আত-তূর
الطور
بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতিশয় মেহেরবান।
1
وَٱلطُّورِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
শপথ তুর পর্বতের,
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১. আল্লাহ সেই পাহাড়ের নামে শপথ করলেন যার উপর তিনি মূসা (আলাইহিস-সালাম) এর সাথে কথা বলেছেন।
2
وَكِتَـٰبٍ مَّسْطُورٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
শপথ কিতাবের, যা লিখিত আছে –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২. তিনি সেই কিতাবের শপথ করলেন যা লিখিত।
3
فِى رَقٍّ مَّنشُورٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
উন্মুক্ত পত্রে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩. যা খোলা কাগজে লিপিবদ্ধ যেমন অবতীর্ণ কিতাবসমূহ।
4
وَٱلْبَيْتِ ٱلْمَعْمُورِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
শপথ বায়তুল মা‘মুরের,
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪. তিনি সেই ঘরের শপথ করলেন যাকে ফিরিশতাগণ ইবাদাতের মাধ্যমে আসমানে আবাদ করেন।
5
وَٱلسَّقْفِ ٱلْمَرْفُوعِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
শপথ সমুন্নত আকাশের,
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৫. তিনি শপথ করলেন উপরে উত্থিত আসমানের যা যমীনের ছাদ স্বরূপ।
6
وَٱلْبَحْرِ ٱلْمَسْجُورِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং শপথ উদ্বেলিত সমুদ্রের।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৬. তিনি পানিতে ভরপুর সমুদ্রের শপথ করলেন।
7
إِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ لَوَٰقِعٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তোমার রবের শাস্তি অবশ্যম্ভাবী,
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৭. হে রাসূল! আপনার প্রতিপালকের শাস্তি অবশ্যই কাফিরদের উপর পতিত হবে।
8
مَّا لَهُۥ مِن دَافِعٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এর নিবারণ করার কেহ নেই।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৮. তাকে প্রতিহতকারী কেউই নেই। যে তাদের উপর তা পতিত হওয়া থেকে প্রতিরোধ করবে।
9
يَوْمَ تَمُورُ ٱلسَّمَآءُ مَوْرًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যেদিন আকাশ আন্দোলিত হবে প্রবলভাবে –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৯. যে দিন আসমান নড়বে এবং কিয়ামতের ইঙ্গিত হিসেবে তা কেঁপে উঠবে।
10
وَتَسِيرُ ٱلْجِبَالُ سَيْرًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং পর্বত চলবে দ্রুত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১০. আর পাহাড় তার স্থান থেকে দূরে সরে যাবে।
11
فَوَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِّلْمُكَذِّبِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
দুর্ভোগ সেইদিন মিথ্যাশ্রয়ীদের –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১১. সে দিন মিথ্যারোপকারীদের জন্য ধ্বংস ও ক্ষতি। আল্লাহ কাফিরদের জন্য যে শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করেছেন।
12
ٱلَّذِينَ هُمْ فِى خَوْضٍ يَلْعَبُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যারা ক্রীড়াচ্ছলে অসার কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১২. যারা বাতিলের মাঝে খেল-তামাশা করে। তারা পুনরুত্থান ও হাশরের মাঠে সমবেত হওয়ার কোন পরওয়াই করে না।
13
يَوْمَ يُدَعُّونَ إِلَىٰ نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যেদিন তাদেরকে হাকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে জাহান্নামের আগুনের দিকে,
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৩. যে দিন তাদেরকে জাহান্নামের আগুনের দিকে কঠিন ও শক্তভাবে ঠেলে দেয়া হবে।
14
هَـٰذِهِ ٱلنَّارُ ٱلَّتِى كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
(বলা হবে) এটাই সেই আগুন যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৪. তাদেরকে ভয় দেখিয়ে বলা হবে, এই সেই আগুন যাকে তোমরা অস্বীকার করতে। যখন তোমাদের রাসূলগণ তোমাদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক করতেন।
15
أَفَسِحْرٌ هَـٰذَآ أَمْ أَنتُمْ لَا تُبْصِرُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এটা কি যাদু? না কি তোমরা দেখছনা?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৫. তবে কি এই শাস্তি যা তোমরা প্রত্যক্ষ করেছো তা যাদু, না কি তোমরা তা আসলে দেখোই নি।
16
ٱصْلَوْهَا فَٱصْبِرُوٓا۟ أَوْ لَا تَصْبِرُوا۟ سَوَآءٌ عَلَيْكُمْ ۖ إِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তোমরা এতে প্রবেশ কর, অতঃপর তোমরা ধৈর্য ধারণ কর অথবা না করা উভয়ই তোমাদের জন্য সমান। তোমরা যা করতে তোমাদেরকে তারই প্রতিফল দেয়া হচ্ছে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৬. তোমরা এই আগুনের দহন আস্বাদন করো এবং তা প্রত্যক্ষ করো। এর দহন সহ্য করার ধৈর্য ধারণ করো আর নাই করো তোমাদের ধৈর্য ধারণ করা আর না করা উভয়ই সমান। তোমাদেরকে আজ দুনিয়ার জীবনে কুফরী ও পাপাচার হিসাবে যাই করেছিলে তারই বদলা দেয়া হবে।
17
إِنَّ ٱلْمُتَّقِينَ فِى جَنَّـٰتٍ وَنَعِيمٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
মুত্তাকীরা থাকবে জান্নাতে ও ভোগ করবে বিলাস।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৭. অবশ্যই আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে মুত্তাকীরা উদ্যানসমূহ ও অবারিত মহা ভোগসামগ্রীতে থাকবে।
18
فَـٰكِهِينَ بِمَآ ءَاتَىٰهُمْ رَبُّهُمْ وَوَقَىٰهُمْ رَبُّهُمْ عَذَابَ ٱلْجَحِيمِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তাদের রাব্ব তাদেরকে যা দিবেন তারা তা উপভোগ করবে এবং তিনি তাদেরকে রক্ষা করবেন জাহান্নামের শাস্তি হতে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৮. তারা তথায় তাদের প্রতিপালকের অবদান স্বরূপ খাদ্য, পানীয় ও মিলনের মতো ভোগবিলাসে মত্ত থাকবে। আর তাদের মহান প্রতিপালক তাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন। ফলে তারা নিজেদের ভোগসামগ্রীর উদ্দেশ্য সাধন ও কষ্টদায়ক বস্তু থেকে রক্ষা পাওয়ার মাধ্যমে ধন্য হবে।
19
كُلُوا۟ وَٱشْرَبُوا۟ هَنِيٓـًٔۢا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তোমরা যা করতে তার প্রতিফল স্বরূপ তোমরা তৃপ্তির সাথে পানাহার করতে থাক।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৯. আর তাদেরকে বলা হবে, তোমরা নিজেদের মনের স্বাদ মিটিয়ে তৃপ্তিসহকারে পানাহার করো। তোমরা যা খাও কিংবা পান করো তাতে কোনরূপ ক্ষতি বা কষ্ট অনুভব করবে না। বস্তুতঃ এটি হলো তোমাদের দুনিয়ার জীবনের সৎকর্মের ফল।
20
مُتَّكِـِٔينَ عَلَىٰ سُرُرٍ مَّصْفُوفَةٍ ۖ وَزَوَّجْنَـٰهُم بِحُورٍ عِينٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা বসবে শ্রেণীবদ্ধভাবে সজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে; আমি তাদের মিলন ঘটাব আয়তলোচনা হুরের সঙ্গে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২০. তারা সামনা সামনি করে রাখা সুরম্য খাটের উপর হেলান দিয়ে অবস্থান করবে। আর আমি তাদেরকে ফর্সা পদ্মলোচন স্ত্রীদের সাথে বিয়ে দেবো।
21
وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَٱتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَـٰنٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَآ أَلَتْنَـٰهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَىْءٍ ۚ كُلُّ ٱمْرِئٍۭ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং যারা ঈমান আনে আর তাদের সন্তান-সন্ততি ঈমানে তাদের অনুগামী হয়, তাদের সাথে মিলিত করাব তাদের সন্তান-সন্ততিকে এবং তাদের কর্মফল আমি কিছুমাত্র হ্রাস করবনা, প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২১. যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুসরণ করেছে আমি তাদের চক্ষু শীতল করার উদ্দেশ্যে তাদের সাথে এদেরকে মিলিত করবো। যদিও বা আমলে তারা সমান নয়। আর আমি তাদের আমলের প্রতিদান থেকে কোন কিছুই কম করবো না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার মন্দ আমলের নিকট দায়বদ্ধ। তার আমলের কোন কিছুই কেউ বহন করবে না।
22
وَأَمْدَدْنَـٰهُم بِفَـٰكِهَةٍ وَلَحْمٍ مِّمَّا يَشْتَهُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমি তাদেরকে দিব ফল-মূল এবং গোশত যা তারা পছন্দ করে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২২. আমি এ সব জান্নাতবাসীদেরকে বহু রকমের ফল-ফলাদি দ্বারা সহযোগিতা যোগাবো এবং তাদেরকে তাদের সখের মাংস দ্বারাও সমৃদ্ধ করবো।
23
يَتَنَـٰزَعُونَ فِيهَا كَأْسًا لَّا لَغْوٌ فِيهَا وَلَا تَأْثِيمٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
সেখানে তারা একে অপরের নিকট হতে গ্রহণ করবে পান পাত্র, যা হতে পান করলে কেহ অসার কথা বলবেনা এবং অসৎ কাজেও লিপ্ত হবেনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৩. তারা জান্নাতে এমন সুরা পান করবে যা দুনিয়াতে যেমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তা করবে না। তথা প্রলাপ বকা ও নেশার ফলে পাপাচারের কথা বলা।
24
۞ وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ غِلْمَانٌ لَّهُمْ كَأَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَّكْنُونٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
সুরক্ষিত মুক্তা সদৃশ কিশোরেরা সেখানে তাদের জন্য নিয়োজিত থাকবে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৪. তাদের সামনে কিশোররা প্রদক্ষিণ করতে থাকবে। তাদেরকে এদের খেদমতের জন্যই নিয়োজিত করা হয়েছে। তাদের বর্ণ এমন ফর্সা হবে যে, তা যেন রক্ষিত মণিমুক্তা।
25
وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ يَتَسَآءَلُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা একে অপরের দিকে মুখোমুখি জিজ্ঞসাবাদ করবে –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৫. জান্নাতীরা পরস্পর তাদের দুনিয়ার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে।
26
قَالُوٓا۟ إِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِىٓ أَهْلِنَا مُشْفِقِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং বলবেঃ পূর্বে আমরা পরিবার-পরিজনের মধ্যে শংকিত অবস্থায় ছিলাম –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৬. তারা প্রতিউত্তরে বলবে: আমরা দুনিয়াতে আমাদের পরিজনের মাঝে আল্লাহর শাস্তি থেকে ভীত ছিলাম।
27
فَمَنَّ ٱللَّهُ عَلَيْنَا وَوَقَىٰنَا عَذَابَ ٱلسَّمُومِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
অতঃপর আমাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদেরকে অগ্নির শাস্তি হতে রক্ষা করেছেন,
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৭. অতঃপর আল্লাহ আমাদের উপর ইসলামের প্রতি পথ প্রদর্শনের নিয়ামত দ্বারা ধন্য করেছেন এবং আমাদেরকে প্রচÐ তাপসম্পন্ন শাস্তি থেকে মুক্তি দান করেছেন।
28
إِنَّا كُنَّا مِن قَبْلُ نَدْعُوهُ ۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْبَرُّ ٱلرَّحِيمُ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমরা পূর্বেও আল্লাহকে আহবান করতাম, তিনিতো কৃপাময়, পরম দয়ালু।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৮. আমরা নিজেদের দুনিয়ার জীবনে তাঁরই ইবাদাত করতাম এবং তাঁকেই ডাকতাম। যেন তিনি আমাদেরকে দহনশীল শাস্তি থেকে রাক্ষা করেন। অবশ্যই তিনি অনুগ্রহকারী। তিনি তাঁর বান্দাদের উদ্দেশ্যে কৃত অঙ্গীকারে সত্যনিষ্ঠ। তাদের প্রতি দয়াপরবশ। তাঁর অনুগ্রহের মধ্যে এ কথাও রয়েছে যে, তিনি আমাদেরকে ঈমানের পথ প্রদর্শন করবেন এবং আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবিষ্ট করবেন।
29
فَذَكِّرْ فَمَآ أَنتَ بِنِعْمَتِ رَبِّكَ بِكَاهِنٍ وَلَا مَجْنُونٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
অতএব তুমি উপদেশ দান করতে থাক, তোমার রবের অনুগ্রহে তুমি গণক নও, উম্মাদও নও।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৯. হে রাসূল! আপনি কুরআন দিয়ে উপদেশ দিতে থাকুন। কেননা, আপনি নিজ রবের প্রদত্ত ঈমান ও বিবেকের ব্যাপারে জিনের সাধক, গণক কিংবা পাগল নন।
30
أَمْ يَقُولُونَ شَاعِرٌ نَّتَرَبَّصُ بِهِۦ رَيْبَ ٱلْمَنُونِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা কি বলতে চায় যে, সে একজন কবি, আমরা তার জন্য কালের বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করছি।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩০. না কি এ সব মিথ্যারোপকারী বলে যে, মুহাম্মাদ রাসূল নন। বরং তিনি একজন কবি মাত্র। আমরা প্রহর গুনছি কখন মৃত্যু এসে তাঁর রূহ ছিনিয়ে নিবে। আর আমরা তাঁর থেকে রেহাই পাবো।
31
قُلْ تَرَبَّصُوا۟ فَإِنِّى مَعَكُم مِّنَ ٱلْمُتَرَبِّصِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩১. হে রাসূল! আপনি তাদেরকে বলুন, তোমরা আমার মৃত্যুর অপেক্ষা করো। আর আমি তোমাদের কর্তৃক আমাকে মিথ্যারোপ করার ফলে তোমাদের উপর নিপতিত শাস্তির অপেক্ষায় থাকলাম।
32
أَمْ تَأْمُرُهُمْ أَحْلَـٰمُهُم بِهَـٰذَآ ۚ أَمْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তাহলে কি তাদের বুদ্ধি তাদেরকে এই বিষয়ে প্ররোচিত করে, না তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩২. তাদের বিবেক কি তাদেরকে এ নির্দেশ করে যে, তারা তাঁকে গণক ও পাগল বলবে?! এতে করে তারা একই ব্যক্তির মাঝে এমন সব বৈশিষ্ট্যের সমাহার ঘটায় যা আদৗ সম্ভব নয়। বরং এ সব জাতি হলো সীমালঙ্ঘনকারী। ফলে তারা না বিবেকের শরণাপন্ন হয়। না শরীয়তের।
33
أَمْ يَقُولُونَ تَقَوَّلَهُۥ ۚ بَل لَّا يُؤْمِنُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা কি বলেঃ এই কুরআন তার নিজের রচনা? বরং তারা অবিশ্বাসী।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৩. না কি তারা বলে যে, মুহাম্মাদ এই কুরআন নিজে বানিয়েছেন। এটি তাঁর উপর ওহী করা হয়নি?! আসলে তিনি তা বানান নি। বরং তারা তাঁর উপর ঈমান আনয়নে অহংকারী। তাই তারা বলে যে, তিনি এটি বানিয়েছেন।
34
فَلْيَأْتُوا۟ بِحَدِيثٍ مِّثْلِهِۦٓ إِن كَانُوا۟ صَـٰدِقِينَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা যদি সত্যবাদী হয় তাহলে এই সদৃশ কোন রচনা উপস্থিত করুক।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৪. তারা যে দাবি করে যে, এটি তাঁর বানানো। উক্ত দাবিতে তারা সত্যবাদী হয়ে থাকলে তারা যেন এমন একটি বাণী নিয়ে আসে।
35
أَمْ خُلِقُوا۟ مِنْ غَيْرِ شَىْءٍ أَمْ هُمُ ٱلْخَـٰلِقُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা কি স্রষ্টা ব্যতীত সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৫. তারা কি কোনরূপ সৃষ্টিকারী ¯্রষ্টা ব্যতীত সৃষ্ট?! না কি তারা নিজেরাই ¯্রষ্টা?! বস্তুতঃ কোন সৃষ্টির অস্তিত্ব ¯্রষ্টা ব্যতীত অসম্ভব। আর না কোন মাখলুক নিজকে সৃষ্টি করতে পারে। তাই তারা কেন নিজেদের ¯্রষ্টার ইবাদাত করে না?!
36
أَمْ خَلَقُوا۟ ٱلسَّمَـٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ ۚ بَل لَّا يُوقِنُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
না কি তারা আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? বরং তারাতো অবিশ্বাসী
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৬. না কি তারা আসমান ও যমীনসমূহ সৃষ্টি করেছে?! বরং তারা এ কথারই বিশ্বাস রাখে না যে, আল্লাহই তাদের ¯্রষ্টা। কেননা, তারা যদি এ কথার বিশ্বাস রাখতো তাহলে তারা অবশ্যই তাঁর একত্ববাদে বিশ্বাস করতো এবং তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনতো।
37
أَمْ عِندَهُمْ خَزَآئِنُ رَبِّكَ أَمْ هُمُ ٱلْمُصَۣيْطِرُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তোমার রবের ভান্ডার কি তাদের নিকট রয়েছে, না তারা এ সমুদয়ের নিয়ন্তা?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৭. না কি তাদের নিকট তোমার রবের রিযিকের ভাÐার রয়েছে, ফলে তারা যাকে ইচ্ছা তা প্রদান করবে, আর যার থেকে ইচ্ছা তা বারণ করবে?! না কি তারা নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী নিয়ন্ত্রণ ও তসরুপকারী?!
38
أَمْ لَهُمْ سُلَّمٌ يَسْتَمِعُونَ فِيهِ ۖ فَلْيَأْتِ مُسْتَمِعُهُم بِسُلْطَـٰنٍ مُّبِينٍ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
না কি তাদের কোন সিড়ি আছে যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে? থাকলে তাদের সেই শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৮. না কি তাদের এমন কোন সিঁড়ি রয়েছে যাতে আরোহন করে তারা আল্লাহর এমন ওহী শ্রবণ করে যে, তারা হকের উপর রয়েছে?! অতএব, যে এ জাতীয় ওহী শ্রবণ করেছে সে যেন এমন সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে আসে যদ্বারা তাদের হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার কথা সাব্যস্ত হয়।
39
أَمْ لَهُ ٱلْبَنَـٰتُ وَلَكُمُ ٱلْبَنُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তাহলে কি কন্যা সন্তান তাঁর জন্য এবং পুত্র সন্তান তোমাদের জন্য?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩৯. না কি আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান। যাদেরকে তোমরা নিজেদের জন্য অপছন্দ করো। আর তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান। যাদেরকে তোমরা নিজেদের জন্য পছন্দ করো?!
40
أَمْ تَسْـَٔلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তাহলে কি তুমি তাদের নিকট পারিশ্রমিক চাচ্ছ যে, তারা একে একটি দুর্বহ বোঝা মনে করবে?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪০. না কি হে রাসূল! আপনি নিজ রবের বার্তা পৌঁছে দেয়ার ভিত্তিতে তাদের নিকট প্রতিদান কামনা করেন?! যার ফলে তাদের উপর অসহনীয় বোঝা চেপে বসে।
41
أَمْ عِندَهُمُ ٱلْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
না কি অদৃশ্য বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান আছে যে, তারা এই বিষয়ে কিছু লিখে?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪১. না কি তাদের নিকট গাইবের জ্ঞান রয়েছে, ফলে তারা মানুষের জন্য গাইবের বিষয়ে অবগত কথাগুলো লিপিবদ্ধ করে এবং তাদেরকে তা থেকে যা ইচ্ছা সে ব্যাপারে সংবাদ পরিবেশন করে?!
42
أَمْ يُرِيدُونَ كَيْدًا ۖ فَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ هُمُ ٱلْمَكِيدُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
অথবা তারা কি কোন ষড়যন্ত্র করতে চায়? পরিণামে কাফিরেরাই হবে ষড়যন্ত্রের শিকার।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪২. না কি এসব মিথ্যারোপকারী আপনার ও আপনার দ্বীনের সাথে প্রতারণা করতে চায়?! অতএব, আপনি আল্লাহর উপর এ ব্যাপারে আস্থা রাখুন যে, যারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের সাথে কুফরী করে তারাই মূলতঃ প্রতারণার বদলার শিকার; আপনি নন।
43
أَمْ لَهُمْ إِلَـٰهٌ غَيْرُ ٱللَّهِ ۚ سُبْحَـٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
না কি আল্লাহ ব্যতীত তাদের অন্য কোন মা‘বূদ আছে? তারা যাকে শরীক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৩. না কি আল্লাহ ব্যতীত তাদের কোন সত্যিকার মাবূদ রয়েছে?! আল্লাহ তাদের কর্তৃক তাঁর প্রতি অংশীদারের সম্বন্ধ থেকে পূত-পবিত্র। বস্তুতঃ উপরোক্ত কোন কিছুই সংঘটিত হয়নি। আর না এ সবের কোন চিন্তা করা যায়।
44
وَإِن يَرَوْا۟ كِسْفًا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ سَاقِطًا يَقُولُوا۟ سَحَابٌ مَّرْكُومٌ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা আকাশের কোন খন্ড ভেঙ্গে পড়তে দেখলেও বলবেঃ এটাতো এক পূঞ্জীভুত মেঘ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৪. তারা যদি আসমান থেকে কোন টুকরো পড়তে দেখে তবুও তারা এ সম্পর্কে বলবে যে, এটি বরাবরের মতো উপর-নিচ হয়ে ঘনীভূত মেঘমালা। ফলে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে না। আর না তারা ঈমান আনয়ন করবে।
45
فَذَرْهُمْ حَتَّىٰ يُلَـٰقُوا۟ يَوْمَهُمُ ٱلَّذِى فِيهِ يُصْعَقُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তাদেরকে উপেক্ষা করে চল সেই দিন পর্যন্ত, যে দিন তারা বজ্রাঘাতের সম্মুখীন হবে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৫. অতএব, হে রাসূল! আপনি তাদেরকে নিজেদের গোঁড়ামী ও অস্বীকারের মধ্যে ফেলে রাখুন। অবশেষে তারা নিজেদের শাস্তির দিনে মিলিত হবে। যা হলো কিয়ামতের দিন।
46
يَوْمَ لَا يُغْنِى عَنْهُمْ كَيْدُهُمْ شَيْـًٔا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যেদিন তাদের ষড়যন্ত্র কোন কাজে আসবেনা এবং তাদেরকে সাহায্যও করা হবেনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৬. যে দিন তাদের কোন দুরভিসন্ধি কাজে আসবে না। না কম, না বেশী। আর না তাদেরকে শাস্তি থেকে মুক্তি প্রদানের মাধ্যমে কোন সাহায্য করা হবে।
47
وَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ عَذَابًا دُونَ ذَٰلِكَ وَلَـٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এ ছাড়াও আরও শাস্তি রয়েছে যালিমদের জন্য। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানেনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৭. যারা শিরক ও কুফরীর মাধ্যমে নিজেদের নফসের উপর অবিচার করেছে তাদের জন্য পরকালের পূর্বে দুনিয়াতেই হত্যা ও বন্দি হওয়ার মাধ্যমে শাস্তি রয়েছে। আর বারযাখে রয়েছে কবরের শাস্তি। তবে বেশীর ভাগ মানুষই তা জানে না। ফলে তারা নিজেদের কুফরীর উপর অটল থাকে।
48
وَٱصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا ۖ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِينَ تَقُومُ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
ধৈর্য ধারণ কর তোমার রবের নির্দেশের অপেক্ষায়; তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ। তুমি তোমার রবের প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর যখন তুমি শয্যা ত্যাগ কর –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৮. হে রাসূল! আপনি নিজ প্রতিপালকের ফায়সালা ও তাঁর শরয়ী বিধানের উপর ধৈর্য ধারণ করুন। কেননা, আপনি আমার পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষণে রয়েছেন। আর আপনি নিজ ঘুম থেকে গাত্রোত্থানের সময় নিজ প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা বর্ণনা করুন।
49
وَمِنَ ٱلَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَإِدْبَـٰرَ ٱلنُّجُومِ
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা কর রাতে ও তারকার অস্ত গমনের পর।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪৯. আর রাতের কিছু অংশে আপনি নিজ রবের পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর উদ্দেশ্যে নামায আদায় করুন। আর দিবস আগমনের সময় তারকারাজির অবসানের পর ফজরের নামায পড়ুন।