(রা) এর পক্ষেই রাসুলুল্লাহ (সা) রায় প্রদান করলেন ৷ ওয়াকিদী বলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন
জা ফর (রা) এর পক্ষে রায় প্রদান করলেন তখন জ ফর উঠে দাড়ালেন এবং রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
চতুর্দিকে আনন্দে এক পায়ে চলতে লাগলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেন, এটা কী হে জা ফর ?
উত্তরে তিনি বললেন, হে আল্পাহ্র রাসুল ! আবিসিনিয়ার শাসক নাজ্জাসী যখন কারো প্রতি সন্তুষ্ট
হতেন, দাড়িয়ে যেতেন এবং ঐ ব্যক্তির চতৃর্দিকে এক পায়ে ইাটতেন ৷ তিনি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে
বললেন, “আপনি তাকে বিয়ে করুন ৷’ ’রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন,, সে আমার দুধ ভাইয়ের কন্যা ৷
তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) র্তাকে সালামা ইবন আবু সালামা এর সাথে বিয়ে দিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বলতেন, আমি কি আবু সালামার গােধ দিতে পেরেছি ?
প্রস্থকার বলেন, ওয়াকিদী প্রমুখ উল্লেখ করেছেন যে, সালামা তার মা উম্মে সালামার সাথে
রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর বিবাহ দিয়েছিলেন ৷ আর সালামা ছিল ৫জ্যষ্ঠ পুত্র অর্থাৎ উমর ইবন আবু
সালামার চাইতে বয়ােজেষ্ঠ ৷ আল্লাহ্ই অধিক জ্ঞাত ৷
ইবন ইসহাক বলেন, “যিলহাজ্জ মাসে রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনা প্রত্যাবর্তন করেন ৷ তাই
মুশরিকরাই এ হভ্রুজ্জর তত্ত্বাবধান করে ৷ ইবন হিশাম বলেন, এ উমরা সম্পর্কে আল্লাহ্ তা আলা
বভীর্ণ করেন :
অর্থাৎ “নিশ্চয়ই আল্লাহ তার রাসুলের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন, আল্লাহর ইচ্ছায় তোমরা
অবশ্যই মাসজিদৃল হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে কেউ কেউ মস্তক মুণ্ডিত করবে, কেউ কেউ
কেশ কর্তন করবে ৷ তোমাদের কোন ভয় থাকবে না ৷ আল্লাহ্ জানেন তোমরা যা জান না ৷ এটা
ছাড়াও তিনিও আমাদের দিয়েছেন এ সদ্য বিজয় ৷ অর্থাৎ আসন্ন খায়বারের বিজয়” ( ৪৮ ২ ৭) ৷
ইবন আবুল আওজা আস-সৃলামীর অভিযান
ইমাম বায়হাকী (র ) যুহরী (র) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
যখন সপ্তম হিজররী যিলহাজ্জ মাসে কাযার উমরা পালন করে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন ৷ তখন
তিনি ইবন আবুল আওজা আস-সুলামীকে ৫০জন অশ্বারোহীসহ বনু সুলায়মের প্রতি প্রেরণ
করেন ৷ তাদের গুপ্তচর তাদেরকে মুসলিম ক্ষুদ্র সৈন্যদল সম্পর্কে সংবাদ দিয়ে সতর্ক করল ৷
তাতে তাদের বহু সং খ্যক লোক মুসলিম সৈন্যদলের বিরুদ্ধে একত্রিত হল ৷ ইবন আবুল আওজা
মুষ্টি:ময় সৈন্য নিয়ে তাদের সম্মুখীন হলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্র সাহাবীগণ তাদের সমাবেশ প্রত্যক্ষ করে
তাদেরকে ইসলামের প্রতি দাওয়াত দিলেন ৷ কিন্তু তারা মুসলিম সেনাদের কথায় কর্ণপাত না
করে তাদের প্রতি তীর নিক্ষেপ করতে লাগল এবং বলতে লাগল, “ তোমরা যে ইসলামের প্রতি
আমাদেরকে দাওয়াত দিচ্ছ তাতে আমাদের কাজ সেই ৷ একঘণ্টা যাতে তারা তীর নিক্ষেপ করে ৷
ইতোমধ্যে তাদের জন্যে আরো সাহায্য সহায়তা এসে পৌছতে থাকে ৷ এমন কি শেষ পর্যন্ত শত্রু
সৈন্যরা মুসলিম ক্ষুদ্র সৈন্যদলকে চতৃব্বি দিয়ে অবরোধ করে ফেলল ৷ মুসলিম সৈন্যগণ তুমুল
যুদ্ধ করে তাদের অধিকাত্শই শাহাদত বরণ করেন ৷ ইবন আবুল আওজা (রা) মারাত্মকভাবে
আহত হন ৷ এরপর র্তাকে মদীনায় আনা হল ৷ তিনি অষ্টম হিজরীর সফর মাসের প্রথম তারিখে
অবশিষ্ট সৈন্যদের নিয়ে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন ৷
এ সনের অন্যান্য ঘটনা
ওয়াকিদী বলেন, ৭ম হিত্তরীিতে হভ্রুজ্জা সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার কন্যা যয়নবকে তার স্বামী
আবুল আস ইবন রাবী’র কাছে ফেরত পাঠান ৷ এ বছরেই হাতির ইবন আবু বালতা মুকাওকিস
এর কাছ থেকে মদীনায় ফিরে আসেন ৷ তার সাথে ছিলেন মারিয়া ও সীরীন যীরা আসার পথে
ইসলাম গ্রহণ করেন ৷ তাদের সাথে আরো ছিল একজন ঘেজে গোলাম ৷ ওয়াকিদী বলেন, ঐ
বছরই রাসুলুল্লাহ্ (সা) বসার জায়গা মিম্বরের দুটি সিড়ি তৈরী করান ৷ তবে এগুলো যে ৮ম
হিজরীর কাজ, এটইি আমাদের কাছে প্রমাণিত ৷
আমর ইবনুল আস, খালিদ ইৰ্ন আলওয়ালীদ ও উছমান ইবন তাল্হার ইসলাম
গ্রহণ
ইবন ইসহাকের বরাতে পঞ্চম হিজরীর ঘটনাবলীর আলোচনায় এর ৰুসাংশিক বর্ণনা দেওয়া
হয়েছে ৷
হাফিয বায়হাকী — আমর ইবনুল আস (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “আমি
ছিলাম ইসলামের প্রতি বৈরী ভাবাপন্ন ৷ মুশরিকদের পক্ষে বদবে উপ ত ছিলাম; কিন্তু সে যুদ্ধে
প্রাণে রক্ষা পেয়ে যাই ৷ এরপর উহুদে অংশ নেই এখানেও রক্ষা পেয়ে যাই ৷ এরপর খন্দকের
যুদ্ধে হাযির হই ৷ তখনও বেচে যাই ৷ মনে মনে বলতে লাগলাম, কত আর অপমানিত হব ৷
আল্লাহ্র শপথ ! মুহাম্মাদ কুরায়শদের উপর অবশ্যই বিজয় লাভ করবেন ৷ তখন আমার যা কিছু
আছে তা নিয়ে কয়েক সদস্যের একটি ক্ষুদ্র দলের সাথে মিশে গেলাম এবং লোকজনের সাথে
দেখা সাক্ষাৎ করাও কমিয়ে দিলাম ৷ যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা ) হুদায়বিয়া গমন করলেন ও সন্ধি করে
ফিরলেন এবং কুরায়শরাও মক্কায় প্রতাবর্তন করল, তখন আমি বলতে লাগলাম , “আগামী বছর
মুহাম্মাদ (সা) তীর সাহাবীদেরকে নিয়ে বিজয়ীর বেশে মক্কা প্রবেশ করবেন ৷ তাই মক্কা বা তারেক
কোথায়ও অবস্থানের জন্য অনুকুল থাকবে না ৷ ইসলামের জন্যে বেরিয়ে পড়াই এখন উত্তম ৷
আর আমি বুঝি ইসলাম থেকে বহু পিছনে পড়ে রয়েছি ৷ আবার মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যদি
কুরায়শরা সকলেই মুসলমান হয়ে যায় তাহলেও আমি মুসলমান হব না ৷ তাই আমি মক্কা আগমন
করলাম এবং আমার গোত্রের কিছু লোককে একত্রিত করলাম ৷ আর তারাও আমার সিদ্ধান্তে
একাত্মতা ঘোষণা করল ৷ তারা আমার অত্যন্ত অনুগত ছিল ৷ আর কোন সমস্যা দেখা দিলে তারা
আমাকেই পুরোভাগে রাখতাে ৷ একদিন তাদেরকে আমি বললাম, তোমরা আমাকে তোমাদের
মাঝে কিরুপ মনে কর ? তারা বলল, “আপনি আমাদের মাঝে বুদ্ধিমান এবং জীবন রক্ষার এবং
সাফল্য অর্জনে আপনিই আমাদের প্রধান ৷ ” তিনি বলেন, “আমি তাদেরকে বললাম , আল্লাহ্র
শপথ, মুহাম্মাদের ব্যাপারটি এখন আমাদের কাছে অতিশয় গুরুত্বপুর্ণ এবং তার ব্যাপারটি
আমাদের সমস্ত কাজ কারবারকে দারুণ প্রভাবিত করছে ৷ সুতরাং আমি তোমাদের কাছে একটি
প্রস্তাব রাখতে চাই ৷ তারা বলল, সেটা কী ? আমি বললাম, চল, আমরা নাজ্জাশীর সাথে যোগ
দেই এবং তার সাথে আমরা থাকি ৷ যদি মুহাম্মাদ বিজয় লাভ করেন, তাহলে আমরা নাজ্জাশীর
কাছে থাকর এবং নাজ্জাশীর অধীনে থাকর যা আমাদের জন্যে মুহাম্মদের অধীনে থাকার চাইতে