আল-জিন

الجن

সূরা 72 মক্কী 28 আয়াত

بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতিশয় মেহেরবান।

1
قُلْ أُوحِىَ إِلَىَّ أَنَّهُ ٱسْتَمَعَ نَفَرٌ مِّنَ ٱلْجِنِّ فَقَالُوٓا۟ إِنَّا سَمِعْنَا قُرْءَانًا عَجَبًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ আমার প্রতি অহী প্রেরিত হয়েছে যে, জিনদের একটি দল মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করেছে এবং বলেছে, আমরাতো এক বিস্ময়কর কুরআন শ্রবণ করেছি –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১. হে রাসূল! আপনি নিজ উম্মতকে বলে দিন, আমাকে ওহীযোগে অবগত করা হয়েছে যে, নাখলা উপত্যকায় জিনদের এক দল আমার কুরআন তিলাওয়াত শ্রবণ করেছে। অতঃপর তারা নিজেদের জাতির নিকট আগমন করে বলে: আমরা এমন বাণী শ্রবণ করেছি যা তার বর্ণনা ও সাবলীলতায় অতি চমৎকার।
2
يَهْدِىٓ إِلَى ٱلرُّشْدِ فَـَٔامَنَّا بِهِۦ ۖ وَلَن نُّشْرِكَ بِرَبِّنَآ أَحَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যা সঠিক পথ নির্দেশ করে; ফলে আমরা এতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমরা কখনও আমাদের রবের সাথে কোন শরীক স্থির করবনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২. আমরা যে বাণী শ্রবণ করেছি তা প্রমাণ করে যে, এটি আক্বীদা, কথা ও কাজে সঠিক। তাই আমরা এর উপর ঈমান এনেছি। আর আমাদের যে রব এটি অবতীর্ণ করেছেন তাঁর সাথে আমরা কাউকে শরীক করি না।
3
وَأَنَّهُۥ تَعَـٰلَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا ٱتَّخَذَ صَـٰحِبَةً وَلَا وَلَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং নিশ্চয়ই সমুচ্চ আমাদের রবের মর্যাদা; তিনি গ্রহণ করেননি কোন পত্নী এবং না কোন সন্তান।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৩. আমরা আরো ঈমান এনেছি যে, আমাদের রবের মাহাত্ম্য ও মর্যাদা সমুন্নত। তিনি স্ত্রী কিংবা সন্তান গ্রহণ করেন নি যেমনটি মুশরিকরা বলে থাকে।
4
وَأَنَّهُۥ كَانَ يَقُولُ سَفِيهُنَا عَلَى ٱللَّهِ شَطَطًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং আমাদের মধ্যকার নির্বোধরা আল্লাহ সম্বন্ধে অতি অবাস্তব উক্তি করত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৪. এদিকে ইবলীস মহান আল্লাহর প্রতি স্ত্রী ও সন্তানের সম্বন্ধ জুড়ে দিয়ে তাঁর সাথে বক্রতার অচরণ দেখায়।
5
وَأَنَّا ظَنَنَّآ أَن لَّن تَقُولَ ٱلْإِنسُ وَٱلْجِنُّ عَلَى ٱللَّهِ كَذِبًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
অথচ আমরা মনে করতাম মানুষ এবং জিন, আল্লাহ সম্বন্ধে কখনও মিথ্যা আরোপ করবেনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৫. আমরা ধারণা করতাম যে, জিন ও ইনসানের মধ্যকার মুশরিকরা তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের ব্যাপারে যে ধারণা পোষণ করতো তারা এতে মিথ্যাবাদী নয়। ফলে তাদের অন্ধ অনুকরণে আমরা তাদেরকে সত্য বলে জানতাম।
6
وَأَنَّهُۥ كَانَ رِجَالٌ مِّنَ ٱلْإِنسِ يَعُوذُونَ بِرِجَالٍ مِّنَ ٱلْجِنِّ فَزَادُوهُمْ رَهَقًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আর যে কতিপয় মানুষ কতক জিনের স্মরণ নিত, ফলে তারা জিনদের আত্মম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৬. জাহেলী যুগে এমন কিছু মানুষ ছিলো যারা ভয়ানক কোন জায়গায় অবতরণ করলে জিনদের আশ্রয় কামনা করতো এই বলে যে, আমি এ উপত্যকার সর্দারের নিকট তার জাতির বখাটেদের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় কামনা করছি। এর কারণে মানুষ শ্রেণীর পুরুষেরা জিন শ্রেণীর পুরুষদেরকে আরো বেশী ভয় করতে লাগলো।
7
وَأَنَّهُمْ ظَنُّوا۟ كَمَا ظَنَنتُمْ أَن لَّن يَبْعَثَ ٱللَّهُ أَحَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আর জিনরা বলেছিলঃ তোমাদের মত মানুষও মনে করে যে, মৃত্যুর পর আল্লাহ কেহকেও পুনরুত্থিত করবেননা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৭. হে জিনরা! তোমাদের মতো কিছু মানুষও এ ধারণা করে যে, আল্লাহ কাউকে তার মৃত্যুর পর হিসাব ও প্রতিদানের জন্য পুনরুত্থিত করবেন না।
8
وَأَنَّا لَمَسْنَا ٱلسَّمَآءَ فَوَجَدْنَـٰهَا مُلِئَتْ حَرَسًا شَدِيدًا وَشُهُبًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং আমরা চেয়েছিলাম আকাশের তথ্য সংগ্রহ করতে। কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৮. আমরা আসমানের সংবাদ জানতে চাইলে সেটিকে চোরাই পথে আমাদের শ্রবণ থেকে রক্ষী বাহিনী ফিরিশতাদের মাধ্যমে এবং প্রজ্বলিত আগুন দিয়ে ভরপুর পেলাম। যে কেউ আসমানের নিকটবর্তী হতে চাইলে তাকে সেটি ছুঁড়ে মারা হয়।
9
وَأَنَّا كُنَّا نَقْعُدُ مِنْهَا مَقَـٰعِدَ لِلسَّمْعِ ۖ فَمَن يَسْتَمِعِ ٱلْـَٔانَ يَجِدْ لَهُۥ شِهَابًا رَّصَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আর পূর্বে আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শোনার জন্য বসতাম। কিন্তু এখন কেহ সংবাদ শুনতে চাইলে সে তার উপর নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডের সম্মুখীন হয়।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
৯. ইতিপূর্বে আমরা আসমানে এমন একটি স্থান বের করে নিতাম যেখান থেকে ফিরিশতাদের আদান-প্রদানকৃত সংবাদগুলো আমরা জেনে নিতে পারতাম। অতঃপর আমরা যমীনের গণকদেরকে এর সংবাদ অবিহিত করতাম। কিন্তু বর্তমানে তা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। তাই এখন যে শ্রবণ করে সে নিজের জন্য প্রজ্বলিত অগ্নিশিখা প্রস্তুত দেখতে পায়। যখনই সে নিকটবর্তী হয় তখনই তার দিকে এটি প্রেরণ করা হয় এবং এটি তাকে জ্বালিয়ে ফেলে।
10
وَأَنَّا لَا نَدْرِىٓ أَشَرٌّ أُرِيدَ بِمَن فِى ٱلْأَرْضِ أَمْ أَرَادَ بِهِمْ رَبُّهُمْ رَشَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমরা জানিনা, জগতবাসীর অমংগলই অভিপ্রেত, না কি তাদের রাব্ব তাদের মংগল করার ইচ্ছা রাখেন।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১০. আমরা এ কঠোর পাহারার কারণ কী তা জানি না। এর মাধ্যমে কি যমীনবাসীর কোন অকল্যাণ কামনা করা হয়েছে, না কি আল্লাহ তাদের ব্যাপারে কোন কল্যাণের ইচ্ছা পোষণ করেছেন। বস্তুতঃ আমাদের থেকে আসমানবাসীর সংবাদ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
11
وَأَنَّا مِنَّا ٱلصَّـٰلِحُونَ وَمِنَّا دُونَ ذَٰلِكَ ۖ كُنَّا طَرَآئِقَ قِدَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং আমাদের কতক সৎ কর্মপরায়ণ এবং কতক এর ব্যতিক্রম, আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথের অনুসারী;
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১১. হে জিন সম্প্রদায়! আমাদের মধ্যে রয়েছে পুণ্যবান মুত্তাকী। আবার রয়েছে পাপিষ্ঠ কাফির। আমরা মূলতঃ বিভিন্নরূপী ও বিপরীত প্রবৃত্তিপরায়ণ।
12
وَأَنَّا ظَنَنَّآ أَن لَّن نُّعْجِزَ ٱللَّهَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلَن نُّعْجِزَهُۥ هَرَبًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এখন আমরা বুঝেছি যে, আমরা পৃথিবীতে আল্লাহকে পরাভূত করতে পারবনা এবং পলায়ন করেও তাঁকে ব্যর্থ করতে পারবনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১২. আমরা এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখি যে, আল্লাহ যখন আমাদের ব্যাপারে কোন কিছুর ইচ্ছা পোষণ করেন তখন তা থেকে আমরা রেহাই পাবো না, না তা থেকে আমরা পালাতে পারবো। কেননা, তিনি আমাদের ব্যাপারে সম্যক অবগত।
13
وَأَنَّا لَمَّا سَمِعْنَا ٱلْهُدَىٰٓ ءَامَنَّا بِهِۦ ۖ فَمَن يُؤْمِنۢ بِرَبِّهِۦ فَلَا يَخَافُ بَخْسًا وَلَا رَهَقًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমরা যখন পথ নির্দেশক বাণী শুনলাম তখন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। যে ব্যক্তি তার রবের প্রতি ঈমান আনে তার কোন ক্ষতি কিংবা জোর জবরদস্তির আশংকা থাকবেনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৩. আমরা যখন কুরআন শ্রবণ করলাম যা সর্বাপেক্ষা সঠিক পথের দিশা প্রদান করে তখনই এর উপর ঈমান আনলাম। তাই যে ব্যক্তি স্বীয় রবের উপর ঈমান আনলো সে তার পুণ্যের প্রতিদানে কোনরূপ ঘাটতির ভয় করবে না। না তার পূর্বের কৃত পাপের সাথে কোন নতুন পাপ যুক্ত হওয়ার আশঙ্কা করবে।
14
وَأَنَّا مِنَّا ٱلْمُسْلِمُونَ وَمِنَّا ٱلْقَـٰسِطُونَ ۖ فَمَنْ أَسْلَمَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ تَحَرَّوْا۟ رَشَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আমাদের কতক আত্মসমপর্ণকারী এবং কতক সীমা লংঘনকারী; যারা আত্মসমর্পণ করে তারা সুচিন্তিতভাবে সত্য পথ বেছে নেয়।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৪. আমাদের মধ্যে রয়েছে এমন মুসলিম যারা আল্লাহর আনুগত্যে অবনমিত। তেমনিভাবে আমাদের মধ্যে সরল সঠিক পথ থেকে বিচ্যুতও রয়েছে। বস্তুতঃ যে আল্লাহর উদ্দেশ্যে আনুগত্য ও নেক আমলের মাধ্যমে অনুগত হবে তারাই মূলতঃ হিদায়েত ও সরল পথ অন্বেষণকারী।
15
وَأَمَّا ٱلْقَـٰسِطُونَ فَكَانُوا۟ لِجَهَنَّمَ حَطَبًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
অপর পক্ষে সীমা লংঘনকারীতো জাহান্নামেরই ইন্ধন।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৫. পক্ষান্তরে সরল সঠিক পথ থেকে বিচ্যুতরা জাহান্নামের ইন্ধন হবে। যদ্বারা মনুষ্য শ্রেণীর মধ্য হতে তাদের সদৃশদেরসহ জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে।
16
وَأَلَّوِ ٱسْتَقَـٰمُوا۟ عَلَى ٱلطَّرِيقَةِ لَأَسْقَيْنَـٰهُم مَّآءً غَدَقًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তারা যদি সত্য পথে প্রতিষ্ঠিত থাকত, তাদেরকে আমি প্রচুর বারি বর্ষণের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করতাম –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৬. যেভাবে তাঁর নিকট এ ওহী করা হয়েছে যে, জিনদের একদল কুরআন শ্রবণ করেছে তেমনিভাবে তাঁর নিকট এ ওহীও করা হয়েছে যে, যদি জিন ও মানুষরা ইসলামের পথে অটল থেকে এর উপর আমল করে তাহলে আল্লাহ তাদেরকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাবেন এবং নানাবিধ নিয়ামত দ্বারা তাদেরকে ধন্য করবেন।
17
لِّنَفْتِنَهُمْ فِيهِ ۚ وَمَن يُعْرِضْ عَن ذِكْرِ رَبِّهِۦ يَسْلُكْهُ عَذَابًا صَعَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যদ্বারা আমি তাদেরকে পরীক্ষা করতাম। যে ব্যক্তি তার রবের স্মরণ হতে বিমুখ হয় তিনি তাকে দুঃসহ শাস্তিতে প্রবেশ করাবেন।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৭. যাতে করে আমি তাদেরকে এ বিষয়ে পরীক্ষা করতে পারি যে, তারা কি আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে, না কি তারা এর নাশুকরি করে? বস্তুতঃ যে কুরআন ও তাতে বিদ্যমান উপদেশাবলী থেকে বিমুখ হয় তাকে তার প্রতিপালক এমন কঠিন শাস্তিতে প্রবিষ্ট করবেন যা সে সহ্য করতে অপারগ।
18
وَأَنَّ ٱلْمَسَـٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا۟ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
এবং এই যে মাসজিদসমূহ, আল্লাহরই জন্য। সুতরাং আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কেহকেও ডেকনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৮. বস্তুতঃ মসজিদসমূহ আল্লাহর জন্য নির্ধারিত; অন্য কারো নয়। তাই তোমরা তাতে তাঁর সাথে অন্য কাউকে আহŸান করো না। এতে করে তোমরা গির্জা ও চার্চের ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের ন্যায় হয়ে যাবে।
19
وَأَنَّهُۥ لَمَّا قَامَ عَبْدُ ٱللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا۟ يَكُونُونَ عَلَيْهِ لِبَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
আর এই যে, যখন আল্লাহর বান্দা তাঁকে ডাকার জন্য দন্ডায়মান হল তখন তারা তার নিকট ভিড় জমালো।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
১৯. যখন আল্লাহর বান্দাহ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) আল্লাহর এবাদতের উদ্দেশ্যে নাখলা উপত্যকায় দÐায়মান হলেন তখন জিনরা তাঁর কুরআন তিলাওয়াত শ্রবণের জন্যে প্রচÐ ভিড় জমিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ার উপক্রম হয়।
20
قُلْ إِنَّمَآ أَدْعُوا۟ رَبِّى وَلَآ أُشْرِكُ بِهِۦٓ أَحَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ আমি আমার রাব্বকে ডাকি এবং তাঁর সাথে কেহকে শরীক করিনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২০. হে রাসূল! আপনি এ সব মুশরিককে বলে দিন, আমি তো কেবল আমার প্রতিপালককে ডাকি; তাঁর ইবাদাতে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না। সে যে কেউই হোক না কেন?
21
قُلْ إِنِّى لَآ أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ আমি তোমাদের মঙ্গল-অমঙ্গলের মালিক নই।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২১. আপনি তাদেরকে বলে দিন যে, আমি তোমাদের উপর আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত কোন বিপদ প্রতিহত করতে সক্ষম নই। না এমন কোন উপকার সাধন করতে সক্ষম যা আল্লাহ তোমাদের থেকে বারণ করেন।
22
قُلْ إِنِّى لَن يُجِيرَنِى مِنَ ٱللَّهِ أَحَدٌ وَلَنْ أَجِدَ مِن دُونِهِۦ مُلْتَحَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ আল্লাহর শাস্তি হতে কেহ আমাকে রক্ষা করতে পারবেনা এবং আল্লাহ ব্যতীত আমি কোন আশ্রয় পাবনা।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২২. আপনি তাদেরকে বলে দিন যে, আমি আল্লাহর অবাধ্য হলে আমাকে কেউ তাঁর পাকড়াও থেকে রক্ষা করতে পারবে না। আর না আমি তিনি ব্যতীত অন্য কোন আশ্রয়স্থল খুঁজে পাবো।
23
إِلَّا بَلَـٰغًا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِسَـٰلَـٰتِهِۦ ۚ وَمَن يَعْصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَإِنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَـٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
কেবল আল্লাহর বাণী পৌঁছানো এবং তা প্রচার করাই আমার কাজ। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৩. তবে আমি যতটুকু পারি তা হলো এই যে, আল্লাহ তোমাদের নিকট আমাকে যা পৌঁছে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং যে বার্তা দিয়ে তিনি আমাকে তোমাদের নিকট পাঠিয়েছেন আমি তা পৌঁছে দেবো। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের অবাধ্যতা করে তার ঠিকানা হবে জাহান্নামের আগুন। তথায় সে চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবে। তা থেকে সে কখনো বের হতে পারবে না।
24
حَتَّىٰٓ إِذَا رَأَوْا۟ مَا يُوعَدُونَ فَسَيَعْلَمُونَ مَنْ أَضْعَفُ نَاصِرًا وَأَقَلُّ عَدَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
যখন তারা প্রতিশ্রুতি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা বুঝতে পারবে, কে সাহায্যকারীর দিক দিয়ে দুর্বল এবং কে সংখ্যায় স্বল্প।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৪. আর কাফিররা তাদের কুফরীর উপর অটল থাকবে। অবশেষে যখন তারা কিয়ামত দিবসে দুনিয়াতে কৃত আযাবের অঙ্গীকারের বাস্তব চিত্র প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা অবশ্যই জানবে, কে সর্বাপেক্ষা দুর্বল এবং কে সর্বাপেক্ষা নিঃসঙ্গ।
25
قُلْ إِنْ أَدْرِىٓ أَقَرِيبٌ مَّا تُوعَدُونَ أَمْ يَجْعَلُ لَهُۥ رَبِّىٓ أَمَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
বলঃ আমি জানিনা তোমাদেরকে যে শাস্তির প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা কি আসন্ন, না কি আমার রাব্ব এর জন্য কোন দীর্ঘ মেয়াদ স্থির করবেন?
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৫. হে রাসূল! আপনি পুনরুত্থান অস্বীকারকারী এ সব মুশরিককে বলুন, আমি জানি না তোমাদের সাথে যে শাস্তির অঙ্গীকার করা হচ্ছে তা কি নিকটবর্তী, না কি এর জন্য সুনির্ধারিত এমন কোন সময় রয়েছে যা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না।
26
عَـٰلِمُ ٱلْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِۦٓ أَحَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারও নিকট প্রকাশ করেননা –
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৬. কেবল তিনিই সকল অদৃশ্যের খবর রাখেন। তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন থাকে না। ফলে তাঁর গাইবের সন্ধান কারো কাছে নেই। বরং তিনি এ সম্পর্কীয় জ্ঞানে এককভাবে বিভূষিত।
27
إِلَّا مَنِ ٱرْتَضَىٰ مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُۥ يَسْلُكُ مِنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِۦ رَصَدًا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
তাঁর মনোনীত রাসূল ব্যতীত। সেক্ষেত্রে আল্লাহ রাসূলের অগ্রে এবং পশ্চাতে প্রহরী নিয়োজিত করেন,
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৭. তবে আল্লাহ তাঁর রাসূলদের মধ্যে যাঁকে ইচ্ছা তাঁকে যতটুকু চান অবগত করেন এবং তিনি রাসূলের সামনে ফিরিশতাদেরকে প্রেরণ করেন যারা তাঁকে হেফাজত করেন। যেন রাসূল ব্যতীত অন্য কেউ এ ব্যাপারে অবগত না হতে পারে।
28
لِّيَعْلَمَ أَن قَدْ أَبْلَغُوا۟ رِسَـٰلَـٰتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَىٰ كُلَّ شَىْءٍ عَدَدًۢا
বাংলা অনুবাদ (রাওয়াই আল-বায়ান)
রাসূলগণ তাদের রবের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন কি না জানার জন্য। রাসূলগণের নিকট যা আছে তা তাঁর জ্ঞান গোচর এবং তিনি সমস্ত কিছুর বিস্তারিত হিসাব রাখেন।
সংক্ষিপ্ত তাফসীর
২৮. যাতে করে রাসূল জানতে পারেন যে, তাঁর পূর্বে যতো রাসূল ছিলেন তাঁরা নিজেদের রবের বার্তাসমূহ পৌঁছে দিয়েছেন যা পৌঁছে দেয়ার জন্য তাঁরা আদিষ্ট হোন। কেননা, আল্লাহ সে ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন এবং আল্লাহ রাসূল ও ফিরিশতাদের নিকট থাকা সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত। ফলে তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন থাকে না। আর তিনি সর্ব বিষয়কে গণনা করে রেখেছেন। ফলে তাঁর নিকট কোন কিছুই গোপন থাকে না।