Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » হুনায়ন যুদ্ধ পরবর্তী ঘটনা

হুনায়ন যুদ্ধ পরবর্তী ঘটনা

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • আওতাস যুদ্ধ

    আওতাস যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার কারণ ছিল এই যে, হাওয়াযিন সম্প্রদায় পরাজয় বরণ করার
    পর তাদের এক দল তায়েফে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে ৷ তাদের মধ্যে দলপতি মালিক ইবন আওফ
    নাসয়ীও ছিল ৷ তায়েফের দুর্গের অভ্যন্তরে তারা অবস্থান নেয় ৷ আর এক দল লোক আওতাস
    নামক স্থানে গিয়ে সমবেত হয় ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবু আমির আশআরী ( রা)-এর নেতৃত্বে এক
    দল সাহাবীর একটি বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন ৷ মুসলিম বাহিনী যুদ্ধ করে তাদেরকে
    পরাজিত করেন ৷ অন্যদিকে রাসুলুল্পাহ্ (না) স্বয়ং তায়িফের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন
    এবং তারিফ অবরোধ করেন ৷ এ বিষয়ে আলোচনা পরে করা হবে ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : হুনায়ন যুদ্ধে মুশরিক বাহিনী পরাজিত হওয়ার পর পালিয়ে তায়েফে
    চলে আসে ৷ মালিক ইবন আওফ্ও তাদের সাথে ছিল ৷ তবে তাদের মধ্য হতে কিছু সংখ্যক
    লোক আওতাসে যায় ৷ আর কিছু সংখ্যক যায় নাখলায় ৷ অবশ্য ছাকীফ গোত্রের ওয়াপীরা
    উপগােত্রের লোক ব্যতীত আর কেউ নাখলায় যায়নি ৷ যে সব লোক পার্বত্য পথ ধরে তায়েফ
    যায়, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর অশ্বারোহী বাহিনী তাদের পশ্চাদ্ধাবন করে ৷ এ প্রচেষ্টায় রাৰীআ ইবন
    রাফী ইবন ইহান সুলামী দুরায়দ ইবন সিমমাকে ধরে ফেলেন ৷ রাৰীআ ইবন দাগিন্না নামে
    প্রসিদ্ধ ছিলেন ৷ দাগিন্না ছিল তার মায়ের নাম ৷ রাৰীআ দৃরায়দের উটের লাগাম টেনে ধরেন ৷ তিনি
    ধারণা করেছিলেন যে, উটের আরোহী হবে একজন মহিলা ৷ কেননা, সে কাপড় দিয়ে ঘেরা
    হাওদার মধ্যে অবস্থান করছিল ৷ কিন্তু ঘের খুলে ফেলার পর তিনি দেখলেন যে একজন পুরুষ
    মানুষ ৷ তিনি উটটিকে বসিয়ে দিলেন ৷ দেখলেন লোকটি জরাগ্রস্ত বৃদ্ধ, দুরায়দ ইবন সিমমা ৷
    তরুণ রাৰীআ দুরায়দকে চিনতেন না ৷ দুরায়দ জিজ্ঞেস করলো, তুমি আমাকে কি করতে চাও :
    তিনি বললেন, তোমাকে আমি হত্যা করবো ৷ দুরায়দ জানতে চাইল, কে তুমি : তিনি জবাবে
    বললেন, আমি রাবীআ ইবন রাফী সুলামী ৷ এরপর তিনি তলোয়ার দ্বারা দুরায়দকে আঘাত
    করলেন ৷ কিন্তু তাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হলেন ৷ তখন দুরায়দ বললো, “কত নিকৃষ্ট অস্ত্র দিয়ে
    তোমার মা ণ্তামাকে যুদ্ধে পাঠিয়েছে : আমার বাহনে হাওদার পিছনে রাখা ঘেরেব ভেতর থেকে
    আমার তলােয়ারটা বের করে আন এবং তা দিয়ে আমাকে আঘাত কর ৷ তবে তুমি অস্থির উপরে
    এবং মগত্তেরে নিচে আঘাত করবে ৷ কেননা, আমি এভাবেই লোক হত্যা করতাম ৷ তারপর তুমি
    যখন তোমার মায়ের কাছে ফিরে যাবে তখন তাকে বলবে , আমি দুরায়দ ইবন সিমমাকে হত্যা
    করেছি ৷ আল্লাহর কসম ! বহুবার আমি তোমাদের মহিলাদেরকে রক্ষা করেছি ৷” পরবর্তীতে বনু
    সুলায়মের লোকজন বলেছে যে, রাৰীআ“ জানিয়েছেন, দুরায়দকে আঘাত করার পর সে উলংগ
    হয়ে নিচে পড়ে যায় ৷ তখন দেখা যায় তার নিতম্ব ও উরুদ্বয় অধিক অশ্বারােহণ করার ফলে
    কাগজের ন্যায় সাদা হয়ে গেছে ৷ এরপর যুদ্ধ শেষে ফিরে এসে রাৰীআ তার মায়ের নিকট গিয়ে

    দৃরায়দকে হত্যা করার বিবরণ শুনায় ৷ বর্ণনা শুনে তার মা বললেন ৷ “আল্লাহর কসম ! সে তো
    তোমার মাদেরকে তিন তিনবার যুক্ত করেছিল ৷”

    দৃরায়দ নিহত হওয়ার পর তার কন্যা উমারা বিনৃত দৃরায়দ যে শোক পথাে রচনা করেছিল,
    ইবন ইসহাক তা উল্লেখ করেছেন ৷ তার কিছু অংশ নিম্নে দেওয়া হল ও

    “তারা বলেছে, আমরা দৃরায়দকে হত্যা করেছি ৷ আমি বলেছি, তারা সত্য কথাই বলেছে ৷
    ফলে আমার অশ্রু অবিরতভাবে আমার আমার উপর ঝরে পড়ছে ৷

    যদি ঐ শক্তি বিদ্যমান না থাকতো যা সষুদয় জাতিকে গ্রাস করে নিয়েছে, তা হলে বনু
    সুলায়ম ও বনু কা ’ব দেখতাে, কিভাবে হুকুম মান্য করা হয় ও আনুগত্য করতে হয় ৷

    তখন প্রাতঃকালে তাদেরকে আঘাত হানতাে প্রকাশ্যে ও অপ্ৰকাশ্যে এক বিরাট বিশাল
    বাহিনী ৷ তখন বিপদ মুসীবত স্থায়ীভাবে তাদের ঘাড়ে চেপে বসতাে ৷ ”

    ইবন ইসহাক বলেন : যুশরিক বাহিনীর মধ্য হতে যারা আওতাসের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল
    তাদের পশ্চাদ্বাবন করার জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবু আমির আশআরীকে প্রেরণ করেন ৷ তিনি
    পরাজিতদের মধ্যেকার কিছু লোকের নাপাল পেয়ে যান ৷ দুর থেকে উভয় দলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু
    হয় ৷ একটি তীর এসে আবু আমির (রা)-এর গায়ে পতিত হয় এবং তাতেই তিনি শহীদ হন ৷
    তারপর তার চাচাত ভাই আবুমুসা আশআরী (রা) পতাকা ধারণ পুর্বক তাদের বিরুদ্ধে লড়ইিয়ে
    অবতীর্ণ হন ৷ আল্লাহ্ তাকে এ লড়াইয়ে বিজয় দান করেন এবং শত্রুদেরকে পরাজিত করেন ৷
    ণ্লাকমুখে জানা যায় যে, যে ব্যক্তি আবু আমির আশআরী (রা) কে তীরবিদ্ধ করেছিল যে হল
    দুরায়দের পুত্র সালামা ৷ তার নিক্ষিপ্ত তীর আবু আমিরের হীটুতে লাগে এবং এতেই তিনি নিহত
    হন ৷ এ প্ৰসংগে সালামা কবিতায় বলে :

    “আমার সম্পর্কে যদি জানতে চাও, তা হলে শুনে নাও আমার নাম সালামা ৷ আমি
    সামাদীরের পুত্র ৷ এ পরিচয় তার জন্যে দেওয়া যে তাকে ভালরুপে জানতে চায় ৷ আমি
    মুসলমানদের মাথায় তলােয়ারের আঘাত হানি ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : কবিতা ও ঘটনা বর্ণনায় পারদর্শী জনৈক নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি আমার
    নিকট বর্ণনা করেছেন যে, আওতাসের দিন দশজন মুশরিকের সাথে আবু আমির (রা)-এর
    মুকাবিলা হয় ৷ এ দশজনই ছিল পরস্পরের ভাই ৷ তাদের মধ্যে একজন আবুআমিরের উপর
    হামলা করে ৷ ফলে আবু আমির (রা) ও তার উপর হামলা করেন ৷ তিনি তাকে ইসলাম গ্রহণ

    করার জন্যে দাওয়াত দেন এবং বলেন, “হে আল্লাহ্ ! আপনি তার উপর সাক্ষী থাকুন ৷” তারপর
    আবু আমির (রা) তাকে হত্যা করেন ৷ এরপর দ্বিতীয় আর একজন তাকে আক্রমণ করে ৷ ফলে
    আবু আমির (রা) তাকে ইসলামের দিকে আহ্বান করে বলেন, “হে আল্লাহ ! আপনি সাক্ষী
    থাকুন ৷“ তারপর প্রতি-আক্রমণ করে আবু আমির (রা) তাকে হত্যা করেন ৷ এরপর তারা
    প্রতেব্রকেই একে একে আবু আমির (রা)-এর উপর হামলা করতে থাকে ৷ আর প্রতেকে বারেই
    তিনি অনুরুপ দাওয়াত দিয়ে ও আল্পাহ্কে সাক্ষী রেখে প্ৰতি-হামলা করে হত্যা করতে থাকেন ৷
    এভাবে তাদের নয়জন নিহত হয়ে যায় ৷ বাকী থাকে দশম ব্যক্তি এবার সেও আবু আমির (রা)
    -এর উপর হামলা করে বসে ৷ ফলে তিনিও তার উপর হামলা করেন ৷ তিনি তাকে প্রথমে
    ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দেন এবং বলেন “হে আল্লাহ ! আপনি সাক্ষী থাকুন ৷” তখন
    আক্রমণকারী দশম লোকটি বললােষ্ হে আল্লাহ্ ! আপনি আমার উপরে সাক্ষী থাকবেন না ৷ এ
    কথা শুনে আবু আমির (রা) তাকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকেন ৷ ফলে সে প্রাণে রক্ষা পায় ৷
    পরে সে ইসলাম গ্রহণ করে এবং অতি নিষ্ঠার সাথে ইসলামের আনুগত্য করে ৷ নবী করীম (সা)
    যখনই তাকে দেখতেন তখনই বলাতন, এ হচ্ছে আবু আমিরকে ফীকি দেওয়া পলাতক ব্যক্তি ৷
    বর্ণনাকারী বলেন, অল্পক্ষণ পর বনু জুশাম ইবন মুআবিয়া গোত্রের হারিছের দুই পুত্র আলা ও
    আওফা (দুই ভাই) একযোগে আবু আমির (রা)-এর প্রতি তীর নিক্ষেপ করে ৷ একটি তীর তার
    হৃৎপিণ্ডে লাগে এবং অপরটি তার হীটুতে বিদ্ধ হয় ৷ এভাবে তারা দৃজনে মিলে তড়াকে শহীদ
    করে ৷ এ সময় লোকজন আবু মুসা আশআরীকে তার স্থানে আমীররুপে গ্রহণ করে ৷ তিনি
    আক্রমণকারী ভ্রাতৃদ্বয়ের উপর পালটা আক্রমণ চালিয়ে তাদের দৃজনকেই হত্যা করেন ৷ বনু
    জুশাম গোত্রের এক ব্যক্তি উক্ত ভ্রাতৃদ্বয়ের মৃত্যুতে নিম্নরুপ মর্সিয়া রচনা করেন :

    আনা ও আওফার হত্যাকাণ্ড একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা ৷ তারা এক সাথেই মারা গেল,
    অথচ কোন আশ্রয়ই তাদের ছিল না ৷

    তারা দৃ’জনেই আবুআমিরের হভ্যাকারী ৷ আর আবু আমির ছিল এক ভয়ংকর ব্যক্তি ৷
    তারা দুজনে তাকে যুদ্ধক্ষেত্রে এমন অবস্থায় পরিত্যাগ করে, যেন তার পার্শে রয়েছে
    মসজিদ ৷

    মানব সমাজে তাদের দু’ভাইয়ের ন্যায় লোক কোথাও দেখা যায়না ৷ প্রতিযোগিতায় তারা
    কমই হেড়াচট খায় ৷ আর তীর নিক্ষেপে তারা খুবই সিদ্ধহস্ত ৷”

    ইমাম বুখারী মুহাম্মাদ ইবন আলা আবু মুসা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি

    বলেছেন, হুনায়ন যুদ্ধ শেষ করার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবু আমির (রা)-এর নেতৃত্বে একটি সৈন্য
    দল আওতাস গোত্রের দিকে পাঠান ৷ দৃরায়দ ইবন সিমমার সাথে তার মুকাবিলা হয় ৷ লড়াইয়ে

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ হুনায়ন যুদ্ধ পরবর্তী ঘটনা Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.