশেষে যখন তারা জাহান্নামের সন্নিকটে পৌঁছবে তখন তাদের কান, চোখ ও ত্বক তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দিবে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২০. অবশেষে যখন জাহান্নামের নিকট হাঁকিয়ে আনা হবে এবং তারা দুনিয়ায় কৃত তাদের আমলকে অস্বীকার করতে লাগবে তখন তাদের কান, চোখ ও ত্বক তাদের বিরুদ্ধে তাদের কুফরী ও পাপাচারের বিষয়ে সাক্ষ্য দিবে সাক্ষ্য দিবে।
21
وَقَالُوا۟ لِجُلُودِهِمْ لِمَ شَهِدتُّمْ عَلَيْنَا ۖ قَالُوٓا۟ أَنطَقَنَا ٱللَّهُ ٱلَّذِىٓ أَنطَقَ كُلَّ شَىْءٍ وَهُوَ خَلَقَكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
জাহান্নামীরা তাদের ত্বককে জিজ্ঞেস করবেঃ তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছ কেন? উত্তরে তারা বলবেঃ আল্লাহ! যিনি সব কিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন তিনি আমাদেরকেও বাকশক্তি দিয়েছেন। তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন প্রথমবার এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২১. কাফিররা তাদের চামড়াকে বলবে: তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে দুনিয়ায় কৃতকর্মের উপর কেন সাক্ষ্য দিচ্ছো?! প্রতিউত্তরে তাদের চামড়া বলবে: আমাদেরকে সেই প্রতিপালক কথা বলার শক্তি দিয়েছেন যিনি সবাইকে কথা বলার শক্তি দিয়ে থাকেন। তিনিই তোমাদেরকে দুনিয়ায় প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন। আর হিসাব ও প্রতিদানের জন্য তাঁর দিকেই পরকালে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
22
وَمَا كُنتُمْ تَسْتَتِرُونَ أَن يَشْهَدَ عَلَيْكُمْ سَمْعُكُمْ وَلَآ أَبْصَـٰرُكُمْ وَلَا جُلُودُكُمْ وَلَـٰكِن ظَنَنتُمْ أَنَّ ٱللَّهَ لَا يَعْلَمُ كَثِيرًا مِّمَّا تَعْمَلُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তোমরা কিছু গোপন করতে না এই বিশ্বাসে যে, তোমাদের কর্ণ, চক্ষু এবং ত্বক তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবেনা; উপরন্ত তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা করতে তার অনেক কিছুই আল্লাহ জানেননা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২২. আর তোমরা পাপ কারার সময় তা গোপন রাখতে না যে, এখন তোমাদের কর্ণ, চক্ষু ও ত্বক তার সাক্ষ্য প্রদান করবে না। কেননা, তোমরা হিসাব ও মরণোত্তর শাস্তিতে বিশ্বাসী নও বরং তোমরা ধারণা করো যে, তোমাদের অনেক কাজের কথা মহান আল্লাহর অজানা। ফলে তোমরা বিভ্রান্ত হচ্ছো।
23
وَذَٰلِكُمْ ظَنُّكُمُ ٱلَّذِى ظَنَنتُم بِرَبِّكُمْ أَرْدَىٰكُمْ فَأَصْبَحْتُم مِّنَ ٱلْخَـٰسِرِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তোমাদের রাব্ব সম্বন্ধে তোমাদের এই ধারণাই তোমাদের ধ্বংস এনেছে। ফলে তোমরা হয়েছ ক্ষতিগ্রস্ত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৩. বস্তুতঃ তোমাদের রবের ব্যাপারে এই কুধারণাই তোমাদেরকে ধ্বংস করেছে। ফলে তোমরা ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছ।
24
فَإِن يَصْبِرُوا۟ فَٱلنَّارُ مَثْوًى لَّهُمْ ۖ وَإِن يَسْتَعْتِبُوا۟ فَمَا هُم مِّنَ ٱلْمُعْتَبِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এখন তারা ধৈর্য ধারণ করলেও জাহান্নামই হবে তাদের আবাস স্থল এবং তারা অনুগ্রহ চাইলেও অনুগ্রহ প্রাপ্ত হবেনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৪. অতএব, যাদের বিপক্ষে তাদের কান, চোখ ও ত্বক সাক্ষ্য প্রদান করেছে তারা যদি ধৈর্য ধারণ করে তো করলো। নচেৎ তারা যদি শাস্তি থেকে মুক্ত হতে চায় কিংবা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে তবে তারা তা অর্জন করতে পারবে না। আর না তারা আদৗ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।
25
۞ وَقَيَّضْنَا لَهُمْ قُرَنَآءَ فَزَيَّنُوا۟ لَهُم مَّا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَحَقَّ عَلَيْهِمُ ٱلْقَوْلُ فِىٓ أُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِم مِّنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ خَـٰسِرِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমি তাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম সহচর যারা তাদের সম্মুখ ও পশ্চাতে যা আছে তা তাদের দৃষ্টিতে শোভন করে দেখিয়েছিল এবং তাদের ব্যাপারেও তাদের পূর্ববর্তী জিন ও মানবদের ন্যায় শাস্তির কথা বাস্তব হয়েছে। তারাতো ছিল ক্ষতিগ্রস্ত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৫. আর আমি এ সব কাফিরদের সাথে শয়তান সহযোগীদেরকে যুক্ত করে দিয়েছি। ওরা সর্বদা তাদের সামনে দুনিয়ার কাজকর্ম তথা কুফরী ও পাপাচার এবং পরকালের শাস্তি ও প্রতিদানকে সুন্দর করে তুলে ধরে। ফলে তাদেরকে তার স্মরণ ও সে জন্য আমলের কথা ভুলিয়ে রাখে। পূর্বেকার জিন ও মানবজাতির মতো তাদের জন্যও শাস্তি অবধারিত। তারা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। কেননা, তারা নিজেরা এবং তাদের পরিবারবর্গ সকলেই কিয়ামতের দিন জান্নামে প্রবেশ করবে।
26
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ لَا تَسْمَعُوا۟ لِهَـٰذَا ٱلْقُرْءَانِ وَٱلْغَوْا۟ فِيهِ لَعَلَّكُمْ تَغْلِبُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
কাফিরেরা বলেঃ তোমরা এই কুরআন শ্রবণ করনা এবং তা আবৃত্তি কালে শোরগোল সৃষ্টি কর যাতে তোমরা জয়ী হতে পার।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৬. কাফিররা যখন প্রামাণিক বিতর্কে ব্যর্থ হলো তখন তারা পরস্পর উপদেশ দিয়ে বলতে লাগলো যে, মুহাম্মদ যে কুরআন তোমাদের সামনে পাঠ করে তা তোমরা শ্রবণ করো না। আর তাতে যা রয়েছে তোমরা তা মান্যও করো না। বরং তোমরা তার কুরআন পাঠের সময় চিৎকার করবে ও উচ্চ-বাচ্চ্য করবে যেন তার উপর বিজয়ী হতে পারো। ফলে সে এর তিলাওয়াত ও এর প্রতি আহŸান করা ছেড়ে দিবে এবং আমরা তা থেকে রেহাই পেয়ে যাবো।
27
فَلَنُذِيقَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ عَذَابًا شَدِيدًا وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَسْوَأَ ٱلَّذِى كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমি অবশ্যই কাফিরদের কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাব এবং নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে নিকৃষ্ট কার্যকলাপের প্রতিফল দিব –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৭. যারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলগণে অবিশ্বাসী আমি তাদেরকে কিয়ামত দিবসে কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাবো। আর তাদের শিরক ও পাপের শাস্তি হিসাবে খুবই মন্দ প্রতিদান দেবো।
28
ذَٰلِكَ جَزَآءُ أَعْدَآءِ ٱللَّهِ ٱلنَّارُ ۖ لَهُمْ فِيهَا دَارُ ٱلْخُلْدِ ۖ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوا۟ بِـَٔايَـٰتِنَا يَجْحَدُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
জাহান্নাম; এটাই আল্লাহর শত্রুদের পরিণাম; সেখানে তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আবাস, আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকৃতির প্রতিফল স্বরূপ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৮. আল্লাহর শত্রæদের জন্যই উপরোক্ত প্রতিদান যারা তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে অবিশ্বাস ও অমান্য করেছে। তথা তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। যেখানে তারা চিরদিন থাকবে। এই প্রতিদান মূলতঃ আল্লাহর নিদর্শনাবলী সুস্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও সেগুলোকে অগ্রাহ্য করা এবং তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন না করার প্রতিদান।
29
وَقَالَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ رَبَّنَآ أَرِنَا ٱلَّذَيْنِ أَضَلَّانَا مِنَ ٱلْجِنِّ وَٱلْإِنسِ نَجْعَلْهُمَا تَحْتَ أَقْدَامِنَا لِيَكُونَا مِنَ ٱلْأَسْفَلِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
কাফিরেরা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! যে সব জিন ও মানুষ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল তাদের উভয়কে দেখিয়ে দিন, আমরা উভয়কে পদদলিত করব, যাতে তারা লাঞ্ছিত হয়।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৯. যারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলদেরকে অবিশ্বাস করেছে তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে মানব ও দানবের উভয়বিধ বিভ্রান্তকারীদেরকে দেখিয়ে দিন: একতো ইবলিস যে কুফরী ও তার প্রতি আহŸানের সূচনা করেছে। আর অন্যজন হলো আদমের ওই সন্তান যে হত্যার প্রচলন ঘটিয়েছে। আমরা তাদেরকে আমাদের পদতলে পিশিয়ে দেবো যেন তারা জাহান্নামের অতল গহŸরে তলিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হয় যারা সর্বাপেক্ষা কঠিন শাস্তিপ্রাপ্ত হবে।
30
إِنَّ ٱلَّذِينَ قَالُوا۟ رَبُّنَا ٱللَّهُ ثُمَّ ٱسْتَقَـٰمُوا۟ تَتَنَزَّلُ عَلَيْهِمُ ٱلْمَلَـٰٓئِكَةُ أَلَّا تَخَافُوا۟ وَلَا تَحْزَنُوا۟ وَأَبْشِرُوا۟ بِٱلْجَنَّةِ ٱلَّتِى كُنتُمْ تُوعَدُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যারা বলেঃ আমাদের রাব্ব আল্লাহ! অতঃপর অবিচল থাকে, তাদের নিকট অবতীর্ণ হয় মালাইকা (ফেরেশতা) এবং বলেঃ তোমরা ভীত হয়োনা, চিন্তিত হয়োনা এবং তোমাদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার জন্য আনন্দিত হও।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩০. যারা বলে যে, আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, তিনি ব্যতীত আমাদের কোন রব নেই। আর তাঁর আাদেশ-নিষেধ মান্য করার উপর অটল থাকে তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের নিকট ফিরিশতারা এই বার্তা নিয়ে অবতরণ করেন যে, তোমরা মৃত্যু ও তার পরবর্তী বিষয়ে ভীত হয়ো না। আর না তোমরা পিছনে ফেলে আসা দুনিয়ার বিষয় নিয়ে চিন্তিত হবে। বরং তোমরা সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো ঈমান ও নেক আমলের বিনিময়ে যার অঙ্গীকার তোমাদের সাথে করা হয়েছিলো।
31
نَحْنُ أَوْلِيَآؤُكُمْ فِى ٱلْحَيَوٰةِ ٱلدُّنْيَا وَفِى ٱلْـَٔاخِرَةِ ۖ وَلَكُمْ فِيهَا مَا تَشْتَهِىٓ أَنفُسُكُمْ وَلَكُمْ فِيهَا مَا تَدَّعُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমরাই তোমাদের বন্ধু - দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে। সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা কিছু তোমাদের মন চায় এবং সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে যা তোমরা ফরমায়েস কর।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩১. আমি দুনিয়ার জীবনে তোমাদের অভিভাবক হিসাবে তোমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালনা করেছি ও তোমাদেরকে হিফাজত করেছি। আর আমি তোমাদের পরকালীন জীবনেরও অভিভাবক। ফলে তোমাদের উদ্দেশ্যে আমার অভিভাকত্ব সব সময়ের। তোমাদের জন্য জান্নাতে রয়েছে আকর্ষণীয় ও লোভনীয় এমন বস্তু যা তোমাদের মন চায়। সেই সাথে তোমরা আরো যা কামনা করবে তাই পাবে।
32
نُزُلًا مِّنْ غَفُورٍ رَّحِيمٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এটা হবে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু আল্লাহর পক্ষ হতে আপ্যায়ন।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩২. যা তোমাদের আপ্যায়নের উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত জীবিকা হিসেবে ব্যবস্থা করা হয়েছে ওই রবের পক্ষ থেকে যিনি বান্দাদের মধ্য থেকে তাওবাকারীদের পাপ মার্জনাকারী ও তাদের প্রতি দয়াবান।
33
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَآ إِلَى ٱللَّهِ وَعَمِلَ صَـٰلِحًا وَقَالَ إِنَّنِى مِنَ ٱلْمُسْلِمِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কথায় কে উত্তম যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎ কাজ করে এবং বলেঃ আমিতো আত্মসমর্পনকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৩. সে ব্যক্তি অপেক্ষা উত্তম কেউ নেই যে আল্লাহর একত্ববাদ ও শরীয়ত অনুযায়ী আমলের প্রতি আহŸান করে এবং তার প্রতিপালককে সন্তুষ্টকারী নেক আমল করে আর বলে যে, আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে আত্মসমর্পণপূর্বক তাঁর আনুগত্যকারী। বস্তুতঃ যে এই কাজ করে তার কথা সর্বোত্তম।
34
وَلَا تَسْتَوِى ٱلْحَسَنَةُ وَلَا ٱلسَّيِّئَةُ ۚ ٱدْفَعْ بِٱلَّتِى هِىَ أَحْسَنُ فَإِذَا ٱلَّذِى بَيْنَكَ وَبَيْنَهُۥ عَدَٰوَةٌ كَأَنَّهُۥ وَلِىٌّ حَمِيمٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
ভাল কাজ এবং মন্দ কাজ সমান হতে পারেনা। মন্দ প্রতিহত কর উৎকৃষ্ট দ্বারা; ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৪. আল্লাহকে সন্তুষ্টকারী পুণ্য ও তাঁকে অসন্তুষ্টকারী পাপ কখনো সমান হয় না। তোমরা মন্দ আচরণকারী মানুষের অনিষ্টকে উত্তম আচরণ দ্বারা প্রতিহত করো। সহসা দেখবে ইতিপূর্বে যার সাথে সদ্ব্যবহার করেছো তোমার ও তার মধ্যে শত্রæতা থাকা সত্তে¡ও সে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হয়ে গেছে।
35
وَمَا يُلَقَّىٰهَآ إِلَّا ٱلَّذِينَ صَبَرُوا۟ وَمَا يُلَقَّىٰهَآ إِلَّا ذُو حَظٍّ عَظِيمٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এই গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা ধৈর্যশীল, এই গুণের অধিকারী করা হয় শুধু তাদেরকেই যারা মহা ভাগ্যবান।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৫. আর এই প্রশংসনীয় স্বভাবের জন্য শুধু যারা কষ্ট ও মানুষের অসদাচরণে ধৈর্যশীল তাদেরকেই তাওফীক প্রদান করা হয়। বস্তুতঃ এতে প্রচুর পরিমাণ ও পর্যাপ্ত কল্যাণ রয়েছে। সে কারণে কেবল মহা সৌভাগ্যবান ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ এর তাওফীক লাভে ধন্য হবে না।
36
وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ ٱلشَّيْطَـٰنِ نَزْغٌ فَٱسْتَعِذْ بِٱللَّهِ ۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যদি শাইতানের কু-মন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে আল্লাহকে স্মরণ করবে; তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৬. যদি কখনো শয়তান তোমাকে কুকর্মের প্ররোচনা দেয় তবে তুমি আল্লাহর সাহায্য আঁকড়ে ধরো ও তাঁর নিকট আশ্রয় কামনা করো। অবশ্যই তিনি তোমার কথা শ্রবণকারী, তোমার অবস্থা সম্পর্কে পরিজ্ঞাত।
37
وَمِنْ ءَايَـٰتِهِ ٱلَّيْلُ وَٱلنَّهَارُ وَٱلشَّمْسُ وَٱلْقَمَرُ ۚ لَا تَسْجُدُوا۟ لِلشَّمْسِ وَلَا لِلْقَمَرِ وَٱسْجُدُوا۟ لِلَّهِ ٱلَّذِى خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রাত ও দিন, সূর্য ও চাঁদ। তোমরা সূর্যকে সাজদাহ করনা, চাঁদকেও নয়; সাজদাহ কর আল্লাহকে, যিনি এগুলি সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা প্রকৃতই তাঁর ইবাদাত কর।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৭. আল্লাহর মাহাত্ম্য ও একত্ববাদের উপর প্রমাণ বহনকারী নিদর্শনাবলীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে দিবা-নিশি এবং উভয়ের পরম্পরা। আরো রয়েছে চন্দ্র-সূর্য। হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা চন্দ্র-সূর্যের ইবাদাত করো না। বরং এককভাবে ওই আল্লাহর ইবাদাত করো যিনি এসব সৃষ্টি করেছেন। যদি তোমরা প্রকৃতই আল্লাহর ইবাদাত করে থাকো।
38
فَإِنِ ٱسْتَكْبَرُوا۟ فَٱلَّذِينَ عِندَ رَبِّكَ يُسَبِّحُونَ لَهُۥ بِٱلَّيْلِ وَٱلنَّهَارِ وَهُمْ لَا يَسْـَٔمُونَ ۩
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা অহংকার করলেও যারা তোমার রবের সান্নিধ্যে রয়েছে তারাতো দিন ও রাতে তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এবং তারা ক্লান্তিও বোধ করেনা। [সাজদাহ]
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৮. যদি তারা অহঙ্কার করে ও বিমুখ হয় আর ¯্রষ্টা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাজদা না দেয় তবে রাত-দিন আল্লাহর নিকটতম ফিরিশতারা তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা ও প্রশংসা করে যাচ্ছে। তারা তাঁর ইবাদাতে সামান্যতম ক্লান্তি বোধ করে না।
39
وَمِنْ ءَايَـٰتِهِۦٓ أَنَّكَ تَرَى ٱلْأَرْضَ خَـٰشِعَةً فَإِذَآ أَنزَلْنَا عَلَيْهَا ٱلْمَآءَ ٱهْتَزَّتْ وَرَبَتْ ۚ إِنَّ ٱلَّذِىٓ أَحْيَاهَا لَمُحْىِ ٱلْمَوْتَىٰٓ ۚ إِنَّهُۥ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আর তাঁর একটি নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখতে পাও শুষ্ক উষর, অতঃপর আমি তাতে বৃষ্টি বর্ষণ করলে তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয়; যিনি জীব দেন তিনিই মৃতের জীবন দানকারী। তিনিতো সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৯. আল্লাহর মাহাত্ম্য, একত্ব ও পুনরুত্থান ঘটানোর ক্ষমতার উপর প্রমাণবাহী বিষয়াদির মধ্যে রয়েছে আপনি যমীনকে লতাপাতাবিহীন দেখ। অতঃপর যখন আমি তার উপর বৃষ্টিপাত করি তখন তার ভিতরকার বীজ বেড়ে উঠার ফলে সে নাড়া দেয় ও উঁচু হয়। যিনি এই মৃত যমীনকে উদ্ভিদের সাহায্যে জীবিত করলেন তিনি অবশ্যই মৃতদেরকে জীবিত করতে, হিসাব ও প্রতিদানের উদ্দেশ্যে পুনরুত্থান ঘটাতে সক্ষম। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান। তিনি শুষ্ক যমীন সজীব করার কাজে অসমর্থ নন। আর না তিনি মৃতদেরকে জীবিত করা ও তাদেরকে কবর থেকে পুনরুত্থানে অপারগ।
40
إِنَّ ٱلَّذِينَ يُلْحِدُونَ فِىٓ ءَايَـٰتِنَا لَا يَخْفَوْنَ عَلَيْنَآ ۗ أَفَمَن يُلْقَىٰ فِى ٱلنَّارِ خَيْرٌ أَم مَّن يَأْتِىٓ ءَامِنًا يَوْمَ ٱلْقِيَـٰمَةِ ۚ ٱعْمَلُوا۟ مَا شِئْتُمْ ۖ إِنَّهُۥ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যারা আমার আয়াতসমূহকে বিকৃত করে তারা আমার অগোচর নয়। শ্রেষ্ঠ কে? যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে, নাকি যে কিয়ামাত দিবসে নিরাপদে থাকবে সে? তোমাদের যা ইচ্ছা তা কর; তোমরা যা কর তিনি তার দ্রষ্টা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪০. যারা আল্লাহর আয়াতসমূহের ক্ষেত্রে হক থেকে বিমুখ থাকে সেগুলোকে অবিশ্বাস করা, মিথ্যারোপ করা ও বিকৃত করার মাধ্যমে তাদের আবস্থা আমার নিকট গোপন নয়। বরং আমি তাদের অবস্থা জানি। তবে কি যাকে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে সে ভাল, না কি যে ব্যক্তি কিয়ামত দিবসে শাস্তি থেকে নিরাপদ হয়ে আগমন করবে সে? হে লোক সকল! তোমরা ভালো-মন্দ যা ইচ্ছা আমল করো। কেননা, আমি তোমাদের উদ্দেশ্যে ভালো-মন্দ সবই বাতলে দিয়েছি। তোমরা এতদুভয়ের মধ্যে যা করো তা তিনি জানেন। তাঁর নিকট তোমাদের কোন আমলই গোপন থাকে না।
41
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بِٱلذِّكْرِ لَمَّا جَآءَهُمْ ۖ وَإِنَّهُۥ لَكِتَـٰبٌ عَزِيزٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যারা তাদের নিকট কুরআন আসার পর তা প্রত্যাখ্যান করে তাদের মধ্যে চিন্তা ভাবনার অভাব রয়েছে। ইহা অবশ্যই এক মহিমাময় গ্রন্থ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪১. যাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে কুরআন আসার পর তারা তা অবিশ্বাস করে তাদেরকে অবশ্যই কিয়ামত দিবসে শাস্তি দেয়া হবে। বস্তুতঃ এটি হলো এক রক্ষিত ও সম্মানী কিতাব। কোন বিকৃতকারী একে বিকৃত করতে পারবে না। আর না কোন পরিবর্তনকারী একে পরিবর্তন করতে পারবে।
42
لَّا يَأْتِيهِ ٱلْبَـٰطِلُ مِنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْفِهِۦ ۖ تَنزِيلٌ مِّنْ حَكِيمٍ حَمِيدٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
কোন মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করবেনা। সম্মুখ হতেও নয়, পশ্চাৎ হতেও নয়; এটা প্রজ্ঞাময় প্রশংসা আল্লাহর নিকট হতে অবতীর্ণ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪২. একে সম্মুখ কিংবা পেছন থেকে বাতিল স্পর্শ করতে পারে না। চাই কম-বিশী করে হোক আর পরিবর্তন কিংবা বিকৃত করে হোক। এটি সেই সত্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ যিনি তাঁর সৃষ্টি, নিরূপণে ও বিধান রচনায় প্রজ্ঞাবান। তিনি সর্বাবস্থায় প্রশংসনীয়।
43
مَّا يُقَالُ لَكَ إِلَّا مَا قَدْ قِيلَ لِلرُّسُلِ مِن قَبْلِكَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ وَذُو عِقَابٍ أَلِيمٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তোমার সম্বন্ধেতো তাই বলা হয় যা বলা হত তোমার পূর্ববর্তী রাসূলদের সম্পর্কে। তোমার রাব্ব অবশ্যই ক্ষমাশীল এবং কঠিন শাস্তিদাতা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৩. হে রাসূল! আপনাকে মিথ্যারোপমূলক যা বলা হচ্ছে তা আপনার পূর্বেকার রাসূলদেরকেও বলা হয়েছে। তাই আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। কেননা, আপনার প্রতিপালক তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের তাওবা কবুলকারী। পক্ষান্তরে যে নিজে বারংবার পাপে অভ্যস্ত ও তাঁর প্রতি তাওবা করে না তার জন্য তিনি কষ্টদায়ক শাস্তি প্রদানকারী।
44
وَلَوْ جَعَلْنَـٰهُ قُرْءَانًا أَعْجَمِيًّا لَّقَالُوا۟ لَوْلَا فُصِّلَتْ ءَايَـٰتُهُۥٓ ۖ ءَا۬عْجَمِىٌّ وَعَرَبِىٌّ ۗ قُلْ هُوَ لِلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ هُدًى وَشِفَآءٌ ۖ وَٱلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ فِىٓ ءَاذَانِهِمْ وَقْرٌ وَهُوَ عَلَيْهِمْ عَمًى ۚ أُو۟لَـٰٓئِكَ يُنَادَوْنَ مِن مَّكَانٍۭ بَعِيدٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমি যদি আরাবী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ না করতাম তাহলে তারা অবশ্যই বলত, এর আয়াতগুলি বিশদভাবে বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, এর ভাষা আজমী, অথচ রাসূল আরাবীয়। বলঃ মু’মিনদের জন্য ইহা (কুরআন) পথ নির্দেশ ও ব্যাধির প্রতিকার। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী তাদের কর্ণে রয়েছে বধিরতা এবং কুরআন হবে তাদের জন্য অন্ধত্ব। তারা এমন যে, যেন তাদেরকে আহবান করা হয় বহু দূর হতে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৪. আমি যদি এই কুরআন অনারবী ভাষায় অবতীর্ণ করতাম তাহলে কাফিররা অবশ্যই বলতো, যদি এর আয়াতগুলো বুঝিয়ে বলা হতো তাহলে আমরা তা বুঝে নিতাম। তবে কি কুরআন অনারবী ভাষায় নাযিল হবে, আর তা নিয়ে আগমনকারী আরবীভাষী হবে? হে রাসূল! আপনি এদেরকে বলে দিন, কুরআন মূলতঃ তাদের জন্য বিপথগামী হওয়া থেকে হেদায়ত এবং অজ্ঞতা ও তার প্রভাব জাতীয় রোগের নিরাময় যারা আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তদীয় রাসূলগণকে সত্যায়নকারী। পক্ষান্তরে যারা আল্লাহতে বিশ্বাসী নয় তাদের কানে রয়েছে বধিরতা; তাতে রয়েছে জড়তা। ফলে তারা তা বুঝেনা। এসব গুণাবলী কর্তৃক গুণান্বিত ব্যক্তিদের উদাহরণ হলো দূর থেকে আহŸানকৃত ব্যক্তির ন্যায়। এমতাবস্থায় কীভাবে তারা আহŸানকারীর ডাক শুনবে?!
45
وَلَقَدْ ءَاتَيْنَا مُوسَى ٱلْكِتَـٰبَ فَٱخْتُلِفَ فِيهِ ۗ وَلَوْلَا كَلِمَةٌ سَبَقَتْ مِن رَّبِّكَ لَقُضِىَ بَيْنَهُمْ ۚ وَإِنَّهُمْ لَفِى شَكٍّ مِّنْهُ مُرِيبٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমিতো মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, অতঃপর এতে মতভেদ ঘটেছিল। তোমার রবের পক্ষ হতে পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের মীমাংসা হয়ে যেত। তারা অবশ্যই এ সম্বন্ধে বিভ্রান্তকর সন্দেহে রয়েছে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৫. আর আমি মসূা (আলাইহিস-সালাম) কে তাওরাত প্রদান করেছি। কিন্তু তাতে মতানৈক্য করা হলো। ফলে কেউ তার উপর ঈমান আনয়ন করলো। আর কেউ তাকে অবিশ্বাস করলো। যদি আল্লাহ বান্দাদের মধ্যকার মতানৈক্যপূর্ণ বিষয়াদির ফায়সালা কিয়ামত দিবসে করার অঙ্গীকার না করতেন তাহলে তাওরাত নিয়ে মতানৈক্যকারীদের মধ্যে ফায়সালা করে ফেলতেন এবং কে হকের উপর আর কে বাতিলের উপর তা বাতলে দিতেন। এর মাধ্যমে হকপন্থীকে সস্মান দিতেন ও বাতিলপন্থীকে অসম্মান করতেন। বস্তুতঃ কাফিররা কুরআনের ব্যাপারে সন্দেহে নিমজ্জিত রয়েছে।
46
مَّنْ عَمِلَ صَـٰلِحًا فَلِنَفْسِهِۦ ۖ وَمَنْ أَسَآءَ فَعَلَيْهَا ۗ وَمَا رَبُّكَ بِظَلَّـٰمٍ لِّلْعَبِيدِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যে সৎ কাজ করে সে নিজের কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেহ মন্দ কাজ করলে ওর প্রতিফল সে’ই ভোগ করবে। তোমার রাব্ব বান্দাদের প্রতি কোন যুলম করেন না।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৬. যে ব্যক্তি নেক আমল করলো তার নেক আমলের সুফল তার জন্যই থেকে যায়। কারো নেক আমল আল্লাহর কোন উপকার সাধনে সমর্থ নয়। আর যে ব্যক্তি মন্দ আমল করলো তার অপকারিতার খেসারত তাকেই দিতে হবে। আল্লাহকে তাঁর সৃষ্টির কোন মন্দ আমল ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। তিনি সবাইকে এর উপযুক্ত প্রতিদান দিবেন। আর হে রাসূল! আপনার প্রতিপালক আপন বান্দাদের উপর জুলুমকারী নন। তিনি আদৗ কারো একটি পুণ্য হ্রাসকারী নন। আর না কারো জন্য একটি পাপ বৃদ্ধিকারী।
47
۞ إِلَيْهِ يُرَدُّ عِلْمُ ٱلسَّاعَةِ ۚ وَمَا تَخْرُجُ مِن ثَمَرَٰتٍ مِّنْ أَكْمَامِهَا وَمَا تَحْمِلُ مِنْ أُنثَىٰ وَلَا تَضَعُ إِلَّا بِعِلْمِهِۦ ۚ وَيَوْمَ يُنَادِيهِمْ أَيْنَ شُرَكَآءِى قَالُوٓا۟ ءَاذَنَّـٰكَ مَا مِنَّا مِن شَهِيدٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
কিয়ামাতের জ্ঞান শুধু আল্লাহর কাছেই ন্যস্ত, তাঁর অজ্ঞাতসারে কোন ফল আবরণ হতে বের হয়না, কোন নারী গর্ভধারণ করেনা এবং সন্তানও প্রসব করেনা। যেদিন আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বলবেনঃ আমার শরীকরা কোথায়? তখন তারা বলবেঃ আমরা আপনার নিকট নিবেদন করছি যে, এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানিনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৭. কিয়ামত সংঘটনের জ্ঞান কেবল আল্লাহর প্রতি এককভাবে ন্যস্ত। কেননা, এর খবর কেবল তিনিই জানেন। তিনি ব্যতীত এর খবর অন্য কেউ রাখে না। শস্যাদি যখন তার সংরক্ষক আবরণ থেকে বের হয়, মহিলা যে সন্তান ধারণ করে কিংবা প্রসব করে এ সবের খবর অবশ্যই তাঁর নিকটই রয়েছে। এগুলোর কিছুই তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়। যে দিন আল্লাহ ওই সকল মুশরিকদেরকে ধমকের স্বরে আহŸান করবেন যারা তাঁর ইবাদাতে এদেরকে শরীক করে থাকে। তিনি তাদেরকে বলবেন, তোমাদের তথাকথিত অংশীদাররা কোথায়? মুশরিকরা তখন বলবে, আমরা আপনার সামনে স্বীকার করছি যে, আমাদের মধ্যে কেউ এ কথার সাক্ষ্য দিবে না যে, আপনার কোন শরীক রয়েছে।
48
وَضَلَّ عَنْهُم مَّا كَانُوا۟ يَدْعُونَ مِن قَبْلُ ۖ وَظَنُّوا۟ مَا لَهُم مِّن مَّحِيصٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
পূর্বে তারা যাদেরকে আহবান করত তারা অদৃশ্য হয়ে যাবে এবং অংশীবাদীরা উপলদ্ধি করবে যে, তাদের নিস্কৃতির কোন উপায় নেই।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৮. আজ তাদের থেকে আহŸানকৃত দেবতারা উধাও হয়ে গেছে এবং তারা বিশ্বাস করে নিয়েছে যে, আল্লাহর শাস্তি থেকে তাদের পালানোর কোন জায়গা ও সুযোগ নেই।
49
لَّا يَسْـَٔمُ ٱلْإِنسَـٰنُ مِن دُعَآءِ ٱلْخَيْرِ وَإِن مَّسَّهُ ٱلشَّرُّ فَيَـُٔوسٌ قَنُوطٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
মানুষ ধন-সম্পদ প্রার্থনায় কোন ক্লান্তি বোধ করেনা, কিন্তু যখন তাকে দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করে তখন সে অত্যন্ত নিরাশ ও হতাশ হয়ে পড়ে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৯. স্বাস্থ্য, সম্পদ, সন্তান ইত্যাদি নি‘আমত অন্বেষণে মানুষ ক্লান্ত হয় না। তবে যদি তাকে অভাব কিংবা রোগ ইত্যাদি পেয়ে বসে তখন সে আল্লাহর রহমত থেকে খুব বেশী নিরুৎসাহী ও নিরাশ হয়ে পড়ে।
50
وَلَئِنْ أَذَقْنَـٰهُ رَحْمَةً مِّنَّا مِنۢ بَعْدِ ضَرَّآءَ مَسَّتْهُ لَيَقُولَنَّ هَـٰذَا لِى وَمَآ أَظُنُّ ٱلسَّاعَةَ قَآئِمَةً وَلَئِن رُّجِعْتُ إِلَىٰ رَبِّىٓ إِنَّ لِى عِندَهُۥ لَلْحُسْنَىٰ ۚ فَلَنُنَبِّئَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ بِمَا عَمِلُوا۟ وَلَنُذِيقَنَّهُم مِّنْ عَذَابٍ غَلِيظٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করার পর যদি তাকে আমি অনুগ্রহের আস্বাদ দিই তখন সে বলেই থাকেঃ এটা আমার প্রাপ্য এবং আমি মনে করিনা যে, কিয়ামাত সংঘটিত হবে; আর আমি যদি আমার রবের নিকট প্রত্যাবর্তিত হইও তাহলে তাঁর নিকটতো আমার জন্য কল্যাণই থাকবে। আমি কাফিরদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবশ্যই অবহিত করব এবং তাদেরকে আস্বাদন করাব কঠোর শাস্তি।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৫০. আর আমি যদি তাকে বিপদগ্রস্ত ও রোগাক্রান্ত করার পর সুস্বাস্থ্য, ধনাঢ্যতা ও নিরাপত্তা প্রদান করি তাহলে সে অচিরেই বলবে, এটি আমারই। কেননা, আমি এর অধিকারী। আর আমি মনে করি না যে, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। একান্ত যদি ধরে নেয়া যায় যে, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে তাহলে আল্লাহর নিকট আমার জন্য ধনাঢ্যতা ও সম্পদ থাকবে। যেভাবে আমি অধিকারী হিসাবে দুনিয়াতে তিনি আমাকে নি‘আমত প্রদান করেছেন ঠিক পরকালেও তা প্রদান করবেন। তাই আমি আল্লাহকে অস্বীকারকারীদেরকে তাদের কুফরী ও পাপাচারের সংবাদ অবশ্যই প্রদান করবো এবং তাদেরকে চরম পর্যায়ের কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাবো।
51
وَإِذَآ أَنْعَمْنَا عَلَى ٱلْإِنسَـٰنِ أَعْرَضَ وَنَـَٔا بِجَانِبِهِۦ وَإِذَا مَسَّهُ ٱلشَّرُّ فَذُو دُعَآءٍ عَرِيضٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যখন আমি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করি তখন সে মুখ ফিরিয়ে নেয় ও দূরে সরে যায় এবং তাকে অনিষ্টতা স্পর্শ করলে সে তখন দীর্ঘ প্রার্থনায় রত হয়।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৫১. আমি যখন মানুষকে স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ইত্যাদি নি‘আমত দ্বারা ধন্য করি তখন সে আল্লাহর স্মরণ ও আনুগত্য থেকে উদাসীন হয়ে পড়ে এবং সে অহঙ্কারবশতঃ পার্শ্বদেশ ফিরিয়ে নেয়। পক্ষান্তরে যখন তাকে রোগ ও অভাব ইত্যাদি পেয়ে বসে তখন সে আল্লাহর নিকট তার সকল সমস্যার কথা উল্লেখপূর্বক তা দূর করার জন্য দীর্ঘ দু‘আ শুরু করে। তবে তার প্রতিপালক যখন তাকে অনুগ্রহ করে তখন তাঁর শুকরিয়া আদায় করে না। আবার যখন তিনি তাকে বিপদে নিপতিত করেন তখন এর উপর ধৈর্য ধারণও করে না।
52
قُلْ أَرَءَيْتُمْ إِن كَانَ مِنْ عِندِ ٱللَّهِ ثُمَّ كَفَرْتُم بِهِۦ مَنْ أَضَلُّ مِمَّنْ هُوَ فِى شِقَاقٍۭ بَعِيدٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি এই কুরআন আল্লাহর নিকট থেকে অবতীর্ণ হয়ে থাকে এবং তোমরা ইহা প্রত্যাখ্যান কর, তাহলে যে ব্যক্তি ঘোর বিরুদ্ধাচরণে লিপ্ত সে অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত আর কে?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৫২. হে রাসূল! এসব মিথ্যারোপকারী মুশরিকদেরকে বলুন: তোমরা আমাকে অবগত করো যদি এই কুরআন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর তোমরা তা অবিশ্বাস করো ও তাকে মিথ্যারোপ করো এমতাবস্থায় তোমাদের পরিস্থিতি কেমন হবে?! আর সে ব্যক্তি অপেক্ষা কে অধিক পথভ্রষ্ট হতে পারে যে হকের কথা সুস্পষ্ট ও তার প্রমাণাদি এবং এর শক্তি প্রতিভাত হওয়ার পরও তা থেকে বিমুখ থাকে?!
53
سَنُرِيهِمْ ءَايَـٰتِنَا فِى ٱلْـَٔافَاقِ وَفِىٓ أَنفُسِهِمْ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ ٱلْحَقُّ ۗ أَوَلَمْ يَكْفِ بِرَبِّكَ أَنَّهُۥ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ شَهِيدٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমি শীঘ্র তাদের জন্য আমার নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করব বিশ্বজগতে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে। ফলে তাদের নিকট সুস্পষ্ট হয়ে উঠবে যে ওটাই সত্য। এটা কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার রাব্ব সর্ব বিষয়ে অবহিত?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৫৩. অচিরেই আমি কুরাইশের কাফিরদেরকে মুসলিমদের বিজিত এলাকার দিগন্ত দেখাবো এবং মক্কা বিজয়ের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তি সত্তায় তা ফুটিয়ে তুলবো। পরিশেষে তাদের কাছে এ কথা সুস্পষ্ট হবে যে, এই কুরআন এমন সত্য গ্রন্থ যাতে কোনরূপ সন্দেহের অবকাশ নেই। এ সব মুশরিকদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, কুরআনের সত্যতা স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ থেকে এই বলে সাক্ষ্য প্রদান দ্বারা সাব্যস্ত যে, এটি তাঁর পক্ষ থেকে?! আল্লাহ অপেক্ষা মহা সাক্ষ্যদাতা কেই বা আছে?! তারা সত্য চাইলে তাদের রবের সাক্ষ্যকেই যথেষ্ট মনে করতো।
54
أَلَآ إِنَّهُمْ فِى مِرْيَةٍ مِّن لِّقَآءِ رَبِّهِمْ ۗ أَلَآ إِنَّهُۥ بِكُلِّ شَىْءٍ مُّحِيطٌۢ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
জেনে রেখ, এরা এদের রবের সাথে সাক্ষাৎকারে সন্ধিহান। জেনে রেখ, সব কিছুকে আল্লাহ পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৫৪. জেনে রেখো, মুশরিকরা পুনরুত্থানকে অবিশ্বাস করার ফলে তারা স্বীয় রবের সাক্ষাতে অবিশ্বাসী। ফলে তারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপনকারী নয়। তাই তারা এর উদ্দেশ্যে নেক আমল দ্বারা প্রস্তুতি নেয় না। জেনে রেখো, আল্লাহ জ্ঞান ও ক্ষমতায় সর্ব বিষয়কে পরিব্যাপ্তকারী।