অবশেষে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আগমন করলেন ৷ আমরা যখন বন্দী হলাম তখন স্বপ্নের ব্যাখ্যার
আকাগ্রা জাগ্রত হয় ৷ হযরত জুয়াইরিয়া বলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে মুক্ত করে বিবাহ
করেন, আল্লাহর কসম ! রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সঙ্গে আমার সম্প্রদায় সম্পর্কে আমি কোন কথা
বলিনি ৷ মুসলমানরা নিজেরাই তাদেরকে আযাদ করেছেন ৷ আমার চাচাতো বোনের এক দাসীর
মাধ্যমে আমি এ বিষয়ে জানতে পেয়েছি ৷ সে আমাকে এ খবর দিলে আমি আল্লাহর শুকরিয়া
আদায় করি ৷ ওয়াকিদী বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) জুয়াইরিয়ার মহর হিসাবে বনুমুস্তালিকের ৪০ জন
কে মুক্ত করেন ৷ মুসা ইবন উকবা বনু মুস্তালিক সুত্রে উল্লেখ করেন যে, তার পিতা তার খোজ
নেন এবং মুক্তিপণ দিয়ে তাকে মুক্ত করেন ৷ তারপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব
দিলে তার পিতা তাকে বাসুলুল্পাহ্ (সা)-এর নিকট বিবাহ দেন ৷
হযরত আইশা (না)-এর প্রতি অপৰাদ আরোপের ঘটনা
মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক (র) অপবাদের ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ংইব ন ইসহাক যুহরী সুত্রে
আলকামা — উবায়দৃল্লাহ্ইবন উতবা এর বরাতে বর্ণনা করেন যে, এরা সকলেই আমাকে এ
ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন তবে তাদের মধ্যকার কিছু লোক ঘটনা বেশী স্মরণ রেখেছেন ৷ আর
লোকেরা আমাকে যা জানিয়েছেন তার সমস্ত আমি একত্র করেছি ৷ ইবন ইসহাক ইয়াহ্ইয়া ইবন
আব্বাদ সুত্রে আইশা (রা) থেকে এর আবদুল্লাহ্ ইবন আবু বকর উমরা বিনৃত আবদুর
রহমান অইিশা সুত্রে এবং তিনি নিজের সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে, অপৰাদ রটনাকাবীরা এ ব্যাপারে
যা বলার বলেছে ৷ এ ঘটনা বর্ণনায় সকলেই অন্তর্ভুক্ত আছেন তাদের কেউ কেউ এমন বর্ণনা
দিয়েছেন যা অন্যরা বর্ণনা করেননি ৷ আর এরা সকলেই নির্ভরযোগ্য এবং সকলেই হযরত আইশা
থেকে যা কিছু শুন্যেছন তড়া-ই বর্ণনা করেছেন ৷ হযরত আইশা (রা ) বলেন : রাসুলুল্লাহ্
(সা)সফরে গমনের অভিপ্রায় করলে (স্বভাবতই) তিনি ত্রীগণের মধ্যে লটারী করতেন ৷ এতে যার
নাম আসভাে , তাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সফরে বের হতেন ৷ বনু মুস্তালিক যুদ্ধে বের হওয়ার সময়
ও তিনি সেই ব্যবস্থা অবলম্বন করেন ৷ এতে আমার নাম উঠে ৷ ফলে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে
সঙ্গে নিয়ে বের হন ৷ হযরত আইশা (রা) বলেন : তখনকার দিনে নারীরা স্বল্প আহার করতেন ৷
ফলে যেদভুড়ি বৃদ্ধি দ্বারা নারীরা মোটা সোটা না হয়ে বরং হাল্কা হতেন ৷ আমার বাহন প্রস্তুত হলে
আমি হাওদায় বসে পড়ি ৷ এরপর আমার উটের চালকরা আগমন করলে তারা আমার হাওদা নীচ
দিয়ে ধরে উটের পিঠে রাখে এবং হাওদাকে উটের পিঠে সওয়ার করায় ৷ হাওদা রশি দিয়ে করে
বাধার পর তারা রওয়ড়ানা করতো ৷ হযরত আইশা (বা) বলেন : এ সফর শেষে বাসুলুল্লাহ্ (সা)
মদীনায় দিকে বওয়ানা করেন ৷ মদীনায় কাছে এসে একটা মনযিলে সকলে অবস্থান করেন এবং
রাত্রের কিছু অংশ সেখানে কাটান ৷ তারপর ঘোষক লোকদের মধ্যে ঘোষণা প্রচার করলে
সকলেই বওয়ানা হন ৷ আমি প্রাকৃতিক প্রয়োজন বাইরে গিয়েছিলাম ৷ আমার গলায় ছিল ঝিনুকের
হার ৷ আমি যখন প্রাকৃতিক প্রয়োজন সেরে অবসর হই তখন আমার অজান্তে হারটি আমার গলা
থেকে পড়ে যায় ৷ আমি টেরই পাইনি ৷ আমি অবতরণস্থলে ফিরে এসে গলায় হাত দিয়ে দেখি
হার নেই ৷ এসময় লোকেরা বাহন যােগে রওয়ড়ানা হতে উদ্যত হয় ৷ যে স্থানে আমি হার ফেলে
এসেছিলাম ৷ আমি সেখানে ফিরে যাই এবং হারটি খুজে পাই ৷
ইতে ৷মধ্যে আমার বাহনে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ এসে পড়েন এবং বাহন প্ৰস্তত করে তারা
অবসর হয়ে যথারীতি আমি তাতে আছি মনে করে তারা হাওদা তুলে নেন ৷ উঠের পিঠে হাওদায়
আমি নেই এমন সন্দেহও তারা করেননি; তাই তারা সওয়ারীর লাপাম ধরে রওয়ানা হয়ে পড়েন ৷
অবতরণ স্থলে আমি ফিরে আসি; তখন সেখানে আহ্বানকারী আর সাড়াদানকারী কেউই নেই ৷
সকলেই রওয়ানা হয়ে গেছেন ৷ আমি সেখানে চাদর ঘুড়ি দিয়ে স্ব-স্থানে শুয়ে পড়ি এবং ধারণা
করি যে, তারা আমাকে খুজে না পেয়ে অবশ্যই আমার দিকে ফিরে আসবেন ৷ তিনি আরো
বলেন; আমি শুয়ে আছি এমন সময় সাফ্ওয়ান ইবন মুয়াত্তাল সুলামী আমার পাশ দিয়ে অতিক্রম
করেন ৷ নিজের কোন প্রয়োজনে তিনি কাফেলার পেছনে ছিলেন ৷ তিনি লোকজনের সঙ্গে রাত্রি
যাপন করেননি এবং আমার অস্পষ্ট অবয়ব দেখে এগিয়ে আসেন এবং আমাকে দেখে চিনতে
পারেন ৷ কারণ, আমাদের উপর পদয়ি বিধান আমার পুর্বে তিনি আমাকে দেখেছিলেন ৷ আমাকে
দেখে তিনি ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্ন৷ ইলাইহি রাজিউন পাঠ করে ণ্রুণ্;লন এ যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
সহধর্মিণী আমি কাপড় ঘুড়ি দিয়ে ছিলাম ৷ তিনি বললেন, আল্লাহু আপনার প্রতি রহম করুন, কী
করে আপনি পেছনে রয়ে পেলেন ? আইশা বলেন : আমি তার সঙ্গে কোন কথা বলিনি ৷ এরপর
উট আমার কাছে এসে আরোহণ করতে বলে তিনি দুরে সরে দাড়ান ৷ তিনি বলেন, আমি উঠে
চড়লে তিনি উঠে লাগাম ধারণ করতঃ রওয়ানা করেন ৷ আল্লাহর কসম ভোর পর্যন্ত আমরা
কাফেলাকে ধরতে পারিনি এবং আমাকে কেউ তালাশও করেনি ৷৩ তারা অবতরণ স্থলে নির্বিকার
অবস্থান করছিলেন এমন সময় আমাকে নিয়ে লোকঢি সেখানে পৌছেন তখন অপবাদ
রটনাকা রীরা যা বলার তা বলে এবং বাহিনীতে ভৈহাচ পড়ে গেল ৷ আল্লাহ্র কসম এসবের কিছুই
আমি জানি না ৷ আমরা মদীনায় প্রত্যাবর্তন করি এবং এসেই আমি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং
এতসবের কিছুই আমার কানে পৌছেনি ৷ রাসুলুল্লাহ্ (মা) এবং আমার পিতামাতার কানে এসব
কথা পৌছলেও তারা অল্প বিস্তর কিছুই আমাকে জা ৷নাননি ৷ অবশ্য আমার সঙ্গে রাসুল (সা ) ৷হাসি
তামাশা আর কৌতু কে আমি কিছুটা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করি ৷ আমি অসুস্থ হলেও তিনি দয়া আর
কোমলত৷ প্রদর্শন করতে ন ৷ কিন্তু আমার এবারের অসুস্থর্তায় তিনি তেমন কোমলত৷ প্রদর্শন
করেননি ৷ এবার তার পক্ষ থেকে আমি ব্যতিক্রম লক্ষ্য করলাম ৷ তিনি আমার কাছে আসেন আর র
আম্মাজান ১ আমার সেবার রত; তিনি কেবল বলতেন বাড়ীর লোক কেমন আছেন ? এর বেশী
কিছু বলতে তন না ৷ তিনি বলেনঃ এতে আমি অত্যন্ত ব্যথিত হলাম এবং তার এরুপ আচরণ দেখে
আমি আরয করলাম ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ (সা) আপনি অনুমতি দান করলে আ ৷মি আমার মায়ের
নিকট চলে যাই ৷ তিনি আমার সেবা-যত্ন করবেন ৷ তিনি বললেন, অসুবিধা নেই ৷ হযরত ৩অইিশা
(বা) আরো বলেন : এরপর আমি মায়ের নিকট চলে যাই ৷ যা ঘটেছে সে সম্পর্কে আ ৷মি কিছুই
জানতাম না ৷ এক মাসের অসুখে আমি নিতান্ত দুর্বল হয়ে পড়ি ৷ আমরা আরবের লোকেরা
আজমী লোকদের মতো গৃহে শৌচাগারের ব্যবস্থা রাখতাম না ৷ বরং এ ব্যবস্থাকে আমরা ঘৃণা
করতাম ৷ এজন্য আমরা মদীনার উপযুক্ত প্রান্তরে গমন করতাম আর নারীরা প্রাকৃতিক প্রয়োজনে
রাতের বেলা বাইরে গমন করতে ন ৷ একদা রাত্রিকালে প্রাকৃতিক প্রয়োজনে আমি গৃহের বাইরে
১ সীরাতে ইবন হিা৷মে আছেং তিনি উম্মে রোমান, তার নাম যয়নব বিনৃত আব্দ দাহমান, বনু কিবাস
ইবন গনম ইবন মালিক ইবন কিনানার অন্যতম সদস্য ৷
গমন করি, আমার সঙ্গে ছিলেন আবু রহম ইবন মুত্তালিবের কন্যা উম্মু মিসৃতাহ ৷ হযরত আইশা
(রা) বলেন : আল্লাহ্র কসম ! উম্মু মিসৃতাহ আমার সঙ্গে হীটছিলেন ৷ এমন সময় চাদরের সঙ্গে
জড়িয়ে তিনি হোচট খেয়ে পড়ে যান এবং বলে উঠেন, মিসৃতাহর সর্বনাশ হোক ! (মিসৃতাহ ছিল
তার উপনাম , তার নাম ছিল আওফ) ৷ তিনি বলেন, তখন আমি বললড়াম, একজন যুহাজিরকে বদ
দোয়া দিয়ে তুমি অন্যায় করলে ৷ তিনিভাে বদর যুদ্ধেও অংশ গ্রহণ করেছেন ৷ তখন উম্মু মিসৃতাহ
বললেন ৷ হে আবু বকর তনয়া ! তুমি কি কিছুই খবর রাখনা ৷ আমি নললাম , কী খবর ? তখন
অপবাদ রটনাকারীদের কথাবার্তা সম্পর্কে তিনি আমাকে অবহিত করশ্লোন ৷ আমি রগ্যাম , এমন
ঘটনাই কি ঘটেছে ? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম , তইি ঘটেছে ৷ তিনি বলেন, আল্লাহর কসম ,
এসব কথা শুনে আমি আর প্রাকৃতিক প্রয়োজন মেটাতে পারিনি, বরং সেখ৷ ন থেকে ফিরে আসি ৷
আল্লাহর কসম, আমি অঝোরে কাদতে থাকি ৷ এমন কি আমার আশংকা হয় যে, কাদতে কাদতে
আমার কলিজা ফেটে যাবে ৷ তিনি বলেন, আমি আমার মাকে বললব্লে, আল্লাহ্ আপনাকে ক্ষমা
করুন, লোকেরা নানা কথাবার্তা বলছে, আপনিতো তার কিছুই আমাকে জানাননি ৷
তিনি বললেন : স্নেহের তনয়া আমার ৷ ব্যাপারটাকে হাল্কাভাবে নাও ৷ কোন পুরুষের সুন্দরী
রমণী থাকবে ৷ পুরুষ তাকে ভালবাসার, তার সভীনও থাকবে তাহলে তার সম্পর্কে নারীরা
অনেক কিছু বলবে, অনেক কিছু অন্যান্য লোকেরাও বলবে, এমন না ঘটলে তা হবে বিরল
ঘটনা ৷ হযরত আইশা (বা) বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) এ সময় দাড়িয়ে লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ
দান করেন ৷ এটাও আমি জানতাম না, ভাষণে তিনি বললেন :
লোকসকল ! লোকদের কী হয়েছে ? তারা আমার পরিবার সম্পর্কে আমাকে কষ্ট দিচ্ছে ৷
তারা অসত্য কথা বলছে তাদের বিরুদ্ধে ৷ আল্লাহ্র কসম তাদের বিরুদ্ধে মঙ্গল ও কল্যাণ বৈ
কিছুই আমি জানিনা ৷ আর তারা এটা এমন এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলছে যার সম্পর্কে ভাল ছাড়া
কিছুই আমার জানা নেই ৷ সে যখন আমার গৃহে প্রবেশ করে তখন সে আমার সঙ্গেই থাকে ৷
হযরত আইশা (বা) বলেন : মিসতাহ্ এবং হামনা বিনৃত জাহাশ বলেছে মুনাফিক সরদার
আবদুল্লাহ্ ইবন উবাই ইবন সালুল খায্রাজীদের মধ্যে এ অপবাদ রটনায় প্রধান ভুমিকা পালন
করে ৷ আর এটা এ কারণে যে, তার বোন যয়নাব বিনৃত জাহাশ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর শ্রী ছিলেন ৷
মর্যাদার তিনি ছাড়া নবীজীর অপর কোন শ্রী আমার সমকক্ষ ছিল না ৷ দীনদারীর কারণে যয়নাবকে
আল্লাহ্ রক্ষা করেছেন ৷ তইি তিনি ভাল ছাড়া কিছুই বলেননি ৷ আর হামনাতো একথা খুব প্রচার
করেছেন এবং বোনের কারণে তিনি আমাকে কষ্ট দেন ৷ এর ফলে তিনি হতভাগিনী হয়েছেন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর এ ভাষণের পর উসায়দ ইবন হুদায়র আরব করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্
(না) ! এ অপবাদ রটনাকারীরা যদি আওস গোত্রের হয়ে থাকে তা হলে আমরাই তাদেরকে
শায়েস্তা করার জন্য যথেষ্ট ৷ আর যদি তারা ৫৩ামাদের ভাই খায্রাজ গোত্রের হয়ে থাকে তবে
আপনি নির্দেশ দিন, আল্লাহ্র কসম ৷ তারা পদনি উড়িয়ে দেয়ার যোগ্য ৷ আ ৷ইশা (রা) বলেন ;
(একথা শ্রবণ করে) সাদ ইবন উবাদা দাড়ালেন, ইতিপুর্বে তাকে ৫নক্কার বলে ধারণা করা
হতো ৷ তিনি বললেন, আল্লাহ্র কসম, ভুমি মিথ্যা বলছ ৷ তাদের পদনি উড়িয়ে দেয়া যাবে না ৷
আল্লাহ্র কসম, একথা তুমি এজন্যই বলছ যে, তুমি জান যে তারা খাঘৃরাজ ব শের লোক ৷ তুমি
যদি জা নতে যে, তারা তোমার ৫গাত্রের ৫লাক তাহলে ত মি এমন কথা বলত না ৷ তখন উসায়দ
ইবন হুযায়র বললেন, আল্লাহ্র কসম, তুমি মিথ্যা বলছ ৷৩ তুমি নুনাফিক মুনাফিকদের পক্ষে কথা
বলছ ৷ হযরত আইশা (রা) বললেন ং এপর লোকেরা বিবাদে প্ৰবৃও হলো, এমন কি পরম্পরে
সংঘাতে লিপ্ত হওয়ার উপক্রম হল ৷ আওস আর খাযরাজ এ দুই দলের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যায় আর
কি ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) মিম্বর থেকে নেমে আমার কাছে এলেন ৷ তিনি আলী ইবন আবী তালিব
এবং উসামা ইবন যায়দকে ডাকলেন ৷ তাদের কাছে পরামর্শ৷ ঢাইলেন ৷ উসামা (আমা র সম্পর্কে)
ভালই বললেন প্রশংসা করলেন, তিনি বললেন, ইয়া রাসৃলাল্লাহ্ ! আপনার পরিবার সম্পর্কে তো
আমরা ভাল ছাড়া কিছু জানি না ৷ আর এসব কথা মিথ্যা ও তামার ৷ অবশ্য আ ৷লী (রা) বললেন ং
ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! নারীর৫ তাে অভাব নেই) আর আপনি ৫৩ ৷ ন্তী বদলও করতে পারেন ৷ আপনি এর
দাসীকে জিজ্ঞেস করুন, যে আপনাকে সত্য তথ্য দিয়ে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) জিজ্ঞেস করার জন্য
বারীরাকে ডাকলেন ৷ আইশা (রা) বলেন, আলী (রা)৩ তার দিকে এগিয়ে গিয়ে তাকে ৫বদম
পেটাতে ৫পটাতে বললেন৪ রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর কাছে তুই স৩ ৷ কথা বলৰি ৷ হযরত ৩আইশা
(রা) বলেন যে, সে বললাে আল্লাহর কসম ৷ তার সম্পর্কে আ ৷মি তাল ছাড়া কিছুই জানিনা ৷ আইশা
(রা)-এর মধ্যে আমিতো দােষের কিছুই ৫দখিনা: কেবল এটুকু যে আমি আট৷ খামীর করে তাকে
খেয়াল রাখার জন্য বলে যাই আর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন এ সময় বকরী এসে আট৷ খেয়ে ফেলে ৷
হযরত আইশা সিদ্দীকা (রা ) বলেন : এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমার নিকট আগমন
করলেন ৷ এসময় আমার নিকট পিতা-মাতা ছাড়াও একজন আনসারী নারী ছিলেন ৷ আমি ৫রস্ফো
করছিলাম, সে আনসারী মহিলাও ৫রাদন করছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এসে বললেন, আল্লাহ্র হামৃদ
ও ছান৷ বর্ণনা করে বললেন
৫হ আইশা লোকেরা কিসব বলাবলি কর৫ছ৩ তা তাে তোমার জানা হয়েছে ৷ তুমি আল্লাত্ক্ষ্ কে
ভয় করে৷ ৷ আর ৫লাকেরা যেসব কথা বলাবলি করছে ৷ তাতে তুমি লিপ্ত থেকে থাকলে আল্লহ্র
নিকট তাওবা কর ৷ আল্লাহ্ভো বান্দার তাওব৷ কবুল করে থাকেন ৷
হযরত আইশা (রা) বলেন, আল্লাহ্র কসম , তিনি আমাকে লক্ষ্য করে একখাগুলাে বলা মাত্র
আমার অশ্রু সম্পুর্ণ শুকিয়ে যায় , আমি এক বিন্দু অশ্রু আছে বলেও অনুভব করলাম না ৷ আমি
অপেক্ষা করলাম যে, আমার পক্ষ থেকে পিতামাত৷ জবাব দেবেন ৷ কিন্তু তারা কিছুই বললেন
না ৷ তিনি বলেন; আল্লাহর কসম , আমার নিজের কাছে নিজেকে ছোট মনে হচ্ছিল আর আমার
ব্যাপারে আল্লাহ্ কুরআন নাযিল করে আমাকে সান্তুনা দিবেন আমার এমন অবস্থুাও আছে বলে
মনে হতো না ৷ তবে আমি আশা পোষণ ক্যাতাম যে, নবী (সা) কিছু স্বপ্নে দেখবেন যাদ্বার৷ আল্লাহ্
আমার ব্যাপারে মিথ্যা অপবাদের স্বরুপ প্রকাশ করবেন এবং আমি যে নির্দোষ, তা তিনি জানতে
পারবেন ৷ এতে তিনি আরো কিছু বিষয়ও জানতে পারবেন, অবশ্য আমার সম্পর্কে কুরআন নাযিল
হবে আমার নিজেকে নিডেরে কাছে তার চাইতে ভুচ্ছ মনে হয়েছে ৷ তিনি আরো বলেন : আমার
পিতামাতাকে আমার পক্ষ থেকে জবাব না দিতে দেখে আমি তাদেরকে বললাম , আপনারা কি
রাসুলুল্লাহ (সা) এর কথার জবাব দেবেন না ? তারা বললেন, আল্লাহর কলম , আমরা কী জবাব
দিবাে তাই তো বুঝতে পারছিনা ৷ আইশা (বা) আরো বলেন , এদিনগুলোতে আবু বকরের
পরিবারের উপর যেসব বিপদ আপতিত হয়েছে ৷ তেমন বিপদ অন্য কোন পরিবারের উপর
আপতিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই , এমন কথা আমি হলফ করে বলতে পারি ৷ তিনি আরো
বললেন : আমার ব্যাপারে তারা একেবারে নিবাক থাকার পর আমি অশ্রুপাত করলাম, রােদন
করলাম আর বললাম, আমার সম্পর্কে যেসব কথা বলা হচ্ছে সে ব্যাপারে আমি কখনো আল্লাহর
নিকট তাওবা করব না আল্লাহর কসম, আমি ভাল করেই জানি যে, লোকেরা সেসব কথা বলাবলি
করছে ৷ আমি যদি তা স্বীকারও করি আর আল্লাহ জানেন যে, আমি এ ব্যাপারে নিদেষি তবে যা
ঘটেনি তা স্বীকার করে নেয়া হবে ৷ পক্ষাস্তরে ণ্লাকেরা যা বলাবলি করছে আমি তা অস্বীকার
করলেও তারা তা সত্য বলে মেনে নেবে না ৷ তিনি বলেন, অবশেষে আমি হযরত ইয়া’কুব
(আ)-এর নাম স্মরণ করার চেষ্টা করি ৷ কিতু৷ তা আমার মনে পড়লো না ৷ তখন আমি বললাম ,
হযরত ইউসুফ (আ)-এর পিতা যা বলেছিলেন তেমন কথইি আমি উচ্চারণ করবো ;
অতএব, সুন্দর সবরই (উত্তম) ৷ আর তোমরা যা বলছ, সে ব্যাপারে আল্লাহর নিকটই সাহায্য
প্রার্থনা করছি (ইউসুফ ১২ : ১৮১ ৷
হযরত আইশা (বা) বলেন : আল্লাহর কসম , রাসুলুল্লাহ্ (সা) মজলিসে থাকতেই আল্লাহর
পক্ষ থেকে একটা তবে তাকে আচ্ছন্ন করে নেয়, যে তার আছন্ন করতো ওহী নযিল কালে ৷ তইি
তিনি বস্ত্র দিয়ে নিজেকে আবৃত করে নেন এবং মাথার নীচে স্থাপন ক্যালেন চামড়ার বালিশ ৷ আর
এ সময় তার যে অবস্থা আমি দেখতে পেলাম ৷ আল্লাহর কলম, তাতে আমি মোটেই বিচলিত
হইনি ৷ কোন পবরাণ্ডয়াও করিনি ৷ কারণ, আমি তো জানি যে, আমি নির্দোষ আর আল্লাহ তো
আমার প্রতি যালিম নন ৷ আর আল্লাহর কসম করে বলছি ৷ অইিশার জীবন-প্রাণ যে পবিত্র সত্তার
হাতে আছে, আমার পিতামাতার তো করুণ দশা, আমার মনে আশংকা জাগলো, লোকেরা যা
বলাবলি করছে, ওহীর মাধ্যমে যদি তার সত্যতা প্রতিপন্ন হয় ৷ তিনি বলেন, অতঃপর রাসুলুল্লাহর
ভাবান্তর হলো, তিনি উঠে বললেন, প্রচণ্ড শীতের মওসুমেও তার চেহারা মুবারক থেকে মুক্তার
মতো ঘাম ঝড়ে পড়ছিল ৷ তিনি চেহারা থেকে যায় মুছতে মুছতে বলছিলেন :
হে আইশা! সুসংবাদ গ্রহণ কর, আল্লাহ তোমার নির্দোষিতা প্রমাণ করে আয়াত নাযিল
করেছেন ৷ তিনি বলেন, আমি আলহামদৃ সিল্লাহ বললাম ৷ এপর তিনি লোকদের উদেশ্যে বের
হয়ে পড়লেন ৷ তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন এবং এ উপলক্ষে আল্লাহ তাআল৷ কুরআন
মজীদের যে আয়াত নাযিল করেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তা তিলাওয়াত করলেন ৷ অতঃপর অশ্লীল
কথা বিস্তারে অগ্রণী ভুমিকা পালনকারী মিসতাহ্ ইবন উছাছা, হাস্সান ইবন ছাবিত এবং হামনা
বিনৃত জাহাশকে তলব করে এনে অপবাদ আরােপের দণ্ড তথা (হদ) জারী করেন ৷ এ হাদীছটি
সহীহ্ বুখায়ী ও মুসলিমে যুহরীর বরাভে বর্ণিত হয়েছে ৷ আর এ বর্ণনায় প্রত্যুঃ শিক্ষণীয় বিষয় নিহিত
রয়েছে ৷ হত্বসৃসান ইবন ছাবিত এবং তীর সঙ্গীদের ক্ষেত্রে অপবাদের ন্ওহুন্যে দণ্ড কার্যকঃা৷র কথা আবু
ইউসুফ (র) তার সুনান গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন ৷ ইবন ইসহাক (র) বলেন : হাসৃসান ইবন ছাবিত
এবং তার সঙ্গীদের উপ্যা দণ্ড প্রায়াগ বিষয়ে কোন ঘুসলিম করি নিম্নোক্ত কবিতা রচনা করেন ?;
মর্মার্থ : হাসৃসান উপযুক্ত শাস্তির স্বাদ আম্বাদন করেছেন ৷
হামনা আর মিসৃতাহ্ও, যখন তারা আবােল-তাবােল বকেছে ৷
নবীর ত্রীকে তারা অপবাদ দিয়েছে অন্দোজ অনুমান করে ৷
আল্লাহর ণ্ক্রাধ্ অর্জন করে তারা হয়েছে বিষপ্ন ৷
তারা তাতে কষ্ট দিয়েছে আল্লাহর রাসুলকে, আরোপিত হয়েছে তাদের উপর অপমান,
যা আচ্ছন্ন করে নিয়েছে তাদেরকে এবং হয়েছে তারা লাঞ্ছিত ৷
বর্ধিত হয়েছে তাদের উপর চাবুক, যেন তা বৃষ্টির ছিটা,
যা বর্ধিত হচ্ছে উধের্ধৱ মেঘমালা থেকে !
ইবন ইসহাক (র) উল্লেখ করেন যে, হাসৃসান ইবন ছাবিত ভার কবিতায় মারওরান ইবন
মুয়াত্তাল এবং তার কুরায়শী সঙ্গীদ্দেৱ কুত্সা রচনা করেন মুরায়সীর যুদ্ধের দিনে বাদশাহ ও তারা
সঙ্গীদের সঙ্গে যে ঝগড়া হয়েছিল তাকে কেন্দ্র করে ৷ কবিতত্তোলা এই :
মর্যার্থ : মুরায়শীরা বিজয়ী হয়েছে আর সংখ্যায় তারা তাে অনেক,
আর ফারীয়ার ১ ছেলে হয়ে পড়েছে অপ্রতিদ্বন্থী শু
তুমি যার সাথী, তার মাতা তাকে হারায়,
অথবা সে আসুক সিংহের পাঞ্জাৱ তলে ৷
আমি যাকে হত্যা করি দৌড়ে গিয়ে তাকে পাকড়াও করি !
তার জন্যে কোন রক্তপণ দিতে হয় না বা শাস্তি ভেম্পো করতে হয় না
অবশ্য কুরায়শের ব্যাপার স্বতন্ত্র, আমি আপােষ করব্যেনা তালে সঙ্গে,
যতক্ষণ তারা ভ্রান্তি থেকে হিদায়াতেৱ পথে ফিরে না আসে ৷
আর লাত-উজ্জাকে বর্জন করে
সকলেই সিজদা না করে একক আল্লাহ্র উদ্দোশ্য গ্
আর সাক্ষ্য না দেবে যে, রাসুল তাদেরকে যা বলেন, তাষ্ই সত্য,
সৃতরাংতারা পুরা করুক আল্লাহর হক আর অঙ্গীকার
ইবন ইসহাক (র) বলেন, সাফওয়ান ইবন মুয়ত্তোল হাসৃসানের
প্রতিবন্ধক হলে তাকে তরবারি দ্বারা আঘাত করে বলেন ও
১ টীকা : ফারিয়া বলতে হাসৃসৰ্নেৱ মাকে বুঝানো হয়েছে ৰু
আমার পক্ষ থেকে তলোয়ারের ধার গ্রহণ ক্যা, কারণ-
আমিভাে নওজােয়ান (হামলাকারী) যখন আমার নিন্দা বলা হয়,
আমিতো কোন করি নই ৷
কথিত আছে যে, সাফওয়ান হাসৃসানকে তরবারি দ্বারা আঘাত হানলে ছাবিত ইবন কায়স
ইবন শাম্মাস তাকে পাকড়াও করে শক্ততাবে বেধে ফেলেন ৷ আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহ৷ এ দৃশ্য
দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন :
ব্যাপার কি : তিনি বললেন : সে হাসৃসানকে তরবারি দ্বারা আঘাত করেছে ৷ তখন আবদুল্লাহ
জিজ্ঞেস করলেন : রাসুলুল্লাহ্ (না) কি এ সম্পর্কে জানেন ? তিনি বললেন, না ৷ তখন আবদুল্লাহ
ইবন রাওয়াহা তাকে বন্ধনমুক্ত করেন ৷ এরপর তারা সকলে রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর দরবারে হাযির
হলে ইবন মুয়াত্তাল বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ ! সে আমাকে কষ্ট দিয়েছে, আমার নিন্দা করেছে,
আমার ভীষণ রাগ হয়েছে, তইি আমি তরবারি দ্বারা আঘাত করেছি ৷ তা’ শুনে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন
আমার সম্প্রদায়কে আল্লাহ হিদায়াত দান করেছেন বলে তুমি কি তাদের নিন্দাবাদ করেছ :
তারপর তিনি বললেন : হে হাসৃসান! তুমি যে আঘাত পেয়েছ তা’ ক্ষমা করে দাও; তিনি বললেন,
ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার জন্যে তা ক্ষমা করে দিলাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর বিনিময়ে হযরত
হাসসৃানকে বায়রুহ৷ কুয়া দান করেন, যা আবু তালুহা র্তাকে দান করেছিলেন ৷ এ ছাড়া তিনি তাকে
সিরীণ নাম্বী দাসীটি দান করেন ৷ এর গর্ত থেকে তারপুত্র আবদুর রহমানের জন্ম হয় ৷ ইবন
ইসহাক (র) বলেন : হযরত আইশা (রা) বলাতন ইবন মুয়াত্তাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে
জানা যায় যে, তিনি এমন এক পুরুষ, যার মধ্যে নারীর প্রতি কোন আসক্তি নেই ৷ পরবউকািলে
তিনি শহীদ হয়েছিলেন ৷ আল্লাহ্ তাআলা তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন ৷ ইবন ইসহাক বলেন, হযরত
আইশা (বা) সম্পর্কে যা রটনা করেছিলেন, সে জন্য হযরত হাসৃসান দুঃখ প্রকাশ করে নিম্নোক্ত
কবিতা আবৃত্তি করেন :
মর্মার্থ : তিনি যে পুত-পবিত্র ও সত্তী-সাব্দী , তাতে সন্দেহ করা যায় না ৷
যায় না তাকে অপবাদে ক্লিষ্ট করা, আর পাফিল নারীদের নিন্দাবাদ দ্বারা তিনি দিবসের সুচনা
করেন না ৷
তিনি লুয়াই ইবন গালিবের গোত্রের সুকীর্তির ধারক-বাহক, তার কম সুন্দর ৷
তিনি এমন এক বংশের সন্তান, যাদ্যো মান-মর্যাদা বিলীন হওয়ার নয় ৷
তার সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা কিছুতেই প্রামাণ্য নয়, কোন কালে ও নয় ৷
বরং আমার ক্ষেত্রে তা এক নিন্দুকের উক্তি-
যদি সে কথা আমি বলেই থাকি, যা তোমরা অনুমান কর ৷
তাহলে আমার হাতের আঙ্গুল আমার পানে কােড়া উত্তোলন বল্মবে না ৷
তা কেমনে হতে পারে , অথচ আমার ভালবাসা আর সাহায্য তো
রাসুলের (সা) পরিবার পরিজনের জন্য উৎসর্গীকৃত ৷ তিনিই তো আসরের দীপ্তি !
তাদের জন্য রয়েছে সম্মান আর মর্যাদা, এর বাইরে লোকদ্যোকে তুমি দেখতে পাবে খর্বকায়
আর তাদের মর্যাদা তাে সকলের উধের্ধ ৷ এখানে সুরা নুর এর নিম্নোক্ত আয়াত উদ্ধৃত করা যায়
যারা এ অপবাদ আনয়ন করেছে তারাতো তােমাদেরই একটা দল ৷ এটাকে তোমরা
নিজেদের জন্য অনিষ্টকর মনে করবে না; বরং এটাভাে তোমাদের জন্য কল্যাণকর ৷ তাদের
প্রত্যেকের জন্য রয়েছে নিজেদের কৃত পাপ কর্মের ফল ৷ আর ওদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে প্রধান
ভুমিকা পালন করেছে, তার জন্য রয়েছে মহশোস্তি ৷ তারা যখন এটা শ্রবণ করল তখন মু’মিন
পুরুষ এবং মু’নিন নারীরা নিজেদের সম্পর্কে কেন ভাল ধারণ! করেনি এবং কেন তারা বলেনি-
এটাতাে সুস্পষ্ট অপবাদা তারা কেন এ ব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করেনি ৷ যেহেতু তারা
সাক্ষী উপস্থিত করেনি সেহেতু আল্লাহ্র নিকট তারা মিথ্যারাদী, দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাদের
প্রতি আল্লাহর ফযল ও রহ্মত না থাকলে তোমরা যাতে লিপ্ত ছিলে, তজ্জন্য মহশোস্তি
তােমাদেরকে স্পর্শ করতো ৷ তোমরা যখন মুখেঘুখে এটা ছড়াচ্ছিলে এবং এমন বিষয় মুখে
উচ্চারণ করছিলে যে বিষয়ে তোমাদের কোন জ্ঞান ৷ছলনা এবং ওে আমরা এটাকে তুচ্ছ জ্ঞান
করছিলে, যদিও আল্লাহ্র নিকট এটা ছিল গুরুতর বিষয় ৷ আর তোমরা যখন এটা শ্রবণ করছিলে
তখন কেন বললে না এ বিষয়ে বলাবলি করা আমাদের উচিত নয় ৷ আল্লাহ্ পবিত্র মহান ৷ এতো
এক গুরুতর অপবাদ! আল্পাহ্ তােমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন তোমরা মু’মিন হয়ে থাকলে
কখনো অনুরুপ আচরণের পুনরাবৃত্তি করবেনা , আল্লাহ তোমাদের জন্য আয়াতসমুহ সুশাভাবে
বিবৃত করেন এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় ৷ যারা মুমিনদ্যে৷ মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে
তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে মর্মন্তুদ শাস্তি ৷ আর আল্লাহ জানেন, তোমরা জাননা ৷
আর তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র ফযল ও রহমত না থাকলে (ণ্তামাদের কেউ ব্লেহাই থেতেনা) ৷
আর আল্লাহ অতি দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু ৷ হে মু’মিনগণ! তোমরা শয়তানের পদাৎক অনুসরণ
করবে না ৷ কেউ শয়তানের পদাহ্ক অনুসরণ করলে শয়তানতো অশ্লীলতা ও মন্দ কার্যের নির্দেশ
দেয় ৷ তোমাদের প্রতি আল্লাহ্র ফযল ও রহমত না থাকলে তোমাদের কেউ কখনো পবিত্র হতে
পারতাে না, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন ৷ আর আল্লাহু সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ ৷ তোমাদের
মধ্যে যারা ঐশ্বর্য প্রাচুর্যের অধিকারী তারা যেন শপথ না করে যে, আত্মীয়-স্বক্রা এবং অভাবগ্রস্ত ও
আল্লাহ্র রাস্তায় হিজরত কারীদেরকে কিছুই দেবে না ৷ তারা যেন ক্ষমা আর উপেক্ষা করে ৷
তোমরা কামনা কর না যে , আল্লাহ্ আমাদেরকে ক্ষমা করেন, আল্পাহ্ মহা ক্ষমাশীল অতি দয়ালু ৷
যারা সাধধী, সরলমনা ও ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে দুনিয়া ও আখিরাতে তারা
অভিশপ্ত আর তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি ৷ সেদিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে তাদের জিহ্বা
তাদের হস্ত ও তাদের চরণ, তাদের কৃতকর্য সম্পর্কে সেদিন আল্লাহ্ তাদের প্রাপ্য প্ৰতিফল
পুরোপুরি দেবেন এবং তারা জানবে যে, আল্লাহ্ই সত্য এবং স্পষ্ট প্রকাশক ৷ ভ্রষ্টা নারী ভ্রষ্ট
পুরুষের জন্য, ভ্রষ্ট পুরুষ ভ্রষ্টা নারীর জন্য ৷ পবিত্র নারী পবিত্র পুরুষের জন্য আর পবিত্র পুরুষ
পবিত্র নারীর জন্য ৷ ণ্লাকেরা যা বলে তা থেকে এরা মুক্ত ৷ এদের জন্য রয়েছে ক্ষমা আর
সম্মানজনক জীবিকা ৷ (২৪ সুরা নুর : ১ ১২৬)
এ আয়াতগুলোর তাফসীর প্রসঙ্গে আমরা সংশ্লিষ্ট হাদীছ ও আছারসমুহ এবং অতীত
মনীষীদের উক্তিসমুহ সংশ্লিষ্ট হাদীছের সুত্র উল্লেখ করেছি ৷
হুদায়বিয়ার অভিযান
হিজ্জী ষষ্ঠ সনের যিলকাদ মাসে হুদায়ৰিয়ার অভিযান সংঘটিত হয় ৷ এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত
নেই ৷ ইমাম যুহ্রী, ইবন উমর (রা)-এর আযাদ কৃত গোলাম নাফি কাতাদা , মুসা ইবন উকবা
এবং মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক প্রমুখ এ মত পোষণ করেন ৷ ইবন লাহিয়া আবুল আসওয়াদ সুত্রে
উরওয়া থেকে বর্ণনা করেন যে, হিজরী ষষ্ঠ সালের যিলকাদ মাসে হুদায়বিয়ার ঘটনা ঘটে ৷
ইয়াকুব ইবন সুফিয়ান ওরওয়া সুত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) রমযান মাসে
হুদায়বিয়ার উদ্দেশ্যে বের হন আর হুদায়বিয়ার সন্ধি হয় শাওয়াল মাসে ৷ উরওয়া সুত্রের এ বর্ণনা
নিতম্ভেই গরীব তথা বিরল পর্যায়ের ৷ ইমাম বুখারী (র) ও ইমাম মুসলিম (র) উতয়ে হুদবা
আনাস ইবন মালিক (বা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (না) যিলকাদ মাসে : বার উমরা
করেন ৷ অবশ্য হন্থজ্জর সঙ্গে তিনি যে উমরা করেন তা এর ব্যতিক্রম ৷ তিনি হুদায়বিয়ার উমরা
করেন যিলকাদ মাসে, পরবর্তী বছরের উমরা করেন যিলকাদ মাসে এবং জিইরানা থেকে উমরা
করেন যিলকাদ মাসে ৷ এখানে তিনি হুনায়নের গনীমতের যাল বন্টন করেন ৷ আর এক উমরা
করেন হাজ্জা সঙ্গে ৷ এটা বুখারী শরীফের ভাষ্য ৷ ইবন ইসহাক বলেন, রাসুলুল্পাহ্ (সা) রমষান
এবং শাওয়াল এই দু মাস মদীনায় অবস্থান করেন এবং যিলকাদ মাসে উমরার উদ্দেশ্যে বের হন ৷
এ সময় যুদ্ধের অভিপ্রায় ফ্লিনা , ইবন হিশাম বলেন, এ সময় তিনি মদীনায় নুসায়লা ইবন
আবল্লোহ্ লায়হীকে আমীর নিযুক্ত করেন ৷
ইবন ইসহাক (র) বলেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বেদুঈন এবং তাদের আশপাশের গ্রামের
লোকদের প্রতি বের হওয়ার আহ্বান জানান ৷ বুন্মায়শের পক্ষ থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এ্যা আশংকা
ছিল যে, তারা তার সঙ্গে যুদ্ধে প্ৰবৃত্ত হবে বা বায়ভুল্লাহ্র যিয়ারত করতে তাকে বাধা দেবে; বিন্দু
গ্রামের অনেকেই বের হতে বিলম্ব করে ৷ ফলে মুহাজ্যি৷ এবং আনসারদের মধ্যে যারা রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর সঙ্গে ছিলেন তাদেরকে নিয়ে তিনি বের হলেন ৷ গ্রামের কিছু লোকও তার সঙ্গে যোগ
দেয় ৷ তিনি সঙ্গে কুরবানীর পণ্ডও (হাদী) নিলেন এবং উমরার এহরামও বাধ্লেন যাতে যুদ্ধের
ব্যাপারে লোকেরা নিরাপদ হয়ে যায় এবং তারা একখাও জানতে পারে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কেবল
বায়ধুন্মাহ্র যিয়ারতের উদ্দেশ্যেই বের হয়েহ্নেষ্ক যুদ্ধের জন্য নয় ৷ বায়তৃল্লাহ্র মযদাি প্রকাশ বরোই
তার একমাত্র লক্ষ্য ৷
ইবন ইসহাক (র) মারওয়ান ইবনুল হাকাম সুত্রে বর্ণনা করেন যে, হুদায়বিয়ার বছর রাসুলুল্লাহ্
(না) বায়তৃল্লাহ্ যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে বের হন; যুদ্ধ ব্বার উদ্দেশ্যে নয়, হাদী বা বুম্মবার্নীর জন্য
তিনি ৭০টি পশুও সঙ্গে নেন ৷ তার সঙ্গে ছিল ৭শ লোক প্রতি দশ জনের জন্য ছিল ক্যুবানীর এক
একটা পশু ৷ অবশ্য জাৰির ইবন আবদুল্লাহ (বা) বলতেন যে, হুদায়বিয়ার আমরা সঙ্গীরা ছিলাম
চৌদ্দ শত ৷